Old/New Testament
গবাদি পশুদের অসুখ
9 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, ফরৌণকে গিয়ে বল, “প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার লোকদের আমার উপাসনা করার জন্য ছেড়ে দাও।’ 2 তুমি যদি তাদের ধরে রাখো এবং যেতে বাধা দাও 3 তাহলে প্রভু তোমার গবাদি পশুদের ওপর তাঁর ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন। তোমার সমস্ত ঘোড়া, গাধা, উট, গরু ও মেষের পাল প্রভুর কোপে এক ভয়ঙ্কর রোগের শিকার হবে। 4 কিন্তু প্রভু মিশরের পশুদের মতো ইস্রায়েলের পশুদের দুর্দশাগ্রস্ত করবেন না। ইস্রায়েলের লোকদের কোনও পশু মারা যাবে না। 5 আগামীকাল এই ঘটনা ঘটাবার জন্য প্রভু সময় স্থির করেছেন।”
6 পরদিন, প্রভু যেমন বলেছিলেন তেমন করলেন। মিশরীয়দের সমস্ত গৃহপালিত পশু মারা গেল। কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের কোনও পশু মারা গেল না। 7 ইস্রায়েলীয়দের কোনও পশু মারা গেছে কিনা তা দেখে আসতে ফরৌণ তাঁর কর্মচারীদের পাঠালেন এবং সে জানতে পারলো যে ইস্রায়েলীয়দের একটি পশুও মারা যায় নি। কিন্তু তবুও ফরৌণ তাঁর জেদ ধরে রইলেন এবং লোকদের যেতে দিলেন না।
ফোঁড়া
8 প্রভু মোশি এবং হারোণকে বললেন, “একটা উনুন থেকে এক মুঠো ছাই নাও। মোশি তুমি সেই ছাই ফরৌণের সামনে বাতাসে ছুঁড়ে দাও। 9 এই ছাই ধূলিকণা হয়ে সারা মিশরে ছড়িয়ে পড়বে। এবং যখনই এই ধূলো মিশরের কোনও মানুষ বা পশুর গায়ে পড়বে তখনই তাদের গায়ে ফোঁড়া হবে।”
10 তাই মোশি ও হারোণ উনুন থেকে ছাই নিয়ে ফরৌণের সামনে দাঁড়াল। মোশি সেই ছাই আকাশে ছুঁড়ে দিল আর পশু ও মানুষের গায়ে ফোঁড়া বার হতে লাগল। 11 যাদুকররা মোশির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারল না। কারণ তাদেরও সারা গায়ে ফোঁড়া ছিল। মিশরের প্রতিটি জায়গায় এই রোগ দেখা দিল। 12 কিন্তু এতে প্রভু ফরৌণকে আরও উদ্ধত করে তুললেন। তাই ফরৌণ তাদের কথা শুনতে অস্বীকার করলেন। প্রভুর কথামতোই এসব ঘটেছিল।
শিলাবৃষ্টি
13 এরপর প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “সকালে উঠে ফরৌণের কাছে গিয়ে বলবে, প্রভু ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার লোকদের আমার উপাসনা করতে যেতে দাও। 14 যদি তুমি তা না কর, তবে তোমাকে, তোমার সমস্ত রাজকর্মচারীদের এবং লোকদের সমস্ত রকমের দুর্ভোগ ভুগতে হবে। তখন তুমি জানবে যে এই পৃথিবীতে আমার মতো ঈশ্বর আর নেই, 15 আমি আমার ক্ষমতা দিয়ে তোমাদের এমন রোগ দিতে পারি যা তোমাদের পৃথিবী থেকে মুছে দেবে। 16 কিন্তু আমি তোমাদের একটা কারণে এখানে রেখেছি। আমি তোমাদের আমার ক্ষমতা দেখানোর জন্য রেখেছি, যাতে সারা পৃথিবীর লোক আমার কথা শুনতে পারে। 17 তুমি এখনও আমার লোকদের সঙ্গে বিরোধিতা করছ এবং তাদের যেতে দিচ্ছ না। 18 তাই আগামীকাল এই সময় আমি এক ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি ঘটাবো। মিশরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এই রকম ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি আর কখনও হয় নি। 19 এখন তুমি তোমার পশুদের একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাও। তোমার ক্ষেতে যা কিছু আছে সব একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাও। কেন? কারণ কোন লোক যদি ক্ষেতে পড়ে থাকে, তবে সে মারা যাবে; যদি কোন পশু মাঠে পড়ে থাকে সে মারা যাবে। তোমার বাড়ীর বাইরে যা কিছু পড়ে থাকবে সে সব কিছুর ওপরেই শিলাবৃষ্টি হবে।’”
20 ফরৌণের সেই কর্মচারীরা যারা প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দিয়েছিল তারা তাদের পশু ও ক্রীতদাসদের ক্ষেত থেকে নিয়ে এলো এবং ঘরে রেখে দিল। 21 কিন্তু যে সব কর্মচারীরা প্রভুর বার্তা অগ্রাহ্য করেছিল তারা তাদের ক্রীতদাসদের ও পশুদের মাঠে রেখে দিল।
22 প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত আকাশের দিকে তুলে ধরো, তাহলে মিশরের ওপর শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। মিশরের সমস্ত ক্ষেতের মানুষ, পশু ও গাছপালার ওপর এই শিলাবৃষ্টি হবে।”
23 তাই মোশি তার হাতের ছড়ি আকাশের দিকে তুলল, তারপর প্রভু ভূমির ওপর বজ্রনির্ঘোষ, শিলাবৃষ্টি ও অশনি ঘটালেন। সারা মিশরে শিলাবৃষ্টি হল। 24 শিলাবৃষ্টি হচ্ছিল এবং চারিদিকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। এই ধরণের ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি মিশরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আগে কখনও হয়নি। 25 এই শিলাবৃষ্টি মিশরের ক্ষেতের সমস্ত কিছু, লোকজন ও পশুসহ গাছপালা ধ্বংস করে দিল। এই শিলাবৃষ্টিতে মাটির সমস্ত গাছ ভেঙ্গে পড়েছিল। 26 একমাত্র ইস্রায়েলের লোকদের বাসস্থান গোশন প্রদেশে শিলাবৃষ্টি হল না।
27 ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “এইবার বুঝেছি যে আমি পাপ করেছি। প্রভুই ঠিক ছিলেন। আমি ও আমার লোকরা ভুল করেছি। 28 প্রভুর দেওয়া শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত আর সহ্য হচ্ছে না। ঈশ্বরকে গিয়ে এই ঝড় থামাতে বল। তাহলে আমি তোমাদের যেতে দেব, তোমাদের আর এখানে থাকতে হবে না।”
29 মোশি ফরৌণকে বললেন, “আমি যখন শহর ত্যাগ করে যাবো তখন আমি প্রভুকে প্রার্থনার ভঙ্গীতে আমার হাতগুলো ওপরে তুলব। এবং তারপর বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি থামবে। তখন তুমি জানবে যে এই পৃথিবী প্রভুর অধিকারে। 30 কিন্তু আমি জানি যে তুমি এবং তোমার কর্মচারীরা এখনও প্রভুকে শ্রদ্ধা করো না।”
31 য়ব ও শন গাছে ফুল এসে গিয়েছিল। তাই এই সমস্ত শস্য নষ্ট হয়ে গেল। 32 কিন্তু যেহেতু গম ও জনার বড় হল না তাই সেগুলো নষ্ট হল না।
33 মোশি ফরৌণের কাছে থেকে শহরের বাইরে গেল, প্রভুকে প্রার্থনা করার ভঙ্গীতে তার হাতগুলো ওপরে তুলল এবং তৎক্ষণাৎ বজ্র, শিলাবৃষ্টি এমনকি বৃষ্টিও থেমে গেল।
34 যখন ফরৌণ দেখলেন বৃষ্টি, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি থেমে গিয়েছে তখন তিনি আবার ভুল করলেন। তিনি ও তার কর্মচারীরা জেদী হয়ে গেল। 35 ফরৌণ উদ্ধত হলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের যেতে দিতে অস্বীকার করলেন। এসবই হয়েছিল ঠিক প্রভু যেমন মোশিকে বলেছিলেন সেইরকম ভাবেই।
পঙ্গপাল
10 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের কাছে যাও, আমি তাকে ও তার কর্মচারীদের জেদী করে তুলেছি যাতে আমি আমার অলৌকিক শক্তি তাদের দেখাতে পারি। 2 আমি এটা এই কারণেও করেছি যাতে তোমরা, তোমাদের সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের আমি মিশরীয়দের বিরুদ্ধে কি কি করেছিলাম এবং মিশরে কেমন করে চিহ্ন-কার্যগুলি করেছিলাম তার সম্বন্ধে বলতে পারো। তাহলে তোমরা সবাই জানতে পারবে যে আমিই প্রভু।”
3 তাই মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গেল এবং বলল, “প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর বলেছেন, ‘তুমি আর কতদিন প্রভুকে অমান্য করবে? আমার লোকদের আমার উপাসনা করতে যেতে দাও। 4 তুমি যদি আমার আদেশ অমান্য কর তবে আগামীকাল আমি তোমাদের এই দেশে পঙ্গপাল নিয়ে আসব। 5 পঙ্গপালরা সারা দেশ ঢেকে ফেলবে, চারিদিকে এত পঙ্গপাল আসবে যে তোমরা মাটি দেখতে পাবে না। শিলাবৃষ্টির হাত থেকে যা কিছু বেঁচে গিয়েছে সেসব পঙ্গপালরা খেয়ে ফেলবে, মাঠের প্রত্যেকটি গাছের সমস্ত পাতা এই পঙ্গপালরা খেয়ে ফেলবে। 6 তোমার সমস্ত ঘর, তোমার কর্মচারীদের ঘর এবং মিশরের সব ঘর পঙ্গপালে ভরে যাবে। এত পঙ্গপাল হবে যা তোমার পিতামাতা অথবা তোমার পিতামহরা কখনও দেখে নি। মিশরে জনবসতি গড়ে ওঠার সময় থেকে আজ পর্যন্ত এত পঙ্গপাল আর কখনও কেউ দেখে নি।’” তারপর মোশি পিছন ফিরে ফরৌণকে ছেড়ে চলে গেল।
7 এরপর ফরৌণের কর্মচারীরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “আর কতদিন আমরা এই লোকদের ফাঁদে পড়ে থাকব? এদের ঈশ্বর, প্রভুর উপাসনা করতে যেতে দিন, আপনি যদি তা না করেন তবে আপনার বোঝার আগেই মিশর ছারখার হয়ে যাবে।”
8 তখন ফরৌণ তাঁর কর্মচারীদের বললেন মোশি ও হারোণকে ফিরিয়ে আনতে। তারা এলে ফরৌণ তাদের বললেন, “যাও, তোমরা তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপাসনা কর। কিন্তু আমাকে বলে যাও ঠিক কারা কারা যাচ্ছে?”
9 মোশি উত্তর দিল, “আমাদের সমস্ত লোক, যুবক ও বৃদ্ধ সকলেই যাবে। আমরা আমাদের পুত্রদের, কন্যাদের, মেষ, গবাদি পশু এবং প্রত্যেকটি জিনিস আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাব। কারণ প্রভু আমাদের সকলকেই উৎসবে আমন্ত্রণ করেছেন।”
10 ফরৌণ তাদের বললেন, “আমি তোমাদের ও তোমাদের সন্তানদের মিশরে ছেড়ে যেতে দেওয়ার আগে প্রভুকে সত্যিই তোমাদের সঙ্গে থাকতে হবে! দেখ তোমাদের নিশ্চয়ই কোন কু-মতলব আছে। 11 শুধুমাত্র পুরুষরাই প্রভুর উপাসনা করতে পারবে কারণ প্রথমে তোমরা একথাই বলেছিলে। কিন্তু তোমাদের সব লোক যেতে পারবে না।” এরপর ফরৌণ মোশি ও হারোণকে বিদায় দিলেন।
12 প্রভু এবার মোশিকে বললেন, “তুমি মিশরের ওপর তোমার হাত মেলে দাও। তাতে পঙ্গপালরা আসবে। সারা মিশর পঙ্গপালে ভরে যাবে। শিলাবৃষ্টিতে যে সব গাছ নষ্ট হয় নি সেগুলি পঙ্গপাল খেয়ে ফেলবে।”
13 মোশি তার হাতের ছড়ি মিশরের ওপর তুলে ধরল। এবং প্রভু পূর্ব দিক থেকে এক প্রবল বাতাস পাঠালেন। সারা দিন সারা রাত ধরে সেই হাওয়া বয়ে গেল। এবং সকালবেলা সেই হাওয়ায় পঙ্গপালরা এসে মিশরে ঢুকে পড়ল। 14 পঙ্গপালরা উড়ে এসে মিশরের মাটিতে বসল। এত পঙ্গপাল ইতিপূর্বে কখনও মিশরে দেখা যায় নি আর বোধ হয় পরবর্তী কালেও কখনও দেখা যাবে না। 15 পঙ্গপালরা মাটি ঢেকে ফেলল এবং সারা দেশ অন্ধকার হয়ে গেল। শিলাবৃষ্টি যা ধ্বংস করে নি সে সমস্ত গাছ এবং গাছের ফল পঙ্গপাল খেয়ে ফেলল, মিশরের কোথাও কোনও গাছ বা লতা-পাতাও অবশিষ্ট রইল না।
16 ফরৌণ তাড়াতাড়ি মোশি ও হারোণকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “আমি তোমাদের ও তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে পাপ করেছি। 17 এবারকার মতো আমার অপরাধ ক্ষমা করে দাও। তোমাদের প্রভুকে বল এই পঙ্গপালগুলোকে সরিয়ে নিতে।”
18 মোশি ফরৌণের কাছ থেকে চলে গেল এবং প্রভুর কাছে তার জন্য প্রার্থনা করল। 19 প্রভু হাওয়ার দিক পরিবর্তন করে পশ্চিম দিক থেকে বাতাস পাঠালেন, এই প্রবল হাওয়ায় সমস্ত পঙ্গপাল মিশর থেকে বেরিয়ে গিয়ে সূফ সাগরে পড়ল। মিশরে আর একটিও পঙ্গপাল রইল না। 20 কিন্তু প্রভু আবার ফরৌণকে জেদী করে তুললেন এবং ফরৌণ ইস্রায়েলের লোকদের যেতে দিলেন না।
অন্ধকার
21 তারপর প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত উপরে আকাশের দিকে তুলে দাও যাতে সারা মিশর অন্ধকারে ঢেকে যায়। অন্ধকার এত গাঢ় হবে যে তোমরা তা অনুভব করতে পারবে।”
22 তাই মোশি আকাশের দিকে হাত তুলল, তখন কালো মেঘ এসে মিশরকে ঢেকে ফেলল। তিন দিন ধরে এই অন্ধকার রইল। 23 কেউ কাউকে দেখতে পেল না বা কেউ উঠে কোথাও যেতে পারল না। কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা যেখানে বাস করত সেখানে আলো ছিল।
24 আবার ফরৌণ মোশিকে ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “যাও গিয়ে তোমাদের প্রভুর উপাসনা কর। তোমরা তোমাদের সন্তানদের নিয়ে যেতে পারবে কিন্তু গরু বা মেষের দল নিতে পারবে না, এখানে রেখে যাবে।”
25 মোশি বলল, “না, আমাদের প্রভু ঈশ্বরকে উৎসর্গ এবং হোমবলি দেওয়ার জন্য আপনাকে আমাদের পশুসমূহ দিতে হবে। 26 হ্যাঁ, এবং আমরা আমাদের পশুসমূহ প্রভুর উপাসনার জন্য নিয়ে যাব। আমরা একটা ক্ষুরও ফেলে যাব না। কারণ আমরা জানি না আমাদের প্রভু ঈশ্বরের উপাসনার জন্য ঠিক কি কি লাগবে। একথা আমরা আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছে জানতে পারব। তাই আমরা এ সবকিছুই সঙ্গে নিয়ে যাব।”
27 প্রভু আবার ফরৌণকে জেদী করে তুললেন এবং ফরৌণ তাদের যেতে বাধা দিলেন। 28 ফরৌণ মোশিকে বললেন, “এখান থেকে দুর হয়ে যাও, আর কখনও যেন এখানে তোমাকে না দেখি, যদি তুমি এখানে আমার কাছে দেখা করতে আসো তবে তোমায় মরতে হবে।”
29 তখন মোশি বলল, “তুমি একটা কথা ঠিকই বলেছো, আমি আর কখনও তোমার কাছে আসব না।”
প্রথম জাতকের মৃত্যু
11 প্রভু তখন মোশিকে বললেন, “মিশর এবং ফরৌণের বিরুদ্ধে আমি আরেকটি বিপর্যয় বয়ে আনব। তারপর, সে তোমাদের সবাইকে পাঠিয়ে দেবে। বস্তুত সে তোমাদের চলে যেতে বাধ্য করবে।[a] 2 তুমি ইস্রায়েলের লোকদের এই বার্তা পাঠাবে: ‘নারী ও পুরুষ নির্বিশেষে তোমরা নিজের নিজের প্রতিবেশীদের কাছ থেকে সোনা ও রূপোর অলঙ্কার চাইবে। 3 প্রভু মিশরীয়দের তোমাদের প্রতি দয়ালু করে তুলবেন। মিশরের লোকরা, এমনকি ফরৌণের কর্মচারীরা মোশিকে এক মহান ব্যক্তির মর্যাদা দেবে।’”
4 মোশি লোকদের জানাল, “প্রভু বলেছেন, ‘আজ মধ্যরাত নাগাদ আমি মিশরের মধ্যে দিয়ে যাব। 5 এবং তার ফলে মিশরীয়দের সমস্ত প্রথমজাত পুত্ররা মারা যাবে। রাজা ফরৌণের প্রথমজাত পুত্র থেকে শুরু করে যাঁতাকলে শস্য পেষনকারিণী দাসীর প্রথমজাত পুত্র পর্যন্ত সবাই মারা যাবে। এমনকি পশুদেরও প্রথম শাবক মারা যাবে। 6 তারপর সমস্ত মিশরে এমন জোরে কান্নার রোল উঠবে যা অতীতে কখনও হয় নি এবং যা ভবিষ্যতেও কখনও হবে না। 7 কিন্তু ইস্রায়েলের লোকদের কোনরকম ক্ষতি হবে না। এমন কি কোনো কুকুর পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের অথবা তাদের পশুদের দিকে ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করবে না।’ এর ফলে, তোমরা বুঝতে পারবে আমি মিশরীয়দের থেকে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে কতখানি অন্যরকম আচরণ করি। 8 তখন তোমাদের সমস্ত (মিশরীয় কর্মচারীরা) নতজানু হবে এবং আমার উপাসনা করবে। তারা বলবে, ‘তুমি তোমার সমস্ত লোককে তোমার সঙ্গে নিয়ে চলে যাও।’ তখন মোশি ক্রোধে ফরৌণকে ছেড়ে চলে গেল।”
9 প্রভু এরপর মোশিকে আরও বললেন যে, “ফরৌণ তোমার কথা শোনে নি। কেন শোনে নি? শোনে নি বলেই তো আমি মিশরের ওপর আমার মহাশক্তির প্রভাব দেখাতে পেরেছিলাম।” 10 মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়েছিল এবং এই সমস্ত অলৌকিক কাজগুলো করেছিল। কিন্তু প্রভু ফরৌণের হৃদয়কে উদ্ধত করেছিলেন যাতে সে ইস্রায়েলীয়দের তার দেশ থেকে যেতে না দেয়।
যীশু ও একজন অ-ইহুদী স্ত্রীলোক
(মার্ক 7:24-30)
21 এরপর যীশু সেই জায়গা ছেড়ে সোর ও সীদোন অঞ্চলে গেলেন। 22 একজন কনান দেশীয় স্ত্রীলোক সেই অঞ্চল থেকে এসে চিৎকার করে বলতে লাগল, “হে প্রভু, দায়ূদের পুত্র, আমাকে দয়া করুন। একটা ভূত আমার মেয়ের ওপর ভর করেছে, তাতে সে ভয়ানক যন্ত্রণা পাচ্ছে।”
23 যীশু তাকে একটা কথাও বললেন না, তখন তাঁর শিষ্যরা এসে যীশুকে অনুরোধ করে বললেন, “ওকে চলে যেতে বলুন, কারণ ও চিৎকার করতে করতে আমাদের পিছন পিছন আসছে।”
24 এর উত্তরে যীশু বললেন, “সকলের কাছে নয়, কেবল ইস্রায়েলের হারানো মেষদের কাছে আমাকে পাঠানো হয়েছে।”
25 তখন সেই স্ত্রীলোকটি যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বলল, “প্রভু, দয়া করে আমায় সাহায্য করুন!”
26 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরের সামনে ছুঁড়ে দেওয়া ঠিক নয়।”
27 স্ত্রীলোকটি তখন বলল, “হ্যাঁ প্রভু, কিন্তু মনিবদের টেবিল থেকে খাবারের যে সব টুকরো পড়ে কুকুরেই তা খায়।”
28 তখন যীশু তাকে বললেন, “হে নারী, তোমার বড়ই বিশ্বাস! যাও, তুমি যেমন চাইছ, তেমনই হোক্।” আর সেই মুহূর্ত্ত থেকেই তার মেয়েটি সুস্থ হয়ে গেল।
যীশু বহু মানুষকে আরোগ্যদান করলেন
29 এরপর যীশু সেখান থেকে গালীল হ্রদের তীর ধরে চললেন। তিনি একটা পাহাড়ের ওপর উঠে সেখানে বসলেন।
30 আর বহু লোক সেখানে এসে জড়ো হল, তারা খোঁড়া, অন্ধ, নুলো, বোবা এবং আরও অনেককে সঙ্গে নিয়ে এল। তারা ঐসব রোগীদের তাঁর পায়ের কাছে রাখল আর যীশু তাদের সকলকে সুস্থ করলেন। 31 লোকেরা যখন দেখল বোবা কথা বলছে, নুলো সুস্থ সবল হচ্ছে, খোঁড়া চলাফেরা করছে, অন্ধরা দৃষ্টিশক্তি লাভ করছে, তখন তারা আশ্চর্য হয়ে গেল আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে লাগল।
যীশু চার হাজারেরও বেশী লোককে খাওয়ালেন
(মার্ক 8:1-10)
32 যীশু তখন তাঁর শিষ্যদের বললেন, “এই লোকদের জন্য আমার মনে কষ্ট হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিন দিন হল আমার সঙ্গে সঙ্গে আছে, এদের কাছে আর কোন খাবার নেই। এই ক্ষুধার্ত অবস্থায় এদের আমি চলে যেতে বলতে পারি না, তাহলে হয়তো এরা পথে মুর্ছা যাবে।”
33 তখন শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “এই নির্জন জায়গায় এত লোককে খাওয়ানোর মতো অতো খাবার আমরা কোথায় পাবো?”
34 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমাদের কাছে কটা রুটি আছে?”
তাঁরা বললেন, “সাতখানা রুটি ও কয়েকটা ছোট মাছ আছে।”
35 যীশু সেই সব লোককে মাটিতে বসে যেতে বললেন। 36 তারপর তিনি সেই সাতটা রুটি ও মাছ ক’টা নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, পরে সেই রুটি টুকরো করে শিষ্যদের হাতে দিলেন, আর শিষ্যরা তা লোকদের দিতে লাগলেন। 37 লোকেরা সবাই বেশ পেট ভরে খেল। টুকরো-টাকরা যা পড়ে রইল, তা তোলা হলে পর তা দিয়ে সাতটা টুকরি ভর্ত্তি হয়ে গেল। 38 যারা খেয়েছিল তাদের মধ্যে মহিলা ও ছোট ছোট ছেলেমেয়ে বাদ দিয়ে কেবল পুরুষ মানুষের সংখ্যাই ছিল চার হাজার। 39 এরপর যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে নৌকায় উঠে মগদনের অঞ্চলে গেলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International