Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 বংশাবলি 24

যোয়াশ মন্দির পুনর্নির্মাণ করলেন

24 যোয়াশ মাত্র 7 বছর বয়সে রাজা হয়ে 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা সিবিয়া ছিলেন বের্-শেবা শহরের বাসিন্দা। যতদিন পর্যন্ত যাজক যিহোয়াদা জীবিত ছিলেন ততদিন পর্যন্ত যোয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেছিলেন। যিহোয়াদা যোয়াশের দুটো বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর, রাজা যোয়াশের অনেকগুলি সন্তান হয়েছিল।

পরবর্তীকালে, রাজা যোয়াশ প্রভুর মন্দিরকে নবরূপ দেবার পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি সমস্ত লেবীয় ও যাজকদের একসঙ্গে ডেকে বললেন, “যাও, ইস্রায়েলের প্রত্যেকে প্রতি বছর যে কর দেয় তা সংগ্রহ কর এবং তোমাদের প্রভুর মন্দিরকে নতুন রূপ দাও। যাও, আর দেরী করো না।” কিন্তু লেবীয়রা এতে বিশেষ উৎসাহ দেখালেন না।

তখন রাজা যোয়াশ প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “আপনি কেন লেবীয়দের যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করতে আদেশ দেন নি যা প্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকরা পবিত্র তাঁবুর জন্যই ব্যবহার করতেন।”

অতীতে, দুষ্ট রাণী অথলিয়ার পুত্ররা প্রভুর মন্দির থেকে পবিত্র জিনিসপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সেগুলো বালদেবতার আরাধনার জন্য ব্যবহার করেছিলেন।

রাজা যোয়াশ প্রভুর মন্দিরের দরজার বাইরে একটা প্রণামীর সিন্দুক বানিয়ে বসানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর লেবীয়রা যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের প্রভুর জন্য কর দেবার কথা ঘোষণা করেন। ঈশ্বরের জন্য ইস্রায়েলীয়রা যখন মরুভূমিতে দিন কাটাচ্ছিল তখন এইভাবে মোশি এই কর সংগ্রহ করেছিলেন। 10 সমস্ত নেতা ও লোকরা খুশি মনে কর নিয়ে এসে প্রণামীর সিন্দুকে জমা দিল। সিন্দুকটা যতক্ষণ পর্যন্ত না ভরে গেল ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই সিন্দুকে অর্থ জমা করতে লাগলো। 11 সিন্দুকটা ভরে গেলে লেবীয়রা সেটা রাজকর্মচারীদের কাছে নিয়ে গেল। যখন রাজার সচিব ও প্রধান যাজকের সহকারী সিন্দুক খালি করে তার থেকে যাবতীয় অর্থ বার করে নিলেন, ওটা আবার ভরে যাওয়া পর্যন্ত একই জায়গায় ফেরৎ‌ দেওয়া হয়েছিল। এইভাবে বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল। 12 রাজা যোয়াশ ও যিহোয়াদা দুজনে এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের তদারকির কাজ যাঁরা করতেন তাঁদের দিলেন। তারা প্রভুর মন্দির সারানোর জন্য সুদক্ষ পাথর কাটিয়ে ও ছুতোর মিস্ত্রি ভাড়া করলেন। এছাড়াও লোহা ও পিতলের কাজ জানা কারিগরদেরও ভাড়া করা হয়েছিল।

13 যারা প্রভুর মন্দির তদারকির কাজ করতো তারা সকলেই নিষ্ঠাবান ও সৎ‌ হওয়ায় ঈশ্বরের মন্দির পুনর্নির্মাণের কাজ সুচারুভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এবং প্রভুর মন্দিরকে ঠিক আগের মতো ও আরো দৃঢ় করে বানানো হয়। 14 কাজটি শেষ হলে কর্মচারীরা অবশিষ্ট অর্থ রাজা যোয়াশ ও যাজক যিহোয়াদার কাছে ফিরিয়ে আনলো। এই অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো ছাড়াও, এই অর্থ প্রভুর মন্দিরের নিত্যসেবা ও হোমবলি নিবেদনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়াও এই অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে সোনা ও রূপোর পাত্র ও টুকিটাকি জিনিসপত্র বানানো হয়েছিল। যিহোয়াদার জীবদ্দশায় যাজকরা নিয়মিত প্রভুর মন্দিরে হোমবলি উৎসর্গ করতেন।

15 অবশেষে, যিহোয়াদা বৃদ্ধ হলেন এবং 130 বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হল। 16 লোকরা দায়ূদ নগরীতে রাজাদের সমাধি ক্ষেত্রে যিহোয়াদাকে সমাধিস্থ করেছিলেন কারণ তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর ও তাঁর মন্দিরের জন্য বহু ভাল ভাল কাজ করেছিলেন।

17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ রাজা যোয়াশকে অভ্যর্থনা করলেন এবং ধীরে ধীরে তাঁর স্তুতি করতে শুরু করলেন। যোয়াশ তাদের পরামর্শগুলি গ্রহণ করেছিলেন। 18 রাজা ও নেতারা, প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের মন্দিরের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরিবর্তে, তারা আশেরার খুঁটি ও অন্যান্য ভ্রান্ত মূর্ত্তি পূজো শুরু করলেন। রাজা ও নেতাদের অপরাধের জন্য ঈশ্বর যিহূদা ও জেরুশালেমের লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ হলেন। 19 ঈশ্বর লোকদের মন তাঁর প্রতি ফিরিয়ে আনার জন্য ভাববাদীদের পাঠালেন। কিন্তু লোকরা সদুপদেশে কর্ণপাত পর্যন্ত করলো না।

20 তারপর ঈশ্বরের আত্মা যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়র ওপর ভর করলো। তিনি লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলেছেন: ‘তোমরা কেন প্রভুর বিধিসমূহ ও আজ্ঞা অমান্য করছো? এভাবে তোমরা কখনোই কোনো কাজে কৃতকার্য হতে পারবে না। তোমরা প্রভুকে ত্যাগ করেছো, তাই তিনিও তোমাদের ত্যাগ করেছেন।’”

21 কিন্তু বিচারবুদ্ধিহীন লোকরা তখন একসঙ্গে চক্রান্ত করলো এবং রাজা যখন তাদের সখরিয়কে হত্যা করতে আদেশ দিলেন, তারা পাথর ছুঁড়ে মন্দির চত্বরেই তাঁকে হত্যা করলো। 22 একবারও রাজা যোয়াশ তাঁর প্রতি সখরিয়র পিতা যাজক যিহোয়াদার করুণার কথা মনে করলেন না। মারা যাবার আগের মূহুর্তে সখরিয় বললেন, “প্রভু যেন তোমার এই অপরাধ দেখতে পান এবং তোমাকে এর যোগ্য শাস্তি দেন।”

23 এক বছরের মধ্যে অরামীয় সেনাবাহিনী এসে রাজা যোয়াশের রাজ্য আক্রমণ করলো। তারা যিহূদা ও জেরুশালেম আক্রমণ করল এবং সমস্ত নেতাদের হত্যা করবার পর সেনাবাহিনী যাবতীয় দুর্মূল্য জিনিসপত্র লুঠ করে দম্মেশকে রাজার কাছে সেগুলি পাঠিয়ে দিল। 24 অরামীয়রা ছোট সেনাবাহিনী নিয়ে এলেও প্রভু তাদের যিহূদার সেনাবাহিনী, যেটা তাদের সেনাবাহিনীর চেয়ে বড় ছিল, তাকে পরাজিত করতে দিলেন। কারণ যিহূদার লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছিল। এইভাবে রাজা যোয়াশের শাস্তি বিধান হল। 25 অরামীয়রা যখন চলে গেল তখন তিনি ভীষণভাবে আহত। তাঁর নিজের ভৃত্যরাই তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে তাঁর বিছানায় হত্যা করলো। এরপর লোকরা তাঁকে দায়ূদ নগরীতে সমাধিস্থ করলো, তবে তা রাজাদের জন্য নির্দিষ্ট সমাধি ক্ষেত্রে নয়। যাজক যিহোয়াদার পুত্র সখরিয়কে হত্যা করার জন্যই যোয়াশের ভৃত্যরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছিল।

26 যোয়াশের বিরুদ্ধে যারা চক্রান্ত করেছিল তাঁরা হল অম্মোনের শিমিয়তের পুত্র সাবদ ও মোয়াবের শিম্রীতের পুত্র যিহোষাবদ। 27 যোয়াশের পুত্রদের গল্প, তাঁর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী ও তিনি কিভাবে আবার প্রভুর মন্দির নবরূপে নির্মাণ করেছিলেন সেসব কথা রাজাদের সম্বন্ধে বিবরণী গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। যোয়াশের পর তাঁর পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন।

প্র.বা. 11

দুই সাক্ষী

11 এরপর আমাকে বেড়ানোর লাঠির মতো একটি মাপকাঠি দেওয়া হল। একজন বললেন, “ওঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদীর পরিমাপ কর আর তার মধ্যে যারা উপাসনা করছে তাদের সংখ্যা গণনা কর। কিন্তু মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণের কোন মাপ নিও না, কারণ তা অইহুদীদের দেওয়া হয়েছে। বিয়াল্লিশ মাস ধরে তারা সেই পবিত্র নগরটি পায়ে দলবে। আমি আমার দুজন সাক্ষীকে ক্ষমতা দেব, তাঁরা বারশো ষাট দিন পর্যন্ত ভাববাণী বলবেন।”

সেই দুজন সাক্ষী হলেন দুটি জলপাই গাছ ও দুটি দীপাধার, যাঁরা পৃথিবীর প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। যদি কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চায়, তবে ঐ সাক্ষীদের মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে এসে তাঁদের শত্রুদের গ্রাস করবে, যে কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চাইবে তাদেরও এইভাবে মরতে হবে। আকাশ রুদ্ধ করে দেবার ক্ষমতা তাঁদের আছে, যেন ভাববাণী বলার সময় বৃষ্টি না হয়; আর জল রক্তে পরিণত করবার ও পৃথিবীর বুকে সব রকমের মহামারী যতবার ইচ্ছা ততবার পাঠাবার ক্ষমতা তাঁদের আছে।

তাঁদের সাক্ষ্যদান শেষ হলে, যে পশু পাতালের অতলস্পর্শী কূপ থেকে উঠে আসবে সে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, আর যুদ্ধে তাঁদের হারিয়ে দিয়ে হত্যা করবে। তাঁদের মৃত দেহগুলি সেই মহানগরের রাস্তার ওপরে পড়ে থাকবে, এ সেই নগর যাকে আত্মিক অর্থে সদোম ও মিশর বলে; আর এই নগরেই তাঁদের প্রভু ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন। লোকরা তাঁদের কবর দিতে অনুমতি দেবে না। সমস্ত উপজাতি, সম্প্রদায়, ভাষাভাষী ও জাতির লোকরা জড়ো হয়ে সাড়ে তিন দিন ধরে তাঁদের শব দেখতে থাকবে। 10 পৃথিবীর লোকরা আনন্দিত হবে, কারণ ঐ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা আমোদ-প্রমোদ করবে, পরস্পরকে উপহার পাঠাবে, কারণ এই দুজন ভাববাদী পৃথিবীর লোকদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন।

11 এরপর সেই সাড়ে তিন দিন শেষ হলে ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনের আত্মা তাঁদের মধ্যে প্রবেশ করল, আর তাঁরা উঠে দাঁড়ালেন। যারা তাদের দেখল তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ভয়ের সঞ্চার হল। 12 সেই দুজন ভাববাদী স্বর্গ থেকে এক রব শুনলেন, “এখানে উঠে এস!” তখন তাঁরা মেঘের মধ্য দিয়ে স্বর্গে উঠে গেলেন; আর তাঁদের শত্রুরা তাদের যেতে দেখল।

13 সেই মুহূর্তে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হল, তার ফলে শহরের দশভাগের একভাগ ধ্বংস হয়ে গেল এবং সাত হাজার লোক মারা পড়ল। যাঁরা বাকি রইল তারা সকলে প্রচণ্ড ভয় পেল ও স্বর্গের ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল।

14 দ্বিতীয় সন্তাপ কাটল। দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শীঘ্রই আসছে।

সপ্তম তূরী ধ্বনি

15 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন স্বর্গে কারা যেন উদাত্ত কন্ঠে বলে উঠল:

“জগতের ওপর শাসন করবার ভার এখন আমাদের প্রভুর ও তাঁর খ্রীষ্টের হল,
    আর তিনি যুগপর্যায়ে যুগে যুগে রাজত্ব করবেন।”

16 পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁরা ঈশ্বরের সামনে নিজেদের সিংহাসনে বসে থাকেন, তাঁরা উপুড় হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন। 17 তাঁরা বললেন:

“প্রভু ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান, যিনি আছেন ও ছিলেন,
    আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাই;
কারণ তুমি নিজ পরাক্রম ব্যবহার করেছ
    এবং রাজত্ব করতে শুরু করেছ।
18 জগতের জাতিবৃন্দ তোমার ওপর ক্রুদ্ধ ছিল;
    কিন্তু এখন তোমার ক্রোধের পালা।
    মৃত লোকদের বিচারের সময় হয়েছে;
আর তোমার ভাববাদী, যারা তোমার দাস, যারা তোমার লোক,
    ক্ষুদ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ সব লোক যারা তোমাকে শ্রদ্ধা করে,
তাদের পুরস্কার দেওয়ার সময় হয়েছে।
    যারা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে তাদের ধ্বংস করবার সময় হয়েছে।”

19 পরে স্বর্গে ঈশ্বরের মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত হলে মন্দিরের মধ্যে তাঁর চুক্তির সিন্দুকটি দেখা গেল, বিদ্যুত চমকালো, গুরু গুরু শব্দ, বজ্রপাত, ভূমিকম্প ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হল।

সখরিয় 7

প্রভু করুণা ও কৃপা চান

পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের চতুর্থ বছরের নবম মাসের চতুর্থ দিনে সখরিয় প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলেন। বৈথেলের লোকরা শরেৎসর, রেগম্মেলক ও তার লোকেদের প্রভুর কাছে একটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছিলেন। তারা সর্বশক্তিমান প্রভুর মন্দিরের যাজকগণের কাছে এবং ভাববাদীদের কাছে এলেন। ঐ লোকরা তাদের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করল: “অনেক বছর ধরে আমরা মন্দির ধ্বংস হয়ে যাবার দরুণ শোক করেছি। প্রত্যেক বছরের পঞ্চম মাসে আমরা উপবাসের জন্য বিশেষ সময় দিয়েছি। আমরা কি এই অনুশীলন চালিয়ে যাব?”

আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর কাছ থেকে এই বার্তা পেলাম: “এই দেশের যাজককে এবং অন্য লোকেদের বল: সত্তর বছর ধরে তোমরা পঞ্চম ও সপ্তম মাসে উপবাস করেছ। সেই উপবাস কি সত্যিই আমার জন্য? না! তা নয়। আর তোমরা যখন ভোজন পান করলে সেটাও কি আমার উদ্দেশ্যে করলে? তা নয়, বরং তোমাদেরই ভালোর জন্য। এই একই জিনিষ প্রদান করতে প্রভু তাঁর ভাববাদীদের ব্যবহার করেছিলেন। জেরুশালেম যখন উন্নত ও জনমানবে পূর্ণ ছিল তখনও তিনি এই কথাগুলি বলেছিলেন। যখন ঈশ্বর এই কথাগুলি বলেছিলেন তখন জেরুশালেমের আশেপাশের শহর নেগেভ এবং পশ্চিমের পাহাড়ের পাদদেশে লোকজন ছিল।”

সখরিয়ের কাছে প্রভুর বার্তা এই:
প্রভু সর্বশক্তিমান বলেছেন:
“যা কিছু ঠিক এবং ন্যায়সঙ্গত তোমরা অবশ্যই তা করবে।
    তোমরা একে অপরের প্রতি অবশ্যই দয়ালু ও কৃপাপূর্ণ হবে।
10 বিধবা, দরিদ্র, বিদেশী
    ও অনাথদের ওপর উৎ‌পীড়ন কোরো না।
অপরের অমঙ্গল করবার চিন্তা কোরো না।”

11 কিন্তু সেইসব লোকেরা শুনতে অস্বীকার করত।
    তিনি যা চাইতেন তা করতে তারা অস্বীকার করত।
তারা কান বন্ধ করত বলে
    ঈশ্বরের কথা শুনতে পেতো না।
12 তারা ছিল একগুঁয়ে।
    প্রভু সর্বশক্তিমান তাঁর আত্মা দ্বারা
ভাববাদীদের মাধ্যমে লোকদের কাছে বার্তা পাঠাতেন।
    কিন্তু তারা শুনতো না।
    তাই সর্বশক্তিমান প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন।
13 সর্বশক্তিমান প্রভু বললেন,
“আমি তাদের ডাকলে
    তারা উত্তর দিল না।
তাই এখন যদি তারা আমায় ডাকে,
    আমি তাদের উত্তর দেব না।
14 আমি তাদের বিরুদ্ধে জাতিগুলোকে ঝড়ের মত নিয়ে আসব।
    ঐসব জাতিদের তারা জানতও না।
তারা দেশটি অতিক্রম করে গেলে
    সেটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে।”

যোহন 10

মেষপালক ও মেষপাল

10 যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি; যদি কেউ সদর দরজা দিয়ে মেষ খোঁয়াড়ে না ঢোকে এবং তার পরিবর্তে অন্য কোন ভাবে টপকে ঢোকে, তবে সে একজন চোর বা ডাকাত; কিন্তু যে ব্যক্তি দরজা দিয়ে ঢোকে সে মেষপালক। দারোয়ান তাকে দরজা খুলে দেয়, আর মেষরা তার কন্ঠস্বর শোনে। সে তার নিজের মেষগুলিকে নাম ধরে ডাকে আর তাদের বাইরে নিয়ে যায়। সে যখন তার নিজের সব মেষদের বার করে নেয়, তখন সে তাদের আগে আগে চলে, আর মেষরা তার পেছনে পেছনে চলতে থাকে, কারণ তারা তার কন্ঠস্বর চেনে। কিন্তু মেষরা যাকে জানে না এমন লোকের পেছনে যাবে না, বরং তারা তার থেকে দূরে পালিয়ে যাবে, কারণ তারা অচেনা লোকের কন্ঠস্বর চেনে না।”

যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি বললেন; কিন্তু তিনি যে কি বলতে চাইছেন তা তারা বুঝতে পারল না।

যীশুই উত্তম মেষপালক

তখন যীশু আবার তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি; আমি মেষদের জন্য খোঁয়াড়ের দরজা স্বরূপ। যারা আমার আগে এসেছে তারা সব চোর ডাকাত, কিন্তু মেষরা তাদের ডাক শোনে নি। আমিই দরজা। যদি কেউ আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে তবে সে রক্ষা পাবে। সে ভেতরে আসবে এবং বাইরে গেলে তার চারণভূমি পাবে। 10 চোর কেবল চুরি, খুন ও ধ্বংস করতে আসে। আমি এসেছি, যাতে লোকেরা জীবন লাভ করে, আর যেন তা পরিপূর্ণ ভাবেই লাভ করে।”

11 “আমিই উত্তম মেষপালক। উত্তম পালক মেষদের জন্য তার জীবন সমর্পণ করে। 12 কোন বেতনভূক কর্মচারী প্রকৃত মেষপালক নয়। মেষরা তার নিজের নয়, তাই সে যখন নেকড়ে বাঘ আসতে দেখে তখন মেষদের ফেলে রেখে পালায়। আর নেকড়ে বাঘ তাদের আক্রমণ করে এবং তারা ছড়িয়ে পড়ে। 13 বেতনভূক কর্মচারী পালায়, কারণ বেতনের বিনিময়ে সে কাজ করে, মেষদের জন্য তার কোন চিন্তাই নেই।

14-15 “আমিই উত্তম পালক। আমি আমার মেষদের জানি আর আমার মেষরা আমায় জানে। ঠিক যেমন আমার পিতা আমাকে জানেন, আমিও আমার পিতাকে জানি; আর আমি মেষদের জন্য আমার জীবন সঁপে দিই। 16 আমার এমন আরো অনেক মেষ আছে যারা এই খোঁয়াড়ের নয়। আমি অবশ্যই তাদেরও আনব, তারাও আমার কথা শুনবে আর তারা তখন সকলে এক পাল হবে আর তাদের পালকও হবেন একজন। 17 এই কারণেই পিতা আমায় ভালবাসেন, কারণ আমি আমার প্রাণ দান করি যেন আবার তা পেতে পারি। 18 কেউ আমার কাছ থেকে তা হরণ করে নিতে পারবে না, বরং আমি তা স্ব-ইচ্ছাতেই করছি। এটা দান করার অধিকার আমার আছে এবং আবার তা ফিরে পাওয়ার অধিকারও আমার আছে। আমার পিতার কাছ থেকেই আমি এইসব শুনেছি।”

19 এইসব কথার কারণে জনগণের মধ্যে এ নিয়ে মতবিরোধ হল। 20 তাদের মধ্যে অনেকে বলল, “ওকে ভূতে পেয়েছে, ও পাগল। ওর কথা কেন শুনছ?”

21 আবার অন্যরা বলল, “যাদের ভূতে পায় তারা তো এমন কথা বলে না। ভূত নিশ্চয়ই অন্ধকে দৃষ্টিশক্তি দান করতে পারে না, পারে কি?”

ইহুদীরা যীশুর বিরুদ্ধে গেল

22 এরপর জেরুশালেমে প্রতিষ্ঠার পর্ব[a] এল, তখন ছিল শীতকাল। 23 যীশু মন্দির চত্বরে শলোমনের বারান্দাতে পায়চারি করছিলেন। 24 কিছু ইহুদী তাঁর চারপাশে জড়ো হয়ে তাঁকে বলল, “তুমি আর কতকাল আমাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবে? তুমি যদি মশীহ হও তাহলে আমাদের স্পষ্ট করে বল।”

25 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের ইতিমধ্যেই বলেছি, আর তোমরা তা বিশ্বাস করছ না। আমি আমার পিতার নামে যে সব অলৌকিক কাজ করি সেগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে। 26 কিন্তু তোমরা বিশ্বাস করো না, কারণ তোমরা আমার পালের মেষ নও। 27 আমার মেষরা আমার কন্ঠস্বর শোনে। আমি তাদের জানি, আর তারা আমার অনুসরণ করে। 28 আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই, আর তারা কখনও বিনষ্ট হয় না, আমার হাত থেকে কেউ তাদের কেড়ে নিতেও পারবে না। 29 আমার পিতা, যিনি তাদেরকে আমায় দিয়েছেন, তিনি সবার ও সবকিছু থেকে মহান,[b] আর কেউ পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারবে না। 30 আমি ও পিতা, আমরা এক।”

31 ইহুদীরা তাঁকে মারবার জন্য আবার পাথর তুলল। 32 যীশু তাদের বললেন, “পিতার শক্তিতে আমি অনেক ভাল কাজ করেছি, তার মধ্যে কোন্ কাজটার জন্য তোমরা পাথর মারতে চাইছ?”

33 ইহুদীরা এর উত্তরে তাঁকে বলল, “তুমি যে সব ভাল কাজ করেছ, তার জন্য আমরা তোমায় পাথর মারতে চাইছি না। কিন্তু আমরা তোমাকে পাথর মারতে চাইছি এই জন্য যে, তুমি ঈশ্বর নিন্দা করেছ। তুমি একজন মানুষ, অথচ নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবী করছ।”

34 যীশু তাদের বললেন, “তোমাদের বিধি-ব্যবস্থায় কি একথা লেখা নেই যে, ‘আমি বলেছি তোমরা ঈশ্বর?’(A) 35 শাস্ত্রে তাদেরই ঈশ্বর বলেছিল যাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী এসেছিল। আর শাস্ত্র সব সময়ই সত্য। 36 আমিই সেই ব্যক্তি, পিতা যাঁকে মনোনীত করে জগতে পাঠালেন। আমি বলেছি, ‘আমি ঈশ্বরের পুত্র।’ তবে তোমরা কেন বলছ যে আমি ঈশ্বর নিন্দা করছি? 37 আমি যদি আমার পিতার কাজ না করি, তাহলে আমায় বিশ্বাস করো না। 38 কিন্তু আমি যখন সেইসব কাজ করছি তখনও যদি তোমরা আমাকে বিশ্বাস না করো, তাহলে সেই সব কাজকে বিশ্বাস কর। তাহলে তোমরা জানতে পারবে ও বুঝতে পারবে যে পিতা আমাতে আছেন আর আমি পিতার মধ্যে আছি।”

39 এরপর তারা আবার তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের হাত এড়িয়ে চলে গেলেন।

40 যর্দনের অপর পারে যেখানে যোহন বাপ্তাইজ করছিলেন, যীশু সেখানে আবার গেলেন ও সেখানে থাকলেন। 41 বহুলোক তাঁর কাছে আসতে থাকল, আর তারা বলাবলি করতে লাগল, “যোহন কোন অলৌকিক কাজ করেন নি বটে; কিন্তু এই মানুষটির বিষয়ে যোহন যা বলেছেন, সে সবই সত্য।” 42 আর সেখানে অনেকেই যীশুর ওপর বিশ্বাস করল।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International