Old/New Testament
5 1-2 “হে মনুষ্যসন্তান, একটি ধারালো তরবারি নেবে এবং তা নাপিতের ক্ষুরের মত ব্যবহার করবে। তোমার মাথার চুল ও দাড়ি কামিয়ে সেইটা একটি ওজন পাত্রে ওজন করবে। তোমার চুল সমান তিন ভাগে ভাগ কর। তারপর তোমার শহর দখল করা সম্পূর্ণ হলে তোমার চুলের এক—তৃতীয়াংশ ‘শহরে’ পুড়িয়ে ফেলো। এর অর্থ হল, কিছু লোক শহরের মধ্যে মারা যাবে। তারপর তরবারি ব্যবহার করে চুলের অন্য এক তৃতীয়াংশকে শহরের বাইরে কাটবে। এর অর্থ হল, কিছু লোক ‘শহরের’ বাইরে মারা যাবে। তারপর এক-তৃতীয়াংশ চুল বাতাসে ছুঁড়ে দাও—যাতে বাতাস তা বহু দূরে নিয়ে যায়। এতে বোঝাবে যে আমি আমার তরবারি বার করে কিছু লোককে খুব দূরের শহর পর্যন্ত তাড়া করে নিয়ে যাবো। 3 কিন্তু তুমি তার মধ্যে অবশ্যই কিছু চুল নিয়ে তোমার পোশাকের ভাঁজে রেখে দেবে। এতে বোঝাবে যে আমি আমার কিছু লোককে পরিত্রাণ করব। 4 তুমি অবশ্যই আরও কিছু চুল নিয়ে আগুনে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। এর অর্থ হবে যে একটা আগুন উৎপন্ন হয়ে তা ইস্রায়েলীয় পরিবারসমূহকে ধ্বংস করে দেবে।”
5 তারপর প্রভু আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “এইটি জেরুশালেমের চিত্র। আমি জেরুশালেমকে অন্য জাতির মধ্যে রেখেছি, আর তার চারিদিকে অন্য জাতিসমূহ রয়েছে। 6 জেরুশালেমের লোকরা আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তারা অন্য যে কোন জাতির চেয়ে অধিক মন্দ! তারা তাদের চার ধারের দেশের যে কোন লোকের চেয়ে আমার দেওয়া বিধি অনেক বেশী করে লঙ্ঘন করেছে। তারা আমার আজ্ঞা শুনতে অস্বীকার করেছে। তারা আমার বিধিগুলি পালন করেনি!”
7 তাই প্রভু, আমার সদাপ্রভু বললেন, “তোমরা আমাকে মান্য করনি। তোমাদের চার ধারে বসবাসকারী লোকদের চেয়েও তোমরা আমার আজ্ঞা অনেক বেশী অমান্য করেছ এবং তারা যেসব জিনিস মন্দ বলে বিবেচনা করে তাও করেছ!” 8 তাই প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “আমিও তোমাদের বিরুদ্ধে! আর ঐ লোকদের চোখের সামনে আমি তোমাদের শাস্তি দেব। 9 আমি তোমাদের প্রতি এমন কাণ্ড ঘটাব যা আগে ঘটাই নি আর পরেও ঘটাব না! কেন? কারণ তোমরা বহু ভয়ঙ্কর কাজ করেছ। 10 জেরুশালেমের লোকরা এত ক্ষুধার্ত্ত হবে যে পিতামাতা তাদের নিজেদের সন্তানদের এবং সন্তানরা তাদের পিতামাতাদের মাংস খাবে। আমি তোমাদের বহু ভাবে শাস্তি দেব। আর অবশিষ্ট যারা বেঁচে থাকবে, তাদের আমি বাতাসে ছড়িয়ে দেব।”
11 প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, “জেরুশালেম, আমার প্রাণের দিব্য দিয়ে বলছি যে আমি তোমায় শাস্তি দেব! আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে তোমায় শাস্তি দেব! কেন? কারণ তুমি আমার পবিত্র স্থানের প্রতি ভয়ঙ্কর কাজ করেছ। তুমি এমন ভয়ঙ্কর কাজ করেছ যাতে তা ময়লা হয়ে গেছে! আমি তোমায় শাস্তি দেব, দয়া করব না। দুঃখ বোধ করব না! 12 শহরের মধ্যে মহামারী এবং দুর্ভিক্ষে তোমার এক-তৃতীয়াংশ লোক মারা যাবে। শহরের বাইরে এক-তৃতীয়াংশ লোক যুদ্ধে মারা যাবে। তারপর আমি আমার তরবারি বার করে বাকী এক-তৃতীয়াংশকে দূর দেশ পর্যন্ত তাড়া করে নিয়ে যাব। 13 কেবল তারপরই আমার প্রজাদের প্রতি আমার ক্রোধ ক্ষান্ত হবে। তারা আমার প্রতি যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্যই যে তারা শাস্তি পেয়েছে সেটা আমি জানাব। আর তারাও জানবে যে আমিই প্রভু, এবং তাদের প্রতি আমার গভীর ভালোবাসার জন্যই আমি তাদের কাছে কথা বলেছিলাম!”
14 ঈশ্বর বললেন, “জেরুশালেম, আমি তোমায় ধ্বংস করব—তোমায় ইঁট পাথরের ঢিবি ছাড়া অন্য কিছু বলে মনে হবে না। তোমার চার পাশের লোকরা তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে। যারাই তোমার পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে তারাই তোমাকে নিয়ে মজা করবে। 15 তোমার চার ধারের লোক তোমাকে নিয়ে মজা করলেও তাদের কাছে তুমি এক শিক্ষা স্বরূপ হবে। তারা দেখবে যে আমি ক্রোধে তোমাকে শাস্তি দিয়েছি। আমি অত্যন্ত ক্রোধ করেছিলাম। সাবধানও করেছিলাম। আমিই প্রভু জানিয়ে ছিলাম আমি কি করব! 16 তোমায় বলেছিলাম যে ভয়ানক দুর্ভিক্ষ পাঠাব। বলেছিলাম এমন বিষয় পাঠাব যা তোমায় ধ্বংস করবে। আমি তোমায় বলেছিলাম যে তোমার খাবারের যোগান শেষ করে দেব আর সেই দুর্ভিক্ষ মাঝে মাঝে আসবে। 17 আমি তোমাকে বলেছিলাম যে তোমার বিরুদ্ধে ক্ষুধা ও বন্য জন্তুদের পাঠাব যা তোমার শিশুদের হত্যা করবে। আমি বলেছিলাম শহরের সর্বত্র রোগ এবং মৃত্যু বিরাজ করবে। আমি বলেছিলাম শত্রুসেনাকে তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসতে। আমি প্রভুই তোমাকে বলেছিলাম যে এইসব ঘটবে।”
6 তারপর প্রভুর বাক্য আবার আমার কাছে এল। 2 তিনি বললেন, “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পর্বতগুলির দিকে ফের। আমার জন্য তাদের কাছে ভাববাণী বল। 3 ঐসব পর্বতগুলিকে এই কথাগুলি বল: ‘ইস্রায়েলের পর্বত আমার প্রভু ও সদাপ্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা শোন! প্রভু আমার সদাপ্রভু পাহাড়, পর্বত ও উপত্যকাগুলিকে এইসব কথা বলেন। দেখ! আমিই (ঈশ্বর) তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শত্রু আনছি। আমি তোমার উচ্চ স্থানগুলি ধ্বংস করব! 4 তোমার বেদীগুলি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেব। তোমার ধুপধূনোর বেদী গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। আর তোমার নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সামনে আমি তোমার মৃতদেহ ছুঁড়ে ফেলব। 5 ইস্রায়েলের লোকদের মৃতদেহগুলিও আমি নোংরা মূর্ত্তিগুলোর সামনে ছুঁড়ে দেব। আমি তোমার হাড়গুলি বেদীর চারধারে ছড়িয়ে দেব। 6 যেখানেই তোমার লোক বাস করবে সেখানেই অমঙ্গল ঘটবে। তাদের শহরগুলি পাথরের ঢিবিতে পরিণত হবে। তাদের উচ্চ স্থানগুলো ধ্বংস করা হবে। যেন ঐসব পূজার স্থানগুলি আর কখনও ব্যবহার করা না হয়। ঐ বেদীগুলি ধ্বংস করা হবে আর লোকরা কখনও ঐ নোংরা মূর্ত্তিগুলোর পূজো করবে না। ধুপধূনোর বেদীগুলোও গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। যা কিছু তোমরা গড়েছিলে তার সবই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হবে। 7 তোমার লোকদের হত্যা করা হবে এবং তখন তুমি জানবে যে আমিই প্রভু!’”
8 ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু আমি তোমার কিছু লোককে পালাতে দেব। তারা অল্প কালের জন্য অন্য দেশে বাস করবে। আমি তাদের ছড়িয়ে দেব এবং অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য করব। 9 তারপর ঐ অবশিষ্টদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের অন্য দেশে বাস করতে বাধ্য করা হবে। কিন্তু ঐ অবশিষ্টরা আমায় স্মরণ করবে। আমি তাদের আত্মা ভগ্ন করব। তারা যে মন্দ কাজ করেছিল তার জন্য নিজেদেরই ঘৃণা করবে। অতীতে তারা আমার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, আমায় ত্যাগ করেছিল। তারা নোংরা মূর্ত্তির পেছনে দৌড়েছিল। তারা এমন স্ত্রীর মত ব্যবহার করেছিল যে নিজের স্বামীকে ত্যাগ করে অন্য পুরুষের পেছনে দৌড়ায়। তারা বহু ভয়ঙ্কর কাজ করেছে। 10 কিন্তু তারা জানবে যে আমিই প্রভু। তারা এও জানবে যে যদি আমি বলি কিছু করব তবে তা করেই থাকি। তারা জানবে তাদের প্রতি যেসব অমঙ্গল ঘটেছে তার সব আমিই ঘটিয়ে ছিলাম।”
11 তারপর প্রভু, আমার সদাপ্রভু আমায় বললেন, “হাততালি দাও ও পা দাপাও। ইস্রায়েলের লোকরা যেসব ভয়ানক কাজগুলি করেছে তার বিরুদ্ধে কথা বল। তাদের সাবধান করে বল যে রোগে, তরবারির দ্বারা এবং ক্ষুধায় তারা মারা যাবে। তাদের বল যে তারা যুদ্ধেও মারা যাবে। 12 দূরের লোকরা রোগে মারা যাবে। কাছের লোকরা তরবারির আঘাতে মারা যাবে এবং তারপর যারা বেঁচে থাকবে তারা ক্ষুধায় মারা যাবে। কেবল তখনই আমার ক্রোধ প্রশমিত হবে। 13 আর কেবল তখনই তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। তোমরা এটা তখনই জানবে যখন দেখবে তোমাদের দেহগুলি নোংরা প্রতিমাগুলির সামনে ও তার বেদীর চারধারে পড়ে আছে। তোমাদের প্রতিটি পূজা স্থানের কাছেই এবং প্রত্যেক পর্বত পাহাড়ের নীচে সবুজ বৃক্ষের তলায় ও সপত্র ওক বৃক্ষের তলায় ঐ দেহগুলি পাওয়া যাবে। ঐ সমস্ত জায়গায় তোমরা তোমাদের সুগন্ধি নৈবেদ্য উৎসর্গ করেছিলে। ঐসব তোমাদের নোংরা মূর্ত্তিগুলোর জন্য সুগন্ধস্বরূপ ছিল। 14 কিন্তু আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার হাত ওঠাব এবং তোমাকে ও তোমার লোকদের শাস্তি দেব, তা তারা যেখানেই থাকুক না কেন। আমি তোমার দেশ ধ্বংস করব আর তা দিব্লা মরুভূমির থেকেও শূন্য হবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু!”
7 তারপর প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। 2 তিনি বললেন, “এখন, মনুষ্যসন্তান, প্রভু আমার সদাপ্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা এসেছে। এই বার্তাটি ইস্রায়েল দেশের জন্য।
“শেষ কাল!
শেষ সময় আসছে,
সমস্ত দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
3 তোমার শেষ দশা এবার আসছে!
আমি দেখাব যে আমি তোমার ওপর কত ক্রুদ্ধ।
তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমায় শাস্তি দেব।
তুমি যে সব জঘন্য কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমায় তার মূল্য দিতে বাধ্য করব।
4 আমি তোমার প্রতি কোন দয়া দেখাব না।
আমি তোমার জন্য দুঃখ অনুভব করব না।
তুমি যেসব মন্দ কাজ করেছ
তার জন্য আমি তোমাকে শাস্তি দিচ্ছি।
তুমি এমন জঘন্য কাজগুলি করেছ।
এখন, তুমি জানবে যে আমিই প্রভু।”
5 প্রভু আমার সদাপ্রভু ঐ কথাগুলি বলেছিলেন। “একের পর এক অমঙ্গল ঘটবে! 6 শেষ কাল আসছে আর তা খুব শীঘ্রই আসবে! 7 তোমরা যারা ইস্রায়েলে বাস করছ তোমাদের অন্তিমকাল আসছে। শাস্তির সেই দিন খুব শীঘ্রই ঘনিয়ে আসছে। পর্বতের ওপর কোলাহল ক্রমে ক্রমে বেড়েই চলেছে। 8 এখন খুব শীঘ্রই আমি দেখাব যে আমি কত ক্রুদ্ধ। আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আমার সমস্ত ক্রোধ প্রকাশ করব। তোমাদের সমস্ত মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব। তোমরা যে সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছিলে তার জন্য তোমাদের আমি শাস্তি দেব। 9 আমি তোমাদের প্রতি কোন দয়া দেখাব না। তোমাদের জন্য দুঃখিত হব না। তোমরা যেসব মন্দ কাজ করেছ তার জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি। তোমরা এমন সমস্ত ঘৃণিত কাজ করেছ। এখন, জানবে যে আমিই প্রভু।
10 “শাস্তির ঐ সময়, যেমন করে উদ্ভিদের অঙ্কুরোদ্গম, মুকুলায়ন ও কুসুম প্রস্ফুটিত হয়, সেই রকম ভাবে এসেছে। ঈশ্বর সঙ্কেত দিয়েছেন, শত্রু তৈরী, গর্বিত রাজা নবূখদ্নিৎসর প্রস্তুত। 11 সেই লোক ঐসব মন্দ লোকদের শাস্তি দেবার জন্য তৈরী। ইস্রায়েলে অনেক লোকই রয়েছে কিন্তু সে তাদের একজনও নয়। সে ঐ জনতার ভীড়ের কেউ নয়। সে ঐ লোকদের কোন গুরুত্বপূর্ণ নেতাও নয়।
12 “শাস্তির সেই সময় এসেছে। সেই দিন এখানে লোকে যারা জিনিস কেনাকাটা করে তারা আনন্দিত হবে না, আর যারা জিনিস বেচে তারাও বেচতে খারাপ বোধ করবে না। কারণ সেই ভয়ানক শাস্তি সবার প্রতিই ঘটবে। 13 লোকে যারা তাদের সম্পত্তি বিক্রি করেছিল তারা আর তার কাছে ফিরে যাবে না। এমনকি যদি কেউ জীবিতও পালিয়ে যায় তাও সে নিজের সম্পত্তির কাছে ফিরে যাবে না। কারণ এই দর্শন সমস্ত জনতার জন্য। তাই যদি কোন ব্যক্তি জীবিত পালায় তাতে অন্যেরা ভাল বোধ করবে না।
14 “তারা লোকদের সাবধান করতে শিঙা বাজাবে। লোকরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে। কিন্তু তারা যুদ্ধ করতে যাবে না। কারণ আমি সমস্ত জনতাকে দেখাব আমি কত ক্রুদ্ধ। 15 শত্রু তার তরবারি নিয়ে শহরের বাইরে রয়েছে। রোগ ও ক্ষুধা শহরের মধ্যে। যদি কোন লোক থেকে যায় তবে এক শত্রুসেনা তাকে হত্যা করবে। যদি সে শহরে থাকে তবে ক্ষুধা ও রোগ তাকে ধ্বংস করবে।
16 “কিন্তু কিছু লোক পালাবে। ঐ অবশিষ্টরা পাহাড়ে দৌড়ে যাবে। কিন্তু তারা সুখী হবে না, তাদের পাপের জন্য দুঃখ বোধ করবে। তারা ঘুঘুর মত গোঙাবে। 17 লোকে তাদের হাত তুলতে ক্লান্ত ও দুঃখ বোধ করবে। তাদের পা জলের মত শিথিল মনে হবে। 18 তারা শোকবস্ত্র পরবে এবং ভয়ে আচ্ছন্ন হবে। তুমি তাদের মুখে লজ্জা দেখতে পাবে। তারা তাদের শোক ব্যক্ত করতে মাথা কামাবে। 19 তারা তাদের রূপো রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলবে। তাদের সোনাগুলিকে[a] নোংরা বস্তার মত জ্ঞান করবে। কারণ প্রভু ক্রোধান্বিত হলে ঐসব জিনিস তাদের রক্ষা করতে পারবে না। ঐসব জিনিস আর কিছুই না কেবল লোককে পাপে ফেলার ফাঁদ। ঐসব জিনিস লোকদের প্রাণ তৃপ্ত করবে না অথবা তাদের পেটও ভরাতে পারবে না।
20 “ঐ লোকরা তাদের সুন্দর অলঙ্কার ব্যবহার করে প্রতিমা গড়েছিল। তারা ঐ প্রতিমার বিষয়ে গর্ব করেছিল। তারা তাদের ভয়ঙ্কর প্রতিমা গড়েছিল, ঐসব নোংরা জিনিস বানিয়েছিল। তাই আমি (ঈশ্বর) তাদের নোংরা বস্তার মত ছুঁড়ে ফেলব। 21 আমি আগন্তুক লোকদেরও তাদের ধনসম্পদ নিয়ে যেতে দেব। ঐ আগন্তুকরা তাদের নিয়ে ঠাট্টা করবে। ঐ দুষ্ট লোকরা তাদের সোনা ও রূপো নিয়ে চলে যাবে। 22 আমি তাদের থেকে আমার মুখ ফিরিয়ে নেব, তাদের দিকে তাকাব না। ঐ আগন্তুকরা আমার মন্দির ধ্বংস করবে, তারা পবিত্র গৃহের গোপনস্থানে ঢুকে তা অশুচি করবে।
23 “বন্দীদের জন্য শেকল তৈরী কর! কারণ হত্যা করার জন্য এবং অন্যায়ের অপরাধে বহু লোককে শাস্তি দেওয়া হবে। 24 এই কারণে আমি অন্য জাতির মন্দ লোকদের নিয়ে আসব। আর ঐ মন্দ লোকরা ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত বাড়িঘর অধিকার করবে। আমি বলবান সমস্ত লোকদের গর্ব চূর্ণ করব। অন্য জাতির ঐ লোকরা তোমাদের পূজার সমস্ত স্থান অধিকার করবে।
25 “তোমরা ভয়ে কাঁপবে। তোমরা শান্তির অন্বেষণ করবে কিন্তু শান্তি পাবে না। 26 তোমরা একটার পর একটা দুঃখের ঘটনা শুনবে। তোমরা দুঃসংবাদ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাবে না। তোমরা ভাববাদীর খোঁজ করবে এবং তার কাছে দর্শন চাইবে, কিন্তু পাবে না। যাজকরা তোমাদের শিক্ষা দেবার জন্য কিছুই খুঁজে পাবে না। প্রবীণরাও শিক্ষা দেবার জন্য কোন ভাল উপদেশ খুঁজে পাবে না। 27 তোমাদের রাজা মৃত লোকদের জন্য কাঁদবে। নেতারা শোকবস্ত্র পরবে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হবে। কেন? কারণ তারা যা করেছে তার জন্য তাদের পরিশোধ করতে আমি বাধ্য করব। তাদের শাস্তি আমি ঠিক করব। আর আমি তাদের শাস্তি দেব। তাহলে ঐ লোকরা জানবে যে আমিই প্রভু।”
আমাদেরও যীশুর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা উচিত
12 আমাদের চারপাশে ঈশ্বর বিশ্বাসী ঐসব মানুষরা রয়েছেন। তাঁদের জীবন ব্যক্ত করছে বিশ্বাসের প্রকৃতরূপ, তাই আমাদের উচিত তাঁদের অনুসরণ করা। আমাদেরও উচিত সেই দৌড়ে যোগ দেওয়া যা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট আছে, কখনই থেমে যাওয়া উচিত নয়। জীবনে যা বাধার সৃষ্টি করতে পারে এমন সব কিছু আমরা যেন দূরে ফেলে দিই। যে পাপ সহজে জড়িয়ে ধরে তা যেন দূরে ঠেলে দিই। 2 আমাদের সর্বদাই যীশুর আদর্শ অনুযায়ী চলা উচিত। বিশ্বাসের পথে যীশুই আমাদের নেতা; তিনি আমাদের বিশ্বাসকে পূর্ণতা দেন। তিনি ক্রুশের উপর মৃত্যুভোগ করলেন; ক্রুশের মৃত্যুর অপমান তুচ্ছ জ্ঞান করে তা সহ্য করলেন। তাঁর সম্মুখে ঈশ্বর যে আনন্দ রেখেছিলেন সেই দিকে দৃষ্টি রেখেই যীশু তা করতে পেরেছিলেন। এখন তিনি ঈশ্বরের সিংহাসনের ডানপাশে বসে আছেন। 3 যীশুর কথা ভাবো, যখন পাপীরা তাঁর বিরোধিতা করে অনেক নিন্দা-মন্দ করেছিল, তখন তিনি এই সমস্ত বিরোধিতা সহ্য করেছিলেন। যীশু তা করেছিলেন যাতে তোমরাও তাঁর মতো সহিষ্ণু হও এবং চেষ্টা করা থেকে বিরত না হও।
ঈশ্বর হলেন পিতার মতো
4 পাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তোমরা এখনও মৃত্যুর মুখোমুখি হও নি। তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদের সান্ত্বনার কথা বলেন। 5 তোমরা সম্ভবতঃ সেই উৎসাহব্যঞ্জক কথা ভুলে গেছ। তিনি বলেছেন:
“হে আমার পুত্র, প্রভু যখন তোমায় শাসন করেন, মনে করো না যে তার কোন মূল্য নেই।
তিনি যখন তোমায় সংশোধন করেন তখন নিরুৎসাহ হয়ো না।
6 কারণ প্রভু যাকে ভালবাসেন তাকেই শাসন করেন,
সমস্ত পুত্রই পিতা কর্ত্তৃক শাসিত হয়।”(A)
7 এখন যা কিছু কষ্ট পাচ্ছ তা পিতার কাছ থেকে শাসন বলে মেনে নাও। পিতা যেমন তাঁর সন্তানকে শাসন করেন, তেমনি করেই ঈশ্বর তোমাদের জীবনে এইসব আসতে দিয়েছেন। সব সন্তানই পিতার অনুশাসনের অধীন। 8 তোমরা যদি কখনই শাসিত না হও (পুত্র মাত্রেই শাসিত হয়) তবে তোমরা তো তাঁর প্রকৃত সন্তান নও, যথার্থ পুত্র নও। 9 এই পৃথিবীতে আমাদের সবার পিতাই আমাদের মার্জিত ও সংশোধিত করেন এবং আমরা তাঁদের সম্মান করি। যিনি আমাদের আত্মিক পিতা তাঁর অনুশাসনের কাছে আমাদের সত্যিকারের জীবনের জন্য আমরা কি আরো বেশী মাথা নোয়াবো না? 10 পৃথিবীতে আমাদের পিতারা অল্প সময়ের জন্য শাস্তি দেন। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করার জন্য শাস্তি দেন যেন আমরা তাঁর মত পবিত্র হই। 11 কোনও ধরণের শাসনই শাসনের মুহূর্তে আমাদের আনন্দ দেয় না, বরং আমরা তাতে দুঃখ পাই; কিন্তু এটা যাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে, পরে তাদের জীবনে ধার্মিকতা ও শান্তি রাজত্ব করে।
জীবনযাপন সম্পর্কে সতর্ক হও
12 তাই তোমাদের শিথিল হাত দুটোকে শক্ত করো, অবশ হাঁটু দুটোকে সবল করে তোল। 13 তোমাদের চলার পথ সরল কর, খোঁড়া পা যেন গাঁট থেকে খুলে না যায়, বরং তা যেন সুস্থ হয়।
14 সবার সঙ্গে শান্তিতে জীবনযাপন করতে চেষ্টা কর, কারণ এই ধরণের জীবন ছাড়া কেউ প্রভুর দর্শন লাভ করে না। 15 দেখো, কেউ যেন ঈশ্বরের অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত না হও। দেখো তোমাদের মধ্যে যেন তিক্ততার শেকড় না গজিয়ে ওঠে। তোমাদের মধ্যে এমন লোক থাকলে গোটা দলকে কলুষিত করতে পারে। 16 সাবধান, কেউ যেন যৌন পাপে না পড়ে অথবা এষৌর মতো ঈশ্বর ভক্তি জলাঞ্জলি না দেয়। এষৌ ছিল জ্যেষ্ঠ পুত্র, সে তার পিতার সমস্ত কিছুর উত্তরাধিকারী ছিল; কিন্তু এক বেলার খাবারের জন্য সে নিজের জন্মাধিকার বিকিয়ে দিয়েছিল। 17 তোমরা তো জানো, পরে সে বাবার আশীর্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করেও বিফল হল। তার বাবা তাকে সেই আশীর্বাদ দিতে অস্বীকার করলেন, কারণ এষৌ তার ভুল শোধরাবার কোন পথ খুঁজে পেল না।
18 তোমরা এক নতুন স্থানে এসেছ; ইস্রায়েলীয়রা যেমন এক পাহাড়ের সামনে এসেছিল এ স্থান তেমন নয়। তোমরা সেই পাহাড়ের কাছে আসো নি যা স্পর্শ করা যেত না, যা আগুনে জ্বলছিলো, তোমরা এমন স্থানে আসোনি যা অন্ধকারময়, বিষাদময়, ঝঞ্ঝা বিক্ষুদ্ধ। 19 তারা যেমন শুনেছিল তেমন তূরীধ্বনি অথবা সেই কন্ঠস্বর তোমরা শুনতে পাচ্ছ না, যা শুনে তারা মিনতি করেছিল যেন আর কোন বাক্য তাদের কখনও শোনানো না হয়। 20 কারণ যে আদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল তা তারা সহ্য করতে পারল না। তাদের বলা হল, “যদি কোন কিছু, এমন কি কোন পশু পর্যন্ত পর্বত স্পর্শ করে, তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে হবে।”(B) 21 সেই দৃশ্য এমন ভয়ঙ্কর ছিল যে মোশি বললেন, “আমি অত্যন্ত ভয় পেয়েছি আর কাঁপছি।”(C)
22 কিন্তু তোমরা সেরকম কোন স্থানে আসো নি। যে নতুন স্থানে তোমরা এসেছ তা হল সিয়োন পর্বত। তোমরা জীবন্ত ঈশ্বরের নগরী স্বর্গীয় জেরুশালেমে এসেছ। তোমরা সেই জায়গায় এসেছ যেখানে হাজার হাজার স্বর্গদূতরা পরমানন্দে একত্রিত হয়। 23 তোমরা এসেছ ঈশ্বরের প্রথম জাতদের সভাস্থলে, যাদের নাম স্বর্গে লিখিত রয়েছে। যিনি সকলের বিচারকর্তা সেই ঈশ্বরের কাছে এসেছ। সিদ্ধিপ্রাপ্ত আত্মার সমাবেশে এসেছ। 24 তোমরা যীশুর কাছে এসেছ যিনি ঈশ্বরের কাছ থেকে তাঁর লোকদের জন্য নতুন চুক্তি এনেছেন। সেই ছেটানো রক্তের কাছে এসেছ যা হেবলের রক্ত থেকে উত্তম কথা বলে।
25 সাবধান, ঈশ্বর যখন কথা বলেন তা শুনতে অসম্মত হয়ো না। তিনি পৃথিবীতে যখন সতর্কবাণী উচ্চারণ করলেন যারা তাঁর কথা শুনতে অসম্মত হল তারা রক্ষা পেল না। এখন ঈশ্বর স্বর্গ থেকে বলছেন, তাঁর কথা না শুনলে তোমাদের অবস্থা ঐ লোকদের থেকেও ভয়াবহ হবে একথা সুনিশ্চিত জেনো। 26 সেই সময় তাঁর কথায় পৃথিবী কেঁপে উঠেছিল। কিন্তু এখন তিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন, “আমি আর একবার পৃথিবীকে কাঁপিয়ে তুলব। এমনকি স্বর্গকেও কাঁপিয়ে তুলব।”(D) 27 “আর একবার” এর অর্থ হল সমস্ত সৃষ্ট বস্তু যাদের নাড়ানো যায় তাদের তিনি দূর করে দেবেন, সুতরাং যা কিছু অনড় তা হবে চিরস্থায়ী।
28 আমাদের কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত কারণ আমরা একটা জগতকে পেয়েছি যাকে নাড়ানো যায় না। আমরা কৃতজ্ঞ চিত্তে ঈশ্বরের উপাসনা করব যাতে তিনি প্রীত হন। আমরা তাঁর উপাসনা করবো শ্রদ্ধা ও ভীতির সঙ্গে। 29 কারণ আমাদের “ঈশ্বর সর্বগ্রাসী অগ্নিস্বরূপ।”(E)
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International