Old/New Testament
1 এই বইটিতে ইল্কোশীয় নহূমের দর্শন রয়েছে। নীনবী শহরের সম্বন্ধে এটা এক দুঃখজনক বার্তা।
নীনবীর ওপর প্রভু খুবই ক্রুদ্ধ
2 প্রভু হচ্ছেন ঈর্ষাপরায়ণ ঈশ্বর।
প্রভু দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেন।
এবং তিনি ভীষণ ক্রুদ্ধ হন।
প্রভু তাঁর শত্রুদের শাস্তি দেন,
এবং শত্রুদের ওপর তাঁর ক্রোধ বজায় থাকে।
3 প্রভু ধৈর্য্যশীল,
কিন্তু তিনি খুবই শক্তিশালী!
প্রভু দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দেবেন।
তিনি তাদের মুক্ত হয়ে চলে যেতে দেবেন না।
প্রভু খারাপ লোকদের শাস্তি দেবার জন্য আসছেন।
তিনি তাঁর ক্ষমতা দেখাবার জন্য ঘূর্নী হাওয়া এবং ঝড় ব্যবহার করবেন।
প্রভু মেঘমালার ওপর দিয়ে হাঁটেন!
4 প্রভু সমুদ্রের সঙ্গে রূঢ়ভাবে কথা বলবেন
এবং তা শুকিয়ে যাবে।
তিনি সমস্ত নদীগুলিকে শুকিয়ে দেবেন!
কর্মিল এবং বাশনের উর্বর জমিগুলি ধীরে ধীরে শুকনো এবং অনুর্বর হয়ে যাবে।
লিবানোনের ফুলগুলি শুকিয়ে ঝরে যাবে।
5 প্রভু আসবেন,
আর পর্বতগুলি ভয়ে আন্দোলিত হবে
এবং উপপর্বতগুলি গলে যাবে।
প্রভু আসবেন
এবং পৃথিবী ভয়ে কাঁপবে।
পৃথিবী এবং পৃথিবীস্থ
প্রত্যেকটি লোক ভয়ে কাঁপবে।
6 কোন লোকই প্রভুর ভয়ঙ্কর ক্রোধের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।
তাঁর ক্রোধের ভয়াবহতা কেউ সহ্য করতে পারবে না।
তাঁর ক্রোধ আগুনের মতো জ্বলবে।
যখন তিনি আসবেন তখন পাথরগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।
7 প্রভু মঙ্গলময়, সঙ্কটের সময় আশ্রয়ের জন্য তিনিই নিরাপদ স্থান।
যে সব লোক তাঁর ওপর আস্থা রাখে
তিনি তাদের যত্ন নেন।
8 কিন্তু তিনি সম্পূর্ণরূপে তাঁর শত্রুদের ধ্বংস করবেন।
বন্যার মত তিনি তাদের ধুয়ে দেবেন।
তিনি তাঁর শত্রুদের অন্ধকারে তাড়িয়ে দেবেন।
9 প্রভুর বিরূদ্ধে তোমরা কেন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করছ?
তিনি একেবারে ধ্বংস করে দেবেন,
তাই দ্বিতীয় বারের জন্য আর বিপদ আসবে না।
10 তোমরা একটি পাত্রের নীচে পুড়ছে
এমন একটি কাঁটাঝোপের মত সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হবে।
শুকনো আগাছাগুলি যেভাবে তাড়াতাড়ি আগুনে পুড়ে যায়,
সেই ভাবেই তোমরা খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস হবে।
11 অশূরীয়, একজন ব্যক্তি তোমার কাছ থেকে এসেছে।
সে প্রভুর বিরূদ্ধে অন্যায় ষড়যন্ত্র করেছিল এবং খারাপ উপদেশ দিয়েছিল।
12 ঈশ্বর যিহূদাকে এই কথাগুলি বলেছিলেন:
“অশূরীয়র লোকদের পুরো সামরিক শক্তি আছে।
তাদের বহু সৈন্য আছে
কিন্তু তাদের সবাইকে কেটে ফেলা হবে।
তারা সবাই শেষ হয়ে যাবে।
আমার লোকরা, আমি তোমাদের যন্ত্রণা দিচ্ছি,
কিন্তু আমি তোমাদের আর কষ্ট ভোগ করতে দেব না।
13 এখন আমি অশূরীয় ক্ষমতা থেকে তোমাদের সবাইকে মুক্তি দেবো।
আমি তোমাদের কাঁধ থেকে সেই যোয়াল সরিয়ে দেবো।
যে শৃঙ্খলগুলি তোমাদের ধরে রেখেছে সেগুলি আমি ছিঁড়ে ফেলব।”
14 হে অশূরের রাজা, প্রভু তোমার সম্বন্ধে এই আদেশ দিয়েছেন;
“তোমার নাম ধরে রাখবার জন্য একজন উত্তরপুরুষ তুমি পাবে না।
আমি তোমার মন্দিরে খোদাই করা মূর্তি
এবং ধাতব মূর্তিগুলি ধ্বংস করে দেবো।
আমি তোমার জন্য কবর তৈরী করছি।
কারণ শীঘ্রই তোমার শেষ সময় আসছে।”
15 যিহূদা, দেখো ওদিকে দেখো!
পর্বতগুলোর ওপর দিয়ে একজন আসছে সুসমাচার নিয়ে একজন বার্তাবাহক আসছে,
সে বলছে, ওখানে শান্তি রয়েছে!
যিহূদা তুমি তোমার বিশেষ উৎসবের দিনগুলো পালন করো
যিহূদা যে কাজগুলি তুমি করবে বলে প্রতিশ্রুতি করেছিলে সেগুলো করো
ঐ খারাপ লোকরা আবার এসে তোমাকে আক্রমণ করবে না;
কারণ সেই সব খারাপ লোকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে!
নীনবী ধ্বংস হবে
2 একজন শত্রু তোমাকে আক্রমণ করার জন্য আসছে।
সেজন্য তোমার শহরের শক্ত জায়গাগুলিকে পাহারা দাও।
রাস্তায় নজর রাখো।
যুদ্ধের জন্য তৈরী হও।
সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হও!
2 হ্যাঁ, প্রভু যাকোবের মাহাত্ম্য পাল্টে দেবেন।
তার শ্রী ইস্রায়েলের মতোই হবে।
শত্রুরা তাদের ধ্বংস করেছে
এবং তাদের দ্রাক্ষা ক্ষেতগুলি ধ্বংস করেছে।
3 ঐসব সৈন্যদের বর্মগুলো লাল।
তাদের উর্দিগুলো উজ্জ্বল লাল।
তাদের রথগুলো যুদ্ধের জন্য সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
এবং আগুনের শিখার মতো চক্চক্ করছে
এবং তাদের ঘোড়াগুলো যাবার জন্য প্রস্তুত।
4 রথগুলো রাস্তার ওপর উন্মত্তের মত এগোচ্ছে।
প্রশস্ত জায়গায় তারা হুড়োহুড়ি করে সামনে পেছনে যাচ্ছে।
তাদের জ্বলন্ত মশালের মতো চক্চকে দেখাচ্ছে।
এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় বিদ্যুতের মতো ঝলসে উঠছে!
5 শত্রু পক্ষ তার সব থেকে ভালো সৈন্যদের ডাকছে।
কিন্তু দৌড়ে যেতে গিয়ে তারা হোঁচট খাচ্ছে।
তারা প্রাচীরের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে
এবং অবরোধ যন্ত্র বসাচ্ছে।
6 কিন্তু নদীর ধারের দরজাগুলো খোলা রয়েছে
এবং শত্রুরা এর মধ্যে দিয়ে বন্যার মত প্রবেশ করে রাজার বাড়ী ধ্বংস করছে।
7 শত্রুরা রাণীকে নিয়ে চলে যাচ্ছিল।
তার ক্রীতদাসীরা ঘুঘু পাখীর মত দুঃখে বিলাপ করছিলো।
দুঃখ বোঝাবার জন্য তারা তাদের বুক চাপড়াচ্ছিল।
8 নীনবীর অবস্থা জলাশয়ের মত,
যার জল নর্দমা দিয়ে বয়ে চলে যাচ্ছে।
জনসাধারণ তীব্রস্বরে গর্জন করছে, “থামো! পালিয়ে যেও না!”
কিন্তু তাতে কোন ভালো ফল হচ্ছে না।
9 সৈন্যরা, তোমরা যারা নীনবী ধ্বংস করেছো,
তোমরা রূপো নিয়ে যাও!
সোনা নিয়ে যাও!
নেবার অনেক কিছু আছে।
এখানে অনেক সম্পদ আছে।
10 এখন নীনবী শূন্য।
সব জিনিষই চুরি হয়ে গেছে।
শহরটি ধ্বংস হয়েছে।
জনসাধারণ তাদের সাহস হারিয়েছে।
তাদের হৃদয় ভয়ে গলে যাচ্ছে,
তাদের হাঁটুগুলো ঠক্-ঠক্ শব্দে কাঁপছে।
তাদের শরীর কাঁপছে,
তাদের মুখ ভয়ে সাদা হয়ে গেছে।
11 সিংহের গুহাস্বরূপ নীনবী এখন কোথায়
যেখানে পুরুষ এবং স্ত্রী-সিংহরা থাকত?
তাদের শিশুরা ভয় পেত না।
12 সিংহ (নীনবীর রাজা) তার বাচ্চাদের
এবং সিংহকে খাওয়াবার জন্য বহু লোক হত্যা করেছে।
সে তার গুহা (নীনবী) মনুষ্যদেহ দিয়ে ভরে দিয়েছিল।
যে নারীদের সে হত্যা করেছিল তাদের দেহগুলি দিয়ে তার গুহা পূর্ণ করেছে।
13 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন,
“নীনবী, আমি তোমার বিরূদ্ধে!
আমি তোমার রথগুলোকে জ্বালিয়ে দেব।
যুদ্ধে আমি তোমার ‘সিংহ শাবকদের’ মেরে ফেলব।
তুমি পৃথিবীতে কাউকে শিকার করতে সমর্থ হবে না।
লোকরা আর কখনোই তোমার দূতদের কাছ থেকে
কোন খারাপ খবর শুনবে না।”
নীনবীর পক্ষে খারাপ সংবাদ
3 সেই খুনেদের শহরের পক্ষে এটা খুবই খারাপ হবে।
নীনবী এমনই এক মিথ্যায় পূর্ণ শহর।
অন্য দেশ থেকে নিয়ে আসা জিনিষ দিয়ে এ শহর ভর্ত্তি করা হয়েছে।
শহরটি হত্যা ও লুঠ করা থেকে কখনও বিরত হয় না।
2 তোমরা চাবুক মারার শব্দ,
চাকার শব্দ,
ঘোড়াদের টগবগিয়ে যাবার শব্দ
এবং রথগুলোর লাফিয়ে যাবার শব্দ শুনতে পাচ্ছো।
3 অশ্বারোহী সৈন্যরা আক্রমণ করছে;
তাদের তরবারিগুলো জ্বল-জ্বল করে উঠছে
এবং তাদের বর্শাগুলো চক্চক্ করছে!
সেখানে অনেক মৃত মানুষের দেহ,
মৃতদেহগুলি স্তুপীকৃত, এতগুলি দেহ যে গোনা যায় না।
লোকরা মৃতদেহগুলির ওপর হোঁচট খেয়ে পড়ছে।
4 নীনবীর জন্যই এইসব কিছু ঘটেছে।
নীনবী ঠিক যেন বেশ্যার মতো যে কখনোই যথেষ্ট কিছু পায়নি।
সে আরো আরো চেয়েছে।
সে নিজেকে বহু জাতির কাছে বিক্রী করে দিয়েছিল।
তার মায়াবী যাদু দিয়ে সে তাদের তার দাস বানিয়ে ফেলেছে।
5 সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন,
“নীনবী, আমি তোমার বিরূদ্ধে,
আমি তোমার জামাকাপড় তোমার মুখের ওপর তুলে দেবো।[a]
আমি অন্য জাতিদের কাছে তোমার নগ্ন দেহ দেখাবো।
ঐ রাজ্যগুলো তোমার লজ্জা দেখবে।
6 আমি তোমার ওপর নোংরা জিনিষ ছুঁড়ে দেবো।
আমি তোমার সঙ্গে ঘৃণ্য আচরণ করবো।
লোকে তোমাকে দেখে হাসবে।
7 তোমাকে দেখে প্রত্যেকেই চমকে উঠবে।
তারা বলবে, ‘নীনবী ধ্বংস হয়েছে।
কে তার জন্য কাঁদবে?’
আমি জানি, নীনবী তোমাকে সান্ত্বনা দেবার জন্য
কাউকে পাওয়া যাবে না।”
8 নীনবী, তুমি কি নীল নদের কুলে অবস্থিত থীব্সের চেয়ে ভালো? না। থীব্সের চারদিকেও জল ছিল। থীব্স্ তার শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এই জলই ব্যবহার করত। আত্মরক্ষার দেওয়ালের মত সে সেই জল ব্যবহার করত। 9 কূশ এবং মিশর থীবসকে অনেক সামর্থ্য যুগিয়েছিল। সুদান এবং লিবীয়া তাকে সমর্থন করেছিল। 10 কিন্তু থীবস্ পরাজিত হয়েছিল। তার অধিবাসীদের বিদেশে কয়েদী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাস্তার প্রত্যেক মোড়ে সৈন্যরা নীনবীর ছোট ছোট বাচ্চাদের মেরে ফেলেছিল। তারা ঘুঁটি চেলে দেখেছিল কোন্ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কারা ক্রীতদাস করে রাখবে। তারা থীব্সের সব গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শেকল দিয়ে বেঁধেছিল।
11 সেজন্য নীনবী, মাতাল লোকদের মতো তোমারও পতন হবে। তুমি লুকোবার চেষ্টা করবে। শত্রুদের হাত থেকে নিজেকে দূরে রাখার জন্য তুমি একটি নিরাপদ স্থান খুঁজবে। 12 কিন্তু নীনবী তোমার সমস্ত শক্তিশালী জায়গাগুলি ডুমুর গাছের মত হবে। নতুন ডুমুরগুলি যখন পাকে, একজন লোক আসে আর গাছটিকে নাড়া দেয়। ডুমুরগুলি সেই লোকটির মুখের মধ্যে গিয়ে পড়ে। সে সেগুলো খেয়ে ফেলে আর ডুমুরগুলো ঐখানেই শেষ।
13 নীনবী, তোমার সব লোক যেন স্ত্রীলোকের মত এবং শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। তোমাদের দেশের দরজাগুলো শত্রুদের ঢুকে পড়ার জন্য প্রশস্তভাবে খোলা। ফটকগুলির আড়াআড়ি কাঠের গরাদগুলো পুড়ে গিয়েছিল।
14 জল নিয়ে এসে তোমার নগরের ভেতর জমিয়ে রেখে দাও। কেন? কারণ শত্রুপক্ষের সৈন্যরা তোমার শহরের চারদিক ঘিরে ফেলবে। তারা কোন লোককে নগরের মধ্যে খাবার অথবা জল আনতে দেবে না। তোমার প্রতিরক্ষাগুলিকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলো। বেশি ইঁট বানানোর জন্য মাটি নাও। চূন, বালি, সুরকি মেশাও। ইঁট তৈরী করবার জন্য চুল্লী জোগাড় কর! 15 তোমরা শুধু এসব কাজই করতে পারো, কিন্তু আগুন তোমাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করবে। এবং তরবারিই তোমাদের হত্যা করবে। তোমাদের দেশটাকে এমন দেখাবে যেন পঙ্গপালের ঝাঁক এসে সব খেয়ে নিয়েছে।
নীনবী ফড়িংএর ঝাঁকের মত, পঙ্গপালের দলের মত বেড়ে চলেছিল। 16 বহু ব্যবসায়ী লোক তোমার কাছে আছে যারা নানা জায়গায় গিয়ে জিনিষ কেনে। তারা যেন আকাশের নক্ষত্রের মত অসংখ্য। তারা যেন পঙ্গপালের মত, যারা খেতে আসে যে পর্যন্ত না সব শেষ হয়। তারপর তারা ছেড়ে যায়। 17 এবং তোমার সরকারী কর্মকর্তারাও পঙ্গপালের মত। তারা ঠাণ্ডার দিনে পাথরের দেওয়ালে বসা পঙ্গপালের মত। যখন সূর্য উঠে পাথরগুলো গরম হয় তখন সব পঙ্গপালগুলো উড়ে যায় এবং কেউ জানে না তারা কোথায় যায়! তোমার সরকারী কর্মচারীরাও ঠিক ঐরকম।
18 অশূরের রাজা, তোমার মেষপালকরা গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়েছে। সেইসব শক্তিশালী লোকরা ঘুমোচ্ছে এবং এখন তোমার মেষের দল (লোকরা) পর্বতের চারিদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য কোন লোকই নেই। 19 নীনবী, তুমি খারাপভাবে আঘাত পেয়েছো। কোন কিছুই তোমার আঘাত সারাতে পারবে না। যারাই তোমার ধ্বংসের কথা শোনে, তারা হাততালি দেয়। তারা সবাই খুশী। কেন? কারণ তুমি সব সময় যে সব ব্যথা দিয়ে থাকো তা তারা সবাই অনুভব করেছে!
মুক্তির গীত
14 এরপর আমি সিয়োন পর্বতের ওপর এক মেষশাবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে 144,000 জন লোক। তাদের প্রত্যেকের কপালে তাঁর নাম ও তাঁর পিতার নাম লিখিত।
2 পরে আমি স্বর্গ থেকে শুনতে পেলাম প্রবল জলকল্লোলের মতো, প্রচণ্ড মেঘ গর্জনের মতো এক কন্ঠস্বর; যে স্বর আমি শুনলাম তাতে মনে হল যেন একটা বীণাবাদক দল তাঁদের বীণা বাজাচ্ছেন। 3 তাঁরা সকলে সিংহাসনের সামনে ও সেই চারজন প্রাণী ও প্রাচীনদের সামনে এক নতুন গীত গাইছিলেন। পৃথিবী থেকে যাদের মূল্য দিয়ে কেনা হয়েছিল সেই 144,000 জন লোক ছাড়া আর অন্য কেউই সেই গান শিখতে পারল না।
4 এই 144,000 জন লোক হলেন তাঁরা যাঁরা স্ত্রীলোকদের সংসর্গে নিজেদের কলুষিত করেন নি, কারণ তাঁরা খাঁটি। মেষশাবক যেখানে যান তাঁরা সেখানেই তাঁকে অনুসরণ করেন। পৃথিবীর লোকদের মধ্য থেকে এই 144,000 জন লোককে মুক্ত করা হয়েছে। ঈশ্বর ও মেষশাবকের উদ্দেশ্যে তাঁরা মনুষ্যদের মধ্য থেকে অগ্রিমাংশরূপে গৃহীত হয়েছেন। 5 তাঁদের মুখে কোন মিথ্যা কথা পাওয়া যায় নি। তাঁরা নির্দোষ।
তিনজন স্বর্গদূত
6 পরে আমি আর একজন স্বর্গদূতকে আকাশপথে উড়ে যেতে দেখলাম। পৃথিবীবাসী লোকদের কাছে, পৃথিবীর সকল জাতি, উপজাতি, সকল ভাষাভাষী লোকের কাছে ঘোষণা করার জন্য এই স্বর্গদূতের কাছে ছিল অনন্তকালীন সুসমাচার। 7 স্বর্গদূত উদাত্ত কন্ঠে এই কথা বললেন, “ঈশ্বরকে ভয় করো ও তাঁর প্রশংসা করো, কারণ সময় হয়েছে যখন ঈশ্বর সমস্ত লোকদের বিচার করবেন। যিনি স্বর্গ, পৃথিবী, সমুদ্র ও সমস্ত জলের উৎস সৃষ্টি করেছেন, সেই ঈশ্বরেরই উপাসনা করো।”
8 এরপর প্রথম স্বর্গদূতদের পিছন পিছন দ্বিতীয় স্বর্গদূত উড়ে এসে বললেন, “পতন হল! মহানগরী বাবিলের পতন হল! সে সমস্ত জাতিকে ঈশ্বরের ক্রোধের ও তার ব্যভিচারের মদিরা পান করিয়েছে।”
9 এরপর ঐ দুজন স্বর্গদূতের পেছনে আর এক স্বর্গদূত এসে চিৎকার করে বললেন, “যদি কেউ সেই পশু ও তার প্রতিমার আরাধনা করে আর কপালে অথবা হাতে তার ছাপধারণ করে 10 তবে সেও ঈশ্বরের সেই রোষ মদিরা পান করবে যা ঈশ্বরের ক্রোধের পাত্রে অমিশ্রিত অবস্থায় ঢালা হচ্ছে। পবিত্র স্বর্গদূতদের ও মেষশাবকের সামনে জ্বলন্ত গন্ধকে ও আগুনে পুড়ে তাকে কি নিদারুণ যন্ত্রণাই না পেতে হবে। 11 তাদের যন্ত্রণার ধোঁয়া যুগপর্যায়ে যুগে যুগে উপরে উঠতে থাকবে। যাঁরা সেই পশু ও তাঁর মূর্তির আরাধনা করে অথবা যে কেউ তার নামের ছাপ ধারণ করে, তারা দিনে কি রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না।” 12 এখানেই ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের ধৈর্য্য্য্যের প্রয়োজন, যারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করবে ও যীশুর প্রতি বিশ্বাসে স্থির থাকবে।
13 এরপর আমি স্বর্গ থেকে একটা রব শুনলাম, “তুমি এই কথা লেখ; এখন থেকে মৃত লোকেরা ধন্য, যারা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত থেকে মৃত্যুবরণ করেছে।”
আত্মা একথা বলছেন, “হ্যাঁ, এ সত্য। তারা তাদের কঠোর পরিশ্রম থেকে বিশ্রাম লাভ করবে, কারণ তাদের সব সত্কর্ম তাদের অনুসরণ করে।”
পৃথিবীর শস্য কর্তন
14 পরে আমি তাকিয়ে দেখলাম, আমার সামনে একখণ্ড সাদা মেঘ। সেই মেঘের ওপর মানবপুত্রের[a] মতো একজন বসে আছেন। তাঁর মাথায় সোনার মুকুট ও তাঁর হাতে একটা ধারালো কাস্তে। 15 এরপর মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বাইরে এলেন। যিনি মেঘের ওপরে বসে আছেন তাঁকে তিনি বললেন, “আপনার কাস্তে চালান ও শস্য সংগ্রহ করুন, কারণ শস্য সংগ্রহের সময় হয়েছে। পৃথিবীর সব শস্য পেকেছে।” 16 তাই যিনি সেই মেঘের ওপর বসেছিলেন তিনি পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালালেন আর পৃথিবীর ফসল তোলা হল।
17 এরপর স্বর্গের মন্দির থেকে আর একজন স্বর্গদূত বেরিয়ে এলেন। এই স্বর্গদূতের হাতে এক ধারালো কাস্তে ছিল, 18 আর যজ্ঞবেদী থেকে অন্য এক স্বর্গদূত উঠে এলেন, যাঁর আগুনের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা ছিল। তিনি ঐ ধারালো কাস্তে হাতে যে স্বর্গদূত ছিলেন তার উদ্দেশ্যে চিৎকার করে এই কথা বললেন, “তোমার ধারালো কাস্তে লাগাও, পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর ক্ষেতের আঙ্গুরের থোকাগুলি কাট, কারণ সমস্ত আঙ্গুর পেকে গেছে।” 19 তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীর ওপর কাস্তে চালিয়ে পৃথিবীর সমস্ত আঙ্গুর সংগ্রহ করে ঈশ্বরের ক্রোধের মাড়াইকলে ঢেলে দিলেন। 20 নগরের বাইরে মাড়াইকলে আঙ্গুরগুলি মাড়াই করা হলে পরে সেই মাড়াইকল থেকে রক্ত নিঃসৃত হল। সেই রক্ত উচ্চতায় ঘোড়ার এক বলগা পর্যন্ত এবং দুরত্বে 200 মাইল প্রবাহিত হল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International