Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 4-6

প্রথম পরিবার

আদম ও তার স্ত্রী হবার মধ্যে যৌন সম্পর্ক হল। হবা একটি শিশুর জন্ম দিল। শিশুটির নাম রাখা হল কয়িন। হবা বলল, “প্রভুর সহায়তায় আমি একটি মানুষের রূপ দিয়েছি।”

পরে সে আর একটি শিশু প্রসব করল। এই শিশুটি হল কয়িনের ভাই হেবল। হেবল হল মেষপালক আর কয়িন হল কৃষক।

প্রথম খুন

3-4 ফসল কাটার সময় প্রভুর জন্যে কয়িন কিছু উপহার নিয়ে এল। কয়িন ক্ষেতে যা ফলিয়েছিল তার থেকে কিছু ফসল নিয়ে এল। আর হেবল প্রভুর জন্য তার মেষপাল থেকে বাছাই করা সেরা মেষগুলোর সেরা অংশ নিয়ে এল।[a]

প্রভু হেবল ও তার উপহার গ্রহণ করলেন, কিন্তু প্রভু কয়িন ও তার উপহার প্রত্যাখ্যান করলেন। এতে কয়িনের ভীষণ দুঃখ আর রাগ হল। প্রভু কয়িনকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি রাগ করছ কেন? তোমার মুখ বিষন্ন কেন? তুমি যদি ভাল কাজ কর, তখন আমি তোমায় গ্রহণ করব। কিন্তু যদি অন্যায় কাজ করো সে পাপ থাকবে তোমার জীবনে। তোমার পাপ তোমাকে আয়ত্তে রাখতে চায়, কিন্তু তোমাকেই সেই পাপকে আয়ত্তে রাখতে হবে।”[b]

কয়িন তার ভাই হেবলকে বলল, “চলো, মাঠে যাওয়া যাক।” তখন কয়িন আর হেবল বাইরে মাঠে গেল। তখন কয়িন তার ভাই হেবলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে হত্যা করল।

পরে প্রভু কয়িনকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার ভাই হেবল কোথায়?”

কয়িন বলল, “আমি জানি না। ভাইয়ের উপর নজরদারি করা কি আমার কাজ?”

10-11 তখন প্রভু বললেন, “তুমি কি করেছ? তোমার ভাইকে তুমি হত্যা করেছ? তার রক্ত মাটির নীচে থেকে আমার উদ্দেশ্যে চিৎকার করছে। তুমি তোমার ভাইকে হত্যা করেছ এবং তোমার হাত থেকে তার রক্ত নেওয়ার জন্যে পৃথিবী বিদীর্ণ হয়েছে। তাই এখন, আমি এই ভূমিকে অভিশাপ দেব। 12 অতীতে, তুমি গাছপালা লাগিয়েছ এবং তোমার গাছপালার ভালই বাড়বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু এখন তুমি গাছপালা লাগাবে এবং মাটি তোমার গাছপালা বাড়তে আর সাহায্য করবে না। এই পৃথিবীতে তোমার কোনও বাড়ী থাকবে না, তুমি এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে ঘুরে বেড়াবে।”

13 তখন কয়িন বলল, “এই শাস্তি আমার পক্ষে খুব বেশী! 14 দেখ, তুমি আমায় নির্বাসনে যেতে বাধ্য করছ। আমি তোমার কাছেও আসতে পারব না, তোমার সঙ্গে আর আমার দেখাও হবে না। আমার কোনও ঘরবাড়ী থাকবে না। আমি পৃথিবী জুড়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে বেড়াতে বাধ্য হব এবং আমায় যে দেখবে সেই হত্যা করবে।”

15 তখন প্রভু কয়িনকে বললেন, “না, আমি তা ঘটতে দেব না। তোমায় যদি কেউ হত্যা করে তাহলে তাকে আরও বেশী শাস্তি দেব।” তখন প্রভু কয়িনের গায়ে একটা চিহ্ন দিলেন যাতে কেউ তাকে হত্যা না করে।

কয়িনের পরিবার

16 কয়িন প্রভুর কাছ থেকে চলে এল এবং এদনের পূর্বদিকে নোদ নামক এক দেশে বাস করতে লাগল।

17 কয়িনের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ফলে তার স্ত্রী একটি পুত্রের জন্ম দিল। তার নাম রাখা হল হনোক। কয়িন একটি নগর পত্তন করে তার নামও পুত্রের নামে রাখল হনোক।

18 হনোকের ইরদ নামে একটি পুত্র হল। ইরদের পুত্রের নাম মহূয়ায়েল। আর তার পুত্রের নাম মথুশায়েল। আর তার পুত্রের নাম লেমক।

19 লেমকের দুজন স্ত্রী ছিল। একজনের নাম আদা, আর একজনের নাম সিল্লা। 20 আদার গর্ভে জন্ম হল যাবলের। যারা তাঁবুতে বাস করে এবং পশুপালন করে সেই জাতির জনক হল যুবল। 21 আদার অন্য পুত্রের নাম যুবল। তার সন্তান-সন্ততি থেকে যে জাতির সৃষ্টি হল তারা বীণা ও বাঁশি বাজায়। 22 লেমকের অন্য স্ত্রী সিল্লা এক পুত্রের ও এক কন্যার জন্ম দিল। পুত্রের নাম তুবল কয়িন আর কন্যার নাম নয়মা। তুবল কয়িনের সন্তান-সন্ততি পিতল ও লোহার কাজে দক্ষ।

23 লেমক তার দুই স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলল,

“আদা আর সিল্লা, এদিকে কান দাও।
    লেমকের স্ত্রীরা, আমার কথা শোনো!
একটা লোক আমায় মেরেছিল, তাই তাকে আমি হত্যা করেছি।
    একজন তরুণ আমায় আঘাত করেছিল, তার বদলে আমি তাকে হত্যা করেছি।
24 কয়িনকে হত্যার শাস্তি ছিল সাত গুণ,
    লেমককে হত্যার শাস্তি সাতাত্তর গুণ বেশী!”

আদম ও হবার নতুন পুত্র লাভ

25 আদমের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ফলে হবা আর একটি পুত্রের জন্ম দিল। তারা তার নাম রাখল শেথ। হবা বলল, “ঈশ্বর আমায় আর একটি পুত্র দিয়েছেন। কয়িন হেবলকে মেরে ফেলল, কিন্তু আমার এখন শেথ আছে।” 26 শেথেরও একটি পুত্র হল। সে তার নাম রাখল ইনোশ। সেই সময় লোকেরা প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে শুরু করল।[c]

আদম পরিবারের ইতিহাস

এই বই হল আদম পরিবারের বিষয় নিয়ে। ঈশ্বর নিজের ছাঁচে মানুষকে সৃষ্টি করেছিলেন। ঈশ্বর মানুষকে পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করেছিলেন। এবং সেই সৃষ্টির দিনে ঈশ্বর আশীর্বাদ করে তাদের নাম দিলেন “আদম।”

আদমের যখন 130 বছর বয়স তখন তার আর একটি পুত্র হল। পুত্রটিকে দেখতে হুবহু আদমের মতো। আদম তার নাম রাখলেন শেথ। শেথের জন্মের পর 800 বছর আদম বেঁচেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে আদমের আরও পুত্রকন্যা হল। সুতরাং আদম মোট 930 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হল।

শেথের যখন 105 বছর বয়স তখন তাঁর একটি পুত্র হয়। তার নাম রাখা হয় ইনোশ। ইনোশের জন্মের পরে শেথ 807 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে শেথের আরও পুত্রকন্যা হয়। সুতরাং শেথ বেঁচেছিলেন মোট 912 বছর। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

ইনোশের যখন 90 বছর বয়স তখন তাঁর কৈনন নামে একটি পুত্র হয়। 10 কৈননের জন্মের পর ইনোশ 815 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 11 সুতরাং ইনোশ মোট 905 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

12 কৈননের 70 বছর বয়সে তাঁর মহললেল নামে একটি পুত্র হয়। 13 মহললেলের জন্মের পর কৈনন 840 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে কৈননের আরও পুত্রকন্যা হয়। 14 সুতরাং কৈনন মোট 910 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

15 মহললেলের যখন 65 বছর তখন তাঁর যেরদ নামে একটি পুত্র হয়। 16 যেরদের জন্মের পর মহললেল 830 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 17 সুতরাং মহললেল মোট 895 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

18 যেরদের যখন 162 বছর বয়স তখন তাঁর হনোক নামে একটি পুত্র হয়। 19 হনোকের জন্মের পর যেরদ 800 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 20 সুতরাং যেরদ মোট 962 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

21 হনোকের যখন 65 বছর বয়স তখন মথূশেলহ নামে তাঁর একটি পুত্র হয়। 22 মথূশেলহর জন্মের পর হনোক আরও 300 বছর ঈশ্বরের সঙ্গে পদচারণা করেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 23 সুতরাং হনোক মোট 365 বছর বেঁচেছিলেন। 24 একদিন হনোক ঈশ্বরের সঙ্গে পদচারণা করতে করতে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। ঈশ্বর তাঁকে নিয়ে নিলেন।

25 মথূশেলহর যখন 187 বছর বয়স তখন তাঁর লেমক নামে একটি পুত্র হয়। 26 লেমকের জন্মের পর মথূশেলহ 782 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 27 সুতরাং মথূশেলহ মোট 969 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

28 লেমকের যখন 182 বছর বয়স তখন তাঁর একটি পুত্র হল। 29 লেমক পুত্রের নাম রাখলেন নোহ। তিনি বললেন, “ঈশ্বর ভূমিকে অভিশাপ দিয়েছেন বলে কৃষকরূপে আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু নোহ আমাদের বিশ্রাম দেবে।”

30 নোহের জন্মের পর লেমক 595 বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়। 31 সুতরাং লেমক মোট 777 বছর বেঁচেছিলেন। তারপর তাঁর মৃত্যু হয়।

32 নোহর 500 বছর বয়সে শেম, হাম এবং যেফৎ নামে তিনটি পুত্র হয়।

লোকেরা মন্দ হলো

1-4 পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা ক্রমশঃ বেড়ে চলল। অনেকের অনেক কন্যা হল। ঈশ্বরের পুত্ররা দেখল যে তারা সুন্দরী। সুতরাং ঈশ্বরের পুত্ররা যার যাকে পছন্দ সে তাকে বিয়ে করল। এই নারীরা সন্তানের জন্ম দিল।

তখন প্রভু বললেন, “মানুষ নেহাতই রক্তমাংসের জীব মাত্র। ওদের দ্বারা আমি আমার আত্মাকে চিরকাল পীড়িত হতে দেব না। আমি ওদের 120 বছর করে আয়ু দেব।”

সেই সময় এবং পরবর্তীকালে পৃথিবীতে নেফিলিম জাতীয় মানুষরা বাস করত। প্রাচীনকাল থেকেই নেফিলিমরা মহাবীররূপে বিখ্যাত ছিল।

প্রভু দেখলেন যে পৃথিবীতে লোকে শুধু মন্দ কাজই করছে। তিনি দেখলেন যে লোক সারাক্ষণ মন্দ জিনিসের কথাই চিন্তা করছে। পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করার জন্যে প্রভুর অনুশোচনা হল এবং তাঁর হৃদয় বেদনায় পূর্ণ হল। তাই তিনি বললেন, “পৃথিবীতে যত মানুষ সৃষ্টি করেছি সবাইকে আমি ধ্বংস করব। প্রত্যেক মানুষ, প্রত্যেক জানোয়ার এবং পৃথিবীর উপরে যা কিছু চলে ফিরে বেড়ায় সব কিছুকে আমি ধ্বংস করব। বাতাসে যত পাখী ওড়ে সেগুলোকেও আমি ধ্বংস করব। কেন? কারণ এই সবকিছু সৃষ্টি করেছি বলে আমি দুঃখিত।”

পৃথিবীতে শুধু একজন মানুষের প্রতি প্রভু সন্তুষ্ট ছিলেন, সে হল নোহ।

নোহ ও জলপ্লাবন

এই হল নোহের পরিবারের বৃত্তান্ত। নোহ তাঁর প্রজন্মের একজন ভাল ও সৎ মানুষ ছিলেন এবং তিনি সর্বদা ঈশ্বরকে অনুসরণ করতেন। 10 নোহের তিন পুত্র ছিল: শেম, হাম আর যেফৎ।

11-12 ঈশ্বর নীচে পৃথিবীর দিকে দৃষ্টিপাত করলেন এবং দেখলেন যে মানুষ তা ধ্বংস করেছে। সর্বত্র হিংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ। মানুষ দুষ্ট এবং নিষ্ঠুর হয়ে গেছে এবং নিজেদের জীবন নষ্ট করেছে।

13 তাই ঈশ্বর নোহকে বললেন, “সমস্ত লোক ক্রোধ আর হিংসা দিয়ে পৃথিবী পরিপূর্ণ করেছে। তাই আমি সমস্ত জীবন্ত প্রাণীদের ধ্বংস করব। পৃথিবী থেকে সব কিছু মুছে ফেলব। 14 গোফর কাঠ দিয়ে একটা নৌকা বানাও। নৌকোর ভেতরে অনেকগুলি কক্ষ তৈরী করবে এবং কাঠ সংরক্ষণের জন্য বাইরে আলকাতরা লাগাবে।

15 “নৌকোটা 300 হাত লম্বা, 50 হাত চওড়া আর 30 হাত উঁচু করে তৈরী করবে। 16 ছাদের থেকে প্রায় 18 ইঞ্চি নীচে একটা জানালা তৈরী করবে। নৌকোর পাশের দিকে একটা দরজা তৈরী করবে। উপরের তলা, মাঝের তলা আর নীচের তলা—এইভাবে নৌকোর তিনটে তলা থাকবে।

17 “এবার যা বলছি, মন দিয়ে শোন। পৃথিবীতে আমি এক মহাপ্লাবন ঘটাবো। আকাশের নীচের যত জীবন্ত প্রাণী আছে, সব ধ্বংস করবো। পৃথিবীর সমস্ত কিছুর মৃত্যু হবে। 18 কিন্তু তোমার সঙ্গে আমার একটা বিশেষ চুক্তি হবে। তুমি, তোমার স্ত্রী, তোমার পুত্ররা, তোমার পুত্রবধূরা—তোমরা সবাই ঐ নৌকোতে উঠবে। 19 আর পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর থেকে তুমি একটি করে পুরুষ আর একটি করে স্ত্রী বেছে নেবে। তুমি অবশ্যই তাদের নৌকোতে তুলে নেবে এবং তোমাদের সঙ্গে তাদেরও বাঁচিয়ে রাখবে। 20 সমস্ত রকম পাখীর এক জোড়া, সমস্ত রকম পশুর এক জোড়া এবং মাটিতে বুকে হেঁটে চলে সেরকম সব প্রাণীর এক-এক জোড়া খুঁজে বার করো। পৃথিবীতে যত রকম জীবজন্তু আছে সে সব গুলোর এক জোড়া স্ত্রী পুরুষ জোগাড় করে তোমার নৌকোতে তাদের বাঁচিয়ে রাখবে। 21 তোমাদের জন্য আর অন্যান্য পশুপাখীর জন্য সমস্ত রকম খাবারও অবশ্যই জোগাড় করে রাখবে।”

22 এই সমস্ত কিছুই নোহ করলেন। ঈশ্বর যেমন আজ্ঞা দিয়েছিলেন, নোহ সবকিছু ঠিক সেইভাবেই পালন করলেন।

মথি 2

পণ্ডিতরা যীশুকে দেখতে আসলেন

হেরোদ যখন রাজা ছিলেন, সেই সময় যিহূদিয়ার বৈৎলেহমে যীশুর জন্ম হয়। সেই সময় প্রাচ্য থেকে কয়েকজন পণ্ডিত জেরুশালেমে এসে যীশুর খোঁজ করতে লাগলেন। তাঁরা এসে জিজ্ঞেস করলেন, “ইহুদীদের যে নতুন রাজা জন্মেছেন তিনি কোথায়? কারণ পূর্ব দিকে আকাশে আমরা তাঁর তারা দেখে তাঁকে প্রণাম জানাতে এসেছি।”

রাজা হেরোদ একথা শুনে খুব বিচলিত হলেন এবং তাঁর সঙ্গে জেরুশালেমের সব লোক বিচলিত হল। তখন তিনি ইহুদীদের মধ্যে যাঁরা প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, “মশীহ (খ্রীষ্ট) কোথায় জন্মগ্রহণ করবেন?” তাঁরা হেরোদকে বললেন, “যিহূদিয়া প্রদেশের বৈৎলেহমে, কারণ ভাববাদী সেরকমই লিখে গেছেন:

‘আর তুমি যিহূদা প্রদেশের বৈৎলেহম,
    তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের চোখে কোন অংশে নগন্য নও,
কারণ তোমার মধ্য থেকে একজন শাসনকর্তা উঠবেন
    যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবেন।’”(A)

তখন হেরোদ সেই পণ্ডিতদের সঙ্গে একান্তে দেখা করার জন্য তাঁদের ডেকে পাঠালেন। তিনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিলেন ঠিক কোন সময় তারাটা দেখা গিয়েছিল। এরপর হেরোদ তাদের বৈৎলেহমে পাঠিয়ে দিলেন আর বললেন, “দেখ, তোমরা সেখানে গিয়ে ভাল করে সেই শিশুর খোঁজ কর; আর খোঁজ পেলে, আমাকে জানিয়ে যেও, যেন আমিও সেখানে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি।”

তাঁরা রাজার কথা শুনে রওনা দিলেন। তাঁরা পূর্ব দিকে আকাশে যে তারাটা উঠতে দেখেছিলেন, সেটা তাঁদের আগে আগে চলল এবং শিশুটি যেখানে ছিলেন তার ওপরে থামল। 10 তাঁরা সেই তারাটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হলেন।

11 পরে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে শিশুটি ও তাঁর মা মরিয়মকে দেখতে পেয়ে তাঁরা মাথা নত করে তাঁকে প্রণাম করলেন ও তাঁর উপাসনা করলেন। তারপর তাঁদের উপহার সামগ্রী খুলে বের করে তাঁকে সোনা, সুগন্ধি গুগ‌্গুল ও সুগন্ধি নির্যাস উপহার দিলেন। 12 এরপর ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁদের সাবধান করে দিলেন যেন তাঁরা হেরোদের কাছে ফিরে না যান, তাই তাঁরা অন্য পথে নিজেদের দেশে ফিরে গেলেন।

যীশুকে নিয়ে পিতামাতার মিশরে গমন

13 তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফকে দেখা দিয়ে বললেন, “ওঠো! শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও। যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে।”

14 তখন যোষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে রাতে মিশরে রওনা হলেন। 15 আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন। এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, “আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম।”(B)

হেরোদ বৈৎলেহমের শিশু পুত্রদের হত্যা করলেন

16 হেরোদ যখন দেখলেন যে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিয়েছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে যে সময়ের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো দু’বছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈৎলেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন। 17 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর যে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল:

18 “রামায় একটা শব্দ শোনা গেল,
    কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার,
রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন।
    তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই।”(C)

মিশর থেকে যোষেফ ও মরিয়মের প্রত্যাবর্তন

19 হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে যোষেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন, 20 “ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যারা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে।”

21 তখন যোষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন। 22 কিন্তু যোষেফ যখন শুনলেন যে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হয়েছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন। পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল, 23 তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরৎ নগরে বসবাস করতে লাগলেন। এই রকম ঘটল যেন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়[a] বলে আখ্যাত হলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International