Old/New Testament
11 তারপর আত্মা আমাকে প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায় বয়ে নিয়ে গেল। এই দরজার মুখ পূর্বদিকে যেদিকে সূর্য ওঠে সেই দরজার মুখে আমি 25 জন পুরুষ দেখতে পেলাম। অসূরের পুত্র যাসনিয় এইসব লোকদের সঙ্গে ছিল। বনায়ের পুত্র প্লটিয় সেখানে ছিল। এই দুই জন ছিল লোকদের অধ্যক্ষ।
2 তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, এরাই সেই লোক যারা এই শহরের মধ্যে মন্দ পরিকল্পনাগুলি করছে। তারা সব সময়েই লোকদের মন্দ কাজ করতে বলে। 3 এই লোকরা বলে, ‘আমরা খুব শীঘ্রই আমাদের বাড়ীঘর বানাব। আমরা হলাম রান্নার হাঁড়ির ভেতর মাংসের মতন।’ 4 তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে লোকেদের কাছে বলবে। মনুষ্যসন্তান, যাও লোকেদের কাছে গিয়ে ভাববাণী কর।”
5 তখন প্রভুর আত্মা আমার কাছে এল। তিনি আমায় বললেন, “তাদের বল প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ইস্রায়েলের গৃহ, তুমি বড় বড় পরিকল্পনা করছ। কিন্তু আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছ। 6 এই শহরে তুমি অনেক লোক হত্যা করেছ। শহরের রাস্তা মৃতদেহে ভরিয়ে দিয়েছ। 7 এখন প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘ঐ মৃতদেহরা মাংস আর শহরটা পাত্র। কিন্তু নবূখদ্নিৎসর তোমাদের এর মধ্যে থেকে বার করে আনা হবে! 8 তোমরা তরবারির ভয়ে ভীত। কিন্তু আমি আর কারো নয়, শুধু তোমার বিরুদ্ধেই তরবারিটি আনছি।’” প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
9 ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের শহরের বাইরে নিয়ে যাব। আর বিদেশীদের হাতে তুলে দেব। আমি তোমাদের শাস্তি দেব! 10 তোমরা তরবারির ঘায়ে মারা যাবে। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতে তোমাদের শাস্তি দেব, যেন তোমরা জান যে আমিই তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি, আমিই প্রভু। 11 হ্যাঁ, এই জায়গা রান্নার পাত্র হয়ে উঠবে না। আর তোমরা তার মধ্যে পাক করা মাংস হবে না। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতেই তোমাদের শাস্তি দেব। 12 তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। আমার আজ্ঞা তোমরা লঙ্ঘন করেছিলে। তোমরা আমার পথ অনুসরণ করনি। পরিবর্ত্তে, তোমরা তোমাদের চার দিকের জাতিদের পথই অনুসরণ করেছিলে!”
13 আমি যেই ঈশ্বরের কথা বলা শেষ করলাম, বনায়ের পুত্র প্লটিয় মারা গেল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। উপুড় হয়ে মাটিতে মুখ ঠেকিয়ে জোরে কেঁদে উঠে আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আপনি কি অবশিষ্ট ইস্রায়েলীয়দের সবাইকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবেন?”
14 কিন্তু তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 15 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পরিবারগুলি অর্থাৎ তোমার ভাইদের, যারা ইস্রায়েল দেশটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল তাদের স্মরণ কর। কিন্তু এখন জেরুশালেমের অধিবাসীরা বলছে, ‘প্রভুর কাছ থেকে তারা বহু দূরে চলে গিয়েছিল। এই দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছিল—এটা আমাদেরই!’
16 “তাই ঐ লোকদের এই বিষয়গুলি বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘এটা সত্য যে আমি আমার প্রজাদের দূরের দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম। আমিই তাদের বহু দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য ঐসব দেশে আমিই তাদের মন্দির হব। 17 কিন্তু তুমি ঐসব লোকদের অবশ্যই বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের ফিরিয়ে আনবেন। আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমি তোমাদের আবার এক জায়গায় সংগ্রহ করব এবং ঐসব জাতির মধ্যে থেকে ফিরিয়ে আনব। ইস্রায়েলের ভূমি আবার তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব! 18 আর আমার প্রজারা ফিরে এলে তারা এখানে এখন যে সব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তি রয়েছে সে সব ধ্বংস করবে। 19 আমি তাদের একত্র করব। আমি তাদের নতুন আত্মা দেব। আমি তাদের পাথরের হৃদয় সরিয়ে সেখানে প্রকৃত হৃদয় স্থাপন করব। 20 তখন তারা আমার বিধিগুলি পালন করবে। তারা আমার আজ্ঞাগুলি পালন করবে। আমি তাদের যা বলব তারা তাই করবে। তারা প্রকৃতই আমার লোক হবে, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।’”
21 তখন ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু এখন তাদের মন অধিকার করে আছে ঐসব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তিরা। আর ঐ লোকরা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য অবশ্যই আমি তাদের শাস্তি দেব।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছেন। 22 তারপর করূব দূতরা তাদের ডানা ওঠাল আর আকাশে উড়ে গেল। চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল। আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের ওপরে ছিল। 23 পরে প্রভুর মহিমা নগরের মাঝখান থেকে উঠে গিয়ে নগরের পূর্বদিকে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে থেমে গেল। 24 তারপর আত্মাটি আমায় তুলে নিয়ে আবার বাবিলনে সেই সব লোকদের কাছে, যারা ইস্রায়েল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে আনল। আমি ঐসব ঈশ্বরীয় দর্শনে দেখলাম। তারপর যাকে আমি আমার দর্শনে দেখেছিলাম তিনি শূন্যে উঠে চলে গেলেন। 25 তখন আমি নির্বাসনে যারা ছিলেন তাদের কাছে প্রভু আমায় যা যা দেখিয়েছিলেন তা বললাম।
12 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, তুমি বিদ্রোহীদের মধ্যে বাস করছ! তারা সব সময়ই আমার বিরুদ্ধাচরণ করে। আমি তাদের প্রতি যা করেছি তা দেখার চোখ তাদের রয়েছে, কিন্তু তারা সে সব দেখবে না। আমি তাদের যা বলেছি তা শোনবার কান তাদের রয়েছে কিন্তু তারা আমার আদেশ শুনবে না। কারণ তারা বিদ্রোহী। 3 তাই, মনুষ্যসন্তান, তোমার জিনিসপত্র গোটাও। এমন অভিনয় কর যেন তুমি বহুদূর দেশে যাচ্ছ। দেখ, লোকে যেন তোমাকে তা করতে দেখে। হয়ত তারা তোমায় দেখবে কিন্তু তারা বিদ্রোহী।
4 “দিনের বেলায় তোমার জিনিসপত্র বাইরে বার করে এনো যাতে লোকে দেখতে পায়। তারপর বিকেলে এমন অভিনয় কর যেন নির্বাসিত হয়ে বহুদূর দেশে চলে যাচ্ছ। 5 লোকরা যখন দেখছে সে সময় দেওয়ালে একটা গর্ত কর আর সেই গর্ত দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাও। 6 রাতে সেই জিনিসপত্র কাঁধে করে চলে যাও। মুখ ঢেকে ফেলো যাতে দেশটি দেখতে না পাও। কারণ আমি তোমাকে ইস্রায়েল পরিবারের কাছে উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করছি।”
7 তাই আমাকে যেরকম আজ্ঞা করা হয়েছিল আমি সেই মত কাজ করলাম। দিনের সময় আমি আমার জিনিসপত্র তুলে নিয়ে এমন অভিনয় করলাম যেন বহু দূরের দেশে চলে যাচ্ছি। সেই সন্ধ্যায় আমি হাত দিয়ে দেওয়ালে একটা গর্ত করলাম। রাতের বেলায় আমি জিনিসপত্র ঘাড়ে করে স্থান ত্যাগ করলাম। আমি সব লোকের সামনেই তা করলাম।
8 পরের দিন সকালে প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 9 “মনুষ্যসন্তান, তুমি কি করছ তা কি ঐ বিদ্রোহী ইস্রায়েল সন্তানরা জিজ্ঞাসা করেছে! 10 তাদের বল যে প্রভু, তাদের সদাপ্রভু এইসব কথা বলেছেন। এই বার্তাটি জেরুশালেমের নেতাদের জন্য এবং ইস্রায়েলে বাসকারী সমস্ত লোকদের জন্য। 11 তাদের বল, ‘আমি তোমাদের সকলের সামনে এক উদাহরণস্বরূপ। আমি যা করেছি তা সত্যিই তোমাদের প্রতি ঘটবে।’ বন্দী হিসাবে সত্যিই তোমাদের দূর দেশে যেতে বাধ্য করা হবে। 12 তোমাদের নেতা তার কাঁধে তার তল্পিগুলো রাখবে। সে রাতের বেলায় দেওয়ালে একটি গর্ত করে পালিয়ে যাবে। সে তার মুখ ঢাকবে যাতে লোকে তাকে চিনতে না পারে। সে চোখে দেখতে পাবে না সে কোথায় যাচ্ছে। 13 আমি তাকে ধরব। সে আমার ফাঁদে ধরা পড়বে। আর আমি তাকে বাবিলে কল্দীয়দের দেশে নিয়ে আসব। শত্রুরা তার চোখ দুটো উপড়ে নেবে। তাই সে দেখতে পাবে না কোথায় চলেছে। সে বাবিলে মারা যাবে। 14 আমি রাজার লোকদের ইস্রায়েলের চারধারের অন্যান্য দেশগুলিতে থাকতে বাধ্য করব। আমি তার সৈন্যদের বাতাসে ছড়িয়ে দেব আর শত্রু সেনারা তাদের পেছনে ধাওয়া করবে। 15 তখন লোকে জানবে যে আমিই প্রভু। তারা জানবে যে আমিই তাদের অন্য দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম।
16 “কিন্তু তবুও আমি তাদের মধ্যে কিছু লোককে জীবিত রাখব। কেউ কেউ প্লেগের হাত থেকে রক্ষা পাবে। কিছু লোক অনাহারে মারা যাবে না। কেউ বা আবার যুদ্ধে বেঁচে যাবে। আমি তাদের বাঁচাব যাতে তারা অন্যদের বলতে পারে তারা আমার বিরুদ্ধে কি ভয়ঙ্কর কাজ করেছিল। আর শুধুমাত্র তখনই তারা জানবে যে আমিই প্রভু।”
17 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 18 “মনুষ্যসন্তান, এমন অভিনয় কর যেন তুমি ভীষণ ভীত। তোমার খাদ্য আহার করার সময় ভয়ে কাঁপবে এবং উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত অবস্থায় জল পান করবে। 19 তুমি সাধারণ লোকদের এসব অবশ্যই বলবে। বলবে, ‘প্রভু আমাদের সদাপ্রভু জেরুশালেমে ও ইস্রায়েলের অন্যান্য অংশে বাসকারী লোকেদের বলেছেন। তোমরা তোমাদের খাদ্য ভোজন করার সময় খুবই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে। জল পান করার সময় ভীত হবে। কারণ তোমার দেশের সব কিছুই ধ্বংস করা হবে। সেখানে বসবাসকারী সবার প্রতিই শত্রুরা অত্যন্ত নিষ্ঠুর হবে। 20 তোমাদের শহরে এখন অনেকেই বাস করে, কিন্তু ঐসব শহর ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। তোমাদের সমস্ত দেশকেই ধ্বংস করা হবে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।’”
21 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 22 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলে লোকে কেন এই ছড়াটি বলে:
‘দুর্দশা আসবে না চট করে,
দর্শনগুলো ফলবে না রে।’
23 “ঐ লোকদের বলো যে প্রভু তাদের ঈশ্বর তাদের ছড়াটি থামিয়ে দেবেন। ইস্রায়েল সম্বন্ধে আর তারা ওসব বলবে না, কিন্তু এখন এই ছড়াটি আবৃত্তি করবে:
‘দুর্দশা আসবে শীঘ্রই।
দর্শনগুলো সব ফলবে ওরে।’
24 “সত্যি সত্যিই ইস্রায়েলে আর কোন মিথ্যা দর্শন থাকবে না। আর কোন জাদুকর থাকবে না যারা মিথ্যা করে ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে বলে। 25 কারণ আমিই প্রভু আমি যা বলতে চাই তা বলব, আর তাই ঘটবে। আর আমি সময় দীর্ঘ হতে দেব না। ঐসব দুর্ভোগ খুব শীঘ্রই আসছে তোমাদের জীবন কালেই। ওহে বিদ্রোহী বংশ আমি যখন কিছু বলি, তা ঘটে।” প্রভু আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেন।
26 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন: 27 “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের লোকরা মনে করে যে সব দর্শন আমি তোমায় দিচ্ছি তা সুদূর ভবিষ্যতের। তারা মনে করে তুমি এমন বিষয়ে কথা বলছ যা এখন থেকে বহু বছর পরে ঘটবে। 28 তাই তুমি অবশ্যই তাদের এইসব কথা বলবে, ‘প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন: আমি আর দেরী করব না। যদি আমি কিছু ঘটবে বলে বলি তবে তা ঘটবেই!’” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
13 তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন, 2 “মনুষ্যসন্তান, তুমি আমার হয়ে ইস্রায়েলের ভাববাদীদের অবশ্য এই কথা বলবে। এইসব ভাববাদীরা প্রকৃতপক্ষে আমার হয়ে কথা বলে না। এইসব ভাববাদীরা নিজেরা যা বলতে চায় তাই-ই বলে। তাই তুমি তাদের অবশ্যই এই কথা বোলো, ‘প্রভুর এই বার্তা শোন! 3 প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলেন। ওহে মূর্খ ভাববাদীরা, তোমাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটবে। তোমরা নিজের নিজের আত্মার অনুগমণ করছ। তোমরা দর্শনে প্রকৃতপক্ষে যা দেখছ তা লোকদের কাছে বলছ না।’
4 “‘ইস্রায়েল তোমার ভাববাদীরা পোড়ো বাড়ীর মধ্যে দৌড়ে যাওয়া শিয়ালের মতো হবে। 5 তোমরা ভাঙ্গা প্রাচীরের কাছে সৈন্য মোতায়েন করনি। ইস্রায়েল পরিবারকে রক্ষা করতে প্রাচীর তৈরী করনি। তাই যখন প্রভুর কাছ থেকে শাস্তির দিন নেমে আসবে তোমরা যুদ্ধে হারবে।
6 “‘মিথ্যা ভাববাদীরা বলে তারা দর্শন দেখেছে। তারা তাদের জাদু করে মিথ্যে মিথ্যে ওসব ঘটবে বলে বলেছে। তারা বলে প্রভুই তাদের পাঠিয়েছেন—কিন্তু তা মিথ্যা কথা। তারা এখনই তাদের মিথ্যা কথা সফল হবে ভেবে বসে আছে।
7 “‘মিথ্যা ভাববাদীর দল, তোমাদের দেখা দর্শন সত্যি নয়। তোমরা তোমাদের জাদু ব্যবহার করে ভবিষ্যতে কি ঘটবে বলেছ। সব মিথ্যে কথা। তোমরা বলেছ প্রভুই ঐসব কথা বলেছেন। কিন্তু আমি তোমাদের কোন কথাই বলিনি!’”
8 তাই এখন প্রভু, আমার সদাপ্রভু বলেন, “তোমরা মিথ্যে কথা বলেছ। তোমাদের দেখা দর্শন সত্যি নয়। তাই আমি এখন তোমাদের বিরুদ্ধে!” প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইগুলো বলেছেন। 9 প্রভু বলেন, “যে সব ভাববাদী মিথ্যা দর্শন দেখেছে ও মিথ্যা বলেছে আমি তাদের শাস্তি দেব। আমি তাদের আমার প্রজাদের মধ্য থেকে উচ্ছেদ করব। ইস্রায়েলের পরিবারের নামের তালিকায় তাদের নাম থাকবে না। তারা কখনও ইস্রায়েল দেশে আর আসবে না। তখন তোমরা জানবে আমিই প্রভু এবং সদাপ্রভু!
10 “বার বার ঐসব ভাববাদীরা আমার প্রজাদের কাছে মিথ্যা বলেছে। ঐ ভাববাদীরা বলেছে শান্তি আসছে, কিন্তু শান্তি আসেনি। প্রাচীর মেরামত করে লোকদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হওয়া উচিত। কিন্তু তারা ভাঙ্গা প্রাচীরে কেবল চুনকাম করেছে। 11 ওদের বলো যে আমি শিলা ও প্রবল বৃষ্টি পাঠাব। বাতাস প্রবলভাবে বইবে আর ঘূর্ণিঝড় আসবে। তখন প্রাচীর ভেঙ্গে পড়বে। 12 প্রাচীর ভেঙ্গে পড়লে লোকে ভাববাদীদের জিজ্ঞেস করবে, ‘চুনকাম করা দেওয়ালের কি হল?’” 13 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমি ক্রোধান্বিত এবং তোমাদের বিরুদ্ধে ঝড় পাঠাব। ক্রোধে আমি প্রবল বৃষ্টি পাঠাব। ক্রোধে আমি আকাশ থেকে শিলা বৃষ্টি পাঠাব এবং তোমাদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব। 14 তোমরা দেওয়ালে চুনকাম করেছ কিন্তু আমি সমস্ত দেওয়ালটাকেই ধ্বংস করব। আমি তা মাটিতে ফেলে দেব। সেই প্রাচীর তোমাদের ওপরেই পড়বে। তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। 15 আমি সেই প্রাচীরের প্রতি ও যে লোকরা তার ওপর প্রলেপ লাগিয়েছে, তাদের প্রতি আমার ক্রোধ প্রকাশ শেষ করব। সেখানে আমি বলব, ‘দেওয়ালও নেই আর তার ওপর প্রলেপ লাগানোরও কেউ নেই।’
16 “ইস্রায়েলের মিথ্যা ভাববাদীদের প্রতি ঐ সবকিছুই ঘটবে। ঐ ভাববাদীরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে কথা বলে। ঐ ভাববাদীরা বলে শান্তি হবে কিন্তু শান্তি হয় না।” প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐসব কথা বলেছেন।
17 ঈশ্বর বলেছেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের ভাববাদিনীদের দিকে দেখ। ঐ সমস্ত ভাববাদিনীরা আমার হয়ে কথা বলে না। তারা নিজেরা যা চায় তাই বলে। তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। তুমি অবশ্যই এইসব কথা তাদের বলবে। 18 ‘প্রভু, আমার সদাপ্রভু এইসব কথা বলেন: ভাববাদিনীরা, তোমাদের প্রতি অমঙ্গল ঘটবে। লোকদের হাতে বাঁধার জন্য তোমরা কাপড়ের তাবিজ বানিয়েছ, লোকদের মাথায় বাঁধবার জন্য তোমরা একটি বিশেষ মাথার পাগড়ী তৈরী কর। তোমরা বলে থাক ঐসব জিনিসের যাদুর মত ক্ষমতা রয়েছে। যেন তোমরা অন্য লোকদের জীবন চালনা করতে পার। কেবল নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে তোমরা ঐসব লোকদের ফাঁদে ফেল! 19 তোমরা লোকদের ভাবতে শেখাও যে আমার আদৌ কোন গুরুত্ব নেই। কয়েক মুঠো বার্লি ও রুটির টুকরোর জন্য তোমরা আমাকে অসম্মান কর? তোমরা আমার প্রজাদের কাছে মিথ্যা বল আর তারাও মিথ্যা কথা শুনতে ভালোবাসে। যাদের বাঁচা উচিত তাদের তোমরা মেরে ফেল আর যাদের মৃত্যু হওয়া উচিৎ তাদের তোমরা বাঁচাও। 20 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন: তোমরা ঐসব কাপড়ের তাবিজ লোকদের ফাঁদে ফেলতে তৈরী করে থাকো। কিন্তু আমি তাদের মুক্ত করব। তোমাদের হাত থেকে ঐসব তাবিজ ছিঁড়ে নেব, আর লোকরা মুক্ত হবে। তারা ফাঁদ থেকে উড়ে যাওয়া পাখীর মত হবে! 21 আর আমি ঐসব মাথার আবরণ ছিঁড়ে তোমাদের হাত থেকে আমার প্রজাদের বাঁচাব। ঐ লোকরা তোমাদের ফাঁদ থেকে পালাবে আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।
22 “‘তোমরা ভাববাদীরা মিথ্যা কথা বল। তোমাদের মিথ্যা ভালো লোকদের আঘাত করে। ঐসব ভাল লোকেদের আমি আঘাত করতে চাইনি! তোমরা মন্দ লোকদের পক্ষ সমর্থন কর আর তাদের খারাপ কাজ করতে উৎসাহ দাও যাতে তাদের প্রাণহানি হয়। 23 তাই তোমরা আর অযথা দর্শন দেখবে না, আর জাদু করবে না। আমি আমার প্রজাদের তোমাদের হাত থেকে বাঁচাব। আর তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু।’”
1 আমি যাকোব, ঈশ্বর ও প্রভু যীশু খ্রীষ্টের দাস, নানা দেশে ছড়িয়ে থাকা ঈশ্বরের বারো গোষ্ঠীর লোকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
বিশ্বাস ও প্রজ্ঞা
2 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা যখন নানারকম প্রলোভনের মধ্যে পড়, তখন তা মহা আনন্দের বিষয় বলে মনে কর। 3 একথা জেনো, এই সকল বিষয় তোমাদের বিশ্বাসের পরীক্ষা করে ও তোমাদের ধৈর্য্য্যগুণ বাড়িয়ে দেয়। 4 সেই ধৈর্য্য্যগুণকে তোমাদের জীবনে পুরোপুরিভাবে কাজ করতে দাও। এর ফলে তোমরা নিখুঁত ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠবে এবং কোন বিষয়ে তোমাদের কোন অভাব থাকবে না।
5 তোমাদের কারো যদি প্রজ্ঞার অভাব হয়, তবে সে তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুক। ঈশ্বর দয়াবান; তিনি সকলকে উদারভাবে এবং আনন্দের সঙ্গে দেন। অতএব ঈশ্বর তোমাদের প্রজ্ঞা প্রদান করবেন। 6 কিন্তু ঈশ্বরের কাছে চাইতে হলে কোনরকম সন্দেহ না রেখে সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গেই তা চাইতে হবে, কারণ যে সন্দেহ করে, সে ঝোড়ো হাওয়ায় আলোড়িত উত্তাল সমুদ্র তরঙ্গের মতো। 7-8 এই প্রকার লোক দুই মনের মানুষ, প্রত্যেকটি কাজেই চঞ্চল ও অস্থির। এমন লোকের মনে করা উচিত নয় যে প্রভুর কাছে সে কিছু পাবে।
প্রকৃত সম্পদ
9 যে বিশ্বাসী ভাই গরীব, সে গর্ব অনুভব করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে আত্মিকভাবে উন্নত করেছেন। 10 যে বিশ্বাসী ভাই ধনী, সে গর্ব বোধ করুক, কারণ ঈশ্বর তাকে দেখিয়েছেন যে সে আত্মিকভাবে দরিদ্র। ধনী ব্যক্তি একদিন বুনো ফুলের মতো ঝরে যাবে। 11 সূর্য ওঠার পর তার তাপ ক্রমশঃ বেড়েই যায়, তাপে তৃণ ঝলসে যায় ও ফুল ঝরে যায়। ফুল সুন্দর হলেও তার রূপের বাহার বিলীন হয়ে যায়। তেমনি ঘটে ধনী ব্যক্তির জীবনে। তার কাজের পরিকল্পনাকালেই সে হঠাৎ মৃত্যুমুখে পড়ে।
ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রলোভন আসে না
12 পরীক্ষার সময় যে ধৈর্য্য ধরে ও স্থির থাকে সে ধন্য, কারণ বিশ্বাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ঈশ্বর তাকে পুরস্কার স্বরূপ অনন্ত জীবন দেবেন। ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে তাদের তিনি এই জীবন দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। 13 কেউ যখন প্রলুদ্ধ হয় তখন যেন সে না বলে, “ঈশ্বর আমাকে প্রলুদ্ধ করেছেন।” মন্দ ঈশ্বরকে কোন জিনিস প্রলোভিত করতে পারে না এবং ঈশ্বরও নিজে কাউকে প্রলোভনে ফেলেন না। 14 প্রত্যেক মানুষ তার নিজের মন্দ অভিলাষের দ্বারা প্রলুদ্ধ হয়। তার মন্দ ইচ্ছা তাকে পাপের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং ফাঁদে ফেলে। 15 এই মন্দ ইচ্ছা গর্ভবতী হয়ে পাপের জন্ম দেয় এবং পাপ পূর্ণতা লাভ করে মৃত্যুর জন্ম দেয়।
16 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এ ব্যাপারে তোমরা প্রতারিত হয়ো না। 17 সমস্ত ভাল ও নিখুঁত দান স্বর্গ থেকে আসে, কারণ পিতা ঈশ্বর, যিনি স্বর্গীয় আলো সৃষ্টি করেছিলেন তিনি সর্বদা একই আছেন, তাঁর কোনও পরিবর্তন হয় না। 18 ঈশ্বর তাঁর নিজের ইচ্ছায় সত্য বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাদের জীবন দিয়েছেন। তিনি চান যেন তাঁর সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে আমরা অগ্রগন্য হই।
শ্রবণ কর ও সেই মতো কাজ কর
19 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, তোমরা শ্রবণে সত্বর কিন্তু কথনে ধীর হও। চট করে রেগে যেও না। 20 ক্রোধ কখনই ঈশ্বরের প্রত্যাশা অনুযায়ী সৎ জীবন যাপনের সহায়ক হতে পারে না। 21 তাই তোমাদের জীবন থেকে সব রকমের অপবিত্রতা ও যা কিছু মন্দ, যা তোমাদের চারপাশে রয়েছে তাকে দূরে সরিয়ে দাও; আর নম্রভাবে ঈশ্বরের শিক্ষা গ্রহণ কর যা তিনি তোমাদের হৃদয়ে বপন করেছেন।
22 ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে কাজ কর। শুনে কিছু না করে বসে থাকলে চলবে না। শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতা হয়ে নিজেকে ঠকিও না। 23 যদি কেউ শুধুমাত্র ঈশ্বরের বাক্যের শ্রোতাই হয় আর সেই মতো কাজ না করে, তবে সে এমন একজন লোকের মতো যে আয়নার দিকে তাকায়, 24 নিজেকে দেখে এবং চলে যাবার সঙ্গে সঙ্গে সে নিজে কেমন দেখতে তা ভুলে যায়। 25 কিন্তু সেই ব্যক্তি প্রকৃত সুখী যে ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা, যা মানুষের কাছে মুক্তি নিয়ে আসে তা ভালভাবে অধ্যয়ন করতে থাকে ও তা পালন করে এবং যা শ্রবন করে তা ভুলে যায় না, এই বাধ্যতা তাকে সুখী করে তোলে।
উপাসনার প্রকৃষ্ট পথ
26 যদি কোন ব্যক্তি নিজেকে ধার্মিক মনে করে, অথচ নিজের মুখ না সামলায়় তবে সে নিজেকে ঠকায়, তার “ধার্মিকতা” মূল্যহীন। 27 যে ধার্মিকতা ঈশ্বর বিশুদ্ধ ও খাঁটি হিসেবে অনুমোদন করেন তা হল অনাথ ও বিধবাদের দুঃখ কষ্টে দেখাশোনা করা এবং নিজেকে পৃথিবীর মন্দ প্রভাব থেকে দূরে রাখা।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International