Old/New Testament
যাকোব তাঁর পুত্রদের আশীর্বাদ করলেন
49 এরপর যাকোব তাঁর পুত্রদের তাঁর কাছে ডাকলেন এবং বললেন, “আমার বাছারা এখানে আমার কাছে এস। ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা আমি তোমাদের বলছি।
2 “যাকোবের পুত্ররা এস, একসাথে এসে শোন
তোমাদের পিতা ইস্রায়েল কি বলছেন।
রূবেণ
3 “রূবেণ আমার প্রথম জাত, তুমিই তো আমার প্রথম সন্তান,
পুরুষ হিসাবে আমার শক্তির প্রথম প্রমাণ।
তুমি আমার সন্তানদের মধ্যে
সবচেয়ে সম্মানিত এবং শক্তিমান।
4 কিন্তু বন্যার মত তোমার কামেচ্ছা,
তুমি তা দমন করো নি।
সেইজন্য তুমি সম্মানিত সন্তান হিসাবে
তোমার প্রাধান্য হারাবে।
তুমি তোমার পিতার শয্যায় উঠেছিলে
আর তার এক স্ত্রীর সাথে শুয়েছিলে।
তুমি সেই শয্যায় ঘুমিয়েছ
এবং সেই শয্যাকে অপবিত্র করেছ।
শিমিয়োন ও লেবি
5 “শিমিয়োন ও লেবি ভাই ভাই।
তারা যোদ্ধা এবং তারা তাদের তরবারি নিয়ে যুদ্ধ করতে ভালবাসে।
6 আমি তাদের গোপন সভায় অংশ নেব না।
আমি তাদের মন্দ পরিকল্পনায় অংশ নেব না।
তারা রাগে মানুষ হত্যা করল।
এবং কেবল ঠাট্টা করতে পশুদের আঘাত করল।
7 তাদের রাগ এক অভিশাপ, কারণ তা প্রচণ্ড।
উন্মত্ত হয়ে উঠলে তারা নিষ্ঠুরতায় পূর্ণ হয়।
তারা যাকোবের দেশে তাদের অংশ পাবে না।
তারা সমস্ত ইস্রায়েলে ছড়িয়ে পড়বে।
যিহূদা
8 “যিহূদা তোমার ভাইরা তোমার প্রশংসা করবে।
তুমি তোমার শত্রুদের পরাজিত করবে।
তোমার ভাইরা তোমার কাছে জানু পাতবে।
9 আমার বাছা, তুমি শিকারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা সিংহের মতো।
সে বিশ্রাম করলে তাকে বিরক্ত করার সাহস কার আছে?
10 যিহূদার বংশ থেকেই রাজারা উঠবে।
তার বংশ যে শাসন করবে
এই চিহ্ন প্রকৃত রাজা না আসা পর্যন্ত রইবে।
পরে বহু লোক বাধ্য হয়ে তার সেবা করবে।
11 সে তার গাধার শাবককে উত্তম দ্রাক্ষালতা দিয়ে বাঁধবে।
সে উত্তম দ্রাক্ষারসে নিজের বস্ত্র ধৌত করবে।
12 তার চোখ দ্রাক্ষারস পান করে লাল,
তার দাঁত দুধ পান করে সাদা।
সবূলূন
13 “সবূলূন সমুদ্রের কাছে বাস করবে।
তার সমুদ্রোপকুল জাহাজের পক্ষে হবে নিরাপদ।
সীদোন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে তার দেশ।
ইষাখর
14 “ইষাখর খচ্চরের মত কঠিন পরিশ্রম করেছে।
ভারী বোঝা বহন করার পর সে বিশ্রাম করবে।
15 সে দেখবে তার বিশ্রাম স্থান উত্তম।
তার দেশ হবে মনোহর।
তখন সে ভারী বোঝা বইতে সম্মত হবে।
দান হিসাবে কাজ করতে সম্মতি জানাবে।
দান
16 “দান ইস্রায়েলের অন্য বংশের মতোই
নিজের প্রজাদের বিচার করবে।
17 দান হবে পথের ধারের সাপের মতো।
সে পথে শুয়ে থাকা বিষধর সাপের মতই হবে।
সেই সাপ, যে ঘোড়ার পায়ে দংশন করে
চালককে মাটিতে ফেলে দেয়।
18 “হে প্রভু, আমি তোমার পরিত্রাণের অপেক্ষা করছি।
গাদ
19 “এক দল দস্যু গাদকে আক্রমণ করবে।
কিন্তু গাদ তাদের পিছনে তাড়া করবে।
আশের
20 “আশেরের দেশে উত্তম খাদ্য উৎপন্ন হবে।
রাজার উপযুক্ত খাদ্যই সে যোগাবে!
নপ্তালি
21 “নপ্তালি মুক্ত হরিণীর মতো,
আর তার বাক্য তাদের সুন্দর শিশুর মতো।
যোষেফ
22 “যোষেফ বন্য গাধার মতো,
সে ফলে ঢাকা লতার মতো, বসন্তে বেড়ে ওঠা শাখার মতো,
বেড়ার গায়ে বেড়ে ওঠা লতার মতো।
23 অনেক লোক তার বিরোধিতা করেছে এবং তার সঙ্গে যুদ্ধ করেছে।
ধনুকধারীরা তার শত্রু হয়েছে।
24 কিন্তু সে তার পরাক্রমী ধনু ও দক্ষ বাহুর সাহায্যে যুদ্ধ জয় করেছে।
সে ক্ষমতা পায় যাকোবের এক বীরের কাছ থেকে,
এক মেষপালকের কাছ থেকে, ইস্রায়েলের শৈলের কাছে থেকে।
25 তোমার পিতার ঈশ্বরের কাছ থেকে ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করুন,
উপরের আকাশ হতে আশীর্বাদ বর্ষান,
আর গভীর জল থেকেও আশীর্বাদ করুন।
তিনি তোমাকে স্তন ও গর্ভ হতেও আশীর্বাদ করুন।
26 আমার পূর্বপুরুষরা অনেক আশীর্বাদ ভোগ করেছেন।
কিন্তু তোমার পিতা আমি আরও বেশী আশীর্বাদ পেয়েছি।
তোমার ভাইরা তোমায় সব কিছু থেকে বঞ্চিত করল;
কিন্তু এখন আমি পর্বতের সমান উঁচু আশীর্বাদ
তোমার মাথায় রাশিকৃত করলাম।
বিন্যামীন
27 “বিন্যামীন ক্ষুধার্ত নেকড়ে।
সকালে সে শিকার করে খেতে বসে।
বিকালে যা পড়ে থাকে তা ভাগ করে নেয়।”
28 এই হল ইস্রায়েলের বারো বংশ। আর এই কথাগুলো তাদের পিতা তাদের বলেছিলেন। তিনি প্রত্যেকটি সন্তানকে তাদের উপযুক্ত আশীর্বাদে আশীর্বাদ করলেন। 29 তারপর ইস্রায়েল তাদের এই নির্দেশ দিয়ে বললেন, “মৃত্যুর পর আমি চাই আমার লোকদের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে, সুতরাং হেতীয় ইফ্রোণের ক্ষেতে যে গুহা আছে সেখানে আমার পিতৃপুরুষদের সেই গুহায় আমায় কবর দিও। 30 সেই কবর কনান দেশে মম্রির কাছে মক্পেলা ক্ষেতে রয়েছে। সেই ক্ষেত অব্রাহাম ইফ্রোনের কাছ থেকে কিনেছিলেন যেন কবর দিতে পারেন। 31 অব্রাহাম ও তার স্ত্রী সারাও সেই কবরে সমাহিত হয়েছিলেন। ইস্হাক ও তার স্ত্রী রিবিকাকেও সেই কবরে সমাহিত করা হয়েছিল। আমি আমার স্ত্রী লেয়াকেও সেখানে সমাহিত করেছি। 32 সেই গুহা হেতীয়দের কাছ থেকে কেনা সেই ক্ষেতের মধ্যে রয়েছে।” 33 যাকোব তাঁর পুত্রদের সঙ্গে কথা বলা শেষ করে শুয়ে পড়লেন। বিছানায় পা উঠিয়ে রাখলেন, তারপর মারা গেলেন।
যাকোবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া
50 ইস্রায়েল মারা গেলে যোষেফ অত্যন্ত দুঃখিত হলেন। তিনি কাঁদলেন এবং তাঁর পিতাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন। 2 যোষেফ তাঁর ভৃত্যদের পিতার দেহ প্রস্তুত করতে বললেন। (এই ভৃত্যরা চিকিৎসক ছিল।) চিকিৎসকেরা মিশরীয়রা যে বিশেষভাবে দেহ প্রস্তুত করে সেইভাবে যাকোবের দেহ কবর দেবার জন্য প্রস্তুত করল। 3 দেহ বিশেষভাবে প্রস্তুত করার সময় কবর দেবার আগে তারা 40 দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করল। তারপর 70 দিন ধরে মিশরীয়রা যাকোবের জন্য শোক পালন করল। 4 শোকের 70 দিন শেষ হলে যোষেফ ফরৌণের আধিকারিকদের বললেন, “ফরৌণকে দয়া করে এই কথা বলুন: 5 ‘আমার পিতা যখন মৃত্যুশয্যায় ছিলেন তখন আমি তাঁর কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে তাঁকে কনান দেশে এক গুহায় সমাহিত করব। এই গুহা তিনি নিজের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। তাই দয়া করে আমার পিতাকে কবর দিতে দিন। তারপর আমি আবার আপনার কাছে আসব।’”
6 ফরৌণ বললেন, “তোমার প্রতিজ্ঞা পালন কর। যাও তোমার পিতাকে কবর দাও।”
7 তাই যোষেফ তাঁর পিতাকে সমাহিত করতে চললেন। ফরৌণের সমস্ত আধিকারিক, ফরৌণের নেতারা এবং মিশরের প্রবীণরা যোষেফের সাথে গেলেন। 8 যোষেফের পরিবারের সবাই, তাঁর ভাইরা ও তাঁর পিতার পরিবারের সবাই, তাঁর সঙ্গে গেলেন। গোশন প্রদেশে কেবল তাঁদের সন্তান-সন্ততি ও পশুরা থেকে গেল। 9 সেই এক বিরাট দল হল। এমনকি এক দল সৈনিকও রথে ও ঘোড়ায় চড়ে চলল। 10 তারা যর্দন নদীর পূর্বদিকে গোরেন আটদের[a] খামারে এলো। এই স্থানে তারা ইস্রায়েলের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে শোক সভা করল। সেই শোক সভা সাত দিন ধরে চলল। 11 কনান দেশের লোকরা গোরেন আটদের সেই অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া দেখে বললেন, “মিশরীয়দের এ দারুণ বিষাদময় শোকের অনুষ্ঠান!” সেইজন্য যর্দ্দন নদীর পারের সেই জায়গার নাম হল আবেল্-মিস্রয়ীম। 12 সুতরাং যাকোবের পুত্ররা তাঁদের পিতার কথানুসারে কাজ করলেন। 13 তাঁরা তাঁর দেহ কনান দেশে বহন করে এনে মক্পেলার গুহাতে কবর দিলেন। অব্রাহাম হেতীয় ইক্রোণের কাছ থেকে মম্রির কাছে যে ক্ষেত কিনেছিলেন এই কবর সেখানেই ছিল। অব্রাহাম কবর দেবার জন্যই এটা কিনেছিলেন। 14 যোষেফ তাঁর পিতাকে কবর দেবার পর তাঁর দলের সবাই মিশরে ফিরে গেলেন।
ভাইরা তবুও যোষেফকে ভয় করে চলল
15 যাকোব মারা গেলে যোষেফের ভাইরা দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হল। তারা এই ভেবে ভীত হল যে বহু বছর আগে তারা যোষেফের প্রতি যা করেছিল, যোষেফ হয়তো তার প্রতিফল দেবেন। তারা বলল, “হয়তো যোষেফ এখনও আমরা যা করেছিলাম তার জন্য আমাদের ঘৃণা করেন।” 16 এইজন্য ভাইরা যোষেফকে এই বলে পাঠাল:
“পিতা মারা যাবার আগে আপনাকে এই বার্তা দিতে বলেছিলেন। 17 তিনি বললেন, ‘যোষেফকে আমার এই অনুরোধ, সে যেন দয়া করে তার ভাইদের অন্যায় কাজ ক্ষমা করে দেয়।’ সেই জন্য আমরা এখন আমাদের আপনার প্রতি করা সেই অন্যায় কাজের ক্ষমা চাই। আমরা সেই ঈশ্বরের দাস যিনি আপনার পিতারও ঈশ্বর।”
এই খবরে যোষেফ খুব দুঃখ পেলেন এবং কাঁদলেন। 18 তাঁর ভাইরা তাঁর সামনে গিয়ে প্রণাম করলেন এবং বললেন, “আমরা আপনার দাস হব।”
19 তখন যোষেফ তাদের বললেন, “ভয় করো না, আমি ঈশ্বর নই! শাস্তি দেবার অধিকার আমার নেই। 20 এটা সত্যি যে তোমরা আমার অনিষ্ট করার পরিকল্পনা করেছিলে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ঈশ্বরই আমার জন্য ভাল কিছু পরিকল্পনা করছিলেন। আমার মাধ্যমে ঈশ্বরের অনেকের প্রাণ বাঁচানোর পরিকল্পনা ছিল। 21 আর ঘটলও তা-ই। তাই ভয় পেও না। আমি তোমাদের এবং তোমাদের সন্তানদের সহায় হব।” এইভাবে যোষেফ ভাইদের ভালো ভালো কথা বললে তারা ভালো বোধ করল।
22 যোষেফ তাঁর পিতার পরিবারের সঙ্গে মিশরে রইলেন। যোষেফ 110 বছর বয়সে মারা গেলেন। 23 যোষেফের জীবনকালেই যোষেফ এও দেখলেন যে তাঁর পুত্র মনঃশির মাখীর নামে একটি পুত্র হল। যোষেফের জীবনকালেই মাখীরের পুত্ররা জন্মাল এবং যোষেফ তাও দেখে যেতে পারলেন।
যোষেফের মৃত্যু
24 অন্তিম শয্যায় যোষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, “আমার মৃত্যুর সময় নিকট, কিন্তু আমি জানি ঈশ্বর তোমাদের যত্ন নেবেন এবং এই দেশ থেকে বাইরে নিয়ে যাবেন সেই দেশে, যে দেশ তিনি অব্রাহাম ইস্হাক ও যাকোবকে দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।”
25 তারপর যোষেফ তাঁর লোকদের একটি শপথ নিতে বললেন যে ঈশ্বর তাদের যখন নতুন দেশে নিয়ে যাবেন, তখন তারা যেন তাঁর অস্থি বহন করে নিয়ে যায়।
26 যোষেফ 110 বছর বয়সে মিশরে মারা যান। চিকিৎসকরা তাঁর দেহে ঔষধ দিয়ে মিশরে এক কফিনের মধ্যে রাখলেন।
যীশু আরো দৃষ্টান্ত সহযোগে শিক্ষা দিলেন
(মার্ক 4:30-34; লূক 13:18-21)
31 যীশু তাদের সামনে আর একটি দৃষ্টান্ত রাখলেন, “স্বর্গরাজ্য এমন একটা সরষে দানার মতো যা নিয়ে কোন একজন লোক তার জমিতে লাগাল। 32 সমস্ত বীজের মধ্যে ওটা সত্যিই সবচেয়ে ছোট, কিন্ত গাছ হয়ে বেড়ে উঠলে পর তা সমস্ত শাক-সব্জীর থেকে বড় হয়ে একটা বড় গাছে পরিণত হয়, যাতে পাখিরা এসে তার ডালপালায় বাসা বাঁধে।”
33 তিনি তাদের আর একটা দৃষ্টান্ত বললেন, “স্বর্গরাজ্য যেন খামিরের মতো। একজন স্ত্রীলোক তা নিয়ে একতাল ময়দার সঙ্গে মেশাল ও তার ফলে সমস্ত ময়দা ফেঁপে উঠল।”
34 জনসাধারণের কাছে উপদেশ দেবার সময় যীশু প্রায়ই এই ধরণের দৃষ্টান্ত দিতেন। তিনি দৃষ্টান্ত ছাড়া কোন শিক্ষাই দিতেন না। 35 যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন, তা পূর্ণ হয়:
“আমি দৃষ্টান্তের মাধ্যমে কথা বলব;
জগতের সৃষ্টি থেকে যে সমস্ত বিষয় এখনও গুপ্ত আছে সেগুলি প্রকাশ করব।”(A)
যীশু কঠিন গল্পের ব্যাখ্যা দিলেন
36 পরে যীশু লোকদের বিদায় দিয়ে ঘরে চলে গেলেন। তখন তাঁর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, “সেই ক্ষেতের ও শ্যামা ঘাসের দৃষ্টান্তটি আমাদের বুঝিয়ে দিন।”
37 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “যিনি ভাল বীজ বোনেন, তিনি মানবপুত্র। 38 জমি বা ক্ষেত হল এই জগত, স্বর্গরাজ্যের লোকরা হল ভাল বীজ। আর শ্যামাঘাস তাদেরই বোঝায়, যারা মন্দ লোক। 39 গমের মধ্যে যে শত্রু শ্যামা ঘাস বুনে দিয়েছিল, সে হল দিয়াবল। ফসল কাটার সময় হল জগতের শেষ সময় এবং মজুররা যারা সংগ্রহ করে, তারা ঈশ্বরের স্বর্গদূত।
40 “শ্যামা ঘাস জড় করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই পৃথিবীর শেষের সময়েও ঠিক তেমনি হবে। 41 মানবপুত্র তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে দেবেন, আর যারা পাপ করে ও অপরকে মন্দের পথে ঠেলে দেয়, তাদের সবাইকে সেই স্বর্গদূতরা মানবপুত্রের রাজ্যের মধ্য থেকে একসঙ্গে জড় করবেন। 42 তাদের জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে ফেলে দেবেন। সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে। 43 তারপর যারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে, তারা পিতার রাজ্যে সূর্যের মতো উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে। যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক!
গুপ্তধন ও মুক্তার দৃষ্টান্ত মূলক গল্প
44 “স্বর্গরাজ্য ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ধনের মতো। একজন লোক তা খুঁজে পেয়ে আবার সেই ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখল। সে এতে এত খুশী হল যে সেখান থেকে গিয়ে তার সর্বস্ব বিক্রি করে সেই ক্ষেতটি কিনল।
45 “আবার স্বর্গরাজ্য এমন একজন সওদাগরের মতো, যে ভাল মুক্তা খুঁজছিল। 46 যখন সে একটা খুব দামী মুক্তার খোঁজ পেল, তখন গিয়ে তার যা কিছু ছিল সব বিক্রি করে সেই মুক্তাটাই কিনল।
মাছ ধরা জালের দৃষ্টান্ত
47 “স্বর্গরাজ্য আবার এমন একটা বড় জালের মতো যা সমুদ্রে ফেলা হলে তাতে সব রকম মাছ ধরা পড়ল। 48 জাল পূর্ণ হলে লোকরা সেটা পাড়ে টেনে তুলল, পরে তারা বসে ভালো মাছগুলো বেছে ঝুড়িতে রাখল এবং খারাপগুলো ফেলে দিল। 49 জগতের শেষের দিনে এই রকমই হবে। স্বর্গদূতরা এসে ধার্মিক লোকদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোকদের আলাদা করবেন। 50 স্বর্গদূতরা জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দুষ্ট লোকদের ফেলে দেবেন। সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসবে।”
51 যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি এসব কথা বুঝলে?”
তারা তাঁকে বলল, “হ্যাঁ, আমরা বুঝেছি।”
52 তখন তিনি তাদের বললেন, “প্রত্যেক ব্যবস্থার শিক্ষক, যিনি স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন তিনি এমন একজন গৃহস্থের মতো, যিনি তাঁর ভাঁড়ার থেকে নতুন ও পুরানো উভয় জিনিসই বার করেন।”
যীশু নিজের শহরে যাত্রা করলেন
(মার্ক 6:1-6; লূক 4:16-30)
53 যীশু এই দৃষ্টান্তগুলি বলার পর সেখান থেকে চলে গেলেন। 54 তারপর তিনি নিজের শহরে গিয়ে সেখানে সমাজ-গৃহে তাদের মধ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তাঁর কথা শুনে লোকেরা আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বলল, “এই জ্ঞান ও এইসব অলৌকিক কাজ করার ক্ষমতা এ কোথা থেকে পেল? 55 এ কি সেই ছূতোর মিস্ত্রির ছেলে নয়? এর মায়ের নাম কি মরিয়ম নয়? আর এর ভাইদের নাম কি যাকোব, যোষেফ, শিমোন ও যিহূদা নয়? 56 আর এর সব বোনেরা এখানে আমাদের মধ্যে কি থাকে না? তাহলে কোথা থেকে সে এসব পেল?” 57 এইভাবে তাঁকে মেনে নিতে তারা মহা সমস্যায় পড়ল।
কিন্তু যীশু তাদের বললেন, “নিজের গ্রাম ও বাড়ি ছাড়া আর সব জায়গাতেই ভাববাদী সম্মান পান।” 58 তাঁর প্রতি লোকদের অবিশ্বাস দেখে তিনি সেখানে বেশী অলৌকিক কাজ করলেন না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International