Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
সখরিয় 5-8

উড়ন্ত হাতে লেখা পুঁথি

আমি আবার চোখ তুললাম এবং দেখলাম যে একটা হাতে লেখা পুঁথি বাতাসে উড়ছে। দেবদূতটি আমাকে বললেন, “তুমি কি দেখছ?”

আমি বললাম, “একটি গোটানো হাতে লেখা পুঁথি উড়ছে, যেটা 20 হাত লম্বা এবং 10 হাত চওড়া।”

তিনি আমায় বললেন, “এই গোটানো হাতে লেখা পুঁথিতে অভিশাপ লেখা রয়েছে। হাতে লেখা পুঁথির একপাশে চোরদের জন্য অভিশাপ লেখা এবং অন্য পাশে সেইসব লোকদের জন্য অভিশাপ লেখা যারা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি করে। প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন: ‘আমি চোরদের বাড়ী এবং যারা আমার নাম ব্যবহার করে মিথ্যা শপথ করে তাদের বাড়ী এই পুঁথি পাঠাব। এই পুঁথি সেই বাড়ীগুলিতে থাকবে এবং তাদের ধ্বংস করবে। এমনকি পাথর ও কাঠের পাত্রগুলিও এটি ধ্বংস করবে।’”

স্ত্রীলোক এবং ঝুড়ি

যে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি বাইরে গেলেন এবং বললেন, “দেখ, কি আসছে?”

আমি বললাম, “আমি জানি না, এটা কি?”

তিনি বললেন, “ওটা মাপার ঝুড়ি।” তিনি আরও বললেন, “এই দেশের লোকের পাপ মাপার জন্যই এই ঝুড়ি।”

ঝুড়ির সীসার তৈরী ঢাকনাটা খোলা হলে দেখা গেল তার মধ্যে এক স্ত্রীলোক। দেবদূতটি আমায় বললেন, “ঐ স্ত্রীলোকটি অধর্মকে প্রতিনিধিত্ব করে।” তখন দেবদূতটি স্ত্রীলোকটিকে ঠেলে ঝুড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে তার ঢাকনাটি বন্ধ করে দিলেন। তখন আমি ওপরের দিকে তাকিয়ে সারস পাখীর মত[a] ডানা সমেত দুই জন স্ত্রীলোককে দেখতে পেলাম। তারা নীচে উড়ে এল এবং তাদের পাখার বাতাসের সাহায্যে সেই ঝুড়িটাকে তুলে নিল। তারপর তারা ঝুড়িটাকে বহন করে বাতাসের মধ্যে দিয়ে উড়ে গেল। 10 তখন আমার সাথে আলাপচারী দেবদূতটিকে আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “ঝুড়িটিকে তারা কোথায় বয়ে নিয়ে যাচ্ছে?”

11 দেবদূতটি উত্তর দিলেন, “তারা শিনিয়র দেশে একটা বাড়ী তৈরী করবে এবং ঝুড়িটাকে তারা সেই বাড়ীর ভেতরে রাখবে।”

চার রথ

তারপর আমি আবার ওপরে তাকিয়ে দেখলাম চারটে রথ, তারা দুটি পিতলের পর্বতের মধ্য থেকে বার হয়ে আসছে। প্রথম রথটি টানছিল লাল রঙের ঘোড়া। দ্বিতীয় রথটিকে টানছিল কালো রঙের ঘোড়া। তৃতীয় রথটিকে টানছিল সাদা রঙের ঘোড়া আর লাল বিন্দু বিন্দু দাগওয়ালা ঘোড়াগুলি টানছিল চতুর্থ রথটিকে। যে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন তাঁকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, “মহাশয় এর অর্থ কি?”

দেবদূতটি বললেন, “এরা চারটি বাতাস, তারা পৃথিবীর প্রভুর কাছ থেকে সদ্য এসেছে। কালো ঘোড়াগুলি যাবে উত্তর দিকে, লাল ঘোড়াগুলি যাবে পূর্বে, সাদা ঘোড়াগুলি যাবে পশ্চিমে এবং লাল বিন্দু বিন্দু দাগ দেওয়া ঘোড়াগুলি যাবে দক্ষিণে।”

লাল বিন্দু খচিত ঘোড়ারা তাদের অংশে পৃথিবীতে যাবার জন্য ব্যগ্র হয়ে উঠল, তাই দেবদূত তাদের বললেন, “যাও তোমরা সারা পৃথিবী ঘুরে এসো।” তাই তারা পৃথিবীর চারদিক ঘুরতে গেল।

তখন প্রভু আমাকে চিৎকার করে বললেন, “দেখ, যে ঘোড়াগুলি উত্তরে গিয়েছিল, তারা তাদের কাজ শেষ করে ফিরে এসেছে। তারা আমার আত্মাকে শান্ত করেছে তাই আমি আর ক্রুদ্ধ নই!”

যাজক যিহোশূয়কে মুকুট পরানো হল

তখন আমি প্রভুর কাছ থেকে আরেকটি বার্তা পেলাম। তিনি বললেন, 10 “হিল‌্দয়, টোবিয় ও যিদায় বাবিলের বন্দী দশা থেকে ফিরে এসেছে। সেই লোকদের কাছ থেকে তুমি রূপো ও সোনা সংগ্রহ কর এবং সফনিয়ের পুত্র যোশিয়ের বাড়ী যাও। 11 সেই রূপো ও সোনা ব্যবহার করে একটি মুকুট তৈরী কর এবং যিহোষাদকের পুত্র, মহাযাজক যিহোশূয়কে মুকুট মণ্ডিত কর। তারপর যিহোশূয়কে এই বিষয়গুলি বল:

12 প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলি বলেন:

‘শাখা নামে এক মানুষ আছেন,
    তিনি শক্তিমান হয়ে উঠবেন,
    তিনি প্রভুর মন্দির গাঁথবেন।
13 তিনি প্রভুর মন্দির গাঁথবেন ও সম্মান গ্রহণ করবেন।
    তিনি সিংহাসনে বসে শাসন করবেন।
আর একজন যাজক তার সিংহাসনের পাশে দাঁড়াবে।
    এই দুই জন একসাথে শান্তিতে কাজ করবে।’

14 হিল‌্দয়, টোবিয়, যিদায় এবং সফনিয়ের পুত্র যোশিয়ের জন্য একটি স্মারক হিসেবে ঐ মুকুটটি তারা মন্দিরেই রাখবে।”

15 দূরদেশে বসবাসকারী লোকরাও এসে মন্দিরে নির্মাণ করবে। তখন তোমরা নিশ্চিতভাবে জানবে যে প্রভুই আমাকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। প্রভুর কথা অনুসারে কাজ করলে এই বিষয়গুলি ঘটবে।

প্রভু করুণা ও কৃপা চান

পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের চতুর্থ বছরের নবম মাসের চতুর্থ দিনে সখরিয় প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন। বৈথেলের লোকরা শরেৎসর, রেগম্মেলক ও তার লোকেদের প্রভুর কাছে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছিলেন। তারা সর্বশক্তিমান প্রভুর মন্দিরের যাজকগণের কাছে এবং ভাববাদীদের কাছে এলেন। ঐ লোকরা তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল: “অনেক বছর ধরে আমরা মন্দির ধ্বংস হয়ে যাবার দরুণ শোক করেছি। প্রত্যেক বছরের পঞ্চম মাসে আমরা উপবাসের জন্য বিশেষ সময় দিয়েছি। আমরা কি এই অনুশীলন চালিয়ে যাব?”

আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলাম: “এই দেশের যাজককে এবং অন্য লোকেদের বল: সত্তর বছর ধরে তোমরা পঞ্চম ও সপ্তম মাসে উপবাস করেছ। সেই উপবাস কি সত্যিই আমার জন্য? না! তা নয়। আর তোমরা যখন ভোজন পান করলে সেটাও কি আমার উদ্দেশ্যে করলে? তা নয়, বরং তোমাদেরই ভালোর জন্য। এই একই জিনিষ প্রদান করতে প্রভু তাঁর ভাববাদীদের ব্যবহার করেছিলেন। জেরুশালেম যখন উন্নত ও জনমানবে পূর্ণ ছিল তখনও তিনি এই কথাগুলি বলেছিলেন। যখন ঈশ্বর এই কথাগুলি বলেছিলেন তখন জেরুশালেমের আশেপাশের শহর নেগেভ এবং পশ্চিমের পাহাড়ের পাদদেশে লোকজন ছিল।”

সখরিয়ের কাছে প্রভুর বার্তা এই:
প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন:
“যা কিছু ঠিক এবং ন্যায়সঙ্গত তোমরা অবশ্যই তা করবে।
    তোমরা একে অপরের প্রতি অবশ্যই দয়ালু ও কৃপাপূর্ণ হবে।
10 বিধবা, দরিদ্র, বিদেশী
    ও অনাথদের ওপর উৎ‌পীড়ন কোরো না।
অপরের অমঙ্গল করবার চিন্তা কোরো না।”

11 কিন্তু সেইসব লোকেরা শুনতে অস্বীকার করত।
    তিনি যা চাইতেন তা করতে তারা অস্বীকার করত।
তারা কান বন্ধ করত বলে
    ঈশ্বরের কথা শুনতে পেতো না।
12 তারা ছিল একগুঁয়ে।
    প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর আত্মা দ্বারা
ভাববাদীদের মাধ্যমে লোকদের কাছে বার্তা পাঠাতেন।
    কিন্তু তারা শুনতো না।
    তাই সর্বশক্তিমান প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন।
13 সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন,
“আমি তাদের ডাকলে
    তারা উত্তর দিল না।
তাই এখন যদি তারা আমায় ডাকে,
    আমি তাদের উত্তর দেব না।
14 আমি তাদের বিরুদ্ধে জাতিগুলোকে ঝড়ের মত নিয়ে আসব।
    ঐসব জাতিদের তারা জানতও না।
তারা দেশটি অতিক্রম করে গেলে
    সেটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে।”

প্রভু জেরুশালেমকে আশীর্বাদ করার প্রতিশ্রুতি করলেন

সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা এল। প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “আমি সিয়োন পর্বতকে ভালোবাসি। আমি তাকে এতোই ভালোবাসি যে সে আমার প্রতি বিশ্বস্ত না হলে আমি তার ওপর খুব রেগে উঠলাম।” প্রভু বলেছেন, “আমি সিয়োনে ফিরে এসেছি। আমি জেরুশালেমে বাস করছি। জেরুশালেমকে বলা হবে বিশ্বস্ত শহর। প্রভুর পর্বতকে বলা হবে পবিত্র পর্বত।”

প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “প্রবীন ব্যক্তিদের আবার জেরুশালেমের রাস্তায় ঘাটে দেখা যাবে। দীর্ঘ জীবন লাভ করবে বলে লোকেদের হাঁটার জন্য লাঠির প্রয়োজন হবে। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের খেলাধূলার কোলাহলে রাস্তাগুলো ভরে থাকবে।” অবশিষ্ট যারা থাকবে তারা এটাকে বিস্ময়কর বলে গণ্য করবে! প্রভু সর্বশক্তিমান এ কথা বলেছেন!

প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “দেখ পূর্ব ও পশ্চিমের দেশগুলি হতে আমি আমার লোকেদের উদ্ধার করব। আমি তাদের এখানে ফিরিয়ে আনব, তারা জেরুশালেমে বাস করবে। তারা আমার লোক হবে এবং আমি তাদের বিশ্বস্ত ঈশ্বর হব।”

সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “শক্তিমান হও! সর্বশক্তিমান প্রভুর মন্দিরের প্রস্তর স্থাপন করবার সময় ভাববাদীরা এই বার্তা প্রচার করেছিলেন। আজও তোমরা সেই একই বার্তা শুনছ। 10 সেই সময়ের পূর্বে লোকদের মজুর বা গবাদি পশু ভাড়া করবার টাকা ছিল না। লোকদের পক্ষে ভ্রমণ বা যাতায়াত করাও নিরাপদ ছিল না। সংকট থেকে লোকে কোন সময়েই নিস্তার পেত না। আমি প্রতিটি লোককে অন্য লোকেদের বিরোধী করে তুলেছিলাম। 11 কিন্তু এখন সেইরকম নয়। অবশিষ্ট যারা রয়েছে তাদের জন্য সেরকম হবে না।” প্রভু সর্বশক্তিমান এইসব কথা বলেন।

12 “এই লোকরা শান্তিতে রোপণ করবে। দ্রাক্ষাও ফলানো হবে। দেশে ভাল ফসল হবে এবং জমি পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টি পাবে। আমি এইসব কিছুই আমার লোকেদের দেব। 13 অন্য জাতিগণ অভিশাপ দেবার জন্য ইস্রায়েল ও যিহূদার নাম উদাহরণস্বরূপ ব্যবহার করত। কিন্তু আমি ইস্রায়েল ও যিহূদাকে রক্ষা করব এবং তাদের নাম আশীর্বাদজনক হয়ে উঠবে। সুতরাং ভয় পেও না, শক্তিমান হও!”

14 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “তোমার পূর্বপুরুষরা আমায় ক্রুদ্ধ করেছিল, তাই আমি তাদের ধ্বংস করব স্থির করেছিলাম। আমি আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করিনি।” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন। 15 “এখন আমি আমার মন পরিবর্তন করেছি আর জেরুশালেম ও যিহূদার লোকদের মঙ্গল করবার বিষয় স্থির করেছি। সুতরাং ভয় পেও না। 16 কিন্তু তোমাদের অবশ্যই এগুলো করতে হবে: তোমার প্রতিবেশীকে সত্য কথা বলো। আদালতে লোকের বিচার করবার সময় এমন সিদ্ধান্ত নেবে যা সত্য, ঠিক এবং যা লোকেদের মধ্যে শান্তি আনে। 17 তোমার প্রতিবেশীকে আঘাত করার জন্য কোন পরিকল্পনা করো না। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি করো না! এইসব কাজ করে আনন্দ পেও না কারণ আমি এইসব জিনিষ ঘৃণা করি!” প্রভু এইসব কথা বলেছেন।

18 আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলাম। 19 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম মাসের বিশেষ দিনে তোমরা উপবাস করতে থাকো। সেইসব শোকের দিন আনন্দের দিনে পরিণত হবে। সেইসব দিন, আনন্দের হবে ও আশীর্বাদ ধন্য হয়ে উঠবে। সত্য ও শান্তিকে তোমাদের ভালোবাসা উচিৎ‌!”

20 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন,
“ভবিষ্যতে বহু শহর থেকে লোকেরা জেরুশালেমে আসবে।
21 বিভিন্ন শহরের লোকেরা একে অপরকে অভ্যর্থনা জানাবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলবে,
    ‘আমরা সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছে প্রার্থনা করতে ও তাঁর উপাসনা করতে যাচ্ছি।’
অন্যরা বলবে,
    ‘তোমাদের সঙ্গে আমরাও কি যোগদান করতে পারি?’”

22 অনেক লোক এবং অনেক বলবান জাতি জেরুশালেমে সর্বশক্তিমান প্রভুর উপাসনা করতে ও তাঁর অনুগ্রহের অন্বেষণ করতে আসবে। 23 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন, “সেই সময়, বিদেশ থেকে বিভিন্ন ভাষাভাষী দশজন বিদেশী একজন ইহুদীর কাছে এসে তার কাপড় টেনে ধরে বলবে, ‘আমরা শুনেছি যে ঈশ্বর আপনার সঙ্গে রয়েছেন। আমরা কি এসে আপনার সঙ্গে উপাসনা করতে পারি?’”

প্র.বা. 19

স্বর্গের লোকরা ঈশ্বরের প্রশংসা করল

19 এরপর আমি স্বর্গে এক বিশাল জনতার কলরব শুনলাম। সেই লোকরা বলছে:

“হাল্লিলুইয়া!
জয়, মহিমা ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই,
কারণ তাঁর বিচারসকল সত্য ও ন্যায়।
তিনি সেই মহান গণিকার বিচার নিষ্পন্ন করেছেন,
    যে তার যৌন পাপ দ্বারা পৃথিবীকে কলুষিত করত।
ঈশ্বরের দাসদের রক্তপাতের প্রতিশোধ নিতে ঈশ্বর সেই বেশ্যাকে শাস্তি দিয়েছেন।”

তারপর স্বর্গের সেই লোকেরা বলে উঠল:

“হাল্লিলুইয়া!
সেই বেশ্যা ভস্মীভূত হবে এবং যুগ যুগ ধরে তার ধোঁয়া উঠবে।”

এরপর সেই চব্বিশজন প্রাচীন ও চারজন প্রাণী সিংহাসনে যিনি বসেছিলেন, সেই ঈশ্বরের চরণে মাথা নত করে তাঁর উপাসনা করে বললেন:

“আমেন, হাল্লিলুইয়া!”

পরে সিংহাসন থেকে এক বাণী নির্গত হল, কে যেন বলে উঠল:

“হে আমার দাসরা, তোমরা যারা তাঁকে ভয় কর,
তোমরা ক্ষুদ্র কি মহান, তোমরা সকলে ঈশ্বরের প্রশংসা কর!”

পরে আমি বিরাট জনসমুদ্রের রব, প্রবল জলকল্লোল ও প্রচণ্ড মেঘগর্জনের মতো এই বাণী শুনলাম:

“হাল্লিলুইয়া!
    আমাদের প্রভু যিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর,
    তিনি রাজত্ব শুরু করেছেন।
এস, আমরা আনন্দ ও উল্লাস করি, আর তাঁর মহিমা কীর্তন করি,
কারণ মেষশাবকের বিবাহের দিন এল।
    তাঁর বধূও বিবাহের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছে।
তাকে পরিধান করতে দেওয়া হল
    শুচি শুভ্র উজ্জ্বল মসীনার বসন।”

(সেই মসীনার বসন হল ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের সত্কর্মের প্রতীক।)

এরপর তিনি আমায় বললেন, “তুমি এই কথা লেখ। ধন্য তারা, যারা মেষশাবকের বিবাহে নিমন্ত্রিত হয়েছে।” তারপর দূত আমায় বললেন, “এগুলি ঈশ্বরের সত্য বাক্য।”

10 আমি তাঁকে উপাসনা করার জন্য তাঁর চরণে মাথা নত করলাম। কিন্তু স্বর্গদূত আমায় বললেন, “আমার উপাসনা করো না! আমি তোমারই মত এবং তোমার যে ভাইরা যীশুর সাক্ষ্য ধরে রয়েছে তাদের মতো এক দাস। ঈশ্বরেরই উপাসনা কর, কারণ ভাববাদীর আত্মাই হল যীশুর সাক্ষ্য।”

শ্বেত অশ্বের চালক

11 এরপর আমি দেখলাম, স্বর্গ উন্মুক্ত, আর সেখানে সাদা একটা ঘোড়া দাঁড়িয়ে আছে। তার ওপর যিনি বসে আছেন, তাঁর নাম “বিশ্বস্ত ও সত্যময়” আর তিনি ন্যায়সিদ্ধ বিচার করেন ও যুদ্ধ করেন। 12 আগুনের শিখার মতো তাঁর চোখ, আর তাঁর মাথায় অনেকগুলি মুকুট আছে; সেই মুকুটগুলির উপর এমন এক নাম লেখা আছে, যার অর্থ তিনি ছাড়া অন্য আর কেউ জানে না। 13 রক্তে ডোবানো পোশাক তাঁর পরণে; তাঁর নাম ঈশ্বরের বাক্য। 14 স্বর্গের সেনাবাহিনী সাদা ঘোড়ায় চড়ে তাঁর পেছনে পেছনে চলেছিল। তাদের পরণে ছিল শুচিশুভ্র মসীনার পোশাক। 15 একটি ধারালো তরবারি তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে আসছিল, যা দিয়ে তিনি পৃথিবীর সমস্ত জাতিকে আঘাত করবেন। লৌহ যষ্টি হাতে জাতিবৃন্দের ওপর তিনি শাসন পরিচালনা করবেন। সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধের কুণ্ডে তিনি সব দ্রাক্ষা মাড়াই করবেন। 16 তাঁর পোশাকে ও উরুতে লেখা আছে এই নাম:

“রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু।”

17 পরে আমি দেখলাম, একজন স্বর্গদূত সূর্যের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি উঁচু আকাশ পথে যে সব পাখি উড়ে যাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্যে খুব জোরে চিৎকার করে বললেন: “এস, ঈশ্বর যে মহাভোজের আয়োজন করেছেন, তার জন্য এক জায়গায় জড়ো হও। 18 এক, রাজাদের, প্রধান সেনাপতিদের ও বীরপুরুষদের মাংস, ঘোড়া ও ঘোড়-সওয়ারদের মাংস, স্বাধীন অথবা ক্রীতদাস, ক্ষুদ্র অথবা মহান সকল মানুষের মাংস খেয়ে যাও।”

19 তখন আমি দেখলাম ঐ ঘোড়ার ওপর যিনি বসেছিলেন, তিনি ও তাঁর সৈন্যদের সঙ্গে সেই পশু ও পৃথিবীর রাজারা তাদের সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করার জন্য একত্র হল। 20 কিন্তু সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীকে ধরা হল। এই সেই ভণ্ড ভাববাদী, যে পশুর জন্য অলৌকিক কাজ করেছিল। এই অলৌকিক কাজের দ্বারা ভণ্ড ভাববাদী তাদের প্রতারণা করেছিল যাদের সেই পশুর চিহ্ন ছিল এবং যারা তার উপাসনা করেছিল। ভণ্ড ভাববাদী এবং পশুটিকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল। 21 যারা বাকী থাকল তারা সকলে সেই সাদা ঘোড়ার সওয়ারীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ধারালো তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়ল; আর সমস্ত পাখি তাদের মাংস খেয়ে তৃপ্ত হল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International