Old/New Testament
দারিয়াবসের আদেশ
6 তখন রাজা দারিয়াবস তাদের কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাচীন রাজাদের নথিপত্র খুঁজে দেখার নির্দেশ দিলেন। এই সমস্ত নথিপত্র বাবিলে কোষাগারে রক্ষিত হত। 2 ভালভাবে অনুসন্ধান করে (মাদীয় প্রদেশের অক্মথা) দুর্গে প্রাচীন তুলোট কাগজে লেখা একটি সরকারি নথি পাওয়া গেল যাতে রাজা কোরস জেরুশালেমে মন্দির নির্মাণের জন্য আদেশ দিয়েছিলেন।
নথিতে এইরূপে লেখা ছিল: 3 কোরস তাঁর রাজা হওয়ার প্রথম বছরে জেরুশালেমের মন্দির সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদেশটি ছিল এইরূপ:
ঈশ্বরের জন্য মন্দিরটি আবার বানানো হোক্। এই মন্দিরে ঈশ্বরের জন্য উৎসর্গ নিবেদন করা হবে। এই মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করা হোক্। মন্দিরটি 90 ফুট চওড়া ও উচ্চতায় 90 ফুট হবে। 4 মন্দিরকে ঘিরে তিন সারি বড় পাথরের দেওয়াল ও একসারি বড় কাঠের গুঁড়ির দেওয়াল থাকবে। মন্দির নির্মাণের ব্যয় বহন হবে রাজার কোষাগার থেকে। 5 নবূখদ্নিৎসর যে সব সোনা এবং রূপো লুণ্ঠন করে বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন সেগুলি সব অবশ্যই ঈশ্বরের মন্দিরে ফেরৎ পাঠাতে হবে।
6 আমি, দারিয়াবস,
ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়কে, শথর-বোষণয়কে ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের জেরুশালেম থেকে সরে যেতে আদেশ দিচ্ছি। 7 এই ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করবার চেষ্টা করো না। কর্মীদের বিরক্ত করো না। ইহুদীদের রাজ্যপাল এবং ইহুদীদের নেতারা আদিস্থানের ওপর মন্দির পুনর্নির্মাণ করুক।
8 এখন আমি এই আদেশ করছি যে তোমরা এসব কাজ ইহুদী নেতাদের জন্য করবে, যারা মন্দির নির্মাণের কাজে লিপ্ত। মন্দির নির্মাণের খরচ আসবে রাজার কোষাগার থেকে এবং ঐ অর্থ আসবে ফরাৎ নদীর পশ্চিম পারের অঞ্চলে সংগৃহীত কর থেকে। এইসব নির্দেশগুলি তাড়াতাড়ি পালন কর যাতে কাজটি বন্ধ না হয়ে যায়। 9-10 স্বর্গের ঈশ্বরের মন্দিরে উৎসর্গ করবার জন্য যা যা লাগবে সবই ওদের দাও। জেরুশালেমের যাজকদের যদি ষাঁড়, মেষ, পাঁঠা, এমন কি গম, নুন, দ্রাক্ষারস অথবা তেল এসবের প্রয়োজন হয় তবে এসবই ওদের প্রত্যেক দিন দিও; এর যেন অন্যথা না হয়। তাহলে তারা হয়ত স্বর্গের ঈশ্বরকে সুগন্ধ সম্বলিত হোম উৎসর্গ করবে এবং ঈশ্বরের কাছে আমার ও আমার পুত্রদের জন্য প্রার্থনা করবে।
11 আমি এও আদেশ দিচ্ছি, কেউ যদি এই আদেশ বদলে দেয় তবে তার বাড়ীর থেকে একটি কড়ি কাঠ খুলে নেওয়া হবে, এবং সেই ব্যক্তিকে ঐ কড়ি কাঠে ফাঁসি দেওয়া হবে এবং তার বাড়ীটি ধ্বংস করে একটি বারোয়ারী শৌচালয়ে পরিনত করা হবে।
12 ঈশ্বর তাঁর নাম জেরুশালেমে রেখে দেবেন। কোন রাজা অথবা দেশ অথবা কেউ যদি এই আদেশ বদলাবার চেষ্টা করে অথবা জেরুশালেমে মন্দির ধ্বংস করবার চেষ্টা করে তাহলে যেন ঈশ্বর তাদের পরাজিত ও ধ্বংস করেন।
আমি, দারিয়াবস এই আদেশ দিয়েছি। এই আদেশ অতি সত্ত্বর এবং সম্পূর্ণভাবে পালন করা চাই।
মন্দির নির্মাণের সমাপ্তি ও উৎসর্গীকরণ
13 তখন ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যপাল তত্তনয়, শথর-বোষণয় ও তাঁর লোকরা রাজা দারিয়াবসের আদেশ তাড়াতাড়ি ও পুরোপুরিভাবে মেনে নিলেন। 14 ইহুদীদের প্রবীণরা ভাববাদী হগয় ও ইদ্দোর পুত্র সখরিয়ের ভবিষ্যৎ বাণীর দ্বারা অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত হয়ে মন্দির নির্মাণের কাজ চালিয়ে গেলেন। ইস্রায়েলের ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে এবং পারস্যের বিভিন্ন রাজা কোরস, দারিয়াবস এবং অর্তক্ষস্তের নির্দেশ পালন করে তাঁরা মন্দির নির্মাণের কাজে সাফল্যলাভ করেছিলেন। 15 দারিয়াবসের রাজত্বের ষষ্ঠ বছরের অদর মাসের তৃতীয় দিনে মন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছিল।
16 ইস্রায়েলের বাসিন্দারা মন্দির উৎসর্গীকরণের উৎসবটি আনন্দ সহকারে পালন করল। বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়া সমস্ত যাজকগণ ও লেবীয়রাও উৎসবে যোগদান করলেন।
17 100টি ষাঁড়, 200টি মেষ, 400টি পুরুষ মেষশাবক বলি দিয়ে মন্দিরটিকে প্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত করা হল। এছাড়াও ইস্রায়েলের পাপস্খালনের জন্য 12টি ছাগল বলি দেওয়া হল। ইস্রায়েলের 12টি পরিবারের প্রত্যেকটির জন্য 12টি ছাগল উৎসর্গ করা হয়েছিল। 18 এরপর তারা জেরুশালেমের মন্দিরে ঈশ্বরের সেবার জন্য তাদের দল অনুযায়ী মোশির পুস্তকে লিপিবদ্ধ নির্দেশ অনুযায়ী যাজকগণ ও লেবীয়দের বেছে নিলেন।
নিস্তারপর্ব
19 প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের মাথায় বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীরা নিস্তারপর্ব পালন করলেন। 20 যাজক ও লেবীয়রা সকলে পরিচ্ছন্ন হয়ে বিশেষ দিনটির জন্য প্রস্তুত হলেন। লেবীয়রা বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইহুদীদের সকলের জন্য, তাঁদের নিজেদের জন্য এবং তাঁদের যাজক ভাইদের জন্য নিস্তারপর্বের উৎসর্গীকৃত মেষটিকে বলি দিলেন। 21 এরপর বন্দীদশা থেকে ইস্রায়েলে ফিরে আসা সকলে মিলে সেই মেষের মাংস গ্রহণ করলেন। ঐ শহরের অন্য লোকরাও ঐ দেশেরই বাসিন্দা অন্য লোকদের অপবিত্রতা থেকে নিজেদের পবিত্র করে ঐ মেষের মাংস গ্রহণ করলেন। তাঁরা সকলে ঈশ্বরের সামনে প্রার্থনা করার জন্য নিজেদের পবিত্র করলেন। 22 এই সমস্ত ব্যক্তিরা সাতদিন ধরে মহানন্দে খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন করলেন। ঈশ্বর তাদের সকলকে আনন্দিত করে তুললেন কারণ তিনি অশূররাজের মনোবৃত্তিতে পরিবর্তন এনেছিলেন এবং তার ফলে অশূর-রাজ[a] তাঁদের ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজে সমর্থন জানিয়েছিলেন।
ইষ্রা জেরুশালেমে এলেন
7 এসব ঘটনা ঘটে যাবার পর, পারস্যের রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে ইষ্রা বাবিল থেকে জেরুশালেমে এলেন। ইষ্রা ছিলেন সরায়ের পুত্র। সরায় অসরিয়ের, অসরিয় হিল্কিয়ের, 2 হিল্কিয় শল্লুমের, শল্লুম সাদোকের, সাদোক অহীটূবের, 3 অহীটূব অমরিয়ের, অমরিয় অসরিয়ের, অসরিয় মরায়োতের, 4 মরায়োৎ সরহিয়ের, সরহিয় উষির, উষি বুক্কির পুত্র। 5 বুক্কি ছিলেন অবীশূয়ের পুত্র, অবীশূয় ছিলেন পীনহসের পুত্র, পীনহস ছিলেন ইলিয়াসরের পুত্র, এবং ইলিয়াসর ছিলেন প্রধান যাজক হারোণের পুত্র।
6 শিক্ষক ইষ্রা, বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন। মোশির ঈশ্বরদত্ত অনুশাসন সম্পর্কে তাঁর সুগভীর ব্যুৎপত্তি ছিল। রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে তাঁর অনুরোধ অনুসারে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিষ দিয়েছিলেন কারণ প্রভু ইষ্রার সঙ্গে ছিলেন। 7 ইস্রায়েলের বহু মানুষ যেমন, যাজকগণ, লেবীয়গণ, গীতকারগণ, দ্বাররক্ষীগণ, প্রভৃতি ব্যক্তিরা ইষ্রার সঙ্গে ইস্রায়েলে এসেছিলেন। এই সমস্ত ব্যক্তিরা রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষে জেরুশালেমে এসে পৌঁছেছিলেন। 8 ইষ্রা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষের পঞ্চম মাসে এসেছিলেন। 9 ইষ্রা ও তাঁর দল ওই বছরের প্রথম মাসে বাবিল ত্যাগ করে এবং পঞ্চম মাসের প্রথম দিন জেরুশালেমে এসে উপস্থিত হন। 10 ইষ্রা প্রভুর বিধিগুলি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জনের জন্য তাঁর জীবনের সমস্ত সময় ব্যয় করেন। তিনি ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর বিধি ও আদেশগুলি শেখাতে ও সম্পাদন করাতে চেষ্টা করেছিলেন।
ইষ্রাকে রাজা অর্তক্ষস্তের চিঠি
11 ইষ্রা ছিলেন একজন যাজক ও শিক্ষক যাঁর ইস্রায়েলের প্রতি প্রদত্ত ঈশ্বরের আদেশ ও বিধি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ছিল। রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন:
12 রাজা অর্তক্ষস্তের কাছ থেকে:
যাজক ইষ্রা, যিনি স্বর্গের প্রভুর বিধির একজন শিক্ষক,
তাঁকে রাজা অর্তক্ষস্তের অভিনন্দন!
13 আমি এই আদেশ দিচ্ছি: যে কোন ইস্রায়েলীয়, কোন যাজক অথবা যে কোন লেবীয় যারা আমার রাজত্বে বসবাস করে, তারা কেউ যদি ইষ্রার সঙ্গে জেরুশালেমে যেতে চায় তো যেতে পারে।
14 ইষ্রা, তোমাকে আমি ও আমার সাতজন মন্ত্রীর দায়িত্ব দিলাম, তুমি অতি অবশ্য যিহূদা ও জেরুশালেমে গিয়ে স্বয়ং পর্যবেক্ষণ করবে, সেখানে তোমার ব্যক্তিবর্গ ঈশ্বরের বিধিগুলি কতদূর পালন করছে। আর সেই বিধি তো তোমার সঙ্গেই আছে।
15 আমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য তোমার সঙ্গে যে সোনা ও রূপো দিলাম, তুমি তা জেরুশালেমে ঈশ্বরের জন্য নিয়ে যাবে। 16 এছাড়াও, তোমাকে যদি কেউ জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য উপহার দিতে চায় এবং তোমার লোকেদের এবং বাবিলের যে কোন প্রদেশে বসবাসকারী যাজকগণ ও লেবীয়দের সব উপহারও তোমাকে সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হবে।
17-20 এই সমস্ত অর্থ দিয়ে তুমি বৃষ, মেষ ও মেষশাবক এবং শস্য ও পানীয় কিনবে। অতঃপর জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের বেদীতে এই সমস্ত নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে। তুমি এবং অন্যান্য ইহুদীরা বাকী সোনা ও রূপো যেমন খুশী খরচ করতে পারো, কিন্তু এমনভাবে খরচ করবে যাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন। এ সমস্ত জিনিষ জেরুশালেমে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে যাবে। এগুলো সব প্রভুর উপাসনার জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া মন্দিরের প্রয়োজনে আর যা কিছু লাগবে, রাজকোষ থেকে অর্থ চেয়ে কিনে নেবে।
21 আমি, রাজা অর্তক্ষস্ত, ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের যেসব ব্যক্তিবর্গের কাছে রাজকোষের অর্থ থাকে, তাদের নির্দেশ দিচ্ছি, ইষ্রার যখন যা অর্থের প্রয়োজন হয় তা যেন তাঁকে দেওয়া হয় কারণ তিনি যাজক ও স্বর্গের ঈশ্বরের বিধিগুলির একজন শিক্ষক। 22 আপাতত তাঁকে 3 3/4 টন রূপো, 600 বুশেল গম, 600 গ্যালন দ্রাক্ষারস, 600 গ্যালন জলপাই তেল ও পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ দেওয়া হোক্। 23 স্বর্গের ঈশ্বর ইষ্রাকে যা কিছু নিতে আদেশ দিয়েছেন তা যেন তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া হয়। আমি আমার সন্তান ও রাজত্বের বিরুদ্ধে স্বর্গের ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করতে চাই না, সুতরাং প্রভুর মন্দিরের জন্য এইসব নির্দেশগুলি যেন পালন করা হয়।
24 হে আমার দেশবাসীগণ, আমি তোমাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই যে যাজকগণ, লেবীয়গণ, গায়ক, দ্বাররক্ষী, মন্দিরের সেবাদাস ও ঈশ্বরের মন্দিরের অন্য যে কোন কর্মীর কাছ থেকে কর গ্রহণ অবৈধ। রাজাকে সম্মান দেখানোর জন্য প্রভুর দাসদের কোন কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 25 হে ইষ্রা, ঈশ্বর ও তাঁর বিধি সম্পর্কে তোমার যথেষ্ট জ্ঞান আছে। সুতরাং ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের লোকদের বিচার ব্যবস্থা ও শাসনকর্ম দেখার জন্য, আমি তোমাকে তোমার পছন্দ অনুযায়ী শাসনকর্তা ও বিচারকবর্গ নিয়োগের ক্ষমতা দিলাম। ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তোমার প্রভুর বিধি অনুযায়ী এই অঞ্চলের বিচারবিভাগীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পাদন করবেন। 26 এমন কেউ যদি থাকেন, যে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে অবগত নয় তাহলে ঐ বিচারকবর্গ তাকে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দান করবে। কোন ব্যক্তি যদি বিধিগুলি লঙ্ঘন করে, তাহলে তাকে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড, নির্বাসন বা কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হবে বা জরিমানা করা হবে।
ইষ্রা ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন
27 প্রভু মহিমাময়, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর! জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের জন্য ঈশ্বর রাজার হৃদয়ে তাঁর অভিলাষ স্থাপন করলেন। 28 রাজা তাঁর মন্ত্রীবর্গ ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রভু আমার প্রতি তাঁর সত্যিকারের ভালবাসা অভিব্যক্ত করেছিলেন। প্রভু আমার সহায় হয়েছিলেন এবং তাই আমি সাহসী হয়ে আমার সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের একত্রিত করেছিলাম।
ইষ্রার সঙ্গে প্রত্যাবর্তনকারী নেতাদের তালিকা
8 রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে যে সব পরিবারের প্রধানরা আমার সঙ্গে বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন নীচে তাঁদের নামের তালিকা দেওয়া হল:
2 পীনহসের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: গের্শোম; ঈথামরের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: দানিয়েল; দায়ূদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে: হটূশ,
3 শখনিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে পরোশ, সখরিয় ও আরো 150 জন পুরুষ;
4 পহৎ মোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে সখরিয়র পুত্র ইলীয়ৈনয় ও আরো 200 জন পুরুষ;
5 জট্টর উত্তরপুরুষদের মধ্যে মহসীয়েলের সন্তান শখনিয় ও আরো 300 জন পুরুষ;
6 আদীনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যোনাথনের পুত্র এবদ ও আরো 50 জন পুরুষ;
7 এলমের উত্তরপুরুষদের মধ্যে অথলিয়ের পুত্র যিশায়াহ ও আরো 70 জন পুরুষ;
8 শফটিয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে মীখায়েলের পুত্র সবদিয় ও আরো 80 জন পুরুষ;
9 যোয়াবের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিহিয়েলের পুত্র ওবদিয় ও আরো 218 জন পুরুষ;
10 বানির উত্তরপুরুষদের মধ্যে যোষিফিয়ের পুত্র শলোমীত ও আরো 160 জন পুরুষ;
11 বেবয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে বেবয়ের পুত্র সখরিয় ও আরো 28 জন পুরুষ;
12 অস্গদের উত্তরপুরুষদের মধ্যে হকাটনের পুত্র যোহানন ও আরো 110 জন পুরুষ;
13 অদোনীকামের শেষ উত্তরপুরুষদের মধ্যে ইলীফেলট, যিয়ূয়েল, শময়িয় ও আরো 60 জন পুরুষ,
14 এবং বিগ্বয়ের উত্তরপুরুষদের মধ্যে ঊথয়, সব্বূদ ও তার সঙ্গী 70 জন পুরুষ।
জেরুশালেমে প্রত্যাবর্তন
15 আমি এই সমস্ত ব্যক্তিদের অহবা-গামিনী নদীর কাছে জড় হতে বলেছিলাম। সেখানে তাঁবু খাটিয়ে আমরা তিন দিন ছিলাম। আমি কয়েকজন যাজককে সেখানে দেখলাম, কিন্তু কোন লেবীয়কে নয়। তাই আমি 16 ইলীয়েষর, অরীয়েল, শময়িয়, ইল্নাথন, যারিব, ইল্নাথন, নাথন, সখরিয় ও মশুল্লম প্রভৃতি নেতৃবৃন্দকে এবং 17 যোয়ারীব ও ইল্নাথন নামে দুজন শিক্ষককে ডেকে কাসিফিয়া নগরের প্রধান ইদ্দোরের কাছে তাঁকে ও তাঁর লোকদের কি বলতে হবে তার নির্দেশ দিয়ে পাঠিয়েছিলাম যাতে ইদ্দো আমাদের ঈশ্বরের মন্দিরে কাজ করার মত কিছু সহকারী পাঠাতে পারেন। 18 যেহেতু ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন ইদ্দো নিম্নলিখিত ব্যক্তিদের আমাদের কাছে পাঠালেন: মহলির উত্তরপুরুষ শেরেবিয় (মহলি ছিলেন একজন লেবি। লেবি ছিল ইস্রায়েলের সন্তান) শেরেবিয়র সঙ্গে তার পুত্ররা এবং ভাইরা মোট 18 জন পুরুষ এসেছিল। 19 হশবিয় ও তার সঙ্গে মরারির সন্তান যিশায়াহ এবং তাদের ভাইরা ও ছেলেরা, মোট 20 জন পুরুষ। 20 তারা 220 জন মন্দির কর্মীও পাঠিয়েছিল। (তাদের পূর্বপুরুষরা লেবীয়দের সাহায্য করবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর কর্মচারীবর্গদ্বারা নিযুক্ত হয়েছিলেন। তাদের নাম তালিকা ভুক্ত ছিল।)
21 অহবা নদীর কাছে আমি ঘোষণা করলাম, ঈশ্বরের কাছে আমাদের বিনীত প্রতিপন্ন করার জন্য আমরা সকলে উপবাস করব। ঈশ্বরের কাছে আমরা আমাদের ও আমাদের সন্তান-সন্ততিদের এবং আমাদের বিষয় সম্পত্তির নিরাপদ যাত্রার জন্য প্রার্থনা করতে চেয়েছিলাম। 22 আমি আমাদের নিরাপত্তার জন্য রাজার কাছ থেকে আমাদের সঙ্গে আসবার জন্য সৈন্য ও অশ্বারোহী চাইতে অত্যন্ত দ্বিধা বোধ করেছিলাম। কারণ আমরা রাজাকে বলেছিলাম, “যারা প্রভুতে বিশ্বাস করে ও তাঁর প্রতি আস্থা রাখে, আমাদের প্রভু সদা তাদের সহায় হন। কিন্তু যেসব ব্যক্তি তাঁর থেকে দূরে সরে যায় ঈশ্বর তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হন।” 23 আমরা তাই উপবাস করে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং তিনি আমাদের প্রার্থনা শুনেছিলেন।
24 এরপর আমি যাজকদের মধ্যে থেকে শেরেবিয়, হশবিয় যারা নেতৃস্থানীয় ছিল ও তাদের 10 জন ভাই প্রমুখ মোট 12 জন যাজককে বেছে নিয়েছিলাম। 25 রাজা অর্তক্ষস্ত, তাঁর উপদেষ্টাগণ, তাঁর প্রধানরা এবং বাবিলের সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা সেই উপহারগুলি ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য দিলেন। এবং বাবিলের লোকদের কাছ থেকে আমরা সব সোনা এবং রূপো ওজন করে, মন্দিরের কাজের জন্য ঐ বারো জনকে দিলাম। 26 সব মিলিয়ে 25 টন রূপো, 3 3/4 টন রূপোর থালা ও 3 3/4 টন সোনা ছিল। 27 এছাড়াও আমরা প্রায় 19 পাউণ্ড ওজনের 20টি সোনার বাসন ও দুর্মূল্য 2টি পিতলের থালা দিয়েছিলাম এবং বলেছিলাম, 28 “তোমরা প্রভুর কাছে পবিত্র। এই সামগ্রীগুলিও প্রভুর কাছে পবিত্র। এই সমস্ত সোনা এবং রূপো লোকরা প্রভুকে দান করেছিল, সেই প্রভু, যিনি তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর। 29 যাও এই সমস্ত বস্তু রক্ষা কর। জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের নেতৃবর্গকে দেওয়ার আগে পর্যন্ত এই সমস্ত সম্পদের দায়িত্ব তোমাদের। ইস্রায়েলের প্রধান পরিবারবর্গের নেতা ও লেবীয়দের হাতে এই সমস্ত কিছু তুলে দেবে। তারা ওজন করে এই সমস্ত জিনিস জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের ঘরের ভেতরে তুলে রাখবেন।”
30 তখন যাজক ও লেবীয়রা, জেরুশালেমের মন্দিরের জন্য ইষ্রার দেওয়া সামগ্রীগুলি গ্রহণ করল।
31 প্রথম মাসের দ্বাদশ দিনে আমরা অহবা নদীর কাছ থেকে জেরুশালেম অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম। ঈশ্বর আমাদের সহায় ছিলেন। তিনি আমাদের পথে শত্রুদের ও দুর্বৃত্তদের হাত থেকে রক্ষা করলেন। 32 এরপর আমরা জেরুশালেমে পৌঁছলাম। সেখানে তিন দিন বিশ্রাম নিলাম। 33 চতুর্থ দিন আমরা মন্দিরে গেলাম এবং দুর্মূল্য বস্তুগুলি ওজন করে যাজক ঊরীয়ের পুত্র মরেমোতকে দিলাম। মরেমোতের সঙ্গে পীনহসের পুত্র ইলিয়াসর এবং যেশূয়ের পুত্র যোষাবদ ও বিন্নূয়ির পুত্র নোয়দিয় নামে দুই লেবীয় ছিল। 34 আমরা সামগ্রীগুলি ওজন করে মোট ওজনের পরিমাণ নথিভুক্ত করেছিলাম।
35 এরপর, যে সব ইহুদীরা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিল, তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে হোমবলি নিবেদন করল। তারা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য 12টি বৃষ, 96টি মেষ, 77টি মেষশাবক ও পাপমোচনের জন্য 12টি পুরুষ ছাগলও বলিদান করল।
36 এরপর আমরা ফরাৎ নদীর পশ্চিম তীরস্থ প্রাদেশিক নেতাদের ও রাজ্যপালদের হাতে রাজার চিঠিটি তুলে দিলাম। তারপর এই সমস্ত নেতারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা ও মন্দিরের সহায়তা করেন।
যীশু সাতজন প্রেরিতকে দেখা দিলেন
21 এরপর তিবিরিয়া হ্রদের ধারে যীশু আবার তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন। এইভাবে তিনি দেখা দিয়েছিলেন: 2 শিমোন পিতর, থোমা যাঁর অপর নাম দিদুমঃ, গালীলের কান্নাবাসী নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা ও অপর দুজন শিষ্য, এঁরা সকলে এক জায়গায় ছিলেন। 3 শিমোন পিতর তাঁদের বললেন, “আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি।”
অপর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “আমরাও তোমার সঙ্গে যাব।” তাঁরা সকলে বেরিয়ে গেলেন এবং নৌকায় গিয়ে উঠলেন, কিন্তু সেই রাত্রে তাঁরা কিছুই ধরতে পারলেন না।
4 এইভাবে যখন ভোর হয়ে আসছে, এমন সময় যীশু তীরে এসে দাঁড়ালেন; কিন্তু শিষ্যরা তাঁকে চিনতে পারলেন না যে তিনি যীশু। 5 যীশু তাঁদের বললেন, “বাছারা, কিছু মাছ পেলে?”
শিষ্যরা বললেন, “না।”
6 তিনি তাঁদের বললেন, “নৌকার ডান দিকে জাল ফেল তাহলে তোমরা কিছু মাছ পাবে।” সেইভাবে তাঁরা জাল ফেললে জালে এত মাছ পড়ল যে তাঁরা তা টেনে তুলতে পারলেন না।
7 তখন যে শিষ্যকে যীশু বেশী ভালবাসতেন, তিনি পিতরকে বললেন, “উনি প্রভু!” তাই শিমোন যখন শুনলেন যে উনি প্রভু, তখন তিনি গায়ের ওপর একটা কাপড় জড়িয়ে নিলেন কারণ তিনি তখন কাজের সুবিধার জন্য খালি গায়ে ছিলেন ও হ্রদের জলে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। 8 কিন্তু অন্যান্য শিষ্যরা নৌকাতে করে তীরে এলেন। তাঁরা মাছ ভর্ত্তি জালটা টেনে আনছিলেন। তাঁরা তীর থেকে বেশী দূরে ছিলেন না, প্রায় তিনশো ফুট দূরে ছিলেন। 9 ডাঙ্গায় উঠে তাঁরা দেখলেন সেখানে কাঠ কয়লার আগুন জ্বলছে, তার ওপর কিছু মাছ আর রুটিও আছে। 10 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা এখন যে মাছ ধরলে তার থেকে কিছু নিয়ে এস।”
11 শিমোন পিতর উঠে নৌকায় গেলেন এবং জাল টেনে তীরে তুললেন, সেই জালে একশো তিপান্নটা বড় মাছ ছিল, আর এত মাছেতেও সেই জাল ছেঁড়েনি। 12 যীশু তাঁদের বললেন, “এখানে এসে সকালের জলখাবার খেয়ে নাও।” কিন্তু শিষ্যদের মধ্যে কারোর জিজ্ঞাসা করার সাহস হল না, “আপনি কে?” কারণ তাঁরা বুঝেছিলেন যে তিনিই প্রভু। 13 যীশু গিয়ে সেই রুটি নিয়ে তাঁদের দিলেন, আর সেই মাছ নিয়েও তাঁদের দিলেন।
14 মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের পর এই নিয়ে তৃতীয় বার যীশু তাঁর শিষ্যদের দেখা দিলেন।
যীশু পিতরের সঙ্গে কথা বললেন
15 তাঁরা খাওয়া শেষ করবার পর যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, এই লোকদের চেয়ে তুমি কি আমায় বেশী ভালবাসো?”
পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।”
যীশু পিতরকে বললেন, “আমার মেষশাবকদের[a] তত্ত্বাবধান কর।”
16 তিনি তাঁকে দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করলেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?”
পিতর তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, প্রভু, আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।”
যীশু পিতরকে বললেন, “আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর।”
17 যীশু পিতরকে তৃতীয়বার বললেন, “যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমায় ভালবাসো?”
একথা তিনবার শোনায় পিতর দুঃখ পেলেন। তাই তিনি যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি সবই জানেন। আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভালবাসি।”
যীশু তাঁকে বললেন, “আমার মেষদের তত্ত্বাবধান কর। 18 আমি তোমাকে সত্যি বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে, তখন তুমি তোমার নিজের কোমর বন্ধনী বাঁধতে আর যেখানে মন চাইত যেতে; কিন্তু যখন বৃদ্ধ হবে, তখন তুমি তোমার হাত বাড়িয়ে দেবে আর অন্য কেউ তোমায় কোমর বন্ধনী পরিয়ে দেবে। আর যেখানে তুমি যেতে চাইবে না সেখানে নিয়ে যাবে।” 19 (এই কথা বলে যীশু ইঙ্গিত করলেন, পিতর কি প্রকার মৃত্যু দ্বারা ঈশ্বরেকে গৌরবান্বিত করবেন।) এসব কথা বলার পর তিনি পিতরকে বললেন, “আমায় অনুসরণ কর।”
20 পিতর ঘুরে দেখলেন, যাঁকে যীশু ভালোবাসতেন সেই শিষ্য তাঁদের পেছনে আসছেন। (এই শিষ্যই ভোজের সময় যীশুর বুকের ওপর হেলান দিয়েছিলেন, আর বলেছিলেন, “প্রভু, কে আপনাকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে?”) 21 তাই পিতর তাঁকে দেখতে পেয়ে যীশুকে বললেন, “প্রভু, ওর কি হবে?”
22 যীশু পিতরকে বললেন, “আমি যদি চাই যে, আমি না আসা পর্যন্ত ও থাকবে, তাতে তোমার কি? তুমি আমায় অনুসরণ কর।”
23 তাই ভাইদের মধ্যে একথা ছড়িয়ে গেল যে, সেই শিষ্য মরবে না। কিন্তু যীশু তাকে বলেন নি যে তিনি মরবেন না। কেবল বলেছিলেন, “আমি যদি চাই যে আমি না আসা পর্যন্ত সে এখানে থাকবে, তাতে তোমার কি?”
24 ইনিই সেই শিষ্য যিনি এইসব বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন, আর তিনিই এইসব লিপিবদ্ধ করেছেন। আমরা জানি তাঁর সাক্ষ্য সত্য।
25 যীশু আরো অনেক কাজ করেছিলেন। সেগুলি যদি এক এক করে লেখা যেত, তবে আমার ধারণা লিখতে লিখতে এত সংখ্যক বই হত যে জগতে তা ধরতো না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International