Old/New Testament
বাবিলের সৈন্যরা মিশর আক্রমণ করবে
30 প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল, তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, আমার হয়ে ভাববাণী করে বল, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলো বলেন:
“‘চিৎকার করে বল,
“সেই ভয়ঙ্কর দিন আসছে।”
3 সেই দিন নিকট!
হ্যাঁ, প্রভুর সেই বিচারের দিন নিকটেই।
সেই দিন হবে মেঘাচ্ছন্ন এক দিন,
সেটা হবে জাতিগণের বিচারের দিন!
4 মিশরের বিরুদ্ধে একটি তরবারি আসবে এবং তার পতন হবে!
তাই দেখে, কূশ দেশের লোকরা ভয়ে কাঁপবে।
বাবিলের সৈন্যরা মিশরের লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবে।
মিশরকে তার ভিত্তি থেকে উৎপাটন করা হবে!
5 “‘বহু লোক মিশরের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিল, যেমন কূশ, পূট, লূদ-এর লোকরা, আরবীয়রা সবাই এবং লিবিয়ার লোকরা। কিন্তু তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এবং যারা চুক্তি করেছিল সেই সমস্ত লোকরাও[a] ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে!
6 “‘প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:
“যারা মিশরের স্তম্ভের মত তারা পতিত হবে।
তার পরাক্রমের যে গর্ব তার শেষ হবে।
মিগ্দোল থেকে সিবেনী পর্যন্ত মিশরের লোকে যুদ্ধে হত হবে।”
প্রভু আমার সদাপ্রভুই এইসব কথা বলেছেন!
7 যে সব দেশ ধ্বংস হয়েছিল
মিশর তাদের সঙ্গে যোগ দেবে।
মিশরের শহরগুলো
ঐ শূন্য শহরগুলোর মধ্যে থাকবে।
8 আমি মিশরে এক আগুন লাগাব,
আর তার সমস্ত সাহায্যকারীরা ধ্বংস হবে।
তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!
9 “‘সেই সময় আমি বার্তাবাহক পাঠাব, যারা জাহাজে করে সেই দুঃসংবাদ নিয়ে কূশ দেশে যাবে। কূশ এখন নিজেকে নিরাপদ ভাবে কিন্তু মিশরকে শাস্তি পেতে দেখে কূশ ভয়ে কাঁপবে। সেই দিন আসছে!’”
10 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
“আমি মিশর ধ্বংস করার জন্য
বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসরকে ব্যবহার করব।
11 নবূখদ্রিৎসর ও তার লোকরা সমস্ত জাতির মধ্যে ভয়াবহ।
আমি মিশর ধ্বংস করার জন্য তাদের আনব।
তারা মিশরের বিরুদ্ধে তাদের খড়্গ বার করে দেশ শবে পূর্ণ করবে।
12 আমি নীল নদকে শুষ্ক ভূমিতে পরিণত করব।
তারপর সেই শুষ্ক ভূমি আমি দুষ্ট লোকদের কাছে বেচে দেব।
আমি সেই দেশ শূন্য করতে বিদেশীদের ব্যবহার করব।
আমিই প্রভু এই কথা বলেছি!”
মিশরের মূর্ত্তিগুলি ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে
13 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন:
“আমি মিশরের মূর্ত্তিদেরও ধ্বংস করব।
আমি নোফ থেকেও মূর্ত্তিগুলো দূর করব।
মিশরে কোন নেতা থাকবে না
আর আমি মিশর দেশে ভয় সৃষ্টি করব।
14 আমি পথ্রেষকে শূন্য করে দেব।
আমি সোয়নে আগুন লাগাব।
আমি থিব্স্কে শাস্তি দেব।
15 এবং আমি মিশরের দুর্গ বেষ্টিত শহর সীনের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ ঢেলে দেব।
আমি থিব্স্-এর লোকদের ধ্বংস করব!
16 আমি মিশরে আগুন লাগাব।
সীন শহর ভয়ে ছটফট করবে।
সৈন্যরা থিব্স্এ প্রবেশ করবে
আর প্রতিদিন নোফে নতুন নতুন সমস্যা দেখা দেবে।
17 আবেন ও পী-বেশতের যুবকরা যুদ্ধে মারা পড়বে।
আর স্ত্রীলোকদের বন্দী করা হবে।
18 সেই দিন, দিনের বেলায় তফন্হেষে অন্ধকার নেমে আসবে।
কারণ আমি সেই স্থানে মিশরের ক্ষমতা ভেঙে দেব।
মিশরের নির্ভিকতার গর্ব শেষ হবে।
একটা মেঘ মিশরকে ঢেকে দেবে আর তার কন্যাদের বন্দী করা হবে।
19 সুতরাং আমি মিশরকে শাস্তি দেব।
তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
মিশর চিরদিনের জন্য দুর্বল হয়ে পড়বে
20 নির্বাসনের এগারোতম বছরের প্রথম মাসের সপ্তম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল; তিনি বললেন, 21 “মনুষ্যসন্তান, আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বাহু ভগ্ন করেছি। পটি দিয়ে কেউ তার সেই হাত বেঁধে দেবে না। তা আরোগ্যও হবে না তাই সেই হাত তরবারিও ধরতে পারবে না।”
22 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন, “আমি মিশরের রাজা ফরৌণের বিরুদ্ধে। আমি তার দুটো হাতই ভেঙে ফেলব, শক্ত হাতটা আর যে হাতটা ইতিমধ্যেই ভেঙে ফেলা হয়েছে সেটাকেও। আমি তার হাত থেকে খড়্গ ফেলে দেব। 23 আমি মিশরীয়দের জাতিগণের মধ্যে ছিন্ন ভিন্ন করে দেব। আমি তাদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেব।
24 “আমি বাবিলের রাজার হাত শক্ত করে তার হাতে আমার তরবারি দেব। কিন্তু আমি ফরৌণের হাত ভেঙ্গে দেব। তখন ফরৌণ ব্যথায চিৎকার করে কাঁদবে যেমন একজন মৃত্যু পথযাত্রী আহত মানুষ কাঁদে। 25 তাই আমি বাবিলের রাজার হাত দৃঢ় করব কিন্তু ফরৌণের বাহু খসে পড়বে এবং তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।
“আমি বাবিলের রাজার হাতে খড়্গ দেব আর সে মিশর দেশের বিরুদ্ধে তা ব্যবহার করবে। 26 আমি মিশরীয়দের জাতিগণের মধ্যে ছড়িয়ে দেব এবং তাদের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
বিশাল এরস বৃক্ষ
31 নির্বাসনের এগারোতম বছরের তৃতীয় মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, এই কথাগুলি মিশরের রাজা ফরৌণ ও তার প্রজাদের গিয়ে বল।
“‘তুমি এত মহান!
তোমার সঙ্গে আমি কার তুলনা করব?
3 অশূরীয় হল লিবানোনের একটি এরস বৃক্ষের মত।[b]
তার শাখাসকল সুন্দর,
ঘন ছায়া বিশিষ্ট
আর দৈর্ঘ্যে বেশ লম্বা হওয়ায়
তার মাথা ছিল মেঘের মধ্যে!
4 জলে সেই গাছের বৃদ্ধি হত।
গভীর নদী সেই বৃক্ষকে আরো লম্বা করেছিল।
যেখানে বৃক্ষটি রোপণ করা হয়েছিল
সেই জায়গারই কাছাকাছি নদীটি বয়ে যেত।
এবং নদীটির সেই ভাগ থেকে ছোট ছোট জলধারা
ঐ জমির অন্যান্য গাছগুলির কাছে বয়ে যেত।
5 তাই সেই বৃক্ষ ক্ষেত্রের অন্যান্য বৃক্ষের চেয়ে উচ্চতায় লম্বা ছিল।
আর তাতে অনেক শাখাও জন্মাল।
অনেক জলও ছিল
তাই গাছের শাখাগুলি ছড়িয়ে গেল।
6 আকাশের সমস্ত পাখি
সেই গাছের ডালে বাসা বাঁধল।
আর মাঠের সমস্ত পশু
সেই শাখার তলায় সন্তান প্রসব করল।
সমস্ত মহান জাতি
সেই গাছের ছায়ায় বাস করল।
7 সেই বৃক্ষ অতি সুন্দর,
অতি বৃহৎ ও লম্বা ডাল যুক্ত ছিল।
তার মূলগুলি প্রচুর জলও পেত!
8 এমনকি ঈশ্বরের বাগানের
এরস বৃক্ষও এত বড় ছিল না।
দেবদারু গাছেরও এতগুলো শাখা ছিল না।
এমনকি অম্মোন বৃক্ষেরও এত শাখা ছিল না।
ঈশ্বরের বাগানের
কোন বৃক্ষই এত সুন্দর ছিল না।
9 আমি তাকে অনেক শাখা বিশিষ্ট
ও সুন্দর করলাম।
এই দেখে, এদনের বৃক্ষগুলি, যেগুলি ঈশ্বরের বাগানে ছিল,
ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠল।’”
10 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন: “সেই গাছ বড় হল, তার মাথা মেঘ ছুঁলো আর তা এত উঁচু বলে তার মনে গর্ব হল! 11 সেই জন্য আমি একজন শক্তিশালী রাজার হাতে সেই বৃক্ষের ওপর নিয়ন্ত্রণভার দিলাম। সেই শাসক তার মন্দ কাজের জন্য সেই বৃক্ষকে শাস্তি দিল। আমি সেই বৃক্ষকে আমার উদ্যান থেকে তুলে ফেললাম। 12 বিদেশীরা পৃথিবীর ভয়ঙ্কর লোকরা তা কেটে তার শাখাগুলি পাহাড়ে ও উপত্যকায় ছড়িয়ে দিল। তার ভাঙা ডালগুলি সেই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদী ভাসিয়ে নিয়ে গেল। সেই গাছের তলায় আর ছায়া না থাকায় লোকে তাকে পরিত্যাগ করল। 13 এখন সেই পতিত বৃক্ষে পাখিরা বাস করে; বন্য পশুরা তার পতিত শাখাগুলি মাড়িয়ে যায়।
14 “এখন, জলের ধারের আর কোন গাছ ঐরকম বড়াই করবে না। তারা আর মেঘ পর্যন্ত পৌঁছাতে চাইবে না। যেসব বৃক্ষ জল পান করে, তাদের কেউ আর লম্বা বলে বড়াই করবে না। কারণ তারা সবাই মৃত্যুর জন্য নিরূপিত। তারা সবাই শিওলে চলে যাবে। অন্যরা, যারা মৃত্যুর পরে অগাধ গর্তে নেমেছে তাদের সঙ্গে তারা যোগ দেবে।”
15 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন, “সেই দিন যখন সেই বৃক্ষ শিওলে গেল, আমি লোকদের কাঁদিয়েছিলাম। আমি তাকে গভীর সমুদ্র দ্বারা ঢেকে ফেললাম, নদীগুলির প্রবাহ বন্ধ করে দিলাম যাতে জল আর প্রবাহিত হতে না পারে। আমি লিবানোনকে তার জন্য শোক করালাম, অন্য সব গাছগুলো বড় গাছটির জন্য দুঃখে অসুস্থ হয়ে পড়ল। 16 আমি সেই বৃক্ষের পতন ঘটালাম আর জাতিগণ তার পতনের শব্দে ভয়ে কেঁপে উঠল। আমি সেই বৃক্ষকে মৃত্যুর স্থানে পাঠালাম যেন তা গিয়ে, যারা পাতালে প্রবেশ করেছে এমন সব লোকের সঙ্গে যোগ দিতে পারে। অতীতে, এদনের সব গাছ, লিবানোনের সর্বোৎকৃষ্টরা সেই জল পান করত। সেই সমস্ত বৃক্ষ অগাধ গহবরে শান্তি পেয়েছিল। 17 হ্যাঁ, বড় বৃক্ষটির সঙ্গে ঐ বৃক্ষরাও মৃত্যুর স্থানে নেমে গেল। তারা যুদ্ধে নিহত লোকেদের সাথে যোগ দিল। সেই বড় বৃক্ষটি অন্য বৃক্ষদের বলবান করল। ঐ বৃক্ষগুলি জাতিগণের মধ্যে বড় বৃক্ষের ছায়ায় বাস করেছিল।
18 “হে মিশর, এদনে অনেক বড় ও বলবান বৃক্ষ ছিল। তার মধ্যে কোন বৃক্ষটির সঙ্গে আমি তোমার তুলনা করব? তারা সবাই অতল গহ্বরে চলে গেছে এবং তুমিও পাতালে ঐ বিদেশীদের সঙ্গে যোগ দেবে। তুমিও সেখানে যুদ্ধে হত লোকদের মধ্যে পড়ে থাকবে।
“হ্যাঁ, ফরৌণের প্রতি এটা ঘটবে আর তা ঘটবে তার সঙ্গে থাকা লোকের ওপর!” প্রভু, আমার সদাপ্রভুই এইসব কথা বলেন।
ফরৌণ সিংহ না দানব
32 দ্বাদশতম বছরের নির্বাসনের দ্বাদশতম মাসের প্রথম দিনে প্রভুর এই বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন: 2 “হে মনুষ্যসন্তান, মিশরের রাজা ফরৌণের সম্বন্ধে শোকের এই গান গেয়ে তাকে বল:
“‘তুমি নিজেকে উপজাতির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যাওয়া যুব সিংহের মত মনে করতে।
কিন্তু আসলে তুমি হ্রদের দানবের মত।
তুমি জলস্রোতের মধ্যে পথ করে নিয়ে এগিয়ে যেতে,
তোমার পা দিয়ে তুমি জল কাদাময় করে তুলতে।
তুমিই নদীগুলিকে আলোড়িত করে দিতে।’”
3 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেন:
“আমি বহু লোক জন একত্র করেছি।
এবার আমি তোমার উপরে আমার জাল ছুঁড়ব।
তারপর লোকে তোমায় টেনে তুলবে।
4 তারপর আমি তোমায় মাটিতে ফেলে দেব।
আমি তোমায় মাঠে ছুঁড়ে ফেলব।
আকাশের সমস্ত পাখী যাতে তোমার ওপর বিশ্রাম করে সেই ব্যবস্থাই আমি করব।
সমস্ত বন্য পশুরা এসে তৃপ্ত না হওয়া পর্যন্ত যাতে তোমাকে খেয়ে নেয় তার ব্যবস্থা আমি করব।
5 আমি তোমার দেহ পর্বতের উপরে ছড়িয়ে দেব।
উপত্যকাগুলি আমি তোমার মৃতদেহে পূর্ণ করে দেব।
6 আমি তোমার রক্ত পর্বতের উপর
ঢেলে মাটি ভিজিয়ে ফেলব।
নদীগুলি তোমার দ্বারা পূর্ণ হবে।
7 আমি তোমাকে অদৃশ্য করে দেব।
আমি আকাশ ঢেকে ফেলে তারাগুলিকে অন্ধকারময় করব।
আমি সূর্যকে মেঘের পেছনে লুকিয়ে রাখব।
আমি তোমার সমস্ত আলোকে অন্ধকার করে দেব।
8 কয়েকটি আলো আছে যা আকাশকে আলোকিত করে,
কিন্তু তোমার কাছে সেগুলো যাতে অন্ধকার দেখায় আমি তার ব্যবস্থা করব।
আমি তোমার সমস্ত দেশগুলিকে অন্ধকারময় করে দেব।”
প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেন।
9 “আমি যখন তোমাদের বন্দী হিসেবে যে দেশ তোমরা জান না এমন এক দেশে পাঠাব তখন বহু লোক দুঃখিত ও চিন্তাগ্রস্ত হবে। 10 উপজাতি তোমায় দেখে অবাক হয়ে যাবে। আমি যখন আমার তরবারিটি তাদের সামনে দোলাব তখন তারা তোমার দরুণ ভয়ে কাঁপবে। তোমার পতনের দিনে, প্রতি মুহুর্তে রাজারা ভয়ে কাঁপবে, প্রত্যেকে তার নিজের জীবনের জন্য ভীত হবে।”
11 কারণ প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেছেন: “বাবিলের রাজার তরবারি তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসবে। 12 আমি তোমার লোকদের হত্যা করার জন্য ঐসব সৈন্যদের ব্যবহার করব। ঐ সৈন্যরা ভয়ঙ্কর জাতির লোক; মিশর যা নিয়ে গর্ব করে তা তারা ধ্বংস করবে। মিশরের লোক জনও ধ্বংস হবে। 13 মিশরের নদীর ধারে যত পশু আছে আমি তাদের সব ধ্বংস করব। ফলে লোকরা তাদের পায়ে পায়ে আর জল ঘোলা করবে না, পশুদের ক্ষুরের দ্বারাও জল আর ঘোলা হবে না। 14 অর্থাৎ আমি মিশরের জল শান্ত করব। তাদের নদীগুলো আস্তে আস্তে তেলের মত বইবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এই কথা বলেছেন। 15 “আমি মিশরকে একটি শূন্য স্থানে পরিণত করব। দেশটি সব কিছুই হারাবে। মিশরে বাসকারী সমস্ত লোককেই আমি শাস্তি দেব। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু।
16 “অন্য জাতির লোকরা ও কন্যারা এই শোকের গান গাইবে। মিশর ও মিশরের লোকেদের সম্বন্ধে তার শোকের এই গান গাইবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই এইসব কথা বলেছেন।
মিশর ধ্বংসের জন্য রয়েছে
17 নির্বাসনের দ্বাদশতম বছরের প্রথম মাসের পঞ্চদশ দিনে প্রভুর এই বার্তা আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, মিশরের লোকদের জন্য কাঁদ। মিশর এবং সেই শক্তিশালী জাতিদের কবরের দিকে পরিচালিত কর; তাদের পাতালের দিকে পরিচালিত কর। যেখানে তারা অন্যান্য গর্তগামীদের কাছে যাবে।
19 “মিশর তুমি অন্য কারও চেয়ে উৎকৃষ্ট নও! মৃত্যুর স্থানে যাও, ঐ সমস্ত বিদেশীদের সঙ্গে গিয়ে শোও।
20 “যুদ্ধে যারা নিহত হয়েছিল মিশর তাদের কাছে যাবে। যুদ্ধে মিশর নিজেই নিহত হয়েছিল। শত্রুরা তাকে এবং তার সমস্ত লোককে টেনে নিয়েছে।
21 “বলবান ও শক্তিশালী লোক যুদ্ধে হত হয়েছিল। ঐসব বিদেশী লোকরা মৃত্যুর স্থানে নেমে গিয়েছিল। ঐ স্থানে যারা হত হয়েছিল তারা মিশর এবং তার সাহায্যকারীর সাথে কথা বলবে।
22-23 “মৃত্যুর সেই স্থানে অশূর ও তার সমস্ত সৈন্যরা রয়েছে; তাদের কবর রয়েছে সেই গভীরতম গর্তে। ঐসব অশূরীয় সৈন্যরা যুদ্ধে হত হয়েছিল আর তাদের কবরগুলি তার ঐ কবরের পাশেই রয়েছে। জীবিত কালে তারা লোকদের ভীত করত কিন্তু এখন তারা সবাই শান্ত; তারা সবাই যুদ্ধে নিহত হয়েছে।
24 “এলম সেখানে রয়েছে; তার সৈন্যরা তার কবরের চারপাশে রয়েছে; তাদের সবাই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। ঐ বিদেশীরা গভীরতম গর্তে গিয়েছে। জীবিত কালে তারা লোকদের ভীত করত কিন্তু তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীর গর্তে গিয়েছে। 25 যুদ্ধে নিহত সমস্ত সৈন্য ও এলমের জন্য তারা বিছানা পেতেছে। এলমের সৈন্যরা তার কবরের চারপাশে রয়েছে। ঐসব বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। জীবিত কালে তারা লোকেদের সন্ত্রস্ত করত কিন্তু তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীর গর্তে গিয়েছে। তারা নিহত অন্যসব লোকেদের সঙ্গে রয়েছে।
26 “মেশক, তূবল এবং তাদের সব সেনারা ঐখানে রয়েছে; তাদের কবরও তারই পাশে। ঐসব বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। এরাই জীবিতকালে লোকদের ভীত করত। 27 এখন তারা বহু পূর্বে যে সব শক্তিশালী লোকরা মারা গিয়েছিল তাদের সাথে শায়িত। তারা তাদের যুদ্ধের অস্ত্র সমেত কবরস্থ। তাদের অস্ত্রগুলি তাদের মাথার নীচে কিন্তু পাপ তাদের হাড়ের মধ্যে কারণ তাদের জীবন কালে তারা লোকদের ভীত করেছিল।
28 “মিশর, তুমিও ধ্বংস হবে এবং ঐসব বিদেশীদের পাশে শয়ন করবে। তুমি ঐসব অন্য সৈন্যরা, যারা যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তাদের সাথে শয়ন করবে।
29 “ইদোমও সেখানে রয়েছে; তার রাজারা অন্য নেতাদের সঙ্গে সেখানে রয়েছে। তারাও শক্তিশালী সৈন্য ছিল কিন্তু এখন তারা যুদ্ধে হত অন্যান্য লোকদের সঙ্গে শায়িত। তারা ঐখানে ঐ বিদেশীদের পাশে শায়িত। গভীরতম গর্তে যারা গেছে তাদের সাথে তারা সেখানে রয়েছে।
30 “উত্তরের শাসকরা সবাই সেখানে রয়েছে। সীদোনের সব সৈন্যরা সেখানে রয়েছে। তাদের শক্তি লোকদের সন্ত্রস্ত করেছিল কিন্তু এখন তারা সবাই লজ্জিত। ঐ বিদেশীরা যুদ্ধে নিহত অন্য লোকদের সাথে শায়িত। তারা তাদের লজ্জা সমেত ঐ গভীরতম গর্তে গিয়েছে।
31 “যারা মৃত্যুর স্থানে গিয়েছে ফরৌণ তাদের দেখবে। ফরৌণ ও তার লোকরা দেখে সান্তনা লাভ করবে। হ্যাঁ, তার সমস্ত সৈন্য যুদ্ধে নিহত হবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন।
32 “ফরৌণ তার জীবদ্দশায় লোকদের ভয় দেখিয়েছিল। কিন্তু এখন সে ঐ বিদেশীদের সঙ্গে শয়ন করবে। ফরৌণ ও তার সৈন্যবাহিনী যুদ্ধে নিহত অন্য সৈন্যদের সঙ্গে শয়ন করবে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
পরিবর্তিত জীবন
4 তাই বলছি, খ্রীষ্ট নিজেই যখন তাঁর মরদেহে দুঃখভোগ করলেন, তখন তোমরাও সেই একই মনোভাব নিয়ে নিজেদের মনটাকে দৃঢ় কর, কারণ দেহে যার দুঃখভোগ হয়েছে, সে পাপ করা থেকে নিবৃত্ত হয়েছে। 2 নিজেদের শক্তিশালী করে তোলো যাতে মানবিক বাসনার অনুগামী না হয়ে তোমরা বাকি জীবন ঈশ্বর তোমাদের কাছে যা চান তা করে কাটাতে পার। 3 কারণ অতীতে অবিশ্বাসীরা যেমন চলেছিল তেমনি চলে তোমরা অনেক সময় নষ্ট করেছ। তোমরা যৌন পাপে ও কামোচ্ছাসে লিপ্ত ছিলে এবং হুল্লোড়পূর্ণ মাতলামিতে ভরা ভোজসভায় যোগ দিয়ে ও ঘৃন্য মূর্তিপূজা করেই তো দিন কাটিয়েছ।
4 কিন্তু এখন সেই অবিশ্বাসী লোকেরাই দেখে আশ্চর্য হয় যে তোমরা আর সেই জংলী বেপরোয়া জীবনযাপনে যোগ দাও না; আর সেই জন্য তারা তোমাদের গালাগালি ও অপবাদ দেয়। 5 কিন্তু তাদের এই রকম আচরণের জন্য তাঁর (খ্রীষ্টের) কাছে কৈফিয়ত্ দিতে হবে, যিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন। 6 এই কারণেই এই সুসমাচার সেই সমস্ত বিশ্বাসীদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল যাঁরা আজকে মৃত; যেন দৈহিকভাবে মানুষের মত তাঁদের মৃত্যুর বিধান দেওয়া হলেও ঈশ্বরের মত তাঁরা আত্মার দ্বারা অনন্তকাল বাস করেন।
উপযুক্ত অধ্যক্ষ হও
7 সেই সময় ঘনিয়ে আসছে যখন সবকিছুই শেষ হবে, সুতরাং মন স্থির রাখ ও আত্মসংযমী হও। এটা তোমাদের প্রার্থনা করতে সাহায্য করবে। 8 সব থেকে বড় কথা এই যে তোমরা পরস্পরকে একাগ্রভাবে ভালবাস, কারণ ভালবাসা অনেক অনেক পাপ ঢেকে দেয়। 9 কোনরকম অভিযোগ না করে পরস্পরের প্রতি অতিথিপরায়ণ হও। 10 তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে যে যেমন আত্মিক উপহার পেয়েছ, সেই অনুসারে উপযুক্ত অধ্যক্ষের মত একে অপরকে সাহায্য কর। 11 যদি কেউ প্রচার করে, তবে সে এমনভাবে তা করুক, যেন ঈশ্বরের বাক্য বলছে। যদি কেউ সেবা করে, সে ঈশ্বরের দেওয়া শক্তি অনুসারেই তা করুক, যাতে সব বিষয়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রশংসিত হন। গৌরব ও পরাক্রম যুগে যুগে তাঁরই হোক্। আমেন।
খ্রীষ্টীয়ান হিসাবে দুঃখভোগ
12 প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের যাচাই করার জন্য যে কষ্টের আগুন তোমাদের মধ্যে জ্বলছে, তাতে তোমরা আশ্চর্য হয়ো না। কোন অদ্ভুত কিছু তোমাদের জীবনে ঘটছে বলে মনে করো না। 13 বরং তোমরা আনন্দ করো যে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের ভাগীদার হতে পেরেছ। এরপর তাঁর মহিমা যখন প্রকাশ পাবে তখন তোমরা মহা আনন্দ লাভ করবে। 14 তোমরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছ বলে কেউ যদি তোমাদের অপমান করে, তবে তোমরা ধন্য, কারণ ঈশ্বরের মহিমার আত্মা তোমাদের মধ্যে বিরাজ করছে। 15 তোমাদের মধ্যে কেউ যেন খুনী, কি চোর, কি দুষ্কর্মকারী রূপে বা অন্যায়ভাবে অন্যের ব্যাপারে হাত দিয়ে দুঃখভোগ না করে। 16 কিন্তু যদি কেউ খ্রীষ্টীয়ান বলে দুঃখভোগ করে, তবে সে যেন লজ্জা না পায়, কিন্তু তার সেই নাম (খ্রীষ্টীয়ান) আছে বলে সে ঈশ্বরের প্রশংসা করুক। 17 বিচার আরম্ভ হবার সময় হয়েছে এবং তা ঈশ্বরের লোকদের থেকেই শুরু করা হবে। সেই বিচার যদি আমাদের থেকেই শুরু করা হয় তবে যারা ঈশ্বরের সুসমাচার প্রত্যাখ্যান করে তাদের পরিণাম কি হবে?
18 শাস্ত্র যেমন বলে, “নীতিপরায়ণদের পরিত্রাণ লাভ যদি এমন কঠিন হয়
তবে যারা ঈশ্বরবিহীন ও পাপী তাদের কি হবে?”(A)
19 যারা ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখভোগ করছে, তারা সেই বিশ্বস্ত সৃষ্টিকর্তার হাতে নিজেদের (আত্মাকে) সঁপে দিক এবং ভাল কাজ করে যাক্।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International