Old/New Testament
ইস্হাকের সঙ্গে যাকোবের চালাকি
27 ইস্হাক ক্রমশঃ বৃদ্ধ হলেন, ক্ষীণ হল তাঁর দৃষ্টিশক্তি—আর কিছু ভাল দেখতে পান না। একদিন তিনি বড় পুত্রকে ডাকলেন, “এষৌ!”
এষৌ উত্তর দিল, “আমি এখানে।”
2 ইস্হাক বললেন, “আমি বৃদ্ধ হয়েছি। শীঘ্রই মারাও যেতে পারি। 3 তাই তোমার তীরধনুক নিয়ে শিকারে যাও। আমার খাওয়ার জন্যে একটা কিছু শিকার করে আনো। 4 আমি ভালবাসি এমন কোনও খাবার তৈরী কর। আমায় খাবার এনে দাও, আমি খাই। মৃত্যুর আগে তোমায় আশীর্বাদ করে যাই।” 5 তখন এষৌ শিকার করতে বেরিয়ে গেল।
এসব কথা ইস্হাক যখন এষৌকে বলছিলেন তখন রিবিকা সব শুনছিলেন। 6 রিবিকা তাঁর প্রিয় পুত্র যাকোবকে বললেন, “শোন, তোমার পিতা তোমার ভাই এষৌকে কি বলছিলেন সব শুনেছি। 7 তোমার পিতা বললেন, ‘আমার খাওয়ার জন্যে একটা জানোয়ার শিকার করে আনো। আমায় রেঁধে দাও, আমি খাই। তাহলে আমি মৃত্যুর আগে তোমায় আশীর্বাদ করব।’ 8 এখন শোন বাবা, আমি যা বলি তা করো। 9 আমাদের ছাগলের খোঁয়াড়ে যাও, দুটো ছাগল ছানা নিয়ে এস। তোমার পিতা যেমন মাংস খেতে ভালবাসে তেমন করে আমি রেঁধে দেব। 10 তারপর সেই খাবার নিয়ে পিতার কাছে যাবে। মৃত্যুর আগে তিনি তোমায় আশীর্বাদ করবেন।”
11 কিন্তু যাকোব মা রিবিকাকে বলল, “আমার ভায়ের গা ভর্ত্তি লোম। কিন্তু আমার শরীরের ত্বক মসৃণ। 12 পিতা আমায় ছুঁলেই টের পাবেন যে আমি এষৌ নই। তাহলে পিতা আমায় আশীর্বাদ দেবেন না। বরং অভিশাপ দেবেন। কেন? কেননা আমি তাঁর সঙ্গে চালাকি করতে গিয়েছিলাম।”
13 সুতরাং রিবিকা তাকে বললেন, “যদি তিনি অভিশাপ দেন তবে তা আমার ওপর আসুক। আমি যেমন বলছি তেমনটি করো। যাও, আমার জন্য ছাগল নিয়ে এস।”
14 তখন যাকোব দুটো ছাগল নিয়ে এসে তার মাকে সেগুলি দিল। তার মা ঠিক যেভাবে ইস্হাক খেতে ভালবাসেন সেই বিশেষ ভাবে ছাগল দুটো রান্না করলেন। 15 তারপর রিবিকা বড় পুত্র এষৌর প্রিয় জামাকাপড় নিলেন। সেই জামাকাপড় পরিয়ে দিলেন ছোট পুত্র যাকোবকে। 16 আর যাকোবের হাতে ও গলায় লাগিয়ে দিলেন ছাগলের চামড়া। 17 তারপর রিবিকা সেই রান্না করা মাংস নিয়ে এসে যাকোবকে দিলেন।
18 যাকোব পিতার কাছে গিয়ে ডাকল, “পিতা।”
তার পিতা সাড়া দিলেন, “তুমি কে বাবা?”
19 যাকোব বলল, “আমি তোমার বড় পুত্র এষৌ। তুমি যেমন বলেছিলে আমি সব তেমনভাবে করে এনেছি। এখন উঠে বসো, তোমার জন্যে যা শিকার করেছি, খাও আগে। আমায় পরে আশীর্বাদ কোরো।”
20 কিন্তু ইস্হাক তাঁর পুত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি করে এত তাড়াতাড়ি জানোয়ার শিকার করলে?”
যাকোব উত্তর দিল, “কারণ প্রভু, তোমার ঈশ্বর আমাকে জানোয়ারগুলি তাড়াতাড়ি খুঁজে পেতে সাহায্য করেছেন।”
21 তখন ইস্হাক যাকোবকে বললেন, “কাছে এস বাবা, আমি তোমায় ছুঁয়ে দেখি, তুমি সত্যিই আমার পুত্র এষৌ কিনা।”
22 সুতরাং যাকোব তার পিতা ইস্হাকের কাছে গেল। ইস্হাক তার গায়ে হাত বুলিয়ে বললেন, “তোমার গলার স্বর যাকোবের মত শোনাচ্ছে, কিন্তু তোমার হাত এষৌর মত লোমশ।” 23 ইস্হাক বুঝতে পারলেন না যে এ আসলে যাকোব। কারণ তার হাত এষৌর হাতের মতোই লোমশ। সুতরাং ইস্হাক যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন।
24 ইস্হাক নিঃসন্দেহ হবার জন্যে আবার জিজ্ঞেস করল, “তুমি সত্যিই আমার পুত্র এষৌ তো?”
যাকোব উত্তর দিল, “হ্যাঁ, পিতা, আমিই এষৌ।”
যাকোবকে আশীর্বাদ
25 তখন ইস্হাক বললেন, “আমাকে আমার পুত্রের শিকার করা পশুগুলির থেকে খাবার এনে দাও। আমি সেটা খেয়ে তোমায় আশীর্বাদ করবো।” তখন যাকোব খাবারটা দিল এবং ইস্হাক তা খেলেন। তারপর যাকোব কিছু দ্রাক্ষারস দিলে ইস্হাক তা পান করলেন।
26 তারপর ইস্হাক তাকে বললেন, “কাছে এস, আমায় চুমু দাও।” 27 সুতরাং যাকোব তার পিতার কাছে গিয়ে তাঁকে চুম্বন করল। তখন ইস্হাক যাকোবের জামা কাপড়ে এষৌর জামা কাপড়ের গন্ধ পেলেন এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন। ইস্হাক বললেন,
“যে প্রান্তর প্রভুর আশীর্বাদ ধন্য, আমার সন্তান সেই প্রান্তরের গন্ধ বহে।
28 তোমাকে প্রভু প্রচুর বৃষ্টি দিন যাতে প্রচুর ফসল আর দ্রাক্ষারস হয়।
29 বহু জাতি তোমায় সেবা করবে
এবং তোমার প্রতি নত থাকবে।
ভাই জ্ঞাতিদের ওপরে তোমার প্রভুত্ব বহাল হবে।
তোমার মাতার পুত্রগণ তোমার অধীন হবে এবং তারা তোমার আদেশে চলবে।
তোমাকে যারা শাপ দেবে তারা হবে অভিশপ্ত,
যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে তারা আশীর্বাদ পাবে।”
এষৌর জন্য “আশীর্বাদ”
30 ইস্হাক যাকোবকে আশীর্বাদ করা শেষ করলেন। তারপর যেই যাকোব পিতার কাছ থেকে আশীর্বাদ নিয়ে চলে গেল অমনি এষৌ ফিরে এল শিকার থেকে। 31 পিতা ঠিক যেমন খেতে ভালবাসে ঠিক সেভাবে এষৌ মাংস রাঁধল। তারপর খাবারটা নিয়ে এল পিতার কাছে। পিতাকে সে বলল, “পিতা, আমি তোমার পুত্র। ওঠো, তোমার জন্য শিকার করে আমি মাংস রেঁধে নিয়ে এসেছি, খাও, তারপরে আমায় আশীর্বাদ করো।”
32 কিন্তু ইস্হাক জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কে?”
সে উত্তর দিল, “আমি তোমার পুত্র—তোমার বড় পুত্র এষৌ।”
33 তখন ইস্হাক মহা উদ্বিগ্ন হলেন। জিজ্ঞেস করলেন, “তাহলে তুমি আসার আগে কে মাংস রান্না করে এনে দিল আমায়? আমি সমস্ত মাংস খেয়ে তাকে আশীর্বাদ করলাম। এখন সেই আশীর্বাদ ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষেও ঢের দেরী হয়ে গেছে।”
34 এষৌ তার পিতার কথা শুনল। সে খুব ক্রুদ্ধ ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠল। সে চিৎকার করে কেঁদে উঠল। পিতাকে বলল, “তাহলে আমাকেও আশীর্বাদ করো, পিতা!”
35 ইস্হাক বললেন, “তোমার ভাই আমার সঙ্গে চালাকি করেছে! সে এসে তোমার আশীর্বাদ নিয়ে গেছে!”
36 এষৌ বলল, “তার নাম যাকোব। ওর জন্যে ঐ নামই ঠিক। আমার সঙ্গে ভাই দুবার চালাকি করল। প্রথমবার কৌশলে সে প্রথম সন্তান হিসেবে আমার যা অধিকার ছিল তার থেকে বঞ্চিত করেছে এবং এবার আমার প্রাপ্য আশীর্বাদ থেকে আমাকে বঞ্চিত করল।” তারপর এষৌ জিজ্ঞেস করল, “আমার জন্য কি তোমার আর কোন আশীর্বাদ অবশিষ্ট নেই?”
37 ইস্হাক উত্তর দিলেন, “না, তার জন্য বড় দেরী হয়ে গেছে। আমি তোমায় শাসন করার অধিকারও যাকোবকে দিয়ে ফেলেছি। আমার আশীর্বাদে সে পাবে তার সমস্ত ভাইদের সেবা। আর আমি তাকে প্রচুর শস্য আর দ্রাক্ষারসের জন্য আশীর্বাদ দিয়েছি। তোমায় আশীর্বাদ করার জন্য আর কিছু বাকি নেই।”
38 কিন্তু এষৌ আশীর্বাদের জন্যে পিতাকে পীড়াপীড়ি করে বলল, “পিতা তোমার কাছে কি শুধুমাত্র একটিই আশীর্বাদ আছে?” এষৌ কাঁদতে শুরু করল।
39 তখন ইস্হাক বললেন,
“তুমি কখনও উর্বর জমি পাবে না,
তুমি কখনও পর্যাপ্ত বর্ষা পাবে না।
40 তোমাকে লড়তে হবে জীবনের জন্য
এবং ভ্রাতার ভৃত্য হবে তুমি।
কিন্তু লড়ে তুমি হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন।
মুক্তি পাবে তোমার ভ্রাতার শাসন থেকে।”
যাকোব দেশ ত্যাগ করল
41 তারপর এই আশীর্বাদের জন্য এষৌ যাকোবকে ঘৃণা করতে শুরু করল। মনে মনে এষৌ ভাবল, “আমার পিতা শীঘ্রই মারা যাবেন। তার জন্য শোক করার সময় শেষ হবার পরে আমি যাকোবকে হত্যা করব।”
42 রিবিকা জানলেন যে এষৌ যাকোবকে হত্যা করার কথা ভাবছে। তিনি যাকোবকে ডেকে পাঠালেন। যাকোবকে তিনি বললেন, “শোন, তোমার ভাই এষৌ তোমায় হত্যা করার কথা ভাবছে। 43 তাই আমি যা বলি তা-ই করো। আমার ভাই লাবন বাস করে হারণে। তার কাছে গিয়ে তুমি লুকিয়ে থাকো। 44 তার কাছে তুমি কিছুদিন থাকো যতদিন না তোমার ভাইয়ের রাগ পড়ে। 45 কিছুদিন পরে তোমার ভাই, তুমি তার প্রতি কি করেছ না করেছ সব ভুলে যাবে। তখন আমি তোমায় ফিরিয়ে আনার জন্যে একটি ভৃত্য পাঠাব। আমি একই দিনে আমার দু পুত্রকে হারাতে চাই না।”
46 তারপর রিবিকা ইস্হাককে বললেন, “তোমার পুত্র এষৌ হিত্তীয়দের কন্যাকে বিয়ে করেছে। এ আমার মোটে ভাল লাগে নি। কেননা তারা আমাদের আপনজন নয়। যাকোবও যদি ঐ মেয়েদের কাউকে বিয়ে করে তাহলে আমি নির্ঘাত মারা যাব।”
28 ইস্হাক যাকোবকে ডেকে পাঠালেন এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন। তারপর ইস্হাক যাকোবকে একটি আজ্ঞা করলেন। তিনি বললেন, “তুমি কখনও কনানের মেয়ে বিয়ে করবে না। 2 তাই এই জায়গা ছেড়ে পদ্দন্-অরামে চলে যাও। তোমার দাদামশায় বথূয়েলের কাছে যাও। তোমার মামা লাবনের কন্যাদের কোন একজনকে বিয়ে করো। 3 প্রার্থনা করি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করবেন এবং তোমায় বহু সন্তান-সন্ততি দেবেন। তুমি যাতে এক মহান জাতির জনক হও তার জন্য আমি প্রার্থনা করি। 4 যেভাবে ঈশ্বর অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন সেভাবে তিনি যেন তোমায় ও তোমার সন্তান-সন্ততিকে আশীর্বাদ করেন-এই প্রার্থনা করি এবং আমি প্রার্থনা করি যে যে দেশে তুমি বাস করবে সেই দেশ তোমার হবে। ঈশ্বর এই দেশ অব্রাহামকে দিয়েছিলেন।”
5 তখন ইস্হাক যাকোবকে পদ্দন্-অরাম নামক স্থানে পাঠালেন। যাকোব গেল রিবিকার ভাই লাবনের কাছে। বথুয়েল লাবন ও রিবিকার জনক এবং যাকোব ও এষৌর মা হলেন রিবিকা।
6 এষৌ জানতে পারল যে তার পিতা ইস্হাক যাকোবকে আশীর্বাদ করেছেন। এষৌ জানল যে ইস্হাক যাকোবকে পদ্দন-অরামে পাঠিয়েছেন সেখানে বিয়ে করার জন্যে। ইস্হাক যে যাকোবকে কনানের মেয়ে বিয়ে না করার আদেশ দিয়েছেন সে কথাও এষৌ জানল। 7 এষৌ জানল যে যাকোব পিতামাতাকে মেনে চলেছে এবং পদ্দন্-অরামে গেছে। 8 এসবের থেকে এষৌ বুঝল যে তাদের পিতা ইস্হাক চাইতেন না যে পুত্ররা কেউ কনানের মেয়েদের বিয়ে করে। 9 এষৌর তখনই দুজন স্ত্রী ছিল। কিন্তু সে ইশ্মায়েলের কাছে গিয়ে আরও একটি বিয়ে করল। এবার সে ইশ্মায়েলের কন্যা মহলত্কে বিয়ে করল। অব্রাহামের আর এক পুত্র ইশ্মায়েল। মহলত্ নবায়োতের বোন।
ঈশ্বরের গৃহ বৈথেল
10 যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে হারণে গেল। 11 হারণে যাওয়ার পথে সূর্যাস্ত হল। তখন যাকোব রাত কাটাবার জন্য একটা জায়গায় গেল। সেখানে একটা পাথর দেখতে পেয়ে সে তার ওপরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল। 12 ঘুমের মধ্যে যাকোব একটা স্বপ্ন দেখল। সে দেখল, মাটি থেকে একটা সিঁড়ি গেছে স্বর্গে। যাকোব দেখল যে ঈশ্বরের দূতরা ঐ সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করছে। আর যাকোব দেখল যে প্রভু সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন। 13 প্রভু বললেন, “আমিই প্রভু, তোমার পিতামহ অব্রাহামের ঈশ্বর। আমি ইস্হাকের ঈশ্বর। যে জমিতে তুমি এখন শুয়ে আছ তা আমি তোমাকে দেব। এই জমি আমি তোমাকে এবং তোমার বংশকে দেব। 14 তোমার বহু সংখ্যক উত্তরপুরুষ হবে। তারা পৃথিবীর ধূলোর মতো অসংখ্য হবে। তারা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে। পৃথিবীর সব জাতিরা তোমার এবং তোমার উত্তরপুরুষদের মাধ্যমে আশীর্বাদ পাবে।
15 “আমি তোমার সঙ্গে আছি। তুমি যে কোন জায়গায় যাও না কেন আমি তোমাকে রক্ষা করব এবং এই দেশে আবার ফিরিয়ে আনব। আমি তোমার কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছি তা পূর্ণ না করা পর্যন্ত আমি তোমায় ত্যাগ করব না।”
16 যাকোব ঘুম থেকে উঠে বলল, “আমি জানি প্রভু এই জায়গায় রয়েছেন। কিন্তু আমি না ঘুমানো পর্যন্ত জানতাম না যে তিনি এখানে রয়েছেন।”
17 যাকোব ভয় পেল। সে বলল, “এ এক মহান জায়গা। এই হল ঈশ্বরের গৃহ। এই হল স্বর্গের দ্বার।”
18 যাকোব খুব ভোরে উঠে পড়ল। যে পাথরে মাথা রেখে শুয়েছিল তা দাঁড় করিয়ে স্থাপন করল। তারপর সে সেই পাথরের উপর তেল ঢালল। এইভাবে সে সেই পাথরকে ঈশ্বরের স্মরনার্থে স্মৃতি চিহ্নস্বরূপ করল। 19 সেই জায়গার নাম ছিল লুস কিন্তু যাকোব তার নাম বৈথেল রাখল।
20 এরপর যাকোব এক প্রতিজ্ঞা করে বলল, “যদি ঈশ্বর আমার সহায় থাকেন, যদি তিনি আমাকে এ যাত্রায় রক্ষা করেন, যদি তিনি আমার খাদ্য ও পরণের কাপড় যোগান, 21 আর যদি আমি শান্তিতে আমার পিতার গৃহে ফিরতে পারি, যদি ঈশ্বর এই সমস্ত কিছুই সাধন করেন তাহলে প্রভুই আমার ঈশ্বর হবেন। 22 এই পাথর আমি স্মৃতিস্তম্ভ রূপে স্থাপন করছি। এটা প্রমাণ করবে যে এ জায়গা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এক পবিত্র জায়গা এবং ঈশ্বর আমাকে যা কিছু দেবেন তার দশ ভাগের এক ভাগ অংশ আমি ঈশ্বরকে দেব।”
যীশুকে অনুসরণ
(লূক 9:57-62)
18 যীশু যখন দেখলেন যে তাঁর চারপাশে অনেক লোক জড়ো হয়েছে, তখন হ্রদের ওপারে যাওয়ার জন্য অনুগামীদের আদেশ দিলেন। 19 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক তাঁর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আপনি যেখানে যাবেন আমিও সেখানে যাব।”
20 তখন যীশু তাকে বললেন, “শিয়ালের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখীদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।”
21 তাঁর অনুগামীদের মধ্যে আর একজন বললেন, “প্রভু আগে আমার বাবাকে কবর দিয়ে আসার অনুমতি দিন, তারপর আমি আপনাকে অনুসরণ করব।”
22 কিন্তু যীশু তাকে বললেন, “তুমি আমার সঙ্গে এস, যারা মৃত তারাই মৃতদের কবর দেবে।”
যীশু ঝড় থামালেন
(মার্ক 4:35-41; লূক 8:22-25)
23 এরপর যীশু একটা নৌকাতে উঠলেন আর তাঁর শিষ্যরা তাঁর সঙ্গে গেলেন। 24 সেই হ্রদের মধ্যে হঠাৎ ভীষণ ঝড় উঠল, তাতে নৌকার উপর ঢেউ আছড়ে পড়তে লাগল। যীশু তখন ঘুমোচ্ছিলেন। 25 তাই শিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর ঘুম ভাঙিয়ে বললেন, “প্রভু বাঁচান! আমরা যে ডুবে মরলাম।”
26 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “হে অল্প বিশ্বাসীর দল! কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ?” তারপর তিনি উঠে ঝোড়ো বাতাস ও হ্রদের ঢেউকে ধমক দিলেন, তখন সব কিছু শান্ত হল।
27 এতে শিষ্যরা আশ্চর্য হয়ে বললেন, “ইনি কিরকম লোক? এঁর কথা এমন কি বাতাস ও সাগরও শোনে!”
যীশু দুজন লোকের ভূত ছাড়ালেন
(মার্ক 5:1-20; লূক 8:26-39)
28 যীশু যখন হ্রদের অপর পারে গাদারীয়দের দেশে এলেন সেই সময় ভূতে পাওয়া দুজন লোক কবর থেকে বেরিয়ে তাঁর সামনে এল। তারা এমন ভয়ঙ্কর ছিল যে কোন মানুষ সেই পথ দিয়ে চলতে পারত না। 29 তারা চিৎকার করে বলল, “হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনি আমাদের নিয়ে কি করতে চান? নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কি আপনি আমাদের নির্যাতন করতে এসেছেন?”
30 সেখান থেকে কিছু দূরে এক পাল শুয়োর চরছিল। 31 তখন ভূতেরা যীশুকে অনুনয় করে বলল, “আপনি যদি আমাদের তাড়িয়েই দেবেন তবে ঐ শুয়োর পালের মধ্যে ঢুকতে হুকুম দিন।”
32 যীশু তাদের বললেন, “তাই যাও!” তখন তারা সেই লোকদের মধ্যে থেকে বার হয়ে এসে সেই শুয়োরগুলির মধ্যে গিয়ে ঢুকল; তাতে সেই শুয়োরের পাল ঢালু পাড় দিয়ে জোরে দৌড়াতে দৌড়াতে হ্রদের জলে গিয়ে ডূবে মরল। 33 যারা সেই পাল চরাচ্ছিল, তারা দৌড়ে পালাল। তারা নগরের মধ্যে গিয়ে সব খবর জানাল। বিশেষ করে সেই ভূতে পাওয়া লোকদের বিষয়ে বলল। 34 তখন নগরের সব লোক যীশুকে দেখার জন্য বার হয়ে এল। তারা যীশুর দেখা পেয়ে তাঁকে অনুনয় করে বলল তিনি যেন তাদের অঞ্চল ছেড়ে চলে যান।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International