M’Cheyne Bible Reading Plan
প্রভুকে মন্দির উৎসর্গ করা হল
7 শলোমনের প্রার্থনা শেষ হলে, আকাশ থেকে একটি অগ্নিশিখা নেমে এসে হোমবলি নিবেদিত উৎসর্গগুলিকে পুড়িয়ে ফেলল এবং প্রভুর মহিমার উপস্থিতিতে সমস্ত মন্দির ভরে গেল। 2 প্রভুর মহিমার উপস্থিতির কারণে যাজকরা প্রভুর মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না। 3 সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা যারা এই অগ্নিশিখা ও প্রভুর মহিমার উপস্থিতি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করল তারা তাদের মাথা আভূমি নত করল, তারা প্রভুর উপাসনা করল এবং গাইল,
“আমাদের প্রভু মহান;
তাঁর করুণা সদা প্রবহমান।”
4 অতঃপর রাজা শলোমন এবং ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুর সামনে 5 শুধুমাত্র ঈশ্বরের উপাসনার জন্য 22,000 ষাঁড় এবং 120,000 মেষ বলি দিয়ে মন্দিরটিকে শুদ্ধ ও পবিত্র করলেন। 6 যাজকরা, যাঁরা কাজের জন্য প্রস্তুত ছিলেন, তাঁরা লেবীয়দের বিপরীতে দাঁড়িয়েছিলেন। যাজকরা শিঙা বাজিয়ে উঠলেন এবং লেবীয়রা বাদ্যযন্ত্রের দ্বারা, যা রাজা দায়ূদ বানিয়েছিলেন প্রভুর প্রশংশা গান গাইবার জন্য কারণ তিনি চিরবিশ্বস্ত। যখন ইস্রায়েলের সমস্ত লোক সেখানে দাঁড়িয়েছিল।
7 এবং শলোমন প্রভুর মন্দিরের সামনের অঙ্গণের মধ্যভাগ নিবেদন করলেন এবং তিনি হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্যের চর্বি অংশটি উৎসর্গ করলেন। শলোমন এই উৎসর্গগুলি অঙ্গণের মাঝখানে নিবেদন করলেন কারণ তিনি পিতলের যে বেদীটি বানিয়েছিলেন সেটি হোমবলি, শস্য নৈবেদ্য চর্বি ধারণের পক্ষে খুবই ছোট ছিল।
8 শলোমন ও ইস্রায়েলের লোকরা টানা সাত দিন ধরে খাওয়া-দাওয়া ও উৎসব করলেন। শলোমনের সঙ্গে অনেকে ছিলেন। এঁরা সকলে হমাতের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে মিশরের ঝর্ণা পর্যন্ত বিস্তৃত সুবিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাস করতেন। 9 সাতদিন উৎসব পালনের পরে অষ্টম দিনের দিন একটা বড় পবিত্র সভার আয়োজন করা হল। এরপর শুধুমাত্র প্রভুর উপাসনার জন্য বেদীটিকে পবিত্র করে তাঁরা আরো সাতদিন ধরে খাওয়াদাওয়া ও আনন্দ করলেন। 10 সপ্তম মাসের 23 দিনের দিন শলোমন সবাইকে তাদের বাড়িতে ফেরৎ পাঠালেন। দায়ূদ ও তাঁর পুত্র শলোমন এবং ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি প্রভুর কৃপাদৃষ্টির কথা ভেবে সবাই খুবই খুশী ছিল এবং তাদের হৃদয় ভরে ছিল এক অনির্বচনীয় আনন্দে।
প্রভু শলোমনের সামনে আবির্ভূত হলেন
11 শলোমন সফলভাবে প্রভুর মন্দির ও তাঁর নিজের রাজপ্রাসাদ নির্মাণের কাজ শেষ করলেন। 12 তারপর রাতে স্বয়ং প্রভু শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন,
“শলোমন, তোমার প্রার্থনা আমার কানে পৌঁছেছে। এই স্থানটিকে আমি আমার কাছে বলিদানের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছি। 13 যদি আমি খরা পাঠাই অথবা পঙ্গপালের ঝাঁককে জমি গ্রাস করার আদেশ দিই অথবা যদি আমি লোকদের জীবনে ব্যাধি পাঠাই, 14 তখন যদি আমার লোকরা অসৎ পথ ও আচরণ ত্যাগ করে ব্যাকুল ও অনুতপ্ত চিত্তে আমায় ডাকে, তবে আমি অবশ্যই তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের পাপকে ক্ষমা করব এবং দেশটিকে সারিয়ে তুলব। 15 এখন যে প্রার্থনা এই স্থানে নিবেদিত হবে আমি তার প্রতি সজাগ থাকবো। 16 আমি এই মন্দিরকে আমার নাম প্রচারের জন্যে বেছে নিয়েছি এবং আমার উপস্থিতি দিয়ে একে পবিত্র করেছি। আমার দৃষ্টি ও হৃদয় সদাসর্বদা এখানেই থাকবে। 17 শোনো শলোমন, তুমি যদি তোমার পিতা দায়ূদের মতো আমার বিধি ও নিয়ম মেনে জীবনযাপন করো, 18 তাহলে তোমার পিতা দায়ূদের সঙ্গে আমি যে চুক্তি করেছিলাম, যাতে আমি বলেছিলাম, তোমার উত্তরপুরুষদের একজন সর্বদা ইস্রায়েল শাসন করবে, সেই চুক্তি অনুযায়ী আমি তোমাকে শক্তিশালী রাজা করে তুলবো।
19 “কিন্তু তুমি যদি আমার বিধি নির্দেশ যা আমি তোমাকে দিয়েছিলাম, অমান্য কর এবং অন্যান্য মূর্ত্তিসমূহের পূজো কর ও তাদের সেবা করতে শুরু করো, 20 তাহলে আমি আমার যে ভূখণ্ড তাদের দিয়েছিলাম সেখান থেকে ইস্রায়েলের লোকদের বিতাড়িত করব; এবং আমার নামে বানানো এই পবিত্র মন্দির ত্যাগ করব এবং এর এমন দশা করবো যে সমস্ত জাতিসমূহের মধ্যে সেটা একটা উপহাসের পাত্র হয়ে দাঁড়াবে। 21 এখন এই গৃহটি মহিমান্বিত। কিন্তু যখন এসব ঘটবে, যারাই এর পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে, আশ্চর্য হয়ে বলবে, ‘প্রভু কেন এই দেশ ও মন্দিরের প্রতি এই আচরণ করলেন?’ 22 তখন লোকরা উত্তর দেবে, ‘কারণ ইস্রায়েলের লোকরা প্রভুকে, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে, যিনি তাদের মিশর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তাঁকে পরিত্যাগ করেছে। তারা অন্য মূর্ত্তিসমূহের পূজো করে ও তাদের সেবা করে তাদের গ্রহণ করেছে। এই কারণে প্রভু তাদের ওপরে এই ভয়ঙ্কর এবং আতঙ্কজনক শাস্তি এনে দিয়েছেন।’”
1 সেই প্রাচীন এই চিঠি ঈশ্বরের মনোনীত মহিলা ও তাঁর সন্তানদের কাছে লিখেছে।
আমি তোমাদের সকলকে সত্যে ভালবাসি।
কেবল আমি নই, যারা সত্য কি জানে তারাও তোমাদের ভালবাসে। 2 সেই সত্য আমাদের অন্তরে আছে বলেই আমরা তোমাদের ভালবাসি। সেই সত্য আমাদের সঙ্গে চিরকাল থাকবে।
3 পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের কাছ থেকে অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি আমাদের সঙ্গে থাকবে। সত্য ও ভালবাসার মধ্য দিয়ে আমরা এই আশীর্বাদের অধিকারী হয়েছি।
4 তোমার সন্তানদের মধ্যে কেউ কেউ সত্য পথে চলছে ও পিতা আমাদের যেমন আদেশ করেছেন সেই অনুসারে জীবনযাপন করছে দেখে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। 5 প্রিয় ভদ্রমহিলা, তোমার কাছে আমার অনুরোধ আমরা যেন একে অপরকে ভালবাসি। এটা কোন নতুন আদেশ নয়। এই আদেশ তো আমরা শুরু থেকেই শুনে আসছি। 6 এবং এই ভালবাসার অর্থ হল, ঈশ্বর যেমন আদেশ করেছেন সেইরকমভাবে জীবনযাপন করা। ঈশ্বরের আদেশ হল তোমরা ভালবাসায় ভরা জীবনযাপন কর।
7 এই জগতে অনেক ভণ্ড শিক্ষক তৈরী হয়েছে। যীশু খ্রীষ্ট যে মানব দেহে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন একথা তারা স্বীকার করে না। যে এইরকম করে, সে শিক্ষক হিসেবে ঠগ্ ও খ্রীষ্টারি। 8 তোমরা নিজেদের সম্পর্কে সাবধান হও যাতে যে পুরস্কারের জন্য তোমরা কাজ করেছ তা থেকে তোমরা বঞ্চিত না হও। সতর্ক থেকো যেন পুরো পুরস্কারটাই পেতে পারো।
9 কেবল খ্রীষ্টের শিক্ষারই অনুসরণ করা উচিত, যদি কেউ খ্রীষ্টের শিক্ষাকে পরিবর্তিত করে তবে সে ঈশ্বরকে পায় না; কিন্তু যে কেউ সেই শিক্ষানুসারে চলে সে পিতা ও পুত্র উভয়কেই পায়। 10 যদি কেউ যীশুর বিষয়ে এই সত্য শিক্ষা না নিয়ে তোমাদের কাছে শিক্ষা দিতে আসে, তবে তাকে বাড়িতে গ্রহণ করো না, কোন রকম শুভেচ্ছাও তাকে জানিও না। 11 কারণ যে তাকে শুভেচ্ছা জানায় সে তার দুষ্কর্মের ভাগী হয়।
12 যদিও তোমাদের কাছে লেখার অনেক বিষয়ই আমার ছিল, কিন্তু আমি কলম ও কালি ব্যবহার করতে চাই না। আমি আশা করছি তোমাদের কাছে যাব তাহলে আমরা একসাথে হয়ে অনেক কথা বলতে পারব, যেন আমাদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়। 13 ঈশ্বরের মনোনীত তোমার বোনের[a] সন্তানরা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
2 আমি প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে থাকবো এবং লক্ষ্য রাখবো।
প্রভু আমাকে কি বলবেন তা দেখার জন্য আমি অপেক্ষা করবো।
তিনি কিভাবে আমার প্রশ্নের উত্তর দেন তা জানবার জন্য আমি অপেক্ষা করবো।
ঈশ্বর হবক্কূককে উত্তর দিলেন
2 প্রভু আমাকে উত্তর দিলেন, “আমি তোমাকে যা দেখাই তা লেখো। যাতে লোকরা সহজভাবে পড়তে পারে তার জন্য পরিষ্কার অক্ষরে লিখবে। 3 এই বার্তাটি ভবিষ্যতের এক বিশেষ সময়ের জন্য। এই বার্তাটি ভবিষ্যতের এক বিশেষ সময়ের জন্য। এই বার্তাটি সমাপ্তি সম্পর্কে। এটা সত্যিই ঘটবে। মনে হতে পারে যে সময়টা কখনও আসবে না। কিন্তু ধৈর্য্য ধরো এবং এর জন্য অপেক্ষা করো। সেই সময় আসবে, দেরী হবে না। 4 যারা শুনতে আগ্রহী নয়, তাদের এই বার্তাটি সাহায্য করবে না: কিন্তু যে ব্যক্তি ঠিক কাজ করে সে তার আনুগত্যের জন্য বেঁচে থাকে।”
5 ঈশ্বর বললেন, “মদ একজন লোককে বোকা বানাতে পারে। একইভাবে, একজন শক্তিশালী লোকের গর্ব তাকে বোকা বানাতে পারে; কিন্তু সে শান্তি পাবে না। মৃত্যুর মত, সে কখনও সন্তুষ্ট থাকবে না। সে অন্যান্য জাতিদের পরাস্ত করার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে। সে ওই সব লোকদের বন্দী করে নিয়ে যাবার কাজ চালিয়ে যাবে। 6 কিন্তু খুব শীঘ্রই ওই সব লোকরা তাকে দেখে হাসবে। তারা তার পরাজিত হবার ব্যাপারটা গল্প করে বলবে। তারা হাসবে আর বলবে, ‘হায়রে! মানুষটা এত কিছু জিনিস নিয়েও সেগুলি তার কাছে রাখতে পারবে না। সে ঋণ সংগ্রহ করে নিজেকে ধনী করে তুলেছিল।’
7 “শক্তিশালী পুরুষ, তুমি লোকের কাছ থেকে অর্থ নিয়েছ। এক দিন ওই লোকরা সচেতন হয়ে উঠবে এবং কি ঘটেছে তা বুঝতে পারবে। তখন তারা তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। তখন তারা তোমার কাছ থেকে জিনিসপত্র নিয়ে নেবে এবং তুমি খুবই ভয় পেয়ে যাবে। 8 তুমি বহু জাতির কাছ থেকে জিনিস চুরি করেছ সেজন্য ওই লোকরা তোমার কাছ থেকে অনেক কিছু নিয়ে নেবে। তুমি বহু লোককে হত্যা করেছ। তুমি বহু জায়গা এবং শহর ধ্বংস করেছ। সেখানকার সব লোকদের হত্যা করেছ।
9 “হ্যাঁ, অন্যায় কাজ করে যে ধনী হচ্ছে তার পক্ষে সেটা খুবই খারাপ হবে। সেই লোকটি নিরাপদ জায়গায় বাঁচার জন্য ওই কাজগুলি করছে। সে ভাবছে যে তার কাছ থেকে অন্য লোকদের চুরি করা সে বন্ধ করবে; কিন্তু তার ভাগ্যে খারাপ ঘটনাই ঘটবে। 10 তুমি বহু লোককে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছ; কিন্তু ঐ সকল পরিকল্পনায় তুমিই লজ্জিত হবে। তুমি অনেক মন্দ কাজ করেছ এবং তুমি তোমার জীবনটাকেই হারাবে। 11 পাথরের দেওয়ালগুলি তোমার বিরুদ্ধে চিৎকার করে উঠবে। এমনকি, তোমার নিজের বাড়ীর কাঠের ছাদের কড়ি-বরগাগুলোও স্বীকার করবে যে তুমি অন্যায় করেছ।
12 “যে নেতারা অন্যায় কাজ করে এবং নগর নির্মাণ করতে লোকদের হত্যা করে তাদের পক্ষে এটা খুবই খারাপ হবে। 13 সর্বশক্তিমান প্রভু ঠিক করেছেন যে এই লোকরা নির্মাণের জন্য যে কাজ করেছে তার সব কিছু আগুনে ধ্বংস করবে তাদের সব পরিশ্রম বৃথাই যাবে। 14 তখন প্রভুর মহিমার কথা সব জায়গার লোকরা জানতে পারবে। সমুদ্র থেকে জল যেমন ছড়িয়ে যায় সেই রকম ভাবে এই খবরটাও চারিদিকে ছড়িয়ে যাবে। 15 তোমরা যারা সুরাপান করিয়ে তোমাদের প্রতিবেশীদের মাতাল করে দাও তাদের খুব খারাপ পরিণতি হবে। রাগের চোটে তোমাদের প্রতিবেশীদের মাতাল করতে তোমরা তোমাদের দ্রাক্ষারস ঢেলে দাও যাতে তোমরা তাদের উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পাও।
16 “কিন্তু সেই লোকটি প্রভুর ক্রোধ কাকে বলে তা জানতে পারবে। সেই ক্রোধ প্রভুর ডান হাতের এক কাপ বিষের মতো। সেই লোকটি সেই ক্রোধের স্বাদ নেবে এবং মাতাল লোকের মতোই মাটির ওপর পড়ে যাবে।
“অসৎ শাসক, তুমি সেই কাপ থেকে বিষ পান করবে। তুমি লজ্জা পাবে, সম্মান নয়। 17 তুমি লিবানোনে বহু লোককে আঘাত করেছো। তুমি সেখান থেকে বহু জীবজন্তু চুরি করেছো। তাই তুমি, যারা মারা গেছে সেই লোকদের কারণে এবং ঐ দেশে তুমি যে খারাপ কাজ করেছিলে তার জন্য ভয় পাবে। ওই শহরের প্রতি এবং সেখানে বসবাসকারী জনগণের প্রতি তুমি যে সব মন্দ কাজ করেছিলে তার জন্য তুমি ভীত হবে।”
মূর্ত্তি সম্বন্ধে বার্তা
18 সেই লোকটির ভ্রান্ত দেবতা তাকে সাহায্য করবে না। কারণ সেটা কেবল মূর্ত্তিই যা ধাতু দিয়ে মোড়া। এটা কেবল মাত্রই মূর্ত্তি। সে জন্য যে লোকটি মূর্ত্তি তৈরী করেছে সে মূর্ত্তির কাছ থেকে সাহায্য পাবার আশা করতে পারে না। সেই মূর্ত্তিটি কথাও বলতে পারে না। 19 এটা সেই লোকটির পক্ষে খুবই খারাপ হবে যে কাঠের মূর্ত্তিকে বলে, “উঠে পড়ো!” এটা লোকটির পক্ষে খুবই খারাপ হবে যে, যে পাথর কথা বলতে পারে না তাকে বলে, “জেগে ওঠো!” এসব জিনিস তাকে সাহায্য করতে পারবে না। সেই মূর্ত্তিটি হয়তো সোনা এবং রূপোর দ্বারা আবৃত হতে পারে কিন্তু সেই মূর্ত্তিতে কোন প্রাণ নেই।
20 কিন্তু প্রভু হলেন অন্য রকম! প্রভু তাঁর পবিত্র মন্দিরে আছেন। সে জন্য সমস্ত পৃথিবী নিস্তব্ধ হবে এবং প্রভুর সামনে সম্মান প্রদর্শন করবে।
প্রকৃত দান
(মার্ক 12:41-44)
21 যীশু তাকিয়ে দেখলেন, ধনী লোকেরা মন্দিরের দানের বাক্সে তাদের দান রাখছে। 2 এরই মাঝে একজন অতি গরীব বিধবা তাতে খুব ছোট্ট ছোট্ট তামার মুদ্রা রাখল। 3 তখন যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই গরীব বিধবা অন্য আর সকলের থেকে অনেক বেশী দান করল। 4 আমি একথা বলছি কারণ অন্য আর সব লোক তাদের সম্পত্তির বাড়তি অংশ ঐ বাক্সে ফেলে গেল, কিন্তু এই বিধবার অভাব থাকা সত্ত্বেও জীবন ধারণের জন্য তার যা সম্বল ছিল, তার সবটাই দিয়ে গেল।”
মন্দির ধ্বংস
(মথি 24:1-14; মার্ক 13:1-13)
5 শিষ্যদের মধ্যে কেউ কেউ সেই মন্দিরের বিষয়ে এই মন্তব্য করলেন যে, “সুন্দর সুন্দর পাথর দিয়ে ও ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দানের জিনিস দিয়ে এই মন্দিরকে কেমন সাজানো হয়েছে!”
6 যীশু তাঁদের বললেন, “এই যে সব জিনিস তোমরা দেখছ, সময় আসবে যখন এর একটা পাথর আর একটার ওপর থাকবে না, সব ভেঙে ফেলা হবে।”
7 শিষ্যরা তখন যীশুকে জিজ্ঞেস করলেন, “গুরু এসব কখন ঘটবে? এবং কি চিহ্ন দেখে বোঝা যাবে এসব ঘটবার সময় এসে গেছে?”
8 যীশু বললেন, “সাবধান! কেউ যেন তোমাদের না ভোলায়, কারণ অনেকেই আমার নাম ধারণ করে আসবে আর বলবে, ‘আমিই তিনি’ আর তারা বলবে, ‘সময় ঘনিয়ে এসেছে।’ তাদের অনুসারী হয়ো না! 9 তোমরা যখন যুদ্ধ ও বিদ্রোহের কথা শুনতে পাবে, তাতে ভয় পেও না, কারণ প্রথমে নিশ্চয়ই এসব হবে; কিন্তু তখনও শেষ সময় আসতে বাকী থাকবে!”
10 এরপর তিনি তাদের বললেন, “এক জাতি আর এক জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য আর এক রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। 11 মহা ভূমিকম্প হবে, বিভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মহামারী দেখা দেবে; আর আকাশের বুকে ভয়াবহ ঘটনা ও মহৎ চিহ্ন দেখতে পাবে।
12 “কিন্তু এসব ঘটনা ঘটার আগে, তারা তোমাদের গ্রেপ্তার করবে, তোমাদের প্রতি নির্যাতন করবে। তারা বিচারের জন্য তোমাদের সমাজ-গৃহে সঁপে দেবে ও তোমাদের কারাগারে ভরবে। আমারই কারণে তারা তোমাদের রাজাদের ও রাজ্যপালদের সামনে টেনে নিয়ে যাবে। 13 তাতে আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য তোমরা সুযোগ পাবে। 14 তোমরা মনের দিক থেকে তৈরী থেকো; আত্মপক্ষ সমর্থন করতে তখন কি বলবে, কি জবাবদিহি করবে তার জন্য চিন্তা করো না। 15 কারণ সেই সময় আমি তোমাদের বুদ্ধি দেব, তোমাদের মুখে এমন কথা যোগাব যে তোমাদের বিপক্ষরা তা অস্বীকার করতে পারবে না আবার তার প্রতিবাদও করতে পারবে না। 16 কিন্তু তোমাদের আপন বাবা-মা ভাই ও আত্মীয় বন্ধুরাই তোমাদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে তোমাদের ধরিয়ে দেবে; এমন কি তোমাদের কাউকে কাউকে মেরেও ফেলবে। 17 আমারই কারণে তোমরা সকলের কাছে ঘৃণার পাত্র হবে। 18 কিন্তু তোমাদের মাথায় একটা চুলও নষ্ট হবে না। 19 তোমরা যদি বিশ্বাসে স্থির থাক, তবেই তোমাদের প্রাণ রক্ষা পাবে।
জেরুশালেমের ধ্বংসের দিন
(মথি 24:15-21; মার্ক 13:14-19)
20 “তোমরা যখন দেখবে যে সৈন্যসামন্তরা জেরুশালেমকে চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে, তখন বুঝবে যে তার ধ্বংসের সময় ঘনিয়ে এসেছে। 21 তখন যারা যিহূদিয়ায় থাকবে তারা যেন পালিয়ে যায়। যারা জেরুশালেমে থাকবে তারা যেন অবশ্যই নগর ছেড়ে পালায়; আর যারা গ্রামে থাকবে তারা যেন নগরে না আসে। 22 কারণ এই দিনগুলো হচ্ছে শাস্তির দিন, যা শাস্ত্রের বাণী অনুসারে পূর্ণ হবে। 23 ঐ দিনগুলোতে যাদের প্রসবকাল ঘনিয়ে এসেছে ও যাদের কোলে দুধের বাচ্চা আছে, সেই সব স্ত্রীলোকদের ভয়ঙ্কর দুর্দশা হবে। আমি একথা বলছি কারণ দেশে মহাসংকট আসছে ও এই লোকদের ওপর ঈশ্বরের ক্রোধ নেমে আসছে। 24 তরবারির আঘাতে তারা মারা পড়বে, আর তাদের বন্দী করে সকল জাতির কাছে নিয়ে যাওযা হবে। যতদিন না অইহুদীদের নিরুপিত সময় পূর্ণ হচ্ছে, জেরুশালেম অইহুদীদের দ্বারা অবজ্ঞা ভরে পদদলিত হবে।
ভয় করো না
(মথি 24:29-31; মার্ক 13:24-27)
25 “তখন চাঁদ, সূর্য্য ও তারাগুলিতে অনেক বিস্ময়কর জিনিস দেখা যাবে। পৃথিবীতে সমস্ত জাতি হতাশায় ভুগবে। তারা সমুদ্র গর্জন শুনে ও প্রচণ্ড ঢেউ দেখে ভয়ে বিহ্বল হয়ে পড়বে। 26 পৃথিবীতে যে ভয়ঙ্কর অবস্থা আসছে তার কথা ভেবে ভয়েতে লোকে অজ্ঞান হয়ে যাবে, কারণ আকাশের সব শক্তিগুলি ওলোট-পালট হয়ে যাবে। 27 এর পরই তারা মহাপরাক্রমে ও মহিমামণ্ডিত হয়ে মানবপুত্রকে মেঘের মধ্যে আসতে দেখবে। 28 এসব ঘটনা ঘটতে দেখলে মাথা তুলে উঠে দাঁড়িও, কারণ জেনো যে তখন তোমাদের মুক্তি আসছে!”
আমার বাক্য চিরজীবি
(মথি 24:32-35; মার্ক 13:28-31)
29 এরপর যীশু তাদের একটি দৃষ্টান্ত দিলেন, “ডুমুর গাছ ও অন্যান্য গাছের দিকে দেখ। 30 যে মুহূর্তে তাদের নতুন পাতা গজায়, তা দেখে তোমরা বুঝতে পার যে গ্রীষ্মকাল এসে পড়ল বলে। 31 ঠিক সেই রকম এইসব ঘটতে দেখলে তোমরা বুঝবে যে ঈশ্বরের রাজ্য এসে পড়েছে।
32 “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যতক্ষণ না এসব ঘটছে, এই বংশ লোপ পাবে না। 33 আকাশ ও পৃথিবী লোপ পাবে, কিন্তু আমার বাক্য কখনও লোপ পাবে না।
সর্বদাই প্রস্তুত থেকো
34 “তোমরা সতর্ক থেকো। উচ্ছৃঙ্খল আমোদ-প্রমোদে, মত্ততায়, জাগতিক ভাবনা চিন্তায় তোমাদের মন যেন আচ্ছন্ন না হয়ে পড়ে, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের মতো তোমাদের ওপর এসে না পড়ে। 35 বাস্তবিক, পৃথিবীর সব লোকের জন্যই সেই দিন আসবে। 36 তাই সব সময় সজাগ থেকো, আর প্রার্থনা করো যেন যাই ঘটুক না কেন তা কাটিয়ে উঠবার ও মানবপুত্রের সামনে দাঁড়াবার শক্তি তোমাদের থাকে।”
37 তিনি মন্দিরের মধ্যে প্রতিদিন শিক্ষা দিতেন কিন্তু সন্ধ্যা হলে রাতে থাকার জন্য জৈতুন পর্বতে চলে যেতেন। 38 প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে লোকেরা তাঁর কথা শোনার জন্য মন্দিরে যেত।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International