New Testament in a Year
শিমিয়োন যীশুকে দেখলেন
25 জেরুশালেমে সেই সময় শিমিয়োন নামে একজন ধার্মিক ও ঈশ্বরভক্ত লোক বাস করতেন। তিনি ইস্রায়েলের মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন। পবিত্র আত্মা তাঁর ওপর অধিষ্ঠান করছিলেন। 26 পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তাঁর কাছে একথা প্রকাশ করা হয়েছিল যে প্রভু খ্রীষ্টকে না দেখা পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হবে না। 27 পবিত্র আত্মার প্রেরণায় তিনি সেদিন মন্দিরে এসেছিলেন। যীশুর বাবা-মা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতে যীশুকে নিয়ে সেখানে এলেন। 28 তখন শিমিয়োন যীশুকে কোলে তুলে নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে বললেন,
29 “হে প্রভু, তোমার প্রতিশ্রুতি অনুসারে তুমি তোমার দাসকে শান্তিতে বিদায় দাও।
30 কারণ আমি নিজের চোখে তোমার পরিত্রাণ দেখেছি।
31 যে পরিত্রাণ তুমি সকল লোকের সাক্ষাতে প্রস্তুত করেছ।
32 তিনি অইহুদীদের অন্তর আলোকিত করার জন্য আলো;
আর তিনিই তোমার প্রজা ইস্রায়েলের জন্য সম্মান আনবেন।”
33 তাঁর বিষয়ে যা বলা হল তা শুনে যোষেফ ও মরিয়ম আশ্চর্য হয়ে গেলেন। 34 এরপর শিমিয়োন তাঁদের আশীর্বাদ করে যীশুর মা মরিয়মকে বললেন, “ইনি হবেন ইস্রায়েলের মধ্যে বহু লোকের পতন ও উত্থানের কারণ। ঈশ্বর হতে আগত এমন চিহ্ন যা বহু লোকই অগ্রাহ্য করবে। 35 এতে বহু লোকের হৃদয়ের গোপন চিন্তা প্রকাশ হয়ে পড়বে। যা যা ঘটবে তাতে তোমার হৃদয় বিদীর্ণ হবে।”
হান্না যীশুকে দেখলেন
36 সেখানে হান্না নামে একজন ভাববাদিনী ছিলেন। তিনি আশের গোষ্ঠীর পনুয়েলের কন্যা। তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল। বিবাহের পর সাত বছর তিনি স্বামীর ঘর করেন, 37 তারপর চুরাশি বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বৈধব্য জীবনযাপন করেছিলেন। মন্দির ছেড়ে তিনি কোথাও যেতেন না; উপবাস ও প্রার্থনাসহ সেখানে দিন-রাত ঈশ্বরের উপাসনা করতেন।
38 ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি তাঁদের দিকে এগিয়ে এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে আরম্ভ করলেন; আর যারা জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষায় ছিল তাদের সকলের কাছে সেই শিশুটির বিষয় বলতে লাগলেন।
যোষেফ ও মরিয়মের গৃহে প্রত্যাবর্তন
39 প্রভুর বিধি-ব্যবস্থা অনুসারে যা যা করণীয় তা সম্পূর্ণ করে যোষেফ ও মরিয়ম তাঁদের নিজেদের নগর নাসরতে ফিরে গেলেন। 40 শিশুটি ক্রমে ক্রমে বেড়ে উঠতে লাগলেন ও বলিষ্ঠ হয়ে উঠলেন। তিনি জ্ঞানে পূর্ণ হতে থাকলেন, তাঁর ওপরে ঈশ্বরের আশীর্বাদ ছিল।
বালক যীশু
41 নিস্তারপর্ব[a] পালনের জন্য তাঁর মা-বাবা প্রতি বছর জেরুশালেমে যেতেন। 42 যীশুর বয়স যখন বারো বছর, তখন তাঁরা যথারীতি সেই পর্বে যোগ দিতে গেলেন। 43 পর্বের শেষে তাঁরা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন বালক যীশু জেরুশালেমেই রয়ে গেলেন, এবিষয়ে তাঁর মা-বাবা কিছুই জানতে পারলেন না। 44 তাঁরা মনে করলেন যে তিনি দলের সঙ্গেই আছেন। তাঁরা এক দিনের পথ চলার পর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন। 45 কিন্তু তাঁকে না পেয়ে তাঁরা যীশুর খোঁজ করতে করতে আবার জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।
46 শেষ পর্যন্ত তিন দিন পরে মন্দির চত্বরে তাঁর দেখা পেলেন। সেখানে তিনি ধর্ম শিক্ষকদের সাথে বসে তাঁদের কথা শুনছিলেন ও তাঁদের নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন। 47 যাঁরা তাঁর কথা শুনছিলেন তাঁরা সকলে যীশুর বুদ্ধি আর প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া দেখে অবাক হয়ে গেলেন। 48 যীশুর মা-বাবা তাঁকে সেখানে দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তাঁর মা তাঁকে বললেন, “বাছা, তুমি আমাদের সঙ্গে কেন এমন করলে? তোমার বাবা ও আমি ভীষণ ব্যাকুল হয়ে তোমার খোঁজ করে বেড়াচ্ছি।”
49 যীশু তখন তাঁদের বললেন, “তোমরা কেন আমার খোঁজ করছিলে? তোমরা কি জানতে না যে যেখানে আমার পিতার কাজ, সেখানেই আমাকে থাকতে হবে?” 50 কিন্তু তিনি তাঁদের যা বললেন তার অর্থ তাঁরা বুঝতে পারলেন না।
51 এরপর তিনি তাঁদের সঙ্গে নাসরতে ফিরে গেলেন, আর তাঁদের বাধ্য হয়ে রইলেন। তাঁর মা এসব কথা মনের মাঝে গেঁথে রাখলেন। 52 এইভাবে যীশু বয়সে ও জ্ঞানে বড় হয়ে উঠলেন, আর ঈশ্বর ও মানুষের ভালবাসা লাভ করলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International