Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
দানি 11-12

11 “মাদীয় রাজা দারিয়াবসের রাজত্ব কালের প্রথম বছরেই পারস্যের যুবরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি মীখায়েলের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।

“এখন তাহলে দানিয়েল তোমাকে আমি সত্যটি বলব। পারস্যে আরও তিন জন রাজা শাসন করবে। এরপর আসবে চতুর্থ রাজা। সেই চতুর্থ রাজাই হবে পারস্যের সব থেকে ধনী রাজা। খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য সে তার ধনসম্পদ ব্যবহার করবে। এবং গ্রীস রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য সে সকলকে ইচ্ছুক করে তুলবে। তখন একজন শক্তিশালী ও বিত্তবান রাজার আবির্ভাব ঘটবে। সে আরো শক্তি দিয়ে শাসন করবে। সে যা চাইবে তাই করতে সক্ষম হবে। সেই রাজার আবির্ভাবের পর তার রাজ্য চার ভাগে বিভক্ত হবে। তার ছেলেমেয়েরা ও নাতিনাতনিরা তার রাজত্বের ভাগ পাবে না এবং তার রাজ্যগুলি তাদের পুরোনো শক্তি ফিরে পাবে না। কারণ তার রাজ্যের অংশীদার হয়ে উঠবে অন্য মানুষেরা।

“দক্ষিণ দেশের রাজা বলবান হয়ে উঠবে। কিন্তু তারই একজন অধ্যক্ষের হাতে তার পরাজয় ঘটবে। তখন সেই অধ্যক্ষই শাসন করতে শুরু করবে। তার রাজ্য হবে একটি খুব শক্তিশালী রাজ্য।

“কিন্তু কয়েক বছর পরে তাদের দুজনের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হবে। চুক্তিটি প্রতিপন্ন করবার জন্য দক্ষিণ দেশের রাজার কন্যা যাবে উত্তর দেশের রাজপুত্রকে বিয়ে করতে। ঘটনাবশতঃ তাকে এবং তার ভৃত্যবর্গ যারা তাকে এনেছিল, তার সন্তান এবং সেই একজন যে তাকে সাহায্য করেছিল তাদের সবাইকে প্রতারণা করা হবে।

“কিন্তু ঐ যুবরাণীর পরিবারের এক ব্যক্তি এসে দক্ষিণের রাজার স্থান গ্রহণ করবে। ঐ ব্যক্তি উত্তরের রাজার সৈন্যবাহিনীকে আক্রমণ করবে। সে উত্তরের রাজার দুর্গে প্রবেশ করে যুদ্ধে জয়লাভ করবে। সে তাদের দেবতার মূর্ত্তি নিয়ে যাবে। এরপর সে আর উত্তরের রাজাকে উত্যক্ত করবে না। উত্তরের রাজা আবার দক্ষিণের রাজধানী আক্রমণ করবে কিন্তু পরাজিত হয়ে পুনরায় নিজের রাজ্যে ফিরে যাবে।

10 “উত্তরের রাজার পুত্ররা এবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে। তারা একটি বিশাল সেনাবাহিনী সংগঠিত করবে। সেই সেনাবাহিনী বন্যার মতো দ্রুত পথ পরিক্রম করবে। তারা দক্ষিণের রাজার দুর্গ আক্রমণ করবে। 11 তখন দক্ষিণের রাজা ক্রুদ্ধ হয়ে উত্তরের রাজাকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে বার হবে। উত্তরের রাজার বিশাল সেনাবাহিনী থাকবে, কিন্তু সে দক্ষিণের রাজার সৈন্যবাহিনী দ্বারা পরাজিত হবে। 12 বিরাট সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করবার পর দক্ষিণের রাজা গর্বিত হবেন এবং তিনি লক্ষ লক্ষ সৈন্য হত্যা করবেন, কিন্তু তিনি ক্ষমতাশালী থাকবেন না। 13 কারণ এরপর উত্তরের রাজা আবার আগের চেয়েও আরও বিশাল সেনাবাহিনী প্রস্তুত করবে। কয়েক বছর পর আবার সে তার বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে আক্রমণ করবে। এই সেনাবাহিনী হবে অজস্র অস্ত্রধারী। তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকবে।

14 “সেই সময় অনেক লোক দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে। তোমার নিজেরই কয়েক জন লোক যারা যুদ্ধ করতে ভালবাসে তারা যোগ দেবে এবং দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। তারা স্বপ্নদর্শনকে সত্য করে তুলতে চেষ্টা করবে, কিন্তু তারা যুদ্ধে জয়লাভ করবে না। 15 এরপর উত্তরের রাজা আসবে এবং একটি শক্তিশালী শহর অধিগ্রহণ করে নেবে। দক্ষিণের সৈন্যরা যুদ্ধে পুরোপুরি পরাস্ত হয়ে পড়বে। এমনকি দক্ষিণের বীর সৈন্যরাও তাদের শক্তি দিয়ে উত্তরের সৈন্যদের ঠেকাতে পারবে না।

16 “উত্তরের রাজা যা খুশী তাই করতে পারবে। কেউ তাকে থামাতে সক্ষম হবে না। তার হাতে সুন্দর দেশটির ক্ষমতা থাকবে। এবং এই দেশ ধ্বংস করার মতো যথেষ্ট শক্তি তার হাতে থাকবে। 17 উত্তরের রাজা দক্ষিণের রাজাকে পরাজিত করবার জন্য তার রাজ্যের সমগ্র শক্তিকে আনতে স্থির করেছিল। দক্ষিণের রাজার সঙ্গে সে একটি চুক্তি করবে। এবং সেটা প্রতিপন্ন করতে তার এক কন্যাকে দক্ষিণের রাজার সঙ্গে বিয়ে দেবে। কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্যকারী হবে না।

18 “এরপর উত্তরের রাজা সমুদ্র উপকুলবর্তী দেশগুলোর দিকে মনোযোগ দেবে। যুদ্ধে বেরিয়ে সে বেশ কিছু শহর জয় করবে। কিন্তু এরপর একজন সেনাধ্যক্ষ উত্তরের রাজার সমস্ত গর্ব চূর্ণ করে দেবে। সেই সেনাধ্যক্ষ উত্তরের রাজাকে লজ্জিত করে তুলবে।

19 “সেটি ঘটবার পর, উত্তরের রাজা পুনরায় তার নিজের দেশের দুর্গে ফিরে যাবে। কিন্তু সে দুর্বিপাকে পড়বে এবং মারা যাবে।

20 “উত্তরের রাজার অপসারণের পর তার স্থানে এক নতুন শাসক উঠে আসবে। ঐ শাসক তার প্রজাগণের কাছ থেকে কর সংগ্রহের জন্য তার সহকারীদের পাঠাবে। কিন্তু কয়েক বছর পরেই সেই শাসক ধ্বংস হবে। তবে সে যুদ্ধে মারা যাবে না।

21 “সেই শাসকের পর, আর একজন নতুন শাসক হবে। ঐ শাসক হবে অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং হীণমন্য ব্যক্তি। ঐ ব্যক্তি রাজকীয় পরিবারের সম্মান পাবে না। সে চাটুকারিতার কৌশল অবলম্বন করে শাসক হয়ে যাবে। সে এমন একটা সময় শাসক হবে যখন সেখানে শান্তি আছে। 22 সে বিশাল সৈন্যবাহিনীকে, এমনকি চুক্তির নেতাকেও পরাজিত করবে। 23 অনেক দেশ সেই নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত করবে। কিন্তু তাদের সাথেও সে চাতুরী করবে। মিথ্যে বলে তাদের প্রতারিত করবে। সে শক্তি সঞ্চয় করবে কিন্তু সামান্য কিছু মানুষ তাকে সমর্থন করবে।

24 “সেই শান্তির সময়, সে ধনী দেশগুলিতে আসবে। তার পূর্বপুরুষরা যা করেননি এমন সব জিনিষ সে করবে। সে ধনী দেশগুলির শাসকদের বহু উপহার এবং মূল্যবান জিনিষ দেবে। সে তাদের দুর্গগুলি পরাজিত করবার পরিকল্পনা করবে। পরাজিত রাষ্ট্রগুলি থেকে সে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এসে তার অনুগামীদের হাতে সেগুলি তুলে দেবে। দুর্ভেদ্য ও কঠিন শহরগুলিকেও পরাজিত করার পরিকল্পনা করবে ঐ শাসক। কিছু সময়ের জন্য সে সফল হবে।

25 “সেই অতি নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য শাসকের বিশাল সেনাবাহিনী থাকবে। সে তার শক্তি দেখানোর জন্য ঐ সেনাবাহিনী নিয়ে দক্ষিণের রাজাকে আক্রমণ করবে। দক্ষিণের রাজাও এক বিশাল সেনাবাহিনী সংগঠিত করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কিন্তু রাজার বিরুদ্ধে থাকা কয়েক জনের গোপন পরিকল্পনায় দক্ষিণের সেই যুদ্ধে রাজা পরাজিত হবে। 26 দক্ষিণের রাজার বন্ধুবেশী শত্রুরাই ষড়যন্ত্র করে তাকে যুদ্ধে পরাজিত করবে। দক্ষিণের রাজার অধিকাংশ সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যাবে। 27 উভয় রাজাই পরস্পরের ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে। এক টেবিলে বসেও দুজন দুজনকে মিথ্যে কথা বলবে। কিন্তু তাদের মিথ্যাগুলি তাদের কোন কাজেই আসবে না। কিন্তু ঈশ্বর ইতিমধ্যে তাদের অপসারণের সময় ঠিক করে রেখেছেন।

28 “উত্তরের রাজা অনেক ধনসম্পদ নিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাবে। তখন সে, যারা পবিত্র চুক্তি মানে তাদের ক্ষতি করার পরিকল্পনা করবে এবং নিজের দেশে ফিরে যাবে।

29 “সঠিক সময় উত্তরের রাজা পুনরায় দক্ষিণের রাজাকে আক্রমণ করবে। কিন্তু এইবার সে আগের বারের মতো সাফল্য পাবে না। 30 পশ্চিম থেকে সমস্ত যুদ্ধ জাহাজগুলি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য ছুটে আসবে। সে পবিত্র চুক্তির বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখাবে এবং যারা পবিত্র চুক্তি মানা বন্ধ করেছে তাদের সাহায্য করবে। 31 উত্তরের রাজা জেরুশালেমের মন্দির নষ্ট করতে তার সৈন্যবাহিনীকে পাঠাবে। মন্দিরে নিত্য নৈবেদ্য দিতে আসা লোকেদের সেনারা থামিয়ে দেবে। তারা মন্দিরের ভেতরে সেই ভয়ঙ্কর জিনিষটি রাখবে, যেটি ধ্বংসের কারণ।

32 “উত্তরের রাজা ইহুদীদের দেখতে পাবেন যারা পবিত্র চুক্তির বিরোধী। তিনি তাঁর ভান, ছল-চাতুরী এবং অবিরাম মিথ্যা দ্বারা তাদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু যে সকল ইহুদীরা তাদের ঈশ্বরকেই শক্তিমান বলে বিশ্বাস করবেন তারাই শক্তিশালী হয়ে উঠে পুনরায় যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়ে উঠবে।

33 “ঐ সকল জ্ঞানী শিক্ষক অন্যদের কি ঘটছে তা বোঝাতে সাহায্য করবে। কিন্তু এই ধর্মবিশ্বাসের জন্য তাদের নির্যাতন সহ্য করতে হবে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে তরবারির আঘাতে হত্যা করা হবে। কয়েক জনকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে এবং আরো কয়েক জনকে কারাগারে বন্দী করা হবে। তাদের মধ্যে কয়েক জনের ঘরবাড়ি লুঠ করা হবে। 34 যখন সাধারণ লোক হোঁচট খায় তখন জ্ঞানী শিক্ষকরা অল্প সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েক জন, যারা তাদের সঙ্গে যোগ দেবে তারা হবে কপটাচারী। 35 কয়েকজন জ্ঞানী মানুষ হোঁচট খাবে এবং ভুল করবে। তারা শাস্তি পাবে, কিন্তু এটা তাদের ভালো লোক করে দেবে। কারণ যাতে তারা শেষ সময়ে নিজেদের খাঁটি, শক্তিশালী এবং ত্রুটিহীন করে গড়ে তুলতে পারে। তখন, সঠিক সময়, সেই সময়ের সমাপ্তি আসবে।

যে রাজা নিজেই নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ

36 “উত্তরের রাজা যা চায় তাই করতে পারবে। সে নিজেই নিজের কাজের বড়াই করে বেড়ায়। সে নিজের প্রশংসায় নিজে এতোই অন্ধ যে নিজেকে সে ঈশ্বরের থেকেও বড় মনে করে। সে যা বলে তা আর কেউ কোনদিন শোনেনি। সে ঈশ্বর সম্পর্কে যা তা বলে বেড়ায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঈশ্বর স্থির করবেন যে এই ভয়ানক সময় শেষ হবে, উত্তরের রাজা এ ব্যাপারে সফল হবেন। কারণ কি ঘটতে যাচ্ছে তা ঈশ্বর পূর্বেই পরিকল্পনা করে রেখেছেন।

37 “উত্তরের রাজা তার পূর্বপুরুষদের দেবতাদেরও মানবে না। স্ত্রীলোকদের কামনার দেবতার মূর্ত্তিকেও সে মানবে না। সে কোন দেবতাকেই গুরুত্ব দেবে না। সে শুধু নিজের গুণগান গেয়ে বেড়াবে আর নিজেকে সমস্ত দেবতাদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। 38 উত্তরের রাজা দুর্গগুলির দেবতা ব্যতীত আর কোন ঈশ্বরের উপাসনা করবে না। কিন্তু উত্তরের রাজা দুর্গসমূহের দেবতাদের উপহারস্বরূপ সোনা, রূপা এবং মণিমানিক্য দেবে এবং তাঁকে সম্মান জানাবে। এই দেবতা তার পূর্বপুরুষদের অজ্ঞাত ছিল।

39 “উত্তরের রাজা ঐ অজ্ঞাত বিদেশী দেবতার সাহায্য নিয়ে দৃঢ় দুর্গগুলিকে আক্রমণ করবে। অন্যান্য দেশের শাসকগণ তার সাথে যোগ দিলে সে তাদের সম্মানিত করবে। সে তার অনেক প্রজাকে ঐ সকল শাসকদের সেবায় নিয়োজিত করবে। শাসকদের পারিতোষিক হিসেবে অনেক জমিজমা দিয়ে দেবে।

40 “অবশেষে দক্ষিণের রাজা উত্তরের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। উত্তরের রাজাই তাকে আক্রমণ করবে। উত্তরের রাজা রথসমূহ, অশ্বারোহী মানুষ এবং যুদ্ধ জাহাজসমূহ দিয়ে আক্রমণ করবে। উত্তরের রাজার সৈন্যরা বন্যার জলের মতো প্রবাহিত হবে। 41 উত্তরের রাজা সুন্দর দেশকে আক্রমণ করবে। উত্তরের রাজার কাছে অনেক দেশ পরাজিত হবে। কিন্তু ইদোম ও মোয়াব এবং অম্মোন দেশের নেতৃবৃন্দ উত্তরের রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবে। 42 উত্তরের রাজা অনেক দেশ আক্রমণ করবে। এমনকি মিশরও উত্তরের রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবে না। 43 মিশরের সমস্ত সোনা, রূপো ও ধনসম্পদ তার হস্তগত হবে। লুবীয়রা এবং কূশীয়রা তার অনুচর হবে। 44 কিন্তু পূর্ব ও উত্তর দেশ থেকে আসা খবর শুনতে পেয়ে উত্তরের রাজা ভীত হয়ে পড়বে এবং সে রাগ করবে। সে অনেকগুলি দেশকে পুরোপুরি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ক্রুদ্ধ হয়ে যাত্রা শুরু করবে। 45 সে সমুদ্র ও সুন্দর পবিত্র পর্বতের মাঝখানে তার রাজকীয় তাঁবু খাঁটাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐ নিষ্ঠুর রাজার মৃত্যু ঘটবে। তার মৃত্যুর সময় তাকে সাহায্য করার জন্য সেখানে কোন ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে না।

12 “স্বপ্নদর্শনে আবির্ভূত ব্যক্তি বলল, ‘দানিয়েল, সেই সময় সেই মহান দূত মীখায়েল উঠে দাঁড়াবে। মীখায়েল তোমার লোকদের রক্ষা করবে। তখন সেখানে এমন সঙ্কট দেখা দেবে, যা আগে কখনও হয়নি। কিন্তু দানিয়েল, সেই সময় পুস্তকে তোমার জাতির মধ্যে যাদের নাম লেখা থাকবে তারা রক্ষা পাবে। সমাধিস্থ মৃতদের মধ্যে অনেকে পুনরায় জেগে উঠবে, তারা আবার জীবন ফিরে পাবে। তারা অমরত্ব পাবে। কেউ কেউ আবার জেগে উঠবে লজ্জার ও অনন্ত ঘৃণার জীবনের উদ্দেশ্যে। জ্ঞানী ব্যক্তিরা আকাশের মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। যারা অন্য লোকদের শেখায় কি করে ভালো জীবনযাপন করতে হয়, তারা নক্ষত্রের মত চিরকাল উজ্জ্বলভাবে চক্চক্ করবে।

“‘কিন্তু দানিয়েল, তুমি এই বাণী অবশ্যই অত্যন্ত গোপনে রাখবে। তুমি এই পুস্তক বন্ধ করে রাখবে। সমাপ্তি সময় না আসা পর্যন্ত তুমি তা গোপন রাখবে। জ্ঞানের জন্য অসংখ্য মানুষ এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করবে। এবং এর ফলে সত্যিকারের জ্ঞানের বৃদ্ধি হবে।’”

তখন আমি, দানিয়েল, সামনে তাকালাম এবং অন্য দুজন ব্যক্তিকে দেখলাম। একজন নদীর এপারে আমার কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং অন্যজন নদীর ওপারে। তাদের মধ্যে একজন, ক্ষৌমবস্ত্র পরিহিত জলের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে বলল, “বিস্ময়কর ঘটনাগুলি ঘটতে আর কত সময় লাগবে? কখন তা সত্যে পরিণত হবে?”

ক্ষৌমবস্ত্র পরিহিত মানুষটি নদীর জলের ওপর দাঁড়িয়ে তার দুহাত স্বর্গের দিকে তুলে ধরল। এবং আমি শুনতে পেলাম সে ঈশ্বরের নামে শপথ নিয়ে বলছে, “সময়, সময় এবং অর্দ্ধ সময়।[a] পবিত্র জাতির ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হবে এবং সমস্ত বিস্ময়কর ঘটনাগুলি অবশেষে সত্যে পরিণত হবে।”

আমি উত্তরটা শুনতে পেলেও তার অর্থ বুঝতে পারলাম না। তাই আমি জিজ্ঞাসা করলাম, “মহাশয়, সবকিছু সত্যে পরিণত হলে কি ঘটবে?”

সে উত্তরে বলল, “দানিয়েল, তুমি তোমার জীবনে ফিরে যাও। এই বাণী লুকানো থাক। সমাপ্তির সময় না আসা পর্যন্ত তা গোপন থাকবে। 10 অনেক লোক শুচি এবং পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু দুষ্ট ও শয়তানরা নিজেদের একই রকম রাখবে। এবং ঐ দুষ্ট লোকরা এই কথা বুঝতে পারবে না। কিন্তু জ্ঞানী লোকরা বুঝতে পারবে।

11 “নিত্য নৈবেদ্য বন্ধ হবে। তখন থেকে মন্দিরে ভয়ানক জিনিষটি রাখার দিন পর্যন্ত 1290 দিন থাকবে। 12 যারা 1335 দিন ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে থাকতে পারবে, তারা অত্যন্ত সুখী হবে।

13 “দানিয়েল, তোমার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকো। তুমি তোমার বিশ্রাম পাবে। সময়ের শেষে তুমি মৃত্যু থেকে জেগে উঠবে এবং তোমার প্রাপ্য আশীর্বাদসমূহ পাবে।”

যিহূদা

আমি যিহূদা, যীশু খ্রীষ্টের দাস এবং যাকোবের ভাই, এই চিঠি তাদের উদ্দেশ্যে লিখছি যাদের ঈশ্বর আহ্বান করেছেন।

পিতা ঈশ্বর তোমাদের ভালোবাসেন এবং যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা তোমাদের রক্ষা করেন।

ঈশ্বর তাঁর দয়া, শান্তি এবং প্রেম আরো অধিক পরিমাণে তোমাদের জীবনে দান করুন।

অধার্মিক লোকদের ঈশ্বর শাস্তি দেবেন

প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের সকলের জন্য যে পরিত্রাণের ব্যবস্থা রয়েছে তারই বিষয়ে আমি তোমাদের কিছু লিখতে আগ্রহী ছিলাম। কিন্তু তবু একবার যে বিশ্বাস তোমরা লাভ করেছ, বা চিরদিনের জন্য উত্তম, যা ঈশ্বর তাঁর পবিত্র লোকদের দিয়েছেন, তার পক্ষে যেন তোমরা প্রাণপণে যুদ্ধ কর সেই বিষয়ে উৎসাহ দেবার জন্য তোমাদের কাছে লেখা দরকার বলে আমি মনে করলাম। কারণ এমন কিছু লোক গোপনে তোমাদের দলে ঢুকে পড়েছে যাদের সম্বন্ধে বহুপূর্বেই শাস্ত্রে দণ্ডাজ্ঞার কথা লেখা হয়েছে। এই অধার্মিক লোকরা ঈশ্বরের অনুগ্রহকে তাদের অনৈতিক কাজকর্মের অজুহাতে পরিণত করেছে; আর যীশু খ্রীষ্ট যে আমাদের একমাত্র কর্তা ও প্রভু তা এরা অস্বীকার করে।

আমি তোমাদের কিছু কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যদিও তোমরা সকলেই এসব বিষয় জান। তবু বলব প্রভু মিশর দেশ থেকে তাঁর প্রজাদের উদ্ধার করে পরে যারা অবিশ্বাসী তাদের সকলকে ধ্বংস করেছিলেন। আমি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যে সেই স্বর্গদূতরা যারা নিজেদের আধিপত্য রক্ষা না করে নিজ বাসস্থান ত্যাগ করেছিল, তাদের তিনি (ঈশ্বর) ঘোর অন্ধকার কারাগারে অনন্তকালীন শেকলে বেঁধে রেখেছেন আর মহাবিচারের দিনে তাদের বিচার করা হবে। সদোম, ঘমোরা ও তাদের আশেপাশের নগরগুলির কথা ভুলে যেও না। এই স্বর্গদূতদের মতো তারাও নীতিহীন যৌনতায় প্রবৃত্ত হত এবং অস্বাভাবিক যৌনসংসর্গে লিপ্ত হত। অনন্ত আগুনে শাস্তি ভোগ করে তারা আমাদের সামনে দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে রয়েছে।

একইভাবে এই লোকরা, যারা তোমাদের দলে এসেছে, তারা নিজেদের স্বপ্ন দ্বারা চালিত হয় এবং নিজেদের দেহকে পাপে কলুষিত করে। তারা প্রভুর কর্তৃত্ত্ব (নিয়ম) অগ্রাহ্য করে আর যারা সম্মানীয় ব্যক্তি তাদের নিন্দা করে। কিন্তু প্রধান স্বর্গদূত মীখায়েলের কথা আমরা জানি, যখন তিনি মোশির দেহ নিয়ে দিয়াবলের সঙ্গে তর্ক করছিলেন তখন তিনি দিয়াবলকে কোন কটু কথা বলতে সাহস করেন নি, তার পরিবর্তে শুধু বলেছিলেন, “প্রভু তোমাকে তিরস্কার করুন।”

10 কিন্তু এই লোকরা যে সব বিষয় বোঝে না তারই নিন্দা করে; আর চিন্তা দ্বারা নয় বরং তাদের স্বাভাবিক অনুভূতির দ্বারা যা বোঝে, যুক্তিবিহীন পশুদের মত তাই করে নিজেদের ধ্বংস ডেকে আনে। 11 তাদের ধিক্, কারণ কয়িন যে পথে গিয়েছিল তারাও সেই পথ ধরেছে। তারা বিলিয়মের মতো টাকার লোভে ভ্রান্ত পথে চলেছে। আর কোরহের মতো বিদ্রোহী হয়ে ধ্বংসের পথে চলেছে।

12 এইসব লোকরা তোমাদের প্রেমভোজে ময়লা দাগের মতো। কোন ভয় না করে তারা তোমাদের সঙ্গে ভোজ খায় এবং কেবল নিজেদের কথাই ভাবে। তারা হাওয়ায় ভেসে যাওয়া বৃষ্টিহীন মেঘের মতো, ফলনের ঋতুতে ফলহীন বলে শেকড় সমেত উপড়ে ফেলা গাছের মতো; সুতরাং তারা দুই বার মৃত। 13 তাদের লজ্জাজনক কাজ উত্তাল সমুদ্রে তৈরী ছড়িয়ে যাওয়া ফেনার মতো। ঐ লোকগুলি আকাশে ইতস্ততঃ ভ্রমণরত তারার মতো। ঘনতম অন্ধকারের মধ্যে তাদের জন্য এক অনন্তকালীন স্থান রয়েছে।

14 আদমের থেকে সপ্তম পুরুষ যে হনোক, তিনিও এই লোকদের সম্বন্ধে ভাববাণী করেছেন: “দেখ তাঁর লক্ষ লক্ষ পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে নিয়ে প্রভু আসছেন। 15 তিনি সকলের বিচার করার জন্য এবং সকলকে তাদের কৃত সকল অধার্মিক কাজকর্মের জন্য শাস্তি দিতে আসছেন। এইসব অধার্মিক পাপী তাঁর বিরুদ্ধে যত সব উদ্ধত কথাবার্তা বলেছে সেই কারণে তাদের দোষী ঘোষণা করার জন্য আসছেন।”

16 তারা সব সময় অভিযোগ ও নিন্দা করে, তাদের নিজেদের অভিলাষ অনুসারে চলে। নিজেদের বিষয়ে গর্ব করে এবং লাভের আশায় তারা অন্যদের তোষামোদ করে।

একটি সতর্কবাণী ও কিছু কাজের কথা

17 প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিতরা যা বলে গেছেন তা মনে রেখো। 18 তাঁরা তো তোমাদের বলতেন, “শেষের সময় এমন সব উপহাসকরা আসবে যারা নিজেদের ইচ্ছানুযায়ী ঈশ্বর-বিরুদ্ধ কাজ করবে।” 19 এই লোকরাই তোমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। তারা তাদের পাপ প্রবৃত্তির দাস। তাদের সেই আত্মা নেই।

20 কিন্তু প্রিয় বন্ধু, তোমরা নিজেদের পরম পবিত্র বিশ্বাসের ওপর গেঁথে তোল। পবিত্র আত্মাতে প্রার্থনা কর। 21 নিজেদের ঈশ্বরের প্রেমে রাখ; আর অনন্ত জীবনের জন্য আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দয়া লাভের অপেক্ষায় থাক।

22 যাদের মনে সন্দেহ আছে, এমন লোকদের সাহায্য কর। 23 নরকের আগুন থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তাদের পরিত্রাণ দ্বারা রক্ষা কর। অন্যদের প্রতি সতর্কভাবে করুণা প্রদর্শন কর; কিন্তু পাপের দ্বারা কলঙ্কিত তাদের বস্ত্রকে ঘৃণা কর।

ঈশ্বরের প্রশংসা কর

24 ঈশ্বর শক্তিশালী, তিনি তোমাদের পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবেন আর নিজের মহিমার সামনে নির্দোষ অবস্থায় আনন্দের সঙ্গে তোমাদের উপস্থিত করতে তিনি সক্ষম। 25 তিনিই একমাত্র ঈশ্বর, আমাদের উদ্ধারকর্তা। আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা তাঁরই প্রতাপ, মহিমা, পরাক্রম ও কর্তৃত্ত্ব যুগপর্যায়ে যুগে যুগে অবিচল থাকুক্। আমেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International