Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 বংশাবলি 16-18

16 সাক্ষ্যসিন্দুকটা নিয়ে এসে লেবীয়রা সেটাকে দায়ূদের বানানো তাঁবুর মধ্যে রাখলেন। তারপর ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হল। দায়ূদের নৈবেদ্য অর্পণ করা শেষ হলে তিনি প্রভুর নামে সমস্ত লোকদের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ জানালেন। এরপর তিনি ইস্রায়েলের প্রত্যেক পুরুষ ও নারীকে একখানা করে গোটা পাঁউরুটি, কিছু খেজুর, কিস্মিস্ ও পিঠে বিতরণ করলেন।

সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে কাজকর্ম করবার জন্য দায়ূদ কিছু লেবীয়কে নিয়োগ করলেন। এই সমস্ত লেবীয়দের মূল কাজ ছিল প্রভুর স্তবগান ও প্রশংসা করা। 5-7 যে দলটি খঞ্জনী বাজাত, আসফ ছিল সেই দলটির নেতা। সখরিয় ছিলেন দ্বিতীয় দলটির নেতা। অন্যান্য লেবীয়রা ছিলেন উজীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, মত্তিথিয়, ইলীয়াব, বনায়, ওবেদ-ইদোম এবং যিয়ীয়েল। এদের কাজ ছিল বীণা এবং অন্য এক ধরণের তন্ত্রবাদ্য বাজানো। যাজক বনায় ও যহসীয়েল সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে শিঙা ও কাড়া-নাকাড়া বাজানোর দায়িত্ব পালন করতেন। সেই দিন দায়ূদ, আসফ ও তাঁর সতীর্থদের প্রভুর প্রশংসা ও কীর্তনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।

দায়ূদের ধন্যবাদ গীত

প্রভুর প্রশংসা কর আর তাঁর নাম নাও।
    তিনি যে সমস্ত মহান কাজ করেছেন সবাইকে সে কথা বলো।
প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও। তাঁর প্রশংসা কর।
    তাঁর মহৎ‌‌ কীর্তির কথা সবাইকে জানাও।
10 প্রভুর পবিত্র নাম করে গর্বিত হও।
    তোমরা যারা তাঁকে চাও তারা আনন্দিত হও!
11 প্রভুর দিকে এবং তাঁর শক্তির দিকে তাকাও।
    সর্বদা তাঁর সন্ধান কর।
12 তিনি যে সব অলৌকিক কাজ করেছেন সেই সব মনে রেখো।
    মনে রেখো তাঁর সমস্ত সিদ্ধান্ত আর তাঁর দ্বারা কৃত চমৎ‌‌কার!
13 ইস্রায়েলের লোকরা, যাকোবের উত্তরপুরুষরা
    সকলেই প্রভুর দাস এবং প্রভুর মনোনীত লোক।
14 প্রভু আমাদের ঈশ্বর
    এবং তাঁর সিদ্ধান্ত সর্বত্র বিরাজমান।
15 সর্বদা তাঁর চুক্তি মনে রেখো।
    হাজার হাজার পুরুষ ধরে তাঁর আজ্ঞা মনে রেখো।
16 অব্রাহামের সঙ্গে তাঁর যে চুক্তি হয়েছিল সেটি
    এবং ইস‌্হাককে করা তাঁর প্রতিশ্রুতি মনে রেখো।
17 যাকোবের জন্য প্রভু এটিকে একটি আইনস্বরূপ করে দিয়েছিলেন।
    ইস্রায়েলের সঙ্গে তিনি একটি চুক্তি করেছিলেন যা চিরস্থায়ী হবে।
18 প্রভু ইস্রায়েলকে বলেছিলেন, “কনানীয়দের বাসভূমি আমি তোমাদেরই দেবো।
    প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডটি তোমাদের হবে।”

19 তখন জনসংখ্যা ছিল কম,
    মুষ্টিমেয় কিছু লোক।
20 যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াতো
    দেশ থেকে দেশান্তরে।
21 কিন্তু প্রভু কাউকে তাদের আঘাত করতে দেননি
    এবং রাজাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন যেন তারা তাদের কোন ক্ষতি না করে।
22 এইসব রাজাদের প্রভু বলেছেন: “আমার মনোনীত লোকদের
    এবং ভাববাদীদের কেউ যেন আঘাত না করে।”
23 সমস্ত ভুবন, প্রভুর বন্দনা করো।
    প্রভু কেমন করে আমাদের রক্ষা করেন সেই সুখবর প্রতিদিন বলো।
24 সমস্ত জাতিকে প্রভুর মহিমার কথা বলো।
    তাঁর অলৌকিক কীর্তির কথাও সবাইকে বলো।
25 প্রভু মহান এবং প্রশংসার যোগ্য।
    অন্য সমস্ত দেবতাদের থেকে তিনি শ্রদ্ধেয় ও ভীতিকর।
26 কেন? কারণ অন্য সমস্ত জাতির দেবদেবী শুধু মূল্যহীন পুতুলমাত্র।
    প্রভু স্বয়ং আকাশ বানিয়েছেন।
27 প্রভু মহিমাময় এবং দীপ্তিমান।
    তিনি যেখানে থাকেন সেখানে শক্তি এবং আনন্দ বিরাজ করে।
28 সমস্ত লোক ও পরিবারগুলি
    প্রভুর মহিমা ও শক্তির প্রশংসা করো!
29 প্রভুর মহিমার গান গাও। তাঁর নামের মাহাত্ম্য কীর্তন করো।
    প্রভুর চরণে তোমাদের নৈবেদ্য উৎসর্গ করো।
    তাঁকে সুন্দর ও পবিত্র পোশাকে উপাসনা করো।
30 প্রভুর সামনে সমস্ত পৃথিবীর ভয়ে কম্পমান হওয়া উচিৎ‌,
    কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবীকে সুদৃঢ় করেছেন সুতরাং তা নড়বে না।
31 আকাশে এবং মাটিতে আনন্দ ধ্বনিত হোক্;
    বিশ্ব-চরাচরে সবাই বলে উঠুক, “প্রভুই এই পৃথিবীর নিয়ামক।”
32 সমুদ্র এবং তার ভেতরের সব কিছুই আনন্দে চিৎকার করুক।
    মাঠগুলি এবং সেখানে যা কিছু আছে তারা আনন্দ প্রকাশ করুক।
33 আনন্দে মশগুল অরণ্যের বৃক্ষরাশি প্রভুর সামনে গান করবে!
    কেন? কারণ প্রভু আসছেন পৃথিবীর বিচার করতে।
34 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তিনি ভাল।
    তাঁর আশীর্বাদ ও করুণা চিরন্তন।
35 প্রভুকে বলো,
    “হে ঈশ্বর, আমাদের পরিত্রাতা, আমাদের ঐক্যবদ্ধ কর।
সমস্ত জাতির হাত থেকে
    আমাদের রক্ষা করো।
তাহলে আমরা তোমার পবিত্র নামের প্রশংসা করতে পারবো।
    তোমার মহিমার প্রশংসা করতে পারবো।”
36 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বদা যেভাবে প্রশংসিত হয়েছেন,
    চিরদিন সে ভাবেই তাঁর প্রশংসা হোক্।

সমস্ত লোক প্রভুর প্রশংসা করে সমবেতভাবে বলে উঠলো, “আমেন!”

37 তারপর আসফ আর তাঁর ভাইদের দায়ূদ প্রতিদিন সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে সেবা করার জন্য রেখে গেলেন। 38 যিদূথূনের পুত্র ওবেদ-ইদোম ও আরো 68 জন লেবীয়কেও দায়ূদ আসফের কাছে রেখে গেলেন। ওবেদ-ইদোম আর হোষা দুজনেই প্রহরী ছিলেন।

39 গিবিয়োনে প্রভুর তাঁবুতে বেদীর সামনে সেবা করার জন্য দায়ূদ সাদোক ও তাঁর সতীর্থ যাজকদের রেখে এসেছিলেন। 40 প্রতি দিন সকালে আর বিকেলে সাদোক ও অন্যান্য যাজকরা মিলে প্রভুর ইস্রায়েলকে দেওয়া বিধি-পুস্তক অনুসারে বেদীতে হোমবলি উৎসর্গ করতেন। 41 প্রভুর প্রশংসা গীত গাইবার জন্য হেমন, যিদূথূন এবং অন্যান্য লেবীয়দের প্রত্যেকের নাম ধরে নির্বাচন করা হয়েছিল, কারণ তাঁর প্রেম চির প্রবহমান। 42 হেমন আর যিদূথূনকে সকলের সঙ্গে খঞ্জনি এবং তূরী-ভেরী বাজাতে হত। ঈশ্বরের নাম বন্দনার সময়ে তাঁরা অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রও বাজাতেন। যিদূথূনের পুত্ররা তাঁবুর দরজায় পাহারা দিতো।

43 এই সমস্ত উৎসবের পর প্রত্যেকে যে যার বাড়িতে ফিরে গেল। রাজা দায়ূদও তাঁর পরিবারকে আশীর্বাদ করতে নিজের প্রাসাদে ফিরে গেলেন।

দায়ূদকে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি

17 প্রাসাদে ফিরে আসার পর দায়ূদ ভাববাদী নাথনকে বললেন, “আমি এরস কাঠের তৈরি রাজপ্রাসাদে বাস করি, কিন্তু সাক্ষ্যসিন্দুকটা পড়ে আছে তাঁবুতে। আমি ওটির জন্য একটা মন্দির বানাতে চাই।”

নাথন উত্তর দিলেন, “তুমি যা করতে চাও করো, ঈশ্বর স্বয়ং তোমার সহায়।”

3-4 সে দিন রাতে, ঈশ্বরের বার্তা নাথনের কাছে এলো। ঈশ্বর বললেন,

“যাও আমার নাম করে আমার সেবক দায়ূদকে গিয়ে বলো: ‘দায়ূদ আমার মন্দির তুমি বানাবে না। 5-6 ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে উদ্ধার করার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমি কোন মন্দিরে বাস করি নি। আমি তাঁবু থেকে তাঁবুতে ঘুরে বেড়িয়ে অধিষ্ঠান করেছি, ইস্রায়েলীয়দের জন্য নেতা নির্বাচন করেছি। ঐ সমস্ত নেতারা আমার ভক্ত ও সেবকদের দিশারী হবে। এক তাঁবু থেকে আরেক তাঁবুতে বাস করার সময় আমি কখনো এইসব নেতাদের বলিনি, তোমরা কেন আমার জন্য দামী কাঠের মন্দির বানাও নি?’

“এখন আমার সেবক দায়ূদকে গিয়ে বলো: সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, ‘আমি তোমাকে মাঠ থেকে তুলে এনে মেষপালকের পরিবর্তে ইস্রায়েলে আমার ভক্তদের রাজা বানিয়েছি। তুমি যখন যেখানে গিয়েছ আমি তোমার সহায় হয়ে, তোমার আগে আগে সেখানে গিয়ে তোমার শত্রুদের নিধন করেছি। এবার আমি তোমাকে পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা খ্যাতিমান ব্যক্তিদের একজনে পরিণত করব। আমি এই জায়গা ইস্রায়েলীয়দের দিলাম। আমি ওদের এখানে বসালাম এবং ওরা এখানে বসবাস করবে। কেউ তাদের উত্যক্ত করবে না। দুষ্ট জাতিরাও আগের মতো তাদের আক্রমণ করবে না। 10 যেদিন থেকে আমি আমার লোকদের নেতৃত্ব দেবার জন্য বিচারকদের নিযুক্ত করেছি, সেই দিন থেকে আমি তোমাদের শত্রুদের জয় করে চলেছি।

“‘এবার, আমি তোমায় বলছি যে প্রভু তোমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করবেন।[a] 11 মৃত্যুর পর তুমি যখন তোমার পূর্বপুরুষদের সঙ্গে যোগ দেবে আমি তোমার নিজের পুত্রকে নতুন রাজা করব এবং তার রাজত্ব সুদৃঢ় করব। 12 তোমার পুত্র আমার জন্য একটি মন্দির বানাবে আর আমি তোমার পুত্রের পরিবারকে আজীবন রাজত্ব করতে দেব। 13 তোমার আগে যিনি রাজা হিসাবে শাসন করতেন সেই শৌলের ওপর থেকে যদিও আমি আমার সমর্থন সরিয়ে নিয়েছিলাম কিন্তু তোমার পুত্রকে আমি সব সময়ই ভালবাসব। আমি হব তার পিতা এবং সে হবে আমার পুত্র। 14 তাকে চির জীবনের জন্য আমার মন্দির ও রাজত্বের ভার অর্পণ করব। আর তার শাসন চিরস্থায়ী হবে।’”

15 নাথন দায়ূদকে এই দর্শন এবং ঈশ্বর যা বলেছেন তা জানালেন।

দায়ূদের প্রার্থনা

16 রাজা দায়ূদ তখন পবিত্র তাঁবুতে গিয়ে প্রভুর সামনে বসে বললেন,

“হে প্রভু ঈশ্বর, তুমি কোন অজ্ঞাত কারণে আমার ও আমার পরিবারের প্রতি বরাবর অসীম করুণা করে এসেছো।” 17 ঈশ্বর এটা কি তোমার কাছে এত ক্ষুদ্র, যে তুমি আমায় দূর ভবিষ্যতে আমার পরিবারের ভাগ্য বলবে? হে ঈশ্বর, তুমি কি আমাকে সামান্য লোকের চেয়ে বেশী কিছু দেখো? 18 তুমি আমার জন্য এতো করেছ আমি আর কি-ই বা বলতে পারি! তুমি তো জানোই আমি তোমার আজ্ঞাবহ দাসানুদাস মাত্র। 19 হে প্রভু, শুধু তোমার ইচ্ছাতেই আমার জীবনে এইসব মহৎ‌‌ ঘটনা ঘটেছে। তুমি এ সমস্ত মহৎ‌‌ ঘটনাকে জ্ঞাত করতে চেয়েছিলে। 20 এ জগতে তোমার মতো আর কেই বা আছে? তুমি ছাড়া অন্য কোন ঈশ্বর নেই। তুমি ছাড়া আর কোন দেবতা কখনো এতো বিস্ময়কর ও মহান কাজ করেননি! 21 ইস্রায়েলই পৃথিবীতে একমাত্র দেশ যার জন্য তুমি এত মহৎ‌‌ ও শ্রদ্ধাপূর্ণ ভয়ের কাজকর্ম করেছ। তুমিই আমাদের মিশর থেকে উদ্ধার করে মুক্ত করেছ। নিজ গুণেই তুমি খ্যাতি অর্জন করেছ। তোমার ভক্তদের নেতৃত্ব দিয়ে তুমি বিজাতীয়দের আমাদের জন্য তাদের নিজস্ব বাসভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করেছ। অন্য কোন লোকের ঈশ্বর এই রকম করেনি। 22 ইস্রায়েলীয়দের তুমি চিরকালের জন্য তোমার লোক হিসেবে বেছে নিয়েছো। এবং তুমিই তাঁদের ঈশ্বর হয়েছো।

23 “হে প্রভু, তুমি আমার ও আমার পরিবারের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করলে তা যেন চির দিন তোমার স্মরণে থাকে। তুমি যা বললে তাই যেন ঘটে। 24 তোমার নাম চিরকালের জন্য বিশ্বাস ভাজন ও মহান হোক্। লোকরা যেন বলে, ‘সর্বশক্তিমান প্রভু হলেন ইস্রায়েলের ঈশ্বর!’ যেন তোমার সেবক হিসাবে দায়ূদের গৃহ চিরকালের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

25 “হে প্রভু, তুমি আমাকে, তোমার দাসকে বলেছ যে, আমার বংশকে তুমি রাজবংশে পরিণত করবে। তাই আমি এতো সাহস করে তোমার কাছে এই সমস্ত প্রার্থনা করতে পারছি। 26 হে প্রভু, তুমিই ঈশ্বর, তুমি তোমার নিজের কথা দিয়েই আমার জন্য এইসব জিনিষ করতে সম্মত হয়েছিলে। 27 প্রভু, তুমি দয়া করে আমার পরিবারকে আশীর্বাদ করেছ এবং আমার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছ যে আমার পরিবার তোমায় সেবা করে চলবে। প্রভু যেহেতু তুমি স্বয়ং আমার পরিবারকে আশীর্বাদ করেছ তারা চিরকালই তোমার আশীর্বাদ-ধন্য থাকবে।”

দায়ূদের বিভিন্ন দেশ জয়

18 দায়ূদ পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করে তাদের যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে গাৎ‌ ও তার পার্শ্ববর্তী ছোটখাটো শহরগুলি দখল করে নিয়ে নেন।

এরপর তিনি মোয়াবীয়দের হারিয়ে তাদের নিজের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করান। মোয়াবীয়রা দায়ূদের জন্য নিয়মিত উপঢৌকন পাঠাতো।

সোবার রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীর সঙ্গেও দায়ূদ যুদ্ধ করেন। হদরেষর ফরাৎ নদী পর্যন্ত তাঁর রাজত্ব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দায়ূদ তাঁর সেনাবাহিনীকে হমাত পর্যন্ত পিছু হঠতে বাধ্য করেছিলেন। তিনি হদরেষরের কাছ থেকে 7000 রথের সারথী সহ 1000 রথ, 20,000 সৈনিক আদায় করা ছাড়াও হদরেষরের অধিকাংশ রথ নষ্ট করে দিয়েছিলেন। শুধুমাত্র 100 রথ তিনি অবশিষ্ট রেখেছিলেন।

অরামীয়রা দম্মেশক থেকে সোবার রাজা হদরেষরকে সাহায্য করতে এলে দায়ূদ তাদেরও পরাজিত করেন এবং 22,000 অরামীয় সেনাকে হত্যা করেন। এরপর দায়ূদ অরামের দম্মেশকে দুর্গ বানান। অরামীয়রা তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর জন্য উপঢৌকন আনতে শুরু করে। প্রভু দায়ূদকে সর্বত্র বিজয়ী করেছিলেন।

হদরেষরের সেনাবাহিনীর থেকে সোনার ঢালগুলি দায়ূদ জেরুশালেমে এনেছিলেন। টিভৎ ও কূন শহর থেকে তিনি প্রচুর পরিমাণে পিতলও এনেছিলেন। এই শহরগুলি ছিল হদরেষরের অধিকারে। পরবর্তীকালে, শলোমন এই সমস্ত পিতল মন্দিরের জন্য পিতলের জলাধার, পিতলের থামসমূহ এবং পিতলের অন্যান্য জিনিষ বানাবার কাজে ব্যবহার করেছিলেন।

হমাতের রাজা তয়ূ যখন খবর পেলেন, দায়ূদ সোবার রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছেন, 10 তখন তিনি তাঁর পুত্র হদোরামকে দিয়ে সন্ধিপ্রস্তাব করে দায়ূদের কাছে আশীর্বাদ নিতে পাঠালেন যেহেতু দায়ূদ হদরেষরকে পরাজিত করেছিলেন। হদরেষর তয়ূর সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। দায়ূদ, হদরেষরকে পরাজিত করায় তয়ূ হদোরামের হাত দিয়ে সোনা, রূপো ও পিতলের বহু মূল্যবান সামগ্রী পাঠিয়েছিলেন। 11 ইদোম, মোয়াব, অম্মোন, অমালেক এবং পলেষ্টীয় থেকে দায়ূদ যে সোনা, রূপো এবং পিতলের জিনিষপত্র পেয়েছিলেন তা দিয়ে তিনিও একই কাজ করলেন। তিনি এগুলি প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন।

12 লবণ উপত্যকায় সরূয়ার পুত্র অবীশয় 18,000 ইদোমীয়কে হত্যা করে। 13 অবীশয় ইদোমে এক সৈন্যবাহিনীর দলও বসাল এবং ইদোমীয়রা দায়ূদের বশ্যতা স্বীকার করে। প্রভু দায়ূদকে সর্বত্রই বিজয়ী করেছিলেন।

দায়ূদের গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকবর্গ

14 সমস্ত ইস্রায়েলের শাসক দায়ূদ তাঁর সমস্ত প্রজাদের প্রতি ন্যায় ও সমবিচার নিয়ে ইস্রায়েল শাসন করেন। 15 তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন সরূয়ার পুত্র যোয়াব। অহীলূদের পুত্র যিহোশাফট দায়ূদের সমস্ত কার্যকলাপ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন। 16 অহীটূবের পুত্র সাদোক আর অবিয়াথরের পুত্র অবীমেলক যাজক ছিলেন। শব্শ ছিলেন লেখক। 17 যিহোয়াদার পুত্র বনায়ের দায়িত্ব ছিল করেথীয় ও পলেথীয়দের পরিচালনা করা। দায়ূদের পুত্ররাও গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং পিতার পাশে থেকে রাজকার্যে সহায়তা করতেন।

যোহন 7:28-53

28 তখন যীশু মন্দিরে শিক্ষা দিতে দিতে বেশ চেঁচিয়ে বললেন, “তোমরা আমায় জান, আর আমি কোথা থেকে এসেছি তাও তোমরা জান। তবু বলছি, আমি নিজের থেকে আসি নি, তবে যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তিনি সত্য; আর তোমরা তাঁকে জান না। 29 কিন্তু আমি তাঁকে জানি, কারণ তিনি আমায় পাঠিয়েছেন। আমি তাঁরই কাছ থেকে এসেছি।”

30 তখন তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করার জন্য চেষ্টা করতে লাগল। তবু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না, কারণ তখনও তার সময় আসে নি। 31 কিন্তু সেই জনতার মধ্যে থেকে অনেকেই তাঁর ওপর বিশ্বাস করল; আর বলল, “মশীহ এসে কি তাঁর চেয়েও বেশী অলৌকিক চিহ্ন করবেন?”

ইহুদীরা যীশুকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করল

32 ফরীশীরা শুনল যে সাধারণ লোক যীশুর বিষয়ে চুপি চুপি এইসব আলোচনা করছে। তখন প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুকে ধরে আনবার জন্য মন্দিরের কয়েকজন পদাতিককে পাঠাল। 33 তখন যীশু বললেন, “আমি আর অল্প কিছুকাল তোমাদের সঙ্গে আছি; তারপর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে ফিরে যাব। 34 তোমরা আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমার খোঁজ পাবে না, কারণ আমি যেখানে থাকব তোমরা সেখানে আসতে পারো না।”

35 ইহুদী নেতারা তখন পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “সে এমন কোথায় যাবে যে আমরা ওকে খুঁজলেও পাব না? গ্রীকদের শহরে যে সব ইহুদীরা বসবাস করছে, ও কি তাদের কাছে যাবে আর সেখানে গিয়ে গ্রীকদেব কাছে শিক্ষা দেবে? নিশ্চয়ই নয়। 36 ও যে কথা বলল তার মানে কি যে, ‘তোমরা আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমায় পাবে না?’ আর ‘আমি যেখানে যাব, তোমরা সেখানে আসতে পার না?’”

যীশু পবিত্র আত্মার বিষয়ে বললেন

37 পর্বের শেষ দিন, যে দিনটি বিশেষ দিন, সেই দিন যীশু উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বললেন, “কারোর যদি পিপাসা পেয়ে থাকে তবে সে আমার কাছে এসে পান করুক। 38 শাস্ত্রে এ কথা বলে, যে আমার ওপর বিশ্বাস করে তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের নদী বইবে।” 39 যীশু পবিত্র আত্মা সম্পর্কে এই কথা বললেন, “সেই পবিত্র আত্মা তখনও দেওয়া হয় নি, কারণ যীশু তখনও মহিমান্বিত হন নি; কিন্তু পরে যারা যীশুকে বিশ্বাস করে তারা সেই আত্মা পাবে।”

যীশুকে নিয়ে লোকদের মধ্যে তর্ক

40 সমবেত জনতা যখন এই কথা শুনল তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, “ইনি সত্যিই সেই ভাববাদী।”

41 অন্যরা বলল, “ইনি মশীহ (খ্রীষ্ট)।”

এ সত্ত্বেও কেউ কেউ বলল, “খ্রীষ্ট গালীলী থেকে আসবেন না। 42 শাস্ত্রে কি একথা লেখা নেই যে খ্রীষ্টকে দায়ূদের বংশধর হতে হবে; আর দায়ূদ যে বৈৎলেহম শহরে থাকতেন, তিনি সেখান থেকে আসবেন?” 43 তাঁর জন্য এইভাবে লোকদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল। 44 কেউ কেউ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইল; কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিতে সাহস করল না।

ইহুদী নেতাদের অবিশ্বাস

45 তখন মন্দিরের সেই পদাতিকরা, প্রধান যাজক ও ফরীশীদের কাছে ফিরে গেল। তাঁরা মন্দিরের সেই পদাতিককে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা তাঁকে ধরে আনলে না কেন?”

46 পদাতিকরা বলল, “উনি যে সব কথা বলছিলেন কোন মানুষ কখনও সেই ধরণের কথা বলেনি!”

47 তখন ফরীশীরা বললেন, “তাহলে তোমরাও কি ঠকে গেলে? 48 ফরীশী বা নেতাদের মধ্যে এমন কেউ কি ছিলেন যিনি তাঁর ওপর বিশ্বাস করেছেন? 49 কিন্তু এইসব লোকেরা বিধি-ব্যবস্থার কিছুই জানে না। তারা অভিশপ্ত এবং ঈশ্বরের কৃপা থেকে বঞ্চিত।”

50 তখন এই নেতাদের একজন নীকদীম, যিনি ফরীশীদের মধ্যে একজন, তাঁদের বললেন, তিনিই আগে একবার যীশুর কাছে গিয়েছিলেন। 51 কোন ব্যক্তির কথা না শুনে আমরা আমাদের বিধি-ব্যবস্থায় তার বিচার করতে পারি না। সে কি করেছে তা না জেনে আমরা তার বিচার করতে পারি না।

52 এর উত্তরে তারা তাকে বলল, “তুমি নিশ্চয়ই গালীলী থেকে আসো নি, তাই না? শাস্ত্র পড়ে দেখো তাহলে জানবে যে গালীলী থেকে কোন ভাববাদীর আবির্ভাব হয় নি।”

ব্যভিচারিণীর বিচার

53 এরপর ইহুদী নেতারা সেখান থেকে যে যার বাড়ি চলে গেলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International