Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 শমূয়েল 9-11

দায়ূদ শৌলের পরিবারের প্রতি সদয় হলেন

দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “শৌলের পরিবারের কোন লোক কি এখনও রয়ে গেছে? আমি তার প্রতি দয়া দেখাতে চাই। এটা আমি যোনাথনের জন্য করব।”

সীবঃ নামে শৌলের পরিবারের এক দাস ছিল। দায়ূদের দাস সীবঃকে দায়ূদের কাছে নিয়ে এল। রাজা দায়ূদ জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি সীবঃ?”

সীবঃ উত্তর দিল, “হ্যাঁ, আমি আপনার দাস সীবঃ।”

রাজা বললেন, “শৌলের পরিবারের কোন লোক কি বেঁচে আছে? আমি তার প্রতি ঈশ্বরের দয়া দেখাতে চাই।”

সীবঃ রাজা দায়ূদকে বললেন, “যোনাথনের একজন পুত্র এখনও বেঁচে আছে। তার দু পা-ই পঙ্গু।”

রাজা সীবঃকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সেই ছেলেটি কোথায় আছে?”

সীবঃ উত্তর দিল, “সে লো-দবারে, অম্মীয়েলের পুত্র মাখীরের বাড়ীতে আছে।”

তখন রাজা দায়ূদ তাঁর কয়েকজন আধিকারিককে লো-দবারে অম্মীয়েলের পুত্র মাখীরের বাড়ীতে পাঠালেন, যোনাথনের পুত্রকে নিয়ে আসার জন্য। যোনাথনের পুত্র মফীবোশৎ‌ দায়ূদের কাছে এলো এবং মাটিতে মাথা নত করে প্রণাম করল।

দায়ূদ জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি মফীবোশৎ‌?”

মফীবোশৎ‌ উত্তর দিল, “হ্যাঁ, আমি আপনার দাস মফীবোশৎ‌।”

দায়ূদ মফীবোশতকে বলল, “ভয় পেও না। আমি তোমার প্রতি সদয় হব। আমি তোমার পিতা যোনাথনের জন্যই এটা করব। আমি তোমার পিতামহ শৌলের সব জমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব। তুমি সবসমযই আমার সঙ্গে একাসনে বসে আহার করতে পারবে।”

মফীবোশৎ‌ পুনরায় দায়ূদকে প্রণাম করল। মফীবোশৎ‌ বলল, “একটা মরা কুকুরের থেকে আমি কোন অংশে ভাল নই, কিন্তু আপনি আমার প্রতি অত্যন্ত সদয় হয়েছেন।”

তখন রাজা দায়ূদ শৌলের দাস সীবঃকে ডাকলেন। দায়ূদ সীবঃকে বললেন, “আমি তোমার মনিবের নাতি মফীবোশতকে শৌলের পরিবারের যা কিছু আমার কাছে ছিল সব ফিরিয়ে দিয়েছি। 10 মফীবোশতের জন্য তুমি সেই জমি চাষ করবে। মফীবোশতের জন্য তুমি এবং তোমার পুত্ররা এটা করবে। তোমরা ফসল ফলাবে। তাহলে তোমার মনিবের নাতি মফীবোশতের অন্নের জন্য প্রচুর খাদ্যশস্য হবে। কিন্তু তোমার মনিবের নাতি মফীবোশৎ‌ সবসময়েই আমার সঙ্গে একাসনে বসে আহার করতে পারবে।”

সীবঃ এর 15 জন ছেলে এবং 20 জন দাস ছিল। 11 সীবঃ উত্তর দিল, “আমি আপনার দাস। আমার মনিব যা যা আদেশ করেন আমি তাই তাই করব।”

মফীবোশৎ‌ দায়ূদের সঙ্গে একাসনে বসে, রাজার একজন ছেলের মতই আহার করল। 12 মীখা নামে মফীবোশতের একটা কিশোর ছেলে ছিল। সীবঃর পরিবারের প্রত্যেকে মফীবোশতের দাস হয়ে গেল। 13 মফীবোশতের দু পা-ই পঙ্গু ছিল। মফীবোশৎ‌ জেরুশালেমে থাকত। প্রত্যেকদিন মফীবোশৎ‌ রাজার সঙ্গে একাসনে আহার করত।

হানূন দায়ূদের লোকদের অপমান করল

10 পরে অম্মোনীয়দের রাজা নাহশ মারা গেলেন। তাঁর পুত্র হানূন, তারপরে নতুন রাজা হলেন। দায়ূদ বললেন, “নাহশ আমার প্রতি সদয় ছিলেন। আমিও তার পুত্র হানূনের প্রতি সদয় হব।” অতএব দায়ূদ হানূনের পিতার মৃত্যু সম্পর্কে সান্ত্বনা জানিয়ে তাঁর আধিকারিকদের পাঠালেন।

তাই দায়ূদের আধিকারিকরা অম্মোনীয়দের রাজ্যে চলে গেল। কিন্তু অম্মোনীয়দের নেতারা তাদের মনিব হানূনকে বলল, “আপনি কি মনে করেন কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দায়ূদ আপনার পিতার প্রতি সম্মান দেখাতে ও আপনাকে সান্ত্বনা দিতে চান? না! দায়ূদ এই লোকগুলোকে পাঠিয়েছেন আপনার শহর সম্পর্কে গোপনে জেনে যেতে ও খোঁজ খবর নিতে। তারা আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ফন্দি আঁটছে।”

তখন হানূন দায়ূদের লোকদের ধরে তাদের অর্ধেক দাড়ি কামিয়ে দিল এবং তাদের জামাকাপড় পাছা পর্যন্ত কেটে দিল। তারপর তাদের পাঠিয়ে দিল।

লোকরা যারা দায়ূদকে এই খবর দিল, তিনি সেই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করার জন্য বার্তাবাহক পাঠালেন। তিনি এটা করেছিলেন কারণ সেই লোকগুলি খুবই লজ্জিত হয়েছিল। রাজা দায়ূদ বললেন, “যতদিন না তোমাদের দাড়ি গজায়, ততদিন যিরীহোতে অপেক্ষা কর, তারপর জেরুশালেমে ফিরে এসো।”

অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

অম্মোনীয়রা দেখল তারা দায়ূদের শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তখন অম্মোনীয়রা বৈৎ‌-রহোব এবং সোবা থেকে অরামীয়দের ভাড়া করে নিয়ে এল। তাদের মধ্যে মোট 20,000 পদাতিক সৈন্য ছিল। এছাড়া অম্মোনীয়রা 1000 লোক সহ মাখার রাজা এবং টৌব থেকে 12,000 লোককে ভাড়া করেছিল।

দায়ূদ এই সবই শুনলেন। তাই তিনি যোয়াব এবং শক্তিশালী লোকজন সহ গোটা সৈন্যবাহিনীকে পাঠালেন। অম্মোনীয়রা বেরিয়ে এল এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হল। তারা শহরের প্রবেশদ্বারের কাছে দাঁড়িয়েছিল। সোব ও রহোবের অরামীয় সৈন্যরা এবং টোব ও মাখার সৈন্যরা শহরের বাইরের মাঠে সমবেত হল।

যোয়াব দেখলেন তাঁর সামনে পিছনে শত্রু। তখন যোয়াব শ্রেষ্ঠ ইস্রায়েলীয়দের বেছে নিয়ে, তাদের অরামীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে দিলেন। 10 অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি তাঁর আর এক ভাই অবীশয়ের উপর দায়িত্ব দিলেন। 11 যোয়াব অবীশয়কে বললেন, “যদি অরামীয়রা আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী বলে মনে হয়, তুমি আমাকে সাহায্য করবে। যদি অরামীয়রা তোমার কাছে বেশী শক্তিশালী হয়ে ওঠে—আমি এসে তোমাকে সাহায্য করব। 12 এসো, আমরা শক্তিশালী হই এবং সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের লোকদের জন্য এবং আমাদের ঈশ্বরের শহরগুলির জন্য লড়াই করি। প্রভু যা সঠিক বিবেচনা করেন, তাই করবেন।”

13 তারপর যোয়াব এবং তাঁর লোকরা অরামীয়দের আক্রমণ করলেন। অরামীয়রা যোয়াব এবং তাঁর লোকদের কাছ থেকে পালিয়ে গেল। 14 অম্মোনীয়রা দেখল অরামীয়রা দৌড়ে পালাচ্ছে, তখন তারাও অবীশয়ের থেকে দৌড়ে পালালো এবং তাদের শহরে ফিরে গেল।

তাই যোয়াব, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে অম্মোনীয়দের সঙ্গে ফিরে এলেন এবং জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।

অরামীয়রা আবার যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল

15 অরামীয়রা দেখলো ইস্রায়েলীয়রা তাদের পরাজিত করেছে। তখন তারা একসঙ্গে জমায়েত হয়ে একটা সৈন্যবাহিনী গড়ে তুলল। 16 ফরাৎ নদীর অপর পারে যে সব অরামীয় বাস করত, তাদের আনবার জন্য হদদেষর তার বার্তাবাহকদের পাঠাল। সেই অরামীয়রা হেলমে এলো। তাদের নেতা ছিল শোবক, হদদেষরের সৈন্যবাহিনীর সেনাপতি।

17 দায়ূদ সব শুনলেন। তিনি সব ইস্রায়েলীয়দের জড় করলেন। তারা যর্দন নদী পেরিয়ে হেলমে গিয়ে হাজির হল।

তখন অরামীয়রা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং আক্রমণ করল। 18 কিন্তু যুদ্ধে অরামীয়রা পরাজিত হল এবং অরামীয়রা ইস্রায়েলীয়দের থেকে দূরে পালিয়ে গেল। দায়ূদ 700 রথচালক, 40,000 অশ্বারোহী সৈন্যকে হত্যা করলেন। দায়ূদ অরামীয় সেনাপতি শোবককেও হত্যা করলেন।

19 হদদেষরের অধীনস্থ রাজারা যখন দেখল, ইস্রায়েলীয়রা তাদের পরাজিত করেছে তখন তারা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করল এবং তাদের দাসে পরিণত হল। অরামীয়রা অম্মোনীয়দের আবার সাহায্য করতে ভয় পেল।

দায়ূদ বৎ‌শেবার সঙ্গে মিলিত হলেন

11 বসন্তের সময়, যখন রাজারা যুদ্ধে যান, তখন দায়ূদ যোয়াব, তাঁর আধিকারিকদের এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের অম্মোনীয়দের ধ্বংস করতে পাঠালেন। যোয়াবের সৈন্যরা অম্মোনদের রাজধানী শহর রব্বাও আক্রমণ করল।

কিন্তু দায়ূদ জেরুশালেমেই রইলেন। সন্ধ্যায়, তিনি বিছানা ছেড়ে উঠলেন এবং রাজবাড়ীর ছাদে পায়চারি করতে লাগলেন। দায়ূদ যখন ছাদে পায়চারি করছিলেন, তখন তিনি এক মহিলাকে স্নান করতে দেখলেন। সেই মহিলা ছিল পরমা সুন্দরী। দায়ূদ তাঁর আধিকারিককে ঐ মহিলাটির সম্বন্ধে খোঁজ নিতে পাঠালেন। এক আধিকারিক উত্তর দিল, “মেয়েটি ইলিয়ামের কন্যা বৎ‌শেবা। সে হিত্তীয় ঊরিয়ের স্ত্রী।”

দায়ূদ লোক পাঠিয়ে বৎ‌শেবাকে তাঁর কাছে আনলেন। যখন বৎ‌শেবা দায়ূদের কাছে এল, দায়ূদ তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলেন। বৎ‌শেবা স্নান করে বাড়ী ফিরে গেল। বৎ‌শেবা গর্ভবতী হল। সে দায়ূদকে জানালো, “আমি গর্ভবতী।”

দায়ূদ তাঁর পাপ লুকোতে চাইলেন

দায়ূদ যোয়াবের কাছে খবর পাঠালেন, “হিত্তীয় ঊরিয়কে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।”

যোয়াব ঊরিয়কে দায়ূদের কাছে পাঠিয়ে দিল। ঊরিয় দায়ূদের কাছে এল। দায়ূদ ঊরিয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “যোয়াব কেমন আছে।” সৈনিকরা কেমন আছে এবং যুদ্ধ কেমন হল ইত্যাদি। তারপর দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “বাড়ী গিয়ে বিশ্রাম কর।”

ঊরিয় রাজার বাড়ী থেকে চলে গেল। রাজা (দায়ূদ) ঊরিয়ের জন্য উপহার পাঠালেন। কিন্তু ঊরিয় বাড়ী গেল না। ঊরিয় রাজবাড়ীর দরজার সামনে ঘুমিয়ে পড়লো। রাজার ভৃত্যের মতই সে সেখানে ঘুমালো। 10 এক দাস দায়ূদকে খবর দিল, “ঊরিয় বাড়ী যায় নি।”

দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “তুমি দীর্ঘ সফর থেকে ফিরে এসেছ। কেন তুমি বাড়ীতে গেলে না?”

11 ঊরিয় দায়ূদকে বলল, “পবিত্র সিন্দুকটি এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার সৈন্যরা তাঁবুগুলিতে রয়েছে। আমার মনিব যোয়াব এবং আমার মনিবের (রাজা দায়ূদ) আধিকারিকরা শিবির গেড়ে মাঠে তাঁবু ফেলেছেন। সুতরাং আমার পক্ষে বাড়ী গিয়ে পান আহার করে স্ত্রীর সঙ্গে শয়ন করা ঠিক নয়।”

12 দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “আজকের দিনটা এখানে থেকে যাও। কাল আমি তোমাকে যুদ্ধে ফেরৎ‌ পাঠাব।” সেই দিন ঊরিয় জেরুশালেমে থেকে গেল। পরদিন সকাল পর্যন্ত সে জেরুশালেমে থাকল। 13 দায়ূদ ঊরিয়কে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডেকে পাঠালেন। ঊরিয় দায়ূদের সঙ্গে পানাহার করল। দায়ূদ ঊরিয়কে দ্রাক্ষারস পান করালেন। তবুও ঊরিয় বাড়ী গেল না। সেই সন্ধ্যায়, ঊরিয় রাজার ফটকের বাইরে রাজার অন্য ভৃত্যদের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল।

দায়ূদ ঊরিয়ের মৃত্যুর পরিকল্পনা করলেন

14 পরদিন সকালে দায়ূদ যোয়াবকে একখানা চিঠি লিখলেন। দায়ূদ চিঠিটাকে ঊরিয়কে দিয়ে পাঠাবার ব্যবস্থা করলেন। 15 চিঠিতে দায়ূদ লিখেছিলেন, “ঊরিয়কে প্রথম সারির ঠিক সেইখানে দাঁড় করাবে যেখানে লড়াইটা কঠিনতম। তারপর ওকে একা ফেলে পালিয়ে আসবে এবং ওকে যুদ্ধ ক্ষেত্রেই মরতে দেবে।”

16 পরদিন যোয়াব সারা শহর ঘুরে দেখলেন কোথায় সব থেকে সাহসী ও শক্তিশালী অম্মোনীয়রা রয়েছে। সেইখানে যাবার জন্য তিনি ঊরিয়কে নির্বাচন করলেন। 17 রব্বা শহরের লোকরা যোয়াবের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এল। দায়ূদের কিছু লোক মারা গেল। হিত্তীয় ঊরিয় তাদেরই মধ্যে একজন।

18 তারপর যোয়াব, যুদ্ধে কি হয়েছে সেই বিষয়ে দায়ূদকে সংবাদ দিলেন। 19 যুদ্ধে যা যা ঘটেছে তা দায়ূদকে বলার জন্য যোয়াব এক বার্তাবাহককে আদেশ করলেন। 20 “হয়তো বা রাজা ক্রুদ্ধ হবেন এবং জিজ্ঞাসা করবেন, ‘লড়াইয়ের জন্য যোয়াবের সেনারা শহরের অত কাছে কেন গেল? তিনি নিশ্চয়ই জানেন যে শহরের প্রাচীরের ওপরে ধনুর্ধররা আছে যারা তার লোকদের শরাঘাতে শুইয়ে দিতে পারে? 21 তাঁর নিশ্চয়ই স্মরণে আছে যে এক মহিলা যিরূব্বেশতের পুত্র অবীমেলককে হত্যা করেছিল। ঘটনাটি তেবেষে ঘটেছিল। মহিলাটি নগরীর প্রাচীরের ওপর থেকে অবীমেলকের ওপর একটা চাকীর ওপরের পাথর ফেলে দিয়েছিল। তাই কেন তারা প্রাচীরের অত কাছে গেল?’ যদি রাজা দায়ূদ ওই ধরণের কিছু বলেন তুমি অবশ্যই তাঁকে এই খবর দেবে: ‘আপনার লোক হিত্তীয় ঊরিয় মারা গেছে।’”

22 বার্তাবাহক দায়ূদের কাছে গেল এবং যোয়াব বার্তাবাহককে যা যা বলতে বলেছিলেন সে সব কিছুই দায়ূদকে বলল। 23 বার্তাবাহক দায়ূদকে বলল, “অম্মোনদের লোকরা যুদ্ধক্ষেত্রে আমাদের আক্রমণ করে। আমরা লড়াই করে, তাদের শহরের প্রবেশ দ্বার পর্যন্ত তাড়া করি। 24 তখন নগর প্রাচীরের ওপর থেকে বিপক্ষের লোকরা আপনার লোকদের ওপর তীর চালায়। এতে আপনার কিছু লোক মারা যায়। আপনার আধিকারিক হিত্তীয় ঊরিয় তাদের মধ্যে একজন।”

25 দায়ূদ বার্তাবাহককে বললেন, “যোয়াবকে গিয়ে বল, ‘এ নিয়ে অতিরিক্ত বিমর্ষ হয়ো না। একটা তরবারি একজনের পর আর একজনকে হত্যা করতে পারে। রাজাদের বিরুদ্ধে আরও জোরদার আক্রমণ চালাও—তোমাদের জয় হবেই।’ এই কথাগুলি বলে যোয়াবকে উৎসাহিত কর।”

দায়ূদ বৎ‌শেবাকে বিয়ে করলেন

26 বৎ‌শেবা তাঁর স্বামীর মৃত্যুর খবর পেলেন এবং তাঁর জন্য কাঁদলেন। 27 তাঁর দুঃখের দিন অতিক্রান্ত হলে, দায়ূদ তাঁকে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে যাবার জন্য ভৃত্য পাঠালেন। তিনি দায়ূদের পত্নী হলেন এবং দায়ূদের জন্য একটা সন্তানের জন্ম দিলেন। কিন্তু দায়ূদের এই পাপ প্রভু পছন্দ করলেন না।

লূক 15:11-32

গৃহত্যাগী ছেলে

11 এরপর যীশু বললেন, “একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল। 12 ছোট ছেলেটি তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, সম্পত্তির যে অংশ আমার ভাগে পড়বে তা আমায় দিয়ে দাও।’ তখন বাবা দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দিলেন।

13 “কিছু দিন পর ছোট ছেলে তার সমস্ত কিছু নিয়ে দূর দেশে চলে গেল। সেখানে সে উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করে সমস্ত টাকা পয়সা উড়িয়ে দিল। 14 তার সব টাকা পয়সা খরচ হয়ে গেলে সেই দেশে ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল আর সেও অভাবে পড়ল। 15 তাই সে সেই দেশের এক ব্যক্তির কাছে দিন মজুরীর একটা কাজ চাইল। সেই ব্যক্তি তাকে তার শুয়োর চরাবার জন্য মাঠে পাঠিয়ে দিল। 16 শুয়োর যে শুঁটি খায় তা খেয়ে সে তার পেট ভরাতে চাইত, কিন্তু কেউ তাকে তাও দিত না।

17 “শেষ পর্যন্ত একদিন তার চেতনা হল, আর সে বলল, ‘আমার বাবার কাছে কত মজুর পেট ভরে খেতে পায় আর এখানে আমি খিদের জ্বালায় মরছি। 18 আমি উঠে আমার বাবার কাছে যাব, তাকে বলব, বাবা, আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় পাপ করেছি। 19 তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার কোন যোগ্যতা আর আমার নেই। তোমার চাকরদের একজনের মতো করে তুমি আমায় রাখ!’ 20 এরপর সে উঠে তার বাবার কাছে গেল।

ছেলের প্রত্যাবর্তন

“সে যখন বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে আছে, এমন সময় তার বাবা তাকে দেখতে পেলেন, বাবার অন্তর দুঃখে ভরে গেল। বাবা দৌড়ে গিয়ে ছেলের গলা জড়িয়ে ধরে তাকে চুমু খেলেন। 21 ছেলে তখন তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, আমি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ও তোমার কাছে অন্যায় ও পাপ করেছি। তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার যোগ্যতা আমার নেই।’

22 “কিন্তু তার বাবা চাকরদের ডেকে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি কর, সব থেকে ভাল জামাটা নিয়ে এসে একে পরিয়ে দাও। এর হাতে আংটি ও পায়ে জুতো পরিয়ে দাও। 23 হৃষ্টপুষ্ট একটা বাছুর নিয়ে এসে সেটা কাট, আর এস, আমরা সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া করি, আনন্দ করি! 24 কারণ আমার এই ছেলেটা মারা গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে! সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে।’ এই বলে তারা সকলে আনন্দ করতে লাগল।

বড় ছেলের প্রতিক্রিয়া

25 “সেই সময় তাঁর বড় ছেলে মাঠে ছিল। বাড়ির কাছাকাছি এসে সে বাজনা আর নাচের শব্দ শুনতে পেল। 26 তখন সে একজন চাকরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করল, ‘কি ব্যাপার, এসব কি হচ্ছে?’ 27 চাকরটি বলল, ‘আপনার ভাই এসেছে, আর সে সুস্থ শরীরে নিরাপদে ফিরে এসেছে বলে আপনার বাবা হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কেটে ভোজের আয়োজন করেছেন।’

28 “এই শুনে বড় ছেলে খুব রেগে গেল, সে বাড়ির ভেতরে যেতে চাইল না। তখন তার বাবা বেরিয়ে এসে তাকে সান্ত্বনা দিলেন। 29 কিন্তু সে তার বাবাকে বলল, ‘দেখ, এত বছর ধরে আমি তোমাদের সেবা করেছি, কখনও তোমার কথার অবাধ্য হই নি। তবু আমার বন্ধুদের সঙ্গে একটু আমোদ করার জন্য তুমি আমায় কখনও একটা ছাগলও দাও নি। 30 কিন্তু তোমার এই ছেলে যে বেশ্যাদের পেছনে তোমার টাকা উড়িয়ে দিয়েছে, সে যখন এল তখন তুমি তার জন্য হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কাটলে।’

31 “তার বাবা তাকে বললেন, ‘বাছা, তুমি তো সব সময় আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ; আর আমার যা কিছু আছে সবই তো তোমার। 32 কিন্তু আমাদের আনন্দিত হয়ে উৎসব করা উচিত, কারণ তোমার এই ভাই মরে গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে। সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে।’”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International