Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 21-22

অন্য বিধি ও আজ্ঞা

21 তারপর ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “তুমি অন্য এইসব নিয়মের কথাও লোকদের বলবে।

“তুমি যদি ইব্রীয় দাস ক্রয় করো তবে সে ছয় বছর দাসত্ব করার পর বিনামূল্যে মুক্তি পাবে। যদি তোমার দাস থাকাকালীন সে বিবাহিত না হয় তাহলে মুক্তির সময়েও সে একাই মুক্তি পাবে। কিন্তু যদি সে বিবাহিত হয় তাহলে সে সস্ত্রীক মুক্তি পাবে। যদি দাসটি বিবাহিত না হয় তাহলে তার মনিব তাকে বিয়ে দিতে পারে। সে যদি পুত্র অথবা কন্যা ধারণ করে তাহলে সে এবং তার ছেলেমেয়েরা মনিবের অধিকারভুক্ত হবে এবং সে নিজে ঐ মনিবের কাছে থাকবে এবং দাসের নিজের কর্মকাল শেষ হবার পর সে একা মুক্তি পাবে।

“কিন্তু যদি দাসটি বলে, ‘আমি আমার মনিবকে, আমার পত্নীকে এবং ছেলে-মেয়েদের ভালবাসি, তাই আমি মুক্ত হতে চাই না,’ যদি এরকম হয় তাহলে তার মনিব দাসটিকে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আসবে। তারপর তার মনিব তাকে একটি দরজা বা দরজার কাঠের কাঠামোর কাছে নিয়ে যাবে। তারপর ছুঁচালো একটি যন্ত্র দিয়ে মনিব তার দাসের কানে একটি ফুটো করবে। তাহলে সেই দাস সারাজীবন তার মনিবের সেবা করবে।

“কোন ব্যক্তি যদি তার কন্যাকে দাস হিসেবে বিক্রি করতে চায় তাহলে তার মুক্তি পাওয়ার নিয়ম পুরুষ দাসদের নিয়মের থেকে আলাদা হবে। যদি সেই মহিলার মনিব তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয় তাহলে সে তার মহিলা দাসটিকে তার পিতার কাছে ফেরৎ‌ পাঠাতে পারে। যদি মনিবটি তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, তাহলে অন্য লোকের কাছে তাকে বিক্রি করতে পারবে না কারণ সেটা হবে অন্যায়। যদি তার মনিব মহিলা দাসটিকে তার পুত্রের সঙ্গে বিয়ে দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় তবে তাকে দাসের মতো না রেখে মেয়ের মতো রাখতে হবে।

10 “যদি মনিব অন্য কোনও স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তাহলে সে তার প্রথম স্ত্রীকে কম খাবার বা কম জামাকাপড় দিতে পারবে না। সে তার স্ত্রীর প্রতি বিবাহের অধিকার হিসেবে সব কর্তব্য করবে। 11 মনিব যদি এই তিনটি জিনিস না করে তাহলে তার স্ত্রী বিনামূল্যে তার কাছে থেকে মুক্তি পাবে।

12 “যদি কোনও ব্যক্তি কাউকে আঘাত করে হত্যা করে তাহলে সেই ব্যক্তিকেও হত্যা করা হবে। 13 কিন্তু যদি একটি দুর্ঘটনায়় কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহলে সেটা ঈশ্বরের অভিপ্রায় বলে ধরে নেওয়া হবে। আমি কতগুলি বিশেষ জায়গা বেছে দেব যেগুলি লোকরা নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করবে। 14 কিন্তু কোনও ব্যক্তি যদি ক্রোধ বা ঘৃণা থেকে কাউকে হত্যা করে তবে সে শাস্তি পাবে। তাকে আমার বেদী থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হবে।

15 “যে ব্যক্তি পিতা বা মাতাকে আঘাত করবে তাকে হত্যা করা হবে।

16 “যদি কোনও ব্যক্তি কাউকে চুরি করে দাস হিসেবে বিক্রি করতে চায় বা নিজের দাস করে রাখতে চায় তাহলে তাকে হত্যা করা হবে।

17 “যে ব্যক্তি তার পিতা বা মাতাকে অভিশাপ দেয়, তাকে হত্যা করা হবে।

18 “পরস্পর ঝগড়া করবার সময় যদি একজন অপর ব্যক্তিকে পাথর অথবা তার মুষ্টি দিয়ে আঘাত করে তাহলে তার শাস্তি পাওয়া উচিৎ‌। যে আহত সে যদি মারা না যায় তবে যে আঘাত করেছে তাকে হত্যা করা হবে না। 19 আহত ব্যক্তি যদি কিছু সময়ের জন্য শয্যাশায়ী থাকে তাহলে যে আঘাত করেছে সে তার সময়ের ক্ষতিপূরণ দেবে, যতদিন না আহত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে ওঠে।

20 “কখনও কখনও মনিব তার পুরুষ বা স্ত্রী দাসদের প্রহার করে থাকে, যদি এই প্রহারে দাসটি মারা যায় তবে তার ঘাতক শাস্তি পাবে। 21 কিন্তু যদি দাসটি মারা না গিয়ে কয়েকদিন বাদে সেরে ওঠে তবে তার মনিবকে কিছু বলা হবে না কারণ সে তার দাসের জন্য অর্থ ব্যয করে থাকে এবং সে দাসটি তার সম্পত্তি।

22 “দুটি মানুষ ঝগড়া করার সময় যদি কোনও গর্ভবতী মহিলাকে আঘাত করে এবং এর ফলে যদি তার গর্ভপাত হয়ে যায় এবং অন্য কোন ক্ষতি না হয় তাহলে যে আঘাত করেছে সে শুধু তাকে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পেয়ে যাবে। ঐ মহিলার স্বামী জরিমানার টাকার অংশ ঠিক করে দেবে। বিচারকরা এই ব্যাপারে তাকে সাহায্য করবে। 23 কিন্তু যদি সেই মহিলার আঘাতের ফলে কোন ক্ষতি হয় তাহলে যে তাকে আঘাত করবে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, যে অন্যকে হত্যা করবে তাকেও মরতে হবে। একজনের জীবনের বদলে অন্যের জীবন নেওয়া হবে। 24 তুমি চোখের বদলে চোখ নেবে, দাঁতের বদলে দাঁত, হাতের বদলে হাত, পায়ের বদলে পা নেবে। 25 পোড়ার বদলে পোড়াবে, চোটের বদলে চোট দেবে, কাটার বদলে কাটবে।

26 “যদি কোন ব্যক্তি তার দাসের চোখে আঘাত করে তাকে অন্ধ করে দেয় তাহলে সেই দাসকে মুক্তি দিয়ে দিতে হবে। তার চোখ হল তার মুক্তির মূল্য, স্ত্রী বা পুরুষ দাসের ক্ষেত্রে এই একই নিয়ম খাটবে। 27 যদি কোনও মনিব তার দাসকে মুখে আঘাত করে তার দাঁত ফেলে দেয় তবে তাকে মুক্তি দিতে হবে, তার দাঁত হবে তার মুক্তির মূল্য, এই নিয়ম স্ত্রী ও পুরুষ উভয় দাসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।

28 “যদি কোনও ব্যক্তির ষাঁড় কোন স্ত্রী বা পুরুষকে মেরে ফেলে তাহলে ঐ ষাঁড়কে পাথর দিয়ে মেরে হত্যা করতে হবে। ঐ ষাঁড়কে খাওয়াও যাবে না। কিন্তু ষাঁড়ের মালিক দোষী হবে না। 29 কিন্তু যদি ষাঁড়টি ইতিপূর্বে কাউকে আঘাত করে থাকে এবং তার মালিককে সতর্ক করে দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে সেই মালিককে দোষী সাব্যস্ত করা হবে। কেননা সে জানা সত্ত্বেও ষাঁড়টিকে যথাস্থানে বেঁধে বা আটকে রাখে নি। আর যদি এরকম ষাঁড়কে ছেড়ে রাখার ফলে কারো প্রাণ যায় তাহলে সেই ষাঁড় ও তার মালিক দুজনকেই পাথর দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলা হবে। 30 কিন্তু মৃত ব্যক্তির পরিবার যদি অর্থ গ্রহণ করে তাহলে ষাঁড়ের মালিককে মারা হবে না। কিন্তু সে বিচারকদের নির্ধারিত টাকার অঙ্ক জরিমানা দেবে।

31 “এই একই নিয়ম বলবৎ থাকবে যদি ষাঁড়টি কোনও লোকের পুত্র বা কন্যাকে হত্যা করে। 32 কিন্তু ষাঁড়টি যদি কোনও দাসকে হত্যা করে তবে তার মালিককে 30 টুকরো রূপো দিতে হবে মূল্য হিসেবে এবং ষাঁড়টিকে পাথর দিয়ে মারা হবে। এই নিয়ম স্ত্রী ও পুরুষ দাসের ক্ষেত্রে একই হবে।

33 “কোনও ব্যক্তি কুয়োর ওপরের ঢাকা সরিয়ে দিতে পারে বা গভীর গর্ত খুঁড়ে ঢাকা না দিয়ে রাখতে পারে। যদি কোন ব্যক্তির পোষা জন্তু এসে এই গর্তে পড়ে যায় তবে গর্তের মালিককে দায়ী করা হবে। 34 গর্তের মালিককে জন্তুটির মূল্য দিতে হবে কিন্তু মূল্য দেওয়ার পর সে জন্তুটির দেহ নিজের কাছে রাখার অধিকার পাবে।

35 “যদি এক ব্যক্তির ষাঁড় আরেক ব্যক্তির ষাঁড়কে হত্যা করে তখন জীবিত ষাঁড়টিকে বিক্রি করে দিতে হবে। উভয় ব্যক্তি সেই বিক্রয় মূল্যের অর্ধেক ভাগ পাবে এবং মৃত ষাঁড়টির দেহের অর্ধেক ভাগ পাবে। 36 যদি কারো ষাঁড় অন্য কারো ব্যক্তির জন্তুদের গুঁতিয়ে মেরে ফেলার জন্য পরিচিত থাকে, তবে সেই ষাঁড়ের মালিককে তার জন্য দায়ী করা হবে। যদি ষাঁড়টি অন্য ষাঁড়কে মেরে ফেলে, তাহলে তার মালিককেই দায়ী করা হবে কারণ সে ষাঁড়টিকে ছেড়ে রেখেছে। তাকে অবশ্যই মৃত ষাঁড়ের মূল্য দিতে হবে কিন্তু মৃত ষাঁড়টি সে নিজের জন্য রাখতে পারে।

22 “যে ব্যক্তি ষাঁড় বা মেষ চুরি করেছে তাকে কিভাবে শাস্তি দেবে? যদি সে প্রাণীটিকে হত্যা করে বা বিক্রি করে দেয় তবে সে সেটা ফেরৎ‌ দিতে পারবে না, তাই তাকে একটা চুরি করা ষাঁড়ের বদলে পাঁচটা ষাঁড় কিনে দিতে হবে বা একটা মেষের বদলে চারটি মেষ দিতে হবে। তাকে চুরির জন্য জরিমানা দিতে হবে। 2-4 যদি তার কাছে কিছু না থাকে তাহলে তাকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হবে। যদি তুমি লোকটির কাছে জন্তুটিকে দেখতে পাও, তবে চোরকে অবশ্যই চুরি করা জন্তুটির মূল্যের দ্বিগুণ মূল্য দিতে হবে। প্রাণীটি ষাঁড় বা গাধা বা মেষ যাই হোক্ না কেন নিয়ম একই থাকবে।

“যদি সিঁধ কেটে চুরি করার সময় কোনও চোর মারা যায় তবে কেউই দোষী হবে না। কিন্তু যদি এটা দিনের বেলায় হয় তাহলে যে হত্যা করবে সে দায়ী হবে।

“যখন একটি ব্যক্তি তার গৃহপালিত জন্তুদের তার নিজের ক্ষেতে অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরতে দেয়, কিন্তু তারা যদি বিপথে গিয়ে অন্য কারো ক্ষেতে অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতে চরে বেড়ায় তাহলে তাকে তার ক্ষেতের অথবা দ্রাক্ষাক্ষেতের সবচেয়ে ভালো ফসল দিয়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

“কেউ যদি তার প্রতিবেশীর শস্যের গাদা অথবা যে শস্য কাটা হয়নি তা অথবা পুরো ক্ষেতটি পুড়িয়ে ফেলে, তাহলে যা কিছু পুড়ে গেছে তার ক্ষতিপূরণ তাকে দিতে হবে।

“কোনও ব্যক্তি তার টাকা বা অন্য কিছু তার প্রতিবেশীর কাছে রাখতে দিতে পারে। কিন্তু যদি প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে সেই জিনিস চুরি হয়ে যায় তবে কি করবে? চোরকে খুঁজে বার করার চেষ্টা করবে। যদি চোরকে পাওয়া যায় তবে চোর চুরি করা জিনিসের মূল্যের দ্বিগুণ জরিমানা দেবে। যদি চোরকে খুঁজে পাওয়া না যায়, তাহলে ঈশ্বর বিচার করবেন যেখান থেকে চুরি হয়েছে সেই বাড়ির মালিক দোষী কি না। বাড়ির মালিক ঈশ্বরের কাছে যাবে এবং ঈশ্বর বিচার করবেন যে সে কিছু চুরি করেছে কি না।

“যদি কোনও দুই ব্যক্তি উভয়েই কোনও ষাঁড় বা গাধা বা মেষ বা কোনও হারানো বস্তুকে নিজের বলে দাবী করে তাহলে তারা দুজনেই ঈশ্বরের কাছে যাবে। ঈশ্বর যাকে দোষী করবেন সে অপর ব্যক্তিকে সেই জিনিসটির মূল্যের দ্বিগুণ দাম দেবে।

10 “কোনও ব্যক্তি তার কোন প্রাণীর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তার প্রতিবেশীকে অল্প সময়ের জন্য ভার দিতে পারে। সেটা গাধা বা ষাঁড় বা মেষ হতে পারে কিন্তু যদি সেই প্রাণী আহত হয় বা মারা যায় বা কারো অলক্ষ্যে চুরি হয়ে যায় তাহলে কি করবে? 11 তখন সেই প্রতিবেশীকে প্রভুর নামে শপথ করে বলতে হবে যে সে চুরি করে নি। তখন প্রাণীর মালিক সেই শপথ গ্রাহ্য করবে এবং প্রতিবেশীকে সেই মৃত প্রাণীর জন্য কোন জরিমানা দিতে হবে না। 12 কিন্তু যদি সেই প্রতিবেশী চুরি করে থাকে তবে তাকে জরিমানা দিতে হবে। 13 যদি কোন বন্য জন্তু প্রাণীটিকে মেরে ফেলে তবে তার দেহ প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে। তাহলে প্রতিবেশীকে জরিমানা দিতে হবে না।

14 “যদি কোনও ব্যক্তি তার প্রতিবেশীর কাছ থেকে ধার নেয় তবে সে তার জন্য দায়ী থাকবে। যদি কোন প্রাণী আহত হয় বা মারা যায় তবে প্রতিবেশী প্রাণীর মালিককে জরিমানা দেবে। প্রতিবেশীই দায়ী কারণ মালিক সেখানে উপস্থিত ছিল না। 15 কিন্তু যদি প্রাণীর মালিক সেখানে উপস্থিত থাকে তাহলে প্রতিবেশীকে জরিমানা দিতে হবে না। যদি প্রতিবেশী প্রাণীটিকে ব্যবহারের জন্য টাকা দেয় তাহলে তাকে প্রাণীটি আহত হলে বা মারা গেলে জরিমানা দিতে হবে না। সে ঐ প্রাণীটি ব্যবহারের জন্য যা মূল্য দিয়েছে তাই যথেষ্ট।

16 “যদি, কোনও ব্যক্তি একজন অবাগদত্তা কুমারী মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয় তাহলে সে অবশ্যই তার পিতাকে পুরো যৌতুক দেবে এবং তাকে বিয়ে করবে। 17 যদি তার পিতা মেয়েটিকে সেই ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দিতে নাও চান তাহলেও তাকে মেয়েটির জন্য পুরো অর্থ দিতে হবে।

18 “যদি কোন স্ত্রীলোক দুষ্ট কূহক করে তবে তাকে বাঁচতে দিও না।

19 “কোন মানুষ যদি কোন পশুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করে তবে তাকে অবশ্যই হত্যা করবে।

20 “যদি কোন ব্যক্তি মূর্ত্তিকে নৈবেদ্য দেয় তবে তাকে হত্যা করবে। তোমরা অবশ্যই কেবলমাত্র প্রভুর কাছেই নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে।

21 “মনে রাখবে তোমরা ইতিপূর্বে মিশরে বিদেশী ছিলে তাই তোমরা কোন বিদেশীকে ঠকাবে না বা আঘাত করবে না। 22 “কোন বিধবা বা অনাথ শিশুর কখনও কোনও ক্ষতি করো না। 23 যদি তুমি বিধবা ও অনাথদের নির্যাতন কর তাহলে আমি তাদের দুর্দশার কথা জেনে যাব। 24 এতে আমি রেগে গিয়ে তোমাকে হত্যা করব, যার ফলে তোমার স্ত্রী বিধবা হবে এবং তোমার সন্তানরা অনাথ হবে।

25 “যদি আমার লোকদের মধ্যে কেউ দরিদ্র হয় এবং তাকে তুমি কিছু টাকা ধার দাও, তাহলে ঐ টাকার ওপর কোন সুদ দাবী করো না অথবা তাকে সুদ দিতে বাধ্য করো না। সুদ নিয়ে যে টাকা দেয় তার মতো ব্যবহার করো না। 26 যদি কোনও ব্যক্তি তোমার কাছে ধার শোধ করার প্রমাণ হিসেবে তার গায়ের শীতবস্ত্র বন্ধক রাখে তবে তুমি সূর্যাস্তের আগে তাকে সেটা ফিরিয়ে দেবে। 27 যদি তার শীতবস্ত্র না থাকে তবে সে শীতে কষ্ট পাবে এবং তার কান্না আমি শুনতে পাবো কারণ আমি দয়ালু।

28 “ঈশ্বর বা জনগণের নেতাদের কখনও অভিশাপ দিও না।

29 “ফসল কাটার সময় প্রথম শস্যের দানা ও প্রথম ফলের রস বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই আমাকে দেবে।

“তোমাদের প্রথম সন্তানকে আমার কাছে উৎসর্গ করবে। 30 তোমাদের প্রথমজাত গরু বা মেষও আমাকে দেবে। প্রথম নবজাতককে তার মায়ের কাছে সাত দিন রেখে অষ্টম দিনে আমাকে দিয়ে দেবে।

31 “তোমরা আমার বিশেষ লোক, কোন বন্য প্রাণীর মেরে ফেলা পশুর মাংস খাবে না। সেই মাংস কুকুরকে খেতে দেবে।

মথি 19

বিবাহ বিচ্ছেদ সম্পর্কে যীশুর শিক্ষা

(মার্ক 10:1-12)

19 এসব কথা বলা শেষ করে যীশু গালীল ছেড়ে যর্দন নদীর অন্য পারে যিহূদিয়া প্রদেশে এলেন। বহুলোক তাঁর পিছু পিছু চলতে লাগল আর তিনি সেখানে তাদের সুস্থ করলেন।

সেই সময় কয়েকজন ফরীশী এসে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “কোন লোকের পক্ষে তার খুশী মতো যে কোন কারণে স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি বিধি-সম্মত?”

যীশু বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রে পড়নি, যে শুরুতেই ঈশ্বর তাদের ‘পুরুষ ও নারী করে সৃষ্টি করেছিলেন?’(A) এরপর ঈশ্বর বলেছিলেন, ‘এজন্য মানুষ বাবা-মাকে ছেড়ে স্ত্রীর সঙ্গে যুক্ত হবে, আর সেই দুজন এক দেহ হবে।’(B) তাই তারা আর দুজন নয় কিন্তু একজন। তাই ঈশ্বর যাদের যুক্ত করেছেন, মানুষ তাদের পৃথক না করুক।”

তখন ফরীশীরা তাঁকে বললেন, “তবে মোশির বিধানে শুধুমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ পত্র দিয়ে স্ত্রীকে ত্যাগ করার বিষয়ে লেখা আছে কেন?”[a]

তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের অন্তরের কঠোরতার জন্যই মোশি সেই বিধান দিয়েছিলেন, শুরুতে কিন্তু এরকম ছিল না। তাই আমি তোমাদের বলছি, যদি কোন মানুষ ব্যভিচার দোষ ছাড়া অন্য কোন কারণে স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে তবে সে ব্যভিচার করে।”[b]

10 তখন তাঁর শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরিস্থিতি যখন এমনই হয়, তখন বিয়ে না করাই ভাল।”

11 যীশু তাঁদের বললেন, “সবাই এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে না, কেবল যাদের সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তারাই তা মেনে নিতে পারে। 12 কিছু লোক নপুংসক হয়েই মাতৃ গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়, যারা বিয়ে করেই না। আর কিছু লোককে মানুষে খোজা করে দেয়, সেজন্য তারা বিয়ে করে না। আবার এমন কিছু লোক আছে, যারা স্বর্গরাজ্যের জন্য বিয়ে করতে চায় না। যে কেউ এ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক।”

যীশু ছোট ছেলেমেয়েদের আশীর্বাদ করলেন

(মার্ক 10:13-16; লূক 18:15-17)

13 এরপর লোকেরা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল, যেন তিনি তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করেন। কিন্তু যীশুর শিষ্যরা তাদের ধমক দিলেন। 14 তখন যীশু তাদের বললেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বাধা দিও না, ওদের আমার কাছে আসতে নিষেধ করো না; এদের মতো লোকদের জন্যই তো স্বর্গরাজ্য।” 15 এরপর যীশু সব ছেলেমেয়েদের মাথায় হাত রাখলেন, তারপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন।

একজন ধনী লোক যীশুকে অনুসরণ করতে অস্বীকার করল

(মার্ক 10:17-31; লূক 18:18-30)

16 একজন লোক একদিন যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, “গুরু, অনন্ত জীবন পাবার জন্য আমাকে কোন্ ভাল কাজ করতে হবে?”

17 যীশু তাকে বললেন, “কোনটি ভাল একথা তুমি আমায় জিজ্ঞেস করছ কেন? ভাল তো কেবল একজনই, আর তিনি ঈশ্বর। যাই হোক্ তুমি যদি অনন্ত জীবন পেতে চাও, তবে তাঁর সব আজ্ঞা পালন কর।”

18 সে বলল, “কোন্ কোন্ আজ্ঞা পালন করব?”

যীশু তাকে বললেন, “‘তুমি অবশ্যই নরহত্যা করবে না, ব্যভিচার করবে না, চুরি করবে না, মিথ্যা সাক্ষ্য দেবে না, 19 তোমার বাবা-মাকে সম্মান করো’(C) ও ‘প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবেসো।’”(D)

20 সেই যুবক তখন যীশুকে বলল, “আমি তো এর সবই পালন করে আসছি, তাহলে আমার আর কি করা বাকি আছে?”

21 যীশু তাঁকে বললেন, “যদি তুমি সম্পূর্ণ নিখুঁত হতে চাও, তবে যাও, তোমার সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও। তাতে তুমি স্বর্গে প্রচুর সম্পদ পাবে। তারপর এস, আমার অনুসারী হও।”

22 কিন্তু সেই যুবক এই কথা শুনে বিষন্ন হয়ে চলে গেল, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তি ছিল।

23 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনী ব্যক্তির পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করা কঠিন হবে। 24 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ধনীর পক্ষে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করার চেয়ে বরং ছুঁচের ফুটো দিয়ে উটের গলে যাওয়া সহজ।”

25 একথা শুনে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তাঁরা তখন বললেন, “তাহলে উদ্ধার পাওয়া কার পক্ষে সম্ভব?”

26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “মানুষের পক্ষে তা অসম্ভব বটে, কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে সবই সম্ভব।”

27 তখন পিতর বললেন, “দেখুন, আমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে আপনার অনুসারী হয়েছি, তাহলে আমরা কি পাব?”

28 যীশু তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সেই নতুন জগতে যখন মানবপুত্র তাঁর মহিমামণ্ডিত সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরা যাঁরা আমার অনুসারী হয়েছ, তোমরাও বারোটি সিংহাসনে বসবে আর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর বিচার করবে। 29 আর যে কেউ আমার জন্য বাড়ি ঘর, ভাই বোন, বাবা-মা, ছেলেমেয়ে অথবা জায়গা জমি ছেড়েছে, সে তার শতগুন বেশী পাবে এবং অনন্ত জীবনেরও অধিকারী হবে। 30 কিন্তু এমন অনেকে যারা এখন প্রথমে আছে তারা শেষে যাবে, আর যারা এখন শেষে আছে তারা প্রথম হবে।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International