Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
বিলাপ 3-5

যন্ত্রণার অর্থ

আমি সেই মানুষ যে অনেক দুঃখ কষ্ট দেখেছে।
আমি তাকে দেখেছি
    যে আমাদের লাঠি দিয়ে মেরেছিল!
প্রভু আমাকে আলোয় নয়,
    অন্ধকারে নিয়ে এলেন।
প্রভু আমাকে সারা দিন ধরে তাঁর হাত দিয়ে মারধোর করেছেন।
    তিনি আমাকে বারবার মারলেন।
তিনি আমার চামড়া ও মাংস ছিঁড়ে ফেললেন।
    তিনি হাড়গোড় ভেঙে দিলেন।
প্রভু আমার বিরুদ্ধে তিক্ততা ও সমস্যার পাহাড় তৈরী করলেন।
    তিনি আমার চারি দিকে তিক্ততার সমস্যাকে আনলেন।
যারা দীর্ঘসময় থেকে মৃত তাদের মতো
    তিনি আমাকে অন্ধকারে বসিয়ে রাখলেন।
তিনি আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখলেন।
    তাই আমি বেরোতে পারলাম না, ভারী চেন দিয়ে তিনি আমাকে বেঁধে রাখলেন।
এমনকি যখন আমি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে কাঁদলাম
    প্রভু আমার সেই প্রার্থনায় কর্ণপাত করেন নি।
তিনি ভাঙা পাথর দিয়ে আমার বেরোনোর পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।
    তিনি ঐ পথকে আঁকাবাঁকা করে দিয়েছেন।
10 প্রভু যেন আমাকে আক্রমণ করতে উদ্যত এক ভাল্লুক।
    তিনি যেন গুহায় লুকিয়ে থাকা এক সিংহ।
11 প্রভু আমাকে আমার পথের বাইরে চালনা করলেন।
    তিনি আমাকে খণ্ড খণ্ড করে ছিঁড়ে ধ্বংস করলেন।
12 তিনি তাঁর ধনুক প্রস্তুত করে রাখলেন।
    আমি তাঁর তীরের লক্ষ্য বস্তু হলাম।
13 আমার পাকস্থলীতে তিনি আঘাত করলেন।
    তিনি তাঁর তূনীর থেকে একটি তীর ব্যবহার করে আমাকে বিদ্ধ করলেন।
14 লোকের কাছে আজ আমি উপহাসের পাত্র।
    সারাদিন ধরে আমার সম্পর্কে গান গেয়ে গেয়ে তারা আমায় উপহাস করে।
15 এই বিষ (শাস্তি) প্রভুই আমায় পান করতে দিয়েছেন।
    তিনি এই তিক্ত পানীয় দিয়ে আমায় পূর্ণ করেছেন।
16 তিনি আমায় কাঁকর খেতে বাধ্য করলেন।
    তিনি আমায় নোংরায় ফেলে দিলেন।
17 আমি ভাবলাম আর কখনও শান্তি পাবো না।
    সমস্ত ভালো জিনিসের ভাবনা ভুললাম।
18 নিজে নিজে বললাম,
    “প্রভুর সাহায্যের প্রত্যাশা আর নেই।”
19 আমার যন্ত্রণা এবং আমার উদ্দেশ্যহীন ভাবে
    ঘুরে বেড়ানো মনে রাখবেন।
যে শাস্তি আপনি আমায় দিয়েছিলেন তা মনে রাখবেন।
20 সব দুঃখ কষ্টের কথা আমার ভালো ভাবেই মনে আছে
    এবং আমি খুবই বিষন্ন।
21 কিন্তু ঠিক তক্ষুনি, আমি অন্য কিছু ভাবি।
    যখন আমি এরকম করে ভাবি, আমি কিছু আশা দেখতে পাই এবং আমার ভাবনাগুলি হল এইরকম:
22 প্রভুর করুণা ও ভালোবাসা অসীম।
    তাঁর দয়ার কোন শেষ নেই।
23 প্রতিটি প্রভাতে নতুন নতুন ভাবে আপনি এটা প্রদর্শন করেন!
    আপনি খুব নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত!
24 আমি মনে মনে বললাম, “আমি যা চাই তা হল, প্রভু।
    তাঁর ওপর আমার আস্থা আছে।”

25 যে সব লোকরা প্রভুর জন্য অপেক্ষা করে, প্রভু তাদের প্রতি সদয় হন।
    প্রভুর কাছে যারা সাহায্য চায় তাদের প্রতি প্রভু সদয়।
26 নিজেকে রক্ষা করবার সব চেয়ে ভাল উপায় হল
    শান্তভাবে প্রভুর অপেক্ষায় থাকা।
27 কোন ব্যক্তির পক্ষে ছোট বেলা থেকেই
    যোয়াল বহন করা ভালো।
28 প্রভু যখন তাঁর যোয়াল বা বাঁক কোন ব্যক্তির ওপর রাখেন
    তখন শান্তভাবে একাকী তার বসে থাকা উচিত।
29 উদ্ধার পাবার আশায়
    তাকে তার মুখ আভূমি নত করতে হবে।
30 ওই লোকটির গাল বাড়িয়ে চড় খাওয়া উচিত।
    ওই ব্যক্তির উচিত অন্যদের তাকে অপমান করতে দেওয়া।
31 ওই ব্যক্তির মনে রাখা উচিত
    যে প্রভু কাউকেই চিরকালের জন্য পরিত্যাগ করেন না।
32 প্রভু যখন শাস্তি দেন তখন তিনি ক্ষমাও করেন।
    এই ক্ষমা তাঁর গভীরে ভালবাসা আর করুণা থেকেই আসে।

33 প্রভু কাউকে শাস্তি দিতে চান না।
    লোকরা অশান্তিতে থাকুক এটাও তিনি চান না।
34 প্রভু এইগুলি পছন্দ করেন না: তিনি দেশের সব বন্দীদের তাঁর পায়ের তলায় পিষে ফেলতে চান না।
    তিনি কাউকে পেষণ করতে চান না।
35 একজন অন্যের প্রতি অন্যায় করুক এটা তিনি কখনও চান না।
    কিন্তু কিছু মানুষ সব সময়ই পরাৎ‌‌পরের সামনে এরকম কাজ করে।
36 একজন ব্যক্তি আর একজনকে আদালতে প্রতারণা করুক
    এটা প্রভু একেবারে পছন্দ করেন না।
37 কোন লোকেরই কিছু বলা এবং সেটা ঘটানো উচিত নয়
    যতক্ষণ না প্রভু তা ঘটানোর আদেশ দেন।
38 পরাৎ‌‌পর ভালো ও মন্দ
    দুইই ঘটাতে আজ্ঞা দেন।
39 যখন কাউকে পাপের জন্য প্রভু শাস্তি দেন,
    তখন সে জীবিত অবস্থায় অভিযোগ জানাতে পারে না।
40 এসো, আমরা কি করেছি তা সতর্কভাবে পরীক্ষা করি।
    তারপর আমরা প্রভুতে আশ্রয় নেব।

41 স্বর্গের ঈশ্বরের প্রতি হৃদয়
    এবং আমাদের হাত উত্তোলন করা উচিৎ‌।
42 এসো তাঁর উদ্দেশ্যে বলি, “আমরা পাপ করেছি এবং আমরা অবাধ্য হয়েছিলাম।
    আপনি আমাদের ক্ষমা করেননি।”
43 আপনি আমাদের ক্রোধ দিয়ে মুড়ে দিয়েছেন এবং আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন।
    কোন রকম ক্ষমা না করেই হত্যা করেছেন!
44 মেঘের আবরণে আপনি নিজেকে ঢেকেছেন।
    এর কারণ, যাতে কোন প্রার্থনাই মেঘের মধ্যে দিয়ে যেতে না পারে।
45 অন্য জাতিদের কাছে আপনি আমাদের
    আবর্জনা ও ময়লার মতো সৃষ্টি করেছেন।
46 আমাদের সমস্ত শত্রুরা
    আমাদের ঠাট্টা করেছে।
47 আমরা ভয় পেয়েছি।
    গভীর গর্তে পড়ে আমরা দারুণ আঘাত পেয়েছি।
    আমাদের সব কিছু ভেঙেছে।
48 আমার চোখ বেয়ে জলের স্রোত নেমেছে!
    আমি আমার লোকদের ধ্বংসের জন্য কেঁদেছি!
49 যতক্ষণ পর্যন্ত না
    প্রভু স্বর্গ থেকে নীচে দেখেন
50 ততক্ষণ অবিশ্রান্ত ভাবে
    আমার চোখের জল বয়ে যাবে!
51 আমার দুটি চোখ আমায় বিমর্ষ করে তোলে
    যখন আমি আমার শহরের যুবতীদের দুর্দশা দেখি।
52 ওই মানুষগুলো অকারণে আমার শত্রু।
    আমার শত্রুরা আমাকে বিনা কারণে পাখির মতো শিকার করেছে।
53 তারা আমায় গভীর গর্তে নিক্ষেপ করেছে।
    আমি জীবিত আছি জেনেও তারা আমার দিকে পাথর ছুঁড়ছে।
54 জল আমার মাথা ছাপিয়ে গেল।
    আমি মনে মনে বললাম, “আমি শেষ হয়ে গিয়েছি।”
55 প্রভু, আমি গর্তের তলা থেকে আপনাকে ডেকেছি।
    আপনার নাম ধরে চিৎকার করে ডেকেছি।
56 আমার কণ্ঠস্বর শুনুন।
    আপনার কান বন্ধ করে রাখবেন না।
    আমাকে উদ্ধার করতে অস্বীকার করবেন না।
57 আমি যখন আপনার কাছে মিনতি করব তখন আমার কাছে আসবেন!
    আমাকে বলবেন, “ভয় পেও না।”
58 প্রভু আমার আবেদনটা বিচার করুন।
    আমাকে আমার জীবন ফিরিয়ে দিন।
59 প্রভু, আমার দুর্দশা দেখুন।
    আমায় ন্যায় পেতে সাহায্য করুন।
60 আমার শত্রুরা কিভাবে
    আমাকে আঘাত করেছে তা দেখুন।
আমার বিরুদ্ধে ওদের সমস্ত শয়তানি
    পরিকল্পনাগুলি সম্পর্কে আপনি অবহিত।
61 প্রভু, ওরা কিভাবে আমাকে অপমান করেছে তা শুনুন।
    আমার বিরুদ্ধে ওদের সমস্ত শয়তানি পরিকল্পনার কথা শুনুন।
62 শত্রুদের কথা এবং তাদের সমস্ত পরিকল্পনা
    সব সময়ই আমার বিরুদ্ধে।
63 যখন ওরা বসে কিংবা দাঁড়ায় তখনও আমায় নিয়ে
    ওরা কিভাবে মজা করে তাও দেখুন, প্রভু!
64 প্রভু, ওরা যা করেছে তার জন্য
    ওদের প্রাপ্য শাস্তি দিন!
65 ওদের হৃদয়কে অনমনীয় করে দিন!
    তারপর আপনার অভিশাপ ওদের উপর বর্ষণ করুন!
66 ক্রোধে তাদের তাড়া করুন!
    আপনার আকাশের নীচে তাদের ধ্বংস করুন প্রভু!

জেরুশালেম আক্রমণের ভয়াবহতা

দেখো, সোনা কিভাবে কৃষ্ণবর্ণ হয়েছে।
    দেখো, দামী সোনার কি পরিবর্তন।
চারিদিকেই মন্দিরের পাথরগুলো ইতস্ততঃ ছড়িয়ে আছে।
    তাদের রাস্তার প্রতিটি কোণে বিক্ষিপ্ত করা হয়েছে।
সিয়োনের লোকরা খুব মূল্যবান ছিল।
    তারা একসময় সোনার মতোই মূল্যবান ছিল।
শত্রুরা তাদের কুমোরদের তৈরী
    মাটির পাত্রের মত ব্যবহার করে।
এমনকি শিয়ালও তার শাবকদের স্তন পান করায়।
    কিন্তু আমার লোকরা খুব নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে।
    তারা মরুভূমিতে থাকা উট পাখীর মতো।
তৃষ্ণায় ছোট্ট শিশুর জিভটা মুখে আটকে পড়েছে।
    ছেলেমেয়েরা খাবার চাইছে।
    কিন্তু কেউই তাদের খাবার দেয় না।
এক সময় যারা খুব দামী দামী খাবার খেয়েছে,
    এখন তারাই খিদের জ্বালায় রাস্তায় মরছে।
সুন্দর লাল পোশাক পরে যারা এমশঃ বড় হয়েছে,
    তারাই এখন খাদ্যের সন্ধানে আবর্জনার স্তুপ ঘেঁটে ফিরছে।
তাদের পাপ কার্যের জন্য
    আমার লোকদের শাস্তি সদোমের পাপের
    কারণে শাস্তির চেয়েও বড় হয় গেছে।
সদোম ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল কারণ ঐ জায়গার লোকরা পাপী হয়ে উঠেছিল।
    সদোমকে হঠাৎ‌‌ ধ্বংস করা হয়েছিল।
    কোন মানুষ ঐ ধ্বংস কার্য ঘটায়নি।
সিয়োনের নেতারা বরফের চেয়েও পরিষ্কার ছিল।
    দুধের থেকেও সাদা।
প্রবালের মত ছিল তাদের গায়ের রঙ।
    তাদের দাড়ি ছিল নীলকান্ত মণির মতো।
কিন্তু এখন তাদের মুখ ঝুলের থেকেও কালো।
    রাস্তায় বার হলে কেউ তাদের চিনতে পর্যন্ত পারে না।
তাদের চামড়াগুলি হাড়ের ওপর ঝুলছে
    এবং কাঠের মত শুকিয়ে গেছে।
দুর্ভিক্ষে মরার চেয়ে তরবারির আঘাতে মরা ভাল।
    অনাহারে থাকা জনগণ ভীষণ অবসন্ন।
তারা আহত।
    শস্যক্ষেত্র থেকে তারা কোন ফসল পায় নি তাই খাদ্যের অভাবে তারা মারা গিয়েছে।
10 এমনকি, সমস্ত সুন্দরী মায়েরা
    তাদের সন্তানদেরই খাদ্যের মতো রান্না করেছে।
ওই শিশুগুলি তাদের মায়েদের খাদ্য হয়ে উঠেছিল।
    আমার লোকদের ধ্বংসের সময় এটা ঘটেছিল।
11 প্রভু, তাঁর সমস্ত ক্রোধ ব্যবহার করেছেন।
    তিনি ক্রোধের আগুন সিয়োনে নিক্ষেপ করেছেন।
ওই আগুন সিয়োনকে
    পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে।
12 পৃথিবীর রাজারা এই ঘটনার কথা
    বিশ্বাস করতে পারেন নি।
যা ঘটেছিল বিশ্বের মানুষরা
    তা বিশ্বাস করতে পারে নি।
তারা বিশ্বাস করতে পারেনি যে
    জেরুশালেম শহরের প্রধান ফটক দিয়ে শত্রুরা ঢুকতে সক্ষম হবে।
13 কিন্তু এটাই ঘটেছে
    কারণ জেরুশালেমের ভাববাদীরা পাপ কাজ করেছে।
এটা ঘটেছে কারণ জেরুশালেমের যাজকরা পাপ কাজ করেছে।
    ঐসব লোকরা জেরুশালেম শহরে ভাল মানুষদের হত্যা করেছে।
14 তারা অন্ধের মত শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে।
    রক্তপাতে তারা নোংরা হয়েছে।
তারা এতো নোংরা ছিল যে
    তাদের জামাকাপড়ও কেউ স্পর্শ করে নি।
15 চলে যাও! তোমরা অশুচি।
    লোকরা চিৎকার করে বলছিল, “দূর হয়ে যাও!
দূর হয়ে যাও! আমাদের স্পর্শ কোরো না।”
ঐ লোকরা এদিক ওদিক ঘুরে বেড়িয়েছে কিন্তু কোন ঘরেই আশ্রয় পায়নি।
    অন্য দেশের লোকরা বলেছে, “আমরা ওদের বাঁচতে দিতে চাই না।”
16 প্রভু স্বয়ং ওদের ধ্বংস করেছেন।
    তিনি ওদের আর দেখাশোনা করতে পারছিলেন না।
তিনি যাজকদের শ্রদ্ধা করতে পারেন নি।
    তিনি যিহূদার বয়স্ক মানুষদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন ছিলেন না।
17 সাহায্য চেয়ে চেয়ে আমরা চোখ নষ্ট করে ফেলেছি।
    কিন্তু কোন সাহায্য আসে নি।
আমরা একটা জাতির খোঁজ করেছিলাম যারা আমাদের রক্ষা করতে পারবে।
আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে নজর রেখেছিলাম
    কিন্তু কোন জাতিই আমাদের রক্ষা করতে আসেনি।
18 শত্রুরা সবসময় আমাদের খুঁজে ফিরেছে।
    আমরা পথেঘাটে বেরোতে পর্যন্ত পারিনি।
আমাদের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছিল।
    আমাদের সময় ফুরিয়ে গিয়ে শেষ সময় ঘনিয়ে এল।
19 যে মানুষটা আমাদের তাড়া করেছিল
    তার গতিবেগ আকাশে উড়তে থাকা ঈগলের থেকেও বেশী।
ওই লোকগুলো আমাদের ধরবার জন্য পাহাড়ে তাড়া করেছিল
    এবং আমাদের হঠাৎ‌‌ আক্রমণ করবার জন্য মরুভূমিতে লুকিয়ে থেকেছিল।
20 রাজা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন।
তিনি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন।
    কিন্তু সেই প্রিয় রাজাকেও ওরা ফাঁদে ফেলল।
রাজাকে প্রভুই ফাঁদে অভিষিক্ত করেছিলেন।
    যে রাজার সম্বন্ধে বলতাম, “আমরা রাজার ছায়াতেই বাঁচব।
    তিনি অন্য জাতির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করবেন।”
21 ইদোমের জনগণ, সুখী হও।
    ইদোমের লোকরা তোমরা যারা উসে থাকো, সুখী হও।
কিন্তু মনে রেখো প্রভুর পানপাত্র তোমারও চারিদিক ঘিরে আসবে।
যখন তুমি সেই পানপাত্রে চুমুক দেবে (শাস্তি পাবে), তখন তুমি মাতাল হবে।
    তুমি সেই সময় নিজেকে উলঙ্গ করে ফেলবে।
22 সিয়োন, তোমার শাস্তি সম্পূর্ণ।
    তোমাকে আর বন্দী করে রাখা হবে না।
কিন্তু ইদোমের জনগণ, প্রভু তোমাদের পাপের শাস্তি দেবেন।
    তিনি তোমাদের পাপের মুখোশ খুলে দেবেন।

প্রভুর কাছে প্রার্থনা

আমাদের কি ঘটেছে তা স্মরণ করুন প্রভু।
    দেখুন আমরা কতটা লজ্জিত।
আগন্তুকরা এসে আমাদের মাতৃভূমি তছনছ করেছে।
    আমাদের ঘরবাড়ি বিদেশীদের দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আমরা অনাথ হয়েছি।
    আমাদের পিতা নেই।
    মায়েদের বিধবার মতো অবস্থা।
পানীয় জলও আমাদের কিনে খেতে হয়।
    যে কাঠ আমরা ব্যবহার করি তার জন্যও মূল্য দিতে হয়।
যোয়ালটি কাঁধের ওপর নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি।
    আমাদের কোনও বিশ্রাম নেই এবং আমরা ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত।
মিশরের সঙ্গে আমরা একটি চুক্তি করেছি।
    যথেষ্ট পরিমাণে রুটি পাওয়ার জন্য অশূরদের সঙ্গেও আমরা একটা চুক্তি করেছি।
আমাদের পূর্বপুরুষরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছিল।
    কিন্তু তারা এখন মৃত।
    তাদের সেই পাপের শাস্তি এখনও আমাদের ভোগ করতে হচ্ছে।
দাসরাই এখন আমাদের শাসক।
    কেউই ওদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে নি।
আমরা খাদ্যের জন্য জীবন দিই।
    মরুভূমি আমাদের মেরে ফেলে।
10 আমাদের চামড়া উনুনের মতো গরম হয়ে পড়েছে।
    ক্ষুধার জ্বালায় প্রচণ্ড জ্বর এসেছে।
11 শত্রুরা সিয়োনের মেয়েদের ধর্ষণ করেছে।
    তাদের কাছে যিহূদার কুমারী কন্যারাও আছে।
12 শত্রুরা আমাদের রাজপুত্রদের ফাঁসি দিয়েছে।
    তারা প্রবীণদের সম্মান দেয় নি।
13 শত্রুরা আমাদের যুব সম্প্রদায়কে
    শস্য পেষাই করতে বাধ্য করেছে।
তারা যুবকদের ভারী কাঠের গুঁড়ি
    বইতে জোর করেছে।
14 শহরের প্রবেশদ্বারে প্রবীণরা আর বসে না।
    যুবকরা আর গান বাজনা করে না।
15 আমাদের হৃদয়ে আর আনন্দ নেই।
    আমাদের নাচ অশ্রু জলে রূপান্তরিত হয়েছে।
16 মাথা থেকে আমাদের মুকুট খুলে পড়ে গেছে।
    সমস্ত কিছু এমশঃ খারাপ হয়ে উঠেছে।
    এসব হচ্ছে আমাদের পাপের জন্যই।
17 এসব কারণে আমরা চোখে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি না।
    আমাদের হৃদয়ও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
18 সিয়োন পর্বত এখন এক পরিত্যক্ত জায়গা।
    শিয়ালের অবাধ বিচরণভূমি।
19 কিন্তু প্রভু আপনি চিরকাল রাজত্ব করেন।
    আপনার রাজকীয় সিংহাসন যুগ যুগ ধরে অটুট থাকে।
20 প্রভু! মনে হচ্ছে আপনি একেবারেই আমাদের ভুলে গিয়েছেন।
    মনে হচ্ছে দীর্ঘ সময় আপনি আমাদের একাকী ফেলে দূরে আছেন।
21 প্রভু, আমাদের আপনার কাছে ফিরিয়ে দিন।
    আমরা আনন্দের সঙ্গে ফিরে আসতে চাই আপনার কাছে।
    আবার আগের মতো জীবনযাপন করতে চাই।
22 আমাদের ওপর আপনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ।
    আপনি কি আমাদের সম্পুর্ণ বাতিল করেছেন?

ইব্রীয় 10:19-39

ঈশ্বরের নিকটে এস

19 তাই আমার ভাই ও বোনেরা, মহাপবিত্র স্থানে প্রবেশ করার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আমাদের আছে। যীশুর রক্তের গুণে আমরা নির্ভীকতার সঙ্গে সেখানে প্রবেশ করতে পারি। 20 খ্রীষ্ট এই নতুন পথ একটি পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাৎ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে আমাদের জন্য খুলে দিয়েছেন। এ এক জীবন্ত পথ। এই নতুন পথে আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে অর্থাৎ খ্রীষ্টের দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি। 21 তাই আমাদের এক মহান যাজক রয়েছেন যিনি ঈশ্বরের গৃহের ওপর কর্তৃত্ত্ব করেন। 22 আমাদের শুচি করা হয়েছে ও দোষী বিবেকের হাত থেকে মুক্ত করা হয়েছে। আমাদের দেহকে শুচিশুদ্ধ জলে ধৌত করা হয়েছে। তাই এস, আমরা শুদ্ধ হৃদয়ে বিশ্বাসের কৃত নিশ্চয়তায় ঈশ্বরের সামনে হাজির হই। 23 তাই এস, আমরা আমাদের প্রত্যাশাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে থাকি এবং অপরের কাছে তাকে জানাতে ব্যর্থ না হই। আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করতে পারি যে তিনি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা তিনি পূরণ করবেন।

পরস্পরকে বলশালী হতে সাহায্য কর

24 আমাদের উচিত একে অপরের বিষয়ে চিন্তা করা, যেন ভালবাসতে ও সৎ‌ কাজ করতে পরস্পরকে উৎসাহ দান করতে পারি। 25 আমরা যেন একত্র সমবেত হওয়ার অভ্যাস ত্যাগ না করি, যেমন কেউ কেউ সেইরকম করছে। কিন্তু এস, আমরা পরস্পরকে উৎসাহ ও চেতনা দিই। তোমরা যতই সেই দিন এগিয়ে আসতে দেখছ, ততই এ বিষয়ে আরো বেশী করে উদ্যোগী হও।

খ্রীষ্টের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না

26 সত্যের জ্ঞানলাভের পর যদি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করে চলি, তবে সেই পাপের জন্য বলিদান উৎসর্গ করার মতো আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। 27 আমরা যদি পাপ করেই চলি তবে বিচারের জন্য সেই ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা আর প্রচণ্ড ক্রোধাগ্নি সমস্ত ঈশ্বর বিরোধীকে গ্রাস করবে। 28 কেউ যদি মোশির দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতো তবে দুজন কিংবা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণে নিষ্ঠুরভাবে তাকে হত্যা করা হত, তাকে ক্ষমা করা হত না। 29 ভেবে দেখো, যে লোক ঈশ্বরের পুত্রকে ঘৃণা করেছে, চুক্তির যে রক্তের মাধ্যমে সে শুচি হয়েছিল তা তুচ্ছ করেছে, আর যিনি অনুগ্রহ করেন সেই অনুগ্রহের আত্মাকে অপমান করেছে—হ্যাঁ, নতুন চুক্তির রক্তকে যে অবমাননা করেছে সেই ব্যক্তির কতোই না ঘোরতর শাস্তি হওয়া উচিত। 30 আমরা জানি, ঈশ্বর বলেন, “যারা মন্দ কাজ করে, তাদের আমি শাস্তি দেব; তাদের প্রতিফল দেব।”(A) ঈশ্বর আবার বলেছেন, “প্রভু তাঁর লোকদের বিচার করবেন।”(B) 31 জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে গড়া পাপী মানুষের পক্ষে কি ভয়ঙ্কর বিষয়।

আনন্দ ও সাহস বজায় রাখ

32 সেই আগের দিনগুলির কথা মনে করে দেখ, প্রথমে যখন তোমরা সত্য গ্রহণ করলে, তখন তোমাদের অনেক কষ্ট ও দুঃখভোগ করতে হয়েছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা বেশ অটল ছিলে। 33 কখনও কখনও লোকেরা প্রকাশ্যে তোমাদের বিদ্রূপ করেছে ও অনেক লোকের সামনে তোমাদের নির্যাতিত হতে হয়েছে। কখনও অন্যের ওপর তোমাদের মতো নির্যাতিত হচ্ছে দেখে তোমরা তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছ। 34 যারা কারাগারে বন্দী ছিল, তোমরা তাদের সাহায্য করেছ ও তাদের দুঃখভোগের অংশ নিয়েছ। তোমাদের সম্পত্তি লুঠ করে নিলেও তোমরা আনন্দ করেছ, কারণ তোমরা জানতে যে এসব থেকে উৎ‌কৃষ্ট ও চিরস্থায়ী এক সম্পদ তোমাদের জন্য আছে।

35 তাই অতীতে তোমাদের যে সাহস ছিল তা হারিও না, কারণ সেই সাহসের জন্য তোমরা পুরস্কৃত হবে। 36 তোমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার পর তোমরা তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে ফল লাভ করবে। 37 কারণ এখন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে,

“যাঁর আসবার কথা আছে তিনি আসবেন,
    তিনি দেরী করবেন না।
38 আমার দৃষ্টিতে যাদের ধার্মিক প্রতিপন্ন করেছি
    তারা বিশ্বাসের ফলেই বেঁচে থাকবে,
কিন্তু সে যদি ভয়ে বিশ্বাস থেকে সরে যায়
    তবে আমি তার প্রতি সন্তুষ্ট হব না।”(C)

39 কিন্তু আমরা এমন লোক নই যারা বিশ্বাস থেকে সরে গিয়ে ধ্বংস হয়ে যাই, বরং আমরা সেই রকম লোক যারা বিশ্বাসে রক্ষা পাই।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International