Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 31

রাজা হিষ্কিয়র উন্নতি বিধান

31 যখন নিস্তারপর্বের উৎসব উদ্‌যাপন শেষ হল, তখন নিস্তারপর্বের জন্য যে সমস্ত ইস্রায়েলবাসী জেরুশালেমে উপস্থিত হয়েছিলেন, তাঁরা যিহূদার বিভিন্ন শহরগুলিতে গেলেন এবং পাথরের তৈরী মূর্ত্তিগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলেন। আশেরার খুঁটি উপড়ে ফেলে যিহূদা ও বিন্যামীনের সর্বত্র উচ্চ স্থলগুলি ভেঙ্গে দেওয়া হল। ইফ্রয়িম ও মনঃশিতেও একই জিনিস করা হল। মূর্ত্তি পূজোর যাবতীয় চিহ্ন নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত লোকেরা এইসব করে যেতে লাগলো। তারপর ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের শহরে যে যার বাড়িতে ফিরে গেল।

যাজকগণ ও লেবীয়দের কয়েকটি দলে বিভক্ত করা হয়েছিল এবং প্রত্যেকটি বিভাগের জন্য কাজের সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। রাজা হিষ্কিয় এই সমস্ত দলের সবাইকে আবার নিজেদের কর্তব্য করতে আদেশ দিলেন। যাজক ও লেবীয়রা আবার নৈবেদ্য, হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য নিবেদনের কাজে নিযুক্ত হলেন। মন্দিরের সেবা করা ছাড়াও তারা প্রভুর গৃহে ভক্তিগীতি ও প্রশস্তি গান করতেন। হিষ্কিয় হোমবলি হিসেবে তাঁর নিজস্ব কিছু পশু নিবেদন করলেন। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এইসব পশুদের হোমবলি হিসেবে বলি দেওয়া হতো। প্রভুর বিধি অনুযায়ী প্রতি বিশ্রামের দিন অমাবস্যার উৎসবের দিন এবং উৎসবের দিনে এইসব পশু বলিদান করা হতো।

নিয়ম অনুযায়ী লোকদেরও তাদের শস্যের একটি নির্ধারিত অংশ ও অন্যান্য জিনিসপত্র যাজক ও লেবীয়দের দেবার কথা ছিল। হিষ্কিয় জেরুশালেমের সবাইকে সেই নিয়ম মেনে চলতে আদেশ দিলেন, যাতে যাজকগণ ও লেবীয়রা তাঁদের ওপর ন্যস্ত কাজ অবিক্ষিপ্ত মনোযোগে স্বচ্ছন্দে করতে পারেন। দেশের সর্বত্র লোকরা রাজার এই আদেশের কথা শুনলেন। যে মূহুর্তে ইস্রায়েলীয়রা এই আদেশ শুনলো, তারা তাদের শস্য, দ্রাক্ষারস, তেল ও মধুর ফলনের প্রথমভাগ থেকে উদারভাবে দান করল; তারা যা কিছু এনেছিল তার এক-দশমাংশ দিয়ে দিল। ইস্রায়েল ও যিহূদার শহরাঞ্চলে বসবাসকারী লোকরা তাদের গবাদি পশুর এক-দশমাংশ ও অন্যান্য সামগ্রী ও একই পরিমাণে নিয়ে গ্রামে প্রভু ঈশ্বরের জিনিসপত্র রাখার জন্য নির্ধারিত একটি বিশেষ জায়গায় স্তূপীকৃত করলো।

তৃতীয় মাস অর্থাৎ‌ মে-জুন থেকে শুরু করে সপ্তম মাস অর্থাৎ‌ সেপেটম্বর-অক্টোবর পর্যন্ত এইভাবে দানসামগ্রী সংগ্রহ করা হল। যখন হিষ্কিয় আর অন্যান্য নেতারা এসে সেই স্তূপাকার জিনিষ যেগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল, দেখলেন, তাঁরা প্রভু আর তাঁর ইস্রায়েলের লোকদের ধন্যবাদ জানালেন।

এরপর, হিষ্কিয় যখন স্তূপীকৃত দান সামগ্রী সম্পর্কে যাজকগণ ও লেবীয়দের প্রশ্ন করলেন, 10 প্রধান যাজক, সাদোক বংশের অসরিয় বললেন, “যেদিন থেকে লোকরা প্রভুর মন্দিরের জন্য দান করতে শুরু করেছে সেই সময় থেকে আমরা কেবল খেয়েই চলেছি। কিন্তু আমরা পেট ভরে খাবার পরও এখনও যথেষ্ট খাবার দাবার পড়ে রয়েছে। প্রভু সত্যি সত্যিই তাঁর সেবকদের প্রতি সদয় তাই এতো সমস্ত খাবারদাবার সংগ্রহ হয়েছে।”

11 হিষ্কিয় যাজকদের মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলো ঠিকঠাক করতে বললেন। সে কাজ হয়ে গেলে, 12 যাজকরা লোকদের দান ও এক-দশমাংশ ও অন্যান্য যা কিছু প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়েছিল তা বিশ্বস্তভাবে নিয়ে এসে মন্দিরের ভাঁড়ার ঘরগুলোয় রাখলেন। লেবীয়-কনানীয় ছিলেন এই সমস্ত সংগৃহীত জিনিসপত্রের দায়িত্বে। এ ব্যাপারে তাঁর সহকারী ছিলেন তাঁর ভাই শিমিয়ি। 13 কনানীয় আর তাঁর ভাই শিমিয়ির তত্ত্বাবধানে কাজ করেছিলেন যাজক যিহীয়েল, অসসিয়, নহৎ, অসাহেল, যিরীমোৎ, যোষাবদ, ইলীয়েল, যিষ্মখিয়, মাহৎ, বনায়। রাজা হিষ্কিয় ও ঈশ্বরের মন্দিরের অধ্যক্ষ অসরিয় দুজনে মিলে এই সমস্ত লোকদের বেছে নিয়েছিলেন।

14 যিম্নার পুত্র কোরি—মন্দিরের পূর্ব প্রান্তের দ্বাররক্ষী লোকদের ঈশ্বরকে দেওয়া দান এবং পবিত্রতম নৈবেদ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন। 15 এদন, মিন্যামীন, যেশূয়, শময়িয়, অমরিয় আর শখনিয় এই সংগৃহীত জিনিসগুলি তাদের আত্মীয়দের মধ্যে তাদের বিভাজন অনুযায়ী, নবীন ও প্রবীণ উভয়কেই বিশ্বস্তভাবে বিতরণ করেছিলেন।

16 যে সব পুরুষ তিন বছর ও তার উর্দ্ধ বয়সের ছিল এবং যাদের নাম বংশ তালিকায় ছিল, তারাও এই জিনিষগুলি পেয়েছিল। তাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে হত এবং তাদের বিভাজন অনুসারে তাদের যে সব নিত্য কর্মের দায়িত্ব ছিল তা করতে হত। 17 যাজকদের প্রত্যেককে তাদের প্রাপ্য সামগ্রী দেওয়া হল। এসব কাজ পারিবারিক নথিপত্রে লিপিবদ্ধ পরিবারের নাম দেখে বিধি মতো করা হয়েছিল। লেবীয়দের মধ্যে যাদের বয়স 20 বা তার বেশী তারা সকলেই গুরুত্ব ও গোষ্ঠী অনুযায়ী তাদের জন্য নির্ধারিত দানসামগ্রী পেয়েছিলেন। 18 এমনকি লেবীয় পরিবারের স্ত্রী ও পুত্রকন্যারাও দানসামগ্রীর অংশবিশেষ লাভ করেছিলেন। পারিবারিক নথিপত্রে যে সমস্ত লেবীয় পরিবারের নাম ছিল তাঁরা কেউই এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হননি। কারণ লেবীয়রা সব সময়েই একনিষ্ঠ ও পবিত্র মনে সেবার কাজের জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতেন।

19 হারোণের উত্তরপুরুরদের মধ্যে কিছু যাজকদের শহরের কাছে চাষবাসের জমি ছিল যেখানে তাঁরা বাস করতেন। এই শহরগুলির প্রত্যেকটি থেকে সুনাম আছে এমন লোকদের হারোণের উত্তরপুরুষদের মধ্যে এবং লেবীয়দের পারিবারিক ইতিহাসে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত তাদের মধ্যে দানসামগ্রী বিলি-বন্টনের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল।

20 রাজা হিষ্কিয় যিহূদায় এই সমস্ত ভাল ভাল কাজ করেছিলেন। তিনি তাঁর প্রভু ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা কিছু ভাল ও মঙ্গলজনক সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন। 21 তিনি যে যে কাজে হাত দিয়েছিলেন প্রভুর মন্দিরের সংষ্কার থেকে শুরু করে বিধি নির্দেশ পালন করা, ঈশ্বরকে অনুসরণ করে চলা সব কিছুতেই সাফল্য লাভ করেছিলেন। হিষ্কিয় সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে এই সমস্ত কর্তব্য পালন করেছিলেন।

প্র.বা. 17

পশুর ওপরে স্ত্রীলোক

17 এরপর ঐ সাতটি বাটি যাদের হাতে ছিল, সেই সাতজন স্বর্গদূতদের মধ্যে একজন এসে আমায় বললেন, “এস, বহু নদীর ওপরে যে মহাবেশ্যা বসে আছে, আমি তোমাকে তার কি শাস্তি হবে তা দেখাবো। তার সঙ্গে পৃথিবীর রাজারা যৌন পাপ করেছে, আর পৃথিবীর লোকরা তার অসৎ যৌন ক্রিয়ার মদিরা পান করে মত্ত হয়েছে।”

তখন তিনি আত্মার পরিচালনায় আমাকে প্রান্তরের মধ্যে নিয়ে গেলেন। সেখানে আমি একটি নারীকে দেখলাম, সে লাল রঙের এক পশুর ওপর বসে আছে। সেই পশুটির সাতটা মাথা ও দশটা শিং, তার সারা গায়ে ঈশ্বর নিন্দা সূচক নাম লেখা ছিল। সেই নারীর পরনে ছিল বেগুনী ও লাল রঙের বসন, সোনা ও বহুমূল্য মণি-মুক্তা খচিত অলঙ্কার তার অঙ্গে, তার হাতে সোনার একটি পানপাত্র ছিল, ঘৃন্য দ্রব্যে ও তার যৌন পাপ মালিন্যে তা পূর্ণ। তার কপালে রহস্যপূর্ণ এক নাম লেখা আছে:

মহতী বাবিল,

পৃথিবীর বেশ্যাদের

এবং পৃথিবীর যাবতীয় ঘৃন্য জিনিসের জননী।

আমি দেখলাম, সেই নারী ঈশ্বরের পবিত্র লোকদের রক্তে মাতাল হয়ে আছে। এই পবিত্র লোকরাই যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিল।

সেই নারীকে দেখে আমি রীতিমতো অবাক হয়ে গেলাম। সেই স্বর্গদূত আমায় জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি অবাক হচ্ছ কেন? আমি ঐ নারী ও তার বাহন পশু সম্পর্কে নিগূঢ়তত্ত্ব জানাচ্ছি। ঐ পশুটির সাতটি মাথা এবং দশটি শিং আছে। তুমি যে পশুকে দেখলে, এক সময় সে বেঁচে ছিল, কিন্তু এখন সে বেঁচে নেই। সে পাতাল থেকে উঠে আসবে ও তার ধ্বংস স্থানে যাবে। জগৎ‌ পত্তনের সময় থেকে পৃথিবী নিবাসী যত লোকের নাম জীবন পুস্তকে লিখিত নেই, তারা ঐ পশুকে দেখে বিস্মিত হবে, কারণ পশুটি একদিন ছিল, এখন আর নেই, কিন্তু পরে আবার আসবে।

“এটা বোঝার জন্য বিজ্ঞ মনের প্রয়োজন। ঐ সপ্ত মস্তক হচ্ছে সপ্ত পর্বত, যার ওপর ঐ নারী বসে আছে। তারা আবার সপ্ত রাজার প্রতীক। 10 তাদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জনের পতন হয়েছে। একজন আছে আর অন্য জন এখনও আসে নি। সে এলে কেবল অল্পকালই থাকবে। 11 যে পশু এক সময়ে জীবিত ছিল, আর এখন নেই, সেই হচ্ছে অষ্টম রাজা। এই অষ্টম রাজা সেই সাত রাজার একটি আর সে তার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে।

12 “আর তুমি যে দশটি শিং দেখলে তা হল দশটি রাজা, তারা এখনও রাজ্য পায় নি, কিন্তু সেই পশুর সঙ্গে এক ঘন্টার জন্য রাজাদের মতো কর্তৃত্ত্ব করার ক্ষমতা পাবে। 13 এই দশ রাজার উদ্দেশ্য এক, তারা নিজেদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ত্ব সেই পশুকে দেবে। 14 তারা মেষশাবকের সঙ্গে যুদ্ধ করবে কিন্তু মেষশাবক তাদের পরাজিত করবে কারণ তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা। তিনি তাঁর মনোনীত এবং বিশ্বস্ত লোকদের সাহায্যে তাদের পরাজিত করবেন। এই লোকদের তিনি আহ্বান করেছিলেন।”

15 আর স্বর্গদূত আমায় বললেন, “দেখ, ঐ গণিকা যে জলের ওপর বসে আছে, সেই জল হচ্ছে জাতিগণ, প্রজাগণ, জনগণ ও ভিন্ন ভাষাভাষীর লোকসমুহ। 16 তুমি যে দশটা শিং ও পশুকে দেখলে, তারা ঐ গণিকাকে ঘৃণা করবে। তারা তার সব কিছু কেড়ে নিয়ে তাকে উলঙ্গ করে তার দেহটাকে খাবে, তারপর তাকে আগুনে পুড়িয়ে দেবে। 17 এসব ঘটবে কারণ ঈশ্বর তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে তাদের হৃদয়ে এই প্রবৃত্তি দেবেন। সেজন্য তারা সকলে একচিত্ত হয়ে যে পর্যন্ত ঈশ্বরের বাক্য সফল না হয় সেই পর্যন্ত নিজের নিজের ক্ষমতা সেই পশুকে দেবে, যাতে সে রাজত্ব করতে পারে। 18 তুমি যে নারীকে দেখলে সে ঐ মহানগরীর প্রতীক, যে পৃথিবীর রাজাদের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করে।”

সখরিয় 13:2-9

ভ্রান্ত ভাববাদী আর নয়

সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “সেইসময় আমি পৃথিবী থেকে মূর্ত্তিসমূহের নাম কেটে দেব। ভ্রান্ত ভাববাদীদের আর অশুদ্ধ আত্মাদের সরিয়ে দেব। লোকেরা এমনকি তাদের নামও মনে করবে না। এবং আমি ভ্রান্ত ভাববাদী ও অশুচি আত্মাদের পৃথিবী থেকে দূর করব। যদি কেউ ভাববাণী অব্যাহত রাখে, তবে তাকে শাস্তি পেতে হবে। এমনকি তার পিতামাতাও তাকে বলবে, ‘প্রভুর নামে তুমিও মিথ্যা কথা বলছ।’ সে ভাববাণী করছে বলে তার মাতা পিতাই তাকে বিদ্ধ করে হত্যা করবে। সেই সময়, ভাববাদীরা তাদের দর্শন ও ভাববাণী সম্বন্ধে লজ্জিত হবে। তারা নিজেদের ভাববাদী বলে সনাক্ত করবার জন্য ভাববাদীদের নিমিত্ত মোটা পোষাক পরবে না। তারা লোককে ঠকাবার জন্য ঐ পোষাকগুলো পরবে না। তারা বলবে, ‘আমি একজন ভাববাদী নই। আমি একজন কৃষক, এবং ছোট বেলা থেকেই আমি মাঠে কৃষি কাজ করেছি।’ কিন্তু অন্য লোকেরা বলবে, ‘কিন্তু তোমার হাতের ঐ আঘাতগুলি কিসের?’ সে তখন বলবে, ‘আমি আমার বন্ধুর বাড়ী মার খেয়েছিলাম।’”

সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, “আমার তরবারি মেষপালকদের আঘাত করুক! সেটা আমার বন্ধুকে আঘাত করুক! মেষপালকদের আঘাত কর এবং মেষরা পলায়ন করবে। এবং আমি সেই ক্ষুদ্রগণকে শাস্তি দেব। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ লোক আঘাতে মারা যাবে কিন্তু এক-তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকবে। তখন আমি ঐ অবশিষ্ট এক তৃতীয়াংশ লোকদের পরীক্ষা করব। আমি তাদের বিভিন্ন সংকটে ফেলব। সেগুলো হবে তাদের অগ্নিপরীক্ষার মত ঠিক যেমন লোকে আগুন ব্যবহার করে রূপোকে খাঁটি করতে অথবা সোনা খাঁটি কিনা তা পরীক্ষা করতে। তখন তারা আমার নামে ডাকবে আর আমি তাদের ডাকে সাড়া দেব। আমি বলব, ‘তোমরা আমার লোক।’ আর তারা বলবে, ‘প্রভু আমাদের ঈশ্বর।’”

যোহন 16

16 “আমি তোমাদের এসব বলছি যাতে তোমরা তোমাদের বিশ্বাস ত্যাগ না কর। তারা তোমাদের সমাজ-গৃহ থেকে বহিষ্কৃত করবে। বলতে কি এমন সময় আসছে, যখন তারা তোমাদের হত্যা করে মনে করবে যে তারা ঈশ্বরের সেবা করছে। তারা এরূপ কাজ করবে কারণ তারা না জানে আমাকে, না জানে পিতাকে। কিন্তু আমি তোমাদের এসব কথা বললাম, যেন এসব ঘটবার সময় আসলে তোমরা মনে করতে পার যে, আমি তোমাদের এসব বিষয়ে আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলাম।

পবিত্র আত্মার কাজ

“শুরুতেই আমি তোমাদের এসব কথা বলিনি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে ছিলাম। কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এখন আমি তাঁর কাছে ফিরে যাচ্ছি, আর তোমাদের কেউ জিজ্ঞেস করছ না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’ এখন আমি তোমাদের এসব কথা বললাম, তাই তোমাদের অন্তর দুঃখে ভরে গেছে। কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি যদি না যাই তাহলে সেই সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না। কিন্তু আমি যদি যাই তাহলে আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব।

“যখন সেই সাহায্যকারী আসবেন তখন তিনি পাপ, ন্যায়পরায়ণতা ও বিচার সম্পর্কে জগতের মানুষকে চেতনা দেবেন। তিনি পাপ সম্পর্কে চেতনা দেবেন কারণ তারা আমাতে বিশ্বাস করে না। 10 ন্যায়পরায়ণতা সম্পর্কে বোঝাবেন কারণ এখন আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, আর তোমরা আমায় দেখতে পাবে না। 11 বিচার সম্বন্ধে চেতনা দেবেন কারণ এই জগতের যে শাসক তার বিচার হয়ে গেছে।

12 “তোমাদের বলবার মতো আমার এখনও অনেক কথা আছে; কিন্তু সেগুলো তোমাদের গ্রহণ করার পক্ষে এখন অতিরিক্ত হয়ে যাবে। 13 সত্যের আত্মা যখন আসবেন, তখন তিনি সকল সত্যের মধ্যে তোমাদের পরিচালিত করবেন। তিনি নিজে থেকে কিছু বলেন না, কিন্তু তিনি যা শোনেন তাই বলেন, আর আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে তা তিনি তোমাদের কাছে বলবেন। 14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমি যা বলি তাই তিনি গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের তা বলবেন। 15 যা কিছু পিতার, তা আমার। এই কারণেই আমি বলেছি যে সত্যের আত্মা আমার নিকট থেকে সবই গ্রহণ করবেন এবং তোমাদের তা বলবেন।

দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে

16 “আর একটু পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না। অল্প একটু পরে আবার আমাকে দেখতে পাবে।”

17 তখন তাঁর শিষ্যদের মধ্যে কয়েকজন পরস্পরকে বলল, “উনি আমাদের কি বলতে চাইছেন, ‘কিছু পরে তোমরা আমায় দেখতে পাবে না, কিছু পরে তোমরা আবার আমায় দেখতে পাবে?’ এ কথারই বা অর্থ কি, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি’?” 18 তাঁরা আরও বললেন, “তিনি ‘অল্প কিছুকাল পরে’ বলতে কি বোঝাতে চাইছেন? তিনি কি বলছেন, আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না।”

19 তারা তাঁকে কি জিজ্ঞেস করতে চান তা যীশু বুঝতে পারলেন। তাই তিনি তাঁদের বললেন, “যখন আমি বললাম, ‘অল্প কিছু পরে তোমরা আমায় দেখতে পাবে না, আবার অল্প কিছু পরে আবার আমায় দেখতে পাবে, এর দ্বারা আমি কি বোঝাতে চাইছি এই নিয়েই কি পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করছ’? 20 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা কাঁদবে, ব্যথিত হবে, কিন্তু জগত সংসার তাতে আনন্দিত হবে। তোমরা দুঃখে ভারাক্রান্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে।

21 “স্ত্রীলোক সন্তান প্রসবের সময় কষ্ট পায়, কারণ তখন তার প্রসব বেদনার সময়; কিন্তু যখন সে সন্তান প্রসব করে, তখন সে তার কষ্টের কথা ভুলে যায়, জগতে একজন জন্মগ্রহণ করল জেনে সে আনন্দিত হয়। 22 ঠিক সেই রকম, তোমরাও এখন দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদের আবার দেখা দেব, আর তোমাদের হৃদয় তখন আনন্দে ভরে যাবে। তোমাদের সেই আনন্দ কেউ তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না। 23 সেদিন তোমরা আমার কাছে কিছু চাইবে না। আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা আমার নামে যদি পিতার কাছে কিছু চাও, তিনি তোমাদের তা দেবেন। 24 এ পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু চাও নি। তোমরা চাও, তাহলে তোমরা পাবে। তোমাদের আনন্দ তখন পূর্ণতায় ভরে যাবে।

জগত জয় করা হল

25 “আমি হেঁয়ালি করে তোমাদের এসব বলেছিলাম। সময় আসছে যখন আমি আর হেঁয়ালি করে তোমাদের কিছু বলব না, বরং পিতার বিষয় সরল ভাষায় তোমাদের কাছে ব্যক্ত করব। 26 সেই দিন যা চাইবার তা তোমরা আমার নামেই চাইবে, আর আমি তোমাদের বলছি না যে আমি তোমাদের হয়ে পিতার কাছে চাইব। 27 না, পিতা নিজেই তোমাদের ভালবাসেন, কারণ তোমরা আমায় ভালবেসেছ এবং তোমরা বিশ্বাস কর যে আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি। 28 আমি পিতার কাছ থেকে এই জগতে এসেছি, এখন আমি এ জগত ছেড়ে আবার পিতার কাছে ফিরে যাচ্ছি।”

29 তাঁর শিষ্যরা বললেন, “দেখুন, এখন আপনি স্পষ্টভাবে বলছেন, কোনরকম হেঁয়ালি করে বলছেন না। 30 এখন আমরা বুঝলাম যে আপনি সব কিছুই জানেন। কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করার আগেই আপনি তার উত্তর দিতে পারেন। এজন্যই আমরা বিশ্বাস করি যে আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন।”

31 যীশু তাঁদের বললেন, “তাহলে তোমরা এখন বিশ্বাস করছ? 32 শোন, সময় আসছে, বলতে কি এসে পড়েছে, যখন তোমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যে যার নিজের জায়গায় চলে যাবে, আর আমায় একা ফেলে পালাবে, তবু আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন।

33 “আমি তোমাদের এসব কথা বললাম যাতে তোমরা আমার মধ্যে শান্তি পাও। জগতে তোমরা কষ্ট পাবে, কিন্তু সাহসী হও! আমিই জগতকে জয় করেছি!”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International