Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 বংশাবলি 10-12

রাজা শৌলের মৃত্যু

10 পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলীয় লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এলে ইস্রায়েলীয়রা পালিয়ে গিয়েছিল। গিল্‌বোয় পাহাড়ে মারাও গিয়েছিল অনেকে। পলেষ্টীয়রা রাজা শৌল ও তাঁর পুত্রদের পেছনে ধাওয়া করে শেষ পর্যন্ত তাঁদের ধরে ফেলে হত্যাও করেছিল। শৌলের তিন পুত্র যোনাথন, অবীনাদব ও মল্কি-শূয় পলেষ্টীয়দের হাতে মারা পড়েছিলেন। এবং শৌলের চারপাশে যুদ্ধ তীব্র হয়ে ওঠে এবং শৌলকে পলেষ্টীয় তীরন্দাজরা তীর ছুঁড়ে আহত করে।

রাজা শৌল তখন তাঁর অস্ত্রবাহককে বললেন, “তুমি তরবারি বের করে নিজের হাতে আমায় হত্যা কর। তাহলে আর এই ভিন দেশীরা এসে আমায় নিয়ে মস্করা করতে বা আমায় আঘাত করতে পারবে না।”

কিন্তু রাজার অস্ত্রবাহক মহারাজকে হত্যা করতে ভয় পেল। তাই শৌল তখন নিজের তরবারি দিয়েই আত্মহত্যা করলেন। অস্ত্রবাহক যখন দেখতে পেল রাজা শৌলের মৃত্যু হয়েছে তখন সেও নিজের তরবারি দিয়ে নিজেকে হত্যা করল। অর্থাৎ‌ রাজা শৌল ও তাঁর তিন পুত্র এক সঙ্গে মারা গেলেন।

সমতল ভূমিতে বসবাসকারী ইস্রায়েলের বাসিন্দারা দেখল তাদের সেনাবাহিনী রণক্ষেত্র ছেড়ে পালিয়েছে আর রাজা শৌল ও তাঁর তিন পুত্র মারা গিয়েছে। তখন তারাও তাদের শহর ছেড়ে পালাল। পলেষ্টীয়রা সেই সমস্ত শহর দখল করে সেখানে বাস করতে শুরু করল।

পরের দিন পলেষ্টীয়রা মৃতদেহ থেকে দামী জিনিসপত্র খুলে নিতে এসে গিল্‌বোয় পর্বতে রাজা শৌল ও তাঁর তিন পুত্রের মৃতদেহ খুঁজে পেল। শৌলের দেহ থেকে দুর্মূল্য জিনিসপত্র নিয়ে নেওয়ার পর পলেষ্টীয়রা শৌলের মুণ্ড এবং বর্ম নিয়ে নিল এবং তাদের লোকদের এবং তাদের দেবতাদের খবরটা জানানোর জন্য রাজ্যের সর্বত্র বার্তাবাহক পাঠাল। 10 তারপর তাদের ভ্রান্ত দেবতার মন্দিরে শৌলের কাটা মুণ্ডুটা ঝুলিয়ে দিল।

11 যাবেশ-গিলিয়দের সমস্ত লোকরা যখন জানতে পারল পলেষ্টীয়রা শৌলের কি দশা করেছে 12 তখন তারা শহরের সাহসী লোকদের রাজা ও রাজপুত্রদের মৃতদেহ ফেরত আনতে পাঠাল। যাবেশ-গিলিয়দে রাজা ও রাজপুত্রদের মৃতদেহ নিয়ে আসার পর তারা চার জনকেই যাবেশে একটা বড় গাছের তলায় সমাধিস্থ করে সাত দিন ধরে শোক প্রকাশ এবং উপোস করল।

13 প্রভুর প্রতি অনুগত না হওয়ার কারণেই এবং প্রভুর বাণী উপেক্ষা করার জন্যই শৌলের মৃত্যু হয়েছিল। প্রভুর উপদেশ নেবার পরিবর্তে শৌল এক মাধ্যমের কাছে পরামর্শের জন্য যেতেন। 14 এসব কারণেই প্রভু রাজা শৌলের মৃত্যু ঘটিয়ে যিশয়ের পুত্র দায়ূদের হাতে রাজ্য তুলে দিয়েছিলেন।

দায়ূদ ইস্রায়েলের রাজা হলেন

11 হিব্রোণে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক দায়ূদের কাছে এসে বলল, “আপনার সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। আগে, রাজা শৌল জীবিত থাকা কালীন আপনি আমাদের যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রভু স্বয়ং আপনাকে বলেছিলেন, ‘দায়ূদ, তুমি আমার লোকদের, ইস্রায়েলের লোকদের মেষপালক হবে। একদিন তুমিই তাদের নেতা হবে।’”

ইস্রায়েলের সমস্ত নেতারাও হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে এলে, তিনি প্রভুর সাক্ষাতে তাঁদের সকলের সঙ্গে সেখানে চুক্তিবদ্ধ হলেন এবং নেতারা সকলে তাঁর গায়ে সুগন্ধী তেল ছিটিয়ে তাঁকে ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলেন। শমূয়েলের মাধ্যমে প্রভু আগেই একথা ভবিষ্যৎ ‌বাণী করেছিলেন।

দায়ূদ জেরুশালেম দখল করলেন

দায়ূদ এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকরা তখন জেরুশালেমে গেলেন। সে সময়ে জেরুশালেম শহরের নাম ছিল যিবূষ। আর সেখানে যারা বাস করত তাদের যিবূষীয় বলা হত। এই সমস্ত যিবূষীয়রা দায়ূদকে তাদের শহরে ঢুকতে দিতে অস্বীকার করলে, দায়ূদ তাদের যুদ্ধে পরাজিত করে সিয়োনের দুর্গ দখল করলেন। এই অঞ্চলটিই পরবর্তী কালে দায়ূদ নগরী বা দায়ূদের শহর নামে পরিচিত হয়।

দায়ূদ বললেন, “যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যে আমার সেনাবাহিনীকে নেতৃত্ব দেবে তাকেই আমি আমার সেনাবাহিনীর সেনাপতি করব।” তখন সরূয়ার পুত্র যোয়াব সেই আক্রমণের নেতৃত্ব দিলেন এবং তাঁকে ইস্রায়েলীয় সেনাবাহিনীর সেনাপতি করা হল।

7-8 দায়ূদ ঐ দুর্গে তাঁর বসতি বিস্তার করে দুর্গের চারপাশে শহর বানিয়ে ছিলেন বলেই এই জায়গার নাম দায়ূদ নগরী হয়েছিল। দায়ূদ মিল্লো থেকে দুর্গের প্রাচীর পর্যন্ত অঞ্চলে শহর স্থাপন করেছিলেন। যোয়াব শহরের অন্যান্য অঞ্চলের সংস্কার সাধন করেছিলেন। এদিকে সর্বশক্তিমান প্রভুর সহায়তায় উত্তরোত্তর দায়ূদের শক্তিবৃদ্ধি হতে থাকল।

তিন জন বীর সৈনিক

10 ইস্রায়েলে দায়ূদের শাসন কালে তিনজন নেতা ক্ষমতা ও খ্যাতির শিখর স্পর্শ করেছিলেন। এঁরা দায়ূদের বিশিষ্ট সেনাবাহিনীর ওপর কর্তৃত্ব করতেন এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের সঙ্গে একত্রিতভাবে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দায়ূদের রাজ্যকে সহায়তা করতেন।

11 এই তিন জন ব্যক্তির মধ্যে প্রথম জন হলেন হক্মোনীয়ের পুত্র যাশবিয়াম।

তিনি ছিলেন রথ-পরিচালক অধিকর্তাদের নেতা। একবার যাশবিয়াম তাঁর বর্শা দিয়ে এক সঙ্গে 300 জনকে হত্যা করেছিলেন।

12 দ্বিতীয় জন হলেন অহোহের দোদোর পুত্র ইলিয়াসর। 13-14 তিনি পস্-দম্মীমে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধের সময় দায়ূদকে সঙ্গ দিয়েছিলেন। ইস্রায়েলের লোকরা যখন পলেষ্টীয়দের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য পালাতে শুরু করেছিল সে সময় এই তিন জন বিরোধী সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে এক ক্ষেত ভর্ত্তি যব রক্ষা করে এবং বিপক্ষীয় শত্রুদের প্রভুর সহায়তায় পরাজিত করে।

15 এক দিন যখন দায়ূদ অদুল্লমের গুহাতে আটকা পড়েছেন এবং রফায়ীম উপত্যকা পর্যন্ত পলেষ্টীয় সেনাবাহিনী এগিয়ে এসেছে, সে সময় এই তিন বীর হামাগুড়ি দিয়ে সমস্ত পথটুকু গিয়ে দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন।

16 আর এক বার এক দল পলেষ্টীয় সেনা তখন বৈৎ‌লেহমে আর দায়ূদ ছিলেন দুর্গের ভেতরে। 17 নিজের বাসভূমির এক গণ্ডুষ জল পান করার জন্য তৃষ্ণার্ত দায়ূদ কথা প্রসঙ্গে সবে বলেছেন, “ইস, কেউ যদি এখন আমায় বৈৎ‌লেহমের সিংহদরজার পাশের কুঁয়োটা থেকে একটু জল পান করাতে পারত।” দায়ূদ সত্যি করে চাইছিলেন না, কেবল মাত্র বলছিলেন। 18 সঙ্গে সঙ্গে এই তিন বীর যোদ্ধা পলেষ্টীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে গিয়ে বৈৎ‌লেহমের যে কুঁয়োর জল দায়ূদ পান করতে চেয়েছিলেন, সেই জল নিয়ে আসলেন। দায়ূদ তখন সেই জল নিজে পান না করে নৈবেদ্য স্বরূপ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে মাটিতে ঢেলে দিয়ে বললেন, 19 “হে প্রভু, নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে যারা এই জল আমার জন্য এনেছে তা পান করা আর তাদের রুধির পান করা সমতুল্য। তাই দায়ূদ জল পান করতে অস্বীকার করলেন।” দায়ূদের ঐ তিন জন নায়ক এই ধরণের আরো অনেক বীরত্বপূর্ণ কাজকর্ম করেছিলেন।

অন্যান্য বীর সৈনিকরা

20 যোয়াবের ভাই অবীশয় ছিলেন এই তিন বীরের নেতা। তিনি একবার বর্শা দিয়ে 300 জনকে হত্যা করেছিলেন। 21 অবীশয়ের খ্যাতি এদের কারো থেকে কম তো ছিলই না বরঞ্চ সেরা তিরিশ জন সেনার তুলনায়ও দ্বিগুণ ছিল। যদিও তিনি তিন বীরের একজন ছিলেন না, তবুও তিনি তাদের নেতা হয়েছিলেন।

22 যিহোয়াদার পুত্র বনায় একজন বীরযোদ্ধা ছিলেন। তিনি কব্‌সেলের লোক ছিলেন এবং বহু দুঃসাহসিক কাজ করেছিলেন। তিনি মোয়াবের দুই সাহসী যোদ্ধাকে হত্যা করা ছাড়াও একবার এক তুষারাচ্ছন্ন দিনে একটা গুহায় প্রবেশ করে একটা সিংহ মেরেছিলেন। 23 এছাড়াও বনায়, তাঁতীর দণ্ডের মত সুবিশাল বল্লমধারী 71/2 ফুট দীর্ঘ এক মিশরীয় সেনাকে মেরে ফেলেছিলেন। বনায়ের ছিল শুধু একটা লাঠি কিন্তু মিশরীয়র হাত থেকে তার বল্লমটা কেড়ে নিয়ে তিনি তাই দিয়েই ঐ ব্যক্তিকে হত্যা করেন। 24 যিহোয়াদার এই বীরপুত্রের খ্যাতি ঐ তিন জন নায়কের তুলনায় কোন অংশে কম ছিল না। 25 এমনকি ঐ তিন জনের একজন না হয়েও তাঁর খ্যাতি সেরা তিরিশ জন সৈনিকের থেকে বেশি ছিল। দায়ূদ তাঁকে তাঁর দেহরক্ষীদের নেতা নিযুক্ত করেছিলেন।

30 জন বীর সৈনিক

26 যোয়াবের ভাই অসাহেল,

বৈৎ‌লেহমের দোদোর পুত্র ইল্হানন,

27 হরোরের শম্মোৎ,

পলোনের হেলস,

28 তকোয়ের ইক্কেশের পুত্র ঈরা,

অনাথোতের অবীয়েষর,

29 হূশাতীয় সিব্বখয়,

অহোহর ঈলয়,

30 নটোফার মহরয়,

নটোফার বানার পুত্র হেলদ,

31 বিন্যামীন পরিবারের গিবিয়ার রীবয়ের পুত্র ইথয়,

পিরিয়াথোনের বনায়,

32 গাশ-উপত্যকা নিবাসী হূরয়,

অর্ব্বতীয় অবীয়েল,

33 বাহরূমের অস্মাবৎ,

শাল্বোনের ইলিয়হবঃ,

34 গিষোণের হাষেমের পুত্র হরারী,

শাগির পুত্র যোনাথন,

35 হরারী সাখরের পুত্র অহীয়াম,

ঊরের পুত্র ইলীফাল,

36 মখেরাতের হেফর,

পলোনার অহিয়,

37 কর্মিলের হিষ্রো,

ইষ্বয়ের পুত্র নারয়,

38 নাথনের ভাই যোয়েল,

হগ্রির পুত্র মিভর,

39 অম্মোনের সেলক,

সরূয়ার পুত্র যোয়াবের অস্ত্রবাহক বেরোতের নহরয়,

40 যিত্রয়ের ঈরা

আর গারেব,

41 হিত্তীয়ের ঊরিয়,

অহলয়ের পুত্র সাবদ,

42 রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান শীষার পুত্র অদীনা ও তাঁর ত্রিশ জন সঙ্গী,

43 মাখার পুত্র হানান,

মিত্নর যোশাফট,

44 অষ্টরোতের উষিয়,

অরোয়েরবের হোথমের দুই পুত্র শাম ও যিয়ীয়েল,

45 শিম্রির পুত্র যিদীয়েল

আর তাঁর ভাই তীষীয় যোহা,

46 মহবীর ইলীয়েল,

ইল্নামের দুই পুত্র যিরীবয় আর যোশবিয়,

মোয়াবের যিৎমা,

47 ইলীয়েল, ওবেদ আর মসোবায়ের যাসীয়েল প্রমুখ সকলেই ছিলেন দায়ূদের “সেরা তিরিশ” সৈন্যদলের সেনা।

যে সমস্ত সাহসী লোকরা দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল

12 দায়ূদ যখন কীশের পুত্র শৌলের ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছিলেন তখন যে সমস্ত যোদ্ধারা সিক্লগে তাঁর কাছে এসেছিল এটি হল তাদের তালিকা। তারা দায়ূদকে যুদ্ধে সাহায্য করেছিল। এরা যে কোন হাতেই তীর ছুঁড়তে পারতো, দু’হাতে গুলতিও চালাতে পারতো। এরা সকলেই বিন্যামীনের পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য এবং শৌলের আত্মীয় ছিল।

অহীয়েষর ছিলেন এঁদের দলের নেতা, এছাড়াও এই দলে ছিলেন তাঁর ভাই যোয়াশ (এঁরা গিবিয়াতের শমায়ের পুত্র), অস্মাবতের পুত্র যিষীয়েল আর পেলট, অনাথোত শহরের বরাখা আর যেহূ, গিবিয়োনের যিশ্ময়িয় (ইনি সেই ত্রিশ জন বীরের অন্যতম এবং তাদের অধ্যক্ষ ছিলেন।), যিরমিয়, যহসীয়েল, যোহানন, গদেরাথের যোষাবদ, ইলিয়ূষয়, যিরীমোৎ, বালিয়, শমরিয়, হরূফের শফটিয়, ইল‌্কানা, যিশিয়, অসরেল, যোয়েষর, যাশবিয়াম প্রমুখ কোরহ পরিবারগোষ্ঠীর যোদ্ধারা আর গদোর শহরের যিরোহমের পুত্র যোয়েলা আর সবদিয়।

গাদীয় লোক

গাদ পরিবারগোষ্ঠীর একাংশও মরুভূমিতে দায়ূদের দুর্গে গিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। এরাও সকলেই সিংহের মত পরাক্রমশালী এবং কুশলী যোদ্ধা ছিলেন। বর্শা আর ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করা ছাড়াও এঁরা সকলেই পাহাড়ী পথে হরিণের মত দৌড়তে পারতেন।

গাদ পরিবারগোষ্ঠীর এই দলের নেতা ছিলেন এষর; দ্বিতীয় ওবদিয় এবং তৃতীয় ইলীয়াব। 10 চতুর্থ মিশমান্না, পঞ্চম যিরমিয়, 11 ষষ্ঠ অত্তয়, সপ্তম ইলীয়েল, 12 অষ্টম যোহানন, নবম ইল্সাবাদ, 13 দশম যিরমিয় আর একাদশ মগ্বন্নয়।

14 এঁরা সকলেই গাদীয় সেনাবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন এবং এই দলের দুর্বলতম ব্যক্তিও একাই 100 জনের সঙ্গে যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখতেন। দলের সর্বাপেক্ষা যিনি শক্তিমান ছিলেন তিনি একা 1000 জনের মোকাবিলা করতে পারতেন। 15 গাদ পরিবারগোষ্ঠীর এই সমস্ত সৈনিকরা বছরের প্রথম মাসে, যখন যর্দন নদীতে প্রবল বন্যা হচ্ছে সে সময়ে নদী পার হয়ে উপত্যকার লোকদের পূর্ব ও পশ্চিমে তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন।

অন্যান্য সৈনিকরাও দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিলেন

16 বিন্যামীন ও যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর অন্যান্য ব্যক্তিরাও দুর্গে এসে দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। 17 দায়ূদ তাঁদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আপনারা যদি শান্তিতে আমাকে সাহায্য করতে এসে থাকেন তাহলে আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আমি কিছু অন্যায় না করা সত্ত্বেও আপনারা যদি আমার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করতে এসে থাকেন তাহলে আমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যেন তা দেখেন এবং আপনাদের শাস্তি দেন।”

18 অমাসয় ছিলেন সেই তিরিশ জন বীরের নেতা। তখন আত্মার ভর হলে তিনি বলে উঠলেন:

“দায়ূদ আমরা তোমার পক্ষে।
    আমরা তোমার সঙ্গে আছি। হে যিশয়ের পুত্র—শান্তি!
তোমার শান্তি হোক্।
    এবং যারা তোমায় সাহায্য করে তাদের শান্তি হোক্। কারণ তোমার ঈশ্বর তোমায় সাহায্য করেন।”

দায়ূদ তখন এই সমস্ত ব্যক্তিকেই তাঁর দলে স্বাগত জানিয়ে, তাঁদের ওপর নিজের সেনাবাহিনীর দায়িত্ব দিলেন।

19 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর অনেকেই দায়ূদ যখন পলেষ্টীয়দের সঙ্গে শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন। তবে পলেষ্টীয় নেতাদের আপত্তি থাকায় শেষ পর্যন্ত দায়ূদ শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পলেষ্টীয়দের সাহায্য করেন নি। এই সমস্ত পলেষ্টীয় নেতারা বলেছিল, “দায়ূদ যদি তাঁর মনিব, শৌলের কাছে ফিরে যান তবে আমাদের মুণ্ড কাটা পড়বে।” 20 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠীর যে সমস্ত ব্যক্তি সিক্লগ শহরে এসে দায়ূদের দলে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা হলেন—অদ্ন, যোষাবদ, যিদীয়েল, মীখায়েল, যোষাবদ, ইলীহূ আর সিল্লথয়। এঁরা সকলেই মনঃশি পরিবারে সৈন্যাধ্যক্ষ ছিলেন। 21 অসৎ‌ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তাঁরা দায়ূদকে সাহায্য করেছিলেন। এই সমস্ত অসৎ‌ ব্যক্তিরা সারা দেশে সুযোগ সুবিধে মত চুরি-চামারি চালিয়ে যাচ্ছিল। মনঃশি পরিবারের বীর যোদ্ধারা দায়ূদের সেনাবাহিনীর নেতায় পরিণত হয়েছিলেন।

22 প্রতি দিন দলে দলে লোক এসে দায়ূদের পাশে দাঁড়ানোয় এমশঃ তিনি এক সুবিশাল ও শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়ে তুললেন।

হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে যোগদানকারী অন্যান্য লোকরা

23 এইসব ব্যক্তিবর্গ যাঁরা হিব্রোণ শহরে দায়ূদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন এবং যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং প্রভু যা বলেছিলেন সেই অনুযায়ী শৌলের রাজধানী দায়ূদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন, তাঁরা সংখ্যায় হলেন নিম্নরূপ:

24 যিহূদা পরিবারগোষ্ঠীর 6800 জন কুশলী ও তৎপর যোদ্ধা। এঁরা সকলেই বর্শা ও বল্লমধারী ছিলেন।

25 শিমিয়োনের পরিবারগোষ্ঠীর 7100 জন বীর যোদ্ধা ছিলেন।

26 লেবি পরিবারগোষ্ঠীর 4600 জন। 27 হারোণ বংশের নেতা যিহোয়াদাও 3700 জন নিয়ে এই দলে যোগ দিয়েছিলেন। 28 এছাড়া পরিবারের আরো 22 জন নেতাসহ যোগ দিয়েছিলেন সাহসী ও তরুণ সেনা সাদোক।

29 শৌলের আত্মীয় এবং তখনও পর্যন্ত তার প্রতি অনুগত বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর 3000 জনও যোগ দিয়েছিলেন এই দলে।

30 ইফ্রয়িমের পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 20,800 জন বীরযোদ্ধা। তারা তাদের পরিবারে বিখ্যাত ছিল।

31 মনঃশি পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 18,000 জন দায়ূদকে রাজা বানাতে।

32 ইষাখরের পরিবার থেকে আত্মীয়সহ এসেছিলেন 200 জন প্রাজ্ঞ নেতা। তাঁরা হলেন সেই সব লোক যাঁরা ইস্রায়েলের মঙ্গলের জন্য কখন কি করা প্রয়োজন তা ভাল ভাবেই বুঝতেন।

33 সবূলূনের পরিবারগোষ্ঠী থেকে যোগ দিয়েছিলেন সর্বাস্ত্রে পারদর্শী 50,000 জন কুশলী যোদ্ধা। এঁরা সকলেই দায়ূদের একান্ত অনুগত ছিলেন।

34 নপ্তালির পরিবারগোষ্ঠী থেকে 1000 জন অধ্যক্ষ ছিল। তাঁদের সঙ্গে 37,000 জন ব্যক্তি ছিল। তাঁরা বর্শা ও ঢাল নিয়ে এসেছিলেন।

35 দান পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 28,600 জন রণ-কুশলী যোদ্ধা।

36 আশের পরিবারগোষ্ঠী থেকেও রণ-কুশলী 40,000 জন এসেছিলেন।

37 এবং যর্দন নদীর পূর্বদিক থেকে রূবেণ, গাদ ও অর্ধেক মনঃশি পরিবার মিলিয়ে মোট 120,000 ব্যক্তি বিভিন্ন রকমের অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে এই দলে যোগ দিয়েছিলেন।

38 এই সমস্ত বীর যোদ্ধারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে হিব্রোণে এসেছিলেন। ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকদেরও এই প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন ছিল। 39 এঁরা সকলে হিব্রোণে দায়ূদের সঙ্গে তিন দিন পানাহার করে ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনের বানানো খাবার-দাবার খেয়ে কাটালেন। 40 ইষাখর, সবূলূন ও নপ্তালি পরিবারগোষ্ঠীরা উট, ঘোড়া, গাধা ও ষাঁড়ের পিঠে চড়িয়ে ময়দা, ডুমুরের পিঠে, কিস্মিস্, দ্রাক্ষারস, তেল, ছাগল এবং মেষ প্রভৃতি এনেছিলেন। ইস্রায়েলের সকলেই খুব খুশী হয়েছিলেন।

যোহন 6:45-71

45 ভাববাদীদের পুস্তকে লেখা আছে: ‘তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা লাভ করবে।’(A) যে কেউ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে সেই আমার কাছে আসে। 46 আমি বলছি না যে, কেউ পিতাকে দেখেছেন। কেবলমাত্র যিনি পিতার কাছ থেকে এসেছেন তিনিই পিতাকে দেখেছেন।

47 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে কেউ বিশ্বাস করেছে সেই অনন্ত জীবন পেয়েছে। 48 আমিই সেই রুটি যা জীবন দেয়। 49 তোমাদের পিতৃপুরুষরা মরুপ্রান্তরে মান্না খেয়েছিল, কিন্তু তবু তারা মারা গিয়েছিল। 50 এ সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে আসে, আর কেউ যদি তা খায়, তবে সে মরবে না। 51 আমিই সেই জীবন্ত রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে। কেউ যদি এই রুটি খায় তবে সে চিরজীবি হবে। যে রুটি আমি দেব তা হল আমার দেহের মাংস। তা আমি দিই যাতে জগত জীবন পায়।”

52 এই কথা শুনে ইহুদীদের মধ্যে তর্ক বেধে গেল। তারা বলতে লাগল, “এই লোকটা কেমন করে তার দেহের মাংস আমাদের খেতে দিতে পারে?”

53 যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যিই বলছি; তোমরা যদি মানবপুত্রের মাংস না খাও ও তাঁর রক্ত পান না কর, তাহলে তোমাদের মধ্যে জীবন নেই। 54 যে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে অনন্ত জীবন পায়, আর শেষ দিনে আমি তাকে ওঠাবো। 55 আমার মাংসই প্রকৃত খাদ্য ও আমার রক্তই প্রকৃত পানীয়। 56 যে আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে আমার মধ্যে থাকে, আর আমিও তার মধ্যে থাকি।

57 “যেমন জীবন্ত পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন, আর পিতার জন্য আমি জীবিত আছি, ঠিক সেরকম যে আমাকে খায় সে আমার দরুন জীবিত থাকবে। 58 এ সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছিল। এটা তেমন রুটি নয় যা তোমাদের পিতৃপুরুষরা খেয়েছিল এবং তা সত্ত্বেও পরে তারা সকলে মারা গিয়েছিল। এই রুটি যে খায় সে চিরজীবি হবে।”

59 কফরনাহূমের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দেবার সময় যীশু এইসব কথা বললেন।

অনন্ত জীবনের বাক্যসকল

60 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে তাঁর এই কথা শুনে বলল, “এ বড়ই কঠিন কথা; কে এ গ্রহণ করতে পারে?”

61 যীশু অন্তরে টের পেলেন যে তাঁর শিষ্যরা এই বিষয় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে। তাই তিনি তাদের বললেন, “এই শিক্ষায় কি তোমরা ধাক্কা পেয়েছ? 62 তবে মানবপুত্র আগে যেখানে ছিলেন উর্দ্ধে সেখানে তাঁকে ফিরে যেতে দেখলে তোমরা কি বলবে? 63 আত্মাই জীবন দান করে, রক্ত মাংসের শরীর কোন উপকারে আসে না। আমি তোমাদের সকলকে যে সব কথা বলেছি তা হল আধ্যাত্মিক আর তাই জীবন দান করে। 64 কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা বিশ্বাস করে না।” কারণ যীশু শুরু থেকেই জানতেন কে কে তাঁকে বিশ্বাস করে না, আর কেই বা তাঁকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে। 65 তাই তিনি বললেন, “এজন্য আমি তোমাদের বলেছি, ‘পিতা ইচ্ছা না করলে কেউই আমার কাছে আসতে পারে না।’”

66 এই কারণেই তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে পিছিয়ে গেল, তাঁর সঙ্গে চলাফেরা বন্ধ করে দিল।

67 তখন যীশু সেই বারোজন প্রেরিতকে বললেন, “তোমরাও কি চলে যেতে চাইছ?”

68 শিমোন পিতর বললেন, “প্রভু, আমরা কার কাছে যাব? আপনার কাছে সেই বাণী আছে যা অনন্ত জীবন দান করে। 69 আমরা বিশ্বাস করি ও জানি যে আপনিই সেই পবিত্র একজন, যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন।”

70 এর উত্তরে যীশু তাঁদের বললেন, “আমি কি তোমাদের বারোজনকে মনোনীত করি নি? তবু তোমাদের মধ্যে একজন দিয়াবল আছে।” 71 তিনি শিমোন ঈষ্করিয়োতের ছেলে যিহূদার বিষয়ে বলছিলেন, কারণ যিহূদা সেই বারো জনের মধ্যে একজন হলেও পরে যীশুকে শত্রুর হাতে তুলে দেবে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International