Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
আদি 7

বন্যার শুরু

তখন প্রভু নোহকে বললেন, “তুমি যে একজন সৎ‌ মানুষ তা আমি লক্ষ্য করেছি। এমনকি এই যুগের দুষ্ট লোকদের মধ্যেও তুমি নিজেকে সৎ‌ রেখেছ। সুতরাং তোমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে তুমি গিয়ে নৌকোতে ওঠো। পৃথিবীর সমস্ত শুচি পশুপাখীর[a] সাত সাত জোড়া এবং অন্যান্য প্রত্যেক পশুর এক এক জোড়া নাও। এই সমস্ত পশুপাখীদের তুমি ঐ নৌকোতে তোমার সঙ্গে নেবে। সমস্ত রকম পাখীর সাতটি করে জোড়া নেবে। এর ফলে পৃথিবীর অন্যান্য সমস্ত পশুপাখী আমি ধ্বংস করে ফেলার পরেও এইসব পশুপাখী সম্পূর্ণভাবে বংশলোপের হাত থেকে রক্ষা পাবে। এখন থেকে ঠিক সাতদিন পরে আমি পৃথিবীতে প্রবল বর্ষণ ঘটাবো। 40 দিন 40 রাত ধরে বৃষ্টি হবে। আমি পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত প্রাণী ধ্বংস করে দেব। যা কিছু আমি সৃষ্টি করেছি, সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” প্রভু যা যা করতে বললেন, নোহ সে সমস্তই করলেন।

যখন সেই বর্ষন শুরু হল তখন নোহের বয়স 600 বছর। নোহ এবং তাঁর পরিবার মহাপ্লাবন থেকে পরিত্রাণের জন্যে নৌকোতে প্রবেশ করলেন। নোহের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী, তাঁর পুত্ররা ও পুত্রবধূরা সবাই নৌকোতে ছিলেন। সমস্ত শুচি ও অশুচি পশুপাখী এবং মাটিতে যারা বুকে হেঁটে চলে সেইসব প্রাণী নোহের সঙ্গে নৌকোতে গিয়ে উঠল। ঈশ্বর যেমনটি আদেশ করেছিলেন ঠিক তেমনভাবে স্ত্রী ও পুরুষে জুটি বেঁধে সমস্ত পশুপাখী নৌকোতে চড়লে, 10 সাত দিন পরে শুরু হল প্লাবন। পৃথিবীতে শুরু হলো বর্ষা।

11-13 নোহর 600তম বছরের দ্বিতীয় মাসের 17তম দিনে সমস্ত ভূগর্ভস্থ প্রস্রবণ ফেটে বেরিয়ে এল, মাটি থেকে জল বইতে শুরু করল। ঐদিন মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হল, বাঁধ ভেঙে গেল এবং সমস্ত পৃথিবী জলপ্লাবিত হলো। সেই একই দিনে প্রচণ্ড বেগে বৃষ্টিপাত শুরু হল যেন আকাশের সমস্ত জানালা খুলে গেল। 40 দিন 40 রাত ধরে সমানে বৃষ্টি হলো। সেই দিনটিতেই নোহ ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের তিন পুত্র শেম, হাম, যেফৎ আর তাদের তিন স্ত্রী সকলেই নৌকোয় প্রবেশ করল। 14 ঐ সব মানুষ আর পৃথিবীর যাবতীয় পশুপাখী নৌকোর মধ্যে আশ্রয় নিলো। সব রকমের গৃহপালিত জন্তু এবং পৃথিবীতে যতরকমের পশুপাখী চলে ফিরে আর উড়ে বেড়ায় সবাই নৌকোর ভেতরে নিরাপদে থাকলো। 15 সমস্ত জন্তু জানোয়ার, পাখী ইত্যাদি নোহর সঙ্গে নৌকোতে উঠলো। প্রাণবায়ু বিশিষ্ট সমস্ত পশুপাখী নৌকাতে জোড়ায়় জোড়ায়় থাকল। 16 ঈশ্বর যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, নোহ সেই অনুসারে পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণীর এক এক জোড়া নৌকোতে তুললে, প্রভু বাইরে থেকে নৌকোর দরজা বন্ধ করে দিলেন।

17 পৃথিবীতে 40 দিন ধরে বন্যা চলল। জলের মাত্রা ক্রমশঃ উঁচু হতে লাগল আর সেই নৌকো মাটি ছেড়ে জলের উপরে ভাসতে থাকলো। 18 জল বাড়তেই থাকল আর নৌকো মাটি ছেড়ে অনেক উঁচুতে ভাসতে লাগল। 19 জল এত বাড়লো যে সবচেয়ে উঁচু পর্বতগুলো পর্যন্ত ডুবে গেল। 20 পর্বতগুলোর মাথা ছাপিয়ে জল বাড়তে লাগল। সবচেয়ে উঁচু পর্বতের উপরেও 20 ফুটের বেশী জল দাঁড়াল।

21-22 পৃথিবীর সমস্ত জীব মারা গেল। প্রতিটি পুরুষ ও স্ত্রী এবং পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার মারা পড়ল। সমস্ত বন্য প্রাণী, সরীসৃপ ধ্বংস হয়ে গেল। স্থলচর যত প্রাণী শ্বাস প্রশ্বাস নেয় তারাও মারা গেল। 23 এইভাবে ঈশ্বর পৃথিবীকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেললেন। পৃথিবীর সমস্ত জীবন্ত অস্তিত্ব ধ্বংস করে ফেললেন। সমস্ত মানুষ, সমস্ত জন্তু জানোয়ার, বুকে হাঁটা সমস্ত প্রাণী এবং সমস্ত পাখী এইসব কিছুই পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। নোহ আর নোহের পরিবার পরিজন এবং নৌকোতে আশ্রয় পাওয়া পশুপাখী—কেবলমাত্র এইসব প্রাণের অবশেষ পৃথিবীতে বেঁচে থাকলো। 24 একটানা 150 দিন পৃথিবী বিপুল জলরাশিতে ডুবে থাকলো।

মথি 7

অপরের বিচারের বিষয়ে যীশুর শিক্ষা

(লূক 6:37-38, 41-42)

“পরের বিচার করো না, তাহলে তোমার বিচারও কেউ করবে না। কারণ যেভাবে তোমরা অন্যের বিচার কর, সেই ভাবে তোমাদেরও বিচার করা হবে; আর যেভাবে তুমি মাপবে সেই ভাবে তোমার জন্যও মাপা হবে।

“তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটো আছে কেবল তা-ই দেখছ; কিন্তু নিজের চোখের মধ্যে যে তক্তা আছে তা দেখতে পাও না? যখন তোমার নিজের চোখেই একটা তক্তা রয়েছে তখন কিভাবে তোমার ভাইকে বলছ, ‘এস তোমার চোখ থেকে কুটোটা বার করে দিই?’ ভণ্ড! প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে তক্তাটা বার করে ফেলো, তাহলে তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটোটা বার করার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে।

“কোন পবিত্র বস্তু কুকুরকে দিও না আর শুয়োরের সামনে তোমাদের মুক্তো ছুঁড়ো না, তাহলে সে তা পায়ের তলায় মাড়িয়ে নষ্ট করবে ও তোমার দিকে ফিরে তোমায় আক্রমণ করবে।

প্রয়োজনীয় বিষয়ের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর

(লূক 11:9-13)

“চাইতে থাক, তোমাদের দেওয়া হবে। খুঁজতে থাক, পাবে। দরজায় ধাক্কা দিতে থাক, তোমাদের জন্য দরজা খুলে দেওয়া হবে। কারণ যে চাইতে থাকে সে পায়, যে খুঁজতে থাকে সে খুঁজে পায়, আর যে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে তার জন্য দরজা খুলে দেওয়া হয়।

“তোমার ছেলে যদি তোমার কাছে রুটি চায়, তবে তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে তার সন্তানকে রুটির বদলে পাথরের টুকরো দেবে? 10 যদি সে একটা মাছ চায় তবে বাবা কি তার হাতে একটা সাপ তুলে দেবে? নিশ্চয় না। 11 তোমরা মন্দ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জানো, তবে তোমাদের স্বর্গের পিতা ঈশ্বরের কাছে যারা চায়, তাদের তিনি নিশ্চয়ই উৎকৃষ্ট জিনিস দেবেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান

12 “তাই অপরের কাছ থেকে তোমরা যে ব্যবহার প্রত্যাশা কর, তাদের প্রতিও তেমনি ব্যবহার কর। এটাই হল মোশির বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার অর্থ।

স্বর্গে এবং নরকে যাওয়ার পথ

(লূক 13:24)

13 “সংকীর্ণ দরজা দিয়ে সেই পথে প্রবেশ করো, যে পথ স্বর্গের দিকে নিয়ে যায়। যে পথ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায় তার দরজা প্রশস্ত, পথও চওড়া, বহু লোক সেই পথেই চলছে। 14 কিন্তু যে পথ জীবনের দিকে গেছে তার দরজা সংকীর্ণ আর পথও দুর্গম, খুব অল্প লোকই তার সন্ধান পায়।

লোকেরা যা করে তা লক্ষ্য কর

(লূক 6:43-44; 13:25-27)

15 “ভণ্ড ভাববাদীদের থেকে সাবধান। তারা তোমাদের কাছে নিরীহ মেষের ছদ্মবেশে আসে অথচ ভেতরে তারা হিংস্র নেকড়ে বাঘ। 16 তাদের জীবনের ফল দেখেই তোমরা তাদের চিনতে পারবে। কেউ কি কাঁটাঝোপের মধ্যে থেকে দ্রাক্ষা বা শিয়ালকাঁটার ভেতর থেকে ডুমুর পেতে পারে? 17 ঠিক সেই ভাবে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফলই ধরে, কিন্তু খারাপ গাছে খারাপ ফলই ধরে। 18 ভাল গাছে খারাপ ফল এবং খারাপ গাছে ভাল ফল ধরতে পারে না। 19 যে গাছে ভাল ফল ধরে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হয়। 20 তাই আমি তোমাদের আবার বলছি, তারা যা করে তা দেখেই তোমরা তাদের চিনতে পারবে।

21 “যারা আমাকে প্রভু, প্রভু বলে তাদের প্রত্যেকেই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে তা নয়। আমার স্বর্গের পিতার ইচ্ছা যে পালন করবে, কেবল সেই স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে। 22 সেই দিন অনেকে আমায় বলবে, ‘প্রভু, প্রভু আমরা কি আপনার নামে ভাববাণী বলিনি? আপনার নামে আমরা কি ভূতদের তাড়াই নি? আপনার নামে আমরা কি অনেক অলৌকিক কাজ করিনি?’ 23 তখন আমি তাদের স্পষ্ট বলব, ‘আমি তোমাদের কখনও আপন বলে জানিনি, দুষ্টের দল! আমার সামনে থেকে দূর হও।’

একজন জ্ঞানী লোক এবং একজন মুর্খ লোক

(লূক 6:47-49)

24 “তাই বলি, যে কেউ আমার কথা শোনে ও তা পালন করে, সে এমন এক বুদ্ধিমান লোকের মতো যে পাথরের ভিতের ওপর তার বাড়ি তৈরী করল। 25 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল এবং প্রচণ্ড ঝোড়ো বাতাস বয়ে সেই বাড়ির গায়ে লাগল; কিন্তু সেই বাড়িটা ধসে পড়ল না, কারণ তা পাথরের ওপরে তৈরী করা হয়েছিল।

26 “আবার যে কেউ আমার এইসব কথা শুনে তা পালন না করে, সে একজন মূর্খ লোকের মতো, যে বালির উপরে বাড়ি তৈরী করেছিল। 27 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এল, আর ঝোড়ো বাতাস এসে তার বাড়িতে ধাক্কা মারল, তাতে বাড়িটা কি সাংঘাতিক ভাবেই না ধসে পড়ল।”

28 যীশু যখন এইসব কথা বলা শেষ করলেন, তখন জনতা তাঁর এইসব শিক্ষা শুনে হতবুদ্ধি হয়ে গেল। 29 কারণ যীশু একজন ব্যবস্থার শিক্ষকের মতো শিক্ষা দিচ্ছিলেন না, বরং যার অধিকার আছে সেই রকম লোকের মতোই শিক্ষা দিচ্ছিলেন।

ইষ্রা 7

ইষ্রা জেরুশালেমে এলেন

এসব ঘটনা ঘটে যাবার পর, পারস্যের রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালে ইষ্রা বাবিল থেকে জেরুশালেমে এলেন। ইষ্রা ছিলেন সরায়ের পুত্র। সরায় অসরিয়ের, অসরিয় হিল্কিয়ের, হিল্কিয় শল্লুমের, শল্লুম সাদোকের, সাদোক অহীটূবের, অহীটূব অমরিয়ের, অমরিয় অসরিয়ের, অসরিয় মরায়োতের, মরায়োৎ সরহিয়ের, সরহিয় উষির, উষি বুক্কির পুত্র। বুক্কি ছিলেন অবীশূয়ের পুত্র, অবীশূয় ছিলেন পীনহসের পুত্র, পীনহস ছিলেন ইলিয়াসরের পুত্র, এবং ইলিয়াসর ছিলেন প্রধান যাজক হারোণের পুত্র।

শিক্ষক ইষ্রা, বাবিল থেকে জেরুশালেমে এসেছিলেন। মোশির ঈশ্বরদত্ত অনুশাসন সম্পর্কে তাঁর সুগভীর ব্যুৎপত্তি ছিল। রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে তাঁর অনুরোধ অনুসারে সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিষ দিয়েছিলেন কারণ প্রভু ইষ্রার সঙ্গে ছিলেন। ইস্রায়েলের বহু মানুষ যেমন, যাজকগণ, লেবীয়গণ, গীতকারগণ, দ্বাররক্ষীগণ, প্রভৃতি ব্যক্তিরা ইষ্রার সঙ্গে ইস্রায়েলে এসেছিলেন। এই সমস্ত ব্যক্তিরা রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষে জেরুশালেমে এসে পৌঁছেছিলেন। ইষ্রা অর্তক্ষস্তের রাজত্বকালের সপ্তম বর্ষের পঞ্চম মাসে এসেছিলেন। ইষ্রা ও তাঁর দল ওই বছরের প্রথম মাসে বাবিল ত্যাগ করে এবং পঞ্চম মাসের প্রথম দিন জেরুশালেমে এসে উপস্থিত হন। 10 ইষ্রা প্রভুর বিধিগুলি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞানার্জনের জন্য তাঁর জীবনের সমস্ত সময় ব্যয় করেন। তিনি ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর বিধি ও আদেশগুলি শেখাতে ও সম্পাদন করাতে চেষ্টা করেছিলেন।

ইষ্রাকে রাজা অর্তক্ষস্তের চিঠি

11 ইষ্রা ছিলেন একজন যাজক ও শিক্ষক যাঁর ইস্রায়েলের প্রতি প্রদত্ত ঈশ্বরের আদেশ ও বিধি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ছিল। রাজা অর্তক্ষস্ত ইষ্রাকে এই চিঠিটি লিখেছিলেন:

12 রাজা অর্তক্ষস্তের কাছ থেকে:

যাজক ইষ্রা, যিনি স্বর্গের প্রভুর বিধির একজন শিক্ষক,

তাঁকে রাজা অর্তক্ষস্তের অভিনন্দন!

13 আমি এই আদেশ দিচ্ছি: যে কোন ইস্রায়েলীয়, কোন যাজক অথবা যে কোন লেবীয় যারা আমার রাজত্বে বসবাস করে, তারা কেউ যদি ইষ্রার সঙ্গে জেরুশালেমে যেতে চায় তো যেতে পারে।

14 ইষ্রা, তোমাকে আমি ও আমার সাতজন মন্ত্রীর দায়িত্ব দিলাম, তুমি অতি অবশ্য যিহূদা ও জেরুশালেমে গিয়ে স্বয়ং পর্যবেক্ষণ করবে, সেখানে তোমার ব্যক্তিবর্গ ঈশ্বরের বিধিগুলি কতদূর পালন করছে। আর সেই বিধি তো তোমার সঙ্গেই আছে।

15 আমরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের জন্য তোমার সঙ্গে যে সোনা ও রূপো দিলাম, তুমি তা জেরুশালেমে ঈশ্বরের জন্য নিয়ে যাবে। 16 এছাড়াও, তোমাকে যদি কেউ জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য উপহার দিতে চায় এবং তোমার লোকেদের এবং বাবিলের যে কোন প্রদেশে বসবাসকারী যাজকগণ ও লেবীয়দের সব উপহারও তোমাকে সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হবে।

17-20 এই সমস্ত অর্থ দিয়ে তুমি বৃষ, মেষ ও মেষশাবক এবং শস্য ও পানীয় কিনবে। অতঃপর জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দিরের বেদীতে এই সমস্ত নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে। তুমি এবং অন্যান্য ইহুদীরা বাকী সোনা ও রূপো যেমন খুশী খরচ করতে পারো, কিন্তু এমনভাবে খরচ করবে যাতে ঈশ্বর সন্তুষ্ট হন। এ সমস্ত জিনিষ জেরুশালেমে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে যাবে। এগুলো সব প্রভুর উপাসনার জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া মন্দিরের প্রয়োজনে আর যা কিছু লাগবে, রাজকোষ থেকে অর্থ চেয়ে কিনে নেবে।

21 আমি, রাজা অর্তক্ষস্ত, ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের যেসব ব্যক্তিবর্গের কাছে রাজকোষের অর্থ থাকে, তাদের নির্দেশ দিচ্ছি, ইষ্রার যখন যা অর্থের প্রয়োজন হয় তা যেন তাঁকে দেওয়া হয় কারণ তিনি যাজক ও স্বর্গের ঈশ্বরের বিধিগুলির একজন শিক্ষক। 22 আপাতত তাঁকে 3 3/4 টন রূপো, 600 বুশেল গম, 600 গ্যালন দ্রাক্ষারস, 600 গ্যালন জলপাই তেল ও পর্যাপ্ত পরিমাণ লবণ দেওয়া হোক্। 23 স্বর্গের ঈশ্বর ইষ্রাকে যা কিছু নিতে আদেশ দিয়েছেন তা যেন তাঁকে যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া হয়। আমি আমার সন্তান ও রাজত্বের বিরুদ্ধে স্বর্গের ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করতে চাই না, সুতরাং প্রভুর মন্দিরের জন্য এইসব নির্দেশগুলি যেন পালন করা হয়।

24 হে আমার দেশবাসীগণ, আমি তোমাদের জ্ঞাতার্থে জানাতে চাই যে যাজকগণ, লেবীয়গণ, গায়ক, দ্বাররক্ষী, মন্দিরের সেবাদাস ও ঈশ্বরের মন্দিরের অন্য যে কোন কর্মীর কাছ থেকে কর গ্রহণ অবৈধ। রাজাকে সম্মান দেখানোর জন্য প্রভুর দাসদের কোন কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 25 হে ইষ্রা, ঈশ্বর ও তাঁর বিধি সম্পর্কে তোমার যথেষ্ট জ্ঞান আছে। সুতরাং ফরাৎ নদীর পশ্চিমাঞ্চলের লোকদের বিচার ব্যবস্থা ও শাসনকর্ম দেখার জন্য, আমি তোমাকে তোমার পছন্দ অনুযায়ী শাসনকর্তা ও বিচারকবর্গ নিয়োগের ক্ষমতা দিলাম। ঐ সমস্ত ব্যক্তিবর্গ তোমার প্রভুর বিধি অনুযায়ী এই অঞ্চলের বিচারবিভাগীয় প্রশাসনিক কাজকর্ম সম্পাদন করবেন। 26 এমন কেউ যদি থাকেন, যে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে অবগত নয় তাহলে ঐ বিচারকবর্গ তাকে ঈশ্বরের বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দান করবে। কোন ব্যক্তি যদি বিধিগুলি লঙ্ঘন করে, তাহলে তাকে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড, নির্বাসন বা কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হবে বা জরিমানা করা হবে।

ইষ্রা ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন

27 প্রভু মহিমাময়, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর! জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের প্রতি সম্মান জ্ঞাপনের জন্য ঈশ্বর রাজার হৃদয়ে তাঁর অভিলাষ স্থাপন করলেন। 28 রাজা তাঁর মন্ত্রীবর্গ ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে প্রভু আমার প্রতি তাঁর সত্যিকারের ভালবাসা অভিব্যক্ত করেছিলেন। প্রভু আমার সহায় হয়েছিলেন এবং তাই আমি সাহসী হয়ে আমার সঙ্গে জেরুশালেমে ফিরে যাবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের একত্রিত করেছিলাম।

প্রেরিত 7

স্তিফানের বক্তব্য

এরপর যাজক স্তিফানকে বললেন, “এসব কথা কি সত্যি?” এর উত্তরে স্তিফান বললেন, “ভাইরা ও এই জাতির পিতাগণ, আমার কথা শুনুন। আমাদের পিতৃপুরুষ অব্রাহাম হারণে বসবাস করার আগে যে সময় মিসপতামিয়াতে ছিলেন, সেই সময় মহিমাময় ঈশ্বর তাঁর সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন। আর তাঁকে বলেছিলেন, ‘তুমি তোমার স্বদেশ ও স্বজনের মধ্য থেকে চলে এস, আর আমি যে দেশ দেখাব সেই দেশে যাও।’(A)

“অব্রাহাম তখন কলদীয়ের দেশ ছেড়ে হারণে এসে বসবাস করেন। তাঁর বাবার মৃত্যুর পর ঈশ্বর তাঁকে সেখান থেকে এই দেশে আনলেন, যে দেশে এখন আপনারা বাস করছেন। এখানে ঈশ্বর তাঁকে কোন ভূসম্পত্তি দিলেন না, এমন কি এক ছটাক জমিও না; কিন্তু প্রতিশ্রুতি দিলেন যে শেষ পর্যন্ত এই দেশটা তাঁকে ও তাঁর বংশধরদের দেবেন। যদিও অব্রাহামের তখনও কোন সন্তান ছিল না।

“ঈশ্বর তাঁকে এই কথা বললেন, ‘তোমার বংশধররা বিদেশে প্রবাসী জীবন কাটাবে, তারা দাসত্ব-শৃঙ্খলে বদ্ধ হবে, আর সে দেশের লোকরা তাদের প্রতি চারশো বছর ধরে অত্যাচার করবে। তারা যে জাতির দাসত্ব করবে, আমি তাদের দণ্ড দেব।’(B) ঈশ্বর আরো বললেন, ‘এরপর তারা সেই দেশ থেকে বেরিয়ে এসে এখানে আমার উপাসনা করবে।’(C)

“এরপর অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বর এক চুক্তি করলেন। এই চুক্তির চিহ্ন হল সুন্নত সংস্কার। এরপর অব্রাহামের একটি পুত্র সন্তান হল। আট দিনের দিন তিনি তার সুন্নত করালেন; সেই পুত্রের নাম ইস‌্হাক। তাঁরা ইস‌্হাকের পুত্র যাকোবেরও সুন্নত করলেন। যাকোবের পুত্ররা বারোজন গোষ্ঠীর পিতা হলেন।

“তাদের সেই পিতাগণ যোষেফের প্রতি ঈর্ষান্বিত হলেন। যোষেফকে দাস ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হলে তাকে মিশরে নিয়ে আসা হল, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সহবর্তী ছিলেন। 10 যোষেফ সেখানে অনেক কষ্ট পেয়েছিলেন; কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে তাঁর সমস্ত কষ্টের হাত থেকে উদ্ধার করলেন। ফরৌণ তখন মিশরের রাজা। যোষেফের মধ্যে ঈশ্বরদত্ত বিজ্ঞতা দেখতে পেয়ে ফরৌণ তাঁকে পছন্দ করলেন। ফরৌণ যোষেফকে মিশরের অধ্যক্ষরূপে নিযুক্ত করলেন, এমনকি ফরৌণের গৃহের সমস্ত পরিজনের উপরে তাকে কর্তা করলেন। 11 এরপর সারা মিশরে ও কনান দেশে প্রচণ্ড খরা হল—এমন খরা যাতে কোন ফসল উৎপন্ন হল না, এতে লোকেরা মহাকষ্টে পড়ল। আমাদের পিতৃপুরুষদের খাদ্যবস্তুর অভাব হল।

12 “কিন্তু যাকোব শুনতে পেলেন যে মিশরে শস্য মজুত আছে, তখন তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের মিশরে পাঠালেন। 13 তাঁদের সেই ছিল প্রথমবার মিশরে যাওয়া। তাঁরা যখন দ্বিতীয়বার সেখানে গেলেন, তখন যোষেফ নিজে থেকে তাঁর ভাইদের কাছে আত্মপরিচয় দিলেন। যোষেফের পরে পরিজনদের সংবাদ ফরৌণ শুনতে পেলেন। 14 পরে কিছু লোক পাঠিয়ে যোষেফ তাঁর পিতা যাকোব ও তাঁর সব আত্মীয় পরিজনদের ডেকে পাঠালেন। তাঁরা মোট 75 জন ছিলেন। 15 এইভাবে যাকোব মিশরে গেলেন, পরে তাঁর ও আমাদের পিতৃপুরুষদের সেখানে মৃত্যু হল। 16 তাঁদের মৃতদেহ শিখিমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, আর সেখানে তাঁদের কবরে রাখা হয়। এই কবরস্থান অব্রাহাম শিখিম শহরে হমোরের ছেলেদের কাছ থেকে কিছু টাকা দিয়ে কিনেছিলেন।

17 “মিশরে ইহুদীরা বৃদ্ধি পেয়ে বহুসংখ্যক হয়ে উঠল। ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পূর্ণ হওয়ার সময় হল। 18 মিশরে তখন অন্য একজন রাজা হয়েছেন। তিনি যোষেফের সম্পর্কে জানতেন না। 19 এই রাজা আমাদের লোকদের সঙ্গে চাতুরী করলেন। তিনি আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি দুর্ব্যবহার করতে লাগলেন। তাদের নবজাত শিশুদের জোর করে বাইরে ফেলে দিতে হুকুম দিলেন, যেন তারা মারা যায়।

20 “সেই সময় মোশির জন্ম হয়, তিনি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সুন্দর ছিলেন, তিন মাস পর্যন্ত তিনি তাঁর পিতার গৃহেই লালিত-পালিত হন। 21 পরে তাঁকে বাইরে রেখে দেওয়া হলে ফরৌণের কন্যা তাঁকে কুড়িয়ে এনে তাঁর নিজের ছেলের মত মানুষ করেন। 22 মোশি মিশরীয়দের সমস্ত জ্ঞানে শিক্ষিত হয়ে উঠলেন, আর কথায় ও কাজে মহাক্ষমতাশালী হয়ে উঠলেন।

23 “মোশির বয়স যখন চল্লিশ বছর তখন তাঁর ইস্রায়েলী ভাইদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা হল। 24 মোশি দেখলেন যে একজন মিশরীয় একজন ইস্রায়েলীয়র প্রতি দুর্ব্যবহার করছে, তিনি তখন ইস্রায়েলী লোকটির পক্ষ সমর্থন করলেন। ইস্রায়েলী লোকটিকে আঘাত করার জন্য মোশি সেই মিশরীয়কে শাস্তি দিলেন এবং তাকে এমন মার দিলেন যে সে মরেই গেল। 25 তিনি মনে করলেন যে তাঁর স্বজাতীয় ভাইরা হয়তো বুঝবে যে তাদের উদ্ধার করতে ঈশ্বরই তাকে পাঠিয়েছেন, কিন্তু তারা তা বুঝল না।

26 “পরদিন, দুজন ইস্রায়েলী যখন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে, সেই সময় তিনি তাদের কাছে এসে তাদের মধ্যে মিলন করে দেবার জন্য বললেন, ‘দেখ, তোমরা পরস্পর ভাই। তবে কেন একে অপরের প্রতি দুর্ব্যবহার করছ?’ 27 কিন্তু অন্যায়কারী লোকটি মোশিকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়ে বলল, ‘আমাদের বিচার করতে কে তোমাকে অধিকার দিয়েছে? 28 গতকাল তুমি যেমন সেই মিশরীয়কে খুন করেছিলে, তেমনি কি আমাকেও খুন করতে চাও?’(D) 29 একথা শুনে মোশি মিশর থেকে পালিয়ে গেলেন; আর মিদিয়নে বিদেশীরূপে বাস করতে লাগলেন। সেখানে তিনি অপরিচিত আগন্তুকের মতো ছিলেন। সেখানে থাকার সময় মোশির দুই ছেলের জন্ম হয়।

30 “এর চল্লিশ বছর পরে তিনি যখন সীনয় পর্বতের কাছে মরুপ্রান্তরে ছিলেন, সেখানে এক জ্বলন্ত ঝোপের আগুনের শিখার মধ্যে এক স্বর্গদূত তাঁকে দেখা দিলেন। 31 এই দেখে মোশি আশ্চর্য হয়ে আরো ভাল করে দেখবার জন্য যখন কাছে গেলেন, তখন প্রভুর এই রব শুনলেন, 32 ‘আমি তোমার পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের, ইস‌্হাকের ও যাকোবের ঈশ্বর।’(E) মোশি ভয়ে কাঁপতে লাগলেন, ভালভাবে তাকাতেও সাহস করলেন না।

33 “এরপর প্রভু তাঁকে বললেন, ‘তোমার পা থেকে চটি (জুতো) খুলে ফেল, কারণ যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, সেই জায়গা পবিত্র। 34 মিশরে আমি আমার লোকদের দুরবস্থা ভাল করেই দেখেছি, তাদের আর্তনাদ শুনেছি, তাই আমি তাদের উদ্ধার করার জন্য নেমে এসেছি। মোশি, তুমি এস, এখন আমি তোমাকে মিশরে পাঠাব।’(F)

35 “এই মোশিকেই ইস্রায়েলীয়রা চায় নি বলে বলেছিল, ‘কে তোমাকে আমাদের শাসক ও বিচারক বানিয়েছে?’(G) মোশিই সেই ব্যক্তি যাকে ঈশ্বর স্বর্গদূতের মাধ্যমে শাসনকর্তা ও ত্রাণকর্তারূপে পাঠিয়েছিলেন। সেই স্বর্গদূতকেই মোশি জ্বলন্ত ঝোপের মধ্যে রেখেছিলেন। 36 এরপর মোশি লোকদের মিশর থেকে বার করে আনলেন। তিনি মিশরে, লোহিত সাগরে আর প্রান্তরে চল্লিশ বছর ধরে বহু অলৌকিক ও পরাক্রমের কাজ করেন।

37 “মোশিই তাঁর ইহুদী ভাইদের বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর তোমাদের মধ্য থেকে এক ভাববাদী ঠিক করবেন, তিনি হবেন আমারই মতো।’(H) 38 এই মোশিই প্রান্তরে ইহুদীদের সমাবেশে ছিলেন। যে স্বর্গদূত সীনয় পর্বতে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তিনি তাঁর সঙ্গে ও আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন। মোশি ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনদায়ী আদেশ লাভ করে তাঁর আজ্ঞা সকল আমাদের দিয়েছিলেন।

39 “কিন্তু আমাদের পিতৃপুরুষরা তাঁর কথা পালন করতে চান নি, তার পরিবর্তে তাঁরা তাঁকে অগ্রাহ্য করে মিশরে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। 40 আমাদের পিতৃপুরুষরা হারোণকে বললেন, ‘মোশি আমাদের মিশর থেকে বার করে এনেছেন, কিন্তু তার কি হল আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না। তাই কিছু দেবতাদের গড়ে তোল, যারা আমাদেব আগে আগে যাবে ও পরিচালিত করবে।’(I) 41 তাই লোকেরা বাছুরের এক প্রতিমা গড়ল আর সেই প্রতিমার সামনে বলিদান উৎসর্গ করল। তারা তাদের হাতে গড়া সেই দেবতাকে নিয়ে আনন্দ করতে লাগল। 42 কিন্তু ঈশ্বর তাদের প্রতি বিমুখ হলেন, তিনি তাদের আকাশের সেনা অর্থাৎ অলীক দেবতাদের পূজায় বাধা দিলেন না। ভাববাদীদের পুস্তকে একথা লেখা আছে:

‘হে ইস্রায়েলের গোষ্ঠী, প্রান্তরে চল্লিশ বছর ধরে তোমরা তো আমার উদ্দেশ্যে পশুবলি ও নৈবেদ্য উৎসর্গ কর নি;
43 তোমরা মোলক দেবতার পূজার তাঁবু,
    রিফান দেবতার নক্ষত্রের প্রতিমূর্তি বহন করেছিলে।
পূজা করবার জন্যই তোমরা ঐসব দেবতার মূর্তি গড়েছিলে।
    তাই আমি তোমাদের বাবিলের ওপারে নির্বাসনে পাঠাব।’(J)

44 “মরু এলাকায় আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের কাছেই সেই পবিত্র তাঁবু ছিল। এই পবিত্র তাঁবু তৈরী হয়েছিল সেই ধারায়, যেভাবে নমুনা দেখিয়ে ঈশ্বর মোশিকে তা করতে বলেছিলেন। 45 পরবর্তীকালে যিহোশূয় আমাদের পিতৃপুরুষদের পরিচালিত করলে তাঁরা ভিন্ন জাতির দেশ দখল করলেন। আমাদের লোকরা সেই দেশে প্রবেশ করলে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের সেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করলেন। আমাদের লোকরা এই নতুন দেশে গেলে ঐ তাঁবুও সঙ্গে নিয়ে এলেন। পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে তাঁরা এই তাঁবু পেয়েছিলেন। সেই তাঁবু রাজা দায়ূদের সময় পর্যন্ত তাঁদের কাছে ছিল। 46 দায়ূদ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করলেন আর যাকোবের ঈশ্বরের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করার অনুমতি চাইলেন। 47 কিন্তু দায়ূদের ছেলে শলোমন তাঁর জন্য মন্দির নির্মাণ করলেন।

48 “কিন্তু যিনি পরমেশ্বর তিনি কখনও মানুষের হাতে তৈরী গৃহে বাস করেন না। এ বিষয়ে ভাববাদী বলেছেন:

‘প্রভু বলেন,
49 স্বর্গ আমার সিংহাসন।
    পৃথিবী আমার পা রাখার জায়গা।
তুমি আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্মাণ করবে?
    আমার বিশ্রামের স্থান কোথায়!
50 আমার হাতই কি এই বস্তুগুলি নির্মাণ করে নি!’(K)

51 “আপনারা একগুঁয়ে লোক! ঈশ্বরকে আপনারা নিজ নিজ হৃদয় সঁপে দেন নি! আপনারা তাঁর কথা শুনতে চান নি! আপনারা সব সময় পবিত্র আত্মা যা বলতে চাইছেন তা প্রতিরোধ করে এসেছেন। আপনাদের পিতৃপুরুষরা যেমন করেছিলেন, আপনারাও তাদের মতোই করছেন। 52 এমন কোন ভাববাদী ছিলেন কি যাকে আপনাদের পিতৃপুরুষরা নির্যাতন করেন নি? সেই ধার্মিক ব্যক্তির আগমণের কথা যাঁরা বহুপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন আপনাদের পিতৃপুরুষরা তাদের খুন করেছেন; আর এখন আপনারা সেই ধার্মিককে শত্রুর হাতে সঁপে দিয়ে হত্যা করছেন। 53 আপনারা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পেয়েছিলেন, ঈশ্বরই তাঁর স্বর্গদূতদের মাধ্যমে তা দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনারা তা পালন করেন নি!”

স্তিফানকে হত্যা

54 ইহুদী নেতারা স্তিফানের এইসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে গেল। স্তিফানের প্রতি তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দাঁতে দাঁত ঘষতে লাগল। 55 স্তিফান পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের দিকে তাকালেন আর দেখলেন ঈশ্বরের মহিমা, দেখলেন যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন। 56 তিনি বললেন, “দেখ! আমি দেখছি স্বর্গ খোলা রয়েছে; আর মানবপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন!”

57 তখন ইহুদী নেতারা জোরে চিৎকার করে উঠল, আর নিজেদের কানে হাত চাপা দিল। এরপর সবাই মিলে এক সঙ্গে তাঁর দিকে ছুটে গেল। 58 তারা স্তিফানকে মেরে ফেলার জন্য তাঁকে টানতে টানতে শহর থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর মারতে লাগল। যারা স্তিফানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছিল, তারা শৌল নামে এক যুবকের পায়ের কাছে তাদের আলখাল্লা খুলে জমা রাখল। 59 তারা যখন স্তিফানকে পাথর মেরে চলেছে তখন তিনি প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!” 60 এরপর তিনি হাঁটু গেড়ে বসে চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, এদের বিরুদ্ধে এই পাপ গন্য করো না!” এই বলে তিনি মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International