Old/New Testament
শয়তান রাজাদের বিচার
22 প্রভু বললেন: “যিরমিয়, রাজপ্রাসাদে যাও। যিহূদার রাজার কাছে গিয়ে এই ধর্মোপদেশ প্রচার করো: 2 ‘যিহূদার রাজা, প্রভুর বার্তা শোন। তুমি দায়ূদের সিংহাসন থেকে শাসন করছ, তাই শোন হে রাজা, তুমি এবং তোমার সভা পরিষদগণও শোন। জেরুশালেমের ফটক দিয়ে আসা তোমার লোকদেরও ঈশ্বরের বার্তা শুনতে হবে। 3 প্রভু বললেন: যা ঠিক তাই করো। ডাকাতকে নয়, যার ডাকাতি হয়েছে তাকে রক্ষা করো। বিধবা মহিলাদের এবং অনাথ শিশুদের কোন ক্ষতি করো না। নিরীহ লোকদের মেরো না। 4 যদি এই নির্দেশগুলো তোমরা মেনে চলো তাহলে এগুলি ঘটবে: দায়ূদের সিংহাসনে যে সব রাজারা অধিষ্ঠিত রয়েছে তারা জেরুশালেম শহরের ফটক দিয়ে আসা চালিয়ে যাবে। সঙ্গে থাকবে তাদের সভা পরিষদগণ। তারা সবাই রথে ঘোড়ায় চড়ে আসবে। 5 কিন্তু যদি এই নির্দেশগুলি মানা না হয়, তাহলে প্রভু বলেছেন: আমি, প্রভু, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি রাজার প্রাসাদ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সব কিছু জঞ্জালের স্তূপে পরিণত হবে।’”
6 যিহূদার রাজার রাজপ্রাসাদের সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল:
“এই প্রাসাদ হল গিলিয়দের অরণ্যের মতো উচ্চ।
এই রাজপ্রাসাদ হল লিবানোনের পর্বতের মতো উচ্চ,
কিন্তু এই প্রাসাদকে মরুভূমিতে পরিণত করব।
এই প্রাসাদ নির্জন শহরের মতো একাকি দাঁড়িয়ে থাকবে।
7 আমি ধ্বংসকারীদের এই প্রাসাদ ধ্বংস করতে পাঠাব।
তারা প্রাসাদের সুদৃশ্য এরস কড়িকাঠগুলো কেটে ফেলবে
এবং সেগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেবে।
8 “অনেক জাতির লোকরা এই শহরের পাশ দিয়ে যেতে যেতে একে অন্যকে প্রশ্ন করবে, ‘মহান শহর জেরুশালেমের ওপর প্রভু এমন একটা সাংঘাতিক কাণ্ড কেন করলেন?’ 9 এই হবে তাদের প্রশ্নের উত্তর: যিহূদার লোকরা তাদের প্রভু ঈশ্বরের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল তা তারা অমান্য করেছিল বলে ঈশ্বর জেরুশালেমকে ধ্বংস করেছেন। যিহূদার লোকরা মূর্ত্তি পূজা করেছিল বলে তাদের এই ভয়ানক ফল ভোগ করতে হল।”
রাজা যেহোয়াজের বিরুদ্ধে বিধান
10 মৃত রাজাদের জন্য না কেঁদে
বরং যে রাজাকে এই জায়গা ছেড়ে চলে যেতে হবে
তার জন্য কাঁদো।
কারণ সে আর কখনো ফিরে আসবে না।
আর কোন দিন সে নিজের মাতৃভূমিকে দেখতে পাবে না।
11 যোশিয়ের পুত্র শল্লুম (যেহোয়াজ) সম্বন্ধে প্রভু যা বলেছেন তা হল, (যোশিয় মারা যাবার পর তার পুত্র শল্লুম যিহূদার রাজা হয়েছিল।) “যেহোয়াজ জেরুশালেম ছেড়ে চলে গিয়েছিল। সে আর কোন দিন জেরুশালেমে ফিরে আসে নি। 12 মিশরের লোকেরা তাকে যেখানে ধরে নিয়ে গিয়েছে সেখানেই তার মৃত্যু হবে। সে আর কোনদিন এই দেশকে দেখতে পাবে না।”
রাজা যিহোয়াকীমের বিরুদ্ধে বিধান
13 “রাজা যিহোয়াকীমের জীবনে খারাপ সময় ঘনিয়ে আসছে।
সে তার রাজপ্রাসাদ তৈরী করতে বহু অসৎ কাজ করেছে।
লোক ঠকিয়ে প্রাসাদের ঘর সমেত উচ্চতা বাড়িয়েছে।
তার প্রজাদের দিয়ে বিনা পারিশ্রমিকে
সে কাজ করিয়ে নিয়েছে।”
14 যিহোয়াকীম বলল,
“আমি নিজের জন্য একটি বিশাল প্রাসাদ তৈরী করব।
সেই প্রাসাদের ওপরের তলায় বড় বড় ঘর থাকবে।”
তাই সে বড় বড় জানালা তৈরী করল।
এরস বৃক্ষের কাঠ দিয়ে তৈরী জানালার চারিদিকে সে লাল রঙ করল।
15 যিহোয়াকীম, তোমার প্রাসাদে অসংখ্য এরস বৃক্ষের কাঠ
তোমাকে মহান রাজা করে দিতে পারবে না।
তোমার পিতা যোশিয় খাদ্য ও পানীয় পেয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন।
তিনি সঠিক পথে সঠিক কাজ করেছিলেন।
অতএব তাঁর ক্ষেত্রে সব কিছুই ভালো হয়েছিল।
16 যোশিয় গরীব দুঃখী লোকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলে
তার সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটেনি।
যিহোয়াকীম, “ঈশ্বরকে জানার অর্থ কি?”
এর অর্থ সৎভাবে জীবনযাপন করা
এবং যারা গরীব ও আর্ত্ত তাদের সাহায্য করা।
এই হল প্রভুর বার্তা:
17 “যিহোয়াকীম, তোমার চোখ দুটো শুধু তোমার লাভের দিকটাই দেখে।
তোমার সমস্ত ভাবনা হল লাভ নিয়ে এবং কি করে আরো বেশী কিছু পাবে তাই নিয়ে।
তুমি ইচ্ছা করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছো।
স্বেচ্ছায় অন্যের জিনিস চুরি করেছো।”
18 সুতরাং যোশিয়র পুত্র যিহোয়াকীমকে প্রভু এই কথাগুলি বললেন:
“যিহূদার লোকেরা কখনও যিহোয়াকীমের জন্য কাঁদবে না।
তারা একে অপরকে বলবে না;
‘হে আমার ভাই, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত!
হে আমার ভগিনী, আমি যিহোয়াকীমের জন্য খুব দুঃখিত!’
তারা যিহোয়াকীমের জন্য দুঃখিত হবে না।
তারা তার সম্বন্ধে বলবে না,
‘হে মনিব, আমরা দুঃখিত!
হে রাজা আমরা মর্মাহত!’
19 জেরুশালেমের লোকরা যিহোয়াকীমকে কবর দেবে একটি মৃত গাধার সৎকারের ভঙ্গিতে।
তারা তার মৃতদেহ টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে জেরুশালেমের ফটকের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।
20 “যিহূদা, যাও লিবানোনের পাহাড়ে উঠে চিৎকার করে কাঁদো
যাতে তোমাদের সেই কান্নার রোল বসনের পাহাড় থেকে শোনা যায়।
অবারীম পাহাড় থেকে চেঁচিয়ে ওঠো।
কারণ তোমার ‘প্রেমিকরা’ সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
21 “যিহূদা, তুমি নিজেকে নিরাপদ মনে করেছিলে
কিন্তু আমি তোমাকে সতর্ক করেছিলাম!
তোমায় সতর্ক করেছিলাম
কিন্তু আমার কথা শোননি।
ছেলেমানুষ ছিলে বলে তুমি ভুলপথে জীবনযাপন করেছিলে।
যিহূদা, তুমি তোমার যৌবনকাল থেকে
আমাকে অমান্য করেছ।
22 যিহূদা আমি তোমাকে যে শাস্তি দেব তা আসবে ঝড়ের মতো
এবং সেই ঝড় তোমার সমস্ত মেষপালকদের উড়িয়ে নিয়ে যাবে।
তুমি ভেবেছিলে অন্যান্য জাতিগুলি তোমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে,
কিন্তু তারাও পরাজিত হবে।
তখন তুমি সত্যি সত্যি নিরাশ হয়ে পড়বে।
লজ্জিত হবে নিজের অতীতের কৃতকর্মের কথা ভেবে।
23 “রাজা, তুমি পাহাড়ের একেবারে ওপরে এরস বৃক্ষের তৈরী সুদৃশ্য প্রাসাদে বাস করো।
এটা অনেকটা তোমার কাছে লিবানোনে বাস করার মতোই যেখান থেকে ঐ কাঠ আসে।
যেহেতু পাহাড়ের ওপর বিশাল প্রাসাদে তুমি বাস করো তাই তুমি নিজেকে নিরাপদ ভাবছো।
কিন্তু যখন শাস্তি তোমার কাছে আসবে তখন তুমি আঘাত পাবে এবং প্রসব যন্ত্রণায় কাতর মহিলার মত আর্তনাদ করবে।”
রাজা যিহোয়াকীণের বিরুদ্ধে রায়
24 প্রভু বললেন, “আমি আছি এটা যেমন নিশ্চিৎ,” এই হল প্রভুর বার্তা, “তেমনি ভাবে আমি এটা করব। যিহোয়াকীমের পুত্র যিহোয়াকীণ, যিহূদার রাজা, তুমি যদি আমার ডান হাতের মোহর করা আংটিও[a] হও, আমি তোমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেব। 25 যিহূদারাজ কনিয়, তুমি যাদের ভয়ে ভীত সেই বাবিলের রাজা নবূখদ্রিৎসরের ও বাবিলের লোকদের হাতে আমি তোমাকে তুলে দেব। তারা তোমাকে হত্যা করতে চায়। 26 আমি তোমাকে ও তোমার মাকে এমন এক দেশে পাঠিয়ে দেব যেটা তোমাদের কারোরই জন্মস্থান নয়। তোমরা সেখানে মারা যাবে। 27 যিহোয়াকীণ তুমি যদি স্বদেশ কাতর হয়ে যাও এবং তোমার নিজের দেশে ফিরেও যেতে ইচ্ছা কর, তুমি কখনও ফিরে যাবার অনুমতি পাবে না।”
28 যিহোয়াকীণ হল এক ভাঙ্গা পাত্রের মত যাকে কোন মানুষ বাতিল করে ফেলে দিয়েছে।
সে এমনই এক পাত্র যাকে কেউ চায় না।
যিহোয়াকীণ ও তার সন্তানদের কেন ফেলে দেওয়া হবে?
কেন তাদের অন্য দেশে নিক্ষিপ্ত করা হবে?
29 ভূমি, যিহূদার দেশ,
প্রভুর বার্তা শোন।
30 প্রভু বললেন, “যিহোয়াকীণ সম্বন্ধে এই কথাগুলো লিখে নাও।
‘সে হবে এমনই এক মানুষ যার আর কোন সন্তান থাকবে না।
সে কখনো জীবনে সফল হবে না।
তার কোন সন্তান কখনো দায়ূদের সিংহাসনে বসতে পারবে না।
তার কোন সন্তান কখনো যিহূদায় রাজত্ব করবে না।’”
23 “যিহূদার মেষপালকদের[b] পক্ষে এটা খারাপ হবে। এই মেষপালকরা আমার মেষদের আহত করছে। তারা চারদিক থেকে এই মেষদের তাড়িয়ে আমার শস্যের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে।” এই হল প্রভুর বার্তা।
2 এই মেষপালকরা (নেতৃবৃন্দ) আমার মেষদের (লোকদের) জন্য দায়ী এবং প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর ঐ মেষপালকদের বললেন: “তোমরা মেষপালকরা আমার মেষদের চতুর্দিকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছ। এবং তোমরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করনি। কিন্তু আমি তোমাদের দেখে নেব। তোমাদের মন্দ কাজের জন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেব।” এই হল প্রভুর বার্তা। 3 “আমি আমার মেষদের অন্য দেশে পাঠিয়ে দেব। তারপর ঐ বিদেশগুলোর থেকে আমি আমার বাকী মেষগুলিকে জড়ো করব এবং যে সমস্ত মেষরা পড়ে থাকবে, তাদের আমি একত্রিত করে তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনব। তারা যখন স্বদেশে ফিরবে তখন তাদের সন্তানরা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে। 4 আমি তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নতুন মেষপালক রাখব এবং তাহলে আমার কোন মেষই ভয় পাবে না বা হারিয়ে যাবে না।” এই হল প্রভুর বার্তা।
ন্যায়পরায়ণ “নবোদ্গম”
5 প্রভু এই বার্তা বলেন:
“সেই সময় আসছে
যখন আমি একটি ভালো ‘নবোদ্গম’[c] উত্তোলন করব।
সে বুদ্ধিমত্ত্বার সঙ্গে শাসন করবে এবং দেশে যা ন্যায্য এবং ঠিক তাই করবে।
সে সুষ্ঠুভাবে দেশ শাসন করবে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
6 তার রাজত্বের সময়, যিহূদা রক্ষা পাবে
এবং ইস্রায়েল নিরাপদে থাকবে।
এই হবে তার নাম:
প্রভুই আমাদের ধার্মিকতা।”
7 “সেই সময় আসছে,” এই হল প্রভুর বার্তা, “যখন লোকরা আর প্রভুর পুরানো প্রতিশ্রুতির কথা বলবে না। পুরানো প্রতিশ্রুতি হল: ‘যেহেতু প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত, প্রভু তিনিই, যিনি সমস্ত ইস্রায়েলবাসীকে মিশর থেকে নিয়ে এসেছিলেন।’ 8 কিন্তু লোকরা এখন নতুন কথা বলবে। তারা বলবে, ‘প্রভুর অস্তিত্ব যেমন নিশ্চিত, তিনিই হলেন সেই একজন যিনি সমস্ত ইস্রায়েলের লোকদের উত্তরদেশ থেকে বার করে এনেছিলেন। তিনি তাদের যে সব দেশে পাঠিয়েছিলেন, সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিলেন।’ তখন থেকে ইস্রায়েলবাসী তাদের নিজেদের দেশে বসবাস শুরু করল।”
ভ্রান্ত ভাববাদীদের বিরুদ্ধে বিধান
9 ভাববাদীদের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা:
আমার হৃদয় ভেঙ্গে গেছে।
প্রভু যা বলেছেন তাতে ভয়ে আমার হাড়ে পর্যন্ত কাঁপুনি ধরেছে।
প্রভুর পবিত্র বার্তাটির দরুণ,
আমি একজন বদ্ধ মাতালের মত বলছি।
10 যিহূদার মাটি ব্যাভিচারীদের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে ভরে গেছে।
তারা নানা বিষয়ে অবিশ্বস্ত।
প্রভুর অভিশাপে এই দেশের মাটি শুষ্ক হয়ে যাবে।
শুকিয়ে যাবে গাছের পাতা।
শুকিয়ে যাবে পশুচারণের তৃণভূমি।
শস্যভূমি শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে যাবে।
ভাববাদীরা হল শয়তান।
তারা তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি এবং ক্ষমতা ভুলভাবে ব্যবহার করেছিল।
11 “ভাববাদীরা তো বটেই,
এমন কি যাজকরাও শয়তান।
আমি তাদের আমার মন্দিরে খারাপ কাজ করতে দেখেছি।
এই হল প্রভুর বার্তা।
12 আমি যদি ভাববাদীদের এবং যাজকদের আমার বার্তা দেওয়া বন্ধ করি,
তাহলে তাদের পিচ্ছিল পথে, অন্ধকারের মধ্যে হাঁটতে হবে।
তারা ঐ অন্ধকারে পড়ে যাবে।
আমি তাদের ওপর দুর্বিপাক আনব।
আমি শাস্তি দেব ঐ সমস্ত ভাববাদী ও যাজকদের।”
এই হল প্রভুর বার্তা।
13 “শমরিয়ার ভাববাদীদের অন্যায় করতে দেখেছি।
আমি ঐ ভাববাদীদের বাল মূর্ত্তির নামে ভাববাণী করতে দেখেছি।
ঐ ভাববাদীরা মিথ্যা শিক্ষা দিয়ে ইস্রায়েলবাসীকে প্রভুর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
14 এখন দেখছি যিহূদার ভাববাদীরা
সেই সব গর্হিত কাজগুলি জেরুশালেমে করছে।
এই ভাববাদীরা পাপ ও ব্যভিচার করে বেড়াচ্ছে।
তারা মিথ্যেকেই প্রশয় দিয়ে এসেছে এবং তারা ভুল শিক্ষাগুলিকে পালন করেছিল।
অসৎ লোকদের তারা একটা না একটা
গর্হিত কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে এসেছে।
তাই যিহূদার মানুষ সদোমের মানুষের মতো পাপ থেকে বিরত থাকেনি।
এখন জেরুশালেম আমার কাছে ঘমোরার মতো।”
15 সুতরাং প্রভু সর্বশক্তিমান ভাববাদীদের সম্বন্ধে যা বলেন তা হল এই:
“আমি ঐ ভাববাদীদের শাস্তি দেব।
বিষাক্ত খাদ্য ও জল পান করার মতো শাস্তি দেব।
ভাববাদীরা আত্মিক অসুখে ভুগতে শুরু করেছিল
এবং সেই অসুখ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তাই আমি ঐ ভাববাদীদের শাস্তি দেব।
ঐ অসুখ ভাববাদীদের মাধ্যমে জেরুশালেমে এসেছিল।”
16 সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথাগুলি বলেন:
“ভাববাদীরা যা বলেছে তার দিকে তোমরা মন দিও না।
তারা তোমাদের বোকা বানাতে চাইছে।
ঐ ভাববাদীরা স্বপ্নদর্শন সম্বন্ধে কথা বলছে।
কিন্তু তারা আমার কাছ থেকে কোন স্বপ্নাদেশ পায় নি।
ঐ স্বপ্নদর্শনগুলো তাদের নিজেদের মনের স্বপ্নদর্শন।
17 কিছু লোক প্রভুর সত্য বার্তাকে ঘৃণা করে
তাই ভাববাদীরা ঐ লোকদের ভুল বার্তা দেয়।
তারা বলে, ‘তোমরা শান্তিতে বিরাজ করবে।’
কিছু মানুষ ভীষণ একগুঁয়ে, জেদী।
তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো কাজ করে।
তাই সেই সুযোগ নিয়ে ভাববাদীরা ঐ জেদী লোকদের বলল,
‘তোমাদের সঙ্গে খারাপ কোন ঘটনা ঘটবে না!’
18 কিন্তু ঐ ভাববাদীদের কেউই স্বর্গীয় সভায় দাঁড়ায়নি।
তাদের কেউই প্রভুকে দেখেনি
বা প্রভুর বার্তা শোনেনি।
19 এখন প্রভুর কাছ থেকে ঝড়ের মতো শাস্তি আসবে।
প্রভুর ক্রোধ হল ঘূর্ণিঝড়।
সেই ঝড় অসৎ লোকেদের মাথার ওপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়বে।
20 পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শেষ না করে
প্রভু তাঁর ক্রোধ প্রশমিত করবেন না।
সেই দিনটি যখন আসবে
তখন তোমরা পরিষ্কার ভাবে এটি বুঝতে পারবে।
21 আমি ঐ ভাববাদীদের পাঠাইনি।
অথচ তারা দৌড়ে বেড়ালো নিজেদের তৈরী বার্তা নিয়ে।
আমি তাদের সঙ্গে কথা বলিনি।
অথচ তারা আমার নাম করে প্রচার করেছিল তাদের ভ্রান্ত ধর্মোপদেশ।
22 তারা যদি আমার স্বর্গীয় সভায় দাঁড়াতো,
তাহলে তারা আমার বার্তা যিহূদার লোকদের কাছে প্রচার করতে পারত।
তারা মানুষকে খারাপ কাজ করা থেকে বিরত করতে পারত।
তারা মানুষকে অসৎ হওয়া থেকে বিরত করতে পারত।”
23 “আমিই ঈশ্বর।
আমি বহুদূরে নয়, খুব কাছেই আছি।
এই হল প্রভুর বার্তা।
24 কেউ গোপন জায়গায় লুকিয়ে থাকলেও
আমি কিন্তু সহজেই তাকে দেখতে পাই।
কেন? কারণ আমি স্বর্গ এবং মর্ত্য সর্বত্র বিরাজমান।”
প্রভু একথা বলেছেন: 25 “ঐ ভাববাদীরা আমার নাম দিয়ে মিথ্যে ধর্মোপদেশ প্রচার করেছে। তারা বলেছে, ‘আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি! আমি স্বপ্নাদেশ পেয়েছি!’ আমি তাদের ঐ কথাগুলো বলতে শুনেছি। 26 আর কতদিন এভাবে চলবে? ঐ ভাববাদীরা মিথ্যা রচনা করে এবং লোকদের মিথ্যা শিক্ষা দেয়। 27 ঐ ভাববাদীরা চেষ্টা করল যাতে যিহূদার লোকরা আমার নাম ভুলে যায়। তারা তাদের মিথ্যে স্বপ্নাদেশের কথা বলে বেড়াতে লাগল। যে ভাবে তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে গিয়েছিল, সেই ভাবে তারা আমার লোকদের আমাকে ভুলে যাওয়াতে চেষ্টা করছে। তাদের পূর্বপুরুষরা আমাকে ভুলে ভ্রান্ত দেবতার পূজা করেছিল। 28 খড় আর গম যেমন এক জিনিস নয়, তেমনি ভাববাদীদের স্বপ্নাদেশ আর আমার বার্তাও এক নয়। কেউ যদি নিজেদের দেখা স্বপ্নকে বলে বেড়াতে চায় তা সে বলুক। কিন্তু একজন লোক যদি আমার বার্তা শোনে, তাকে সে কথা সত্যি করে বলতে হবে।” এই হল প্রভুর বার্তা। 29 হ্যাঁ, প্রভু বলেন, “আমার বার্তা হল আগুনের মতো। আমার বার্তা হল পাথরে আছড়ে পড়া হাতুড়ি, যা পাথরকেও গুঁড়িয়ে দেয়।”
30 এই হল প্রভুর বার্তা: “সুতরাং আমি ঐ কপট ভাববাদীদের বিরুদ্ধে। ঐ ভাববাদীরা একে অন্যের কাছ থেকে আমার বাণীসমূহ চুরি করে চলেছে।” 31 হ্যাঁ প্রভু বলেন, “আমি মিথ্যা ভাববাদীদের বিরুদ্ধে। তাদের নিজেদের কথাগুলোকে আমার বার্তা বলে তারা লোক ঠকাচ্ছে। 32 আমি ঐ কপট ভাববাদী এবং তাদের মিথ্যে স্বপ্ন ও মিথ্যে ধর্মোপদেশ প্রচারের বিরুদ্ধে।” এই হল প্রভুর বার্তা। “তারা তাদের মিথ্যে ছলনা ও ভ্রান্ত শিক্ষা দিয়ে আমার লোকদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ঐ ভাববাদীদের লোককে শিক্ষা দিতে পাঠাই নি। আমি তাদের আমার জন্য কিছু করার নির্দেশ দিইনি। তারা যিহূদার লোকদের কোন ভাবেই সাহায্য করতে পারবে না।” এই হল প্রভুর বার্তা।
প্রভুর শোকবার্তা
33 “যিহূদার লোকরা ভাববাদী অথবা কোন যাজক হয়তো তোমাকে জিজ্ঞেস করবে, ‘যিরমিয়, প্রভুর ঘোষণা কি?’ তুমি ওদের উত্তরে বলবে, ‘তোমরা হলে প্রভুর কাছে ভারী বোঝা এবং আমি ঐ ভারী বোঝা ছুঁড়ে ফেলব।’” এই হল প্রভুর বার্তা।
34 “কোন ভাববাদী, কোন যাজক অথবা কোন একজন সাধারণ লোক হয়তো বলতে পারে, ‘এই হল প্রভুর ঘোষণা।’ যে একথা বলবে সে মিথ্যেবাদী এবং আমি তাকে ও তার পরিবারকে শাস্তি দেব। 35 তোমরা একে অপরকে বলবে: ‘প্রভু কি উত্তর দিলেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বললেন?’ 36 কিন্তু তোমরা আর কখনও এই অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করবে না: ‘প্রভুর ঘোষণা।’ একথা খবরদার উচ্চারণ কোরো না কারণ প্রভুর ঘোষণা কখনও কারও ক্ষেত্রে ভারী বোঝা হয় না। কিন্তু তোমরা আমাদের ঈশ্বরের কথায় পরিবর্তন ঘটিয়েছ। তিনি জীবন্ত ঈশ্বর, তিনি প্রভু সর্বশক্তিমান।
37 “তোমরা যদি ঈশ্বরের বার্তা জানতে চাও তাহলে কোন ভাববাদীকে জিজ্ঞেস করো। ‘প্রভু আপনাকে কি উত্তর দিয়েছেন?’ অথবা ‘প্রভু কি বলেছেন?’ 38 কিন্তু একথা বলো না, ‘প্রভুর ঘোষণা কি ছিল?’ যদি তোমরা আবার এই কথার পুনরাবৃত্তি করো তাহলে প্রভু তোমাদের উদ্দেশ্যে এগুলি বলবেন: ‘তোমরা আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করবে না।’ আমি তোমাদের এই শব্দ ব্যবহার করতে বারণ করছি। 39 কিন্তু তোমরা যদি আমার বার্তাকে ভারী বোঝা বলে উল্লেখ করো তাহলে আমিও তোমাদের এবং ঐ শহরটিকে ভারী বোঝা বলে মনে করে আমার কাছ থেকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেব। আমি তোমাদের পূর্বপুরুষকে এই জেরুশালেম শহর দিয়েছিলাম। কিন্তু আমি তোমাদের এই শহর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেব। 40 আমি তোমাদের চিরকালের জন্য অপদস্থ করব এবং তোমরা কোন দিন তোমাদের বিব্রত অবস্থাকে ভুলতে পারবে না।”
1 ঈশ্বরের দাস এবং যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত দূত পৌলের কাছ থেকে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের খ্রীষ্ট বিশ্বাসের পথে এগিয়ে আনতে ও ঐশ্বরিক সত্য শিক্ষা দিতে আমাকে দূত হিসাবে পাঠানো হয়েছে; আর সেই সত্যই আমাদের জ্ঞাত করে কিভাবে ঈশ্বরের সেবা করতে হয়। 2 অনন্ত জীবনের প্রত্যাশা থেকেই আমাদের সেই বিশ্বাস ও জ্ঞান লাভ হয়। সময় শুরুর পূর্বেই ঈশ্বর সেই জীবনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আর ঈশ্বর মিথ্যা বলেন না। 3 ঠিক সময়ে ঈশ্বর তাঁর বার্তা জগতের কাছে প্রচারের মাধ্যমেই তা প্রকাশ করেছেন। ঈশ্বর সেই কাজের ভার আমার হাতে তুলে দিয়েছেন। আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে আমি সেই বার্তা প্রচার করেছি।
4 এই চিঠি তীতের প্রতি লেখা হয়েছে। একই বিশ্বাসের ভাগীদার হওয়ায় তুমি আমার প্রকৃত সন্তান।
পিতা ঈশ্বর ও আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট তোমায় অনুগ্রহ ও শান্তি দিন।
ক্রীতী দ্বীপে তীতের প্রচার
5 আমি তোমাকে ক্রীতী দ্বীপে রেখে এলাম, যাতে বাকি কাজগুলি তুমি শেষ করতে পার এবং আমার নির্দেশ অনুসারে প্রতিটি শহরের মণ্ডলীতে প্রাচীনদের নিয়োগ করতে পার। 6 প্রাচীনরূপে গন্য হবে সেই ব্যক্তি, যে কোন দোষে দোষী নয়, যে কেবল একজন স্ত্রীর স্বামী, যার ছেলেমেয়েরা খ্রীষ্টবিশ্বাসী এবং বেয়াড়া বা অবাধ্য বলে পরিচিত নয়। 7 একজন প্রাচীনের কাজ হল ঈশ্বরের কাজে তত্ত্বাবধান করা সুতরাং তাকে নির্দোষ, নম্র, উদারচিত্ত এবং ক্রোধে ধীর হতে হবে, মাতাল মারকুটে ও লোক ঠকিয়ে ধনী হবার চেষ্টা সে করবে না। 8 একজন প্রাচীন বরং লোকেদের সাহায্য করার জন্য তার গৃহে তাদের আতিথ্য দিতে প্রস্তুত থাকবে, যা ভাল তাই ভালবাসবে; সে বিচক্ষণ, ন্যায়পরায়ণ, পবিত্র ও জিতেন্দ্রিয় হবে। 9 আমরা যে সত্য প্রচার করি তা সে বিশ্বস্তভাবে অনুসরণ করবে; লোকদের সঠিকভাবে শিক্ষা দিতে পারবে এবং যারা সত্যের বিরোধী তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে পারবে।
10 কারণ অনেকে আছে যারা অবাধ্য স্বভাবের মানুষ যারা অসার কথাবার্তা বলে বেড়ায় ও অনেককে ভ্রান্ত পথে নিয়ে যায়। বিশেষ করে আমি সেই লোকদের কথা বলছি, যারা বলছে যে সব অইহুদী খ্রীষ্টীয়ানদের সুন্নত হওয়া চাই। 11 একজন প্রাচীন নিশ্চয়ই দেখিয়ে দিতে পারবেন যে এইসব লোকেদের চিন্তা ভুল ও তাদের কথাবার্তা অসার, অবশ্যই তাদের মুখ বন্ধ করে দিতে পারবেন, কারণ তারা তাদের যে বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া উচিত নয় তা শিক্ষা দিয়ে তারা বহু পরিবারের সবাইকে বিপর্যস্ত করেছে। তারা অসৎ উপায়ে অর্থ লাভের জন্য এইরকম করে বেড়ায়। 12 তাদেরই একজন ক্রীতীয় ভাববাদী বলছেন, “ক্রীতীয়েরা সর্বদাই মিথ্যাবাদী, বন্য জন্তু এবং অলস ও পেটুক,” 13 আর একথা সত্যি। এইজন্য তুমি ঐ লোকদের বল যে তারা ভুল করছে, তুমি তাদের প্রতি কড়া হও যাতে তাদের বিশ্বাস দৃঢ় হয়। 14 তখন তারা ইহুদীদের মিথ্যা গল্প গ্রহণ করবে না এবং যারা সত্য থেকে সরে গেছে এরকম লোকদের আজ্ঞা মানবে না।
15 অন্তরে যারা শুচি তাদের কাছে সব কিছুই শুচি; কিন্তু যাদের অন্তর কলুষিত ও যারা অবিশ্বাসী তাদের কাছে কিছুই শুচি নয়, বাস্তবে তাদের মন ও বিবেক কলুষিত হয়ে পড়েছে। 16 তারা স্বীকার করে যে ঈশ্বরকে মানে, কিন্তু কাজকর্মে তাঁকে অস্বীকার করে। তারা অতিশয় ঘৃন্য, তারা অবাধ্য এবং কোন ভাল কাজ করার ব্যাপারে সম্পূর্ণ অযোগ্য।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International