M’Cheyne Bible Reading Plan
14 অবিয়র মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাহিত করার পর অবিয়র পুত্র রাজা আসা তাঁর জায়গায় নতুন রাজা হলেন। আসার রাজত্বকালে দেশে দশ বছরের জন্য শান্তি বিরাজ করেছিল।
যিহূদার রাজা আসা
2 আসা নিষ্ঠাভরে তাঁর প্রভুর সেবা করেছিলেন। 3 তিনি বিদেশীদের বেদী এবং উচ্চস্থলগুলি সরিয়ে দিলেন এবং তিনি পাথরের মূর্ত্তিগুলি এবং আশেরার খুঁটিগুলি ভেঙ্গে দিলেন। 4 তিনি লোকদের তাদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের বিধি এবং আদেশসমূহ পালন করতে বলেছিলেন। 5 আসা যিহূদার সবকটি শহরের উঁচু বেদীগুলি এবং সূর্য মূর্ত্তিগুলি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। যে কারণে প্রভুর আশীর্বাদে তাঁর রাজত্বকালে রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করতো। 6 শান্তির সময় আসা শহরগুলোকে শক্তিশালী করেছিলেন যখন দেশ যুদ্ধ থেকে মুক্ত ছিল, কারণ প্রভু তাকে শান্তি দিয়েছিলেন।
7 আসা যিহূদার লোকদের ডেকে বললেন, “এসো আমরা এইসব শহরগুলো পোক্ত করে বানিয়ে এগুলোর চারপাশ দেওয়াল দিয়ে ঘিরে দিই। তারপর প্রহরা স্তম্ভ আর গরাদ বসানো দরজা বানাই। আমাদের প্রভুকে অনুসরণ করার জন্যই আজ এই শহর আমাদের হয়েছে। প্রভু আমাদের শান্তি দিয়েছেন।” আসা ও তাঁর প্রজারা তাঁদের এই কাজে সফল হয়েছিলেন।
8 আসার সেনাবাহিনীতে যিহূদা জনগোষ্ঠীর মোট 300,000 বল্লমধারী সেনা ও বিন্যামীন জনগোষ্ঠীর 280,000 ধনুর্ধর সেনা ছিল। যিহূদার সৈনিকরা বল্লম ও ঢাল নিয়ে যুদ্ধ করতেন। বিন্যামীনের সৈনিকরা ছোট ছোট ঢাল এবং তীরধনুক নিয়ে যুদ্ধ করতে পারতেন। এঁরা সকলেই ছিলেন সাহসী ও বীর যোদ্ধা।
9 কূশ দেশের সেরহ 1,000,000 সেনা ও 300 রথ নিয়ে আসার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসে মারেশা নগর পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন। 10 আসাও তাঁর সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে মারেশার সফাথা উপত্যকায় এসে উপস্থিত হলেন।
11 আসা তাঁর প্রভু ঈশ্বরকে ডেকে বললেন, “হে প্রভু, শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্বলদের একমাত্র তুমিই সাহায্য করতে পারো। আমাদের প্রভু, ঈশ্বর তুমি আমাদের সহায় হও। আমরা তোমার ওপর নির্ভর করছি। প্রভু তোমার নাম নিয়ে আমরা এই বিশাল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি। তুমি আমাদের ঈশ্বর। দেখো, তোমার সেনাবাহিনীকে কেউ যেন হারাতে না পারে।”
12 প্রভু তখন আসার সেনাবাহিনীর হাতে কূশ দেশের সেনাবাহিনীর পরাজয় সাধন করলেন। সেই কূশ সেনারা পালিয়ে গেল। 13 আসার সেনারা তাদের ধাওয়া করে গরার পর্যন্ত তাড়া করল। যুদ্ধে প্রভুর বাহিনীর এতো বেশী সংখ্যক কূশ সেনা মারা গিয়েছিল যে তাদের পক্ষে আর একত্রিত হয়ে বাহিনী তৈরী করে যুদ্ধ করা সম্ভব ছিল না। আসা আর তাঁর সেনাবাহিনী শত্রুপক্ষের ফেলে যাওয়া বহু মূল্যবান জিনিষপত্র উদ্ধার করে দখল করলেন। 14 তারা গরারের পাশ্ববর্তী সমগ্র শহরকে যুদ্ধে পরাজিত করলেন। এইসব শহরের বাসিন্দারা প্রভুর কোপানলের ভয়ে ভীত ছিল। আসার সেনাবাহিনী এইসব শহর থেকে বহু দুর্মূল্য জিনিসপত্র দখল করে নিয়েছিল। 15 এরপর তারা মেষপালকদের ছাউনি আক্রমণ করে সেখান থেকে বহু সংখ্যক মেষ ও উট কেড়ে নিয়ে আবার জেরুশালেমে ফিরে গেল।
আসার পরিবর্তন
15 এখন ঈশ্বরের আত্মা ওবেদের পুত্র অসরিয়র ওপর এল। 2 তিনি আসার সঙ্গে দেখা করে বললেন, “আসা আর যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত লোকরা, তোমরা শোনো! তোমরা যদি প্রভুকে অনুসরণ করো তিনি তোমাদের সহায় থাকবেন। তোমরা যদি সত্যিই তাঁকে পেতে চাও, তোমরা তাঁকে পাবে। কিন্তু, তোমরা যদি তাঁকে পরিত্যাগ করো, তিনিও তোমাদের পরিত্যাগ করবেন। 3 দীর্ঘকাল ইস্রায়েলে কোনো প্রকৃত ঈশ্বর, কোনো শিক্ষক, যাজক বা বিধি ছিল না। 4 কিন্তু যখন ইস্রায়েলীয়রা সঙ্কটের সন্মুখীন হল, তারা আবার প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাকালো। তারা তাঁকে খুঁজলো এবং তিনি তাদের তাঁকে খুঁজতে দিলেন। 5 সেই সময়ে, সমস্ত জাতিগুলোর মধ্যে একটি বিরাট অশান্তি চলছিল। যে কোন একজন ব্যক্তির পক্ষে নিরাপদে চলাফেরা করা প্রায় অসম্ভব ছিল। 6 জাতিগুলি অপর জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল, এবং শহরগুলি অন্য শহরগুলির সঙ্গে লড়াই করছিল, যার ফলে সকলেই এক নিদারুণ তাণ্ডবের মধ্যে ছিল, কারণ ঈশ্বর সমস্ত রকম অশান্তি দিয়ে তাদের ওপর আঘাত হেনেছিলেন। 7 কিন্তু শোনো আসা, তুমি আর যিহূদা ও বিন্যামীনের লোকেরা সবরকম পরিস্থিতিতেই দৃঢ় থেকো। কখনও কোনো দুর্বলতা প্রকাশ করো না। তোমাদের এই দৃঢ় থাকার উপযুক্ত প্রতিদান তোমরা নিশ্চয়ই পাবে।”
8 আসা ওবেদের এইসব কথা শুনে খুবই অনুপ্রাণিত বোধ করলেন। তিনি যিহূদার ও বিন্যামীনের সমগ্র অঞ্চল থেকে ও তাঁর দখল করা ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চলের সমস্ত শহরগুলি থেকে যাবতীয় ঘৃণ্য মূর্ত্তিগুলি সরিয়ে দিলেন। প্রভুর মন্দিরের দালানের সামনের প্রভুর বেদীটিও তিনি মেরামৎ করলেন।
9 এরপর, আসা যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত লোককে ও ইফ্রয়িম, মনঃশি ও শিমিয়োন পরিবারগোষ্ঠী যারা ইস্রায়েল ত্যাগ করে যিহূদায় বাস করতে গিয়েছিলেন তাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই প্রভুকে আসার পক্ষ নিতে দেখেই ইস্রায়েল ত্যাগ করে গিয়েছিল।
10 আসা আর এই সমস্ত লোকরা তাঁর রাজত্বের 15তম বছরের তৃতীয় মাসে জেরুশালেমে একত্রিত হল। 11 সেই সময় তারা তাদের শত্রুদের কাছ থেকে আনীত লুঠ করা দ্রব্য থেকে প্রভুর উদ্দেশ্যে 700 ষাঁড় এবং 7000 মেষ ও ছাগল উৎসর্গ করলেন। 12 সেই সময়ে তাঁরা সর্বান্তঃকরণে প্রভু তাঁদের পূর্বপুরুষের ঈশ্বরের সেবা করবেন বলে তাঁদের নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করলেন। 13 ঠিক হল যে ব্যক্তি প্রভু ঈশ্বরের সেবা করতে প্রতিবাদ করবে তা সে যতো গণ্যমান্য হোক্ বা সাধারণ কেউ হোক্ তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। এমনকি মহিলা হলেও তাকে মার্জনা করা হবে না। 14 তারপর আসা ও সবাই মিলে সমস্বরে প্রভুর সামনে শপথ করলো এবং শিঙা ও কাড়া-নাকাড়া বাজালো। 15 অতএব যিহূদার সমস্ত লোক আনন্দ করল কারণ তারা সর্বান্তঃকরণে একটি শপথ নিল, সম্পূর্ণ বাসনা নিয়ে তাঁর অনুসরণ করেছিল এবং তাঁকে খুঁজে পেয়েছিল। তাই প্রভু তাদের সারা দেশে শান্তি দিয়েছিলেন।
16 রাজা আসা তাঁর মা মাখাকে রাণীর পদ থেকে অপসারণ করেছিলেন যেহেতু তিনি আশেরা মূর্ত্তির জন্য পূজার বস্তু হিসাবে ভয়ঙ্কর খুঁটিগুলোর একটা নিজে পুঁতেছিলেন। তিনি সেই খুঁটিটা উপড়ে ফেলে টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গে কিদ্রোণ নদীতে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিলেন। 17 যিহূদা থেকে উঁচু বেদীগুলো সরানো না হলেও আসা আজীবন সমস্ত অন্তঃকরণ দিয়ে প্রভুকে অনুসরণ করেছিলেন।
18 এছাড়াও আসা ঈশ্বরের মন্দিরে তাঁর ও তাঁর পিতার পক্ষ থেকে বহু মূল্যবান সোনা ও রূপোর সামগ্রী দান করেছিলেন। 19 আসার রাজত্বের 35 বছর পর্যন্ত কোনো যুদ্ধ হয় নি।
যোহনের স্বর্গীয় দর্শন
4 এরপর আমি একটি দর্শন পেলাম; আর দেখতে পেলাম আমার সামনে স্বর্গে একটা দরজা খোলা রয়েছে। এর আগে যে কন্ঠস্বর আমার সঙ্গে কথা বলেছিল, সেই একই স্বর আর তূরীর আওয়াজ শুনতে পেলাম, তা আমাকে বলছে, “এখানে উঠে এস। এরপর যা কিছু অবশ্যই ঘটবে তা আমি তোমাকে দেখাব।” 2 মুহূর্তের মধ্যে আমি আত্মাবিষ্ট হলাম, আমার সামনে স্বর্গে এক সিংহাসন ছিল, সেই সিংহাসনের ওপর একজন বসেছিলেন। 3 যিনি সেখানে বসেছিলেন, তাঁর দেহ সূর্য্যকান্ত ও সার্দীয় মণির মত অত্যুজ্জ্বল। সেই সিংহাসনের চারদিকে পান্নার মতো ঝলমলে মেঘধনুক ছিল।
4 সেই সিংহাসনের চারদিকে চব্বিশটি সিংহাসন ছিল। সেইসব সিংহাসনে চব্বিশ জন প্রাচীন[a] বসেছিলেন, তাঁরা সকলে শুভ্র পোশাক পরেছিলেন আর তাঁদের মাথায় সোনার মুকুট ছিল। 5 সেই সিংহাসন থেকে বিদ্যুতের ঝলকানি, গুরু গুরু শব্দ ও বজ্রধ্বনি নির্গত হচ্ছিল; আর সেই সিংহাসনের সামনে সাতটি মশাল জ্বলছিল। সাতটি আগুনের মশাল ঈশ্বরের সেই সপ্ত আত্মার প্রতীক। 6 আর সেই সিংহাসনের সামনে ছিল কাঁচের মতো সমুদ্র যা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ।
সিংহাসনের সামনে এবং সিংহাসনের চারদিকে চারজন প্রাণী ছিল যাদের সামনে ও পেছনে সর্বাঙ্গ চোখে ভরা ছিল। 7 প্রথম প্রাণীটি দেখতে সিংহের মতো, দ্বিতীয় প্রাণীটি ষাঁড়ের মতো, তৃতীয় প্রাণীটির মুখ মানুষের মুখের মতো। চতুর্থ প্রাণীটি উড়ন্ত ঈগলের মতো। 8 এই চারটি প্রাণীর প্রত্যেকের ছটি করে পাখা ছিল, সেই প্রাণীগুলির সর্বাঙ্গে, ভেতরে ও বাইরে ছিল চোখ, আর তাঁরা দিন-রাত সব সময় বিরত না হয়ে এই কথা বলছিলেন:
“পবিত্র, পবিত্র, পবিত্র প্রভু ঈশ্বর সর্বশক্তিমান,
যিনি ছিলেন, যিনি আছেন ও যিনি আসছেন।”
9 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন সেই জীবন্ত প্রাণীরা তাঁর মহিমা, সম্মান ও ধন্যবাদ কীর্তন করেন। ইনি হলেন সেই চিরজীবি। আর এইরকম ঘটলে প্রত্যেকবার, 10 যিনি সিংহাসনে বসে আছেন তাঁর সামনে ঐ চব্বিশজন প্রাচীন ভূমিষ্ট হয়ে প্রণাম করেন; আর যিনি চিরজীবি তাঁর উপাসনা করেন আর নিজের নিজের মাথার মুকুট সিংহাসনের সামনে রেখে বলেন:
11 “আমাদের প্রভু ও ঈশ্বর!
তুমি মহিমা, সম্মান ও পরাক্রম পাবার যোগ্য,
কারণ তুমি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছ।
তোমার ইচ্ছাতেই সব কিছু সৃষ্টি হয়েছে ও সব কিছুর অস্তিত্ব আছে।”
প্রভু লোকদের উৎসাহিত করলেন
2 প্রভু তাঁর ভাববাদী হগয়কে সপ্তম মাসের 21তম দিনে এই বার্তা দিয়েছিলেন। 2 “যিহূদার অধ্যক্ষ শল্টীয়েলের পুত্র সরুব্বাবিলের সঙ্গে যিহোষাদকের পুত্র মহাযাজক যিহোশূয়র সঙ্গে এবং সমস্ত লোকের সঙ্গে কথা বল। তাদের বল: 3 ‘তোমাদের মধ্যে এমন কে রয়েছে যে এই মন্দিরকে তার পূর্বের গৌরব মণ্ডিত অবস্থায় দেখেছিলে? তোমাদের কি মনে হয়? প্রথম মন্দিরটির তুলনায় এই মন্দিরটি কি দেখতে কিছুই নয়? 4 কিন্তু এখন প্রভু বলেন, “সরুব্বাবিল সাহস হারিয়ো না, শক্ত হও।” যিহোষাদকের পুত্র মহাযাজক যিহোশূয়, “সাহস হারিয়ো না, শক্ত হও।” এই দেশের সমস্ত লোককে প্রভু এই কথা বলেন, “সাহস হারিয়ো না, শক্ত হও। এই কাজ করে যাও কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে আছি!” প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথা বলেন!
5 “‘তোমরা যখন মিশর দেশ ত্যাগ করেছিলে সেই সময় আমি তোমাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলাম। আর আমি আমার সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছি। আমার আত্মা তোমাদের সঙ্গে রয়েছে। সুতরাং ভয় পেও না।’ 6 কারণ প্রভু সর্বশক্তিমান এই কথাগুলো বলছেন! ‘কিছু ক্ষণের মধ্যেই আমি আকাশ ও পৃথিবীকে নাড়া দেব। আমি সমুদ্র ও শুকনো জমিকেও কাঁপিয়ে তুলব। 7 আমি প্রত্যেকটি জাতিকে নাড়া দেব এবং তারা সমস্ত জাতিদের সমস্ত সম্পদ নিয়ে তোমার কাছে আসবে। তখন আমি এই মন্দির মহিমায় পূর্ণ করব।’ প্রভু সর্বশক্তিমান এইসব কথা বলছেন। 8 ‘সমস্ত রূপো আমারই, সোনাও আমার!’ সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেন। 9 ‘এই মন্দিরটির গৌরব প্রথম মন্দিরের গৌরবের চেয়ে অনেক বেশী হবে। সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেছেন।’ এই স্থানে আমি শান্তি প্রদান করব, সর্বশক্তিমান প্রভু এই কথা বলেছেন।”
কাজ শুরু হয়েছে—আশীর্বাদও আসবে
10 রাজা দারিয়াবসের রাজত্বকালের দ্বিতীয় বছরের নবম মাসের 24তম দিনে প্রভু ভাববাদী হগয়কে এই বার্তা দিয়েছিলেন। 11 প্রভু সর্বশক্তিমান বলেন, “এইগুলির সম্বন্ধে আইন কি বলে সেটা যাজকদের জিজ্ঞাসা কর। 12 ‘যদি কোন লোক তার কাপড়ের ভাঁজে মাংস বহন করে এবং তার পোষাক কিছু পাঁউরুটি, রান্না করা খাবার, দ্রাক্ষারস, তেল অথবা অন্য কোন খাদ্য স্পর্শ করে তাহলে কি এই জিনিষগুলি পবিত্র হয়ে যাবে?’”
যাজকরা উত্তরে বললেন, “না।”
13 তখন হগয় বললেন, “যদি কোন অশুচি ব্যক্তি এইসব জিনিস স্পর্শ করে তবে তা কি অশুচি হয়?”
আর যাজকরা উত্তরে বললেন, “তা অশুচি হয়।”
14 তখন হগয় বললেন, “প্রভু বলেন, ‘এই লোকরা এবং এই জাতি আমার সামনে পবিত্র নয়। তারা যা কিছু কাজ করে এবং যা কিছু মন্দিরে আনে সেগুলোও অশুদ্ধ।
15 “‘এখন, আগে যা ঘটেছিল সেগুলোর সম্বন্ধে ভাবো। প্রভুর মন্দিরে একটি পাথরের ওপর আর একটি স্থাপন করবার আগের সময়ের কথা ভাবো। 16 তখন তোমাদের কেমন অবস্থা ছিল? যখন একজন লোক 20 কাঠা পরিমাণের জন্য শস্যের স্তুপের কাছে এসেছিল তখন সে শুধু 10 কাঠা পেতে সমর্থ হয়েছিল। যখন একটি লোক 50 বোয়েম দ্রাক্ষারসের জন্য দ্রাক্ষারসের জালার কাছে এসেছিল, সেখানে ছিল শুধু 20 বোয়েম। 17 কেন? কারণ আমি তোমাদের শাস্তি দিয়েছিলাম। তোমরা তোমাদের হাত দিয়ে যে সব জিনিষ তৈরী করেছিলে সেগুলো ধ্বংস করবার জন্য আমি রোগসমূহ ও শিলাবৃষ্টি পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তবু তোমরা আমার কাছে ফিরে আসোনি।’ প্রভু এগুলি বলেছিলেন।
18 “প্রভু বলেন, ‘আজ নবম মাসের 24তম দিন। তোমরা প্রভুর মন্দিরের ভিত স্থাপনের কাজ শেষ করেছ। এবার লক্ষ্য কর আজকের দিনের পর থেকে কি ঘটে। 19 তোমাদের গোলায় কি কিছু শস্য অবশিষ্ট আছে? না। দ্রাক্ষালতা, ডুমুরগাছ, বেদানা ও অলিভ গাছের দিকে দেখ, তারা কি ফল দিচ্ছে? না। কিন্তু আজকের দিন থেকে আমি তোমাদের আশীর্বাদ করব!’”
20 মাসের 24তম দিনে প্রভুর কাছ থেকে হগয়ের কাছে আর একটি বার্তা এল। এই সেই বার্তা: 21 “যিহূদার অধ্যক্ষ সরুব্বাবিলের কাছে গিয়ে বল যে আমি আকাশ ও পৃথিবীকে কাঁপিয়ে তুলব। 22 আমি অনেক রাজা ও তাদের রাজ্যকে উল্টে ফেলব। আমি ঐসব রাজ্যের লোকদের শক্তিকেও খর্ব করব। আমি তাদের রথ ও রথের আরোহীদের ধ্বংস করব। তাদের যুদ্ধের ঘোড়া ও ঘোড়সওয়ারীকেও আমি ধ্বংস করব। সেই সমস্ত সৈন্যরা এখন পরস্পরের মিত্র কিন্তু তারাই একে অপরের বিরোধিতা করে তরবারি দিয়ে একে অপরকে হত্যা করবে।” 23 প্রভু সর্বশক্তিমান এইসব কথা বলেন, “শল্টীয়েলের পুত্র সরুব্বাবিল, তুমি আমার দাস। আমি তোমায় মনোনীত করেছি। সেই সময়ে আমি তোমাকে মোহরাঙ্কিত আংটির মত করে দেব। আমি যে এসব করেছি তার প্রমাণ তুমিই হবে।”
সর্বশক্তিমান প্রভু এইসব কথা বলেন।
যীশু ও নীকদীম
3 ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে একজন লোক ছিলেন। তিনি ইহুদী সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা। 2 একদিন রাতে তিনি যীশুর কাছে এসে বললেন, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষক, ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন। ঈশ্বর সহায় না হলে কেউ কি ঐরূপ অলৌকিক কাজ করতে পারে, যা আপনি করছেন?”
3 এর উত্তরে যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, নতুন জন্ম না হলে কোন ব্যক্তি ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পাবে না।”
4 নীকদীম তাঁকে বললেন, “মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে কেমন করে তার আবার নতুন জন্ম হতে পারে? সে নিশ্চয়ই দ্বিতীয় বার মায়ের গর্ভে প্রবেশ করে আবার জন্মাতে পারে না!”
5 যীশু তাঁকে বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কোন লোক জল ও আত্মা থেকে না জন্মায়, তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না। 6 শরীর থেকেই শরীরের জন্ম হয় আর আত্মা থেকে জন্ম হয় আধ্যাত্মিকতার। 7 আমি তোমাকে যা বললাম, তাতে আশ্চর্য হয়ো না, ‘তোমাদের নতুন জন্ম হওয়া অবশ্যই দরকার।’ 8 বাতাস যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে বয় আর তুমি তার শব্দ শুনতে পাও; কিন্তু কোথা থেকে আসে আর কোথায় বা তা বয়ে যায় তুমি তা জানো না। আত্মা থেকে যাদের জন্ম হয় তাদের সকলের বেলাও সেইরকম হয়।”
9 এর উত্তরে নীকদীম তাঁকে বললেন, “এটা কেমন করে হতে পারে?”
10 তখন যীশু তাঁকে বললেন, “তুমি ইস্রায়েলীয়দের একজন গুরুত্বপূর্ণ গুরু; আর তুমি এটা জানো না? 11 যা সত্য আমি তোমাকে তাই বলছি, আমরা যা জানি তাই বলি, আমরা যা দেখেছি সেই বিষয়েই সাক্ষ্য দিই: কিন্তু আমরা যাই বলি না কেন তোমরা তা গ্রহণ করো না। 12 আমি তোমাদের কাছে পার্থিব বিষয়ের কথা বললে তোমরা যদি বিশ্বাস না করো, তবে আমি স্বর্গীয় বিষয়ে কোন কথা বললে তোমরা তা কেমন করে বিশ্বাস করবে? 13 যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন সেই মানবপুত্র ছাড়া কেউ কখনও স্বর্গে ওঠেনি।
14 “মরুভূমির মধ্যে মোশি যেমন সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন, তেমনি মানবপুত্রকে অবশ্যই উঁচুতে ওঠানো হবে। 15 সুতরাং যে কেউ মানবপুত্রকে বিশ্বাস করে সেই অনন্ত জীবন পায়।”
16 কারণ ঈশ্বর এই জগতকে এতোই ভালবাসেন যে তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে দিলেন, যেন সেই পুত্রের ওপর যে কেউ বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় বরং অনন্ত জীবন লাভ করে। 17 ঈশ্বর জগতকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য তাঁর পুত্রকে এ জগতে পাঠাননি, বরং জগত যেন তাঁর মধ্য দিয়ে মুক্তি পায় এইজন্য ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছেন। 18 যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে তার বিচার হয় না। কিন্তু যে কেউ তাঁকে বিশ্বাস করে না, সে দোষী সাব্যস্ত হয়, কারণ সে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে নি। 19 আর এটাই বিচারের ভিত্তি। জগতে আলো এসেছে, কিন্তু মানুষ আলোর চেয়ে অন্ধকারকে বেশী ভালবেসেছে, কারণ তারা মন্দ কাজ করেছে। 20 যে কেউ মন্দ কাজ করে সে আলোকে ঘৃণা করে, আর সে আলোর কাছে আসে না, পাছে তার কাজের স্বরূপ প্রকাশ হয়ে পড়ে। 21 কিন্তু যে কেউ সত্যের অনুসারী হয় সে আলোর কাছে আসে, যাতে সেই আলোতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে তার সমস্ত কাজ ঈশ্বরের মাধ্যমে হয়েছে।
যীশু এবং বাপ্তিস্মদাতা যোহন
22 এরপর যীশু তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে যিহূদিয়া প্রদেশে এলেন। তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে থাকতে লাগলেন ও বাপ্তাইজ করতে লাগলেন। 23 যোহনও শালীমের নিকট ঐনোন নামক স্থানে বাপ্তাইজ করছিলেন, কারণ সেখানে প্রচুর জল ছিল; আর লোকেরা তাঁর কাছে এসে বাপ্তিস্ম নিচ্ছিল। 24 যোহন তখনও কারাগারে বন্দী হন নি।
25 সেই সময় ইহুদী রীতি অনুসারে শুচি হওয়ার বিষয়ে যোহনের শিষ্যদের সঙ্গে একজন ইহুদীর তর্ক বাধে। 26 পরে তারা যোহনের কাছে এসে বলল, “গুরু, তাঁকে মনে পড়ে যিনি যর্দন নদীর ওপারে আপনার সঙ্গে ছিলেন এবং যাঁর বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন? তিনি লোকেদের বাপ্তাইজ করছেন আর সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে।”
27 এর উত্তরে যোহন বললেন, “স্বর্গ থেকে দেওয়া না হলে কেউই কোন কিছু লাভ করতে পারে না। 28 তোমরা নিজেরাই শুনেছ যে আমি বলেছিলাম, ‘আমি খ্রীষ্ট নই; কিন্তু আমাকে তাঁর আগেই পাঠানো হয়েছে।’ 29 কনে বরেরই জন্য, কিন্তু বরের বন্ধু পাশে দাঁড়িয়ে থাকে বরের কথা শোনার জন্য। আর সে যখন বরের গলা শুনতে পায় তখন খুবই আনন্দিত হয়। তাই আজ আমার সেই আনন্দ পূর্ণ হল। 30 তিনি উত্তরোত্তর বড় হবেন, আর আমি অবশ্যই নগন্য হয়ে যাব।
একজন যিনি স্বর্গ থেকে আসেন
31 “একজন যিনি উর্দ্ধ থেকে আসেন তিনি সবার উর্দ্ধে। যে এই জগতের মধ্য থেকে আসে সে জগতের, তাই সে যা কিছু বলে তা জগতের বিষয়েই বলে। যিনি স্বর্গ থেকে আসেন তিনি সবার উপরে। 32 তিনি যা দেখেছেন আর শুনেছেন তারই সাক্ষ্য দেন; কিন্তু কেউই তাঁর সাক্ষ্য মেনে নিতে রাজী নয়। 33 যে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করে সে তার দ্বারা প্রমাণ করে যে ঈশ্বরই সত্য, 34 কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের কথাই বলেন। ঈশ্বর তাঁকে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ করেছেন। 35 পিতা তাঁর পুত্রকে ভালবাসেন, আর তিনি তাঁর হাতেই সব কিছু সঁপে দিয়েছেন। 36 যে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়; কিন্তু যে পুত্রকে অমান্য করে সে সেই জীবন কখনও লাভ করে না, বরং তার ওপরে ঈশ্বরের ক্রোধ থাকে।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International