M’Cheyne Bible Reading Plan
যিহূদার রাজা যিহোশাফট
17 আসার জায়গায় যিহূদার নতুন রাজা হলেন তাঁর পুত্র যিহোশাফট। ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য যিহোশাফট যিহূদাকে সুদৃঢ় করেছিলেন। 2 যিহূদার যে সমস্ত শহরকে দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল সেই সবকটি শহরে তিনি সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছিলেন। এছাড়া তিনি যিহূদায় এবং তাঁর পিতা আসার দখল করা ইফ্রয়িমের শহরগুলিতেও সৈন্যবাহিনী মোতায়েন করেছিলেন।
3 প্রভু যিহোশাফটের সহায় হয়েছিলেন কারণ তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতোই বাধ্যভাবে জীবনযাপন করতেন এবং বাল মূর্ত্তিসমূহের পূজো করেন নি। 4 পরিবর্তে তিনি তাঁর পিতা, আসার ঈশ্বরকে অনুসরণ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলের উত্তরাঞ্চলের লোকদের মতো জীবনযাপন করেন নি। যিহোশাফট প্রভুর বিধি ও নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করতেন। 5 প্রভু তাই যিহূদা রাজ্যে যিহোশাফটের ক্ষমতাকে দৃঢ় করেছিলেন। সমস্ত লোক তাঁর জন্য উপহার ও উপঢৌকন আনত, সে কারণে তিনি বহু খ্যাতি ও সম্পদের অধিকারী হয়েছিলেন। 6 প্রভুর আজ্ঞানুবর্তী হয়ে জীবনযাপন করতে যিহোশাফট কৃতসংকল্প ছিলেন। তিনি ভণ্ড মূর্ত্তি আশেরার খুঁটি ও যাবতীয় উঁচু পূজোর বেদী নির্মূল করেছিলেন।
7 যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে যিহূদার শহরগুলিতে শিক্ষাদানের জন্য তাঁর বিন্-হয়িল, ওবদিয়, সখরিয়, নথনেল, মীখায় প্রমুখ আধিকারিকদের পাঠান। 8 এঁদের সঙ্গে তিনি কিছু লেবীয় পাঠিয়েছিলেন। তারা হল: শময়িয়, নথনিয়, সবদিয়, অসাহেল, শমীরামোৎ, যিহোনাথন, অদোনিয়, টোবিয় এবং টোব্-অদনীয় এবং যাজক ইলীশামা ও যিহোরাম। 9 এঁরা সকলে মিলে যিহূদার সমস্ত শহর পর্যটন করতে করতে প্রভুর বিধিপুস্তক অনুযায়ী লোকেদের শিক্ষাদান করেছিলেন।
10 যিহূদার চারপাশের অঞ্চলের বসবাসকারী লোকরা প্রভুর ভয়ে ভীত থাকায় যিহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। 11 কিছু পলেষ্টীয় ব্যক্তি যিহোশাফটের জন্য রূপো ও অন্যান্য উপহার এনেছিলেন কারণ তারা তাঁর ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন ছিল। আরবীয়রা যিহোশাফটকে 7700টি মেষ ও 7700টি ছাগল উপহার দিয়েছিল।
12 যিহোশাফট ক্রমে ক্রমে আরো শক্তি সঞ্চয় করেন এবং যিহূদার প্রত্যেকটা শহরে দুর্গ ও গোলাঘর বানান। 13 এই সমস্ত শহরে তিনি নিয়মিত দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য জিনিসপত্র পাঠাতেন। এছাড়া তিনি জেরুশালেমে যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী সৈনিক রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন। 14 এই সমস্ত সৈনিকদের নাম তাদের পরিবারগোষ্ঠীর ইতিহাস থেকে জানতে পারা যায়।
সৈনিকদের মধ্যে যিহূদার পরিবারগোষ্ঠী থেকে
অদন ছিলেন 300,000 সেনার অধ্যক্ষ।
15 যিহোহাননের অধীনে ছিল 280,000 সেনা।
16 সিখির পুত্র অমসিয়, প্রভুর সেবায় একজন স্বেচ্ছাসেবক, 200,000 ধনুর্ধর সেনার সেনাপতি ছিলেন।
17 বিন্যামীনের জাতি থেকে
সেনাপতি ইলিয়াদার অধীনে ছিল 200,000 ধনুর্ধর সৈন্য। এরা সকলে তীরধনুক ও ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করতো। ইলিয়াদা নিজেও ছিলেন সাহসী যোদ্ধা।
18 যিহোশাফটের অধীনে ছিল 180,000 পারদর্শী যোদ্ধা।
19 এরা ছাড়াও রাজা যিহোশাফটের অধীনে যিহূদার প্রত্যেকটা দুর্গে আরো বহু লক্ষ সৈনিক কাজ করতেন।
মেষশাবকটি পুঁথি খুললেন
6 মেষশাবক যখন সেই সাতটির মধ্যে প্রথম সীলমোহরটি ভেঙে খুললেন, তখন আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্যে একজনকে দেখলাম ও তার মেঘ গর্জনের মতো কন্ঠস্বর শুনলাম। সে বলল, “এস!” 2 এরপর আমি দেখলাম, আমার সামনে একটি সাদা রঙের ঘোড়া। তার ওপর যিনি বসে আছেন তাঁর হাতে একটি ধনুক ছিল। তাঁকে একটা মুকুট পরিয়ে দেওয়া হলে তিনি যুদ্ধ জয় করতে বিজেতার মত বাইরে এলেন।
3 মেষশাবক যখন দ্বিতীয় সীলমোহরটি ভাঙলেন তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে দ্বিতীয় জনকে বলতে শুনলাম, “এস!” 4 তখন আর একটি আগুনের মতো লাল রঙের ঘোড়া বার হয়ে এল। সেই ঘোড়াটির ওপর যে বসে আছে তাকে পৃথিবী থেকে শান্তি কেড়ে নেবার ক্ষমতা দেওয়া হল; আর দেওয়া হল সেই ক্ষমতা, যার বলে মানুষ পরস্পরকে বধ করবে। তাকে একটা বড় তরবারি দেওয়া হল।
5 মেষশাবক যখন তৃতীয় সীলমোহরটি ভাঙ্গলেন, আমি শুনলাম, সেই প্রাণীদের মধ্যে তৃতীয় জন বললেন, “এস!” পরে আমি দেখলাম, একটা কালো ঘোড়া আমার সামনে দাঁড়িয়ে, তার ওপর যে বসে আছে, তার হাতে একটা দাঁড়িপাল্লা। 6 এরপর আমি সেই চারজন প্রাণীর মধ্য থেকে একটা স্বরের মত কোন একটা কিছু শুনতে পেলাম। সেই স্বর বলছে, “এক সের গম একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান; আর তিন সের যব, একজন মজুরের দৈনিক মজুরীর সমান। অলিভ তেল ও দ্রাক্ষারস নষ্ট করো না।”
7 মেষশাবক যখন চতুর্থ সীলমোহরটি ভাঙলেন, তখন আমি সেই প্রাণীদের মধ্যে চতুর্থ জনকে বলতে শুনলাম, “এস!” 8 পরে আমি দেখলাম, একটা পাণ্ডুবর্ণ ঘোড়া আমার সামনে। তার ওপর যে বসে আছে তার নাম “মৃত্যু” আর পাতাল তার ঠিক পেছনেই আছে। তাকে পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ লোকের ওপরে কর্তৃত্ত্ব করবার ক্ষমতা দেওয়া হল, যেন সে যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও হিংস্র পশুদের দিয়ে সকলকে বধ করতে পারে।
9 মেষশাবক যখন পঞ্চম সীলমোহরটি ভাঙলেন, তখন আমি যজ্ঞবেদীর নীচে সেইসব আত্মাকে দেখলাম যাঁদের হত্যা করা হয়েছিল, কারণ তাঁরা ঈশ্বরের বার্তা বিশ্বস্তভাবে প্রচার করেছিলেন এবং তাঁদের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। 10 তাঁরা উচ্চকন্ঠে বললেন, “পবিত্র ও সত্য প্রভু, যাঁরা আমাদের হত্যা করেছে, পৃথিবীর সেই সমস্ত লোকদের বিচার করতে ও শাস্তি দিতে তুমি আর কতো দেরী করবে?” 11 তাঁদের প্রত্যেককে শুভ্র রাজ-পোশাক দেওয়া হল এবং আরও কিছুকাল অপেক্ষা করতে বলা হল, কারণ তাঁদের কিছু সহসেবক ভাই ও বোন তখনও ছিলেন যাঁরা তাঁদের মত নিহত হবেন। এই সমস্ত নিয়ম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে বলা হল।
12 পরে আমি যা দেখলাম, তিনি ষষ্ঠ সীলমোহরটি ভাঙলেন। তখন ভীষণ ভূমিকম্প হল। সূর্য কালো শোকবস্ত্রের মত হয়ে গেল আর চাঁদ রক্তের মতো লাল হয়ে গেল। 13 প্রবল বাতাসে নড়ে গাছ থেকে যেমন কাঁচা ডুমুর পড়ে যায়, তেমনি আকাশ থেকে নক্ষত্ররা পৃথিবীতে খসে পড়তে লাগল। 14 গোটানো পুঁথির মতো আকাশমণ্ডল অদৃশ্য হল। সমস্ত পাহাড় ও দ্বীপকে ঠেলে নিজের জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
15 পৃথিবীর রাজাগণ, সমস্ত অধিপতি, সেনাবাহিনীর অধিনায়করা, ধনবানরা, শক্তিশালী লোকরা ও পৃথিবীর সব স্বাধীন লোক এবং সমস্ত দাস গুহার মধ্যেও পাহাড়গুলির পাথরের মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে রাখলো। 16 তারা পর্বত এবং পাহাড়গুলোকে বলতে লাগল, “আমাদের ওপরে চেপে বসো এবং যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর কাছ থেকে এবং মেষশাবকের ক্রোধের হাত থেকে আমাদের লুকিয়ে রাখো। 17 কারণ তাদের ক্রোধের মহাদিন এসে পড়ল। কার সাধ্য আছে তার সামনে দাঁড়াবার?”
জেরুশালেম মাপা হল
2 তারপর আমি চোখ তুলে চেয়ে দেখলাম মাপার ফিতে হাতে একজন মানুষ। 2 আমি জিজ্ঞেস করলাম, “আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”
তিনি আমায় বললেন, “আমি জেরুশালেম মেপে দেখতে চাই তা দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে কতখানি।”
3 তখন যে দেবদূতটি আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি চলে গেলেন এবং আরেকটি দেবদূত তাঁর সঙ্গে কথা বলবার জন্য এগিয়ে এলেন। 4 তিনি তাকে বললেন, “দৌড়ে গিয়ে সেই যুবকদের বল যে জেরুশালেম মাপার পক্ষে অতিশয় বড়। তার কাছে গিয়ে এই কথাগুলো বল:
‘জেরুশালেম হবে প্রাচীরবিহীন একটি শহর
কারণ জেরুশালেমে বসবাসকারী মানুষ ও পশুর সংখ্যা হবে অনেক।’
5 প্রভু বলেছেন,
‘আমি শহরের চারধারে একটি আগুনের প্রাচীর তৈরী করে তাকে রক্ষা করব।
এবং সেই শহরের মহিমা আনয়ণ করবার জন্য আমি সেখানে বাস করব।’”
ঈশ্বর তাঁর লোকেদের বাড়ীতে আহবান করেছেন
6 প্রভু বলেছেন,
“তাড়াতাড়ি কর,
উত্তরে অবস্থিত দেশটি ত্যাগ কর!
হ্যাঁ, এটা সত্যি যে আমি তোমার লোকেদের
চতুর্দ্দিকে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম।
7 ওহে সিয়োনের লোকেরা, যারা বাবিলে বাস করছ,
তোমাদের প্রাণ বাঁচাতে এ জায়গা ছেড়ে যাও এবং ঐ শহর ছেড়ে পালাও!”
সর্বশক্তিমান প্রভুই এই কথা বলেছেন।
তিনি আমাকে সেই জাতিগুলির মধ্যে পাঠিয়েছেন যারা তোমাদের লুঠ করেছিল।
তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তোমাদের কাছে সম্মান আনতে।
8 “কারণ তোমাদের আঘাত করা,
ঈশ্বরের চোখের মণিকে আঘাত করবার তুল্য।
9 বাবিলের লোকরা আমার লোকদের কারারুদ্ধ করেছিল
এবং তাদের ক্রীতদাস বানিয়েছিল।”
কিন্তু আমি তাদের আঘাত করলে তারা আমার লোকেদের দাস হয়ে যাবে।
তখন তোমরা জানবে যে সর্বশক্তিমান প্রভুই আমায় পাঠিয়েছেন।
10 প্রভু বলেছেন,
“সিয়োন, আনন্দ করো এবং সুখী হও!
কারণ আমি আসছি এবং আমি তোমার শহরে বাস করব।
11 সেই সময়ে বহু জাতি
আমার কাছে আসবে।
তারা আমার লোক হবে
এবং আমি তোমার শহরে বাস করব।”
আর তুমি জানবে যে সর্বশক্তিমান প্রভু
আমায় তোমার কাছে পাঠিয়েছেন।
12 প্রভু জেরুশালেমকে তাঁর বিশেষ শহর হিসেবে আবার মনোনীত করবেন।
যিহূদা হবে পবিত্র ভূমিতে তাঁর অংশ।
13 প্রত্যেকে নীরব হও!
প্রভু তাঁর পবিত্র আবাস হতে আসছেন।
পুকুরপাড়ে এক পঙ্গুকে যীশু আরোগ্যদান করলেন
5 এরপর ইহুদীদের এক বিশেষ পর্বের সময় এলে যীশু জেরুশালেমে গেলেন। 2 জেরুশালেমে মেষ ফটকের কাছে একটা পুকুর ছিল। ইব্রীয়তে সেই পুকুরটিকে “বৈথেসদা” বলা হত। এই পুকুরটির পাঁচটি চাঁদনী ঘাট ছিল; 3 ঘাটের সেইসব চাতালে অনেক অসুস্থ লোক শুয়ে থাকত; তাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্ধ, কেউ কেউ খোঁড়া এমনকি পঙ্গু রোগীও থাকত।[a] 4 [b] 5 সেখানে একজন লোক ছিল যে আটত্রিশ বছর ধরে রোগে ভুগছিল। 6 যীশু তাকে সেখানে পড়ে থাকতে দেখলেন। তিনি জানতেন যে সে দীর্ঘদিন ধরে রোগে ভুগছে, তাই তাকে বললেন, “তুমি কি সুস্থ হতে চাও?”
7 সেই অসুস্থ লোকটি বলল, “মহাশয় আমার এমন কোন লোক নেই, জল কেঁপে ওঠার সময় যে আমাকে পুকুরে নামিয়ে দেবে। আমি ওখানে পৌঁছানোর আগেই কেউ না কেউ আমার আগে পুকুরে নেমে পড়ে।”
8 যীশু তাকে বললেন, “ওঠ! তোমার বিছানা গুটিয়ে নাও, হেঁটে বেড়াও।” 9 লোকটি সঙ্গে সঙ্গে ভাল হয়ে গেল, আর তার বিছানা তুলে নিয়ে হাঁটতে থাকল।
এ ঘটনা বিশ্রামবারে ঘটল, 10 তাই যে লোকটি আরোগ্য লাভ করেছিল তাকে ইহুদীরা বলল, “আজ বিশ্রামবার, এভাবে তোমার বিছানা বয়ে বেড়ানো বিধি-ব্যবস্থা বিরুদ্ধ কাজ হচ্ছে।”
11 সে তখন তাদের বলল, “যিনি আমাকে সারিয়ে তুলেছেন তিনি বলেছিলেন, ‘তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও।’”
12 তারা সেই লোকটিকে জিজ্ঞেস করল, “কে তোমাকে বলেছে যে তোমার বিছানা গুটিয়ে নিয়ে হেঁটে বেড়াও?”
13 কিন্তু যে লোকটি আরোগ্যলাভ করেছিল সে জানত না, তিনি কে। কারণ সেই জায়গায় অনেক লোক ভীড় করেছিল এবং যীশু সেখান থেকে চলে গিয়েছিলেন।
14 পরে যীশু মন্দিরের মধ্যে সেই লোকটিকে দেখতে পেয়ে তাকে বললেন, “দেখ, তুমি এখন সুস্থ হয়ে গেছ; আর পাপ কোরো না, যাতে তোমার আরও খারাপ কিছু না হয়!”
15 এরপর সেই লোকটি ইহুদীদের কাছে গিয়ে বলল যে, যীশুই তাকে আরোগ্য দান করেছেন।
16 আর এই কারণেই ইহুদীরা যীশুকে নির্যাতন করতে শুরু করল; কারণ তিনি বিশ্রামবারে এইসব কাজ করছিলেন। 17 তখন যীশু তাদের বললেন, “আমার পিতা সব সময় কাজ করে চলেছেন, তাই আমিও কাজ করি।”
18 তখন ইহুদীরা যীশুকে হত্যা করার জন্য আরো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে উঠল। তারা বলল, “তিনি যে কেবল বিশ্রামবারে বিধি-ব্যবস্থার বিরুদ্ধ কাজ করছিলেন তাই নয়, তিনি ঈশ্বরকে তাঁর পিতা বলে সম্বোধন করেছিলেন। আর এইভাবে তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সমান জাহির করছিলেন।”
ঈশ্বরের ক্ষমতা যীশুর আছে
19 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি পুত্র নিজে থেকে কিছু করতে পারেন না। পিতাকে যা করতে দেখেন কেবল তাই করতে পারেন। পিতা যা কিছু করেন পুত্রও তাই করেন। 20 পিতা পুত্রকে ভালবাসেন, আর পিতা যা কিছু করেন তা পুত্রকে দেখান আর এর থেকে আরো মহান মহান কাজ পুত্রকে তিনি দেখাবেন, তখন তোমরা আশ্চর্য হয়ে যাবে। 21 পিতা মৃতদের জীবন দান করেন, তেমনি পুত্রও যাকে ইচ্ছা করেন তাকে জীবন দেন।
22 “পিতা কারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার তিনি পুত্রকে দিয়েছেন, 23 যাতে পিতাকে যেমন সমস্ত লোক সম্মান করে তেমনি পুত্রকেও সম্মান করে। যে পুত্রকে সম্মান করে না, সে পিতাকেও সম্মান করে না, কারণ পিতাই সেইজন যিনি পুত্রকে পাঠিয়েছেন।
24 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে কেউ আমার কথা শোনে, আর যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন লাভ করে এবং সে অপরাধী বলে বিবেচিত হবে না। সে মৃত্যু থেকে জীবনে উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। 25 আমি তোমাদের সত্যি বলছি সময় আসছে; বলতে কি এসে গেছে, যখন মৃতেরা ঈশ্বরের পুত্রের রব শুনবে, আর যারা শুনবে তারা বাঁচবে। 26 পিতার নিজের যেমন জীবন দান করার ক্ষমতা রয়েছে ঠিক তেমনই তিনি তাঁর পুত্রকেও জীবন দান করার ক্ষমতা দিয়েছেন। 27 এবং পিতা সেই পুত্রের হাতেই সমস্ত বিচারের অধিকার দিয়েছেন, কারণ এই পুত্রই মানবপুত্র।
28 “এই কথা শুনে তোমরা অবাক হয়ো না, কারণ সময় আসছে, যারা কবরের মধ্যে আছে তারা সবাই মানবপুত্রের রব শুনবে। 29 তারপর তারা তাদের কবর থেকে বাইরে আসবে। যারা সৎ কর্ম করেছে তারা উত্থিত হবে ও অনন্ত জীবন লাভ করবে। আর যারা মন্দ কাজ করেছিল তারা পুনরুত্থিত হবে এবং দোষী বলে বিবেচিত হবে।
30 “আমি নিজের থেকে কিছুই করতে পারি না। আমি (ঈশ্বরের কাছ থেকে) যেমন শুনি তেমনি বিচার করি; আর আমি যা বিচার করি তা ন্যায়, কারণ আমি আমার ইচ্ছামতো কাজ করি না, বরং যিনি (ঈশ্বর) আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁরই ইচ্ছাপূরণ করার চেষ্টা করি।
যীশু ইহুদীদের সাথে কথা বলতে থাকলেন
31 “আমি যদি আমার নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই তবে আমার সেই সাক্ষ্য সত্য বলে গৃহীত হবে না। 32 অন্য একজন আছেন যিনি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দেন এবং আমি জানি, যে সাক্ষ্যই তিনি দেন না কেন তা সত্য।
33 “তোমরা সকলেই যোহনের কাছে লোক পাঠিয়েছ আর তিনি সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন। 34 কিন্তু আমি কোন মানুষের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করি না। তবু আমি এসব কথা বলছি, যাতে তোমরা উদ্ধার পেতে পার। 35 যোহন ছিলেন সেই প্রদীপের মতো যা জ্বলে এবং আলো দেয়; আর তোমরা কিছু সময়ের জন্য তার সেই আলো উপভোগ করে আনন্দিত হয়েছিলে।
36 “কিন্তু যোহনের সাক্ষ্য থেকে আরো বড় সাক্ষ্য আমার আছে; কারণ পিতা যে সব কাজ আমায় করতে দিয়েছেন, সে সব কাজ আমিই করছি, আর সেই সব কাজই প্রমাণ করছে যে পিতা আমায় পাঠিয়েছেন। 37 পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, এমনকি আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন, তোমরা কেউই কখনও তাঁর রব শোননি, তাঁর আকারও দেখনি। 38 আর তাঁর শিক্ষাও তোমাদের অন্তরে নেই, কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করো না। 39 তোমরা সকলেই খুব মনোযোগ সহকারে শাস্ত্রগুলি পড়, কারণ তোমরা মনে করো সেগুলির মধ্য দিয়েই তোমরা অনন্ত জীবন লাভ করবে আর সেই শাস্ত্রগুলিই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছে। 40 তবু তোমরা সেই জীবন লাভ করতে আমার কাছে আসতে চাও না।
41 “মানুষের প্রশংসা আমি গ্রহণ করি না। 42 আমি তোমাদের সকলকেই জানি আর এও জানি যে তোমরা ঈশ্বরকে ভালোবাসো না। 43 আমি আমার পিতার নামে এসেছি, তবু তোমরা আমায় গ্রহণ করো না; কিন্তু অন্য কেউ যদি তার নিজের নামে আসে তাকে তোমরা গ্রহণ করবে। 44 তোমরা কিভাবে বিশ্বাস করতে পারো? তোমরা তো একজন অন্য জনের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে চাও। আর যে প্রশংসা একমাত্র ঈশ্বরের কাছে থেকে আসে আর খোঁজ তোমরা করো না। 45 মনে করো না যে আমিই সেই ব্যক্তি যে পিতার কাছে তোমাদের ওপর দোষারোপ করব। তোমাদের সাহায্য করবেন বলে যে মোশির ওপর তোমরা আশা রাখো তিনিই তোমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন। 46 তোমরা যদি মোশিকে বিশ্বাস করতে তবে আমাকেও বিশ্বাস করতে, কারণ মোশি তা আমার বিষয়েই লিখেছেন। 47 তোমরা যখন মোশির লেখায় বিশ্বাস করো না, তখন আমি যা বলি তা কেমন করে বিশ্বাস করবে?”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International