M’Cheyne Bible Reading Plan
জগৎ সৃষ্টির শুরু
1 শুরুতে, ঈশ্বর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। প্রথমে পৃথিবী একেবারে শূন্য ছিল; পৃথিবীতে কিছুই ছিল না। 2 অন্ধকারে আবৃত ছিল জলরাশি আর ঈশ্বরের আত্মা সেই জলরাশির উপর দিয়ে ভেসে বেড়াচ্ছিল।
প্রথম দিন—আলো
3 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আলো ফুটুক!” তখনই আলো ফুটতে শুরু করল। 4 আলো দেখে ঈশ্বর বুঝলেন, আলো ভাল। তখন ঈশ্বর অন্ধকার থেকে আলোকে পৃথক করলেন। 5 ঈশ্বর আলোর নাম দিলেন, “দিন” এবং অন্ধকারের নাম দিলেন “রাত্রি।”
সন্ধ্যা হল এবং সেখানে সকাল হল। এই হল প্রথম দিন।
দ্বিতীয় দিন—আকাশ
6 তারপর ঈশ্বর বললেন, “জলকে দুভাগ করবার জন্য আকাশমণ্ডলের ব্যবস্থা হোক্।” 7 তাই ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের সৃষ্টি করে জলকে পৃথক করলেন। এক ভাগ জল আকাশমণ্ডলের উপরে আর অন্য ভাগ জল আকাশমণ্ডলের নীচে থাকল। 8 ঈশ্বর আকাশমণ্ডলের নাম দিলেন “আকাশ।” সন্ধ্যা হল আর তারপর সকাল হল। এটা হল দ্বিতীয় দিন।
তৃতীয় দিন—শুকনো জমি ও গাছপালা
9 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশের নীচের জল এক জায়গায় জমা হোক্ যাতে শুকনো ডাঙা দেখা যায়।” এবং তা-ই হল। 10 ঈশ্বর শুকনো জমির নাম দিলেন, “পৃথিবী” এবং এক জায়গায় জমা জলের নাম দিলেন, “মহাসাগর।” ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
11 তখন ঈশ্বর বললেন, “পৃথিবীতে ঘাস হোক্, শস্যদায়ী গাছ ও ফলের গাছপালা হোক্। ফলের গাছগুলিতে ফল আর ফলের ভেতরে বীজ হোক্। প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করুক। এইসব গাছপালা পৃথিবীতে বেড়ে উঠুক।” আর তাই-ই হল। 12 পৃথিবীতে ঘাস আর শস্যদায়ী উদ্ভিদ উৎপন্ন হল। আবার ফলদায়ী গাছপালাও হল, ফলের ভেতরে বীজ হল। প্রত্যেক উদ্ভিদ আপন আপন জাতের বীজ সৃষ্টি করল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
13 সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল। এভাবে হল তৃতীয় দিন।
চতুর্থ দিন—সূর্য্য, চাঁদ ও তারা
14 তারপর ঈশ্বর বললেন, “আকাশে আলো ফুটুক। এই আলো দিন থেকে রাত্রিকে পৃথক করবে। এই আলোগুলি বিশেষ সভা[a] শুরু করার বিশেষ বিশেষ সংকেত হিসেবে ব্যবহৃত হবে। আর দিন ও বছর বোঝাবার জন্য এই আলোগুলি ব্যবহৃত হবে। 15 পৃথিবীতে আলো দেওয়ার জন্য এই আলোগুলি আকাশে থাকবে।” এবং তা-ই হল।
16 তখন ঈশ্বর দুটি মহাজ্যোতি বানালেন। ঈশ্বর বড়টি বানালেন দিনের বেলা রাজত্ব করার জন্য আর ছোটটি বানালেন রাত্রিবেলা রাজত্ব করার জন্য। ঈশ্বর তারকারাজিও সৃষ্টি করলেন। 17 পৃথিবীকে আলো দেওয়ার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন। 18 দিন ও রাত্রিকে কর্তৃত্ত্ব দেবার জন্য ঈশ্বর এই আলোগুলিকে আকাশে সাজালেন। এই আলোগুলি আলো আর অন্ধকারকে পৃথক করে দিল এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটা ভাল হয়েছে।
19 সন্ধ্যা হল এবং সকাল হল। এভাবে চতুর্থ দিন হল।
পঞ্চম দিন—মাছ ও পাখী
20 তারপর ঈশ্বর বললেন, “বহু প্রকার জীবন্ত প্রাণীতে জল পূর্ণ হোক্ আর পৃথিবীর ওপরে আকাশে ওড়বার জন্য বহু পাখী হোক্।” 21 সুতরাং ঈশ্বর বড় বড় জলজন্তু এবং জলে বিচরণ করবে এমন সমস্ত প্রাণী সৃষ্টি করলেন। অনেক প্রকার সামুদ্রিক জীব রয়েছে এবং সে সবই ঈশ্বরের সৃষ্টি। যত রকম পাখী আকাশে ওড়ে সেইসবও ঈশ্বর বানালেন। এবং ঈশ্বর দেখলেন ব্যবস্থাটি ভাল হয়েছে।
22 ঈশ্বর এই সমস্ত প্রাণীদের আশীর্বাদ করলেন। ঈশ্বর সামুদ্রিক প্রাণীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে সমুদ্র ভরিয়ে তুলতে বললেন। ঈশ্বর পৃথিবীতে পাখীদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে বললেন।
23 সন্ধ্যা হয়ে গেল এবং তারপর সকাল হল। এভাবে পঞ্চম দিন কেটে গেল।
ষষ্ঠ দিন—ডাঙার জন্তু জানোয়ার ও মানুষ
24 তারপর ঈশ্বর বললেন, “নানারকম প্রাণী পৃথিবীতে উৎপন্ন হোক্। নানারকম বড় আকারের জন্তু জানোয়ার আর বুকে হেঁটে চলার নানারকম ছোট প্রাণী হোক্ এবং প্রচুর সংখ্যায় তাদের সংখ্যাবৃদ্ধি হোক্।” তখন যেমন তিনি বললেন সব কিছু সম্পন্ন হল।
25 সুতরাং ঈশ্বর সব রকম জন্তু জানোয়ার তেমনভাবে তৈরী করলেন। বন্য জন্তু, পোষ্য জন্তু আর বুকে হাঁটার সবরকমের ছোট ছোট প্রাণী ঈশ্বর বানালেন এবং ঈশ্বর দেখলেন প্রতিটি জিনিসই বেশ ভালো হয়েছে।
26 তখন ঈশ্বর বললেন, “এখন এস, আমরা মানুষ সৃষ্টি করি। আমাদের আদলে আমরা মানুষ সৃষ্টি করব। মানুষ হবে ঠিক আমাদের মত। তারা সমুদ্রের সমস্ত মাছের ওপরে আর আকাশের সমস্ত পাখীর ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবে। তারা পৃথিবীর সমস্ত বড় জানোয়ার আর বুকে হাঁটা সমস্ত ছোট প্রাণীর উপরে কর্তৃত্ত্ব করবে।”
27 তাই ঈশ্বর নিজের মতোই মানুষ সৃষ্টি করলেন। মানুষ হল তাঁর ছাঁচে গড়া জীব। ঈশ্বর তাদের পুরুষ ও স্ত্রীরূপে সৃষ্টি করলেন। 28 ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করে বললেন, “তোমাদের বহু সন্তান-সন্ততি হোক্। মানুষে মানুষে পৃথিবী পরিপূর্ণ করো এবং তোমরা পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণের ভার নাও, সমুদ্রে মাছেদের এবং বাতাসে পাখিদের শাসন করো। মাটির ওপর যা কিছু নড়েচড়ে, যাবতীয় প্রাণীকে তোমরা শাসন করো।”
29 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমাদের শস্যদায়ী সমস্ত গাছ ও সমস্ত ফলদায়ী গাছপালা দিচ্ছি। ঐসব গাছ বীজযুক্ত ফল উৎপাদন করে। এই সমস্ত শস্য ও ফল হবে তোমাদের খাদ্য। 30 এবং জানোয়ারদের সমস্ত সবুজ গাছপালা দিচ্ছি। তাদের খাদ্য হবে সবুজ গাছপালা। পৃথিবীর সমস্ত জন্তু জানোয়ার, আকাশের সমস্ত পাখি এবং মাটির উপরে বুকে হাঁটে যেসব কীট সবাই ঐ খাদ্য খাবে।” এবং এইসব কিছুই সম্পন্ন হল।
31 ঈশ্বর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন সেসব কিছু দেখলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন সমস্ত সৃষ্টিই খুব ভাল হয়েছে।
সন্ধ্যা হল, তারপর সকাল হল। এভাবে ষষ্ঠ দিন হল।
যীশু খ্রীষ্টের বংশ তালিকা
(লূক 3:23-38)
1 এই হল যীশু খ্রীষ্টের বংশ তালিকা। ইনি ছিলেন রাজা দায়ূদের বংশধর, দায়ূদ ছিলেন অব্রাহামের বংশধর।
2 অব্রাহামের ছেলে ইস্হাক।
ইস্হাকের ছেলে যাকোব।
যাকোবের ছেলে যিহূদা ও তার ভাইরা।
3 যিহূদার ছেলে পেরস ও সেরহ। (এদের মায়ের নাম তামর।)
পেরসের ছেলে হিষ্রোণ।
হিষ্রোণের ছেলে রাম।
4 রামের ছেলে অম্মীনাদব।
অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন।
নহশোনের ছেলে সল্মোন।
5 সল্মোনের ছেলে বোয়স। (এঁর মায়ের নাম রাহব।)
বোয়সের ছেলে ওবেদ। এর মায়ের নাম রূৎ।
ওবেদের ছেলে যিশয়।
6 যিশয়ের ছেলে রাজা দায়ূদ।
দায়ূদের ছেলে রাজা শলোমন। (এর মা ছিলেন ঊরিয়ের বিধবা স্ত্রী।)
7 শলোমনের ছেলে রহবিয়াম।
রহবিয়ামের ছেলে অবিয়।
অবিয়ের ছেলে আসা।
8 আসার ছেলে যিহোশাফট।
যিহোশাফটের ছেলে যোরাম।
যোরামের ছেলে উষিয়।
9 উষিয়ের ছেলে যোথম।
যোথমের ছেলে আহস।
আহসের ছেলে হিষ্কিয়।
10 হিষ্কিয়ের ছেলে মনঃশি।
মনঃশির ছেলে আমোন।
আমোনের ছেলে যোশিয়।
11 যোশিয়ের ছেলে যিকনিয় ও তার ভাইরা। বাবিলে ইহুদীদের নির্বাসনের সময় এঁরা জন্মেছিলেন।
12 যিকনিয়ের ছেলে শল্টীয়েল। ইনি বাবিলে নির্বাসনের পর জন্মেছিলেন। শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল।
13 সরুব্বাবিলের ছেলে অবীহূদ।
অবীহূদের ছেলে ইলীয়াকীম।
ইলীয়াকীমের ছেলে আসোর।
14 আসোরের ছেলে সাদোক।
সাদোকের ছেলে আখীম।
আখীমের ছেলে ইলীহূদ।
15 ইলীহূদের ছেলে ইলিয়াসর।
ইলিয়াসরের ছেলে মত্তন।
মত্তনের ছেলে যাকোব।
16 যাকোবের ছেলে যোষেফ।
এই যোষেফই ছিলেন মরিয়মের স্বামী
এবং মরিয়মের গর্ভে যীশুর জন্ম হয়, যাঁকে মশীহ বা খ্রীষ্ট বলে।
17 এইভাবে অব্রাহাম থেকে দায়ূদ পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ। দায়ূদের পর থেকে বাবিলে নির্বাসন পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ এবং বাবিলে নির্বাসনের পর থেকে খ্রীষ্টের আগমন পর্যন্ত মোট চৌদ্দ পুরুষ।
যীশু খ্রীষ্টের জন্ম
(লূক 2:1-7)
18 এই হল যীশু খ্রীষ্টের জন্ম সংক্রান্ত বিবরণ: যোষেফের সঙ্গে তাঁর মা মরিয়মের বাগদান হয়েছিল; কিন্তু তাঁদের বিয়ের আগেই জানতে পারা গেল যে পবিত্র আত্মার শক্তিতে মরিয়ম গর্ভবতী হয়েছেন। 19 তাঁর ভাবী স্বামী যোষেফ ন্যায়পরায়ণ লোক ছিলেন। তিনি মরিয়মকে লোক চক্ষে লজ্জায় ফেলতে চাইলেন না, তাই তিনি মরিয়মের সাথে বিবাহের এই বাগদান বাতিল করে গোপনে তাকে ত্যাগ করতে চাইলেন।
20 তিনি যখন এসব কথা চিন্তা করছেন, তখন প্রভুর এক দূত স্বপ্নে তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, “যোষেফ, দায়ূদের সন্তান, মরিয়মকে তোমার স্ত্রীরূপে গ্রহণ করতে ভয় করো না, কারণ তার গর্ভে যে সন্তান এসেছে, তা পবিত্র আত্মার শক্তিতেই হয়েছে। 21 দেখ, সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তুমি তাঁর নাম রেখো যীশু, কারণ তিনি তাঁর লোকদের তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করবেন।”
22 এইসব ঘটেছিল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভু যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়। 23 “শোন এক কুমারী গর্ভবতী হবে, আর সে এক পুত্র সন্তান প্রসব করবে, তারা তাঁকে ইম্মানূয়েল (A) (যার অর্থ ‘আমাদের সঙ্গে ঈশ্বর’) বলে ডাকবে।”
24 যোষেফ ঘুম থেকে উঠে প্রভুর দূতের আদেশ অনুসারে কাজ করলেন। তিনি মরিয়মকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে গেলেন। 25 কিন্তু মরিয়মের সেই সন্তানের জন্ম না হওয়া পর্যন্ত যোষেফ মরিয়মের সঙ্গে সহবাস করলেন না। যোষেফ সেই সন্তানের নাম রাখলেন যীশু।
কোরস বন্দীদের ফিরতে সাহায্য করলেন
1 পারস্যের রাজা কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরে[a] প্রভু একটি ঘোষণা করবার জন্য তাঁকে উৎসাহিত করলেন। কোরস সেই ঘোষণাটি লিখিয়ে নিলেন এবং তাঁর রাজ্যের সব জায়গায় সেটি পড়াবার ব্যবস্থা করলেন। যিরমিয়র মুখ দিয়ে বলা প্রভুর এই বার্তাটি যাতে প্রচার হয় তার জন্য এই ব্যবস্থা হল। ঘোষণাটি এইরূপ:
2 “পারস্যের রাজা কোরসের কাছ থেকে:
“স্বর্গের প্রভু আমায় পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য উপহার দিয়েছেন। যিহূদা দেশের জেরুশালেমে তাঁর জন্য একটি মন্দির নির্মাণের নিমিত্ত তিনি আমাকে নিযুক্ত করেছেন। 3 যদি তোমাদের মধ্যে তাঁর কোন লোক বাস করে তবে তারা যেন তাদের যিহূদা দেশের জেরুশালেম শহরে গিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর জন্য একটি মন্দির নির্মাণ করে যেটি জেরুশালেমে আছে। প্রভু তাদের আশীর্বাদ করুন। 4 সমস্ত জায়গায় যেখানে বেঁচে যাওয়া ইস্রায়েলীয়রা বাস করে তাদের সেখানকার অধিবাসীদের সমর্থন অবশ্যই পাওয়া দরকার। জেরুশালেমে ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের জন্য প্রত্যেককে তাদের সোনা, রূপো, গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দান করতে হবে।”
5 তখন যিহূদা ও বিন্যামীন উপজাতির পরিবারের অধিনায়করা প্রভুর মন্দির নির্মাণের জন্য জেরুশালেমে যেতে প্রস্তুত হল। অন্যান্য লোকরাও, যারা ঈশ্বরের দ্বারা উৎসাহিত হয়েছিল, তারাও তাদের সঙ্গে যোগদান করতে প্রস্তুত হল। 6 এই কাজের জন্য তাদের প্রতিবেশীরা সকলেই মুক্তহস্তে তাদের সোনা, রূপো, গবাদি পশুসহ আরো অন্যান্য বহুমূল্য উপহার দান করল। 7-8 যে সমস্ত জিনিষ মূলতঃ জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরে ছিল সেগুলিও পারস্য-রাজ কোরস সেখান থেকে বার করে আনলেন। এই জিনিষগুলি রাজা নবূখদ্নিৎসর বার করে নিয়ে এসে তাঁর মন্দিরে মূর্ত্তিসমূহের মধ্যে রেখেছিলেন। রাজা কোরস তাঁর কোষাধ্যক্ষ মিত্রদাতের হাত দিয়ে সেই সমস্ত সামগ্রী বার করে ইহুদী নেতা শেশবসরের হাতে প্রভুর মন্দিরের জন্য তুলে দিলেন।
9 মিত্রদাত যে সমস্ত সামগ্রী এনেছিলেন তার মধ্যে ছিল: সোনার থালা 30, রূপোর থালা 1000, ছুরি এবং চাটুসমূহ 29, 10 সোনার বাটি 30, ঠিক সোনার বাটির মত রূপোর বাটি 410, এবং অন্যান্য পাত্র 1000।
11 সেখানে সব সমেত 5400 টি সোনার এবং রূপোর জিনিষ ছিল। যে সমস্ত বন্দী বাবিল ছেড়ে জেরুশালেমে ফিরে যাচ্ছিল তাদের সঙ্গে শেশ্বসর এই সমস্ত জিনিষ এনেছিলেন।
লূকের লেখা অন্য পুস্তক
1 প্রিয় থিয়ফিল,
আমার প্রথম বইটিতে যীশু যে সব কাজ করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন তার বিবরণ ছিল। 2 আমি যা লিখেছি, তাতে শুরু থেকে তাঁর স্বর্গারোহণের দিন পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন এবং শিখিয়েছিলেন তার সব বিবরণ আছে। স্বর্গারোহণের পূর্বে যীশু তাঁর মনোনীত প্রেরিতদের, পবিত্র আত্মার সাহায্যে তাদের কি করণীয় তা জানিয়েছিলেন। 3 মৃত্যুর পর যীশু, তাঁর প্রেরিতদের কাছে দেখালেন যে তিনি জীবিত এবং অনেক পরাক্রমী কার্য সাধন করে তিনি এর প্রমাণ দিলেন। মৃতদের মধ্য থেকে যীশুর পুনরুত্থানের পর 40 দিনের মধ্যে প্রেরিতরা যীশুকে বহুবার দেখেছিলেন। এই সময়ে যীশু তাঁদের ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে নানা কথা বলেছিলেন। 4 আর এক সময় যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে আহার করছিলেন, তখন আদেশ দিয়েছিলেন, যেন তাঁরা জেরুশালেম ছেড়ে না যান। যীশু বলেছিলেন, “পিতা তোমাদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যে বিষয়ে এর আগেও আমি তোমাদের জানিয়েছিলাম, তোমরা সেই প্রতিশ্রুত বিষয় পাবার অপেক্ষায় জেরুশালেমে থেকো। 5 কারণ যোহন জলে বাপ্তাইজ করতেন, কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তাইজিত হবে।”
যীশুকে স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হল
6 এরপর প্রেরিতরা একত্র হয়ে যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “প্রভু, এই সময় আপনি কি ইস্রায়েলকে তাঁদের রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?”
7 তিনি তাঁদের বললেন, “পিতা নিজেই কেবল সময় ও তারিখগুলি নির্ধারণ করেন, এসব বিষয় তোমরা জানতে পারবে না; 8 কিন্তু যখন পবিত্র আত্মা তোমাদের কাছে আসবেন, তখন তোমরা শক্তি পাবে আর তোমরা আমার সাক্ষী হবে। লোকদের কাছে তোমরা আমার কথা বলবে। প্রথমে তোমরা জেরুশালেমের লোকদের কাছে সাক্ষ্য দেবে, তারপর সমগ্র যিহূদিয়া ও শমরিয়ায়, এমনকি জগতের শেষ সীমানা পর্যন্ত তোমরা আমার কথা বলবে।”
9 এই কথা বলার পর প্রেরিতদের চোখের সামনে তাঁকে আকাশে তুলে নেওয়া হল। আর এক খানা মেঘ তাঁকে তাঁদের দৃষ্টির আড়াল করে দিল। 10 যীশু যখন যাচ্ছেন, আর প্রেরিতরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন, ঠিক সেই সময় সাদা ধবধবে পোশাক পরা দুই ব্যক্তি তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ালেন। 11 সেই দুই ব্যক্তি প্রেরিতদের বললেন, “হে গালীলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? এই যে যীশু, যাকে তোমাদের সামনে থেকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হল, তাঁকে যে ভাবে তোমরা স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক সেই ভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।”
এক নতুন প্রেরিতের মনোনয়ন
12 এরপর তাঁরা জৈতুন পর্বতমালা থেকে নেমে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। জেরুশালেম থেকে পাহাড়টির দূরত্ব ছিল এক বিশ্রামবারের পথ অর্থাৎ প্রায় আধ মাইল। 13 এরপর প্রেরিতরা শহরে প্রবেশ করে তাঁরা যে বাড়িতে থাকতেন, তার উপরের তলার কামরায় গেলেন। এই প্রেরিতদের নাম ছিল; পিতর, যোহন, যাকোব, আন্দ্রিয়, ফিলিপ, থোমা, বর্থলময়, মথি, (আলফেয়ের ছেলে) যাকোব, শিমোন, যাকে দেশভক্ত বলা হত এবং (যাকোবের ছেলে) যিহূদা।
14 প্রেরিতরা সকলেই একসঙ্গে সেখানে একই উদ্দেশ্যে সর্বদা প্রার্থনা করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন স্ত্রীলোক, যীশুর মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইরা।
15 ঐ দিনগুলিতে যখন খ্রীষ্ট বিশ্বাসীরা একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করছিলেন, সেখানে প্রায় 120 জন উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় পিতর উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, 16-17 “ভাইরা যিহূদা সম্পর্কে পবিত্র আত্মা দায়ূদের মুখ দিয়ে যে কথা বহুপূর্বেই বলেছিলেন, শাস্ত্রের সেই কথা পূর্ণ হওয়ার প্রয়োজন ছিল। যিহূদাই সেই ব্যক্তি যে যীশুর গ্রেপ্তারকারীদের পরিচালনা দিয়েছিল। যিহূদা ছিল আমাদেরই একজন, যে আমাদের পরিচর্য্যা কাজের সহভাগীও ছিল।”
18 (এই লোক তার এই অন্যায় কাজের দ্বারা অর্থ রোজগার করে তাই দিয়ে এক টুকরো জমি কিনেছিল; কিন্তু সে মাথাটা নীচু করে মাটিতে পড়ল, আর তার পেট ফেটে ভেতরের নাড়ী-ভুঁড়ি সব বেরিয়ে পড়ল। 19 যারা জেরুশালেমে বাস করে, তারা সকলেই একথা জানে। তাই সেই জমিটিকে তাদের ভাষায় বলে হকলদামা, যার অর্থ, “রক্তের ভূমি।”)
20 বাস্তবিক, “গীতসংহিতায় লেখা আছে:
‘তার গৃহ যেন পরিত্যক্ত হয়;
কেউ যেন তার মধ্যে বাস না করে।’(A)
আরও লেখা আছে:
‘আর অন্য কেউ তার স্থান দখল করুক।’(B)
21-22 “তাই যোহন যখন বাপ্তাইজ করতে শুরু করেন, সেই সময় থেকে প্রভু যীশুর স্বর্গারোহণের সময় পর্যন্ত যতদিন প্রভু যীশু আমাদের সঙ্গে ছিলেন, সেই দিনগুলিতে যাঁরা সব সময় আমাদের সঙ্গে থাকতেন, তাঁদের মধ্যে একজনকে আমাদের মনোনীত করা প্রয়োজন। যিনি আমাদের দলে যোগদান করবেন, তাঁকে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষী হতে হবে।”
23 তখন প্রেরিতরা দুজন লোককে উপস্থিত করলেন, যোষেফ, যাকে বার্শব্বা বলে ডাকে, যার অপর নাম যুষ্ট, আর মত্তথিয়কে। 24-25 এরপর তাঁরা প্রার্থনা সহকারে বললেন, “প্রভু, তুমি সকলের অন্তঃকরণ জান। এই দুজনের মধ্যে কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখিয়ে দাও। যিহূদা তার নিজের জায়গায় যাবার জন্য প্রেরিতরূপে এই সেবার কাজ ত্যাগ করে গেছে। তার জায়গায় কাকে তুমি মনোনীত করেছ তা আমাদের দেখাও।” 26 এরপর তাঁরা ঐ দুজনের জন্য ঘুঁটি চাললেন আর মত্তথিয়ের নাম উঠল। এইভাবে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে প্রেরিত বলে গন্য হলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International