Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 রাজাবলি 4-6

একজন ভাববাদীর বিধবা স্ত্রী ইলীশায়ের সাহায্য চাইলেন

একজন বিবাহিত ভাববাদীর মৃত্যু হলে তার স্ত্রী এসে ইলীশায়ের কাছে কেঁদে পড়লো, “আমার স্বামী অনুগত ভৃত্যের মতো আপনার সেবা করেছেন। কিন্তু এখন তিনি মৃত! আপনি জানেন আমার স্বামী প্রভুকে সম্মান করেন কিন্তু তিনি একজন পুরুষের কাছে টাকা ধার করেছিলেন। এখন সেই মহাজন ক্রীতদাস বানানোর জন্য আমার দুই পুত্রকে নিতে আসছে।”

ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “কিন্তু আমি কি করে তোমায় সাহায্য করবো? তোমার বাড়িতে কি আছে বলো?”

সেই স্ত্রীলোকটি বললো, “আমার বাড়িতে এক জালা তেল ছাড়া আর কিছুই নেই।”

তখন ইলীশায় বললেন, “যাও তোমার পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে যতো পারো খালি বাটি জোগাড় করে নিয়ে এসো। তারপর বাড়ি গিয়ে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দাও, ঘরে যেন তুমি আর তোমার পুত্ররা ছাড়া কেউ না থাকে। এরপর ঐ জালা থেকে তেল ঢেলে প্রত্যেকটা বাটি ভর্ত্তি করে আলাদা আলাদা জায়গায় সরিয়ে রাখো।”

তখন সেই স্ত্রীলোকটি বাড়ী ফিরে গিয়ে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিল। সে আর তার পুত্ররাই শুধুমাত্র ঘরে ছিল। পুত্ররা একটার পর একটা বাটি আনছিল। স্ত্রীলোকটি সেগুলোতে তেল ঢালছিল। এমনি করে করে বহু পাত্র ভরা হল। অবশেষে সে তার পুত্রদের বললো, “আমাকে আর একটি বাটি এনে দাও।”

তার এক পুত্র তাকে বললো, “আর তো বাটি নেই।” তৎ‌ক্ষণাৎ‌ জালার তেল ফুরিয়ে গেল।

স্ত্রীলোকটি গিয়ে ঈশ্বরের লোক, ইলীশায়কে একথা জানালো। ইলীশায় তাকে বললেন, “যাও, তেল বিক্রি করে দেনা মিটিয়ে ফেলো। যা বাকী টাকা থাকবে তাতে তোমার আর তোমার পুত্রদের জন্য যথেষ্ট হবে।”

শূনেমের এক মহিলা ইলীশায়কে থাকতে ঘর দিল

ইলীশায় যখন একদিন শূনেমে যান, সেখানকার এক ধনবতী মহিলা তাঁকে নিজের বাড়িতে খাবার জন্য নেমন্তন্ন করল। এরপর থেকে ইলীশায় ওখান দিয়ে গেলেই ঐ মহিলার বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতেন।

সেই মহিলা তাঁর স্বামীকে বলল, “আমি জানি ইনি ঈশ্বরের একজন পবিত্র মানুষ। সব সময়ই তিনি আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করেন। 10 চলো না, ওঁর জন্য ছাদে একটা ছোটো ঘর তুলে দিই। সেখানে একটা বিছানা, টেবিল, চেয়ার আর বাতিদান রেখে দেব। তাহলে এরপর যখন তিনি আমাদের বাড়ি আসবেন ঐ ঘরখানা নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।”

11 এক দিন ইলীশায় এই মহিলার বাড়ীতে এলেন, তিনি কক্ষে গিয়ে বিশ্রাম নিলেন। 12 ইলীশায় তাঁর ভৃত্য গেহসিকে বললেন, “ঐ শূনেমীয় মহিলাটিকে ডাক।”

ভৃত্যটি মহিলাকে ডেকে আনার পর, সে সামনে দাঁড়ালে ইলীশায় 13 তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “ওকে বলো, ‘দেখো তুমি আমাদের দুজনের যত্ন নেবার জন্য তোমার যথাসাধ্য করেছো। এখন আমরা তোমার জন্য কি করতে পারি? আমরা কি তোমার হয়ে রাজা বা সেনাপতির কাছে কিছু বলবো?’”

তখন মহিলা উত্তর দিল, “আমি এখানে আমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে দিব্যি আছি।”

14 ইলীশায় তখন গেহসিকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা তাহলে ওর জন্য কি করতে পারি?”

গেহসি উত্তর দিলো, “দাঁড়ান, আমি যতদূর জানি এই মহিলার কোনো পুত্র নেই আর ওঁর স্বামীরও যথেষ্ট বয়স হয়েছে।”

15 ইলীশায় বললেন, “ওকে ডেকে নিয়ে এসো।” গেহসি তখন সেই মহিলাকে ডাকতে গেলো। মহিলা এসে দরজার কাছে দাঁড়ালে 16 গেহসি তাকে বলল, “প্রায় একই সময়, আগামী বছর তুমি তোমার নিজের পুত্রকে আদর করবে।”

একথা শুনে মহিলাটি বলল, “হে প্রভু, আমার সঙ্গে মিথ্যে ছলনা করবেন না!”

শূনেমের মহিলার একটি সন্তান লাভ

17 ইলীশায়ের কথা মতোই, পরের বছর সেই মহিলা তার পুত্র সন্তানের জন্ম দিল।

18 ছেলেটি বড় হবার পর একদিন মাঠে তার পিতার ও অন্যদের সঙ্গে শস্য কাটা দেখতে গেল। 19 সেখানে গিয়ে ছেলেটা হঠাৎ‌‌ বলে উঠল, “ওফ্ আমার বড্ড মাথা ব্যথা করছে!”

তার পিতা ভৃত্যদের বলল, “ওকে তাড়াতাড়ি ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাও!”

20 ভৃত্যরা ছেলেটিকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবার পর ও দুপুর পর্যন্ত মায়ের কোলে বসে থেকে তারপর মারা গেল।

মহিলাটি ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন

21 মহিলাটি তখন মৃত ছেলেটিকে ইলীশায়ের ঘরে তাঁর বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে এল। 22 স্বামীকে ডেকে বলল, “ওগো, আমায় একটা গাধা আর একজন ভৃত্য দাও। আমি একবার তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের লোকের কাছ থেকে ঘুরে আসি।”

23 মহিলার স্বামী বলল, “আজ কেন ওঁর কাছে যেতে চাইছো? আজ তো অমাবস্যাও নয়, বিশ্রামের দিনও নয়।”

সে স্বামীকে বলল, “কিছু ভেবো না, সব ঠিক হয়ে যাবে।”

24 তারপর গাধার পিঠে জিন চাপিয়ে মহিলা তার কাজের লোককে বলল, “চলো এবার তাড়াতাড়ি যাওয়া যাক! কেবল মাত্র যখন আমি বলব তখন ধীরে যেও!”

25 ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে মহিলা কর্মিল পর্বতে গেল।

ইলীশায় দূর থেকে শূনেমীয় মহিলাকে আসতে দেখে তাঁর ভৃত্য গেহসিকে বললেন, “দেখো, সেই শূনেমীয় মহিলা আসছেন! 26 তুমি তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে খোঁজ নাও তো, ‘কি হল সব ঠিক আছে তো? তোমার স্বামী কেমন আছে? বাচ্চাটার শরীর ভালো আছে তো?’”

গেহসি মহিলাকে এসব জিজ্ঞেস করতে সে বলল, “সবই ঠিকঠাক আছে।”

27 তারপর পাহাড়ের ওপরে ইলীশায়ের সামনে নত হয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরলেন। গেহসি মহিলাকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে ইলীশায় বললেন, “ওকে কিছু ক্ষণ আমার সঙ্গে একা থাকতে দাও! ও খুবই ভেঙ্গে পড়েছে। আর প্রভুও আমাকে এখবর দেন নি, আমার কাছে গোপন করেছিলেন।”

28 তখন সেই শূনেমীয় মহিলা বলল, “আমি তো আপনার কাছে কখনও কোন পুত্র চাইনি। আমি তো আপনাকে বলেছিলাম, ‘আমার সঙ্গে ছলনা করবেন না!’”

29 একথা শুনে, ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “কোমর বেঁধে তৈরি হও, আমার লাঠিটা নাও এবং এক্ষুনি যাও। পথে কারো সঙ্গে কথা বলার জন্য থেমো না। যদি কারো সঙ্গে দেখা হয়, কি কেমন পর্যন্ত বলার দরকার নেই। তোমাকেও কেউ বললে, কোন উত্তর দেবে না। মহিলার বাড়িতে পৌঁছে আমার লাঠিটা বাচ্চাটার মুখে ছুঁইয়ে দিও।”

30 কিন্তু ছেলেটির মা বলল, “আমি জীবন্ত প্রভু এবং আপনার নামে শপথ করে বলছি: আমি আপনাকে ছেড়ে যাব না!”

তাই ইলীশায় উঠে দাঁড়ালেন এবং তাকে অনুসরণ করলেন।

31 এদিকে গেহসি মহিলা ও ইলীশায়ের আগে আগে বাড়িতে এসে সেই লাঠিটা নিয়ে বাচ্চাটার মুখে ছোঁয়ালো, কিন্তু তাতে কোন জীবনের লক্ষণ দেখা গেল না। গেহসি তখন ফিরে এসে ইলীশায়কে বলল, “ছেলেটা তো উঠল না প্রভু!”

শূনেমীয় মহিলাটির পুত্র আবার বেঁচে উঠল

32 ইলীশায় বাড়ির ভেতর তাঁর ঘরে গিয়ে দেখলেন, মৃত শিশুটিকে তাঁরই বিছানায় শোওয়ানো আছে। 33 ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন ইলীশায়। এখন সেখানে শুধু তিনি আর সেই মৃত ছেলেটি, এরপর তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। 34 তারপর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লেন সেই মৃত ছেলেটির দেহের ওপর। তিনি ছেলেটির মুখের ওপর নিজের মুখ রাখলেন, তার চোখের ওপর নিজের চোখ এবং তার হাতের ওপর নিজের হাত রাখলেন। এভাবে ঐ মৃত শরীরটা গরম হয়ে না ওঠা পর্যন্ত শুয়ে থাকলেন ইলীশায়।

35 তারপর উঠে পড়ে ঘরটার চারপাশে কিছুক্ষণ হেঁটে আবার গিয়ে ঐ দেহের ওপর শুলেন তিনি। ওভাবেই তিনি শুয়ে থাকলেন, যত ক্ষণ না সাতবার হাঁচার পর চোখ মেলে উঠে বসল ছেলেটা।

36 ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “যাও গিয়ে ওর মাকে ডেকে নিয়ে এসো!”

গেহসি তাকে নিয়ে এলে, ইলীশায় বললেন, “ছেলেকে কোলে নাও।”

37 তখন সেই মহিলা ঘরে ঢুকে ভক্তি ভরে ইলীশায়ের পায়ে প্রণাম করে ছেলেকে কোলে তুলে বেরিয়ে গেল।

ইলীশায় ও বিষ মেশানো ঝোল

38 গিল‌্গলে তখন দুর্ভিক্ষ চলছিল। ইলীশায় আবার সেখানে গেলেন। ভাববাদীদের দলটি তাঁর সামনে বসে ছিল। ইলীশায় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “বড় পাত্রটা আগুনে বসিয়ে এদের জন্য একটু রান্না কর।”

39 একজন মাঠে শাকসব্জি তুলতে গেল। মাঠে গিয়ে একটা ফলভরা জঙ্গলী লতা দেখতে পেয়ে লোকটা ফল ছিড়ে কোঁচড়ে বেঁধে নিয়ে এলো। তারপর সেই ফল কেটে পাত্রে দিয়ে দিল, যদিও ভাববাদীদের দল আদৌ জানতো না ওটা কি ধরণের ফল।

40 ঝোল রান্না হলে পাত্রে কিছুটা ঢেলে সবাইকে খেতে দেওয়া হল। কিন্তু সকলে সেই ঝোল মুখে দিয়েই চিৎকার করে ইলীশায়কে বলল, “ঈশ্বরের লোক! পাত্রে বিষ মেশানো আছে!” ঝোলের স্বাদ বিষাক্ত হওয়ায় ওরা কেউই তা খেতে পারলো না।

41 ইলীশায় তখন কিছুটা ময়দা আনতে বললেন। ময়দা আনা হলে, তিনি সেই ময়দা পাত্রে ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, “এবার ঐ ঝোল সবাইকে খেতে দাও।”

আর আশ্চর্য ব্যাপার, ঝোলটা বেশ খাবার যোগ্য হয়ে গেল।

ইলীশায় ভাববাদীদের দলকে খাওয়ালেন

42 বাল্-শালিশা থেকে একজন ইলীশায়ের জন্য নবান্নের ফসল হিসেবে 20 খানা যবের রুটি আর ঝোলা ভরে শস্য উপহার নিয়ে এসেছিল। ইলীশায় বললেন, “এইসব খাবার এখানে যারা আছে তাদের খেতে দাও।”

43 ইলীশায়ের ভৃত্য বললো, “এখানে প্রায় 100 জন লোক আছে। এত জন লোককে আমি এইটুকু খাবার কি করে দেব?”

কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি বলছি তুমি খেতে দাও। প্রভু বলছেন, ‘সবাই খাওয়ার পরেও খাবার পড়ে থাকবে।’”

44 তখন ইলীশায়ের ভৃত্য সেই সব খাবার নিয়ে ভাববাদীদের সামনে ধরলো। তাদের পেট ভরে খাওয়ানোর পরেও, প্রভু যেমন বলেছিলেন দেখা গেল তখনও খাবার পড়ে আছে।

নামানের সমস্যা

অরামের রাজার সেনাপতি ছিল নামান। রাজার কাছে নামান ছিল একজন মহান এবং খুব শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি, কারণ প্রভু সব সময় তাঁর মাধ্যমে অরামকে বিজয়ের পথে নিয়ে যেতেন। নামান খুবই শক্তিশালী ও মহান হলেও তিনি কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত ছিলেন।

অরামীয়রা বহুবার ইস্রায়েলে যুদ্ধ করতে সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিল। এইসব সেনারা এখানকার লোকদের ক্রীতদাস করেও নিয়ে গিয়েছে। একবার তারা ইস্রায়েল থেকে একটা বাচ্চা মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। কালক্রমে এই ছোট মেয়েটি নামানের স্ত্রীর এক দাসীতে পরিণত হয়। মেয়েটি নামানের স্ত্রীকে বলল, “মনিব শমরিয়ায় বাসকারী ভাববাদীর সঙ্গে দেখা করলে তিনি নিশ্চয়ই তাঁর কুষ্ঠরোগ সারিয়ে দিতেন।”

নামান তাঁর মনিবকে (অরামের রাজাকে) গিয়ে ইস্রায়েলীয় মেয়েটা কি বলেছে তা বললেন।

তখন অরামের রাজা বললেন, “ঠিক আছে, তুমি এখনই যাও। আমি ইস্রায়েলের রাজাকে একটা চিঠি দিচ্ছি।”

নামান তখন 750 পাউণ্ড রূপো, 6000 টুকরো সোনা আর দশ প্রস্থ পোশাক উপহার স্বরূপ নিলেন এবং ইস্রায়েলে গেলেন। নামানের সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজাকে লেখা অরামের রাজার চিঠিও ছিল যাতে লেখা ছিল, “আমি আমার সেবক নামানকে কুষ্ঠরোগ সারানোর জন্য আপনার কাছে পাঠালাম।”

চিঠিটা পড়ে ইস্রায়েলের রাজা মনোকষ্টে তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলে বললেন, “আমি তো আর ঈশ্বর নই! জীবন-মৃত্যুর ওপর আমার যখন কোন হাত নেই, তখন কেন অরামের রাজা কুষ্ঠরোগাক্রান্ত একজনকে আমার কাছে সারিয়ে তোলার জন্য পাঠালেন? এটা খুবই স্পষ্ট যে তিনি একটি যুদ্ধ বাধাবার পরিকল্পনা করছেন!”

ঈশ্বরের লোক ইলীশায় খবর পেলেন শোকার্ত ইস্রায়েলের রাজা তাঁর পোশাক ছিঁড়ে ফেলেছেন। তখন তিনি রাজাকে খবর পাঠালেন: “তুমি কেন পোশাক ছিঁড়ে কষ্ট পাচ্ছ? নামানকে আমার কাছে আসতে দাও, তাহলে ও বুঝবে ইস্রায়েলে সত্যি সত্যিই একজন ভাববাদী বাস করে!”

নামান তখন তাঁর রথ ও ঘোড়া নিয়ে ইলীশায়ের বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ালেন। 10 ইলীশায় একজনকে দিয়ে খবর পাঠালেন, “যাও যর্দন নদীতে গিয়ে সাত বার স্নান করো, তাহলেই তোমার চামড়া ঠিক হয়ে যাবে আর তুমিও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠবে।”

11 নামান খুবই ক্রুদ্ধ হয়ে চলে গেলেন। তিনি বললেন, “আমি ভেবেছিলাম একবার অন্তত ইলীশায় বাইরে এসে তাঁর প্রভু ঈশ্বরের নাম নিয়ে আমার গায়ের ওপর হাত নেড়ে আমার কুষ্ঠরোগ সারিয়ে তুলবেন! 12 দম্মেশকের অবানা আর পর্পর নদীর জল ইস্রায়েলের যে কোন জলের থেকেই ভালো! ওই সব নদীতে গা ধুলে কেন হবে না?” নামান প্রচণ্ড রেগে গিয়ে ফিরে যাবেন বলে ঠিক করলেন।

13 কিন্তু নামানের ভৃত্যরা তাঁকে গিয়ে বললো, “মনিব, ভাববাদী যদি আপনাকে খুব শক্ত কিছু বলতেন, আপনি নিশ্চয়ই তা শুনতেন, তাই না? উনি যখন আপনাকে খুব সহজ একটা কাজ বলেছেন, সেটা অবশ্যই করা উচিৎ‌। উনি তো বলেই ছিলেন, ‘ধুলেই তুমি শুচি হয়ে যাবে।’”

14 নামান তখন ইলীশায়ের কথামতো, যর্দন নদীর জলে সাতবার ডুব দিলেন এবং নামানের দেহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও নিরাময় হয়ে উঠল। একেবারে শিশুদের ত্বকের মতোই নরম হয়ে গেল!

15 নামান আর তাঁর দলের সবাই তখন ইলীশায়ের কাছে ফিরে এলেন। ইলীশায়ের সামনে দাঁড়িয়ে নামান বললেন, “এতদিনে আমি বুঝলাম ইস্রায়েল ছাড়া পৃথিবীতে আর কোথাও কোন ঈশ্বর নেই! এখন আপনি অনুগ্রহ করে আমার কাছ থেকে একটা উপহার গ্রহণ করুন!”

16 কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি প্রভুর সেবা করি এবং আমার প্রতিজ্ঞা, যতদিন প্রভু আছেন আমি কোন উপহার নিতে পারব না।”

নামান উপহার নেবার জন্য ইলীশায়কে অনেক অনুনয় বিনয় করেও টলাতে পারলেন না। 17 তখন নামান বললেন, “আপনি যখন নিতান্তই কোন উপহার নেবেন না, অন্তত আমাকে ইস্রায়েল থেকে দু-টুকরি এখানকার ধূলো আমার দুটো খচ্চরের পিঠে চাপিয়ে নিয়ে যেতে অনুমতি দিন। কারণ এরপর থেকে আমি আর কোন মূর্ত্তিকেই হোমবলি বা কোন নৈবেদ্য দেব না। আমি শুধুমাত্র প্রভুকেই বলিদান করব। 18 আর আমি আগে থাকতেই ক্ষমা চেয়ে প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে নিচ্ছি: ভবিষ্যতে আমার মনিব অরামরাজ যখন রিম্মোণের মন্দিরের মূর্ত্তিকে পূজো দিতে যাবেন, তাঁর ওপর ভর নামবে বলে আমায় সেখানে মাথা নীচু করতেই হবে। কিন্তু প্রভু যেন সেজন্য আমাকে ক্ষমা করেন।”

19 ইলীশায় তখন নামানকে আশীর্বাদ করে বললেন, “যাও সুখে শান্তিতে থাকো।”

নামান যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কিছু দূর গিয়েছেন, 20 ইলীশায়ের ভৃত্য গেহসি বলল, “দেখেছো, আমার প্রভু কোন উপহার না নিয়েই অরামীয় নামানকে ছেড়ে দিলেন। আমি বরঞ্চ এই বেলা গিয়ে ওর কাছ থেকে কিছু হাতানোর ব্যবস্থা করি!” 21 এই বলে গেহসি নামানের পেছন পেছন দৌড়তে লাগল।

নামান যখন দেখতে পেলেন একজন কেউ ছুটতে ছুটতে আসছে তিনি তখন রথ থেকে নেমে গেহসিকে প্রশ্ন করলেন, “কি, সব ঠিক আছে তো?”

22 গেহসি বললো, “হ্যাঁ সব ঠিকই আছে। আমার মনিব আমাকে বলে পাঠালেন, ‘ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের ভাববাদীদের দলের দুজন এসেছে। অনুগ্রহ করে তাদের যদি 75 পাউণ্ড রূপো আর দু-প্রস্থ পোশাক-আশাক দাও তো বড়-ভালো হয়।’”

23 একথা শুনে নামান বললেন, “75 পাউণ্ড কেন? 150 পাউণ্ড নাও!” তারপর নামান দুটো বস্তায় 150 পাউণ্ড রূপো ভরে, তার সঙ্গে দু-প্রস্থ জামাকাপড় দিয়ে জোর করে তাঁর দুজন ভৃত্যকে গেহসির সঙ্গে পাঠালেন। 24 ভৃত্যরা এইসব জিনিস বয়ে পাহাড় পর্যন্ত নিয়ে আসার পর, গেহসি জিনিসগুলি নিয়ে ওদের ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিল। তারপর ও এই সমস্ত জিনিস বাড়িতে লুকিয়ে রাখলো।

25 গেহসি এসে মনিবের সামনে দাঁড়ানোর পর ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথায় গিয়েছিলে?”

গেহসি উত্তর দিল, “কোথাও না তো।”

26 ইলীশায় তখন বললেন, “শোন, নামান যখন রথ থেকে নেমে তোমার সঙ্গে দেখা করে, তখন আমার হৃদয় তোমার সঙ্গে ছিল, এটা টাকাপয়সা, জামাকাপড়, জলপাই কুঞ্জ, দ্রাক্ষা ক্ষেত, গরু, মেষ, দাস-দাসী নেবার সময় নয়। 27 এখন নামানের রোগ তোমার আর তোমাদের উত্তরপুরুষদের হবে। তোমাদের কুষ্ঠ হবে।”

গেহসি যখন ইলীশায়ের কাছ থেকে চলে গেল, তখন ওর গায়ের চামড়া বরফের মত সাদা হয়ে গেল।

ইলীশায় আর কুড়ুলের বৃত্তান্ত

তরুণ ভাববাদীরা ইলীশায়কে বলল, “আমরা ওখানে যে জায়গায় থাকি সেটা আমাদের পক্ষে বড্ড ছোট। চলুন যর্দন নদীর তীর থেকে কিছু কাঠ কেটে আনা যাক। আমরা প্রত্যেকে একটা করে গুঁড়ি নিয়ে এসে ওখানেই একটা থাকার জায়গা বানানো যাক।”

ইলীশায় বললেন, “বেশ তো, যাও না।”

ওদের একজন বললো, “আপনিও চলুন না আমাদের সঙ্গে।”

ইলীশায় বললেন, “ঠিক আছে, চলো আমিও যাচ্ছি।”

ইলীশায় তখন ওদের সঙ্গে যর্দন নদীর তীরে গেলেন। সেখানে গিয়ে তরুণ ভাববাদীরা সবাই গাছ কাটতে শুরু করলো। গাছ কাটার সময় একজনের কুড়ুলের লোহার ডগাটা হাতল থেকে পিছলে গিয়ে একেবারে জলে গিয়ে পড়লো। লোকটা চেঁচিয়ে উঠলো, “যাঃ! এখন কি হবে? প্রভু, আমি যে অন্য লোকের কুড়ুল ধার করে এনেছিলাম!”

ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “ঠিক কোথায় পড়েছে ওটা?”

লোকটা ইলীশায়কে জায়গাটা দেখানোর পর, তিনি একটা ছড়ি কেটে সেটা জলে ছুঁড়ে ফেললেন। এতে কুড়ুলের মাথাটা সেই ছড়ির সঙ্গে ভেসে উঠলো! ইলীশায় বললেন, “যাও ওটা তুলে নাও এবার।” কৃতজ্ঞ চিত্তে লোকটি কুড়ুলের মাথাটা তুলে নিল।

অরামের ইস্রায়েলকে ফাঁদে ফেলার চক্রান্ত

অরামের রাজা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। তিনি তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একটি পরিষদীয় বৈঠক করলেন। তিনি বললেন, “আমি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় শিবির স্থাপন করব।”

কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি ইস্রায়েলের রাজাকে একটি খবর দিয়ে সতর্ক করে দিলেন, “ওখান দিয়ে যাতায়াত করো না! খুব সাবধান! কারণ ওখানে অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা লুকিয়ে আছে!”

10 খবর পেয়ে ইস্রায়েলের রাজা সঙ্গে সঙ্গে যে জায়গা সম্পর্কে ইলীশায় তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, তাঁর লোকদের জানিয়ে দিলেন এবং তিনি তাঁর বাহিনীর অনেকের জীবন রক্ষা করতে পারলেন।

11 এঘটনায় অরামের রাজা খুবই বিচলিত হয়ে তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের এক বৈঠকে ডেকে বললেন, “এখানে ইস্রায়েলের হয়ে কে গুপ্তচরের কাজ করছে বল?”

12 তখন অরামীয় সেনাপ্রধানদের একজন বললেন, “আমার মনিব এবং রাজা, আমাদের মধ্যে কেউই গুপ্তচর নয়! ইস্রায়েলের ভাববাদী ইলীশায়, ইস্রায়েলের রাজাকে অনেক গোপন খবরই দৈববলে জানিয়ে দিতে পারেন। এমন কি আপনি শোবার ঘরে যে সব কথাবার্তা বলেন তাও উনি জানতে পারেন!”

13 অরামের রাজা বললেন, “আমি লোক পাঠাচ্ছি। এই ইলীশায়কে খুঁজে বার করতেই হবে!”

ভৃত্যরা রাজাকে খবর দিল, “ইলীশায় এখন দোথনে আছেন!”

14 অরামের রাজা তখন রথবাহিনী, ঘোড়া ইত্যাদি সহ সেনাবাহিনীর একটা বড় দল দোথনে পাঠালেন। তারা রাতারাতি সেখানে এসে শহরটাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেললো। 15 সেই দিন, ঈশ্বরের লোকটির ভৃত্য খুব ভোরে উঠে পড়ল, বাইরে গিয়ে দেখে ঘোড়া রথসহ বিরাট এক সেনাবাহিনী শহরের চারপাশ ঘিরে আছে!

সে ছুটে গিয়ে ঈশ্বরের লোককে জিজ্ঞেস করল, “প্রভু আমরা এখন কি করব?”

16 ইলীশায় বললেন, “ভয় পেও না! আমাদের জন্য যে সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে তা অরামের সেনাবাহিনীর থেকে অনেক বড়!”

17 ইলীশায় তারপর প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু, আমার ভৃত্যের চক্ষু উন্মিলীত কর যাতে ও দেখতে পায়।”

যেহেতু প্রভু সেই তরুণ ভৃত্যকে অলৌকিক দৃষ্টি দিলেন, ও দেখতে পেল, গোটা শহরটা শত সহস্র ঘোড়া আর আগুনের রথে ভরে রয়েছে! ইলীশায়কে ঘিরে আছে এই বাহিনী।

18 এই সুবিশাল বাহিনী ইলীশায়ের আদেশের অপেক্ষায় নেমে এলে, তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “তুমি ঐসব সেনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নাও।”

ইলীশায়ের প্রার্থনা মতো প্রভু তখন অরামীয় সেনাবাহিনীর দৃষ্টিশক্তি হরণ করলেন। 19 ইলীশায় অরামীয় সেনাবাহিনীকে ডেকে বললেন, “এটা সঠিক পথ বা শক্ত শহর নয়। আমার সঙ্গে সঙ্গে এসো। তোমরা যাকে খুঁজছো, আমি তোমাদের তার কাছে পৌঁছে দেব চল।” একথা বলে ইলীশায় তাদের শমরিয়ায় নিয়ে গেলেন।

20 শমরিয়ায় পৌঁছনোর পর ইলীশায় বললেন, “প্রভু এবার ওদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দাও যাতে ওরা আবার দেখতে পায়।”

প্রভু তখন তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলে অরামীয় সেনাবাহিনী দেখলো তারা সকলে শমরিয়া শহরের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। 21 ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীকে দেখার পর ইলীশায়কে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আমার পিতা, আমি কি এদের হত্যা করব?”

22 ইলীশায় বললেন, “না, ওদের তুমি হত্যা করো না। যুদ্ধে তরবারি আর তীর-ধনুকের বলে যাদের তুমি বন্দী করবে, তাদের হত্যা করবে না। অরামীয় সেনাদের এখন রুটি আর জল পান করতে দাও। খাওয়া-দাওয়া হলে ওদের রাজার কাছে ওদের বাড়ীতে ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিও।”

23 তখন ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীর জন্য অনেক খাবার বানালেন। অরামের সেনারা সে সব খাবার পর মহারাজ তাদের নিজেদের বাড়িতে ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিলেন। অরামীয় সেনাবাহিনী তাদের মনিবের কাছে দেশে ফিরে গেল। এরপর আর কখনও অরামীয়রা লুঠপাট চালানোর জন্য ইস্রায়েলে কোন সেনাবাহিনী পাঠায় নি।

শমরিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ

24 এই ঘটনার পর, অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী জড়ো করে শমরিয়া শহরকে ঘেরাও করে আক্রমণ করতে যান। 25 অরামীয় সেনারা লোকদের বাইরে থেকে শহরে খাবার আনতে দিচ্ছিল না। ফলে শমরিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হল। খাবারের দাম এতো বেশী ছিল যে গাধার মাথা কিনতে দিতে হচ্ছিল 80 টুকরো রৌপ্য মুদ্রা, এমনকি ঘুঘু পাখীর বিষ্ঠাও বিক্রি হচ্ছিল পাঁচ টুকরো রৌপ্য মুদ্রায়।

26 ইস্রায়েলের রাজা শহরের চারপাশের প্রাচীরের ওপর পায়চারি করছিলেন, হঠাৎ‌‌ এক মহিলা চেঁচিয়ে উঠলো, “হে রাজন, দয়া করে আমার প্রাণ বাঁচান!”

27 তখন ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “প্রভু যদি নিজে তোমাকে রক্ষা না করেন, আমি কি করতে পারি বল? তোমাকে দেবার মতো আমার কিছুই নেই। এমনকি শস্য মাড়াইয়ের জমিতেও কোন শস্য নেই বা দ্রাক্ষা পেষার যন্ত্র থেকেও দ্রাক্ষারস নেই।” 28 তা যাকগে, “তোমার সমস্যাটা কি বলো?”

মহিলা উত্তর দিলেন, “দেখুন ঐ মহিলাটি আমায় বলেছিল, ‘আজকে তোমার ছেলেটাকে দাও, মেরে খাওয়া যাক। কাল আমারটাকে খাওয়া যাবে।’ 29 তখন আমরা আমার ছেলেটাকে সেদ্ধ করে খেলাম। আর পরের দিন আমি খাবার জন্য ওর ছেলেটাকে আনতে গিয়ে দেখি, ও ওর ছেলেটাকে লুকিয়ে ফেলেছে!”

30 একথা শুনে রাজা অত্যন্ত মনোকষ্টে, শোক প্রকাশের জন্য নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। দেওয়ালের ওপর দিয়ে যাবার সময়, লোকরা দেখতে পেল মহারাজ তাঁর পোশাকের তলায় শোক প্রকাশের চটের জামা পরে আছেন।

31 রাজা তখন মনে মনে বললেন, “এসবের পরেও যদি আজ বিকেল পর্যন্ত শাফটের পুত্র ইলীশায়ের ধড়ে মুণ্ডুটা আস্ত থাকে, তবে যেন ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেন!”

32 রাজা ইলীশায়ের কাছে একজন বার্তাবাহক পাঠালেন। ইলীশায় আর প্রবীণরা তখন ইলীশায়ের বাড়ীতে এক সঙ্গে বসেছিলেন। ইলীশায় প্রবীণদের বললেন, “দেখো খুনীর বেটা রাজা, আমার মুণ্ডু কাটার জন্য লোক পাঠিয়েছে! দূত এলে দরজাটা বন্ধ করে দিও, ওকে কিছুতেই ভেতরে ঢুকতে দেবে না। ওর পেছন পেছন ওর মনিবের পায়ের আওয়াজ পাচ্ছি আমি!”

33 ইলীশায় যখন এসব কথাবার্তা বলছেন, বার্তাবাহক খবরটা নিয়ে পৌঁছল। খবরটা হল: “প্রভু যখন স্বয়ং এই বিপদ ডেকে এনেছেন তখন আমি কেন আর প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখব?”

লূক 24:36-53

অনুগামীদের সামনে যীশুর আবির্ভাব

(মথি 28:16-20; মার্ক 16:14-18; যোহন 20:19-23; প্রেরিত 1:6-8)

36 তাঁরা যখন এসব কথা তাদের বলছেন, এমন সময় যীশু তাঁদের মাঝে এসে দাঁড়ালেন আর বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্!”

37 কিন্তু তাঁরা ভয়ে চমকে উঠলেন। তাঁরা মনে করলেন বোধ হয় কোন ভূত দেখছেন। 38 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা এত অস্থির হচ্ছ কেন? আর তোমাদের মনে সন্দেহই বা জাগছে কেন? 39 আমার হাত ও পা দেখ, আমায় স্পর্শ করে দেখ, আত্মার এইরূপ হাড় মাংস থাকে না, কিন্তু তোমরা দেখতে পাচ্ছ আমার আছে।”

40 এই কথা বলে তিনি তাঁদের হাত ও পা দেখালেন। 41 তাঁদের এতই আনন্দ হয়েছিল যে তাঁরা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাঁরা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন। যীশু তাঁদের বললেন, “তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে কি?” 42 তাঁরা তাঁকে এক টুকরো ভাজা মাছ দিলেন। 43 তিনি সেটি নিয়ে তাঁদের সামনে গেলেন।

44 তিনি তাঁদের বললেন, “আমি যখন তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, তখনই তোমাদের এসব কথা বলেছিলাম, আমার সম্বন্ধে মোশির বিধি-ব্যবস্থায়, ভাববাদীদের পুস্তকে ও গীতসংহিতায় যা কিছু লেখা হয়েছে তা পূর্ণ হতেই হবে।”

45 এরপর তিনি তাঁদের বুদ্ধি খুলে দিলেন, যেন তাঁরা শাস্ত্রের কথা বুঝতে পারেন। 46 যীশু তাঁদের বললেন, “একথা লেখা আছে, খ্রীষ্টকে অবশ্যই কষ্ট ভোগ করতে হবে, আর তিনি মৃত্যুর তিন দিনের দিন মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন। 47-48 এবং পাপের জন্য অনুশোচনা ও পাপের ক্ষমার কথা অবশ্যই সমস্ত জাতির কাছে ঘোষণা করা হবে। জেরুশালেম থেকেই একাজ শুরু হবে আর তোমরাই এসবের সাক্ষী। 49 আমার পিতা যা দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা আমি তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব; কিন্তু তোমরা যে পর্যন্ত না উর্দ্ধ থেকে আসা শক্তি পরিধান করছ, সেই পর্যন্ত এই শহরেই থাক।”

যীশুর স্বর্গে প্রত্যাবর্তন

(মার্ক 16:19-20; প্রেরিত 1:9-11)

50 এরপর যীশু তাঁদের বৈথনিয়া পর্যন্ত নিয়ে গেলেন এবং হাত তুলে তাদের আশীর্বাদ করলেন। 51 তিনি আশীর্বাদ করতে করতে তাঁদের ছেড়ে আকাশে উঠে যেতে লাগলেন আর স্বর্গে উন্নীত হলেন। 52 শিষ্যরা যীশুকে প্রণাম জানিয়ে মহানন্দের সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। 53 আর সর্বক্ষণ মন্দিরে উপস্থিত থেকে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International