Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Old/New Testament

Each day includes a passage from both the Old Testament and New Testament.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
যাত্রা 29-30

যাজক নিয়োগের উৎসব

29 প্রভু মোশিকে বললেন, “এখন আমি তোমাকে বলব আমার সেবায় বিশেষ যাজক হিসেবে নিয়োগ করার জন্য হারোণ ও তার পুত্রদের কি কি করতে হবে। একটি নির্দোষ ছোট বলদ ও দুটি মেষশাবক জোগাড় করে আনো। তারপর উৎকৃষ্ট মানের গমের আটা থেকে খামিরবিহীন রুটি তৈরী করো এবং একই আটা বা ময়দা দিয়ে জলপাইয়ের তেল মিশিয়ে পিঠে তৈরী করবে। তেলে ভাজা সরুচাকলী পিঠেও বানাবে। এই রুটি ও পিঠেগুলি ঝুড়িতে ভরবে। এবার এই ঝুড়িটি এবং ষাঁড় ও মেষ দুটি সমাগম তাঁবুতে নিয়ে এসো।

“এরপর হারোণ ও তার পুত্রদের সমাগম তাঁবুর দরজায় নিয়ে আসবে। পরিষ্কার জলে তাদের স্নান করাবে। বিশেষভাবে বানানো পোশাকটি হারোণকে পরাবে। তাকে বোনা সাদা পোশাকটি এবং নীল বস্ত্র সমেত এফোদ পরাবে। এফোদের সঙ্গে যুক্ত করবে বক্ষাবরণ। এরপর সুদৃশ্য কোমরবন্ধনী লাগিয়ে দেবে। তার মাথায় পাগড়ি পরাও এবং পাগড়িটি ঘিরে বিশেষ পবিত্র মুকুটটি পরাও। এবার অভিষেকের তেল হারোণের মাথায় ছিটিয়ে দেবে। এইভাবে হারোণ যাজকরূপে অভিষিক্ত হবে।

“এরপর হারোণের পুত্রদের ঐ স্থানে নিয়ে এসে সাদা আলখাল্লা পরাবে। তাদের কোমরে বাঁধবে কোমরবন্ধনী। তাদের মাথায় পরাবে শিরোভূষণ। এইভাবে তারা যাজক হিসাবে চিহ্নিত হবে। চিরস্থায়ী অধিকার বিধি অনুযায়ী তারা যাজক পদে উত্তীর্ণ হবে। এইভাবে তুমি হারোণ ও তার পুত্রদের যাজক হিসাবে অভিষিক্ত করবে।

10 “এবার সেই বলদকে সমাগম তাঁবুর সামনে আনো। হারোণ ও তার পুত্ররা সেই বলদের ওপর তাদের হাত রাখবে। 11 সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথে ঐ বলদটিকে প্রভুর উপস্থিতিতে বলি দাও। প্রভু তা দেখবেন। 12 সেই বলদ বলির কিছু পরিমাণ রক্ত নাও এবং তোমার আঙ্গুল দিয়ে বেদীর শৃঙ্গগুলির ওপরে ঐ রক্তের প্রলেপ লাগিয়ে দাও। বাকি রক্ত বেদীর নীচে ছড়িয়ে দেবে। 13 এবার বলি দেওয়া সেই বলদের শরীরের সমস্ত চর্বি, যকৃৎ এবং চর্বি এবং দুটো মুত্রগ্রন্থী ও তার চারপাশের চর্বি জড়ো করে বেদীর ওপর জ্বালাবে। 14 এবার ঐ বলদের মাংস, চামড়া এবং গোবর তাঁবুর বাইরে নিয়ে যাও এবং তা আগুনে পুড়িয়ে দাও। এই পদ্ধতিতে যাজকদের পাপমোচনের হোমবলি হবে।

15 “এবার হারোণ ও তার পুত্রদের বলো একটি মেষের ওপর হাত রাখতে। 16 ঐ মেষটিকে কেটে ফেল। তার এবং বলির রক্ত সংগ্রহ কর এবং ঐ রক্ত বেদীর চারপাশে লাগিয়ে দাও। 17 এরপর মেষটিকে খণ্ড খণ্ড করে কাটো। মেষের অভ্যন্তর ভাগ এবং পা-গুলি ধোও। এই অংশগুলি অন্যান্য অংশের সঙ্গে এবং মাথার সঙ্গে রাখো। 18 এবার সেগুলি বেদীতে এনে পুড়িয়ে দেবে। বেদীতে পোড়ালে তা হবে হোমবলি। প্রভুর উদ্দেশ্যে আগুনের উপহার। প্রভু এর গন্ধে খুশী হবেন।

19 “এবার অন্য একটি মেষ নিয়ে এসো এবং হারোণ ও তার পুত্রদের বলো মাথায় হাত রাখতে। 20 ছাগলটিকে বলি দাও ও তার একটু রক্ত নাও এবং সেটি হারোণ ও তার পুত্রদের ডান কানের লতিতে লাগিয়ে দাও। একটু রক্ত লাগাও ডান হাতের বুড়ো আঙুলে এবং কিছু রক্ত লাগাবে ডান পায়ের বুড়ো আঙুলে। এরপর বাকী রক্ত বেদীর চারদিকে ঢেলে দেবে। 21 এবার বেদী থেকে একটু রক্ত তুলে নাও এবং একটি বিশেষ অভিষেকের তেলের সঙ্গে মিশিয়ে হারোণ ও তার পুত্রদের ওপর ও তাদের পোশাকের ওপর ছিটিয়ে দেবে। এতে বোঝা যাবে যে হারোণ ও তার পুত্রদের পোশাকগুলি প্রভুর কাছে উৎসর্গীকৃত।

22 “এরপর সেই মেষের চর্বি ছাড়িয়ে নেবে। (এটা সেই ছাগল বা মেষ যেটা হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেকের সময় ব্যবহৃত হয়েছে।) বলি দেওয়া ছাগলের লেজের এবং শরীরের ভেতরের চর্বি ছাড়িয়ে নেবে। যকৃত্‌ ও মুত্রগ্রন্থীর ওপরের চর্বি এবং ডান পায়ের চর্বিও সংগ্রহ করবে। 23 এবার প্রভুর সামনে রাখার জন্য খামিরবিহীন রুটি এবং তেলে ভাজা পিঠে ভর্ত্তি ঝুড়িটিকে আনবে। ঝুড়ি থেকে একটি রুটি, একটি তেলেভাজা পিঠে ও একটি ছোট সরুচাকলী পিঠে তুলে নেবে। 24 এই জিনিসগুলি হারোণ ও তার পুত্রদের দেবে এবং ওদের বলবে এইগুলি হাতে নিতে এবং প্রভুর সামনে সেগুলি দোলাতে। এটা হবে দোলনীয় নৈবেদ্য। 25 এবার এই জিনিসগুলি তাদের কাছ থেকে নিয়ে নাও এবং তাদের বেদীর ওপর রাখো এবং এইগুলি মেষের সঙ্গে পুড়িয়ে দাও। এটি একটি হোমবলি। এর গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে।

26 “এরপর বলি দেওয়া মেষটির বক্ষ কেটে নেবে। (হারোণের মহাযাজকের পদে অভিষেক উৎসবে এই মেষটিকে ব্যবহার করা হয়েছিল।) মেষটির বক্ষ প্রভুর সামনে দোলনীয় নৈবেদ্যর মত দোলাও এবং তারপরে রেখে দাও। এটি তোমার খাবার জন্য থাকবে। 27 হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেকের শিষ্টাচারে ব্যবহৃত ছাগলের পা ও স্তন এই বিশেষ অঙ্গ দুটি পবিত্র হল। এবার ঐ দুটি অঙ্গ হারোণ ও তার পুত্রদের দিয়ে দেবে। 28 এরপর থেকে সর্বদা ইস্রায়েলের জনগণ প্রভুকে যাজকের মাধ্যমে ঐ বিশেষ অঙ্গ দুটি উৎসর্গ করবে। তারা যখন যাজককে ঐ অঙ্গ দুটি দেবে তা হবে প্রভুকে দেওয়ারই সমান।

29 “বিশেষভাবে তৈরী করা বিশেষ পোশাকগুলো হারোণের জন্য তৈরী করা হলেও সেগুলো যত্ন করে রেখে দেবে। কারণ হারোণের পর যে মহাযাজক হবে সে ঐ পোশাকগুলো পরেই প্রভুর সেবা করবে। 30 হারোণের পর তার ছেলেদের মধ্যে থেকেই একজন মহাযাজকের দায়়ভার সামলাবে। সে যখন সমাগম তাঁবুতে পবিত্র স্থানের সেবায় নিয়োজিত হবে তখন সে সাতদিন ঐ পোশাকগুলোই পরবে।

31 “হারোণের মহাযাজকরূপে অভিষেক উৎসবে ব্যবহৃত মেষের মাংস সেদ্ধ কর। পবিত্রস্থানেই ঐ মাংস রান্না হবে। 32 সমাগম তাঁবুর সামনের দরজায় বসে হারোণ ও তার পুত্ররা ঐ রান্না করা মাংস খাবে। ঝুড়ির রুটি দিয়ে তারা মাংস খাবে। 33 এই পদ্ধতিতে তাদের পাপমোচন হবে এবং তারা প্রায়শ্চিত্তের মাধ্যমে যাজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আর কাউকে ওগুলো খেতে দেওয়া হবে না, কারণ সেগুলি পবিত্র। 34 যদি কোন খাবার রুটি বা মাংস অবশিষ্ট থাকে তাহলে পরদিন সকালে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলতে হবে। কেউ এ খাবার খাবে না কারণ এই খাবার বিশেষ উপায়ে বিশেষ সময়ে খেতে হয়।

35 “আমার আদেশ মতো তুমি হারোণ ও তার পুত্রদের এগুলি করাবে। আমি যা যা বলেছি তুমি তাদের জন্য ঠিক তাই করবে। তাদের যাজক পদে অভিষেকের শিষ্টাচার সাত দিন ধরে চলবে। 36 সাতদিন ধরে তুমি প্রত্যেকদিনে একটি করে বলদ বলি দেবে। হারোণ ও তার পুত্রদের পাপমোচনের জন্য এই উপায় অবলম্বন করতে হবে। এই প্রায়শ্চিত্ত বেদীকে পূণ্য করার জন্য করতে হবে। এবং বেদীকে পবিত্র করার জন্য জলপাইয়ের তেল ঢালবে। 37 তুমি সাত দিন ধরে প্রায়শ্চিত্ত করে সাতদিন ধরে বেদীকে পূণ্য ও পবিত্র করে তুলবে। সে সময় বেদীটি অতি পবিত্র স্থান হয়ে উঠবে। বেদীর সংস্পর্শে যা আসবে তাই-ই পবিত্র হয়ে যাবে।

38 “প্রত্যেকদিন তুমি বেদীতে কিছু না কিছু নৈবেদ্য দেবে। তোমাকে এক বছর বয়সের দুটো মেষ বলি দিতেই হবে। 39 একটা মেষকে সকালে ও অন্যটিকে সন্ধ্যায় বলি দেবে। 40 যখন তুমি প্রথম মেষটিকে বলি দেবে তখন তার সঙ্গে এক পোয়া খাঁটি জলপাই তেল আর তিন পোয়া দ্রাক্ষারসের সঙ্গে আট বাটি ভাল গমের আটাও উৎসর্গ করো। 41 এবার দ্বিতীয় মেষটি গোধূলি বেলায় বলি দেবে। এটির শস্য নৈবেদ্য এবং এটির পেয় নৈবেদ্য হবে সকালের নৈবেদ্যর মতোই। এটা হবে একটি সুগন্ধ সৌরভ, প্রভুকে নিবেদিত একটি হোমবলি। এবং প্রভু তা নিঃশ্বাসে গ্রহণ করবেন এবং তার গন্ধ প্রভুকে খুশী করবে।

42 “প্রভুর প্রতিদিনের নৈবেদ্যগুলোকেই পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সমাগম তাঁবুর দরজাতেই এটা করবে। প্রভুকে নৈবেদ্য দেবার সময় সর্বদা এটাই করবে। আমি, প্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ওখানেই দর্শন দেব। 43 ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব ঐ স্থানেই এবং আমার মহিমা ঐ স্থানকে পবিত্র করে তুলবে।

44 “তাই সমাগম তাঁবুকে আমি পবিত্র করে তুলব এবং বেদীকেও পবিত্র করে তুলব। হারোণ ও তার পুত্ররা যাতে আমাকে যাজক হয়ে সেবা করতে পারে তার জন্য আমি ওদেরও পবিত্র করে তুলব। 45 ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গেই আমি থাকব। আমিই হব তাদের ঈশ্বর। 46 লোকরা জানবে আমিই তাদের প্রভু এবং ঈশ্বর। তারা জানতে পারবে যে আমিই ‘সেই জন’ যে তাদের নেতৃত্ব দিয়ে মিশর থেকে বাইরে এনেছে তাই আমি তাদের মাঝেই বাস করব। আমিই তাদের প্রভু, আমিই তাদের ঈশ্বর।”

ধূপ জ্বালাবার বেদী

30 প্রভু মোশিকে বললেন, “বাবলা কাঠের একটা বেদী তৈরী করবে। ধূপদান হিসাবে এই বেদী ব্যবহার করবে। বেদীটি হবে চারকোণা। বেদীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে 1 হাত করে এবং উচ্চতা হবে 2 হাত। বেদীর এই শৃঙ্গগুলি বেদীর সঙ্গে একটি অখণ্ড টুকরো হবে। ওটিকে খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দাও—এর উপরিভাগে, বেদীকে ঘিরে তার চার ধারে এবং বেদীর চারধারে তার শৃঙ্গগুলি সোনার নিকেল দাও। সোনার নিকেলের নীচে বেদীর বিপরীত দুদিকে দুটো সোনার আংটা লাগাবে। এই আংটায় দণ্ড ঢুকিয়ে বেদীকে বয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। দণ্ডও বাবলা কাঠের হবে এবং দণ্ডকে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে। ধূপবেদীটি বিশেষ পর্দার সামনে বসাও। ঐ পর্দাটি সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর যে আচ্ছাদন আছে তার সামনে থাকবে। এটা সেই স্থান সেখানে আমি তোমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।

“প্রতি সকালে হারোণ যখন বাতিগুলো ঠিক করতে আসবে তখন সে বেদীতে সুগন্ধি ধূপ জ্বালাবে। সন্ধ্যায় যখন সে প্রদীপ জ্বালাতে আসবে তখনও তাকে বেদীতে ধূপ জ্বালাতে হবে। এখন থেকে, এই ধূপ নিয়মিতভাবে প্রভুর সামনে অর্পণ করতে হবে। এই বেদীর ওপর অন্য কোন ধূপ অথবা হোমবলি উৎসর্গ করবে না। কোন রকম শস্য নৈবেদ্য ও পেয় নৈবেদ্যর জন্য এই বেদী ব্যবহার করা হবে না।

10 “বছরে একবার হারোণ প্রভুর প্রতি একটি বিশেষ পশু উৎসর্গ করবে। মানুষের পাপমোচনের উদ্দেশ্যে সে পাপ বলির রক্ত দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করবে। পাপমোচনের নৈবেদ্যর রক্ত দিয়ে এই প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। এটি প্রভুর কাছে সবচেয়ে পবিত্র। এই দিনটি চিহ্নিত হবে প্রায়শ্চিত্তের দিন হিসেবে। এই দিনটি হবে প্রভুর কাছে একটি বিশেষ দিন।”

মন্দিরের কর

11 প্রভু মোশিকে বললেন, 12 “ইস্রায়েলের জনসংখ্যা গণনা করো তাহলে বুঝতে পারবে কতজন ইস্রায়েলে বসবাস করে। তাদের প্রত্যেকে প্রভুকে কিছু না কিছু অর্থ দান করবে। যদি প্রত্যেকে এটা মেনে চলে তাহলে তাদের জীবনে কোন ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটবে না। 13 এই লোকদের প্রত্যেককে আমলাতান্ত্রিক মান অনুযায়ী 1/2 শেকেল দিতে হবে। এই আমলাতান্ত্রিক শেকেলের ওজন হল 20 গেরা। এই 1/2 শেকেল প্রভুর প্রতি একটি নৈবেদ্য। 14 কুড়ি বছর হলে তাকে গণনার আওতায় আনা হবে। এবং গণনার আওতায় চলে আসা প্রত্যেকে এই নৈবেদ্য দেবে প্রভুর প্রতি। 15 বড় লোকরা 1/2 শেকেলের বেশী দেবে না, আবার গরীবরা 1/2 শেকেলের কম দেবে না। তাদের জীবনের প্রায়শ্চিত্তের জন্য প্রত্যেককে অবশ্যই সমপরিমাণ নৈবেদ্য প্রভুকে অর্পণ করতে হবে। 16 প্রায়শ্চিত্ত নৈবেদ্যর সমস্ত অর্থ জমা কর এবং ঐ অর্থ সমাগম তাঁবুর যাবতীয় খরচের জন্য ব্যবহার কর। এই নৈবেদ্য এরকমভাবে প্রভুকে তাঁর লোকদের কথা মনে রাখাবার জন্য। তারা তাদের নিজেদের জীবনের জন্য মূল্য দেবে।”

পরিষ্কার করার পাত্র

17 প্রভু মোশিকে বললেন, 18 “পিতলের একটি পায়া তৈরী করে তার ওপর একটি পিতলের পাত্র বসাবে। এই পাত্রে অন্য সব কিছু পরিষ্কার করে ধোয়া হবে। সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে ঐ পাত্র বসিয়ে তাতে জল ভর্ত্তি করবে। 19 হারোণ ও তার পুত্ররা ঐ পাত্রের জলে তাদের হাত পা ধোবে। 20 যখনই তারা সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে অথবা প্রভুর কাছে নৈবেদ্য পোড়াবার জন্য বেদীর কাছে আসবে তখনই তাদের ঐ পাত্রের জল দিয়ে নিজেদের পরিষ্কার করতে হবে যাতে তারা মারা না যায়। এটা মেনে চললে তারা মারা যাবে না। 21 যদি তারা মরতে না চায় তাহলে এই বিধি তাদের মেনে চলতে হবে। এই বিধি হারোণ এবং তার উত্তরপুরুষদের চিরকাল মেনে চলতে হবে।”

অভিষেকের তেল

22 প্রভু মোশিকে বললেন, 23 “সুগন্ধি মশলা খুঁজে আনো। 12 পাউণ্ড ওজনের তরল মস্তকি, 6 পাউণ্ড ওজনের সুগন্ধি দারুচিনি, 6 পাউণ্ড ওজনের সুগন্ধি এবং 24 বারো পাউণ্ড ওজনের সূক্ষ্ম ধরণের দারুচিনি নিয়ে এসো। এগুলিকে প্রচলিত শেকেলের মান অনুযায়ী ওজন কর। 1 গ্যালন জলপাইয়ের তেলও এনো।

25 “সুগন্ধি অভিষেকের তেল তৈরী করবার জন্য এই জিনিসগুলি বিশেষজ্ঞের মতো মেশাও। 26 সমাগম তাঁবুর ওপর ও সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর ঐ তেল ছিটিয়ে দাও। এর ফলে ঐ জিনিসগুলোর বিশেষত্ব প্রকাশ পাবে। 27 টেবিল এবং টেবিলের ওপর রাখা প্লেটে ওই তেল ছিটোবে। দীপদান ও তার সকল পাত্র ও ধূপবেদীতেও ঐ তেল ছিটোবে। 28 হোমবলির বেদীতে এবং হোমবলির জন্য ব্যবহৃত সমস্ত পাত্রে এবং হাত পা ধোয়ার সেই পাত্র ও পাত্রের নীচে রাখা পায়াতেও ঐ তেল ছিটিয়ে দাও। 29 প্রভুর সেবার জন্য এই সমস্ত জিনিসগুলোকে তোমাকে পবিত্র করে তুলতে হবে। তাহলেই তারা পবিত্র হয়ে উঠবে। এই জিনিসগুলোকে অন্য কিছু স্পর্শ করলে সেগুলোও পবিত্র হয়ে উঠবে।

30 “যাজকরূপে বিশেষ উপায়ে আমাকে সেবার জন্য হারোণ ও তার পুত্রদের গায়েও ঐ তেল ছিটিয়ে দেবে। 31 ইস্রায়েলের লোকদের বলো যে এই অভিষেকের তেল হল পবিত্র। ইস্রায়েলের লোকদের বলো যে এই তেল অবশ্যই তাদের বংশ পরম্পরায় একমাত্র আমার জন্যই ব্যবহৃত হবে। 32 সাধারণ সুগন্ধি হিসেবে কেউ যেন এই তেল ব্যবহার না করে। এই সূত্র অনুসারে অন্য কোন তেল তৈরী করবে না। এই তেল পবিত্র এবং তোমাদের কাছে এর বিশেষ অর্থ আছে। 33 যদি কেউ এই পবিত্র তেল সাধারণ সুগন্ধি হিসাবে তৈরী করে অথবা এটি কারো ওপর আরোপ করে, তার লোকদের থেকে তাকে বিতাড়িত করে দেওয়া হবে।”

ধূপ

34 এরপর প্রভু মোশিকে বললেন, “এই সুগন্ধি মশলাগুলো জোগাড় করে আনো: ধুনো, নখী, গুগ‌্গুল, কুন্দুরু। মনে রাখবে প্রত্যেকটি মশলার পরিমাণ হবে সমান। 35 পরিষ্কার লবনের সঙ্গে এই সুগন্ধি মশলাগুলো মেশাও এবং সুগন্ধি তৈরী করার মতো সুগন্ধি ধূপ বানাও। এই প্রক্রিয়া ধূপকে খাঁটি এবং পবিত্র করবে। 36 খানিকটা পাউডারের মতো ধূপের গুঁড়ো করে নিয়ে সেই মিহি করা ধূপের গুঁড়ো যে সমাগম তাঁবুতে আমি তোমাদের দর্শন দেব তার মধ্যে রাখা সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে রাখবে। বিশেষ প্রয়োজনেই শুধুমাত্র এই ধূপের গুঁড়ো ব্যবহার করবে। 37 প্রভুর জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এর ব্যবহার হবে না। 38 সুগন্ধি ধূপের গন্ধ অনুভব করতে কেউ যদি নিজের জন্য এই ধূপের গুঁড়ো নিয়ে যায় তাহলে সে সমাজচ্যূত হবে।”

মথি 21:23-46

যীশুর ক্ষমতার বিষয়ে ইহুদী নেতাদের সন্দেহ

(মার্ক 11:27-33; লূক 20:1-8)

23 যীশু যখন আবার মন্দির চত্বরে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন, সেই সময় প্রধান যাজকরা ও সমাজপতিরা তাঁর কাছে এসে বললেন, “তুমি কোন অধিকারে এসব করছ? এই অধিকার তোমায় কে দিয়েছে?”

24 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের একটা প্রশ্ন করতে চাই, আর তোমরা যদি তার উত্তর দাও তাহলে আমিও তোমাদের বলব আমি কোন অধিকারে এসব করছি। 25 আমার প্রশ্ন হচ্ছে, বাপ্তিস্ম দেবার অধিকার যোহন কোথা থেকে পেয়েছিলেন? তা কি ঈশ্বরের কাছ থেকে, না মানুষের কাছ থেকে এসেছিল?”

তখন তারা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করে বলল, “আমরা যদি বলি, ঈশ্বরের কাছ থেকে, তাহলে ও আমাদের বলবে, ‘তবে তোমরা কেন তাকে বিশ্বাস কর নি?’ 26 কিন্তু আমরা যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তবে জনসাধারণের কাছ থেকে ভয় আছে, কারণ লোকেরা যোহনকে ভাববাদী বলে মানে।”

27 তাই এর উত্তরে তারা যীশুকে বললেন, “আমরা জানি না।”

তখন যীশু তাদের বললেন, “তবে আমিও তোমাদের বলব না, কোন্ অধিকারে আমি এসব করছি।”

দুই পুত্রের বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক কাহিনী

28 তারপর যীশু বললেন, “আচ্ছা, এ বিষয়ে তোমরা কি বলবে? একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল। সে তার বড় ছেলের কাছে গিয়ে বলল, ‘বাছা, আজ তুমি আমার দ্রাক্ষা ক্ষেতে গিয়ে কাজ কর।’

29 “কিন্তু তার ছেলে বলল, ‘আমি যেতে চাই না।’ কিন্তু পরে সে তার মত বদলিয়ে কাজে গেল।

30 “এরপর লোকটি তার অপর ছেলের কাছে গিয়ে তাকেও সেই একই কথা বলল। এর উত্তরে অন্য ছেলেটি বলল, ‘হ্যাঁ, মহাশয় যাচ্ছি।’ কিন্তু সে গেল না।

31 “এই দুজনের মধ্যে কে তার বাবার ইচ্ছা পালন করল?”

তারা বললেন, “বড় ছেলে।”

যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর-আদায়কারীরা ও বেশ্যারা, তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে। 32 আমি একথা বলছি কারণ জীবনের সঠিক পথ দেখাবার জন্য যোহন তোমাদের কাছে এসেছিলেন আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করনি। কিন্তু কর-আদায়কারী ও বেশ্যারা তাকে বিশ্বাস করেছে। এসব দেখেও তোমরা মন পরিবর্তন করনি ও তাঁর প্রতি বিশ্বাস করনি।

ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠালেন

(মার্ক 12:1-12; লূক 20:9-19)

33 “আর একটি দৃষ্টান্ত শোন! এক জমিদার একটি দ্রাক্ষা ক্ষেত তৈরী করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন। পরে সেই ক্ষেতের মধ্যে দ্রাক্ষা মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন। পাহারা দেবার জন্য একটা উঁচু পাহারা ঘর তৈরী করলেন। পরে কয়েকজন চাষীর কাছে সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত ইজারা দিয়ে বিদেশে চলে গেলেন। 34 যখন দ্রাক্ষা তোলার সময় হল, তখন তিনি তাঁর ভাগ নিয়ে আসবার জন্য তাঁর ক্রীতদাসদের সেই চাষীদের কাছে পাঠালেন।

35 “কিন্তু চাষীরা তাঁর দাসদের একজনকে মারল, একজনকে খুন করল আর তৃতীয়জনকে পাথর ছুঁড়ে খুন করল। 36 এরপর তিনি প্রথম বারের চেয়ে আরো বেশী দাস সেখানে পাঠালেন, আর সেই চাষীরা ঐ দাসদের সঙ্গে একই রকম ব্যবহার করল। 37 পরে তিনি তাঁর নিজের ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন; তিনি ভাবলেন, ‘ওরা নিশ্চয়ই ওঁর ছেলেকে মান্য করবে।’

38 “কিন্তু চাষীরা যখন দেখল যে মালিকের ছেলে আসছে, তখন তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে বলল, ‘দেখ, এই হচ্ছে আইনসম্মত উত্তরাধিকারী, এস, একে আমরা খুন করি, তাহলে আমরাই তার সম্পত্তির মালিক হয়ে যাব।’ 39 তখন তারা সেই ছেলেকে ধরে দ্রাক্ষা ক্ষেতের বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল ও তাকে হত্যা করল।

40 “এক্ষেত্রে দ্রাক্ষা ক্ষেতের মালিক যখন ফিরে আসবেন, তখন ঐ চাষীদের তিনি কি করবেন, তোমরা কি বল?”

41 ইহুদী যাজকরা যীশুকে বললেন, “তারা দুষ্ট লোক বলে তিনি তাদের নির্মমভাবে ধ্বংস করবেন ও সেই দ্রাক্ষা ক্ষেত অন্য চাষীদের হাতে দেবেন, যারা ফলের মরশুমে তাঁকে তাঁর প্রাপ্য অংশ দেবে।”

42 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি শাস্ত্রের এই অংশ পড় নি:

‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল,
    সেই পাথরটাই হয়ে উঠেছে কোণের প্রধান পাথর।
এটা প্রভুরই কাজ,
    এটা আমাদের চোখে আশ্চর্য লাগে।’(A)

43 “অতএব, আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে, আর এমন লোকদের দেওয়া হবে, যারা ঈশ্বরের রাজ্যের পক্ষে উপযুক্ত ব্যবহার করবে। 44 আর ঐ যে পাথর তার ওপরে যে পড়বে সে ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যাবে, আর সেই পাথর যার ওপরে পড়বে তাকে গুঁড়িয়ে ধূলিসাৎ করবে।”[a]

45 প্রধান যাজকরা ও ফরীশীরা যীশুর দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি শুনে বুঝতে পারলেন যীশু তাঁদেরই বিষয়ে এই কথাগুলি বললেন। 46 তাই তাঁরা যীশুকে গ্রেপ্তার করাতে চাইলেন, কিন্তু জনসাধারণের ভয়ে তা করলেন না, কারণ সাধারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মনে করত।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International