Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 19-20

ইস্রায়েলের সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি

19 মিশর ছেড়ে এসে যখন ইস্রায়েলের লোকরা ভ্রমণ করছিল তখন সেই ভ্রাম্যমান অবস্থার তৃতীয় মাসে ইস্রায়েলের লোকরা সীনয় মরুভূমিতে পৌঁছোল। তারা রফীদীম থেকে সীনয় পর্যন্ত ভ্রমণ করেছিল এবং পর্বতের কাছে তাঁবু ফেলেছিল। তারপর মোশি পর্বতে উঠল ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে। সেই পর্বতে ঈশ্বর মোশিকে ডেকে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকজন ও মহান যাকোব পরিবারের লোকজনকে একথাগুলি বলো: ‘তোমরা নিজেরাই দেখেছ আমি মিশরীয়দের কি অবস্থা করেছি। তোমরা দেখেছো আমি কিভাবে ঈগল পাখীর মতো মিশর থেকে তোমাদের বার করে আমার কাছে এখানে নিয়ে এসেছি। তাই এখন আমি তোমাদের আমার নির্দেশগুলো মেনে চলতে বলছি। আমার চুক্তি পালন করো। তোমরা যদি তা করো তাহলে তোমরা হবে আমার বিশেষ লোক। এই পুরো পৃথিবীটাই আমার; কিন্তু আমি তোমাদের আমার বিশেষ লোক হিসেবে মনোনীত করেছি। তোমরা যাজকদের একটি বিশেষ রাজ্য হবে।’ মোশি, তুমি কিন্তু আমি যা বলেছি তা ইস্রায়েলের লোকেদের অবশ্যই বলবে।”

তাই মোশি আবার পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে ইস্রায়েলের প্রবীণ লোকদের প্রভুর সমস্ত নির্দেশ জানাল। তারা সবাই সমস্বরে জানাল, “প্রভুর সব কথা আমরা মেনে চলব।”

তখন মোশি প্রভুকে বলল যে প্রত্যেকেই তাঁকে মেনে চলবে। এবং প্রভু মোশিকে বললেন, “ঘন মেঘের মধ্যে দিয়ে আমি তোমার কাছে আসব এবং তোমার সঙ্গে কথা বলব। এবং তোমার সঙ্গে আমার বাক্যলাপ প্রত্যেকটি লোক শুনতে পাবে। লোকদের কাছে তোমার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্যই আমি এই উপায়ে তোমার সঙ্গে কথা বলব।”

তখন মোশি লোকদের যাবতীয় বক্তব্য ঈশ্বরকে জানাল।

10 এবং প্রভু মোশিকে বললেন, “আজ এবং আগামীকাল তুমি একটা বিশেষ সভার জন্য লোকদের প্রস্তুত করো। তাদের অবশ্যই তাদের পোশাক ধুয়ে নিতে হবে। 11 এবং তৃতীয় দিনে আমার জন্য তৈরী থাকতে হবে। তৃতীয় দিনে আমি সীনয় পর্বত থেকে নীচে নেমে আসব এবং প্রত্যেকটি মানুষ আমার দর্শন পাবে। 12-13 কিন্তু তুমি প্রত্যেককে বলবে পর্বত থেকে দূরে সরে থাকতে। একটি রেখা টেনে সেই রেখা ওদের পার হতে বারণ করবে। কোন লোক বা প্রাণী যদি পর্বতকে স্পর্শ করে তাহলে তার মৃত্য়ু হবে। তাকে অবশ্যই পাথর দিয়ে অথবা তীর বিদ্ধ করে মেরে ফেলতে হবে। তাকে কেউ ছোঁবে না। শিঙা বেজে না ওঠা পর্যন্ত প্রত্যেকে অপেক্ষা করবে। তারপর তারা পর্বতে উঠতে পারবে।”

14 সুতরাং মোশি পর্বত থেকে নীচে নেমে এসে লোকদের বিশেষ সভার জন্য প্রস্তুত করল। লোকরা তাদের পোশাক পরিষ্কার করে নিল।

15 তখন মোশি লোকদের বলল, “তৃতীয় দিনে ঈশ্বরের সঙ্গে বিশেষ সভার জন্য প্রস্তুত হও। ঐদিন পর্যন্ত কোন পুরুষ নারীকে স্পর্শ করবে না।”

16 তৃতীয় দিন সকালে, পর্বতের চূড়া থেকে ঘন মেঘ নীচে নেমে এল। মেঘ গর্জন ও বিদ্যুৎ রেখায় উচ্চস্বরে শিঙা বেজে উঠল। শিবিরের প্রত্যেকে ভয় পেয়ে গেল। 17 তখন মোশি সবাইকে শিবির থেকে বার করে পর্বতের কাছে ঈশ্বরের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নিয়ে এল। 18 সীনয় পর্বত ধোঁয়ায় ঢেকে গেল। চূল্লীর মতো ধোঁয়া পাকিয়ে পাকিয়ে ওপরে উঠতে লাগল। সমস্ত পর্বত কাঁপতে শুরু করল। আগুনের শিখায় প্রভু পর্বত থেকে নীচে নেমে এলেন বলেই এই ঘটনা ঘটল। 19 শিঙার শব্দ ক্রমশঃ জোরালো হতে থাকল। মোশি যতবার ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলল ততবারই বজ্রের মতো কঠিন স্বরে ঈশ্বর উত্তর দিতে থাকলেন।

20 প্রভু সীনয় পর্বতে নেমে এলেন। এরপর প্রভু মোশিকে পর্বত শৃঙ্গে তাঁর কাছে যেতে বললেন। তখন মোশি পর্বতে চড়ল।

21 প্রভু মোশিকে বললেন, “নীচে গিয়ে লোকদের বলো ওরা যেন আমার কাছে না আসে। আমাকে যেন না দেখে। যদি তা করে তাহলে অনেকে মারা পড়বে। 22 আর যে সকল যাজক আমার কাছে আসবে তাদের বলো তারা যেন এই বিশেষ সভার জন্য নিজেদের তৈরি করে আসে। যদি তারা তা না করে তাহলে আমি তাদের শাস্তি দেব।”

23 মোশি প্রভুকে বলল, “কিন্তু লোকে পর্বতে চড়তে পারবে না। কারণ আপনিই তো বলেছিলেন একটি রেখা টানতে এবং সেই রেখা লঙ্ঘন করে কেউ যেন পবিত্র ভূমিতে না আসে।”

24 প্রভু তাকে বললেন, “নীচে মানুষের কাছে যাও। গিয়ে হারোণকে তোমার সঙ্গে নিয়ে এসো। কিন্তু কোন সাধারণ মানুষ ও যাজককে আমার কাছে আসতে দিও না। যদি তারা আমার খুব কাছে আসে তাহলে আমি তাদের শাস্তি দেব।”

25 সুতরাং মোশি লোকদের এই কথাগুলি বলার জন্য নীচে নামল।

দশটি আজ্ঞা

20 তখন ঈশ্বর এইসব কথা বললেন:

“আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। আমিই তোমাদের মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছি। তাই তোমরা এই নির্দেশগুলি মানবে:

“আমাকে ছাড়া তোমরা আর কোনও দেবতাকে উপাসনা করবে না।

“তোমরা অবশ্যই অন্য কোন মূর্তি গড়বে না যেগুলো আকাশের, ভূমির অথবা জলের নীচের কোন প্রাণীর মত দেখতে। কোন মূর্ত্তির উপাসনা বা সেবা করবে না। কারণ, আমিই প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর। যারা অন্য দেবতার উপাসনা করবে তাদের আমি ঘৃণা করি। আমার বিরুদ্ধে যারা পাপ করবে তারা আমার শত্রুতে পরিণত হবে। এবং আমি তাদের শাস্তি দেব। আমি তাদের সন্তান-সন্ততি এবং পরবর্তী প্রজন্মকেও শাস্তি দেব। কিন্তু যারা আমায় ভালবাসবে ও আমার নির্দেশ মান্য করবে তাদের প্রতি আমি সর্বদা দয়ালু থাকব। আমি তাদের হাজার প্রজন্ম পর্যন্ত দয়া প্রদর্শন করব।

“তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের নাম ভুল ভাবে ব্যবহার করবে না। যদি কেউ তা করে তাহলে সে দোষী এবং প্রভু তাকে নির্দোষ সাব্যস্ত করবেন না।

“বিশ্রামের দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে মনে রাখবে। সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করো। 10 কিন্তু সপ্তম দিনটি হবে অবসরের। প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের প্রতি সম্মান প্রর্দশনের দিন। সুতরাং সেই দিনে কেউ কাজ করবে না-তুমি নয়, অথবা তোমার ছেলেরা এবং মেয়েরা, অথবা তোমার স্ত্রী, অথবা তোমার ক্রীতদাস-দাসীরা কেউ নয়। এমনকি তোমাদের গৃহপালিত পশু এবং তোমাদের শহরে বাস করা বিদেশীরাও বিশ্রামের দিনে কোন কাজ করবে না। 11 কারণ প্রভু সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করে এই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছু বানিয়েছেন এবং সপ্তম দিনে তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন। এইভাবে বিশ্রামের দিনটি প্রভুর আশীর্বাদ ধন্য—ছুটির দিন। প্রভু এই দিনটিকে বিশেষ দিন হিসাবে সৃষ্টি করেছেন।

12 “তুমি অবশ্যই তোমার পিতামাতাকে সম্মান করবে, তাহলে তোমরা তোমাদের দেশে দীর্ঘ জীবনযাপন করবে। যেটা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বর তোমাদের দিচ্ছেন।

13 “কাউকে হত্যা কোরো না।

14 “ব্যাভিচার কোরো না।

15 “চুরি কোরো না।

16 “অন্যদের সম্বন্ধে মিথ্যা বোলো না।

17 “তোমাদের প্রতিবেশীর ঘরবাড়ীর প্রতি লোভ কোরো না। তার স্ত্রীকে ভোগ করতে চেয়ো না। এবং তার দাস-দাসী, গবাদি পশু অথবা গাধাদের আত্মসাৎ করতে চেয়ো না। অন্যদের কোন কিছুর প্রতি লোভ কোরো না।”

লোকরা ঈশ্বরকে ভয় পেল

18 ঐ সময়ে, লোকজন বজ্র নির্ঘোষ শুনতে পেল এবং বিদ্যুৎ দেখতে পেল। তারা শিঙার শব্দ শুনতে পেল এবং দেখল ধোঁয়া ওপর দিকে উঠছে। এই দেখে লোকরা ভয়ে কুঁকড়ে গেল। পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে তারা এই ঘটনা দেখতে লাগল। 19 তখন লোকরা মোশিকে বলল, “তুমি যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চাও তাহলে তা আমরা শুনব। কিন্তু ঈশ্বর যেন আমাদের সঙ্গে কথা না বলেন। তিনি কথা বললে আমরা ভয়ে মারা যাব।”

20 তখন মোশি তাদের বলল, “ভয় পেও না। প্রভু তোমাদের পরীক্ষা করতে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি চান তোমরা তাঁকে সম্মান কর, যাতে তোমরা পাপ কাজ না কর।”

21 লোকরা পর্বত থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকল, আর তখন মোশি অন্ধকার মেঘের ভেতর ঈশ্বরের কাছে গেল। 22 তখন প্রভু মোশিকে, ইস্রায়েলের লোকদের এই কথাগুলি বলার জন্য বললেন: “তোমরা দেখেছো যে আমি স্বর্গ থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলেছি। 23 সুতরাং তোমরা আমার সঙ্গে তুলনা করে সোনা অথবা রূপো দিয়ে অন্য কোন মূর্ত্তি গড়বে না।

24 “আমার জন্য একটি বিশেষ বেদী তৈরী করো। বেদী তৈরীর সময় মাটি ব্যবহার করবে। আমার প্রতি উৎসর্গ হিসেবে ঐ বেদীর ওপর হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদন করবে। বলিতে তোমাদের গৃহপালিত মেষ অথবা গবাদি পশু ব্যবহার করবে। যেখানে যেখানে আমি তোমাদের আমাকে মনে রাখতে বলেছি সেই সব স্থানে তোমরা এই বলিগুলি দেবে। তখন আমি এসে তোমাদের আশীর্বাদ করব। 25 পাথরের বেদী তৈরী করলে কোন লোহার অস্ত্র দিয়ে, কাটা পাথর ফলক দিয়ে সেই বেদী তৈরী করবে না। যদি তা করো তাহলে সেই বেদী গ্রহণযোগ্য হবে না। 26 এবং আমার বেদীতে কোন সিঁড়ি তৈরী করবে না। যদি বেদীতে সিঁড়ি থাকে তাহলে ঐ সিঁড়ি দিয়ে মানুষ যখন উঠবে তখন নীচের লোকদের কাছে তাদের নগ্নতা প্রকাশ পাবে।”

মথি 18:21-35

ক্ষমার বিষয়ে দৃষ্টান্ত

21 তখন পিতর যীশুর কাছে এসে তাঁকে বললেন, “প্রভু, আমার ভাই আমার বিরুদ্ধে কতবার অন্যায় করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাত বার পর্যন্ত করব কি?”

22 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাকে বলছি, কেবল সাত বার নয়, কিন্তু সাতকে সত্তর দিয়ে গুণ করলে যতবার হয় ততবার।”

23 “স্বর্গরাজ্য এভাবে তুলনা করা যায়, যেমন একজন রাজা যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসাব মিটিয়ে দিতে বললেন। 24 তিনি যখন হিসাব নিতে শুরু করলেন, তখন তাদের মধ্যে একজন লোককে আনা হল যে রাজার কাছে দশ হাজার রৌপ্যমুদ্রা ধারত। 25 কিন্তু তার সেই ঋণ শোধ করার ক্ষমতা ছিল না। তখন সেই মনিব রাজা হুকুম করলেন যেন সেই লোকটাকে তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে আর তার যা কিছু আছে সমস্ত বিক্রি করে পাওনা আদায় করা হয়।

26 “তাতে সেই দাস মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে মনিবের পা ধরে বলল, ‘আমার ওপর ধৈর্য্য ধরুন, আমি আপনার সমস্ত ঋণই শোধ করে দেব’ 27 সেই কথা শুনে সেই দাসের প্রতি মনিবের অনুকম্পা হল, তিনি তার সব ঋণ মকুব করে দিয়ে তাকে মুক্ত করে দিলেন।

28 “কিন্তু সেই দাস ছাড়া পেয়ে বাইরে গিয়ে তার একজন সহকর্মীর দেখা পেল, যে তার কাছে প্রায় একশো মুদ্রা ধারত। সেই দাস তখন তার গলা টিপে ধরে বলল, ‘তুই যে টাকা ধার করেছিস তা শোধ কর।’

29 “তখন তার সহকর্মী তার সামনে উপুড় হয়ে অনুনয় করে বলল, ‘আমার প্রতি ধৈর্য্য ধর। আমি তোমার সব ঋণ শোধ করে দেব।’

30 “কিন্তু সে তাতে রাজী হল না, বরং ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটকে রাখল। 31 তার অন্য সহকর্মীরা এই ঘটনা দেখে খুবই দুঃখ পেল, তাই তারা গিয়ে তাদের মনিবের কাছে যা যা ঘটেছে সব জানাল।

32 “তখন সেই মনিব তাকে ডেকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট দাস! তুমি আমায় অনুরোধ করলে আর আমি তোমার সব ঋণ মকুব করে দিলাম। 33 আমি যেমন তোমার প্রতি দয়া দেখিয়েছিলাম তেমনি তোমার সহকর্মীর প্রতিও কি তোমার দয়া করা উচিত ছিল না?’ 34 তখন তার মনিব ক্রুদ্ধ হয়ে সমস্ত ঋণ শোধ না করা পর্যন্ত তাকে শাস্তি দিতে কারাগারে দিয়ে দিলেন।

35 “তোমরা প্রত্যেকে যদি তোমাদের ভাইকে অন্তর দিয়ে ক্ষমা না কর, তবে আমার স্বর্গের পিতাও তোমাদের প্রতি ঠিক ঐভাবে ব্যবহার করবেন।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International