Old/New Testament
অইহুদীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে বিবাহ
9 এসব হয়ে যাবার পর ইস্রায়েলীয় লোকদের নেতারা আমাকে এসে বললেন, “ইষ্রা, ইস্রায়েলের লোকরা এখানে বসবাসকারী অন্যান্য ব্যক্তিদের থেকে নিজেদের পৃথক রেখে বাস করেনি। ইস্রায়েলীয়রা কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরীয় এবং ইমোরীয় প্রভৃতি অন্য জাতির লোকদের অসৎ কার্যকলাপে প্রভাবিত। 2 এইভাবে তারা অন্য বংশের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়। ইস্রায়েলীয় বিশেষ জন বলে গণ্য হবার কথা, কিন্তু এখন অন্তর্বিবাহের দরুণ তাদের অন্য জাতির সঙ্গে মিশ্রণ হয়েছে। ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও প্রশাসকরাই এই ধরণের বিয়ে করে অপরাপরদের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।” 3 আমি যখন একথা জানতে পারলাম, তখন দুঃখ প্রকাশ করবার জন্য আমি আমার পোশাক, চুল, দাড়ি ছিঁড়ে ফেললাম, এবং বিষণ্ন ও অত্যন্ত স্তম্ভিত হয়ে বসে পড়লাম। 4 তখন ধর্মভীরু সমস্ত ব্যক্তি ভয়ে কাঁপতে শুরু করল। ওরা ভয় পেয়েছিল কারণ বন্দীদশা থেকে মুক্তিলাভ করে যেসব ইহুদীরা ফিরে এসেছিল, তারা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত ছিল না। ক্ষুদ্ধ ও বিমূঢ় অবস্থায় আমি বৈকালিক উৎসর্গ অনুষ্ঠান পর্যন্ত বসে থাকলাম। ওই সমস্ত ব্যক্তিরা আমার চারপাশে জড়ো হল।
5 আমি যতক্ষণ ওখানে বসেছিলাম, নিজেকে যতদূর সম্ভব লজ্জিত দেখাতে চেষ্টা করছিলাম। এরপর বৈকালিক প্রার্থনার সময় আমি উঠে দাঁড়ালাম। নোংরা ও ছেঁড়া পরিধেয় সহ আমি হাঁটু গেড়ে বসে, দুহাত প্রসারিত করে আমার 6 প্রভু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বললাম:
“হে আমার ঈশ্বর, তোমার দিকে ফিরে তাকাতেও আমি লজ্জা বোধ করছি। আমি লজ্জিত কারণ আমাদের পাপকর্ম আমাদের মাথা ছাড়িয়ে গেছে। আমাদের অপরাধ স্বর্গ পর্যন্ত পৌঁছেছে। 7 আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমরা বহু পাপে পাপী। আমাদের পাপের জন্য আমাদের রাজাদের, যাজকদের এবং আমাদের শাস্তিভোগ করতে হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশী শাসক আমাদের লুঠ করে আমাদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছে। ঐ বিদেশী আক্রমণকারীরা আমাদের সম্পদ লুঠ করেছে। আজ পর্যন্ত সেই একই পুরানো ঘটনা ঘটে চলেছে।
8 “কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য তুমি আমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেছ। তুমি আমাদের বন্দী ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে কয়েক জনকে এই পবিত্রস্থানে এসে বাস করার সুযোগ করে দিয়েছ। প্রভু, তুমি আমাদের দাসত্ব থেকে এক নতুন জীবন দান করেছ। 9 হ্যাঁ, আমরা দাস ছিলাম, কিন্তু তুমি আমাদের দাস থাকতে দেবে না বলে পারস্যের রাজাদের দয়ালু করে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ প্রকাশ করেছ। তোমার মন্দিরটি যেটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, সেটি গড়বার জন্য তুমি আমাদের নবজীবন দান করেছ। যিহূদা ও জেরুশালেমকে রক্ষার্থে তুমি আমাদের একটি দেওয়াল তুলতে সাহায্য করেছ।
10 “হে ঈশ্বর, তোমাকে আমরা আর কি বলতে পারি? আমরা আবার তোমার প্রতি অবাধ্য হয়েছি। 11 হে ঈশ্বর, তুমি তোমার ভাববাদীদের মাধ্যমে আমাদের আদেশ করেছ: ‘যে ভূখণ্ডতে তোমরা আপনজ্ঞানে থাকতে চলেছ সেটি ধ্বংসাবশেষ মাত্র। এই ভূখণ্ডটি এখানে বসবাসকারী বাসিন্দাদের অসৎ কর্মের জন্য ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা এই ভূখণ্ডকে অপবিত্র করেছে। 12 অতএব, ইস্রায়েলের লোকরা, তোমরা যেন তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের ওই সব লোকদের সন্তান-সন্ততিকে বিয়ে করতে দিও না। ওদের সঙ্গে কথাও বলো না। আমার আদেশ শুনলে তোমরা বলিষ্ঠ হয়ে উঠবে এবং এই ভূখণ্ডের যাবতীয় ভালো জিনিষ উপভোগ করতে পারবে এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের হাতে এই ভূখণ্ডটি তুলে দিতে পারবে।’
13 “আমরা নিজেরাই এই অবস্থার জন্য দায়ী। আমরা পাপ আচরণ করেছি এবং আমরা অপরিসীম দোষী। কিন্তু তুমি আমাদের অনেক কম দণ্ডে দণ্ডিত করেছ। আমাদের অনেক মারাত্মক পাপের জন্য আমাদের খুব কঠিন শাস্তি প্রাপ্য ছিল। তা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বন্দীদশা থেকে মুক্তি দিয়েছ। 14 অতএব তোমার আদেশ আমাদের অমান্য করা উচিৎ নয়। আমাদের ওই সমস্ত লোকদের সঙ্গে অন্তর্বিবাহ করা উচিৎ নয় যারা খারাপ কাজ করে। আমরা জানি যে আমরা যদি ওদের সঙ্গে বিবাহ সম্পর্ক চালিয়ে যাই, তাহলে, হে ঈশ্বর, তুমি আমাদের ওপর খুব রেগে যাবে এবং যতদিন না সমস্ত ইস্রায়েলীয় নির্বংশ হবে তত দিন আমাদের ধ্বংস করবে।
15 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি এত ভালো যে আমরা এত দোষ করা সত্ত্বেও তুমি আমাদের কয়েক জনকে বেঁচে থাকতে দিয়েছ। আমরা দোষী, তাই সে কারণে আমাদের কারোরই তোমার সামনে দাঁড়াবার কথা নয়।”
লোকরা তাদের পাপ স্বীকার করল
10 প্রভুর মন্দিরের সামনে কাঁদতে কাঁদতে ইষ্রা প্রার্থনা করছিলেন ও দোষ স্বীকার করছিলেন। সেই সময়ে বহু ইস্রায়েলীয় নারী, পুরুষ ও শিশু তাঁর চারপাশে জড়ো হয়েছিল। তারাও কাঁদছিল। 2 তখন এলামের একজন উত্তরপুরুষ যিহীয়েলের পুত্র শখনিয়, ইষ্রাকে বলল, “আমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করেছি এবং আমাদের আশেপাশে বসবাসকারী অন্যান্য জাতির বংশের লোকদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপন করেছি, তবুও আমার মনে হয় এখনো ইস্রায়েলের সব আশা হারিয়ে যায়নি। 3 এখন আমরা ঈশ্বরের সামনে একটি চুক্তি করি যে এইসব বিজাতীয় স্ত্রীলোক ও তাদের সন্তানদের আমরা ফেরৎ পাঠিয়ে দেব। ইষ্রার উপদেশ মেনে চলবার জন্য ও যেসব ব্যক্তি আমাদের ঈশ্বরের প্রতি আস্থাবান তাঁদের অনুসরণ করবার জন্য আমরা এই কাজ করব এবং আমরা ঈশ্বরের বিধান মেনে চলবো। 4 ইষ্রা, আপনি উঠে দাঁড়ান এবং শক্ত হোন। ঈশ্বরের বিধির প্রতি আমাদের আস্থাবান করে তোলার যে ব্রত আপনি নিয়েছেন তা সফল করে তুলতে আমরা আপনাকে সহায়তা করব।”
5 ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী প্রধান যাজকগণ, লেবীয় ও ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের শপথ গ্রহণ করালেন। 6 এরপর ইষ্রা ইলিয়াশীবের পুত্র যিহোহাননের ঘরে প্রবেশ করলেন। যেটুকু সময় ইষ্রা ওখানে ছিলেন, উনি কোন খাবার খেলেন না বা কিছু পান করলেন না, কারণ প্রত্যাগত বন্দীদের ঈশ্বরের বিধির প্রতি অনাস্থা বশতঃ তিনি তখনও দুঃখিত ও শোকসন্তপ্ত ছিলেন। 7 অতঃপর তিনি ইহুদী ও জেরুশালেমের সর্বত্র একটি বার্তা পাঠালেন। সেই বার্তায় তিনি বন্দীত্ব থেকে মুক্তি লাভ করা সমস্ত ইহুদীদের জেরুশালেমে এসে সমবেত হতে বললেন। 8 যে সব ব্যক্তি তিনদিনের মধ্যে এসে উপস্থিত হবে না তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং সেই ব্যক্তিকে সে যে দলের সঙ্গে বাস করে তার থেকেও বহিষ্কার করা হবে। প্রধান আধিকারিক ও নেতৃবৃন্দরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন।
9 তিন দিনের মধ্যে ইহুদী ও বিন্যামীনের পরিবারের সমস্ত ব্যক্তি জেরুশালেমে জড়ো হল। এবং নবম মাসের কুড়ি দিনের মাথায় তারা মন্দির প্রাঙ্গণে সমবেত হল। তারা সকলে এই সমাবেশের কারণে ও প্রবল বর্ষণের জন্য কাঁপছিল। 10 তখন ইষ্রা উঠে দাঁড়ালেন এবং সেই সমাবেশকে সম্ভাষণ করলেন, “তোমরা সকলে ঈশ্বরের বিধি অমান্য করে তাঁর প্রতি অনাস্থা দেখিয়েছিলে এবং তোমরা বিজাতীয় নারীদের বিয়ে করে ইস্রায়েলকে আরো দোষী করেছ। 11 এখন তোমরা ঈশ্বরের সামনে তোমাদের পাপ স্বীকার করো। প্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, তাঁর বিধি তোমাদের অবশ্য পালনীয়। এই ভূখণ্ডে তোমাদের আশেপাশের বিজাতীয় ব্যক্তি বর্গের সঙ্গে তোমরা সমস্ত রকম সম্পর্ক ত্যাগ কর এবং তোমাদের বিদেশী স্ত্রীদের থেকে তোমরা নিজেদের আলাদা করে নাও।”
12 তখন ওখানে সমবেত সমস্ত ব্যক্তি সমস্বরে চিৎকার করে ইষ্রাকে বলল: “আপনি ঠিকই বলেছেন। আপনি যা বলছেন তা আমাদের অবশ্যই পালন করা উচিৎ। 13 এখানে অনেক ব্যক্তি আছে আর এই বৃষ্টির মধ্যে আমাদের পক্ষে বাইরে থাকা সম্ভব নয়। এই সমস্যাটির সমাধানও দু-একদিনের মধ্যে সম্ভব নয় কারণ আমরা গুরুতর পাপ আচরণ করেছি। 14 আমাদের নেতারাই আমাদের পুরো দলের জন্য এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। তারপর তাদের বিদেশী স্ত্রীলোকদের, যাদের তারা বিয়ে করেছিল, তাদের ফেরৎ পাঠাবে, তারা তাদের জন্য নির্দ্দিষ্ট সময়ে জেরুশালেমে আসবে। প্রতিটি শহর থেকে প্রধান নেতারা এবং বিচারকগণ ঐ লোকদের সঙ্গে আসবেন। তাঁরা এরকম করে যাবেন যতক্ষণ না সবাই এসে যাবে। তাহলে ঈশ্বর আমাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হবেন।”
15 অসাহেলের পুত্র যোনাথন, তিক্বের পুত্র যহসিয়, মশুল্লম ও লেবীয় শব্বথয় এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করল।
16 অতঃপর জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তনকারী ইহুদীরা পরিকল্পনাটিকে গ্রহণ করতে সম্মত হল। যাজক ইষ্রা পরিবার নেতাদের বেছে নিলেন, প্রতিটি পরিবারবর্গ থেকে একটি করে মানুষের নাম বাছা হল এবং তাঁরা দশম মাসের প্রথম দিনে একত্র হয়ে প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করলেন। 17 দশম মাসের প্রথম দিনে ওই বাছাই করা ব্যক্তিগণ যে সব লোকরা অন্তর্বিবাহ করেছে তাদের সম্পর্কে পর্যালোচনা করবার জন্য একসঙ্গে বসলেন।
বিজাতীয় স্ত্রীলোকদের বিবাহ করা ব্যক্তিদের তালিকা
18 নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা যে সব যাজক বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল, তাদের উত্তরপুরুষ:
যিহোষাদকের পুত্র যেশূয় ও তার ভাইরা মাসেয়, ইলীয়েষর, যারিব ও গদলিয়। 19 এঁরা সকলে তাঁদের স্ত্রীদের পরিত্যাগ করতে সম্মত হলেন। তারপর তাঁরা পাপস্খালনের বলিদানের জন্য একটি করে মেষও উৎসর্গ করেছিলেন।
20 হনানি ও সবদিয় ছিল ইম্মেরের পুত্র।
21 হারীমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মাসেয়, এলিয়, শময়িয়, যিহীয়েল ও উষিয়;
22 পশহূরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: ইলিয়ৈনয়, মাসেয়, ইশ্মায়েল, নথনেল, যোষাবদ ও ইলিয়াসা;
23 লেবীয়দের মধ্যে:
যোষাবদ, শিমিয়ি ও কলায় বা কলীট, পথাহিয়, যিহূদা ও ইলিয়েষর;
24 গায়কদের মধ্যে ইলীয়াশীব;
দ্বারপালদের মধ্যে শল্লুম, টেলম ও ঊরি;
25 ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে:
পরিয়োসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে রমিয়, যিষিয়, মল্কিয়, মিয়ামীন, ইলিয়াসর, মল্কিয় ও বনায়;
26 এলমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনিয়, সখরিয়, যিহীয়েল, অব্দি, যিরেমোৎ ও এলিয়।
27 সত্তূর পুত্রদের মধ্যে ইলিয়ৈনয়, ইলিয়াশীব, মত্তনিয়, যিরেমোৎ, সাবদ ও অসীসা;
28 বেবয়ের পুত্রদের মধ্যে যিহোহানন, হনানিয়, সব্বয় ও অৎলয়;
29 বানির পুত্রদের মধ্যে মশুল্লম, মল্লূক, অদায়া, যাশূব, শাল ও যিরমোৎ।
30 পহৎ—মোয়াবের পুত্রদের মধ্যে অদ্ন, কলাল, বনায়, মাসেয়, মত্তনিয়, বৎসলেল, বিন্নূয়ী ও মনঃশি;
31 হারীমের পুত্রদের মধ্যে ইলিয়েষর, যিশিয়, মল্কিয়, শময়িয়, শিমিয়োন, 32 বিন্যামীন, মলূ্লূক, শমরিয়;
33 হশূমের পুত্রদের মধ্যে মত্তনয়, মত্তত্ত, সাবদ, ইলীফেলট, যিরেময়, মনঃশি ও শিমিয়ি;
34 বানির পুত্রদের মধ্যে মাদয়, অম্রাম, ঊয়েল, 35 বনায়, বেদিয়া, কলূহূ, 36 বনিয়, মরেমোৎ, ইলিয়াশীব, 37 মত্তনিয়, মত্তনয় এবং যাসয়,
38 বিন্নূয়ীর পুত্রদের মধ্যে শিমিয়ি, 39 শেলিমিয়, নাথন, অদায়া, 40 মকদ্বয়, শাশয়, শারয়, 41 অসরেল, শেলিমিয়, শমরিয়, 42 শল্লুম, অমরিয় এবং যোষেফ;
43 নবোর উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিয়ীয়েল, মত্তিথিয়, সাবদ, সবীনঃ, যাদয় যোয়েল ও বনায়।
44 এরা সকলেই বিদেশী স্ত্রীলোকদের বিবাহ করেছিল এবং এদের মধ্যে অনেকের স্ত্রী-ই সন্তানদের জন্ম দিয়েছিল।
লূকের লেখা অন্য পুস্তক
1 প্রিয় থিয়ফিল,
আমার প্রথম বইটিতে যীশু যে সব কাজ করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন তার বিবরণ ছিল। 2 আমি যা লিখেছি, তাতে শুরু থেকে তাঁর স্বর্গারোহণের দিন পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন তার সব বিবরণ আছে। স্বর্গারোহণের পূর্বে যীশু তাঁর মনোনীত প্রেরিতদের, পবিত্র আত্মার সাহায্যে তাদের কি করণীয় তা জানিয়েছিলেন। 3 মৃত্যুর পর যীশু, তাঁর প্রেরিতদের কাছে দেখালেন যে তিনি জীবিত এবং অনেক পরাক্রমী কার্য সাধন করে তিনি এর প্রমাণ দিলেন। মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের পর 40 দিনের মধ্যে প্রেরিতরা যীশুকে বহুবার দেখেছিলেন। এই সময়ে যীশু তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে নানা কথা বলেছিলেন। 4 আর এক সময় যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে আহার করছিলেন, তখন আদেশ দিয়েছিলেন, যেন তাঁরা জেরুশালেম ছেড়ে না যান। যীশু বলেছিলেন, “পিতা তোমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যে বিষয়ে এর আগেও আমি তোমাদের জানিয়েছিলাম, তোমরা সেই প্রতিশ্রুত বিষয় পাবার অপেক্ষায় জেরুশালেমে থেকো। 5 কারণ যোহন জলে বাপ্তাইজ করতেন, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে।”
যীশুকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হল
6 এরপর প্রেরিতরা একত্র হয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, এই সময় আপনি কি ইস্রায়েলকে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?”
7 তিনি তাঁদের বললেন, “পিতা নিজেই কেবল সময় ও তারিখগুলি নির্ধারণ করেন, এসব বিষয় তোমরা জানতে পারবে না; 8 কিন্তু যখন পবিত্র আত্মা তোমাদের কাছে আসবেন, তখন তোমরা শক্তি পাবে আর তোমরা আমার সাক্ষী হবে। লোকদের কাছে তোমরা আমার কথা বলবে। প্রথমে তোমরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে সাক্ষ্য দেবে, তারপর সমগ্র যিহূদিয়া ও শমরিয়ায়, এমনকি জগতের শেষ সীমানা পর্যন্ত তোমরা আমার কথা বলবে।”
9 এই কথা বলার পর প্রেরিতদের চোখের সামনে তাঁকে আকাশে তুলে নেওয়া হল। আর এক খানা মেঘ তাঁকে তাঁদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল। 10 যীশু যখন যাচ্ছেন, আর প্রেরিতরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন, ঠিক সেই সময় সাদা ধবধবে পোশাক পরা দুই ব্যক্তি তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। 11 সেই দুই ব্যক্তি প্রেরিতদের বললেন, “হে গালীলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? এই যে যীশু, যাকে তোমাদের সামনে থেকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, তাঁকে যে ভাবে তোমরা স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক সেই ভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।”
এক নতুন প্রেরিতের মনোনয়ন
12 এরপর তাঁরা জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। জেরুশালেম থেকে পাহাড়টির দূরত্ব ছিল এক বিশ্রামবারের পথ অর্থাৎ প্রায় আধ মাইল। 13 এরপর প্রেরিতরা শহরে প্রবেশ করে তাঁরা যে বাড়িতে থাকতেন, তার উপরের তলার কামরায় গেলেন। এই প্রেরিতদের নাম ছিল; পিতর, যোহন, যাকোব, আন্দ্রিয়, ফিলিপ, থোমা, বর্থলময়, মথি, (আলফেয়ের ছেলে) যাকোব, শিমোন, যাকে দেশভক্ত বলা হত এবং (যাকোবের ছেলে) যিহূদা।
14 প্রেরিতরা সকলেই একসঙ্গে সেখানে একই উদ্দেশ্যে সর্বদা প্রার্থনা করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন স্ত্রীলোক, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইরা।
15 ঐ দিনগুলিতে যখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করছিলেন, সেখানে প্রায় 120 জন উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় পিতর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 16-17 “ভাইরা যিহূদা সম্পর্কে পবিত্র আত্মা দায়ূদের মুখ দিয়ে যে কথা বহুপূর্বেই বলেছিলেন, শাস্ত্রের সেই কথা পূর্ণ হওয়ার প্রয়োজন ছিল। যিহূদাই সেই ব্যক্তি যে যীশুর গ্রেপ্তারকারীদের পরিচালনা দিয়েছিল। যিহূদা ছিল আমাদেরই একজন, যে আমাদের পরিচর্য্যা কাজের সহভাগীও ছিল।”
18 (এই লোক তার এই অন্যায় কাজের দ্বারা অর্থ রোজগার করে তাই দিয়ে এক টুকরো জমি কিনেছিল; কিন্তু সে মাথাটা নীচু করে মাটিতে পড়ল, আর তার পেট ফেটে ভেতরের নাড়ী-ভুঁড়ি সব বেরিয়ে পড়ল। 19 যারা জেরুশালেমে বাস করে, তারা সকলেই একথা জানে। তাই সেই জমিটিকে তাদের ভাষায় বলে হকলদামা, যার অর্থ, “রক্তের ভূমি।”)
20 বাস্তবিক, “গীতসংহিতায় লেখা আছে:
‘তার গৃহ যেন পরিত্যক্ত হয়;
কেউ যেন তার মধ্যে বাস না করে।’(A)
আরও লেখা আছে:
‘আর অন্য কেউ তার স্থান দখল করুক।’(B)
21-22 “তাই যোহন যখন বাপ্তাইজ করতে শুরু করেন, সেই সময় থেকে প্রভু যীশুর স্বর্গারোহণের সময় পর্যন্ত যতদিন প্রভু যীশু আমাদের সঙ্গে ছিলেন, সেই দিনগুলিতে যাঁরা সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে আমাদের মনোনীত করা প্রয়োজন। যিনি আমাদের দলে যোগদান করবেন, তাঁকে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে।”
23 তখন প্রেরিতরা দুজন লোককে উপস্থিত করলেন, যোষেফ, যাকে বার্শব্বা বলে ডাকে, যার অপর নাম যুষ্ট, আর মত্তথিয়কে। 24-25 এরপর তাঁরা প্রার্থনা সহকারে বললেন, “প্রভু, তুমি সকলের অন্তঃকরণ জান। এই দুজনের মধ্যে কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখিয়ে দাও। যিহূদা তার নিজের জায়গায় যাবার জন্য প্রেরিতরূপে এই সেবার কাজ ত্যাগ করে গেছে। তার জায়গায় কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখাও।” 26 এরপর তাঁরা ঐ দুজনের জন্য ঘুঁটি চাললেন আর মত্তথিয়ের নাম উঠল। এইভাবে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে প্রেরিত বলে গন্য হলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International