M’Cheyne Bible Reading Plan
জ্ঞানের জন্য শলোমনের প্রার্থনা
1 প্রভু তাঁর ঈশ্বর সহায় থাকায় শলোমন রাজা হিসেবে খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন, প্রভু তাঁকে অতুল সম্পদ ও ক্ষমতার অধীশ্বর করেছিলেন।
2-3 শলোমন ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সেনাপতি থেকে শুরু করে বিচারক এবং পরিবারসমূহের কর্ত্তাগণ, সকলের সঙ্গে কথা বললেন। শলোমন সহ তাঁরা সবাই গিবিয়োনের উচ্চস্থানে জড়ো হলেন যেখানে ঈশ্বরের সমাগম তাঁবু ছিল। প্রভুর অনুগত দাস মোশি ও ইস্রায়েলের লোকেরা যখন মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, সে সময়ে তাঁরা এই তাঁবুর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। 4 এখন দায়ূদ কিরিয়ৎ-যিয়ারীম থেকে ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুকটি জেরুশালেমে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এটা রাখার জন্য সেখানে একটা বিশেষ তাঁবু বানিয়েছিলেন। 5 ঊরির পুত্র বৎসলেল একটি পিতলের বেদী বানিয়েছিলেন। সেটা গিবিয়োনের এই পবিত্র তাঁবুর সামনে রাখা হয়েছিল। এ কারণে শলোমন ও লোকরা সেখানে প্রভুর পরামর্শ ও উপদেশ নিতে গিয়েছিলেন। 6 শলোমন সমাগম তাঁবুর সামনে পিতলের বেদীর ওপর গেলেন, যেটি প্রভুর সামনে ছিল এবং সেই বেদীর ওপরে 1000 হোমবলি উৎসর্গ করলেন।
7 সেই রাতে ঈশ্বর শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “শলোমন তুমি আমার কাছে যা চাও প্রার্থনা করো।”
8 শলোমন ঈশ্বরকে বললেন, “হে প্রভু, আমার পিতা দায়ূদের প্রতি আপনি আপনার অসীম করুণা বর্ষন করেছিলেন। তাঁর জায়গায় আপনি স্বয়ং আমাকে নতুন রাজা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। 9 প্রভু ঈশ্বর, আপনি তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাকে সুবিশাল সাম্রাজ্যের রাজা করবেন। এখন আপনি সেই প্রতিশ্রুতি রাখুন! আকাশের সহস্র তারার মত পৃথিবীর অগনিত লোক এখন আমার আজ্ঞাধীন। 10 আপনি অনুগ্রহ করে আমাকে এই সমস্ত লোকদের সঠিক পথে পরিচালনা করবার মতো বুদ্ধি ও জ্ঞান দিন। আপনার কৃপা ছাড়া কারো পক্ষেই এই সমস্ত লোকদের শাসন করা সম্ভব নয়।”
11 ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “তুমি সঠিক উত্তরটি দিয়েছ; যাদের আমি মনোনীত করেছি, আমার সেই লোকদের নেতৃত্ব দেবার ও শাসন করবার জন্য তুমি জ্ঞান ও বুদ্ধি চেয়েছ, বিষয় সম্পত্তি, ধন ও সম্মান, তোমার শত্রুদের মৃত্যু এমনকি দীর্ঘ জীবনও চাওনি। 12 তাই আমি তোমাকে জ্ঞান ও বুদ্ধি তো দেবই উপরন্তু তোমায় ধনসম্পদ, খ্যাতি ও প্রতিপত্তি, নামযশ এসবও দেবো। তুমি যা পাবে এখনো পর্যন্ত কোনো রাজাই তা পায়নি এবং ভবিষ্যতেও পাবে না।”
13 শলোমন তারপর গিবিয়োনের উপাসনাস্থানে গেলেন এবং সমাগম তাঁবু থেকে আবার ইস্রায়েল শাসন করার জন্য জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।
শলোমনের সম্পদ ও সৈন্য বৃদ্ধি
14 এরপর শলোমন তাঁর সেনাবাহিনীর জন্য ঘোড়া ও রথ সংগ্রহ করতে শুরু করলেন। শলোমন 1400 রথ এবং 12,000 অশ্বারোহী সারথী সংগ্রহের পর এইসব রথ রাখার জন্য যে বিশেষ শহরগুলি বানিয়েছিলেন সেখানে পাঠিয়ে দিলেন। কিছু রথ ও অশ্বারোহী সেনা জেরুশালেমে তাঁর প্রাসাদেও রেখে দিলেন। 15 শলোমন জেরুশালেমে সোনা এবং রূপাকে পাথরের মতো সাধারণ করে তুলেছিলেন। তিনি সাধারণ সুকমোর গাছপালার মতোই তাঁর রাজত্বের পশ্চিমের পাহাড়গুলিতে বিরল এরস গাছ লাগিয়েছিলেন। 16 শলোমনের ঘোড়াগুলি মিশর এবং কুয়ে থেকে আনা হয়েছিল। তাঁর বণিকরা সেগুলি কুয়ে থেকে কিনেছিল। 17 এই সমস্ত বণিকরা 600 শেকেল রূপোর বিনিময়ে একটি রথ ও 150 শেকেল রূপোর বিনিময়ে একটা ঘোড়া কিনত। সমস্ত হিত্তীয় ও অরামীয় রাজারা এইসব বণিকদের মারফত তাঁদের ঘোড়া ও রথগুলি কিনেছিলেন।
1 পৃথিবীর শুরু থেকেই যা বর্তমান তেমন একটি বিষয় এখন তোমাদের কাছে বলছি: আমরা তা শুনেছি, তা স্বচক্ষে দেখেছি, তা মনোযোগ সহকারে নিরীক্ষণ করেছি; আর নিজেদের হাত দিয়ে তা স্পর্শ করেছি। আমরা সেই বাক্যের বিষয় বলছি যা জীবনদায়ী। 2 সেই জীবন আমাদের কাছে প্রকাশিত হয়েছিল, আমরা তা দেখেছি, আর তার বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারি। এখন তোমাদের কাছে সেই জীবনের কথা বলছি; এ হল অনন্ত জীবন যা পিতা ঈশ্বরের কাছে ছিল। ঈশ্বর আমাদের কাছে সেই জীবন তুলে ধরলেন। 3 আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি সে বিষয়েই এখন তোমাদের কাছে বলছি কারণ আমাদের ইচ্ছা তোমরাও আমাদের সহভাগী হও। আমাদের এই সহভাগীতা ঈশ্বর পিতা ও তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের সঙ্গে। 4 আমাদের আনন্দ যেন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে সেই জন্য আমরা তোমাদের এসব লিখছি।
ঈশ্বর আমাদের পাপ ক্ষমা করেন
5 এই সেই বার্তা যা আমরা খ্রীষ্টের কাছ থেকে শুনেছি এবং তোমাদের কাছে ঘোষণা করছি—ঈশ্বর জ্যোতি; ঈশ্বরের মধ্যে কোন অন্ধকার নেই। 6 তাই আমরা যদি বলি যে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সহভাগীতা আছে, কিন্তু যদি অন্ধকারে জীবনযাপন করতে থাকি, তাহলে মিথ্যা বলছি ও সত্যের অনুসারী হচ্ছি না। 7 ঈশ্বর জ্যোতিতে আছেন, আমরা যদি সেই রকম জ্যোতিতে বাস করি, তবে বলা যায় আমাদের পরস্পরের মধ্যে সহভাগীতা আছে। ঈশ্বরের পুত্র যীশুর রক্ত আমাদের সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করে।
8 আমরা যদি বলি যে আমাদের কোন পাপ নেই, তাহলে আমরা নিজেদেরই ঠকাই এবং তাঁর সত্য আমাদের মধ্যে নেই। 9 আমরা যদি নিজেদের পাপ স্বীকার করি, বিশ্বস্ত ও ধার্মিক ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন ও সকল অধার্মিকতা থেকে আমাদের শুদ্ধ করবেন। 10 আর যদি বলি, আমরা পাপ করিনি, তবে আমরা ঈশ্বরকে মিথ্যাবাদী প্রতিপন্ন করি এবং তাঁর বার্তা আমাদের অন্তরে নেই।
জনসাধারণের খারাপ কাজে মীখা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
7 আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
কারণ আমি যেন গাছ থেকে পেড়ে নেওয়া ফলের মতো,
যেসব দ্রাক্ষাগুলো গাছ থেকে তোলা হয়ে গেছে ঠিক তাদের মতো।
খাবার জন্য কোন দ্রাক্ষা সেখানে নেই।
যা আমি ভালোবাসি সেই নতুন গজানো ডুমুর পর্যন্ত নেই।
2 আমি বলতে চাইছি, সব বিশ্বাসী লোকেরা চলে গেছে।
এই দেশে আর কোন ভাল লোক পড়ে নেই।
প্রত্যেক লোক অপরকে হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে।
প্রত্যেক ব্যক্তি তার ভাইকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে।
3 লোকরা এখন দুহাতেই খারাপ কাজ করতে দক্ষ।
উঁচু পদস্থ কর্মচারীরা এখন ঘুষ চাইছে।
বিচারকরা আদালতে তাদের মত পরিবর্তনের জন্য টাকা নিচ্ছে।
“গণমান্য নেতারা” ভালো এবং ন্যায্য মতামত দেয় না।
তারা যা কিছু ইচ্ছা করে সেটাই করছে।
4 এমনকি তাদের মধ্যে যে সবচেয়ে ভাল
সেও জট পাকানো কাঁটা ঝোপের চেয়ে অনেক বেশী প্যাঁচালো।
শাস্তির দিন আসছে
ভাববাদীরা বলেছিল যে এই দিনটি আসবে;
তোমাদের পাহারাদারদের[a] দিন এসে গেছে।
এখন তোমরা শাস্তি পাবে!
এখন তোমরা বিভ্রান্ত হয়ে যাবে!
5 তোমাদের প্রতিবেশীকে বিশ্বাস করো না!
বন্ধুকে বিশ্বাস করো না!
এমনকি তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গেও খোলাখুলিভাবে কথা বলো না!
6 নিজের বাড়ীর লোকেরাই মানুষের শত্রু হবে।
পুত্র তার পিতাকে সম্মান করবে না।
কন্যা তার মাতার বিরুদ্ধে যাবে।
একজন বধূ তার শ্বাশুড়ীর বিরুদ্ধে যাবে।
প্রভুই পরিত্রাতা
7 সেজন্য আমি সাহায্য পাবার জন্য প্রভুর দিকে তাকাবো!
আমি রক্ষা পাবার জন্য আবার ঈশ্বরের অপেক্ষা করবো!
আমার ঈশ্বর আমার কথা শুনবেন।
8 আমার পতন হয়েছে কিন্তু শত্রু আমাকে নিয়ে উপহাস করো না!
আমি আবার উঠবো।
এখন আমি অন্ধকারে বসে আছি।
কিন্তু প্রভু আমার জন্য আলোকস্বরূপ হবেন।
প্রভু ক্ষমা করেন
9 প্রভুর বিরুদ্ধে আমি পাপ করেছিলাম।
তাই তিনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন।
কিন্তু তিনি আদালতে আমার জন্য আমার মামলায় তর্ক করবেন।
তিনি আমায় নির্দোষ প্রমাণ করবেন
এবং আমাকে আলোয় নিয়ে আসবেন।
আমি তাঁর ন্যায়পরায়ণতা দেখব।
10 আমার শত্রুরা এটা দেখে লজ্জিত হবে।
কারণ আমার সেই শত্রুরা আমাকে বলেছিল,
“তোমার প্রভু ঈশ্বর কোথায়?”
আমি তাকে নিয়ে মজা করব।
রাস্তার কাদার মতো লোকেরা তার ওপর দিয়ে হেঁটে যাবে।
ইহুদীরা ফিরছে
11 সময় আসবে যখন তোমার দেওয়ালগুলো আবার গেঁথে তোলা হবে।
সেই সময়ে, দেশের সীমা দূরে যাবে বা পরিধি বাড়বে।
12 তোমার লোকেরা তোমার দেশে ফিরে আসবে।
তারা অশূর থেকে এবং মিশরের শহরগুলি থেকে ফিরে আসবে।
তোমার লোকেরা মিশর
এবং ফরাৎ নদীর ওপার থেকে আসবে।
তারা পশ্চিম দিকের সমুদ্র হতে
এবং পূর্বদিকের পর্বত হতে আসবে।
13 দেশের অধিবাসীরা দেশে বাস করে
তাদের মন্দ কাজের দ্বারা দেশ ধ্বংস করছে।
14 অতএব দণ্ড দিয়ে তোমার লোকজনদের শাসন কর।
শাসন কর তোমাদের অধিকারভুক্ত লোকজনদের।
সেই পাল একাকী কর্ম্মিল পর্বতের
মধ্যবর্তী বনে বাস করছে।
সেই পাল আগে যেমন বাশন এবং গিলিয়দে বাস করত
এখনও সেই দুটি জায়গাতেই বাস করছে।
ইস্রায়েল তার শত্রুদের পরাজিত করবে
15 আমি যখন তোমাদের মিশর দেশ থেকে বার করে এনেছিলাম তখন অনেক অলৌকিক কাজ করেছিলাম।
আমি ওইরকম আরো অনেক অলৌকিক ঘটনা তোমাদের দেখাবো।
16 বহুজাতির লোকেরা সেই অলৌকিক ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষ করবে
এবং তারা লজ্জিত হবে।
তারা প্রত্যক্ষ করবে যে
তাদের “শক্তি” তুলনায় কিছুই নয়।
তারা অবাক হয়ে যাবে এবং তাদের মুখে হাত দেবে।
তারা কিছুই শুনতে চাইবে না।
17 সাপের মতো তারা ধূলোতে বুকে ভর দিয়ে যাবে।
তারা ভয়ে কাঁপবে।
তারা কীট পতঙ্গদের মতো
তাদের গর্ত থেকে মাঠে বেরিয়ে আসবে
এবং আমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে এসে
তারা তোমাদের ভয় ও সম্মান করবে!
প্রভুর প্রশংসা
18 তোমার মতো ঈশ্বর আর কোথাও নেই।
তুমি লোকেদের অপরাধ হরণ কর।
যেসব লোক বেঁচে গেছে তাদের ঈশ্বর ক্ষমা করেন।
তিনি চিরকালের জন্য রাগ করে থাকবেন না।
কারণ তিনি বিশ্বস্ত থাকতে ইচ্ছা করেন।
19 প্রভু আবার ফিরে আসবেন এবং আমাদের আরাম দেবেন।
তিনি আমাদের অপরাধ চূর্ণ করে দেবেন এবং আমাদের সমস্ত পাপ গভীর সমুদ্রের মধ্যে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন।
20 ঈশ্বর যাকোবের প্রতি অটল থাকবেন।
দয়া করে আপনি আপনার দয়া অব্রাহামকে দেখান যেমনটি আপনি বহু আগে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
প্রকৃত সম্পদ
16 এরপর যীশু তাঁর অনুগামীদের বললেন, “কোন একজন ধনী ব্যক্তির একজন দেওয়ান ছিল; আর এই দেওয়ান তার মনিবের সম্পদ নষ্ট করছে বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। 2 তখন সেই ধনী ব্যক্তি ঐ দেওয়ানকে ডেকে বললেন, ‘তোমার বিষয়ে আমি এ কি শুনছি? তোমার কাজের হিসাব আমায় দাও, কারণ তুমি আর আমার দেওয়ান থাকতে পারবে না।’
3 “তখন সেই দেওয়ান মনে মনে বলল, ‘এখন আমি কি করব? আমার মনিব তো আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। আমি যে মজুরের কাজ করে খাব তার ক্ষমতাও আমার নেই, আর ভিক্ষা করতেও আমার লজ্জা লাগে। 4 আমার দেওয়ানী পদ গেলেও লোকে যাতে তাদের বাড়িতে আমায় থাকতে দেয় সে জন্য আমায় কি করতে হবে তা আমি জানি।’
5 “তখন তার মনিবের কাছে যারা ধারে জিনিস নিয়েছিল তাদের প্রত্যেককে সে ডেকে তাদের প্রথম জনকে বলল, ‘আমার মনিবের কাছে তুমি কত ধার?’ 6 সে বলল, ‘একশো মন অলিভ তেল।’ তখন সেই দেওয়ান তাকে বলল, ‘এই নাও তোমার হিসাবের কাগজটা, তাড়াতাড়ি করে লেখ, পঞ্চাশ মন।’
7 “এরপর আর একজন লোককে সে বলল, ‘আর তুমি, তুমি কত ধার?’ সে বলল, ‘একশো মন গম।’ সেই দেওয়ান তাকে বলল, ‘তোমার রসিদটা দেখি, এটাতে আশি মন লেখ।’
8 “সেই মনিব তাঁর অসৎ দেওয়ানের প্রশংসা করলেন, কারণ সে বুদ্ধিমানের মত কাজ করেছিল। এ জগতের লোকেরা নিজেদের মত লোকেদের সঙ্গে আচার আচরণে আত্মিক লোকদের থেকে বেশী বিচক্ষণ।
9 “আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের জাগতিক সম্পদ দিয়ে নিজেদের জন্য বন্ধু লাভ কর, যেন যখন তা শেষ হয়ে যাবে, তখন তারা তোমাদের অনন্ত আবাসে স্বাগত জানায়। 10 যে সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত হতে পারে, বড় ব্যাপারেও তাকে বিশ্বাস করা চলে। যে ছোটখাটো বিষয়ে অবিশ্বস্ত, সে বড় বড় বিষয়েও অবিশ্বস্ত হবে। 11 তাই জাগতিক সম্পদ সম্বন্ধে তুমি যদি বিশ্বস্ত না হও, তবে প্রকৃত সত্য সম্পদের বিষয়ে কে তোমাকে বিশ্বাস করবে। 12 অপরের জিনিসের ব্যাপারে তোমাদের যদি বিশ্বাস করা না যায়, তবে তোমাদের যা নিজস্ব সম্পদ তাই বা কে তোমাদের দেবে?
13 “কোন দাস দুজন কর্তার দাসত্ব করতে পারে না, হয় সে একজনকে ঘৃণা করবে ও অন্যজনকে ভালবাসবে, অথবা একজনের অনুগত হয়ে অন্য জনকে তুচ্ছ করবে। তোমরা ঈশ্বর ও ধন-সম্পদ উভয়েরই দাসত্ব করতে পার না।”
ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা অপরিবর্তনীয়
(মথি 11:12-13)
14 অর্থলোভী ফরীশীরা যীশুর এইসব কথা শুনে যীশুকে ব্যঙ্গ করতে লাগল। 15 তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সেই রকম লোক, যারা লোকচক্ষে নিজেদের খুব ধার্মিক বলে জাহির করে থাকে, কিন্তু তোমাদের অন্তরে কি আছে ঈশ্বর তা জানেন। মানুষের চোখে যা মহান, ঈশ্বরের দৃষ্টিতে তা ঘৃন্য।
16 “যোহন বাপ্তাইজকের সময় পর্যন্ত বিধি-ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের শিক্ষার প্রচলন ছিল। তারপর থেকে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় সুসমাচার প্রচার করা শুরু হয়েছে। আর সেই রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য সবাই প্রবলভাবে চেষ্টা করছে। 17 তবে বিধি-ব্যবস্থার এক বিন্দু বাদ পড়ার চেয়ে বরং আকাশ ও পৃথিবীর লোপ পাওয়া সহজ।
বিবাহ বিচ্ছেদ ও পুনর্বিবাহ
18 “যে কেউ নিজের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ করে অন্য কোন স্ত্রীলোককে বিয়ে করে, সে ব্যভিচার করে; আর যে সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে সেও ব্যভিচার করে।”
ধনী ব্যক্তি ও লাসারের কাহিনী
19 “এক সময় একজন ধনী ব্যক্তি ছিল, সে বেগুনী রঙের কাপড় ও বহুমূল্য পোশাক পরত; আর প্রতিদিন বিলাসে দিন কাটাতো। 20 তারই দরজার সামনে লাসার নামে একজন ভিখারী পড়ে থাকত, যার সারা শরীর ঘায়ে ভরে গিয়েছিল। 21 সেই ধনী ব্যক্তির টেবিল থেকে টুকরো-টাকরা যে খাবার পড়ত তাই খেয়ে সে পেট ভরাবার আশায় থাকত, এমনকি কুকুররা এসে তার ঘা চেটে দিত।
22 “একদিন সেই গরীব ভিখারী মারা গেল, আর স্বর্গদূতরা এসে তাকে নিয়ে গেল এবং সে অব্রাহামের কোলে স্থান পেল। সেই ধনী ব্যক্তিও একদিন মারা গেল, আর তাকে সমাধি দেওয়া হল। 23 সেই ধনী ব্যক্তি পাতালে নরকে খুব যন্ত্রণার মধ্যে কাটাতে থাকল। এই অবস্থায় সে মুখ তুলে তাকাতে বহুদূরে অব্রাহামকে দেখতে পেল; আর অব্রাহামের কোলে সেই লাসারকে দেখতে পেল। 24 সেই ধনী ব্যক্তি তখন চিৎকার করে বলে উঠল, ‘হে পিতা, অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, লাসারকে এখানে পাঠিয়ে দিন, যেন সে এখানে এসে ওর আঙ্গুলের ডগা জলে ডুবিয়ে আমার জিভ জুড়িয়ে দেয়, কারণ আমি এই আগুনের মধ্যে বড়ই কষ্ট পাচ্ছি!’
25 “কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘হে আমার বৎস, মনে করে দেখ, জীবনে সুখের সব কিছুই তুমি ভোগ করেছ আর সেই সময় লাসার অনেক কষ্ট পেয়েছে। কিন্তু এখন এখানে সে সুখ পাচ্ছে আর তুমি কষ্ট পাচ্ছ। 26 এছাড়া তোমাদের ও আমাদের মাঝে এক মহাশূন্য স্থান আছে, যাতে ইচ্ছা থাকলেও কেউ এখানে থেকে পার হয়ে তোমাদের কাছে যেতে না পারে, আর ওখান থেকে পার হয়ে কেউ আমাদের কাছে আসতে না পারে।’
27 “সেই ধনী ব্যক্তি তখন বলল, ‘তাহলে পিতা দয়া করে লাসারকে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন! 28 যেন আমার যে পাঁচ ভাই সেখানে আছে, তাদের সে সাবধান করে দেয়, যাতে তারা এই যন্ত্রণার জায়গায় না আসে।’
29 “কিন্তু অব্রাহাম বললেন, ‘মোশি ও অন্যান্য ভাববাদীরা তো তাদের জন্য আছেন, তাঁদের কথা তারা শুনুক।’
30 “তখন ধনী লোকটি বলল, ‘না, না, পিতা অব্রাহাম মৃতদের মধ্য থেকে কেউ যদি তাদের কাছে যায়, তবে তারা অনুতাপ করবে।’
31 “অব্রাহাম তাকে বললেন, ‘তারা যদি মোশি ও ভাববাদীদের কথা না শোনে, তবে মৃতদের মধ্য থেকে উঠে গিয়েও যদি কেউ তাদের সঙ্গে কথা বলে তবু তারা তা শুনবে না।’”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International