Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 34

যিহূদার রাজা যোশিয়

34 যোশিয় মাত্র আট বছর বয়সে রাজা হয়ে 31 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। যোশিয় প্রভু বর্ণিত সৎ‌ পথে জীবনযাপন করেছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতোই তিনি বহু সৎ‌কাজ করেন এবং এই পথ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। তাঁর রাজত্বের আট বছরে, যোশিয়, যখন তিনি তখনও একজন বালক মাত্র ছিলেন, ঈশ্বরকে খুঁজতে শুরু করেন, যিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ দ্বারা পূজিত। বারো বছর রাজত্ব করার পর, তিনি যিহূদা ও জেরুশালেম থেকে উঁচু স্থানগুলির উৎ‌পাটন, আশেরার খুঁটিগুলি, মূর্ত্তিসমূহ ও প্রতিকৃতি নির্মূল করার অভিযান শুরু করেন। লোকরা তাঁর আদেশে বালদেবের বেদী ও ধুপধূনো দেবার উঁচু বেদীগুলি ভেঙে ফেলেন। মূর্ত্তি ও প্রতিকৃতিগুলো ভেঙে গুঁড়ো করার পর তিনি সেই ধূলো বালদেবের মৃত উপাসকদের কবরে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এবং যোশিয় বালের সেই সব যাজকদের হাড়গুলি এবং তাদের বেদীগুলি পুড়িয়ে ছাই করেন। মনঃশি থেকে ইফ্রয়িম, শিমিয়োন থেকে নপ্তালি—সমগ্র যিহূদা ও জেরুশালেম থেকে যোশিয় এভাবে মূর্ত্তিপূজোর অবসান ঘটিয়েছিলেন। এই সবকটি শহরে ও শহরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইস্রায়েলের সর্বত্র তিনি উচ্চস্থান ও আশেরার খুঁটি, দেবতাদের মূর্ত্তিসমূহ ভেঙে ধূলায় মিশিয়ে দিয়ে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।

যিহূদায় 18 বছর রাজত্ব করার পর এবং সেই ভূখণ্ডকে এবং মন্দিরকে শুদ্ধ করবার পর, যোশিয় অৎসলিয়র পুত্র শাফন, নগরপাল মাসেয় ও সচিব যোয়াহষের পুত্র যোয়াহকে প্রভুর মন্দিরটি সারানোর আদেশ দিলেন।

আদেশ পালন করতে এরা সকলে প্রথমে মহাযাজক হিল্কিয়র সঙ্গে দেখা করে তাঁর হাতে লোকরা ঈশ্বরের মন্দিরের জন্য যে অর্থ দিয়েছেন তা তুলে দিলেন। লেবীয় দ্বাররক্ষীগণ এই অর্থ মনঃশি, ইফ্রয়িম, যিহূদা, বিন্যামীন, জেরুশালেম ও ইস্রায়েলে যারা থেকে গিয়েছিল, তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। তারপর তাঁরা জেরুশালেমে ফিরে গেলেন। 10 এরপর লেবীয়রা সেই অর্থ প্রভুর মন্দিরের কাজের তত্ত্বাবধায়কদের দিলেন। ক্রমানুসারে তত্ত্বাবধায়করা সেই অর্থ প্রভুর মন্দিরে যেসব শ্রমিক কাজ করবে তাদের দিলেন। 11 ছুতোরকে কড়িবর্গার জন্য কাঠ কিনতে এবং পাথর কেনবার জন্য পাথর কাটুরেদের অর্থ দিলেন। তাঁরা এটা করলেন কারণ যিহূদার আগের রাজারা মন্দিরের ইমারতগুলিকে ধ্বংস হয়ে যেতে দিয়েছিলেন। 12-13 নিযুক্ত শ্রমিকরা লেবীয় মরারি পরিবারের লেবীয় যহৎ‌ ও ওবদিয়র তত্ত্বাবধানে এবং কহাৎ‌ পরিবারের সখরিয় ও মশুল্লমের অধীনে মন প্রাণ দিয়ে কাজ করলো। যে সমস্ত লেবীয়রা দক্ষ গাইয়ে, বাজিয়ে ছিলেন তাঁরা শ্রমিকদের এবং যারা বিভিন্ন রকমের কাজ করেছিলেন, তাদের তত্ত্বাবধান করলেন। কিছু লেবীয় করনিক, অধিকারিক ও রক্ষী হিসেবে কাজ করলেন।

বিধিপুস্তক আবিষ্কার

14 সেই সময়, যখন লেবীয়রা প্রভুর মন্দির থেকে অর্থ বার করছিলেন, যাজক হিল্কিয়, মোশির মাধ্যমে প্রভু যে বিধিপুস্তকটি দিয়েছিলেন সেটিকে খুঁজে পেলেন। 15 উত্তেজিত হিল্কিয় তখন সচিব শাফনকে ডেকে বললেন, “আমি প্রভুর গৃহ থেকে বিধি পুস্তক খুঁজে পেয়েছি।” এবং তিনি শাফনকে সেটি দেখতে দিলেন। 16 শাফন তা রাজা যোশিয়র কাছে নিয়ে এসে বললেন, “আপনার কর্মচারীরা আপনার সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। 17 প্রভুর মন্দিরে যে অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছিল তা দিয়ে ঠিকাদার আর মিস্ত্রিদের মজুরি দেওয়া হয়েছে।” 18 তারপর শাফন রাজা যোশিয়কে বললেন, “যাজক হিল্কিয় আমায় একটা বই দিয়েছিলেন।” একথা বলে রাজার সামনে বিধি পুস্তকটি পাঠ করতে শুরু করলেন। 19 বিধি পুস্তকের কথাগুলি শুনে রাজা যোশিয় মানসিকভাবে বিপর্য্যস্ত হলেন এবং তাঁর জামাকাপড় ছিঁড়তে শুরু করলেন। 20 এবং তখন যোশিয় হিল্কিয়কে, শাফনের পুত্র অহীকাম, মীখায়ের পুত্র অব্দোন, লেখক শাফন আর রাজার ভৃত্য অসায়কে নির্দেশ দিলেন, 21 “শিগ্গির গিয়ে প্রভুর কাছে খুঁজে পাওয়া বিধি পুস্তকে বর্ণিত বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করো। আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর বিধি অনুসরণ করেন নি বলে প্রভু আমাদের ওপর খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা এই বইয়ে বর্ণিত সমস্ত বিধি ঠিকমতো পালন করেন নি।”

22 হিল্কিয় ও রাজার সমস্ত ভৃত্যরা সকলে তখন রাজার বস্ত্রাগারের তত্ত্বাবধায়ক হস্রহের পৌত্র, তোখতের পুত্র, শল্লুমের স্ত্রী ভাববাদিনী হুল্দার কাছে জেরুশালেমে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তখন হিল্কিয় আর রাজভৃত্যরা হুল্দাকে বইটি সম্পর্কে জানাল। 23 হুল্দা তাদের বললেন: “রাজা যোশিয়কে গিয়ে বলো: প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর জানিয়েছেন, 24 ‘আমি এই অঞ্চলে ও এখানে বসবাসকারী লোকদের জীবনে দুর্যোগ ঘনিয়ে তুলবো। যিহূদার রাজার সামনে যা পাঠ করা হয়েছে, বিধি পুস্তকে যেসব ভয়ানক ঘটনার কথা বর্ণিত হয়েছে আমি সেই সবই এখানে ঘটাবো। 25 কারণ লোকরা আমাকে পরিত্যাগ করেছে এবং অন্যান্য মূর্ত্তিসমূহের সামনে ধুপধূনো জ্বালিয়েছে; তাদের যাবতীয় কুকাজ আমায় ক্রুদ্ধ করে তুলেছে। তাই এই সমগ্র অঞ্চলের ওপর আমি আমার ক্রোধাগ্নি বর্ষণ করবো যা কিছুতে নির্বাপিত হবে না।’

26 “যাই হোক্, যিহূদার রাজা যোশিয়, যিনি তোমাদের প্রভুর কাছে খবর সংগ্রহের জন্য পাঠিয়েছেন, তাঁকে বলো যে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এ কথাও বলেন: 27 ‘যোশিয়, তুমি তোমার মন বদলেছ এবং আমার কাছে নিজেকে নম্র করেছ, তোমার পরনের পোশাক ছিঁড়েছ এবং আমার সামনে কেঁদেছ। তোমার হৃদয় কোমল, তাই আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি। 28 আমি তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের মধ্যে নিয়ে যাবো। তুমি শান্তিতেই মরতে পারবে। এই ভূখণ্ডে ও এখানকার লোকদের জীবনে আমি যে দুর্যোগ ঘনিয়ে তুলবো তা তোমায় চোখে দেখে যেতে হবে না।’” হিল্কিয় ও রাজকর্মচারীরা এসে রাজাকে এই খবর জানালেন।

29 রাজা যোশিয় তখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত প্রবীণ ব্যক্তিদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বললেন। 30 রাজা নিজে প্রভুর মন্দিরে গেলেন। যখন যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক, যাজক ও লেবীয়রা, ধনী-দরিদ্র, উচ্চ-নীচ সবাই যোশিয়র কাছে এলো, তিনি তাদের প্রভুর মন্দিরে খুঁজে পাওয়া চুক্তি পুস্তকে লিখিত সবকিছু পাঠ করে শোনালেন। 31 এরপর রাজা তাঁর নিজের জায়গায় উঠে দাঁড়িয়ে প্রভুর সামনে তাঁর অনুগামী হবার এবং সমস্ত অন্তঃকরণ ও সমস্ত প্রাণ দিয়ে তাঁর আজ্ঞা বিধি এবং নিয়মসকল পালন করবেন বলে শপথ করলেন। 32 এরপর তিনি জেরুশালেম ও বিন্যামীনের সকলকে দিয়েও একই প্রতিশ্রুতি করালেন। জেরুশালেমের লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের সামনে করা শপথ রক্ষা করতে সম্মত হলেন। 33 ইস্রায়েলের লোকদের কাছে বিভিন্ন দেশের মূর্ত্তি ছিল। যোশিয় সেইসব ভয়ানক জঘন্য মূর্ত্তি ভেঙে ফেলে ইস্রায়েলের লোকদের প্রভুর সেবা করতে বাধ্য করলেন। যতদিন পর্যন্ত যোশিয় বেঁচে ছিলেন লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের সেবা করে চলেছিলেন।

প্র.বা. 20

এক হাজার বছর

20 এরপর আমি একজন স্বর্গদূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখলাম। সেই স্বর্গদূতের হাতে ছিল অতল গহ্বরের চাবি আর একটা বড় শেকল। তিনি সেই নাগকে ধরলেন, এ সেই পুরানো সাপ, দিয়াবল বা শয়তান, তিনি তাকে হাজার বছরের জন্য বেঁধে রাখলেন। স্বর্গদূত তাকে অতল গহ্বরের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে গহ্বরের মুখ বন্ধ করলেন ও তা সীলমোহর করে দিলেন, যাতে হাজার বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সে পৃথিবীর জাতিবৃন্দকে আর বিভ্রান্ত করতে না পারে। ঐ হাজার বছর পূর্ণ হলে কিছু কালের জন্য তাকে ছাড়া হবে।

পরে আমি কয়েকটি সিংহাসন দেখলাম আর তার ওপর যাঁরা বসে আছেন তাঁদের সকলকে বিচার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য ও ঈশ্বরের বাণী প্রচারের জন্য যাদের শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল, যারা সেই পশুকে ও তার মূর্ত্তিকে পূজা করে নি, নিজেদের কপালে বা হাতে তার ছাপ নেয় নি, তাদের প্রাণ দেখতে পেলাম। আর তারা সকলে পুনর্জীবিত হয়ে সেই হাজার বছর ধরে খ্রীষ্টের সঙ্গে রাজত্ব করল। (যে পর্যন্ত সেই হাজার বছর শেষ না হল, সে পর্যন্ত বাকি মৃত লোকেরা পুনরুত্থিত হল না।)

এই হল প্রথম পুনরুত্থান। যে কেউ এই প্রথম পুনরুত্থানের ভাগী হয় সে ধন্য ও পবিত্র। এইসব লোকদের ওপর দ্বিতীয় মৃত্যুর আর কোন কর্তৃত্ত্ব নেই। তারা বরং খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের যাজকরূপে তাঁর সঙ্গে হাজার বছর ধরে রাজত্ব করবে।

শয়তানের পরাজয়

সেই হাজার বছর শেষ হলে শয়তানকে অতলস্পর্শী গহ্বরের কারাগার থেকে মুক্ত করা হবে। সে সারা পৃথিবী জুড়ে সমস্ত জাতিকে বিভ্রান্ত করবে। সে গোগ ও মাগোগকেও বিভ্রান্ত করবে; শয়তান যুদ্ধের উদ্দেশ্যে তাদের একত্র করবে। তাদের সংখ্যা সমুদ্র সৈকতের অগণিত বালুকণার মতো।

তারা পৃথিবীর ওপর দিয়ে এগিয়ে চলবে, আর ঈশ্বরের লোকদের শিবির ও ঈশ্বরের প্রিয় নগরটি অবরোধ করবে। কিন্তু স্বর্গ থেকে আগুন নেমে শয়তানের সৈন্যদের ধ্বংস করবে। 10 তখন সেই শয়তান যে তাদের ভ্রান্ত করেছিল তাকে জ্বলন্ত গন্ধকের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হবে, যেখানে সেই পশু ও ভণ্ড ভাববাদীদের আগেই ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে। সেখানে যুগ যুগ ধরে দিনরাত তারা যন্ত্রণা ভোগ করবে।

জগতের মানুষের বিচার

11 পরে আমি এক বিরাট শ্বেত সিংহাসন ও তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁকে দেখলাম। তাঁর সামনে থেকে পৃথিবী ও আকাশ বিলুপ্ত হল এবং তাদের কোন অস্তিত্ব রইল না। 12 আমি দেখলাম, ক্ষুদ্র অথবা মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। পরে কয়েকটি গ্রন্থ খোলা হল এবং আরও একটি গ্রন্থ খোলা হল। সেই গ্রন্থটির নাম জীবন পুস্তক। সেই গ্রন্থগুলিতে মৃতদের প্রত্যেকের কাজের বিবরণ লিপিবদ্ধ ছিল এবং সেই অনুসারে তাদের বিচার হল।

13 যে সব লোক সমুদ্র গর্ভে নিক্ষিপ্ত হয়েছিল সমুদ্র তাদের সঁপে দিল, আর মৃত্যু ও পাতাল নিজেদের মধ্যে যে সব মৃত ব্যক্তি ছিল তাদের সমর্পণ করল। তাদের কৃতকর্ম অনুসারে তাদের বিচার হল। 14 পরে মৃত্যু ও পাতাল আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল। এই আগুনের হ্রদই হল আসলে দ্বিতীয় মৃত্যু। 15 জীবন পুস্তকে যাদের নাম লেখা দেখতে পাওয়া গেল না, তাদের সকলকে আগুনের হ্রদে ছুঁড়ে ফেলা হল।

মালাখি 2

যাজকদের জন্য নিয়মসকল

“এখন ওহে যাজকরা, এই নিয়ম তোমাদের জন্য। যদি তোমরা এর অবাধ্য হও এবং আমাকে সম্মান করার এই প্রয়োজনীয় ব্যাপারটিকে যদি গুরুত্ব না দাও তবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে অভিশাপ পাঠাব, সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন। তোমরা আশীর্বাদ দিলে আমি তা অভিশাপে পরিণত করব, আর আমি তাদের অভিশাপ দিয়েছি কারণ তোমরা এই বিষয়টার ওপর গুরুত্ব দাও না।”

“দেখ, আমি তোমার উত্তরপুরুষদের শাস্তি দেব। আমি তোমাদের মুখে উৎসব নৈবেদ্য থেকে জন্তুদের বীষ্ঠা লেপে দেবো এবং তোমাদের ওগুলোর সঙ্গে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হবে। তখন তোমরা জানবে যে আমি এই আদেশ দিচ্ছি যাতে লেবির সঙ্গে আমার চুক্তি চলতে থাকে।” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন।

প্রভু বলেছেন, “লেবির সঙ্গে আমার চুক্তি ছিল জীবন ও শান্তির চুক্তি। সে আমায় সম্মান করে এবং আমার নামে ভীত হয়। লেবি সত্য শিক্ষা দিয়েছে। সে কখনও মন্দ জিনিস শেখায় নি। সে ছিল সৎ‌‌ এবং সে শান্তি ভালবাসত এবং সে অনেক লোককে মন্দ কাজ করা থেকে ফিরিয়ে এনেছিল। আমি এসব বলি কারণ লোকে জ্ঞানের প্রয়োজনে যাজক খোঁজে আর ঈশ্বরের আজ্ঞা শিক্ষা করতে তারা তার কাছে যায়, কারণ সেই তো ঈশ্বরের বার্তাবাহক।”

কিন্তু প্রভু বলেছেন: “যাজকরা আমার পথ থেকে সরে গিয়েছিল এবং অনেক লোককে বিধি অস্বীকার করতে বাধ্য করেছে। তোমরা লেবির সঙ্গে আমার চুক্তি ধ্বংস করেছ।” সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন। “যেহেতু তোমরা আমার পথগুলি অনুসরণ করনি এবং আমার নীতি শিক্ষায় পক্ষপাতিত্ব করেছ সেহেতু আমি তোমাদের অস্বীকৃত এবং অপমানিত করাব!”

যিহূদা ঈশ্বরের প্রতি অবিশ্বস্ত

10 আমাদের সকলেরই সেই এক পিতা। একই ঈশ্বর আমাদের তৈরী করেছেন। তাহলে কেন লোকে তাদের ভাইদের ঠকিয়ে ঈশ্বর যে চুক্তি তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে করেছিলেন তাকে অসম্মান করে? 11 যিহূদার লোকরা বিশ্বাসঘাতকদের মত ব্যবহার করেছিল। জেরুশালেম এবং ইস্রায়েলের লোকরা মারাত্মক জিনিষ করেছে। যিহূদার লোক ঈশ্বরের পবিত্র মন্দির, যেটাকে ঈশ্বর ভালবাসতেন, নষ্ট করেছে। যিহূদার লোকরা বিদেশী রমনীদের বিয়ে করেছিল যারা বিদেশী দেবতা সমূহের অধিকারপ্রাপ্ত এবং ঐ সব বিদেশী দেবতাদের পূজো শুরু করেছিল। 12 প্রভু যাকোবের পরিবার থেকে ঐ সমস্ত লোকদের সরিয়ে দেবেন। এমন কি যদিও সেই ব্যক্তি সর্বশক্তিমান প্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার আনে। 13 তোমরা কাঁদতে পারো এবং প্রভুর বেদী চোখের জলে ঢেকে দিতে পারো, কিন্তু প্রভু তোমাদের উপহার গ্রহণ করবেন না এবং তোমরা যা কিছু আনো তাতে তিনি খুশী হবেন না।

14 আর তোমরা বলে থাকো, “এর কারণ কি?” কারণ তোমরা তোমাদের স্ত্রীর বিরুদ্ধে যে সব মন্দ কাজ করেছ তা প্রভু দেখেছেন। সেই স্ত্রী যদিও তোমার বিশ্বস্ত সঙ্গী ছিল এবং তোমার নিয়মের স্ত্রী ছিল তবু তুমি তার সঙ্গে প্রতারণা করেছ। 15 ঈশ্বর চান যে স্বামী ও স্ত্রী একদেহ ও এক আত্মাবিশিষ্ট হোক্। তবেই তাদের পবিত্র সন্তান-সন্ততি হবে। সুতরাং সেই আত্মিক একাত্মতা রক্ষা কর। তোমার স্ত্রীকে ঠকিও না। সে তোমার যৌবনের স্ত্রী।

16 ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বর বলেন, “আমি বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পুরুষরা যে সমস্ত নিষ্ঠুর কাজ করে তা ঘৃণা করি। সুতরাং অবিশ্বস্ত হয়ো না, তোমাদের নিজ নিজ আত্মাকে সাবধানতাসহ রক্ষা কর।”

বিচারের জন্য নিরূপিত সময়

17 তোমরা ভুল শিক্ষা দিয়েছ। সেই ভুল শিক্ষাগুলি প্রভুকে খুব ক্লান্ত করেছে। তোমরা শিখিয়েছ যে, যে সব ব্যক্তি কুকর্ম করে প্রভু তাদের ভালবাসেন। তোমরা বলছ যে ঈশ্বর মনে করেন সেই লোকরা ভালো এবং তোমরা শিখিয়েছ যে কুকর্ম করবার জন্য ঈশ্বর লোকদের শাস্তি দেন না।

যোহন 19

19 তখন পীলাত আদেশ দিলেন যে যীশুকে চাবুক মারার জন্য নিয়ে যাওয়া হোক্। সেনারা কাঁটালতা দিয়ে একটা মুকুট তৈরী করে সেটা যীশুর মাথায় পরিয়ে দিল। তারা যীশুকে বেগুনে রঙের পোশাক পরাল, এরপর তাঁর কাছে এগিয়ে এসে বলতে লাগল, “ইহুদীদের রাজা দীর্ঘজীবি হোক্!” এই বলে তারা তাঁর গালে চড় মারতে লাগল।

পীলাত আর একবার বাইরে বেরিয়ে এসে তাদের বললেন, “শোন, আমি যীশুকে তোমাদের সামনে নিয়ে আসছি। আমি চাই যে, তোমরা বুঝবে আমি এর কোনই দোষ খুঁজে পাচ্ছি না।” এরপর যীশু বাইরে এলেন, তখন তাঁর মাথায় কাঁটার মুকুট ও পরণে বেগুনে পোশাক ছিল। পীলাত তাদের বললেন, “এই দেখ, সেই মানুষ!”

প্রধান যাজকরা ও মন্দিরের রক্ষীরা যীশুকে দেখে চিৎকার করে বলল, “ওকে ক্রুশে দাও, ক্রুশে দিয়ে ওকে মেরে ফেল!”

পীলাত তাদের বললেন, “তোমরা নিজেরাই একে নিয়ে গিয়ে ক্রুশে দাও, কারণ আমি এর কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না।”

ইহুদীরা তাঁকে বলল, “আমাদের যে বিধি-ব্যবস্থা আছে, সেই ব্যবস্থানুসারে ওর প্রাণদণ্ড হওয়া উচিত, কারণ ও নিজেকে ঈশ্বরের পুত্র বলে দাবী করে।”

এই কথা শুনে পীলাত ভীষণ ভয় পেয়ে গেলেন। তিনি আবার প্রাসাদের মধ্যে গেলেন। পীলাত যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছ?” কিন্তু যীশু এর কোন উত্তর দিলেন না। 10 তখন পীলাত যীশুকে বললেন, “তুমি কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও না? তুমি কি জান না যে তোমাকে মুক্তি দেওয়ার বা ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার ক্ষমতা আমার আছে?”

11 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “ঈশ্বর না দিলে আমার ওপর আপনার কোন ক্ষমতা থাকত না। তাই যে লোক আমাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছে সে আরও বড় পাপে পাপী।”

12 একথা শুনে পীলাত তাঁকে ছেড়ে দেবার জন্য চেষ্টা করলেন, কিন্তু ইহুদীরা চিৎকার করল, “যদি তুমি ওকে ছেড়ে দাও, তাহলে তুমি কৈসরের বন্ধু নও। যে কেউ নিজেকে রাজা বলবে, বুঝতে হবে সে কৈসরের বিরোধিতা করছে।”

13 এই কথা শোনার পর পীলাত যীশুকে আবার বাইরে নিয়ে এলেন ও বিচারালয়ে বসলেন। এই বিচারাসন ছিল “পাথরে বাঁধানো” নামে জায়গাতে। (ইহুদীদের ভাষায় একে “গব্বথা” বলে।) 14 সেই দিনটা ছিল নিস্তারপর্ব আয়োজনের দিন।[a] তখন প্রায় বেলা বারোটা, পীলাত ইহুদীদের বললেন, “এই দেখ, তোমাদের রাজা।”

15 তখন তারা চিৎকার করতে লাগল, “ওকে দূর কর! দূর কর! ওকে ক্রুশে দিয়ে মার!”

পীলাত তাদের বললেন, “আমি কি তোমাদের রাজাকে ক্রুশে দেব?”

প্রধান যাজকরা জবাব দিলেন, “কৈসর ছাড়া আমাদের আর কোন রাজা নেই।”

16 তখন পীলাত যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করে মারবার জন্য তাদের হাতে তুলে দিলেন।

যীশুর ক্রুশারোহণ

(মথি 27:32-44; মার্ক 15:21-32; লূক 23:26-39)

শেষ পর্যন্ত তারা যীশুকে হাতে পেল। 17 যীশু তাঁর নিজের ক্রুশ বইতে বইতে “মাথার খুলি” নামে এক জায়গায় গেলেন। (ইহুদীদের ভাষায় যাকে বলা হোত “গলগথা।”) 18 সেখানে তারা যীশুকে ক্রুশে বিদ্ধ করল। তাঁর সঙ্গে তাঁর দুপাশে আরও দুজনকে ক্রুশে দিল, যীশু ছিলেন তাদের মাঝখানে।

19 পীলাত যীশুর মাথার দিকে ক্রুশের ওপর একটি ফলক টাঙ্গিয়ে দিলেন। সেই ফলকে লেখা ছিল, “নাসরতীয় যীশু, ইহুদীদের রাজা।” 20 তখন অনেক ইহুদী সেই ফলকটি পড়ল, কারণ যীশুকে যেখানে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তা নগরের কাছেই ছিল, আর সেই ফলকের লেখাটি ইহুদীদের ভাষা, গ্রীক ও রোমীয় ভাষায় ছিল।

21 ইহুদীদের প্রধান যাজকরা পীলাতকে বললেন, “‘ইহুদীদের রাজা’ লিখো না, তার পরিবর্তে লেখো, ‘এই লোক বলেছিল, আমি ইহুদীদের রাজা।’”

22 পীলাত বললেন, “আমি যা লিখেছি তা লিখেছি।”

23 যীশুকে ক্রুশে দিয়ে সেনারা যীশুর সমস্ত পোশাক নিয়ে চারভাগে ভাগ করে প্রত্যেকে এক এক ভাগ নিল। আর তাঁর উপরের লম্বা পোশাকটিও নিল, এটিতে কোন সেলাই ছিল না, ওপর থেকে নীচে পর্যন্ত সমস্তটাই বোনা। 24 তাই তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এটাকে আর ছিঁড়ব না। আমরা বরং ঘুঁটি চেলে দেখি কে ওটা পায়।” শাস্ত্রের এই বাণী এইভাবে ফলে গেল:

“তারা নিজেদের মধ্যে আমার পোশাক ভাগ করে নিল,
    আর আমার পোশাকের জন্য ঘুঁটি চালল।”(A)

সৈনিকরা তাই করল।

25 যীশুর ক্রুশের কাছে তাঁর মা, মাসীমা ক্লোপার স্ত্রী মরিয়ম ও মরিয়ম মগ্দলিনী দাঁড়িয়েছিলেন। 26 যীশু তাঁর মাকে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন আর যে শিষ্যকে তিনি ভালোবাসতেন, দেখলেন তিনিও সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তখন তিনি তাঁর মাকে বললেন, “হে নারী, ঐ দেখ তোমার ছেলে।” 27 পরে তিনি তাঁর সেই শিষ্যকে বললেন, “ঐ দেখ, তোমার মা।” আর তখন থেকে তাঁর মাকে সেই শিষ্য নিজের বাড়িতে রাখার জন্য নিয়ে গেলেন।

যীশুর মৃত্যু

(মথি 27:45-56; মার্ক 15:33-41; লূক 23:44-49)

28 এরপর যীশু বুঝলেন যে সবকিছু এখন সম্পন্ন হয়েছে। শাস্ত্রের সকল বাণী যেন সফল হয় তাই তিনি বললেন, “আমার পিপাসা পেয়েছে।”[b] 29 সেখানে একটা পাত্রে সিরকা ছিল, তাই সৈন্যরা একটা স্পঞ্জ সেই সিরকায় ডুবিয়ে এসোব নলে করে তা যীশুর মুখের কাছে ধরল। 30 যীশু সেই সিরকার স্বাদ নেবার পর বললেন, “সমাপ্ত হল!” এরপর তিনি মাথা নীচু করে প্রাণ ত্যাগ করলেন।

31 ঐ দিনটা ছিল আয়োজনের দিন। যেহেতু বিশ্রামবার একটি বিশেষ দিন, ইহুদীরা চাইছিল না যে দেহগুলি ক্রুশের ওপরে থাকে। তাই ইহুদীরা পীলাতের কাছে গিয়ে তাঁকে আদেশ দিতে অনুরোধ করল, যেন ক্রুশবিদ্ধ লোকদের পা ভেঙ্গে দেওয়া হয় যাতে তাড়াতাড়ি তাদের মৃত্যু হয় এবং মৃতদেহগুলি ঐ দিনই ক্রুশ থেকে নামিয়ে ফেলা যায়। 32 সুতরাং সেনারা এসে প্রথম লোকটির পা ভাঙ্গল, আর তার সঙ্গে যাকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল তারও পা ভাঙ্গল। 33 কিন্তু তারা যীশুর কাছে এসে দেখল যে তিনি মারা গেছেন, তখন তাঁর পা ভাঙ্গল না।

34 কিন্তু একজন সৈনিক যীশুর পাঁজরের নীচে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করল, আর সঙ্গে সঙ্গে সেখান দিয়ে রক্ত ও জল বেরিয়ে এল। 35 এই ঘটনা যে দেখল সে এবিষয়ে সাক্ষ্য দিল তা আপনারা সকলেই বিশ্বাস করতে পারেন, আর তার সাক্ষ্য সত্য। আর সে জানে যে সে যা বলছে তা সত্য। 36 এই সকল ঘটনা ঘটল যাতে শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়: “তাঁর একটি অস্থিও ভাঙ্গবে না।”(B) 37 আবার শাস্ত্রে আর এক জায়গায় আছে, “তারা যাঁকে বিদ্ধ করেছে তাঁরই দিকে দৃষ্টিপাত করবে।”(C)

যীশুর সমাধি

(মথি 27:57-61; মার্ক 15:42-47; লূক 23:50-56)

38 এরপর অরিমাথিয়ার যোষেফ, যিনি যীশুর শিষ্য ছিলেন, কিন্তু ইহুদীদের ভয়ে তা গোপনে রাখতেন, তিনি যীশুর দেহটি নিয়ে যাবার জন্য পীলাতের কাছে অনুমতি চাইলেন। পীলাত তাঁকে অনুমতি দিলে তিনি এসে যীশুর দেহটি নামিয়ে নিয়ে গেলেন।

39 নীকদীমও এসেছিলেন (যোষেফের সঙ্গে)। এই সেই ব্যক্তি যিনি যীশুর কাছে আগে একরাতের অন্ধকারে দেখা করতে এসেছিলেন। নীকদীম আনুমানিক ত্রিশ কিলোগ্রাম গন্ধ-নির্যাস মেশানো অগুরুর প্রলেপ নিয়ে এলেন। 40 এরপর ইহুদীদের কবর দেওয়ার রীতি অনুসারে যীশুর দেহে সেই প্রলেপ মাখিয়ে তাঁরা তা মসীনার কাপড় দিয়ে জড়ালেন। 41 যীশু সেখানে ক্রুশ বিদ্ধ হয়েছিলেন, তার কাছে একটি বাগান ছিল, সেই বাগানে একটি নতুন কবর ছিল সেখানে আগে কাউকে কখনও কবর দেওয়া হয় নি। 42 এই কবরটি নিকটেই ছিল, যীশুর দেহ তাঁরা সেই কবরেব মধ্যে রাখলেন, কারণ ইহুদীদের বিশ্রামের দিনটি শুরু হতে চলেছিল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International