Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 35

যোশিয়র নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপন

35 রাজা যোশিয় জেরুশালেমে প্রভুর জন্য নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপন করেছিলেন। প্রথম মাসের 14 দিনে তারা নিস্তারপর্বের মেষটি বলিদান করে। যোশিয় তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য যাজকদের বেছে নিয়েছিলেন এবং প্রভুর মন্দিরে কাজকর্ম করার সময় তিনি তাদের উৎসাহিত করেছিলেন। যে সমস্ত লেবীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের শিক্ষাদান করতেন এবং প্রভুর সেবার জন্য যাঁরা পৃথকভাবে সমর্পিত ছিলেন, যোশিয় তাঁদের বলেছিলেন, “পবিত্র সিন্দুকটি রাজা দায়ূদের সন্তান শলোমনের বানানো মন্দিরে রেখে দাও। ওটা কাঁধে বয়ে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর তোমাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই। এবার মন দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও ইস্রায়েলের লোকদের সেবা করো। পরিবারগোষ্ঠী অনুযায়ী মন্দিরের সেবার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখো। রাজা দায়ূদ ও তাঁর সন্তান তোমাদের জন্য যে কর্তব্য বিধান করেছেন মন প্রাণ দিয়ে তা পালন করো। যাও, লোকদের বিভিন্ন পরিবারের জন্য নির্দ্দিষ্ট মন্দিরের পবিত্র স্থানে লেবীয়গোষ্ঠীর সঙ্গে দাঁড়াও। নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দাও, প্রভুর জন্য নিজেদের শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলো। তোমাদের ভাইদের জন্য মেষগুলো প্রস্তুত করে রাখো। এসো, প্রভু মোশির মাধ্যমে আমাদের যা যা করতে আদেশ দিয়েছেন আমরা সেই সব করি।”

নিস্তারপর্বে বলি দেবার জন্য যোশিয় ইস্রায়েলের লোকদের নিজের গবাদি পশু থেকে 30,000 ছাগল ও মেষ ছাড়াও আরো 3000 ষাঁড় দিয়েছিলেন। যোশিয়র অধীনস্থ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও মুক্ত হস্তে নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপনের জন্য লেবীয় ও যাজকবর্গ লোকদের বিভিন্ন পশু ও জিনিসপত্র দান করেছিলেন। প্রভুর মন্দিরের প্রধান আধিকারিক হিল্কিয়, সখরিয় এবং যিহীয়েল যাজকদের কাছে 2600টি মেষ ও ছাগল এবং 300টি ষাঁড় দান করেছিলেন। কনানিয়, শময়িয়, নথনেল ও তাঁর ভাইরা, হশবিয়, যীয়ীয়েল, লেবীয় প্রধান, যোষাবদের মত লোকরা নিস্তারপর্বে বলিদানের জন্য লেবীয়দের 500টি মেষ ও ছাগল এবং 500 টি ষাঁড় দান করেছিলেন। এই লোকরা ছিল লেবীয়দের নেতৃবৃন্দ।

10 রাজা যেমন আদেশ করেছিলেন সেই অনুযায়ী সমস্ত রকম প্রস্তুতি শেষ হলে যাজকরা তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ালেন এবং লেবীয়রা তাঁদের নিজের নিজের দলগুলির সঙ্গে দাঁড়ালেন। 11 নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দেওয়া হল। তারপর লেবীয়রা চামড়া ছাড়িয়ে যাজকদের হাতে বলি দেওয়া পশুর রক্ত তুলে দিলেন। যাজকরা সেই রক্ত বেদীর ওপর ছিটিয়ে দিলেন এবং 12 তারপর বিভিন্ন পরিবারগোষ্ঠীর হাতে, মোশির বিধি পুস্তক অনুযায়ী, প্রভুর প্রতি হোমবলির জন্য বলির মাংস তুলে দিলেন। 13 নির্দেশ অনুযায়ী, লেবীয়রা আগুনের আঁচে নিস্তারপর্বের মেষশাবকের মাংস ঝলসে নিলেন। তারপর দ্রুত লোকদের মধ্যে মাংস বিতরণ করা হল। 14 এসব কাজ শেষ হবার পর, লেবীয়রা তাদের নিজেদের ও হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের জন্য বরাদ্দ মাংসের ভাগ পেলেন। যেহেতু রাত্রি পর্যন্ত এই সমস্ত যাজক সকলেই হোমবলি এবং চর্বি নিবেদনের কাজে ব্যস্ত ছিলেন, লেবীয়রা তাঁদের এবং যাজকদের জন্য মাংস তৈরী করলেন। 15 আসফের বংশের লেবীয় গায়করা এরপর রাজা দায়ূদের নির্ধারিত জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন। এঁদের মধ্যে আসফ, হেমন রাজার ভাববাদী যিদূথূন প্রমুখরা ছিলেন। দ্বাররক্ষীদের কাউকেই নিজেদের জায়গা ছেড়ে নড়তে হয়নি কারণ তাদের অন্যান্য লেবীয় ভাইরা সকলেই নিস্তারপর্বের জন্য যা যা করা প্রয়োজন, সুষ্ঠভাবে করেছিলেন।

16 অর্থাৎ রাজা যোশিয় যেভাবে বলেছিলেন প্রভুর উপাসনার জন্য সব কিছু ঠিক সেইভাবে প্রস্তুত করা হল। এরপর নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপন করা হল এবং বেদীতে হোমবলি নিবেদন করা হল। 17 ইস্রায়েলের যে সমস্ত লোকরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তারা সকলে সাতদিন ধরে নিস্তারপর্ব ও খামিরবিহীন রুটির উৎসব পালন করলো। 18 সেই ভাববাদী শমূয়েলের সময়ের পর থেকে আর এভাবে ইস্রায়েলে নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপন করা হয়নি। যোশিয় যেভাবে যাজকদের সঙ্গে, লেবীয়দের সঙ্গে এবং সমগ্র যিহূদা ও ইস্রায়েলে জেরুশালেমের লোকেদের সঙ্গে এই নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপন করলেন, ইস্রায়েলের কোনো রাজাই আগে তা পালন করেন নি। 19 রাজা যোশিয়র রাজত্বের 18 বছরের মাথায় এই নিস্তারপর্ব উদ্‌যাপন করেছিলেন।

যোশিয়র মৃত্যু

20 যোশিয় এই সবকিছু করার পরে মিশররাজ নখো ফরাৎ নদীর তীরবর্তী কর্কমীশ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন, এবং যোশিয় তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করলেন। 21 নখো রাজা যোশিয়কে বার্তাবাহক মারফৎ জানালেন,

“মহারাজ, আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসি নি। এটি আদৌ আপনার কোনো সমস্যা নয়। আমি আমার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছি কারণ ঈশ্বর আমার পক্ষে এবং তিনি আমাকে দ্রুত কাজ শেষ করতে বলেছেন। তাই আমাকে থামাবেন না, তাহলে ঈশ্বর আপনাকে ধ্বংস করবেন।”

22 কিন্তু যোশিয় এই সতর্কবাণীতে কর্ণপাত করলেন না এবং ছদ্মবেশে মগিদ্দোতে নখোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। 23 যখন তীরন্দাজরা রাজা যোশিয়কে বিদ্ধ করল, তিনি তাঁর ভৃত্যদের বললেন, “আমাকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে চলো, আমি গুরুতরভাবে জখম হয়েছি।”

24 ভৃত্যরা যোশিয়কে তাঁর রথ থেকে সরিয়ে তাঁরই আনা অন্য একটি রথে করে জেরুশালেমে নিয়ে এলো। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হল। যোশিয়কে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল এবং তাঁর মৃত্যুতে যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকরা গভীরভাবে শোকাচ্ছন্ন হলেন। 25 যিরমিয় যোশিয়র পারলৌকিক অনুষ্ঠানের জন্য কিছু গান লিখেছিলেন এবং গেয়েও ছিলেন, লোকরা এখনো সেই গান গেয়ে থাকে। রাজা যোশিয়র জন্য শোক প্রকাশ করে গান গাওয়া ইস্রায়েলীয় জনজীবনের একটি অঙ্গে পরিণত হল। এই গানগুলি পারলৌকিক অনুষ্ঠানের গান পুস্তকে লিপিবদ্ধ আছে।

26-27 রাজা যোশিয় তাঁর রাজত্বের প্রথম থেকে শেষাবধি আর যা কিছু করেছিলেন সে সবই ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। এই গ্রন্থ থেকে প্রভুর প্রতি তাঁর ভক্তি ও নিষ্ঠা এবং তিনি কিভাবে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন সে কথাও জানা যায়।

প্র.বা. 21

নতুন জেরুশালেম

21 এরপর আমি এক নতুন স্বর্গ ও নতুন পৃথিবী দেখলাম, কারণ প্রথম স্বর্গ ও প্রথম পৃথিবী বিলুপ্ত হয়ে গেছে; এখন সমুদ্র আর নেই। আমি আরো দেখলাম, সেই পবিত্র নগরী, নতুন জেরুশালেম, স্বর্গ হতে ঈশ্বরের কাছ থেকে নেমে আসছে। কনে যেমন তার বরের জন্য সাজে, সেও সেইভাবে প্রস্তুত হয়েছিল।

পরে আমি সিংহাসন থেকে এক উদাত্ত নির্ঘোষ শুনতে পেলাম, যা ঘোষণা করছে, “এখন মানুষের মাঝে ঈশ্বরের আবাস। তিনি তাদের সঙ্গে বাস করবেন ও তারা তাঁর প্রজা হবে। ঈশ্বর নিজে তাদের সঙ্গে থাকবেন ও তাদের ঈশ্বর হবেন। তিনি তাদের চোখের সব জল মুছিয়ে দেবেন। মৃত্যু, শোক, কান্না যন্ত্রণা আর থাকবে না, কারণ পুরানো বিষয়গুলি বিলুপ্ত হল।”

আর যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তিনি বললেন, “দেখ! আমি সব কিছু নতুন করে করছি!” পরে তিনি বললেন, “লেখ, কারণ এসব কথা সত্য ও বিশ্বাসযোগ্য।”

যিনি সিংহাসনে বসেছিলেন পরে তিনি আমায় বললেন, “সম্পন্ন হল! আমি আলফা ও ওমেগা, আমিই আদি ও অন্ত। যে তৃষ্ণার্ত তাকে আমি জীবন জলের উৎস থেকে বিনামূল্যে জল দান করব। যে বিজয়ী হয় সে-ই এসবের অধিকারী হবে। আমি তার ঈশ্বর হব, আর সে হবে আমার পুত্র। কিন্তু যারা ভীরু, অবিশ্বাসী ঘৃন্যলোক, নরঘাতক, যৌনপাপে পাপগ্রস্ত, মায়াবী, প্রতিমাপূজারী, যাঁরা মিথ্যাবাদী, এদের সকলের স্থান হবে সেই আগুন ও জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে; এই হল দ্বিতীয় মৃত্যু।”

আর যে সপ্ত স্বর্গদূতদের কাছে সপ্ত সন্তাপপূর্ণ বাটি ছিল তাদের মধ্যে শেষ সন্তাপের বাটিটি যিনি ঢেলেছিলেন, তিনি এসে আমায় বললেন, “এস, আমি তোমাকে মেষশাবকের বধূকে দেখাব।” 10 আমি আত্মার আবেশে ছিলাম, সেই অবস্থায় তিনি আমাকে একটা খুব বড় উঁচু পাহাড়ের ওপর নিয়ে গেলেন আর স্বর্গে ঈশ্বরের কাছ থেকে যে পবিত্র নগরী জেরুশালেম নেমে আসছিল তা দেখালেন।

11 তা ছিল ঈশ্বরের মহিমায় পূর্ণ বহুমূল্য মণির মতো, তার উজ্জ্বলতা সূর্যকান্ত মণির মতো উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ। 12 নগরের প্রাচীরটি খুব উঁচু এবং বড় ছিল। প্রাচীরের বারোটি ফটক ছিল। নগরের বারোটি ফটকে বারোজন স্বর্গদূত ছিল। সেই দ্বারগুলির ওপর ইস্রায়েলের বারো গোষ্ঠীর নাম লেখা ছিল। 13 পূর্বদিকে তিনটি দরজা, উত্তরদিকে তিনটি দরজা, দক্ষিণ দিকে তিনটি দরজা ও পশ্চিম দিকে তিনটি দরজা। 14 নগরের সেই প্রাচীরের বারোটি ভিত পাথর ছিল, আর সেই সব ভিত পাথরের ওপর মেষশাবকের বারোজন প্রেরিতের নাম লেখা আছে।

15 স্বর্গদূত, যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর হাতে ঐ নগরটি, তার সব দরজা ও তার প্রাচীর মাপবার জন্য সোনার মাপকাঠি ছিল। 16 ঐ নগরটি ছিল চারকোণা, দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে সমান। তিনি নগরটি সেই মাপকাঠি দিয়ে মাপলে দেখা গেল তা দৈর্ঘ্যে প্রস্থে ও উচ্চতায় সমান এবং সেই মাপ হল 1500 মাইল। 17 পরে স্বর্গদূত নগরের প্রাচীর মাপলে দেখা গেল তা 144 হাত উঁচু। স্বর্গদূত মানুষের হাতের মাপ অনুযায়ী তা মাপলেন, এই মাপই তিনি ব্যবহার করেছিলেন। 18 প্রাচীরের গাঁথনি সূর্যকান্তমণির এবং নগরটি ছিল শুদ্ধ সোনায় তৈরী, যেটা ছিল কাঁচের মতো স্বচ্ছ। 19 নগরের প্রাচীরের ভিত পাথরগুলিতে সব ধরণের মূল্যবান মণি খচিত ছিল। প্রথমটি সূর্যকান্ত মণির, দ্বিতীয়টি নীলকান্ত মণির, তৃতীয়টি তাম্রমণির, চতুর্থটি পান্নামণির, পঞ্চমটি বৈদুর্য্যমণির; 20 ষষ্ঠটি লাল বর্ণ মণির, সপ্তমটি স্বর্ণ মণির, অষ্টমটি ফিরোজা মণির, নবমটি পোখরাজ মণির, দশমটি হলুদ সবুজ বর্ণ মণির, একাদশতমটি রক্তাভ ফলসাবর্ণ মণির, দ্বাদশতমটি জামীরা মণির।

21 বারোটি সিংহদ্বার হচ্ছে বারোটি মুক্তা, একটি দ্বার এক একটি মুক্তার তৈরী। নগরের সড়কটি কাঁচের মতো স্বচ্ছ খাঁটি সোনার তৈরী।

22 সেই নগরে আমি কোন মন্দির দেখলাম না, কারণ প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান ও মেষশাবক হচ্ছেন সেই নগরের মন্দির। 23 নগরটি আলোকিত করার জন্য সূর্য ও চাঁদের প্রয়োজন ছিল না, কারণ ঈশ্বরের মহিমা তা আলোকময় করে, আর মেষশাবকই তার আলোস্বরূপ। 24 এর আলোতে সমস্ত জাতি চলাফেরা করবে, আর জগতের রাজারা তাদের প্রতাপ সেখানে নিয়ে আসবে। 25 ঐ নগরের সিংহদ্বারগুলি কোন দিন কখনও বন্ধ হবে না, কারণ সেখানে কখনও কোন রাত্রি হবে না,

26 আর জাতিবৃন্দের সমস্ত প্রতাপ ও ঐশ্বর্য সেই নগরের মধ্যে আনা হবে। 27 অশুচি কোন কিছু শহরে প্রবেশ করতে পারবে না। কোন মানুষ যে ঘৃন্য কাজ করে অথবা যে অসৎ সে কখনও নগরে প্রবেশ করতে পারবে না। কেবল যাদের নাম মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লেখা আছে শুধু তারাই সেখানে প্রবেশ করতে পারবে।

মালাখি 3

প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “দেখ আমি আমার বার্তাবাহককে পাঠাচ্ছি এবং সে আমার আগে আগে আমার জন্য পথ পরিষ্কার করবে। তোমরা যে প্রভুর অন্বেষণ করছ, তিনি হঠাৎ‌‌ তাঁর মন্দিরে আসবেন। হ্যাঁ, নতুন চুক্তির বার্তাবাহক যাঁকে তোমরা চাও, তিনি আসছেন।

“কিন্তু তিনি যখন আসবেন তখন কে তা সহ্য করতে পারবে? আর তিনি দর্শন দিলে কে উঠে দাঁড়াতে পারবে? কারণ তিনি শোধন করার আগুনের মত ও ধোপার ক্ষারযুক্ত সাবানের মত। রৌপ্যকার যেমন করে রূপো নিখাদ করে তেমন করে তিনি লেবীয় উত্তরপুরুষদের শুদ্ধ করবেন। তিনি সন্তানদের সোনা রূপোর মতো পরিষ্কার করবেন আর তারাই প্রভুকে ঠিক মত নৈবেদ্য উৎসর্গ করবে। তখন যিহূদার ও জেরুশালেমের ধার্মিকতার উপহারগুলি প্রভু গ্রাহ্য করবেন, যেমন বহু আগে অতীতে হত। আমি তোমাদের কাছে বিচার করতে আসব এবং যারা যাদুবিদ্যা অভ্যাস করে, যারা ব্যভিচারী, যারা মিথ্যা ভাবে প্রতিশ্রুতি করে, যারা মজুরদের ঠকায়, বিধবা ও পিতৃহীনদের যারা সাহায্য করে না, যারা বিদেশীদের প্রতি অন্যায় করে আর আমাকে ভয় পায় না তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব!” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন।

ঈশ্বরের কাছ থেকে অপহরণ

“আমিই প্রভু, আমার পরিবর্তন নেই। তোমরা যাকোবের সন্তানরা তাই সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হচ্ছ না। তোমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই তোমরা আমার বিধি ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে পড়েছ।” সর্বশক্তিমান প্রভু বলেন, “তোমরা আমার কাছে ফিরে এস তাহলে আমিও তোমাদের কাছে ফিরে যাব।”

“কিন্তু তোমরা বলছ, ‘কিভাবে ফিরব?’

“কোন লোক কি ঈশ্বরের কাছ থেকে চুরি করতে পারে? কিন্তু তোমরা আমার কাছ থেকে চুরি করছ।

“তোমরা বল, ‘আমরা তোমার কাছ থেকে কি চুরি করেছি?’

“তোমাদের জিনিষগুলোর থেকে এক দশমাংশ আমাকে দেওয়া উচিৎ‌ ছিল। তোমাদের উচিৎ‌ ছিল আমাকে বিশেষ উপহার দেওয়া। কিন্তু তোমরা আমাকে সেইগুলি দাওনি। তোমাদের পুরো জাতি আমার কাছ থেকে জিনিষ চুরি করেছে। তোমরা সবাই অভিশাপে শাপগ্রস্ত।”

10 “তোমাদের উৎপন্ন শস্যের, পশুপালের এবং আয়ের এক দশমাংশ কোষাগারে নিয়ে এসো যাতে মন্দিরে সঞ্চয়ের জোগান থাকে। আর এতে আমায় পরীক্ষা করে দেখ আমি আকাশের দরজা খুলে তোমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে আশীর্বাদ করি কি না। 11 আমি ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গকে তোমার ক্ষেত্র ধ্বংস না করতে আদেশ দেব। তারা তোমার ক্ষেতের ফসল নষ্ট করবে না। দ্রাক্ষালতাগুলি দ্রাক্ষা উৎপন্ন করবে।” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন।

12 “সমস্ত জাতির লোকরা তোমাদের প্রশংসা করবে কারণ তোমরা একটি সুন্দর এবং চমৎ‌‌কার দেশ পাবে।” সর্বশক্তিমান প্রভু এইসব কথা বলেছেন।

বিচারের জন্য নিরূপিত সময়

13 প্রভু বলেন, “তোমরা আমার বিরুদ্ধে কড়া কড়া কথা বলেছ।”

কিন্তু তোমরা জিজ্ঞেস করছ, “আপনার বিরুদ্ধে আমরা কি বলেছি?”

14 তোমরা বলছ, “প্রভুর উপাসনা করা বৃথা। প্রভুর কথা অনুসারে আমরা কাজ করেছি বটে কিন্তু তা কোন উপকারে আসেনি। অন্ত্যোষ্টি ক্রিয়ার সময় লোকে যেমন শোক করে আমরা আমাদের পাপের জন্য তেমনি শোক করেছি কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। 15 আমাদের মনে হয় যারা গর্ব করে তারাই সুখী; দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য এবং প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা মন্দ কাজ করে ঈশ্বরের ধৈর্য্য পরীক্ষা করে আর ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেন না।”

16 তখন ঈশ্বরের অনুগামীরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলল আর প্রভু ওদের কথা শুনলেন। প্রভুর সামনে একটি বিবরণী পুস্তক আছে যার মধ্যে যারা তাঁকে শ্রদ্ধা করেছিল এবং তাঁর নামকে সম্মান করেছিল তার নামের তালিকা আছে।

17 প্রভু বলেছিলেন, “যখন আমি পৃথিবীকে বিচার করব ঐ লোকরা সেই দিন আমার হবে। সে সময় আমি তাদের প্রতি দয়া করব, যেমন করে পিতা তার সেবায় রত পুত্রের প্রতি করে। 18 তখন তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে এবং ধার্মিক ও দুষ্টের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখবে। ঈশ্বরের সেবাকারীদের সঙ্গে যারা তার সেবা করে না তাদের তফাত বুঝতে পারবে।”

যোহন 20

শিষ্যরা দেখল যীশুর সমাধিগুহা খালি

(মথি 28:1-10; মার্ক 16:1-8; লূক 24:1-12)

20 রবিবার দিন সকাল সকাল মরিয়ম মগ্দলিনী সেই সমাধির কাছে গেলেন, যেখানে যীশুর দেহ রাখা ছিল। তখনও অন্ধকার ছিল। তিনি দেখলেন যে সমাধি গুহার মুখে যে বড় পাথরখানি ছিল তা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তখন তিনি শিমোন পিতর ও যীশুর সেই শিষ্য (যাকে যীশু ভালোবাসতেন) তাঁদের কাছে ছুটে গেলেন। মরিয়ম বললেন, “তারা প্রভুকে সমাধি থেকে তুলে নিয়ে গেছে। আমরা কেউ জানি না, তারা কোথায় তাঁকে রেখেছে!”

তখন পিতর ও সেই অন্য শিষ্য সেখান থেকে বেরিয়ে সমাধির কাছে গেলেন। তাঁরা দুজনে এক সঙ্গে দৌড়াতে লাগলেন, কিন্তু সেই অন্য শিষ্য পিতরের থেকে আগে দৌড়ে সেই সমাধির কাছে প্রথমে পৌঁছালেন। তিনি ঝুঁকে পড়ে দেখলেন, সেখানে সেই মসীনার কাপড়গুলি পড়ে আছে, তবু ভেতরে গেলেন না।

শিমোন পিতর যিনি তাঁর পেছনে পেছনে আসছিলেন তিনিও এসে পৌঁছালেন আর সমাধি গুহার মধ্যে ঢুকলেন। তিনি দেখলেন, মসীনার সেই কাপড়গুলি সেখানে পড়ে আছে। আর কবর দেবার যে কাপড়টি দিয়ে যীশুর মুখ ও মাথা ঢাকা ছিল, সেটি ঐ মসীনার কাপড়ের সঙ্গে নেই, তা গোটানো অবস্থায় এক পাশে পড়ে আছে। এরপর সেই শিষ্য যিনি প্রথমে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন তিনিও ভেতরে ঢুকলেন এবং সবকিছু দেখে বিশ্বাস করলেন। (কারণ শাস্ত্রে একথা বলা হয়েছে যে মৃতদের মধ্য থেকে তাঁকে অবশ্যই পুনরুত্থিত হতে হবে। সেটি তাঁরা তখনও বোঝেন নি।)

মরিয়ম মগ্দলিনীকে যীশু দেখা দিলেন

(মার্ক 16:9-11)

10 এরপর সেই শিষ্যরা নিজেদের জায়গায় ফিরে গেলেন। 11 মরিয়ম কিন্তু সমাধির বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলেন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঝুঁকে পড়ে সমাধির ভেতরটা লক্ষ্য করলেন। 12 আর দেখলেন শুভ্র পোশাক পরে দুজন স্বর্গদূত যীশুর দেহ যেখানে শোয়ানো ছিল সেখানে বসে আছেন। একজন তাঁর মাথার দিকে, আর একজন তাঁর পায়ের দিকে।

13 তাঁরা মরিয়মকে বললেন, “নারী, তুমি কাঁদছ কেন?”

মরিয়ম তাঁদের বললেন, “তারা আমার প্রভুকে নিয়ে গেছে, আর আমি জানি না তাঁকে কোথায় রেখেছে।” 14 একথা বলতে বলতে তিনি যীশুকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন কিন্তু চিনতে পারলেন না যে উনি যীশু।

15 যীশু তাঁকে বললেন, “নারী, তুমি কাঁদছ কেন? তুমি কাকে খুঁজছ?”

মরিয়ম তাঁকে বাগানের মালী মনে করে বললেন, “মহাশয়, আপনি যদি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন তবে আমায় বলুন তাঁকে কোথায় রেখেছেন, আমি তাঁকে নিয়ে যাব।”

16 যীশু তাঁকে বললেন, “মরিয়ম।”

তিনি ফিরে তাকালেন, আর তাঁকে ইহুদীদের ভাষায় বললেন, “রব্বি” যার অর্থ “গুরু”।

17 যীশু তাঁকে বললেন, “আমাকে ধরো না, কারণ আমি উর্দ্ধে পিতার কাছে এখনও যাইনি। কিন্তু তুমি আমার ভাইদের কাছে যাও, আর তাদের বল, ‘যিনি আমার পিতা ও তোমাদের পিতা আর আমার ঈশ্বর ও তোমাদের ঈশ্বর, উর্দ্ধে আমি তাঁর কাছে যাচ্ছি।’”

18 তখন মরিয়ম মগ্দলিনী শিষ্যদের কাছে গিয়ে এই খবর জানিয়ে বললেন, “আমি প্রভুকে দেখেছি!” আর জানালেন যে প্রভু তাঁকে এই কথা বলেছেন।

যীশু শিষ্যদের দেখা দিলেন

(মথি 28:16-20; মার্ক 16:14-18; লূক 24:36-49)

19 দিনটা ছিল রবিবার, সেদিন সন্ধ্যায় শিষ্যরা একটি ঘরে জড়ো হলেন। ইহুদীদের ভয়ে তাঁরা ঘরের দরজায় চাবি দিয়ে দিলেন। এমন সময় যীশু এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন, আর বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্।” 20 একথা বলার পর তিনি তাঁদের তাঁর হাত ও পাঁজরের পাশটা দেখালেন। শিষ্যেরা প্রভুকে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দিত হলেন।

21 এরপর যীশু আবার তাঁদের বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্! পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি।” 22 এই বলে তিনি তাঁদের ওপর ফুঁ দিলেন, আর বললেন, “তোমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর। 23 যদি তোমরা কোন লোকের পাপ ক্ষমা কর, তবে তাদের পাপ ক্ষমা পাবে, আর যদি কারো পাপ ক্ষমা না কর তার পাপের ক্ষমা হবে না।”

যীশু থোমাকে দেখা দিলেন

24 কিন্তু যীশু যখন সেখানে এসেছিলেন তখন সেই বারোজন শিষ্যের একজন থোমা, যাঁর অপর নাম দিদুমঃ তিনি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না। 25 অন্য শিষ্যরা তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুকে দেখেছি!” কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমি যদি তাঁর দুহাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি, আর সেই পেরেক বিদ্ধ জায়গায় আমার আঙ্গুল না দিই, আর তাঁর পাঁজরের নীচে আমার হাত না দিই, তাহলে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করব না।”

26 এক সপ্তাহ পর তাঁর শিষ্যরা আবার একটি ঘরের মধ্যে ছিলেন, আর সেদিন থোমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। ঘরেব দরজাগুলি তখন চাবি দেওয়া ছিল। এমন সময়ে যীশু সেখানে এলেন ও তাঁদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্।” 27 এরপর তিনি থোমাকে বললেন, “এখানে তোমার আঙ্গুল দাও, আর আমার হাত দুটি দেখ। তোমার হাত বাড়িয়ে আমার পাঁজরের নীচে দাও। সন্দেহ কোরো না, বিশ্বাস কর।”

28 এর উত্তরে থোমা তাঁকে বললেন, “প্রভু, আমার, ঈশ্বর আমার।”

29 যীশু তাঁকে বললেন, “তুমি আমায় দেখেছ তাই বিশ্বাস করেছ। ধন্য তারা, যাঁরা আমাকে না দেখেও বিশ্বাস করে।”

যোহন কেন এই বই লিখেছিলেন

30 যীশু তাঁর শিষ্যদের সামনে আরো অনেক অলৌকিক চিহ্নকার্য করেছিলেন, যা এই বইতে সব লেখা হয় নি। 31 কিন্তু এসব লেখা হয়েছে যাতে তোমরা বিশ্বাস করতে পার যে যীশুই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র; আর এই বিশ্বাসের দ্বারা তাঁর নামের মধ্য দিয়ে তোমরা সকলে যেন শাশ্বত জীবন লাভ করতে পার।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International