Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 29

যিহূদার রাজা হিষ্কিয়

29 হিষ্কিয় 25 বছর বয়সে রাজা হয়ে মোট 29 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা অবিয়া ছিলেন সখরিয়র কন্যা। হিষ্কিয় প্রভুর অভিপ্রায় অনুসারে তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতো সৎ‌ ও ধর্মনিষ্ঠভাবে জীবনযাপন করেন।

তাঁর রাজত্বকালের প্রথম বছরের, প্রথম মাসের মধ্যেই হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরটি আবার খুলে দিয়েছিলেন এবং মন্দিরের দরজাগুলো মেরামত করে দিয়েছিলেন। 4-5 যাজক ও লেবীয়দের একত্রিত করে মন্দিরের পূর্ব প্রান্তের খোলা চত্বরে হিষ্কিয় তাঁদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়ে বললেন,

“লেবীয়রা শোনো, মন্দিরের সেবা করবার পবিত্র কাজের জন্য তোমরা নিজেদের প্রস্তত কর। প্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের মন্দিরটিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করে তোলো। মন্দিরকে অশুদ্ধ ও অপবিত্র করেছে এমন প্রতিটি জিনিষ মন্দির থেকে সরিয়ে দাও। আমাদের পূর্বপুরুষরা প্রভুর অবাধ্য হয়ে জীবন কাটিয়েছে। তারা মন্দিরকে অশ্রদ্ধা করে এবং প্রভুর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে প্রভুর পথ থেকে সরে গেছে। তারা মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাতিদানের প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা নিভিয়ে দিয়েছে। ইস্রায়েলের ঈশ্বরের পবিত্র স্থানের বেদীতে ধুপধূনো দেওয়া আর হোমবলিও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই প্রভু, যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে তাদের শাস্তি দিয়েছেন, যাতে অন্য জাতিরা তাদের ভয়, বিস্ময় এবং উপহাসের পাত্র হিসেবে দেখে এবং তোমরা নিজেরা দেখতে পাও যে এ সবই সত্যি। তোমরা জানো এর এক বর্ণও মিথ্যা নয়, কারণ তোমরা স্বচক্ষে এই ঘটনা দেখেছো। তোমরা দেখেছো যে এই কারণেই আমাদের পূর্বপুরুষদের যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছে এবং আমাদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের কারারুদ্ধ করা হয়েছে। 10 একারণে আমি হিষ্কিয় প্রভু ঈস্রায়েলের ঈশ্বরকে আবার নতুন করে প্রতিশ্রুতি দিতে চাই, যাতে তিনি আর আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে না থাকেন। 11 আমার লোকরা শোন, তোমরা কর্ত্তব্যে অবহেলা করো না। প্রভু তাঁর সেবার জন্য তোমাদের মনোনীত করেছেন। তাঁর মন্দিরে সেবা ও ধুপধূনো দেবার অধিকার তিনি শুধু তোমাদেরই দিয়েছেন।”

12-14 একথা শুনে নিথলিখিত লেবীয়রা কাজে লেগে গেল:

অমাসয়ের পুত্র মাহৎ এবং কহাৎ পরিবারের অসরিয়ের পুত্র যোয়েল;

অব্দির পুত্র কীশ এবং মরারি পরিবারভুক্ত যিহলিলেলের পুত্র অসরিয়;

সিম্মের পুত্র যোয়াহ আর গের্শোন পরিবারের যোয়াহের পুত্র এদন;

ইলীষাফণের বংশের শিম্রি ও যিয়ূয়েল,

আসফের পরিবারের সখরিয় ও মত্তনিয়,

হেমনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে যিহূয়েল ও শিমিয়ি,

যিদূথূনের উত্তরপুরুষদের মধ্যে শময়িয় ও উষীয়েল।

15 তারপর তারা অন্যান্য সমস্ত লেবীয়দের একত্রে জড়ো করে প্রভুর মন্দির আনুষ্ঠানিকভাবে শোধন করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করলেন। রাজার মুখ দিয়ে প্রভুর যে আদেশ এসেছিল তা তাঁরা শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করলেন। 16 যাজকরা প্রভুর মন্দিরের অভ্যন্তরভাগে গেলেন। তাঁরা মন্দিরের মধ্যে যে সমস্ত অশুচি জিনিসপত্র ছিল সে সমস্ত বার করে মন্দিরের উঠোনে আনলেন। তারপর লেবীয়রা সেসব কিদ্রোণ উপত্যকায় নিয়ে গেলেন এবং তার মধ্যে ফেলে দিলেন। 17 প্রথম মাসের প্রথম দিনে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে মন্দিরের শোধনের কাজ শুরু করেছিলেন। ঐ মাসেরই অষ্টম দিনে তাঁরা মন্দিরের প্রবেশ পথে এসে উপস্থিত হলেন এবং তারপর আরো আটদিন ধরে মন্দিরের শুচিকরণের কাজ করে গেলেন। সেই মাসের 16 দিনের মাথায় সমস্ত কাজ শেষ হয়েছিল।

18 এরপর তারা রাজা হিষ্কিয়র কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আমরা প্রভুর মন্দিরটি আগাগোড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করেছি। হোমবলি নিবেদনের জন্য বেদী ও অন্যান্য যা কিছু, যেমন, রুটি রাখার জন্য টেবিল এবং সেখানে ব্যবহৃত বাসনকোসন পরিষ্কার ও পবিত্র করেছি। 19 রাজা আহস ঈশ্বরের বিরুদ্ধাচরণ করার পরে তিনি মন্দিরের জিনিসপত্র এবং আসবাবপত্রগুলিকে অবহেলা করেছিলেন। আমরা এসব জিনিষ শুদ্ধ করেছি এবং সেগুলো প্রভুর বেদীর সামনে সাজিয়ে রেখেছি।”

20 পরদিন ভোরবেলা, রাজা হিষ্কিয় শহরের সমস্ত উচ্চপদাধিকারী কর্মচারীদের নিয়ে মন্দিরে গেলেন। 21 রাজপরিবারের, পবিত্রস্থানের এবং যিহূদার লোকদের পাপমোচনের নৈবেদ্য হিসেবে তাঁরা সাতটা ষাঁড়, সাতটা মেষ, সাতটা মেষশাবক এবং সাতটা পুং ছাগল এনেছিলেন। রাজা হিষ্কিয় হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের ঐ প্রাণীগুলিকে প্রভুর বেদীতে বলি দিতে আদেশ দিলেন। 22 তাই যাজকরা প্রথমে ষাঁড়গুলি বলি দিয়ে প্রভুর বেদীতে সেই রক্ত ছিটিয়ে দিলেন। 23-24 অনুরূপভাবে যাজক সাতটা মেষ, সাতটা মেষশাবক আর সাতটা ছাগল ছানাকে পরপর বলি দিয়ে বেদীতে তাদের রক্ত ছিটিয়ে তা পবিত্র করলেন যাতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের তাদের পাপ থেকে মুক্তি দেন। রাজা সমস্ত ইস্রায়েলবাসীদের হয়ে এই পাপমোচনের নৈবেদ্য ও হোমবলি নিবেদনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

25 এরপর মহারাজ হিষ্কিয় মহাসমারোহে রাজা দায়ূদের ভাববাদী গাদ ও নাথনের দেওয়া আদেশ অনুযায়ী খোল-কর্তাল, বীণা, তানপুরা বাজাতে বাজাতে লেবীয়দের আবার প্রভুর মন্দিরে পাঠালেন। এভাবে তাঁদেরকে মন্দিরে পাঠানোর নির্দেশ প্রভু তাঁর ভাববাদীদের মুখ দিয়ে পাঠিয়েছিলেন। 26 লেবীয়রা সকলে দায়ূদের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এবং যাজকরা শিঙা নিয়ে প্রস্তুত হলেন। 27 তারপর রাজা হিষ্কিয় বেদীতে হোমবলি উৎসর্গের নির্দেশ দিলেন। হোমবলিগুলির উৎসর্গ যখন শুরু হল, তারা প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাওয়া শুরু করলো। রাজা দায়ূদের বানানো ভেরী ও বাদ্যযন্ত্রগুলি বাজানো হল। 28 যখন বাদ্যযন্ত্রগুলি বাজতে লাগল এবং গায়করা গান করতে লাগলেন তখন সমস্ত লোক, যাঁরা ওখানে জড়ো হয়েছিলেন তাঁরা প্রভুর উপাসনা করলেন। হোমবলি উৎসর্গ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা উপাসনা করে গেলেন।

29 বলিদানের কাজ শেষ হলে হিষ্কিয় সহ অন্যান্য সকলেই আভূমি নত হয়ে উপাসনা করলেন। 30 যখন রাজা হিষ্কিয় ও পদস্থ ব্যক্তিরা তাঁদের প্রভুর প্রশংসা করে গান গাইতে নির্দেশ দিলেন তাঁরা দায়ূদ ও ভাববাদী আসফের লেখা গানগুলো গাইলেন। প্রভুর প্রশংসা করে ও তাঁর সামনে মাথা নত করে তাঁরা সকলেই আনন্দিত হয়ে উঠলেন। 31 হিষ্কিয় বললেন, “যিহূদাবাসীরা শোনো, তোমরা নিজেদেরকে প্রভুর চরণে নিবেদন করলে। এসো তোমরা প্রভুর উদ্দেশ্যে দেওয়ার জন্য আরো বলির জীব ও ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এসো।” তখন সকলে যার যেমন ইচ্ছে প্রভুর জন্য নৈবেদ্য ও হোমবলি নিয়ে এলো। 32 সেদিন, হোমবলি হিসেবে মোট 70টি ষাঁড়, 100টি মেষ এবং 200টি মেষশাবক প্রভুর কাছে নিবেদিত হল। 33 পবিত্র নৈবেদ্য হিসেবে নিবেদিত হল 600টি ষাঁড় ও 3000 মেষ। 34 হোমবলির নিমিত্তে সমস্ত জন্তুদের ছাল ছাড়ানো ও কাটবার জন্য যাজকরা সংখ্যায় খুব কমই ছিলেন। তাই তাঁদের আত্মীয়বর্গ, লেবীয়রা সাহায্য করতে এলেন যতক্ষণ না কাজটি শেষ হয় এবং যতক্ষণ না যাজকরা নিজেদের শুদ্ধ করেন, কারণ যাজকদের থেকে লেবীয়রা নিজেদের শুদ্ধ করতে বেশী বিশ্বস্ত ছিলেন। 35 বহু পরিমাণ হোমবলি ছাড়াও, শান্তি নৈবেদ্য এবং পেয় নৈবেদ্যর জন্য প্রচুর চর্বি ছিল যেগুলি হোমবলির সঙ্গে দেওয়ার জন্য ছিল। প্রভুর মন্দিরের নিত্যকর্ম আবার শুরু হল। 36 হিষ্কিয় ও তাঁর প্রজারা সকলে ঈশ্বর যে ভাবে অতি দ্রুত তাদেরকে তাঁর সেবার জন্য প্রস্তুত করেছেন তা ভেবে খুবই আনন্দিত হলেন।

প্র.বা. 15

শেষ আঘাতের স্বর্গদূতগণ

15 পরে আমি স্বর্গে আর একটি মহত্ ও বিস্ময়কর চিহ্ন দেখলাম। সপ্তম স্বর্গদূতকে সপ্ত আঘাত নিয়ে আসতে দেখলাম। এগুলিই শেষতম আঘাত। এই আঘাতগুলির দ্বারা ঈশ্বরের মহাক্রোধের অবসান হবে।

এরপর আমি অগ্নিমিশ্রিত কাঁচের সমুদ্রের মত কিছু একটা দেখলাম। যারা সেই পশু, তার মূর্তি ও তার নামের সংখ্যাকে জয় করেছে, তারা ঈশ্বরের দেওয়া বীনা হাতে ধরে সেই কাঁচের সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে ছিল। তারা ঈশ্বরের দাস মোশির গীত ও মেষশাবকের গীত গাইছিল:

“হে প্রভু ঈশ্বর ও সর্বশক্তিমান,
    মহত্ ও আশ্চর্য তোমার ক্রিয়া সকল,
হে জাতিবৃন্দের রাজন!
    ন্যায় ও সত্য তোমার পথ সকল।
হে প্রভু, কে না তোমার নামের প্রশংসা করবে?
কারণ তুমিই একমাত্র পবিত্র।
    সমস্ত জাতি তোমার সামনে
এসে তোমার উপাসনা করবে,
    কারণ তোমার ন্যায়সঙ্গত কাজ প্রকাশিত হয়েছে।”

এরপর আমি স্বর্গের মন্দির, ঈশ্বরের পবিত্র উপস্থিতির তাঁবু দেখলাম। মন্দিরটি খোলা ছিল। সেই সাতজন স্বর্গদূত যাঁদের ওপর শেষ সাতটি হানবার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, তাঁরা সেই মন্দির থেকে বাইরে এলেন। তাঁরা শুচি শুভ্র মসীনার পোশাক পরিহিত, তাঁদের বুকে সোনার ফিতে বাঁধা। পরে সেই চার প্রাণীর মধ্য থেকে একজন ঐ সাতজন স্বর্গদূতদের হাতে একে একে তুলে দিলেন সাতটি সোনার বাটি, সেগুলি যুগপর্যায়ে যুগে যুগে জীবন্ত ঈশ্বরের রোষে পরিপূর্ণ। তাতে ঈশ্বরের মহিমা ও পরাক্রম হতে উৎপন্ন ধোঁয়ায়় মন্দিরটি পরিপূর্ণ হল। আর সেই সপ্ত স্বর্গদূতদের সপ্ত আঘাত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করতে পারল না।

সখরিয় 11

ঈশ্বর অন্যান্য জাতিদের শাস্তি দেবেন

11 লিবানোন, তোমার ফটকগুলি খোল,
    আগুন তোমার এরস বৃক্ষগুলি পুড়িয়ে শেষ করে দিক।
বৃহৎ‌‌ এরস বৃক্ষগুলিকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দেবদারু বৃক্ষরা কাঁদবে।
    ঐসব দৃঢ় বৃক্ষগুলিকে নিয়ে যাওয়া হবে।
বাশনের ওক গাছগুলি দুষ্প্রবেশ্য বন
    কেটে ফেলা হয়েছে বলে কাঁদবে।
শোন মেষপালকরা কাঁদছে
    কারণ তারা তাদের পশুচারণভূমি হারিয়েছে।
যুব সিংহশাবকগুলির গর্জন শোন।
    যর্দন নদীর ধারের ঘন বনটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।

প্রভু আমার ঈশ্বর এই কথাগুলি বলেন, “যে মেষগুলিকে হত্যা করবার জন্য পালন করা হচ্ছে তাদের যত্ন নাও। যারা সেগুলো কেনে ও হত্যা করে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে না। যে সব ব্যবসায়ী মেষগুলো বিক্রী করেছে তারা বলে, ‘প্রভুর প্রশংসা কর, আমি ধনী হয়ে উঠেছি!’ মেষপালকরা তাদের মেষদের জন্য দুঃখিত হয় নি। আমি এই দেশে যে লোকেরা থাকে তাদের প্রতি সহানুভূতিপূর্ণও হব না” প্রভু এইসব কথা বলেছেন, “আমি প্রত্যেককে তার প্রতিবেশী ও রাজার দ্বারা অপব্যবহৃত হতে দেব। আমি তাদের দেশ ধ্বংস করতে দেব। আমি তা বন্ধ করব না!”

তাই আমি সেই সব হতভাগ্য মেষের যত্ন নিলাম, যাদের হত্যা করার জন্য পালন করা হয়েছিল। আমি এই কাজের জন্য দুটি লাঠি নিলাম। একটি লাঠির নাম দিলাম মনোরম, আর অন্যটির নাম দিলাম ঐক্য। তারপর আমি মেষদের যত্ন নিতে শুরু করলাম। এক মাসের মধ্যে আমি তিনজন মেষপালককে বরখাস্ত করলাম। আমি মেষদের প্রতি অধৈর্য্য হলাম এবং তারাও আমাকে ঘৃণা করতে শুরু করল। তখন আমি বললাম, “আমি চললাম, আমি তোমাদের যত্ন নেব না। যে সব লোকেরা মরতে বসেছে, তারা মরুক। যারা ধ্বংস হতে চলেছে তাদের ধ্বংস হোক্। এবং যারা বাকী থাকবে তারা একে অপরকে ধ্বংস করুক।” 10 এরপর আমি “মনোরম” নামক লাঠিটা নিলাম এবং তা ভেঙে ফেললাম। সমস্ত লোকদের সঙ্গে ঈশ্বরের চুক্তি যে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল তা দেখাবার জন্য আমি এটা করলাম। 11 তাই, সেই দিনে চুক্তিটি এবং সেই হতভাগ্য মেষেরা যারা আমাকে লক্ষ্য করছিল, তারা জানল যে এই বার্তা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছিল।

12 তখন আমি বললাম, “তুমি যদি আমায় বেতন দিতে চাও তো দাও, নতুবা দিও না!” তাই তারা আমায় 30টি রূপোর মুদ্রা দিল। 13 তখন প্রভু আমায় বললেন, “তাদের চোখে আমি ঐরকম মূল্যবান। ঐ টাকা মন্দিরের অর্থভাণ্ডারে ছুঁড়ে ফেলো।” তাই আমি সেই 30টি রূপোর মুদ্রা নিয়ে প্রভুর মন্দিরের অর্থ ভাণ্ডারে ছুঁড়ে দিলাম। 14 এরপর আমি ঐক্য নামক লাঠিটা নিয়ে দুই টুকরো করে ভাঙলাম। যিহূদা ও ইস্রায়েলের মধ্যে যে আর ঐক্য নেই সেটা তাদের বোঝাবার জন্য আমি এটা করলাম।

15 তখন প্রভু আমায় বললেন, “এখন সেইসব জিনিস নাও যা কেবলমাত্র একজন মূর্খ মেষপালক ব্যবহার করে। 16 এটা থেকেই তারা বুঝবে যে আমি আমার দেশে একজন নতুন মেষপালক আনব। যে মেষরা মারা যাচ্ছে তাদের যত্ন এই যুবক নিতে পারবে না। সে আহত মেষদের সুস্থ করতে পারবে না। যারা বেঁচে রয়েছে তাদের সে খাওয়াতে পারবে না। সুস্থ সবল মেষদের মেরে ফেলা হবে এবং তাদের মাংস সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেলা হবে। কেবল তাদের ক্ষুরগুলো পড়ে থাকবে।”

17 ওহে আমার অকর্মণ্য মেষপালক!
    তোমরা আমার মেষদের ত্যাগ করেছ।
ওকে শাস্তি দাও!
    ওর ডান চোখে ও হাতে তরবারি দিয়ে আঘাত কর।
    তার ডান হাত নিষ্কর্মা হয়ে যাবে।
    তার ডান চোখ অন্ধ হবে।

যোহন 14

শিষ্যদের প্রতি যীশুর সান্ত্বনা

14 “তোমাদের হৃদয় বিচলিত না হোক্। ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখো, আর আমার প্রতিও আস্থা রাখো। আমার পিতার বাড়িতে অনেক ঘর আছে, যদি না থাকতো আমি তোমাদের বলতাম। আমি তোমাদের থাকবার একটা জায়গা ঠিক করতে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে জায়গা ঠিক করার পর আমি আবার আসব ও তোমাদের আমার কাছে নিয়ে যাব, যাতে আমি যেখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার। আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সকলেই সে জায়গার পথ চেন।”

থোমা তাঁকে বললেন, “প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা আমরা জানি না। আমরা সেখানে যাবার পথ কিভাবে জানবো?”

যীশু তাঁকে বললেন, “আমিই পথ, আমিই সত্য ও জীবন। পিতার কাছে যাবার আমিই একমাত্র পথ। তোমরা যদি সত্যি আমাকে জেনেছ, তবে পিতাকেও জানতে পেরেছ। আর এখন থেকে তোমরা তাঁকে জেনেছ ও তাঁকে দেখেছ।”

ফিলিপ যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি পিতাকে আমাদের দেখান, তাহলেই যথেষ্ট হবে।”

যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছি; আর ফিলিপ, তোমরা এখনও আমায় চিনলে না? যে কেউ আমায় দেখেছে সে পিতাকে দেখেছে। তোমরা কি করে বলছ, ‘পিতাকে আমাদের দেখান’? 10 তুমি কি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন? আমি তোমাদের যে সকল কথা বলি তা নিজের থেকে বলি না। আমার মধ্যে যিনি আছেন সেই পিতা তাঁর নিজের কাজ করেন। 11 যখন আমি বলি যে আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতাও আমার মধ্যে আছেন, তখন আমাকে বিশ্বাস কর। যদি তা না কর, তবে আমার দ্বারা কৃত সব অলৌকিক কাজের কারণেই বিশ্বাস কর।

12 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে আমার ওপর বিশ্বাস রাখে, আমি যে কাজই করি না কেন, সেও তা করবে, বলতে কি সে এর থেকেও আরো মহান কাজ করবে, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি। 13 আর তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা পূর্ণ করব, যেন পিতা পুত্রের দ্বারা মহিমান্বিত হন। 14 তোমরা যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু চাও, আমি তা পূর্ণ করব।

পবিত্র আত্মার প্রতিশ্রুতি

15 “তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে তোমরা আমার সমস্ত আদেশ পালন করবে। 16 আমি পিতার কাছে চাইব, আর তিনি তোমাদের আর একজন সাহায্যকারী[a] দেবেন, যেন তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকেন। 17 তিনি সত্যের আত্মা,[b] যাঁকে এই জগত সংসার মেনে নিতে পারে না, কারণ জগত তাঁকে দেখে না বা তাঁকে জানে না। তোমরা তাঁকে জান, কারণ তিনি তোমাদের সঙ্গে সঙ্গেই থাকেন, আর তিনি তোমাদের মধ্যেই থাকবেন।

18 “আমি তোমাদের অনাথ রেখে যাবো না। আমি তোমাদের কাছে আসব। 19 আর কিছুক্ষণ পর এই জগত সংসার আর আমায় দেখতে পাবে না, কিন্তু তোমরা আমায় দেখতে পাবে। কারণ আমি বেঁচে আছি বলেই তোমরাও বেঁচে থাকবে। 20 সেই দিন তোমরা জানবে যে আমি পিতার মধ্যে আছি, তোমরা আমার মধ্যে আছ, আর আমি তোমাদের মধ্যে আছি। 21 যে আমার নির্দেশ জানে এবং সেগুলি সব পালন করে, সেই আমায় প্রকৃত ভালবাসে। যে আমায় ভালবাসে, পিতাও তাঁকে ভালবাসেন আর আমিও তাকে ভালবাসি। আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব।”

22 যিহূদা (যিহূদা ঈষ্করিয়োত নয়) তাঁকে বলল, “প্রভু কেন আপনি জগতের কাছে নিজেকে প্রকাশ না করে আমাদের কাছেই নিজেকে প্রকাশ করবেন?”

23 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “যদি কেউ আমায় ভালবাসে তবে সে আমার শিক্ষা অনুসারে চলবে, আর আমার পিতা তাকে ভালবাসবেন, আর আমরা তার কাছে আসব ও তার সঙ্গে বাস করব। 24 যে আমায় ভালবাসে না, সে আমার শিক্ষা পালন করে না। আর তোমরা আমার যে শিক্ষা শুনছ তা আমার নয়, কিন্তু যিনি আমায় পাঠিয়েছেন এই শিক্ষা সেই পিতার।

25 “আমি তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতেই এইসব কথা বললাম, 26 কিন্তু সেই সাহায্যকারী পবিত্র আত্মা, যাঁকে পিতা আমার নামে পাঠিয়ে দেবেন, তিনি তোমাদের সব কিছু শিক্ষা দেবেন, আর আমি তোমাদের যা যা বলেছি, সে সকল বিষয় তিনি তোমাদের স্মরণ করিয়ে দেবেন।

27 “আমি তোমাদের কাছে শান্তি রেখে যাচ্ছি। আমার নিজের শান্তি আমি তোমাদের দিচ্ছি। জগত সংসার যেভাবে শান্তি দেয় আমি সেইভাবে তা দিচ্ছি না। তোমাদের অন্তর উদ্বিগ্ন অথবা শঙ্কিত না হোক্। 28 তোমরা শুনেছ যে, ‘আমি তোমাদের বলেছি যে আমি যাচ্ছি আর আমি আবার তোমাদের কাছে আসব।’ তোমরা যদি আমায় ভালবাস তবে এটা জেনে খুশী হবে যে আমি পিতার কাছে যাচ্ছি, কারণ পিতা আমার থেকে মহান। 29 তাই এসকল ঘটার আগেই আমি এসব তোমাদের এখন বললাম, যাতে ঘটলে পর তোমরা বিশ্বাস কর।

30 “আমি তোমাদের সঙ্গে আর বেশীক্ষণ কথা বলব না, কারণ এই জগতের অধিপতি আসছে। আমার ওপর তার কোন দাবী নেই। 31 জগত সংসার যাতে জানতে পারে যে আমি পিতাকে ভালবাসি, তাই পিতা আমায় যেমন আদেশ করেন আমি সেরকমই করি।

“এখন এস! আমরা এখান থেকে যাই।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International