Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 4-6

মন্দিরের আসবাবপত্র

শলোমন পিতল দিয়ে মন্দিরের বর্গাকৃতি বেদীটি বানিয়েছিলেন। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে এটি ছিল 20 হাত এবং উচ্চতায় 10 হাত। গলানো পিতল দিয়ে মন্দিরের সুবিশাল গোলাকার জলের চৌবাচ্চাটি ঢালাই করা হয়েছিল। এই জলাধারের ব্যাস ছিল 10 হাত, পরিধি 30 হাত এবং উচ্চতা প্রায় 5 হাত। পিতলের তৈরী জলাধারটির নীচে সমস্ত বৃত্তটিকে ঘিরে দুটো সারিতে 10 হাত ষাঁড়ের প্রতিকৃতি রাখা ছিল। ষাঁড়গুলি এবং চৌবাচ্চাটি ছিল একটি খণ্ডে ঢালাই করা। চৌবাচ্চাটি বারোটি ষাঁড়ের মূর্ত্তির ওপরে বসানো ছিল, যার মধ্যে তিনটে ষাঁড় ছিল উত্তরমুখী, তিনটে পশ্চিমমুখী, তিনটে দক্ষিণমুখী এবং তিনটে পূর্বমুখী। চৌবাচ্চাটি সেগুলোর মাথায় বসানো ছিল যাদের শরীরের পিছন দিকগুলো ছিল কেন্দ্রের দিক। এই জলাধারের পরিধি দেওয়াল ছিল 3 ইঞ্চি পুরু এবং জলাধারের কানাটা ফুলকাটা পেয়ালার মতো করা ছিল। এটি প্রায় 17,500 গ্যালন জল ধারণ করতে পারত।

পিতলের জলাধারের বাঁ পাশে ও ডান পাশে পাঁচটি করে মোট দশটি গামলা তৈরী করেছিলেন। সেখানে হোমবলি নিবেদনের জিনিসপত্র ধোয়া হতো। আর বড় জলাধারের জল যাজকরা উৎসর্গের আগে ধোয়াধুয়ির কাজে ব্যবহার করতেন।

দায়ূদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শলোমন 10 টা বাতিদান বানালেন এবং তার মধ্যে পাঁচটিকে মন্দিরের উত্তরদিকে এবং পাঁচটিকে দক্ষিণ দিকে সাজিয়ে রেখেছিলেন। একই ভাবে তিনি 10 টি টেবিলও বানিয়ে মন্দিরের মধ্যে রাখেন। মন্দিরের জন্য 100 টি বেসিন বা হাত ধোওযার জায়গা সোনা দিয়ে বানানো হয়েছিল। এছাড়াও, শলোমন যাজকদের জন্য উঠোন, একটি বিরাট প্রাঙ্গণ এবং উঠোনের দরজাসমূহও বানিয়েছিলেন। এই দরজাগুলো পিতল দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল। 10 এসব শেষ হলে শলোমন বড় জলাধারটিকে মন্দিরের ডানদিকে দক্ষিণ পূর্বদিকে বসিয়ে দিয়েছিলেন।

11-16 হূরম পাত্র, বেলচা এবং গামলাসমূহ বানিয়েছিলেন। এইভাবে শলোমনের জন্য যে সমস্ত কাজ হাতে নিয়েছিলেন সে সমস্ত কাজ তিনি শেষ করেন। বাটির আকারের গম্বুজসহ স্তম্ভ দুটি, স্তম্ভের ওপর বাটি আকারের গম্বুজগুলিকে সাজাবার জন্য দুটি জাফরি; 400টি ছোট ছোট ডালিম; প্রত্যেকটি জাফরিতে এই ছোট ছোট ডালিমগুলি দুটি সারিতে সাজানো ছিল; ষাঁড়গুলির পিঠে পিতলের বড় চৌবাচ্চাটি; সমস্ত পাত্রগুলি, বেলচাসমূহ, কাঁটাগুলি এবং এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য যন্ত্রপাতি। রাজা শলোমনের জন্য হূরম আবি এই সবই তৈরী করেছিলেন। প্রভুর মন্দিরে ব্যবহার যোগ্য পালিশ করা পিতল দিয়ে তৈরী করেছিলেন। 17 রাজা প্রথমে এই জিনিষগুলিকে মাটির ছাঁচে ফেলেছিলেন। মাটির ছাঁচ তৈরী হত যর্দন উপত্যকায় সুক্কোৎ ও সরেদার মধ্যবর্তী অঞ্চলে। 18 শলোমনের তৈরী পিতলের জিনিষগুলো এত বেশি ছিল যে কতখানি পিতল ব্যবহার করা হয়েছিল কেউ তার পরিমাপ করবার চেষ্টা করেনি।

19-22 তিনি নিথলিখিত জিনিষগুলিও তৈরী করেছিলেন: ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য একটা সোনার বেদী, ঈশ্বরের অস্তিত্বের পবিত্র রুটি রাখার জন্য টেবিল, 10টি খাঁটি সোনার বাতিদান এবং সেগুলোর বাতি যেগুলো ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে অভ্যন্তরস্থ পবিত্র স্থানে পোড়াবার কথা ছিল, ফুলগুলি, খাঁটি সোনার বাতি ও চিম্‌টেগুলি; কর্ত্তারিসমূহ, গামলাগুলি, ধুপপাত্রগুলি, এবং খাঁটি সোনার উনুন, অভ্যন্তর গৃহের দরজা, পবিত্রতম স্থানের দরজাগুলি এবং মন্দিরের খাঁটি সোনার দরজাগুলি।

প্রভুর মন্দিরের সমস্ত কাজ শেষ হবার পর শলোমন, তাঁর পিতা দায়ূদ মন্দিরের জন্য যেসব সোনা রূপোর জিনিষ ও আসবাবপত্র দান করেছিলেন সেগুলি নিয়ে এসে কোষাগারে রাখলেন।

পবিত্র সিন্দুক মন্দিরে আনা হল

শলোমন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তি ও পরিবার গোষ্ঠীসমূহের নেতাদের জেরুশালেমে জড়ো হবার আদেশ দিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি দায়ূদের শহর যাকে সিয়োন বলা হয়, সেখান থেকে মন্দিরে আনবার আদেশ দিলেন। নির্দেশ মতো ইস্রায়েলের সমস্ত ব্যক্তি সপ্তম মাসে (অধুনা সেপ্টেম্বরে) কুটিরবাস পর্বের সময় রাজা শলোমনের সামনে উপস্থিত হলেন।

যখন ইস্রায়েলের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিরা সেখানে এসে পৌঁছলেন, লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুকটি তুলে নিলেন এবং সমাগম তাঁবুটিকে এবং তার ভেতরের সমস্ত পবিত্র জিনিস জেরুশালেম পর্যন্ত ওপরে বয়ে আনলেন। রাজা শলোমন ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে উপস্থিত হয়ে অসংখ্য মেষ ও ষাঁড় বলিদান করলেন। এবং তারপর যাজকরা প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটি সেইখানে নিয়ে এলেন যে জায়গাটি ওটার জন্য তৈরী হয়েছিল। ঐ জায়গাটি ছিল মন্দিরের পবিত্রতম স্থান। সিন্দুকটিকে করূব দূতদের ডানার নীচে রাখা হল। সাক্ষ্যসিন্দুকটিকে এমনভাবে রাখা হল যাতে ঐ ঘরে বসানো করূব দূতদের মূর্ত্তির ডানা সাক্ষ্যসিন্দুক ও সিন্দুক বহন করার ডাণ্ডার ওপর ছড়িয়ে থাকে। বহন করার ডাণ্ডাগুলো এত লম্বা ছিল যে পবিত্রতম স্থানের সামনে থেকেই সেগুলো দেখা যেত। তবে মন্দিরের বাইরে থেকে এগুলো দেখা যেতো না। ঐ ডাণ্ডাগুলো এখনো পর্যন্ত ঠিক সেভাবেই রাখা আছে। 10 সাক্ষ্যসিন্দুকের মধ্যে দুটো পাথরের ফলক[a] ছাড়া আর কিছুই ছিল না। মোশি হোরেব পাহাড়ে এই ফলকদুটো সাক্ষ্যসিন্দুকে রেখেছিলেন। হোরেব পাহাড়েই প্রভুর সঙ্গে ইস্রায়েলের বাসিন্দাদের চুক্তি হয়েছিল। ইস্রায়েলীয়রা মিশর থেকে বেরিয়ে আসার পর এই ঘটনা ঘটে।

11 উপস্থিত সমস্ত যাজকরা ঈশ্বর নির্দেশিত বিধি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে নিজেদের পবিত্র করলেন। তারপর, যাজকরা সকলে বিশেষ কোনো দলে না এসে সমবেতভাবে সেই পবিত্র স্থানে এসে দাঁড়ালেন। 12 সমস্ত লেবীয় গায়করা আসফ, হেমন ও যিদূথূন তাদের পুত্রসমূহ ও আত্মীয়স্বজনসহ বেদীর পূর্বদিকে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁরা সাদা লিনেনের পোশাক পরেছিলেন এবং তাঁরা কর্তাল, বীণাসমূহ নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের কাছে বীণা, তানপুরা ও খঞ্জনী জাতীয় বাদ্যযন্ত্র ছিল। সেখানে 120 জন যাজকও ছিলেন যাঁরা তূরী বাজিয়েছিলেন। 13 সমবেতভাবে একসুরে বাদকরা শিঙা ও কাড়ানাকাড়া বাজিয়েছিলেন, গায়করা গান করেছিলেন। প্রভুকে ধন্যবাদ ও প্রশংসা জ্ঞাপনের সময় মনে হচ্ছিল এঁরা যেন পৃথক পৃথক কোনো ব্যক্তি নয়, একই ব্যক্তি। কাড়ানাকাড়া, খোল, কর্তাল, বীণা, যা কিছু বাদ্যযন্ত্র ছিল, সবাই সোৎসাহে সজোরে সেসব বাজিয়ে গাইছিলেন,

“প্রভুর মহিমা কীর্ত্তন করো, তিনি ভাল।
    তাঁর প্রেম চির প্রবাহমান।”

এরপর প্রভুর মন্দির মেঘে পরিপূর্ণ হল। 14 যাজকরা তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন নি কারণ সেই মেঘ ছিল মন্দিরকে পূর্ণ করে দেওয়া ঈশ্বরের মহিমা।

তখন শলোমন বললেন,

“প্রভু অন্ধকার মেঘের মধ্যে
    থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।
হে প্রভু, আমি আপনার চিরকালের বসবাসের জন্যই
    এই বিশাল মন্দির বানিয়েছি।”

শলোমনের ভাষণ

রাজা শলোমন ঘুরে দাঁড়ালেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের, যারা তাঁর সামনে জড়ো হয়েছিল তাদের আশীর্বাদ করলেন। এবং শলোমন বললেন,

“ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা কীর্ত্তিত হোক্। তিনি আমার পিতা দায়ূদকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা রেখেছেন। প্রভু ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘যেদিন আমি ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বার করে নিয়ে এসেছিলাম, সেই সময় থেকে আজ অবধি আমি আমার নামে বাড়ী তৈরী করবার জন্য কোন একটি বিশেষ জায়গা পছন্দ করিনি, এমন কি আমি কোন লোককেও আমার লোকদের ওপর শাসন করবার জন্য মনোনীত করি নি। কিন্তু এখন আমি জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছি, আমার নামের জায়গা হিসেবে এবং আমি দায়ূদকে আমার লোক, ইস্রায়েলের ওপর শাসন করার জন্য মনোনীত করেছি।’

“আমার পিতা দায়ূদ প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে একটি মন্দির বানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রভু আমার পিতাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ আমার মন্দির বানানোর কথা ভেবে তুমি ভাল করেছো। কিন্তু তুমি নিজে এই মন্দির বানাতে পারবে না। তোমার পুত্র শলোমন আমার নামের জন্য এই মন্দির বানাবে।’ 10 এখন প্রভুর ইচ্ছেয় তাই ঘটতে চলেছে। আমার পিতা দায়ূদের জায়গায় আমি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হয়েছি এবং প্রভুর কথা মতো আমি প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে এই মন্দির বানিয়েছি। 11 এবং আমি ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে প্রভুর চুক্তি সমন্বিত সাক্ষ্যসিন্দুকটা ঐ মন্দিরে রেখেছি।”

শলোমনের প্রার্থনা

12-13 ইস্রায়েলের সমবেত লোকের উপস্থিতিতে দুই হাত প্রসারিত করে শলোমন প্রভুর বেদীর সামনে দাঁড়ালেন। উঠোনের মাঝখানে বসানো পিতলের তৈরী প্রায় 5 হাত লম্বা, 5 হাত চওড়া ও 3 হাত উঁচু একটা মঞ্চে উঠলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের সামনে আভূমি নত হয়ে আকাশের দিকে দুহাত ছড়িয়ে বললেন:

14 “হে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে অথবা পৃথিবীতে তোমার সমকক্ষ কোনো ঈশ্বর নেই। তুমি তোমার ভালবাসা ও দয়ার চুক্তিতে বিশ্বস্ত। যারা তোমার সামনে বিশ্বস্তভাবে তাদের সর্বান্তঃকরণ দিয়ে জীবনযাপন করে তাদের সঙ্গে তোমার চুক্তি বজায় রাখ। 15 আমার পিতা দায়ূদকে তুমি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে আজ তাকে তুমি সত্যে পরিণত করে বাস্তবায়িত করেছো। 16 এখন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তাঁকে দেওয়া তোমার সে প্রতিশ্রুতি পালন করো। তুমি এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে যে সবসময়েই ইস্রায়েলের সিংহাসনে তাঁর বংশের কেউ না কেউ অধিষ্ঠিত থাকবে। একথা তুমি ভুলো না। হে প্রভু, তুমি পিতাকে বলেছিলে যদি তাঁর সন্তানরা তাঁর মতোই তোমার প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তোমার নির্দেশিত পথে জীবন অতিবাহিত করে, তাহলে সদাসর্বদা তাঁর বংশধররাই তোমার সামনে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে। 17 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এবার তুমি তোমার দাস দায়ূদকে দেওয়া তোমার সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করো।

18 “আমরা জানি যে পৃথিবীর লোকের সঙ্গে প্রভু বাস করেন না। সর্বোচচতম স্বর্গও যখন তোমায় ধরে রাখতে পারে না তখন আমার বানানো এই সামান্য মন্দির কি করে তোমায় ধরে রাখবে? 19 তাহলেও প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার প্রার্থনার প্রতি তোমাকে মনোযোগী হতে মিনতি করি এবং তোমার অনুগ্রহ চাই। আমি, তোমার দাস তোমাকে যে কান্না এবং প্রার্থনা নিবেদন করি তা শোন। 20 যাতে এই মন্দিরে, যেখানে তুমি তোমার নাম রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলে সেখানে কি হয় তা তুমি সর্বদাই দেখতে পাও এবং যখন আমি এই মন্দিরের দিকে তাকাই তখন আমার প্রার্থনা শুনতে পাও। 21 আমার প্রার্থনা শোনো এবং তোমার লোক ইস্রায়েলের প্রার্থনা শোনো। যখন আমরা এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করব আমাদের প্রার্থনা শুনো। তুমি অনুগ্রহ করে স্বর্গ থেকে আমাদের প্রার্থনা শোনো এবং আমরা যা পাপ করি তা ক্ষমা করে দাও।

22 “কারোর বিরুদ্ধে কোনো অপরাধ করার পর কেউ যখন এই মন্দিরের বেদীর সামনে দাঁড়িয়ে তোমার নামে শপথ নিয়ে কথা বলবে, 23 তখন স্বর্গ থেকে সত্যি মিথ্যা বিচার করে সেই অপরাধীকে তার কৃত অপরাধের যথাযোগ্য শাস্তি দিও। আর যদি কেউ নিরপরাধী হয় তবে তাকে রক্ষা করো।

24 “তোমার বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করার অপরাধে হয়তো কখনও শত্রুরা তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের যুদ্ধে পরাজিত করবে। তারপর যদি ইস্রায়েলীয়রা আবার তোমার কাছে এসে এই মন্দিরে দাঁড়িয়ে তোমার নামের প্রশংসা করে এবং প্রার্থনা করে ও ক্ষমা ভিক্ষা করে, 25 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে তুমি তোমার সেবক ইস্রায়েলীয়দের ক্ষমা করে তাদের পূর্বপুরুষকে তুমি যে বাসস্থান দিয়েছিলে তা ফিরিয়ে দিও।

26 “তোমার বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করার জন্য হয়তো আকাশ শুকিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড খরা হবে। তখন যদি তারা এই মন্দিরের দিকে প্রার্থনা করে, তাদের পাপ স্বীকার করে এবং তুমি তাদের শাস্তি দিয়েছ বলে পাপকাজ করা বন্ধ করে, 27 তাহলে স্বর্গ থেকে তাদের সেই প্রার্থনায় সাড়া দিয়ে তুমি তাদের ক্ষমা করে দিও। আর তাদের সঠিক পথে পরিচালিত করে, তোমার দেওয়া এই ভূখণ্ডে আবার বৃষ্টি পাঠিও।

28 “যখন দুর্ভিক্ষ অথবা মহামারী লাগবে, তাদের শস্যে রোগসমূহ দেখা দেবে, ফড়িং অথবা পঙ্গপাল শস্য নষ্ট করবে, অথবা শত্রুরা যখন ইস্রায়েলবাসীকে তাদের শহরগুলিতে আক্রমণ করবে অথবা ইস্রায়েলে প্লেগ বা ব্যাধি যাই আসুক, 29 তখন যদি কোন ব্যক্তি অথবা ইস্রায়েলের সব লোকরা, যাদের প্রত্যেকে তার নিজের রোগ এবং ব্যথার কথা জানে যদি দুহাত প্রসারিত করে এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে তোমায় কোন প্রার্থনা বা আবেদন জানায়, 30 তখন তুমি যেখানে বাস কর সেই স্বর্গ থেকে তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার অপরাধ ক্ষমা করো। তুমি তো ঈশ্বর, সবার হৃদয় ও মনের কথা তুমি জানো তাই যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দিও। 31 তাহলে যে দেশ তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে, যতদিন তারা সেখানে বসবাস করবে ততদিন তোমায় সমীহ ও মান্য করবে।

32 “হয়তো তোমার মহিমা ও সাহায্যের কথা শুনে ভিন দেশীদের কেউ এসে এই মন্দিরের দিকে তাকিয়ে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে। 33 তখন স্বর্গ থেকে তুমি সেই ভিন দেশীর প্রার্থনার ডাকে সাড়া দিও, তাহলে এই পৃথিবীর সবাই তোমার মহিমার কথা জানতে পারবে এবং ইস্রায়েলীয়দের মতোই তোমায় শ্রদ্ধা করবে। পৃথিবীর সকলে তোমার নাম মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য বানানো আমার এই মন্দিরের কথা জানতে পারবে।

34 “তুমি তোমার লোকদের অন্য কোথাও তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাবে এবং তারা তোমার পছন্দ করা শহর ও মন্দিরের দিকে তাকিয়ে তোমার কাছে প্রার্থনা করবে। 35 তখন তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদন শুনো এবং তাদের সাহায্য কোরো।

36 “এমন কোনো ব্যক্তি নেই যে পাপ করে না। লোকরা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপ আচরণ করে তোমায় ক্রুদ্ধ করে তুলবে তুমি তাদের শত্রুদের হাতে যুদ্ধে পরাজিত করে সুদূরের কোনো দেশে বন্দীত্ব বরণে বাধ্য করবে। 37 কিন্তু তারপরে যখন তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হবে আর সেই দূর দেশে বন্দীদশার মধ্যে তারা বলে উঠবে, ‘হে প্রভু, আমরা পাপ করেছি এবং দুষ্ট ও খুব নিষ্ঠুর আচরণ করেছি।’ 38 যদি তারা তাদের বন্দী দশার দেশে সর্বান্তঃকরণে তোমার দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের পূর্বপুরুষকে তোমার দেওয়া ভূখণ্ডের দিকে মুখ করে, তোমার এই পবিত্র শহরের উদ্দেশ্যে আকাশের দিকে তাকিয়ে আমার দ্বারা তোমার জন্য বানানো মন্দিরের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করে, 39 তখন স্বর্গে, তোমার বাসস্থান থেকে তাদের প্রার্থনা এবং আবেদনে তুমি সাড়া দিও, এবং যারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে তোমার সেই লোকদের তুমি সাহায্য করো এবং ক্ষমা করে দিও। 40 হে আমার ঈশ্বর, এখন আমি এখানে দাঁড়িয়ে তোমার কাছে যে প্রার্থনা করছি স্বকর্ণে তুমি সেই প্রার্থনা শোনো, তোমার করুণাময় চোখ মেলে আমাদের এই প্রার্থনাস্থলে দৃষ্টিপাত করো।

41 “এখন, হে প্রভু ঈশ্বর, তুমি ওঠ এবং বিশ্রামের জন্য
    তোমার মনোনীত স্থানে সাক্ষ্যসিন্দুক নিয়ে এসো যা তোমার ক্ষমতার প্রতীক।
হে প্রভু, আমার ঈশ্বর, তোমার যাজকদের পরিধানে সদাসর্বদা থাকবে পরিত্রাণের পোশাক,
    আর তোমার একনিষ্ঠ ভক্তরা মঙ্গলে আনন্দ করুক। তোমার সেবক যাজকরা যেন সবসময় ত্যাগের পোশাক পরে থাকে।
42 হে প্রভু ঈশ্বর, তোমার অভিষিক্ত লোকদের বাতিল করো না;
    তোমার অনুগত দাস দায়ূদের বিশ্বস্ত কাজগুলি মনে রেখো।”

যোহন 10:24-42

24 কিছু ইহুদী তাঁর চারপাশে জড়ো হয়ে তাঁকে বলল, “তুমি আর কতকাল আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবে? তুমি যদি মশীহ হও তাহলে আমাদের স্পষ্ট করে বল।”

25 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের ইতিমধ্যেই বলেছি, আর তোমরা তা বিশ্বাস করছ না। আমি আমার পিতার নামে যে সব অলৌকিক কাজ করি সেগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে। 26 কিন্তু তোমরা বিশ্বাস করো না, কারণ তোমরা আমার পালের মেষ নও। 27 আমার মেষরা আমার কন্ঠস্বর শোনে। আমি তাদের জানি, আর তারা আমার অনুসরণ করে। 28 আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই, আর তারা কখনও বিনষ্ট হয় না, আমার হাত থেকে কেউ তাদের কেড়ে নিতেও পারবে না। 29 আমার পিতা, যিনি তাদেরকে আমায় দিয়েছেন, তিনি সবার ও সবকিছু থেকে মহান,[a] আর কেউ পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারবে না। 30 আমি ও পিতা, আমরা এক।”

31 ইহুদীরা তাঁকে মারবার জন্য আবার পাথর তুলল। 32 যীশু তাদের বললেন, “পিতার শক্তিতে আমি অনেক ভাল কাজ করেছি, তার মধ্যে কোন্ কাজটার জন্য তোমরা পাথর মারতে চাইছ?”

33 ইহুদীরা এর উত্তরে তাঁকে বলল, “তুমি যে সব ভাল কাজ করেছ, তার জন্য আমরা তোমায় পাথর মারতে চাইছি না। কিন্তু আমরা তোমাকে পাথর মারতে চাইছি এই জন্য যে, তুমি ঈশ্বর নিন্দা করেছ। তুমি একজন মানুষ, অথচ নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করছ।”

34 যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের বিধি-ব্যবস্থায় কি একথা লেখা নেই যে, ‘আমি বলেছি তোমরা ঈশ্বর?’(A) 35 শাস্ত্রে তাদেরই ঈশ্বর বলেছিল যাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী এসেছিল। আর শাস্ত্র সব সময়ই সত্য। 36 আমিই সেই ব্যক্তি, পিতা যাঁকে মনোনীত করে জগতে পাঠালেন। আমি বলেছি, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র।’ তবে তোমরা কেন বলছ যে আমি ঈশ্বর নিন্দা করছি? 37 আমি যদি আমার পিতার কাজ না করি, তাহলে আমায় বিশ্বাস করো না। 38 কিন্তু আমি যখন সেইসব কাজ করছি তখনও যদি তোমরা আমাকে বিশ্বাস না করো, তাহলে সেই সব কাজকে বিশ্বাস কর। তাহলে তোমরা জানতে পারবে ও বুঝতে পারবে যে পিতা আমাতে আছেন আর আমি পিতার মধ্যে আছি।”

39 এরপর তারা আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের হাত এড়িয়ে চলে গেলেন।

40 যর্দনের অপর পারে যেখানে যোহন বাপ্তাইজ করছিলেন, যীশু সেখানে আবার গেলেন ও সেখানে থাকলেন। 41 বহুলোক তাঁর কাছে আসতে থাকল, আর তারা বলাবলি করতে লাগল, “যোহন কোন অলৌকিক কাজ করেন নি বটে; কিন্তু এই মানুষটির বিষয়ে যোহন যা বলেছেন, সে সবই সত্য।” 42 আর সেখানে অনেকেই যীশুর ওপর বিশ্বাস করল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International