Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যোনা 1-4

ঈশ্বরের আহ্বান আর যোনার পলায়ন

প্রভু অমিত্তয়ের পুত্র যোনার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। প্রভু বলেছিলেন, “নীনবী একটা বড় শহর। আমি শুনেছি, সেখানকার লোকরা নানা রকম খারাপ কাজকর্ম করছে। কাজেই সেই শহরে যাও এবং লোকদের বল তারা যেন সেই খারাপ কাজ করা বন্ধ করে।”

যোনা ঈশ্বরের আদেশ মানতে চাননি সেজন্য যোনা প্রভুর কাছ থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। যোনা যাফোতে গেলেন। যোনা সেখানে একটা নৌকা দেখতে পেয়েছিলেন যেটা অনেক দূরের শহর তর্শীশে যাচ্ছিল। যোনা নৌকাতে উঠে যাবার ভাড়া দিলেন। ঈশ্বরের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার জন্য যোনা ঐ নৌকায় তর্শীশ পর্যন্ত ভ্রমন করতে চেয়েছিলেন।

ভারী ঝড়

কিন্তু প্রভু সমুদ্রে একটা বড় রকমের ঝড় আনলেন। বাতাস সমুদ্রকে খুবই রুক্ষ করে তুললো। ঝড়টা এতই শক্তিশালী ছিল যে নৌকাটি ভেঙে টুকরো টুকরো হবার উপক্রম হল। ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য লোকরা নৌকাটিকে হাল্কা করতে চেষ্টা করল। সে জন্য তারা নৌকার মালগুলো ছুঁড়ে সমুদ্রে ফেলে দিতে আরম্ভ করল। মাঝিরা খুবই ভয় পেয়ে গেল। প্রত্যেকে তাদের দেবতাদের উদ্দেশ্যে প্রার্থণা করতে আরম্ভ করল।

যোনা নৌকার একেবারে পশ্চাদ্ভাগে চলে গেলেন এবং তিনি শুয়ে পড়লেন ও ঘুমোতে গেলেন। নৌকার প্রধান মাঝি যোনাকে দেখতে পেল এবং বলল, “উঠে পড়ো! তুমি কেন ঘুমাচ্ছো? তুমি তোমার দেবতার কাছে প্রার্থনা করো! দেবতা হয়তো তোমার প্রার্থনা শুনবেন এবং আমাদের রক্ষা করবেন!”

এই ঝড়ের কারণ কি ছিল?

তখন লোকরা একে অপরকে বলল, “আমরা অবশ্যই ঘুঁটি চেলে জানতে চেষ্টা করব এই দুর্যোগগুলো কেন আমাদের ভাগ্যে ঘটছে।”

সে জন্য লোকে ঘুঁটি চালল এবং দেখা গেল, যোনার জন্যেই এই দুর্যোগগুলো ঘটছে। তখন লোকরা যোনাকে বলল, “দেখ তোমার দোষেই এই ভয়ঙ্কর ঝড় আমাদের ভাগ্যে ঘটছে! সেজন্য আমাদের বল তুমি কি করেছো? তোমার পেশা কি? তুমি কোথা থেকে আসছো? তোমার দেশ কোথায়? তোমার লোকরা কারা?”

যোনা লোকদের বললেন, “আমি একজন ইব্রীয় (ইহূদী)। আমি প্রভু, স্বর্গের ঈশ্বরের উপাসনা করি, তিনি সেই ঈশ্বর যিনি সমুদ্র ও ভূমি সৃষ্টি করেছেন।”

10 যোনা লোক জনদের বললেন, তিনি প্রভুর কাছ থেকে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকরা এই কথা জেনে খুবই ভয় পেয়ে গেল। যোনাকে তখন তারা জিজ্ঞেস করল, “তুমি তোমার ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কেন এমন ভয়ঙ্কর কাজ করেছ?”

11 বাতাস ও সমুদ্রের ঢেউ ক্রমশঃ শক্তিশালী হতে আরম্ভ করছিল। তাই লোকরা যোনাকে জিজ্ঞেস করল, “আমরা আমাদের রক্ষা করার জন্য কি করবো? সমুদ্রকে শান্ত করবার জন্য আমরা তোমার প্রতি কি করব?”

12 যোনা লোকদের বললেন, “আমি জানি আমি ভুল করেছি সেই জন্যই সমুদ্রে ঝড় এসেছে। আমাকে সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দাও। তাহলে সমুদ্র শান্ত হয়ে যাবে।”

13 কিন্তু লোকরা যোনাকে সমুদ্র ছুঁড়ে দিতে চাইল না। নৌকাটিকে তীরে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু তারা সফল হল না। প্রচণ্ড বাতাস এবং উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে লাগল!

যোনার শাস্তি

14 সেই জন্য লোকরা প্রভুর কাছে চিৎকার করে বলল, “প্রভু আমরা এই লোকটিকে তার খারাপ কাজের জন্য সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেলে দিচ্ছি। কাজেই দয়া করে বলবেন না যে আমরা এক নির্দোষ লোককে মেরে ফেলার জন্য দয়া করে আমাদের মেরে ফেলবেন না। আমরা জানি আপনি হচ্ছেন প্রভু, এবং আপনি যা চাইছেন তা সবকিছুই করতে পারেন। কিন্তু দয়া করে আপনি আমাদের প্রতি সদয় হোন।”

15 সেই জন্য লোকরা যোনাকে সমুদ্রে ফেলে দিল। ঝড় থেমে গেল—সমুদ্র আবার শান্ত হল! 16 লোকরা এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে গেল এবং তারা প্রভুকে খুব ভয় পেত। তারা প্রভুর নামে বিশেষ শপথ নিল এবং নৈবেদ্য উৎসর্গ করল।

17 আর প্রভু যোনাকে গিলে ফেলার জন্য একটা বড় মাছ ঠিক করে রেখেছিলেন। যোনা মাছের পেটের মধ্যে তিন দিন ও তিন রাত্রি রইলেন।

যোনার প্রার্থনা

মাছের পেটের মধ্যে থাকাকালীন যোনা প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলেন,

“আমি খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে ছিলাম।
    আমি প্রভুকে সাহায্যের জন্য ডাকলাম
    এবং তিনি আমাকে উত্তর দিলেন!
আমি কবরের আরো গভীরে ছিলাম
    প্রভু, আমি আপনাকে চিৎকার করে ডাকলাম
    এবং আপনি আমার রব শুনতে পেলেন!

“আপনি আমাকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিলেন।
    আপনার শক্তিশালী ঢেউ আমার উপর পড়েছিল।
আমি গভীর, অতি গভীর সমুদ্রে ডুবে গেলাম।
    আমার চারিদিকে কেবলই জল ছিল।
তখন আমি ভাবছিলাম,
‘এখন আমাকে বাধ্য হয়েই সেইখানে যেতে হবে যেখানে আপনি আমাকে দেখতে পাবেন না।’
    কিন্তু আমি সাহায্যের জন্য তবু আপনার পবিত্র মন্দিরের দিকে চেয়েছিলাম।”

“সমুদ্রের জল আমার চারিদিক ঘিরে ধরল।
জল আমার মুখ ঢেকে দিল,
    আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।
ক্রমশঃ আমি গভীর থেকে গভীরতর সমুদ্রে চলে যেতে থাকলাম।
    সমুদ্রের শৈবাল আমার মাথার চারিদিক জড়িয়ে গেল।
আমি সমুদ্রের তলদেশে ছিলাম,
    যেখান থেকে পাহাড়গুলো আরম্ভ হয়েছে।
আমি ভেবেছিলাম আমি এই কারাগারে সারা জীবনের জন্য বন্দী হয়ে গেছি।
    কিন্তু প্রভু আমার ঈশ্বর, আমাকে আমার কবরের মধ্য থেকে বার করে আনলেন!
ঈশ্বর, আপনি আবার আমাকে জীবন দান করলেন!

“আমার আত্মা সব আশা ছেড়ে দিয়েছিল।
    কিন্তু তখন আমি প্রভুকে স্মরণ করলাম।
প্রভু, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম।
    এবং আপনি আপনার পবিত্র মন্দিরে আমার প্রার্থনাগুলি শুনেছিলেন।

“কয়েক জন লোক মূল্যহীন মূর্ত্তি পূজো করে।
    কিন্তু ঐ মূর্ত্তিগুলি কখনই তাদের সাহায্য করবে না।
পরিত্রাণ কেবল প্রভুর কাছ থেকেই আসে!
    প্রভু আমি আপনার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করব এবং আমি আপনার প্রশংসা করব ও আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো।
আমি আপনার কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি করব
    এবং যেগুলি করব বলে আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম সেই সব কাজগুলো আমি করব।”

10 তখন প্রভু ওই মাছটির সঙ্গে কথা বললেন এবং মাছটি বমি করে যোনাকে জমির উপরে ফেলল।

ঈশ্বর ডাকলেন এবং যোনা আজ্ঞা পালন করলেন

তখন প্রভু আবার যোনার সঙ্গে কথা বললেন, “ঐ বৃহৎ শহর নীনবীতে যাও এবং আমি তোমাকে যা বলি তাই প্রচার কর।”

তাই যোনা প্রভুর আজ্ঞাপালন করলেন এবং নীনবীতে গেলেন। নীনবী ছিল বেশ বড় শহর। শহরটাতে ঘুরতে একজন লোকের তিন দিন সময় লাগত।

যোনা শহরটির কেন্দ্র স্থলে গিয়ে জনসাধারণকে ধর্মোপদেশ দিতে আরম্ভ করলেন। যোনা বললেন, “আর 40 দিন পর, নীনবী ধ্বংস হয়ে যাবে!”

নীনবীবাসীরা ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বার্তা পেয়ে বিশ্বাস করল। লোকরা কিছু সময়ের জন্যে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে তাদের পাপ কাজ সম্বন্ধে চিন্তা করল। লোকরা তাদের দুঃখ প্রকাশ করার জন্য বিশেষ ধরণের জামাকাপড় পরল। শহরের সব লোকরাই তা করল, মহান থেকে সাধারণ সকলেই।

নীনবীর রাজা এই কথাগুলো শুনলেন এবং তিনি নিজেও তার নিজের খারাপ কাজের জন্য দুঃখিত হলেন। সেজন্য রাজা তাঁর সিংহাসন ছেড়ে দিলেন। তাঁর বিশেষ পোশাকও ছেড়ে ফেললেন এবং তিনি যে দুঃখিত তা দেখাবার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক পরলেন। তারপর রাজা ছাইয়ের মধ্যে বসলেন। রাজা একটি বিশেষ বার্তা লিখে বার্তাটি শহরে প্রেরণ করলেন:

রাজা এবং তাঁর শাসকগণের আদেশ:

কিছু সময়ের জন্য লোকরা এবং পশুরা অবশ্যই কিছু খাবে না। পশুর পালকে মাঠে চরতে দেওয়া হবে না। নীনবীতে জীবিত কিছুই কোন খাদ্য বা পানীয় জল খাবে না। কিন্তু প্রত্যেক লোক এবং প্রত্যেক পশু তার দুঃখ প্রকাশ করার জন্য একটি বিশেষ পোশাক পরবে। লোককে ঈশ্বরের কাছে উচ্চস্বরে কাঁদতে হবে। প্রত্যেক লোকের জীবনযাত্রার পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে এবং তারা খরাপ কাজ করা বন্ধ করবে। তখন ঈশ্বরও হয়তো পরিবর্তিত হবেন এবং তিনি যে কাজ করার কথা ভেবেছিলেন তা করবেন না। হয়তো ঈশ্বরও বদলে যাবেন এবং ক্রুদ্ধ হবেন না। তাহলে আমরা ক্ষয়প্রাপ্ত হব না।

10 লোকে যে সব কাজ করেছে তা ঈশ্বর দেখেছিলেন। ঈশ্বর দেখলেন যে, লোকে খারাপ কাজ করা বন্ধ করেছে। কাজেই ঈশ্বর বদলে গিয়েছিলেন এবং যা ভেবেছিলেন তা করলেন না। লোককে ঈশ্বর শাস্তিও দিলেন না।

ঈশ্বরের কৃপা যোনাকে ক্রুদ্ধ করল

যোনা ভাবলেন এটা খুবই খারাপ যে ঈশ্বর শহরটি রক্ষা করেছেন। যোনা ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। যোনা প্রভুকে অভিযোগ করে বললেন, “আমি জানি এইসব ঘটনাই ঘটবে! আমি আমার দেশে ছিলাম এবং আপনিই আমাকে এখানে আসতে বলেছিলেন। সেই সময়, আমি জানতাম যে আপনি এই মন্দ শহরের লোকদের ক্ষমা করবেন। সে জন্য আমি ঠিক করেছিলাম তর্শীশে পালিয়ে যাব। আমি জানি যে আপনি খুবই দয়ালু ঈশ্বর! আমি জানি যে আপনি লোকদের ক্ষমা করেন এবং কাউকে শাস্তি দেন না। আমি জানি যে আপনি করুণায় পরিপূর্ণ! আমি জানি যে যদি এই লোকরা তাদের মন্দ কাজকর্ম বন্ধ করে, তাহলে আপনি তাদের ধ্বংস করার পরিকল্পনা পরিবর্তন করবেন। সেজন্য এখন আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, প্রভু দয়া করে আমাকে হত্যা করুন। আমার পক্ষে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই ভালো হবে!”

তখন প্রভু বললেন, “তুমি কি মনে কর যে, আমি ওই লোকদের ধ্বংস করলাম না বলে তোমার রাগ করা ঠিক হচ্ছে?”

এইসব ব্যাপারের জন্য যোনা ক্রুদ্ধ হয়েই রইলেন। সে জন্য সে শহর থেকে চলে গেলেন। যোনা শহরের কাছেই পূর্বদিকে একটা জায়গায় গিয়ে হাজির হলেন। সেখানে যোনা তার নিজের জন্য একটা আশ্রয় তৈরী করলেন। তখন তিনি সেখানকার ছাউনির তলায় ছায়াতে বসলেন এবং শহরে কি ঘটবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন।

কুমড়ো গাছ ও কীট পতঙ্গ

তৎ‌ক্ষনাৎ‌ প্রভু একটি কুমড়ো গাছ হওয়ার আদেশ দিলেন এবং সেটি যোনার ওপর খুব তাড়াতাড়ি যোনার মাথা ছাড়িয়ে বেড়ে উঠল। তাতে যোনার পক্ষে আরামে থাকবার জন্য একটি ঠাণ্ডা জায়গা তৈরী হল। এই গাছটির জন্য যোনা খুবই খুশি হল।

পরের দিন সকালে, ঈশ্বর একটি কীটকে ওই গাছটির অংশ খাবার জন্য পাঠালেন। কীটটি গাছটি খেতে আরম্ভ করল এবং গাছটি মরে গেল।

সূর্য যখন মধ্য আকশে এলো তখন ঈশ্বর পূর্ব দিক থেকে গরম হাওয়া বইয়ে দিলেন। যোনার মাথার ঠিক ওপরে সূর্য খুবই গরম হয়ে উঠলো এবং যোনা খুবই দুর্বল হয়ে পড়লেন। যোনা মরবার জন্য ঈশ্বরের অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, “আমার বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই বরং ভালো।”

কিন্তু ঈশ্বর যোনাকে বললেন, “তুমি কি মনে কর যে শুধু মাত্র গাছটি মরে যাবার জন্যই তোমার রাগ করা ঠিক হয়েছে?”

যোনা উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমার রাগ করাই উচিত! আমি এতোই ক্রুদ্ধ যে মরতে চাই।”

10 এবং প্রভু বললেন, “তুমি ওই চারা গাছটার জন্য কিছুই করনি! তাকে তুমি বাড়িয়ে তোলনি! রাত্রিবেলায় চারাগাছটা বেড়ে উঠেছিলো এবং পরের দিন সকালেই মরে গেছে। আর এখন তুমি ওই গাছটার জন্য দুঃখিত! 11 তুমি যদি ওই চারাগাছটার জন্য এত মনঃক্ষুন্ন হতে পারো, তাহলে অবশ্যই আমি ঐ বড় শহর নীনবীর জন্য দুঃখ বোধ করতে পারি এবং তাকে ক্ষমা করতে পারি। ওই শহরে বহু লোক এবং জীবজন্তু আছে। সংখ্যায় 120,000 বেশী মানুষ ওই শহরে আছে, এবং তারা তাদের মন্দ কাজের সম্বন্ধে জানত না।”

প্র.বা. 10

স্বর্গদূত এবং একটি ছোট গুটানো পুঁথি

10 পরে আমি একজন শক্তিশালী স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম। তিনি একখণ্ড মেঘকে পোশাকের মতো করে পরেছিলেন, আর তাঁর মাথার চারদিকে মেঘধনুক ছিল। তাঁর মুখ সূর্যের মতো, আর পা আগুনের থামের মতো। তাঁর হাতে ছিল একটি খোলা পুঁথি। তিনি তাঁর ডান পা-টি সমুদ্রের ওপরে আর বাঁ পাটি স্থলে রাখলেন। আর সিংহ গর্জনের মতো হুঙ্কার ছাড়লেন। স্বর্গদূতের গর্জনের পর সপ্ত বজ্রধ্বনি হুঙ্কার করে উঠল।

যখন সপ্ত বজ্রধ্বনি কথা বলল তখন আমি তা লিখতে চাইলাম। কিন্তু স্বর্গ থেকে এক স্বর বলল, “তুমি লিখো না। বজ্র যা বলছে তা গোপন রাখ।”

পরে সেই স্বর্গদূত, যাঁকে আমি সমুদ্রের ওপরে এবং স্থলের ওপরে পা রেখে দাঁড়াতে দেখেছিলাম, স্বর্গের দিকে তাঁর ডান হাতটি ওঠালেন; আর যিনি যুগে যুগে জীবন্ত, যিনি আকাশ, পৃথিবী ও সমুদ্র ও এই সবের মধ্যে যা কিছু আছে তার সৃষ্টিকর্তা, তাঁর নামে এই শপথ করে বললেন, “আর দেরী হবে না। যখন সপ্তম স্বর্গদূতের তূরী বাজানোর সময় আসবে তখন ঈশ্বরের সেই নিগৃঢ় পরিকল্পনা পরিপূর্ণ হবে। এ সেই সুসমাচারের পরিকল্পনা যা ঈশ্বর তাঁর ভাববাদী ও দাসদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন।”

এরপর স্বর্গ থেকে সেই রব আমি আবার শুনতে পেলাম। সেই রব আমাকে বলল, “যাও, স্বর্গদূতের হাত থেকে খোলা পুঁথিটি নাও। এই সেই স্বর্গদূত যিনি সমুদ্র ও স্থলের ওপর পা রেখে দাঁড়িয়েছিলেন।”

তখন আমি সেই স্বর্গদূতের কাছে গিয়ে তাঁকে বললাম, ঐ ছোট্ট পুঁথিটি আমায় দিন। তিনি আমায় বললেন, “নাও, খেয়ে ফেল। এটা তোমার পেটে গিয়ে তিক্ত হবে। কিন্তু মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগবে।” 10 তখন আমি স্বর্গদূতের হাত থেকে সেটি নিয়ে খেয়ে ফেললাম। তা মুখে মধুর মতো মিষ্টি লাগল কিন্তু খাওয়ার পর আমার পাকস্থলী তিক্ততায় ভরে গেল। 11 তিনি আমাকে বললেন, “অনেক লোক, জাতি, ভাষা এবং রাজাদের সম্বন্ধে তোমাকে আবার ভাববাণী করতে হবে।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International