Old/New Testament
সন্বল্লট ও টোবিয়
4 আমরা দেওয়াল পুনর্নির্মাণ করছি, একথা জানতে পেরে সন্বল্লট খুবই ক্রুদ্ধ হল। সে তখন ইহুদীদের নিয়ে হাসা-হাসি করল। 2 সন্বল্লট তার বন্ধুদের ও শমরীয় সেনাদলের সামনেই কথা বলছিল, “এই দুর্বল ইহুদীগুলো কি করছে? ওরা কি ভাবছে যে আমরা ওদের ছেড়ে দেব? ওরা কি বেদীতে বলি চড়াবে? ওরা কি মনে করে যে এক দিনেই ওরা নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবে? ওরা কি আবর্জনা আর ধূলোর গাদা থেকে এই পোড়া পাথরগুলিকে আবার জীবন্ত করে তুলতে পারবে?”
3 সেই সময়, অম্মোনীয়র টোবিয় সন্বল্লটের সঙ্গে ছিল। সে বলল, “যে দেওয়ালটা ওরা বানাচ্ছে ওটার ওপর একটা ছোট শেয়ালও যদি ওঠে ওটা ভেঙে পড়বে!”
4 নহিমিয় তখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন, “হে ঈশ্বর তুমি দয়া করে আমাদের ডাকে সাড়া দাও। এই সমস্ত ব্যক্তিরা আমাদের ঘৃণা করে। সন্বল্লট ও টোবিয় আমাদের অপমান করছে। তুমি তাদের এর যথাযোগ্য শাস্তি দাও। ওদের বন্দী করার ব্যবস্থা করো, যাতে ওরা লজ্জিত হয়। 5 তোমার চোখের সামনে ওরা যে অপরাধ করেছে তা তুমি ক্ষমা করো না। ওরা দেওয়াল নির্মাতাদের অপমান করেছে ও তাদের নিরুৎসাহ করেছে।”
6 যদিও আমরা জেরুশালেমের চারপাশের দেওয়াল বানালাম কিন্তু দেওয়ালের উচ্চতা যা হওয়া উচিৎ ছিল মোটে তার অর্ধেক হল। লোকরা উদ্যম আর ইচ্ছা নিয়ে কাজ করেছে।
7 সন্বল্লট, টোবিয়, আরবীয়, অম্মোনীয় ও অস্দোদীয়রা খুব রেগে গেল কারণ ওরা শুনেছিল যে জেরুশালেমের দেওয়ালের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে এবং গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। 8 তারপর তারা জেরুশালেমের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার পরিকল্পনা করল। তারা সবাই পরিকল্পনা করল যে তারা আসবে ও জেরুশালেমের বিরুদ্ধে লড়াই করবে এবং তার বিরুদ্ধে গোলমাল করবে। 9 কিন্তু আমরা আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে দিবারাত্র দেওয়ালের চারপাশে কড়া পাহারার ব্যবস্থা করলাম যাতে আমরা এইসব বহিঃশত্রুদের প্রয়োজনে বাধা দিতে পারি।
10 সে সময় যিহূদার লোকেরা বলল, “কর্মীরা সকলে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে এবং ওখানে সরাবার মতো এত নোংরা আছে যে আমরা দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারব না। 11 আর আমাদের শত্রুরা বলছে, ‘ইহুদীরা এ সম্বন্ধে অবগত হবার আগে অথবা আমাদের দেখতে পাবার আগে, আমরা তাদের মধ্যে গিয়ে তাদের হত্যা করব, এবং এইভাবেই তাদের কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।’”
12 তারপর যে সব ইহুদী আমাদের শত্রুদের মধ্যে থাকত তারা এলো এবং আমাদের দশ বার বলল, “আমাদের শত্রুরা আমাদের চারদিকে রয়েছে। আমরা যে দিকেই ফিরি না কেন সে দিকেই শত্রুরা রয়েছে।”
13 আমি তখন কিছু ব্যক্তিকে প্রাচীরের নিম্নতম অংশে রাখার ব্যবস্থা করলাম। আমি পরিবারগুলিকে তলোয়ার, বল্লম ও তীর-ধনুক সহ দেওয়ালের গর্তের কাছে এক সঙ্গে দাঁড় করিয়ে দিলাম। 14 তারপর সমস্ত ব্যবস্থা ও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবার পর, আমি গুরুত্বপূর্ণ পরিবারগুলিকে, আধিকারিকদের এবং সমস্ত বাকি লোকদের উৎসাহ দিয়ে বললাম, “আমাদের শত্রুদের ভয় পেয়ো না। মনে রেখো আমাদের প্রভু মহান এবং ভয়ঙ্কর!”
15 আমাদের শত্রুপক্ষ খবর পেল যে আমরা তাদের চক্রান্তের কথা জেনে ফেলেছি। ঈশ্বর তাদের সমস্ত মতলব বানচাল করে দিয়েছেন। আবার আমাদের লোকরা তাদের নিজেদের জায়গায় ফিরে গিয়ে দেওয়ালের কাজ শুরু করল। 16 তখন থেকে আমাদের লোকদের অর্ধেক সংখ্যক দেওয়াল নির্মাণের কাজে নিযুক্ত রইল আর বাকি অর্ধেক বল্লম, বর্ম, তীর এবং বর্ম নিয়ে প্রহরায় নিযুক্ত হল। সেনাধ্যক্ষরা যিহূদার লোকদের পেছনে এসে দাঁড়ালেন যেহেতু তারা দেওয়াল নির্মাণ করছিল। 17 মিস্ত্রি ও তাদের যোগানদাররা এক হাতে তাদের যন্ত্রপাতি এবং অন্য হাতে অস্ত্রও ধরেছিল। 18 কাজ করার সময়ও প্রত্যেকটি নির্মাণকারী কোমরবন্ধে তরবারি ঝুলিয়ে রাখতো। লোকদের সতর্ক করে দেবার জন্য যার শিঙা বাজানোর কথা সে আমার পাশে পাশে থাকত। 19 আমি তখন আধিকারিকবর্গ, গুরুত্বপূর্ণ পরিবার ও বাকি লোকদের সঙ্গে কথা বললাম। আমি বললাম, “এই দেওয়াল জুড়ে এখনও অনেক কাজ করা বাকি আছে আর আমরা একে অন্যের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছি। 20 কিন্তু একে অপরের থেকে কাজের সময় যত দূরেই থাকো না কেন, শিঙার আওয়াজ শুনলেই সকলে দ্রুত এক জায়গায় জড়ো হবে। ঈশ্বর স্বয়ং আমাদের যুদ্ধে সাহায্য করবেন।”
21 অতএব আমরা সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত জেরুশালেমের দেওয়াল বানানোর জন্য কঠিন পরিশ্রম করছিলাম যখন কর্মীদের মধ্যে অর্ধেকরা হাতে বল্লম ধরেছিল।
22 আমি নির্মাতাদের এও বলেছিলাম, “প্রত্যেক নির্মাতা এবং তার সাহায্যকারী রাত্রে জেরুশালেমের ভেতরে থাকবে যাতে তারা রাত্রে পাহারাদার এবং দিনের বেলা কর্মী হতে পারে।” 23 অতএব আমি বা আমার ভাইরা, আমার লোকরা এবং প্রহরীরা কেউই স্নান করার জন্য বা কাপড় কাচার জন্য পোষাক খুলতে পারতাম না কারণ আমরা যখন জলের জন্য বেরোতাম তখনও আমাদের হাতে অস্ত্র থাকত।
নহিমিয় গরীব দুঃখীদের সাহায্য করলেন
5 অনেক দরিদ্র ইহুদী তাদের আত্মীয়দের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে শুরু করলো। 2 তাদের মধ্যে কয়েকজন অভিযোগ করল, “আমাদের এতগুলি ছেলেমেয়ে; সুতরাং খেয়েপরে বাঁচার জন্য আমাদের খাদ্য শস্যের প্রয়োজন!”
3 অন্য লোকরা বলল, “দুর্ভিক্ষের সময় শস্য পাবার জন্য আমরা আমাদের জমিজমা, দ্রাক্ষাক্ষেত এবং বাড়ি বন্ধক রেখেছিলাম।”
4 আবার আরেক দল বলতে শুরু করল, “আমাদের জোত জমি ও দ্রাক্ষাক্ষেতের ওপর ধার্য্য রাজকর দেবার জন্য আমাদের অর্থ ধার করতে হয়েছিল। 5 আর এদিকে ঐসব ধনী লোকদের দেখো! আমরাও তো ওদেরই মতো মানুষ, আমাদের ছেলেমেয়েরাই বা ওদের থেকে কম কিসে? কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের ছেলেমেয়েদের দাসদাসী হিসেবে বিক্রি করে দিতে হবে! ইতিমধ্যেই অনেকে তা করতে শুরু করেছে, অথচ আমরা কিছুই করতে পারছি না। আমাদের ভূমি ও দ্রাক্ষাক্ষেত এখন অন্য লোকদের অধীনে!”
6 আমি যখন ওদের অভিযোগগুলো শুনলাম তখন মহাক্রুদ্ধ হলাম। 7 তারপর আমি নিজেকে শান্ত করে বিত্তবান পরিবার ও আধিকারিকবর্গের কাছে গিয়ে বললাম, “তোমরা তোমাদের নিজেদের লোকদের টাকা ধার দাও এবং তাদের কাছ থেকে সুদ আদায় কর। তোমাদের অতি অবশ্য এ কাজ বন্ধ করতে হবে।” এরপর আমি সমস্ত ব্যক্তিদের এক জায়গায় জড়ো করে বললাম, 8 “লোকরা আমাদের ইহুদী ভাইদের ক্রীতদাস হিসেবে অন্য দেশসমূহে বিক্রি করে দিয়েছিল। বহু কষ্টে আমরা তাদের স্বাধীন করে দেশে ফিরিয়ে এনেছি আর এখন তোমরা নিজেরাই আবার তাদের ক্রীতদাস হিসেবে বিক্রি করছো!”
ধনী লোকরা ও আধিকারিকরা এই অভিযোগ শুনে কিছু বলতে পারল না, চুপ করে থাকল। 9 তখন আমি তাদের বললাম, “তোমরা যা করছ, সেটা সঠিক কাজ নয়। তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভয় থাকা প্রয়োজন। অন্যান্য জাতিরা যে সব লজ্জাজনক কাজ করছে সেসব তোমাদের করা উচিৎ নয়। 10 আমার লোকরা, আমার ভাইরা, এমন কি আমিও, দরিদ্রদের টাকাপয়সা ও খাদ্যশস্য ধার দিচ্ছি। এসো আমরা তাদের যে টাকা ধার দিই তার থেকে সুদ নেওয়া বন্ধ করি। 11 তোমরা অতি অবশ্য দরিদ্র ব্যক্তিদের জমি-জমা, দ্রাক্ষাক্ষেত, বাড়ি ফেরত দিয়ে দেবে। এছাড়াও তোমরা, এদের টাকা-পয়সা, শস্য, দ্রাক্ষারস এবং তেল ধার দিয়ে তার ওপর এক শতাংশ হারে যে সুদ নিয়েছো তাও ফিরিয়ে দেবে।”
12 তখন ধনী ব্যক্তি সবাই আমাকে বলল, “নহিমিয় তুমি যা বললে তাই হবে। আমরা ওদের সব কিছু ফিরিয়ে দেব আর কখনও গরীব দুঃখীদের থেকে কিছু নেব না।”
তারপর যাজকদের ডেকে ঈশ্বরের সামনে ধনী ও আধিকারিকরা যা বলেছে তা শপথ করালাম। 13 এরপর আমি আমার কাপড়ের ভাঁজ ঝাড়তে ঝাড়তে তাদের বললাম, “এই একই ভাবে তোমরা যারা এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, তাদের প্রত্যেককে ঈশ্বর ধরে ঝাঁকাবেন। ঈশ্বর তাকে গৃহচ্যুত তো করবেনই উপরন্তু তার যা কিছু আছে সবই তাকে হারাতে হবে।”
আমি আমার বক্তব্য শেষ করার পর উপস্থিত সকলে “আমেন” বলল। তারপর তারা সকলে প্রভুর প্রশংসা করল এবং এরা সকলেই তাদের কথা রেখেছিল।
14 রাজা অর্তক্ষস্তর রাজত্বের 20তম বছর থেকে 32তম বছর পর্যন্ত আমি যিহূদার রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করছিলাম। সে সময় আমি বা আমার কোন ভাই রাজ্যপালের জন্য বরাদ্দ খাদ্য খাইনি। আমি কখনও দরিদ্র ব্যক্তিদের জোরজবর্দস্তি কর দিতে বাধ্য করে সে পয়সায় নিজের খাবার কিনিনি। আমি অর্তক্ষস্তের রাজত্বের কুড়ি বছর থেকে বত্রিশ বছর পর্যন্ত অর্থাৎ মোট বারো বছর যিহূদার শাসক হিসেবে কাজ করেছিলাম। 15 যে সব রাজ্যপালরা আমার আগে শাসন করেছিলেন তাঁরা লোকদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছিলেন। এঁরা সকলেই প্রত্যেক ব্যক্তির কাছ থেকে এক পাউণ্ড রূপোসহ খাবার ও দ্রাক্ষারস দাবী করতেন। নেতৃবর্গ, যারা ঐ সব রাজ্যপালদের অধীন ছিল তারাও লোকদের শোষণ করত। কিন্তু যেহেতু আমার ঈশ্বরে ভয়-ভীতি আছে, আমি এই ধরণের কাজ করিনি। 16 আমি জেরুশালেমের দেওয়াল তোলবার জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিলাম। আমার সমস্ত লোকরাও এই কাজের জন্য একত্রে এসেছিল। আমরা কারো কাছ থেকে কোন জমি-জমা কেড়ে নিই নি।
17 উপরন্তু আমি নিয়মিত ভাবে আমার টেবিলে 150 জন ইহুদী আধিকারিকদের খাওয়ার যোগান দিয়েছিলাম। আর আমাদের আশেপাশের দেশ থেকে যে সব লোকরা আমার টেবিলের কাছে এসেছিল আমি তাদেরও খাবার সরবরাহ করতাম। 18 প্রতি দিন লোকদের খাওয়াবার জন্য আমি একটি গরু, ছয়টি মোটা মেষ এবং নানান ধরণের পাখি রান্না করার জন্য দিতাম। প্রতি দশদিন অন্তর আমি প্রভূত পরিমাণে সব রকমের দ্রাক্ষারস দিতাম। কিন্তু আমি কখনই শাসকের জন্য বরাদ্দ দামী খাবার-দাবার দাবি করিনি বা আমার খাবার কেনার জন্য প্রজাদের ওই সমস্ত কর দিতে বাধ্য করিনি। আমি জানতাম, দেওয়াল বানানোর জন্য সকলে কঠিন পরিশ্রম করছে। 19 হে ঈশ্বর, আমি এইসব লোকদের জন্য যা করেছি, তা মনে রেখো এবং আমাকে আশীর্বাদ করো।
আরো সংকটসমূহ
6 তারপর সন্বল্লট, টোবিয় ও গেশম নামে আরব ও আমাদের অন্যান্য শত্রুরা জানতে পারল যে আমি জেরুশালেমের দেওয়াল নির্মাণ করছিলাম। দেওয়ালের গায়ের গর্তগুলি ভরাট করা হলেও তখনও অবশ্য আমাদের দরজার পাল্লা বসানো বাকি ছিল। 2 অতএব সন্বল্লট ও গেশম তখন আমাকে একটি খবর পাঠাল: “চলো নহিমিয়: ওনো সমভূমির কেফিরিন শহরে আমরা সাক্ষাৎ করি।” কিন্তু ওরা আমার ক্ষতি করার পরিকল্পনা করেছিল।
3 কিন্তু আমি ওদের এই কথা বলে ফেরত পাঠালাম: “আমি খুব জরুরী কাজে ব্যস্ত আছি, তাই তোমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি কাজ বন্ধ করতে পারব না।”
4 সন্বল্লট ও গেশম আমাকে চারবার একই খবর পাঠিয়েছিল, কিন্তু আমি তাদের একই উত্তর দিয়েছিলাম। 5 তারপর পঞ্চমবার সন্বল্লট ওর নিজের এক সাহায্যকারীর মাধ্যমে আমাকে একই আমন্ত্রণ পাঠালো। 6 চিঠিটিতে লেখা ছিল:
“চতুর্দিকে একটি গুজব ছড়াচ্ছে এবং এমনকি গেশমও বলেছে যে, তুমি ও ইহুদীরা নাকি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার পরিকল্পনা করছ। যে কারণে নাকি তোমরা জেরুশালেম শহরের চারপাশে দেওয়াল তুলছ। জনসাধারণ বলছে, বিদ্রোহের পর তুমিই নাকি হবে ইহুদীদের নতুন রাজা। 7 গুজবে একথাও বলা হচ্ছে যে তোমার সম্বন্ধে এই কথা জেরুশালেমে ঘোষণা করতে তুমি ভাববাদীদের নিযুক্ত করেছ: ‘যিহূদায় এক রাজা আছেন!’
“দেখো নহিমিয়, আমি তোমাকে সাবধান করে দিতে চাই যে রাজা শীঘ্রই এসব খবর পেয়ে যাবেন। তাই বলছি, এসো আমরা এক সঙ্গে বসে এ বিষয়ে কথাবার্তা বলি।”
8 আমি তখন সন্বল্লটকে বলে পাঠালাম, “তুমি যা অভিযোগ করেছ তার কোনটাই সত্যি নয়। তুমি তোমার নিজের মাথা থেকেই এই গল্পটা বানাচ্ছো।”
9 আসলে আমাদের শত্রুরা আমাদের ভয় দেখাতে চেষ্টা করছিল। ওরা ভাবছিল, “এসব করলে ইহুদীরা ভয় পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেবে আর দেওয়ালের কাজও শেষ হবে না।”
কিন্তু আমি প্রার্থনা করেছিলাম, “হে ঈশ্বর, আমাকে শক্তি দাও।”
10 এক দিন আমি শময়িয়র সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে গেলাম। শময়িয় ছিল দলায়ের পুত্র। দলায় ছিল মহেটবেলের পুত্র। শময়িয় তার বাড়িতে ছিল। সে আমাকে বলল, “নহিমিয়, চল আমরা ঈশ্বরের মন্দিরে দেখা করি। চল আমরা পবিত্র স্থানের ভিতরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিই, কারণ শত্রুরা আজ রাতে তোমাকে হত্যা করতে আসছে।”
11 আমি শময়িয়কে উত্তরে বললাম, “আমার মতো কোন ব্যক্তির কি পালিয়ে যাওয়া উচিৎ? আমার মতো একজন ব্যক্তির কি নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য পবিত্র স্থানের ভেতরে যাওয়া উচিৎ? আমি যাব না!”
12 আমি জানতাম যে আমাকে সাবধান করতে ঈশ্বর শময়িয়কে পাঠান নি। আমি বুঝতে পারলাম যে সে আমার বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল কারণ টোবিয় ও সন্বল্লট তাকে তা করার জন্য টাকা দিয়েছিল। 13 আমাকে ভয় দেখানোর জন্য ও মন্দিরের ভেতরে যেতে প্ররোচিত করবার জন্য শময়িয়কে টাকা দেওয়া হয়েছিল যাতে এই কাজ করে আমি পাপ আচরণ করি তাহলে ওরা আমাকে অপদস্থ করবার জন্য বদনাম দিতে পারে।
14 হে ঈশ্বর, সন্বল্লট ও টোবিয়কে এবং তারা যে মন্দ কাজগুলি করেছে তা অনুগ্রহ করে মনে রেখ। এমন কি ভাববাদিণী নোয়দিয়ার কথা এবং অন্যান্য যে সমস্ত ভাববাদীরা আমাকে ভয় দেখাতে চেষ্টা করছে তাদের কথাও তুমি স্মরণে রেখো।
দেওয়াল নির্মাণের কাজ সমাপ্ত
15 ইলূল মাসের 25 দিনের মাথায় জেরুশালেমের দেওয়াল গাঁথার কাজ শেষ হল। দেওয়াল নির্মাণ শেষ করতে 52 দিন লেগেছিল। 16 তখন আমাদের সমস্ত শত্রু ও আশেপাশের সব জাতিগুলি জানতে পারল যে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তাই তারা তাদের সাহস হারিয়ে ফেলল। কেন? কারণ ওরা বুঝতে পেরেছিল, যে আমাদের ঈশ্বরের সহায়তাতেই একাজ শেষ হয়েছে।
17 এছাড়াও, সে সময়ে দেওয়াল নির্মাণের কাজ শেষ হবার পর, যিহূদার ধনী ব্যক্তিরা টোবিয়কে চিঠি লিখত এবং টোবিয় সেসব চিঠির জবাব দিত। 18 তারা ঐসব চিঠি লিখেছিল কারণ যিহূদাতে বহু লোক তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কারণ টোবিয়, আরহের পুত্র শখনিয়ের জামাতা ছিল। উপরন্তু টোবিয়ের পুত্র যিহোহানন বেরিখিয়ের পুত্র মশুল্লমের কন্যাকে বিয়ে করেছিল। 19 অতীতে তারা টোবিয়র কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাই এরা আমার কাছে বলেছিল টোবিয় কত ভাল ছিল। আমার কার্যকলাপ সম্পর্কে তারা টোবিয়কে যাবতীয় খবরাখবর দিত। টোবিয় আমাকে ভয় দেখানোর জন্য চিঠি পাঠানো অব্যাহত রেখেছিল।
7 আমাদের দেওয়াল বানানোর কাজ শেষ হল। তারপর আমরা দরজায় পাল্লা বসালাম ও কারা সেই সব দরজায় পাহারা দেবে তার জন্য লোক ঠিক করলাম। আমরা গায়কদের এবং লেবীয়দেরও নিযুক্ত করলাম। 2 এরপর আমি আমার ভাই হনানি ও হনানিয় নামে আরেক ব্যক্তিকে যথাক্রমে জেরুশালেম শহরের দায়িত্ব ও দুর্গের সেনাপতির দায়িত্ব দিলাম। আমি আমার ভাই হনানিকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ অন্যান্যদের থেকে সে খুবই সৎ ও তার ঈশ্বরে বেশী ভয় ছিল। 3 আমি তখন তাদের নির্দেশ দিলাম, “প্রতিদিন সূর্যোদয়ের কয়েক ঘন্টা পরে জেরুশালেমের ফটকগুলি খুলবে। আর সূর্যাস্তের পূর্বেই তোমরা ফটক বন্ধ করে তালা লাগাবে। এছাড়াও, রক্ষী হিসেবে যাদের নিয়োগ করবে তারা যেন এ শহরেরই বাসিন্দা হয়। এই সমস্ত রক্ষীদের কয়েক জনকে শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পাহারা দিতে পাঠাবে আর বাদবাকিরা যেন তাদের বাড়ির কাছাকাছি অঞ্চলেই পাহারা দেয়।”
ফিরে আসা বন্দীদের তালিকা
4 জেরুশালেম শহরটি খুবই বড়। শহরে অনেক জায়গা থাকলেও, তুলনায় বাসিন্দার সংখ্যা কম। বাড়ি-ঘরও তখন সমস্ত বানানো হয়নি। 5 এমতাবস্থায ঈশ্বর আমার হৃদয়ে সমস্ত বাসিন্দাদের একত্রিত করার বাসনা প্রবেশ করালেন। আমি তখন সমস্ত গন্যমাণ্য ব্যক্তি, আধিকারিকবর্গ ও সাধারণ লোকদের একসঙ্গে ডেকে পাঠালাম। বসবাসকারী সমস্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা বানানোই আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল। ইতিমধ্যে বন্দীদশা থেকে যারা প্রথম এ শহরে ফিরে এসেছিল তার একটি তালিকা আমি পেয়েছিলাম। তাতে লেখা ছিল:
6 এই ইহুদীরা বন্দীদশা থেকে জেরুশালেম এবং যিহূদায় ফিরে এসেছিল। রাজা নবূখদ্নিৎসর এদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন। এরা হল: যেশূয়, নহিমিয়, অসরিয়, রয়মিয়া, নহমানি, 7 মর্দখয়, বিল্শন, মিস্পরৎ, বিগ্বয়, নহূম ও বানা। তারা সরুব্বাবিলের সঙ্গে ফিরে এসেছিল। ইস্রায়েলের যে সমস্ত লোক ফিরে এসেছিল তাদের নাম ও সংখ্যা নিম্নে দেওয়া হল:
8 পরোশের উত্তরপুরুষ | 2172 |
9 শফটিয়ের উত্তরপুরুষ | 372 |
10 আরহের উত্তরপুরুষ | 652 |
11 যেশূয় ও যোয়াবের পরিবারগোষ্ঠীর পহৎ-মোয়াবের উত্তরপুরুষ | 2818 |
12 এলমের উত্তরপুরুষ | 1254 |
13 সত্তূর উত্তরপুরুষ | 845 |
14 সক্কয়ের উত্তরপুরুষ | 760 |
15 বিন্নূয়ির উত্তরপুরুষ | 648 |
16 বেবয়ের উত্তরপুরুষ | 628 |
17 আস্গদের উত্তরপুরুষ | 2322 |
18 অদোনীকামের উত্তরপুরুষ | 667 |
19 বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষ | 2067 |
20 আদীনের উত্তরপুরুষ | 655 |
21 যিহিষ্কিয়ের বংশজাত আটেরের উত্তরপুরুষ | 98 |
22 হশুমের উত্তরপুরুষ | 328 |
23 বেৎসয়ের উত্তরপুরুষ | 324 |
24 হারীফের উত্তরপুরুষ | 112 |
25 গিবিয়োনের উত্তরপুরুষ | 95 |
26 বৈৎলেহম ও নটোফা শহরের লোক | 188 |
27 অনাথোত শহরের | 128 |
28 বৈৎ-অস্মাবৎ শহরের | 42 |
29 কিরিয়ৎ-যিয়ারীম, কফীরা ও বেরোত শহরের | 743 |
30 রামা ও গেবা শহরের | 621 |
31 মিক্মস শহরের | 122 |
32 বৈথেল ও অয় শহরের | 123 |
33 নবো শহরের | 52 |
34 এলম শহরের | 1254 |
35 হারীম শহরের | 320 |
36 যিরীহো শহরের | 345 |
37 লোদ, হাদীদ ও ওনো শহরের | 721 |
38 সনায়া শহরের | 3930 |
39 যাজকগণ হল:
যেশূয়ের বংশজাত যিদয়িয়র উত্তরপুরুষ | 973 |
40 ইম্মেরের উত্তরপুরুষ | 1052 |
41 পশ্হূরের উত্তরপুরুষ | 1247 |
42 হারীমের উত্তরপুরুষ | 1017 |
43 এরা হল লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর লোক:
হোদবিয়র বংশজাত যেশূয় ও কদ্মীয়েলের উত্তরপুরুষ | 74 |
44 এরা হল গায়ক বৃন্দ:
আসফের উত্তরপুরুষ | 148 |
45 এরা হল দ্বার-রক্ষকগণ:
শল্লুম, আটের, টল্মোন, অক্কুব, হটীটা ও শোবয়ের উত্তরপুরুষ | 138 |
46 এরা হল মন্দিরের বিশেষ দাস:
সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের উত্তরপুরুষরা,
47 কেরোস, সীয় ও পাদোনের বংশধরবর্গ,
48 লবানা, হগাব ও শল্ময়ের বংশধরবর্গ,
49 হানন, গিদ্দেল ও গহরের বংশধরবর্গ,
50 রায়া, রৎসীন ও নকোদের বংশধরবর্গ,
51 গসম, ঊষ ও পাসেহের বংশধরবর্গ,
52 বেষয়, মিয়ূনীম ও নফুষয়ীমের বংশধরবর্গ,
53 বকবূক, হকূফা ও হর্হূরের বংশধরবর্গ,
54 বসলীত, মহীদা ও হর্শার বংশধরবর্গ,
55 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের বংশধরবর্গ,
56 নৎসীহ ও হটীফার বংশধরবর্গ।
57 শলোমনের উত্তরপুরুষ দাসদের মধ্যে:
সোটয়, সোফেরৎ ও পরীদার বংশধরবর্গ,
58 যালা, দর্কোন ও গিদ্দেলের বংশধরবর্গ,
59 শফটিয়ের, হটীল ও পোখেরৎ-হৎসবায়ীম ও আমোন;
60 মন্দিরের দাস ও শলোমনের দাসদের উত্তরপুরুষ | 392 |
61 কয়েকজন লোক তেল্মেলহ, তেল্হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের শহর থেকে জেরুশালেমে এসেছিল। তাদের পরিবারগুলি ইস্রায়েল থেকে উদ্ভূত কিনা তা তারা প্রমাণ করতে পারেনি।
62 দলায়, টোবিয় ও নকোদের উত্তরপুরুষ | 642 |
63 এরা ছিল যাজক পরিবারের উত্তরপুরুষ:
হবায়, হক্কোস ও বর্সিল্লয়। গিলিয়দের বর্সিল্লয় পরিবারের কন্যাকে যদি একজন পুরুষ বিয়ে করত ওই পুরুষকে বর্সিল্লয়দের উত্তরপুরুষ হিসাবে গণ্য করা হতো।
64 যেহেতু তারা তাদের বংশতালিকা বা তাদের পূর্বপুরুষরা যাজক ছিলেন কিনা তা প্রমাণ করতে পারল না, সেহেতু যাজকদের তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হল না। 65 রাজ্যপাল ওই সমস্ত ব্যক্তিদের, পবিত্র খাবার খেতে বারণ করলেন যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রধান যাজক ঊরীম ও তুম্মীম ব্যবহার করে ঈশ্বরের কাছে জেনে নেন কি করতে হবে।
66-67 7337 জন দাসদাসীকে বাদ দিলে, যারা ফিরে এসেছিল তাদের মধ্যে সব মিলিয়ে ছিল 42,360 জন। এছাড়াও, এদের সঙ্গে ছিল 245 জন গায়ক-গায়িকা, 68-69 তাদের 736 টি ঘোড়া, 245 টি খচ্চর, 435 টি উট ও 6720 টি গাধা ছিল।
70 বেশ কিছু পরিবার প্রধান কাজ চালিয়ে যাবার জন্য অর্থ দান করেন। রাজ্যপাল স্বয়ং কোষাগারে 19 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি 50টি পাত্র ও যাজকদের পোশাকের জন্য 530 পোশাক দান করেন। 71 বিভিন্ন পরিবারের প্রধানরা কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা এবং 1 1/3 টন পরিমাণ রূপো দান করেছিলেন। 72 সব মিলিয়ে অন্যান্য ব্যক্তিরা 375 পাউণ্ড স্বর্ণমুদ্রা, 1 1/3 টন রূপা এবং যাজকদের জন্য 67 টি বস্ত্রখণ্ড দিয়েছিলেন।
73 যাজকগণ, লেবীয়রা, দ্বাররক্ষীরা, গায়করা ও মন্দিরের সেবাদাসরা ও অন্যান্য সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা যে যার নিজের শহরে বাস করতে লাগল। ওই বছরের সপ্তম মাসের মধ্যেই দেখা গেল ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দারা তাদের নিজেদের বাসভূমিতে বসবাস শুরু করেছে।
22 “হে ইহুদী ভাইরা, একথা শুনুন: নাসরতীয় যীশুর দ্বারা ঈশ্বর বহু অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করে আপনাদের কাছে প্রমাণ দিয়েছেন যে তিনি সেই ব্যক্তি যাঁকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন; আর আপনারা এই ঘটনাগুলি জানেন। 23 যীশুকে আপনাদের হাতে সঁপে দেওয়া হল, আর আপনারা তাঁকে হত্যা করলেন। মন্দ লোকদের দিয়ে আপনারা তাঁকে ক্রুশের উপর পেরেক বিদ্ধ করলেন। ঈশ্বর জানতেন যে এসব ঘটবে; আর তাই ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা, যা তিনি বহুপূর্বেই নিরূপণ করেছিলেন। 24 যীশু মৃত্যু যন্ত্রণা ভোগ করলেন, কিন্তু ঈশ্বর সেই বিভীষিকা থেকে তাঁকে উদ্ধার করলেন। ঈশ্বর যীশুকে মৃতদের মধ্য থেকে তুলে আনলেন। মৃত্যু যীশুকে তার কবলে রাখতে সক্ষম হল না। 25 কারণ দায়ূদ যীশুর বিষয়ে বলেছিলেন:
‘আমি প্রভুকে সবসময়ই আমার সামনে দেখেছি;
আমাকে স্থির রাখতে তিনি আমার ডানদিকে অবস্থান করছেন।
26 এইজন্য আমার অন্তর আনন্দিত,
আর আমার জিভ উল্লাস করে।
আমার এই দেহও প্রত্যাশায় জীবিত থাকবে।
27 কারণ তুমি তোমার প্রাণ মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করবে না।
তুমি তোমার পবিত্র ব্যক্তিকে ভয় পেতে দেবে না।
28 তোমার সান্নিধ্যে আমার জীবন
তুমি আনন্দে ভরিয়ে দেবে।’(A)
29 “আমার ভাইরা, আমাদের সেই শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষ দায়ূদের বিষয়ে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি যে, তিনি মারা গেছেন ও তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছে, আর আজও তাঁর কবর আমাদের মাঝে আছে। 30 কিন্তু তিনি একজন ভাববাদী ছিলেন এবং জানতেন ঈশ্বর শপথ করে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তাঁর বংশের একজনকে তাঁরই মতো রাজা করে সিংহাসনে বসাবেন।[a] 31 পরে কি হবে তা আগেই জানতে পেরে দায়ূদ যীশুর পুনরুত্থানের বিষয়ে বলেছিলেন:
‘তাঁকে মৃত্যুলোকে পরিত্যাগ করা হয় নি
বা তাঁর দেহ কবরের মধ্যে ক্ষয় প্রাপ্ত হয় নি।’
32 কিন্তু ঈশ্বর মৃত্যুর পর যীশুকেই পুনরুত্থিত করেছেন; আর আমরা সকলে এই ঘটনার সাক্ষী আছি। আমরা সকলে তাঁকে দেখেছি। 33 যীশুকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল; এখন যীশু ঈশ্বরের কাছে তাঁর ডানদিকে অবস্থান করছেন। পিতা যীশুকে পবিত্র আত্মা দিয়েছেন, পিতা তাঁকে সেই পবিত্র আত্মা দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন যীশু সেই পবিত্র আত্মাকে ঢেলে দিলেন, তোমরা এখন তাই দেখছ ও শুনছ। 34 কারণ দায়ূদ স্বর্গারোহন করেন নি, আর তিনি নিজে একথা বলছেন,
‘প্রভু ঈশ্বর আমার প্রভুকে বলছেন;
35 যে পর্যন্ত না আমি তোমার শত্রুদের তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি,
তুমি আমার ডানদিকে বস।’(B)
36 “তাই ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবার নিশ্চিতভাবে জানুক যে যাকে আপনারা ক্রুশবিদ্ধ করেছিলেন, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করেছেন।”
37 লোকেরা এই কথা শুনে খুবই দুঃখিত হল। তারা পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতদের বলল, “ভাইরা, আমরা কি করব?”
38 পিতর তাঁদের বললেন, “আপনারা মন-ফিরান, আর প্রত্যেকে পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হোন, তাহলে আপনারা দানরূপে এই পবিত্র আত্মা পাবেন। 39 কারণ এই প্রতিশ্রুতি আপনাদের জন্য, আপনাদের সন্তানদের জন্য আর যারা দূরে আছে তাদেরও জন্য। আমাদের ঈশ্বর প্রভু তাঁর নিজের কাছে যাদের ডেকেছেন, এই দান তাদের সকলের জন্য।”
40 পিতর তাঁদের আরো অনেক কথা বলে সাবধান করে দিলেন; তিনি তাঁদের অনুনয়ের সুরে বললেন, “বর্তমান কালের মন্দ লোকদের থেকে নিজেদের বাঁচান!” 41 যাঁরা পিতরের কথা গ্রহণ করলেন, তাঁরা বাপ্তিস্ম নিলেন। এর ফলে সেদিন কম বেশী তিন হাজার লোক খ্রীষ্টবিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত হলেন।
বিশ্বাসীবর্গের সহভাগীতা
42 বিশ্বাসীরা প্রায়ই একত্র হয়ে মনোযোগের সঙ্গে প্রেরিতদের শিক্ষা গ্রহণ করতেন। বিশ্বাসীবর্গ নিজেদের মধ্যে সব কিছু ভাগ করে নিতেন এবং একই সঙ্গে আহার ও প্রার্থনা করতেন। 43 প্রেরিতেরা অনেক অলৌকিক ও আশ্চর্য কাজ করতে লাগলেন; প্রত্যেকের অন্তরে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গভীর ভক্তি ছিল। 44 বিশ্বাসীরা সকলে একসঙ্গে থাকতেন এবং সবকিছু নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতেন। 45 তাঁরা তাঁদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে, যাঁর যেমন প্রয়োজন সেই অনুসারে ভাগ করে নিতেন। 46 তাঁরা প্রতিদিন মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে একত্রিত হতেন, একই উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তাঁরা সেখানে যেতেন। তাঁরা তাঁদের বাড়িতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতেন আর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে আনন্দের সঙ্গে খাদ্য গ্রহণ করতেন। 47 বিশ্বাসীরা ঈশ্বরের প্রশংসা করতেন, আর সকলেই তাঁদের ভালোবাসতেন। প্রতিদিন অনেকে উদ্ধার লাভ করছিলেন আর যাঁরা উদ্ধার লাভ করছিলেন তাদেরকে প্রভু বিশ্বাসীবর্গের সঙ্গে যুক্ত করতে থাকলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International