Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 বংশাবলি 29

মন্দির বানানোর জন্য উপহার

29 ইস্রায়েলের যে সমস্ত লোক একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল রাজা দায়ূদ তাদের বললেন, “ঈশ্বর যদিও আমার পুত্র শলোমনকে বেছে নিয়েছেন, ও এখনও তরুণ। এই কাজের মতো যথোপযুক্ত অভিজ্ঞতা বা বিচারবুদ্ধি ওর হয়নি। তবে এই কাজটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটা কোনো মানুষের বসতি বাড়ি তৈরির ব্যাপার নয়। এটা স্বয়ং প্রভু ঈশ্বরের জন্য। আমি আমার প্রভুর মন্দির বানানোর উপাদান প্রস্তুত করার জন্য আমার যথাসাধ্য করেছি। সোনার জিনিসের জন্য সোনা, রূপোর জিনিষের জন্য রূপো দিয়েছি। আমি পিতলের জিনিষপত্রের জন্য পিতল দিয়েছি। লোহা আর কাঠের জিনিসের জন্য আমি লোহা আর কাঠ দিয়েছি। তাছাড়াও গোমেদক মণি, তেজস্বী পাথর, শ্বেত পাথর, নানা রঙের দুর্মূল্য পাথর ও অনেক কিছুই প্রভুর মন্দির বানানোর জন্য দিয়েছি। ঈশ্বরের মন্দির যাতে সত্যি সত্যিই ভাল ভাবে বানানো হয় সে জন্য আমি আরো বেশ কিছু পরিমাণ সোনা ও রূপো উপহার হিসেবে দিচ্ছি। ওফীর থেকে 110 টন খাঁটি সোনা ছাড়াও আমি মন্দিরের দেওয়াল মুড়ে দেবার জন্য 260 টন খাঁটি রূপো এই কাজের জন্য দান করছি। এইসব সোনা ও রূপো দিয়ে যাতে দক্ষ কারিগররা এবং যারা স্বেচ্ছাসেবক হবে প্রভুর কাছে মন্দিরের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র বানাতে পারে সে জন্যই আমি এই সমস্ত কিছু দিলাম।”

ইস্রায়েলের কিছু পরিবারগোষ্ঠীর নেতারা, সৈন্যাধ্যক্ষ, সেনাপতি, সেনানায়ক থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীরা সকলেই স্বেচ্ছায় আধিকারিকদের সঙ্গে রাজার এই পরিকল্পনায় কাজ করতে এগিয়ে এলেন। তাঁরা ঈশ্বরের গৃহে সব মিলিয়ে 190 টন সোনা, 375 টন রূপো, 675 টন পিতল, 3750 টন লোহা তো দান করলেনই, উপরন্তু যাদের কাছে দামী ও দুর্মূল্য পাথর ছিল তাঁরা সেগুলিও দান করলেন। গের্শোন পরিবারের যিহীয়েল এই সমস্ত দামী পাথরের দায়িত্ব নিলেন। লোকরা সকলেই খুব উৎ‌ফুল্ল ছিল যেহেতু তাদের নেতারা খুশি মনে এই সমস্ত দান করছিলেন। রাজা দায়ূদও খুবই আনন্দিত হলেন।

দায়ূদের অনুপম প্রার্থনা

10 রাজা দায়ূদ তারপর সমবেত লোকদের সামনে প্রভুর প্রশংসা করে বললেন:

“প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, হে আমাদের পিতা,
    যুগে যুগে, আবহমান কাল যেন তোমারই বন্দনা হয়!
11 যা কিছু সত্য, শক্তি, মহিমা, বিজয় ও সন্মান, এসবই তো তোমার,
    কারণ এই পৃথিবী ও আকাশ—এই মহাবিশ্বের সব কিছুই তোমার।
হে প্রভু, এই রাজত্বও তোমার।
    তুমিই শীর্ষস্থানীয়। সব কিছুর শাসক, সবেরই নিয়ামক।
12 সম্পদ ও সম্মান, তোমার কাছ থেকেই আসে।
    তুমি সব কিছু শাসন কর।
ক্ষমতা ও শক্তি তোমার হাতে রয়েছে।
    একমাত্র তুমিই আর কাউকে মহান ও শক্তিশালী করতে পার।
13 হে আমাদের ঈশ্বর, তোমাকে ধন্যবাদ,
    আমরা সকলে তোমারই মহান নাম বন্দনা করি।
14 আমরা যা কিছু দান করেছি প্রকৃতপক্ষে সেসব আমার বা আমার লোকদের কাছ থেকে আসেনি।
    সে সব তোমার কাছ থেকেই এসেছে।
    আমরা তোমায় তাই দিচ্ছি যা আমরা তোমার হাত থেকেই পেয়েছি।
15 আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষের মতোই এই পৃথিবীতে শুধুই পথিক,
    আমাদের জীবন এই পৃথিবীতে ক্ষণিকের ছায়া মাত্র ও আশাবিহীন।
16 হে আমাদের প্রভু, তোমার নামকে সম্মানিত করবার জন্য,
    তোমার মন্দির তৈরী করবার জন্য আমরা যা কিছু সংগ্রহ করেছি
তার সবই তোমার কাছ থেকেই এসেছে।
    এ সমস্ত তোমারই।
17 আমার ঈশ্বর, আমি জানি তুমি মানুষের পরীক্ষা নাও
    আর যখন কেউ ভাল কিছু করে তুমি আনন্দিত হও।
আমার অন্তঃকরণ থেকে এই সমস্ত কিছু
    আমি তোমায় দান করলাম।
আমি দেখতে পাচ্ছি, তোমার ভক্তরা সবাই আজ এখানে জড়ো হয়েছে
    আর তোমাকে এইসব কিছু দেওয়া হচ্ছে বলে, তারা সকলেই খুবই আনন্দিত।
18 প্রভু, তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম,
    ইস‌্হাক আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর।
তোমার ভক্তদের সঠিক পরিকল্পনায় সাহায্য করো।
    তোমার প্রতি তাদের ভক্তি ও বিশ্বাস অক্ষুণ্ন রাখতেও সাহায্য করো!
19 আর আমার পুত্র শলোমনেরও যাতে তোমার প্রতি অটুট ভক্তি থাকে,
    তোমার বিধি ও নির্দেশ যাতে মেনে চলতে পারে তা তুমি দেখো।
আমি যে রাজধানীর পরিকল্পনা করেছি তা বানাতে
    তুমি শলোমনকে সাহায্য করো।”

20 তারপর দায়ূদ সমবেত সমস্ত ধরণের লোকদের উদ্দেশ্য করে বললেন, “এবার তোমরা সকলে মিলে প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের প্রশংসা করো।” তখন সমবেত লোকরা তাদের পূর্বপুরুষের প্রভু ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগলেন। মাটিতে মাথা নত করে তারা সকলে প্রভু ও রাজার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলো।

শলোমন রাজা হলেন

21 পরের দিন লোকরা প্রভুর উদ্দেশ্যে পেয় নৈবেদ্যসহ 1000 ষাঁড়, 1000 মেষ ও 1000 মেষশাবক বলিদান করল এবং হোমবলি উৎসর্গ করল। এবং ইস্রায়েলের সমস্ত লোকেদের উৎসবে খাওয়ার জন্য প্রচুর পরিমাণে মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করল। 22 প্রভুর সামনে বসে পানাহার করতে করতে সেদিন সকলে উল্লসিত হয়ে উঠেছিল।

এরপর সকলে মিলে সেখানেই পবিত্র তেল ছিটিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য শলোমনকে রাজপদে ও সাদোককে যাজকের পদে অভিষিক্ত করল।

23 তারপর শলোমন রাজা হয়ে তাঁর পিতার জায়গায় প্রভুর সিংহাসনে বসলেন। শলোমন জীবনে খুবই সফল হয়েছিলেন। ইস্রায়েলের সকলেই শলোমনকে মান্য করতেন। 24 সমস্ত নেতা, সৈনিক, দায়ূদের অন্যান্য পুত্ররাও তাঁকে রাজা হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন এবং তাঁর আজ্ঞাধীন ছিলেন। 25 প্রভু শলোমনকে অত্যন্ত মহৎ‌‌ ও শক্তিশালীও করেছিলেন আর ইস্রায়েলের সমস্ত লোক একথা জানতেন। প্রভু শলোমনকে একজন রাজার যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়েছিলেন যা তাঁর আগে ইস্রায়েলের অন্য কোন রাজাই পাননি।

দায়ূদের মৃত্যু

26-27 যিশয়ের পুত্র দায়ূদ 40 বছর ইস্রায়েলে রাজত্ব করেছিলেন। তিনি হিব্রোণে সাত বছর এবং জেরুশালেমে 33 বছর রাজত্ব করেন। 28 ভাল ও দীর্ঘ জীবনযাপন করার পর বার্ধক্যের কারণে দায়ূদের মৃত্যু হয়। তিনি জীবনে বহু সম্পত্তি ও খ্যাতি লাভ করেছিলেন। তাঁর পরে তাঁর পুত্র শলোমন নতুন রাজা হলেন।

29 রাজা দায়ূদ আজীবন যে সমস্ত কাজ করেছিলেন তা ভাববাদী শমূয়েল, ভাববাদী নাথন ও ভাববাদী গাদের লেখা পুস্তকে বর্ণিত হয়েছে। 30 এই সমস্ত পুস্তকে ইস্রায়েলের রাজা হিসেবে তিনি যা কিছু কাজ করেছিলেন সে সবেরই উল্লেখ আছে। এই সমস্ত লেখকরা ইস্রায়েল ও তার প্রতিবেশী রাজ্যের বিবরণ এবং দায়ূদের ক্ষমতা শক্তি ও তাঁর জীবনের সমস্ত ঘটনা লিখে গিয়েছেন।

2 পিতর 3

যীশু পুনরায় আসবেন

বন্ধুরা, তোমাদের কাছে এ আমার দ্বিতীয় পত্র। এই দুটি পত্র লিখে, কিছু বিষয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তোমাদের সৎ‌ চিন্তাকে নাড়া দেবার চেষ্টা করছি। অতীতে পবিত্র ভাববাদীদের সমস্ত কথা ও প্রভু আমাদের ত্রাণকর্তার আদেশ, যা প্রেরিতদের মাধ্যমে বলা হয়েছে, তা তোমাদের স্মরণে আনতে চাইছি।

প্রথমতঃ তোমাদের বুঝতে হবে পৃথিবী শেষ হয়ে যাবার আগের দিনগুলিতে কি ঘটবে। লোকরা তোমাদের উপহাস করবে। তারা নিজের নিজের খেয়াল খুশি মতো মন্দ পথে চলবে। তারা বলবে, “তাঁর আগমণ সম্বন্ধে তাঁর প্রতিজ্ঞার কি হল? কারণ আমরা জানি আমাদের পিতৃপুরুষদের মারা যাওয়ার সময় থেকে, এমনকি সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সব কিছুই তো একই রকম ভাবে ঘটে চলেছে।”

কিন্তু বহুপূর্বে কি ঘটেছিল তা ঐসব লোকরা স্মরণ করতে চায় না। প্রথমে আকাশমণ্ডল ছিল এবং ঈশ্বর জলের মধ্য থেকে ও জলের দ্বারা পৃথিবী সৃষ্টি করলেন আর এসবই ঈশ্বরের মুখের বাক্যের দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময়কার জগত জলপ্লাবনের দ্বারা ধ্বংস হয়েছিল। ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে বর্তমান এই পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল আগুনের দ্বারা ধ্বংস হবার জন্য বিরাজ করছে। এই আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সেই বিচারের দিনের জন্য, অধার্মিক মানুষের ধ্বংসের জন্য রক্ষিত আছে।

কিন্তু প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এই একটা কথা ভুলে যেও না যে প্রভুর কাছে এক দিন হাজার বছরের সমান ও হাজার বছর একদিনের সমান। প্রভু তাঁর প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করতে সত্যি দেরী করছেন না। যদিও কেউ কেউ সেরকমই মনে করছে; কিন্তু তিনি তোমাদের জন্য ধৈর্য্য ধরে আছেন। কেউ যে ধ্বংস হয় তা ঈশ্বর চান না, ঈশ্বর চান যে প্রত্যেকে মন পরিবর্তন করুক ও পাপের পথ ত্যাগ করুক।

10 কিন্তু প্রভুর দিন চোরের মত এসে চমকে দেবে। তখন আকাশ বিরাট শব্দ করে অদৃশ্য হবে; আকাশের সব কিছু আগুনে ধ্বংস করা হবে এবং পৃথিবী ও তার মধ্যে যা কিছু আছে তা পুড়িয়ে ফেলা হবে। 11 সব কিছু যখন এইভাবে ধ্বংস হতে যাচ্ছে তখন চিন্তা কর কি প্রকার মানুষ হওয়া তোমাদের দরকার। তোমাদের পবিত্র জীবনযাপন করা উচিত এবং ঈশ্বরের সেবার্থে কাজ করা উচিত। 12 পরম আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের সেই দিনের অপেক্ষায় থাকা উচিত, যে দিন আকাশমণ্ডল আগুনে পুড়ে ধ্বংস হবে এবং আকাশের সব কিছু উত্তাপে গলে যাবে। 13 কিন্তু ঈশ্বর আমাদের এক নতুন আকাশমণ্ডল ও এক নতুন পৃথিবীর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই প্রতিশ্রুতির পূর্ণতার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি, আর সেখানে কেবল ধার্মিকতা থাকবে।

14 তাই প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা যখন এইসব ঘটবে বলে অপেক্ষা করছ, তখন পাপ ও দোষমুক্ত হয়ে থাকবার আপ্রাণ চেষ্টা কর, যেন ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তিতে থাকতে পার। 15 মনে রেখো, আমাদের প্রভুর ধৈর্য্য তোমাদের মুক্তির সুযোগ দিয়েছে। আমাদের প্রিয় ভাই পৌলও তোমাদের একই বিষয়ে লিখেছেন। তাঁকে প্রদত্ত জ্ঞান অনুসারে পৌল এই কথা তাঁর সব চিঠিতে বলেছেন। 16 কিছু বিষয় এই পত্রের মধ্যে আছে যা বোঝা শক্ত। অজ্ঞ ও বিশ্বাসে দুর্বল লোকরা শাস্ত্রের অন্যান্য কথার যেমন বিকৃত অর্থ করে, তেমনি পৌলের কথারও বিকৃত অর্থ করে নিজেদের ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়।

17 তাই প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা এসব কথা আগে থেকেই জেনেছ বলে এ বিষয়ে সতর্ক থাক, যাতে তোমরা দুষ্ট লোকদের ভুলের কবলে পড়ে নিজেদের দৃঢ় বিশ্বাস থেকে সরে না যাও। 18 আমাদের প্রভু ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ ও জ্ঞানে তোমরা বৃদ্ধি লাভ কর। এখন ও অনন্তকালের জন্য তাঁর মহিমা বিরাজ করুক। আমেন।

মীখা 6

প্রভুর অভিযোগ

এখন শোন প্রভু কি বলেন:
“পর্বতগুলোকে তোমার দিকের ব্যাপারগুলো বল।
    পাহাড়গুলো তোমাদের গল্প শুনুক।
তাঁর নিজের লোকেদের বিরুদ্ধে প্রভুর একটি অভিযোগ আছে।
ওহে পর্বতরা,
    তোমরা প্রভুর অভিযোগ শোন।
পৃথিবীর ভিত্তি সকল তোমরা প্রভুর কথা শোন।
    তিনি প্রমাণ করবেন যে, ইস্রায়েল ভুল করছে।”

প্রভু বলেন, “আমার লোকেরা, আমাকে বলো আমি কি করেছি!
    আমি কি তোমাদের বিরুদ্ধে কোন ভুল কাজ করেছি?
    আমি কি তোমাদের জীবনকে খুব কঠিন করে তুলেছি? উত্তর দাও!
আমি যে কাজগুলো করেছি তা তোমাদের বলবো!
    আমি তোমাদের কাছে মোশি, হারোণ এবং মরিয়মকে পাঠিয়েছিলাম।
    মিশর দেশ থেকে আমি তোমাদের নিয়ে এসেছিলাম,
    তোমাদের দাসত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছিলাম।
হে আমার লোকেরা, মোয়াবের রাজা
    বালাকের মন্দ পরিকল্পনাগুলির কথা মনে কর।
মনে কর, বিয়োরের পুত্র বিলিয়ম বালাককে কি বলেছিল।
আকাসিয়া থেকে গিল‌্গলের মধ্যে কি সব ঘটেছিল তা মনে কর।
    ওই ব্যাপারগুলো মনে কর তাহলে তোমরা জানবে, প্রভুই ন্যায়!”

আমাদের কাছ থেকে ঈশ্বর কি পেতে চান?

প্রভুর সঙ্গে দেখা করতে আসার সময়ে আমাকে কি আনতে হবে?
    উর্দ্ধস্থ ঈশ্বরকে নত হয়ে প্রণাম করার সময় আমাকে কি করতে হবে?
আমি কি প্রভুর কাছে হোমবলি নিবেদন করবার জন্য এক বছরের গোবৎস নিয়ে আসব?
1000 মেষ এবং 10,000 তেলের নদী পেয়ে কি প্রভু খুশী হবেন?
    আমার আত্মার জন্য পাপ নৈবেদ্য হিসেবে আমি কি আমার প্রথম সন্তানকে বলি দেব?
আমার দেহের ফল, আমার সন্তানকে কি
    আমার আত্মার মূল্যস্বরূপ পাপ নৈবেদ্য দেওয়া উচিৎ‌?

ওহে মানুষ, প্রভু তোমাদের বলেছেন ভালো বলতে কি বোঝায়।
    সেইটিই প্রভু তোমাদের কাছ থেকে চাইছেন:
অন্যান্য লোকেদের সঙ্গে ন্যায় আচরণ কর।
    দয়া এবং আনুগত্য ভালবাসো।
    তোমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে নম্রভাবে বাস কর।

ইস্রায়েলীয়রা কি করছিল?

প্রভুর রব শহরকে ডাক দিল।
“জ্ঞানী ব্যক্তিরা প্রভুর নামকে সম্মান করে।
    তাই, শাস্তির দণ্ডের প্রতি এবং যিনি দণ্ডটি ধরে থাকেন তাঁর প্রতি মনোযোগ দাও।
10 খারাপ লোকেরা কি এখনও
    চুরি করা মূল্যবান জিনিসপত্র লুকিয়ে রাখছে?
সেই খারাপ লোকেরা কি এখনও
    খুব ছোট্ট টুকরী দিয়ে লোক ঠকাচ্ছে?
হ্যাঁ! ঐসব ঘটনা এখনও ঘটছে!
11 এইসব লোকেদের কি আমার ক্ষমা করা উচিত,
    যারা চুরি করে এবং লোকেদের প্রতারিত করে?
যারা এখনও লোকেদের ভুল থলি ও ভুল মাপনযন্ত্র দিয়ে প্রতারিত করে তাদের কি আমার ক্ষমা করা উচিৎ‌? না!
12 ওই শহরের ধনী ব্যক্তিরা এখনও নিষ্ঠুর।
    ওই শহরের লোকেরা মিথ্যা কথা বলে!
    হ্যাঁ, ওরা প্রতারণাপূর্ণ কথা বলে!
13 সেজন্য আমি তোমাদের শাস্তি দেওয়া শুরু করেছি।
    তোমাদের পাপের জন্য আমি তোমাদের ধ্বংস করব।
14 তোমরা খাবে, কিন্তু তোমাদের পেট ভরবে না।
    তোমরা ক্ষুধার্ত এবং খালি অবস্থায় থাকবে।
তোমরা লোকেদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার চেষ্টা করবে।
    কিন্তু তোমরা যাদের রক্ষা করবে, লোকে তাদেরই তরবারির আঘাতে মেরে ফেলবে।
15 তোমরা তোমাদের বীজ বপন করবে;
    কিন্তু তোমরা খাদ্য সংগ্রহ করতে পারবে না।
তোমরা তোমাদের জলপাই পিষে তেল বার করার চেষ্টা করবে,
    কিন্তু কোন তেল পাবে না।
তোমরা তোমাদের দ্রাক্ষা দলাবে
    কিন্তু মিষ্টি দ্রাক্ষারস পান করার জন্য পর্যাপ্ত রস সংগ্রহ করতে পারবে না!
16 কেন? কারণ তোমরা অম্রির বিধি মান্য করেছিলে,
আহাবের পরিবার যেসব খারাপ কাজ করে, তোমরা সেইসব খারাপ কাজ করে থাক।
তোমরা তাদের শিক্ষামালা অনুসরণ করে থাক।
    সেজন্য আমি তোমাদের ধ্বংস হতে দেব।
লোকেরা এতই অবাক হবে যে শিস দেবে
    যখন দেখবে তোমাদের শহর ধ্বংস হচ্ছে।
তখন তোমরা আমার
    লোকেদের লজ্জা বহন করবে।”

লূক 15

স্বর্গে আনন্দ

(মথি 18:12-14)

15 অনেক করআদায়কারী ও পাপী লোকেরা প্রায়ই যীশুর কথা শোনার জন্য আসত। এতে ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা এই বলে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করতে লাগল, “এই লোকটা জঘন্য পাপী লোকদের সঙ্গে মেলামেশা ও খাওয়া দাওয়া করে।”

তখন যীশু তাদের কাছে এই দৃষ্টান্ত দিলেন, “যদি তোমাদের মধ্যে কারোর একশোটি ভেড়া থাকে, তার মধ্যে থেকে একটা হারিয়ে যায়, তবে সে কি মাঠের মধ্যে বাকি নিরানব্বইটা রেখে যেটা হারিয়ে গেছে তাকে না পাওয়া পর্যন্ত তার খোঁজ করবে না? আর যখন সে ঐ ভেড়াটাকে খুঁজে পায়, তখন তাকে আনন্দের সঙ্গে কাঁধে তুলে নেয়। তারপর বাড়ি এসে তার বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে বলে, ‘এস, আমার সঙ্গে তোমরাও আনন্দ কর, কারণ আমার যে ভেড়াটা হারিয়ে গিয়েছিল তাকে আমি খুঁজে পেয়েছি।’ আমি তোমাদের বলছি, ঠিক সেইভাবে নিরানব্বই জন ধার্মিক, যাদের মন পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই তাদের থেকে একজন পাপী যদি ঈশ্বরের কাছে মন ফিরায়, তাকে নিয়ে স্বর্গে মহানন্দ হয়।

“ধর, কোন একজন স্ত্রীলোকের দশটা রূপোর সিকির একটা হার ছিল। তার মধ্য থেকে সে যদি একটা হারিয়ে ফেলে, তাহলে সে কি প্রদীপ জ্বেলে সেই সিকিটি না পাওয়া পর্যন্ত ঘরের প্রতিটি জায়গা ভাল করে ঝাঁট দিয়ে খুঁজে দেখবে না? আর সে তা খুঁজে পেলে তার বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীদের ডেকে বলবে, ‘এস, আমার সঙ্গে আনন্দ কর, কারণ আমার যে সিকিটি হারিয়ে গিয়েছিল তা আমি খুঁজে পেয়েছি।’ 10 আমি তোমাদের বলছি, ঠিক এইভাবে একজন পাপী যখন মন-ফিরায়, তখন ঈশ্বরের স্বর্গদূতদের সামনে আনন্দ হয়।”

গৃহত্যাগী ছেলে

11 এরপর যীশু বললেন, “একজন লোকের দুটি ছেলে ছিল। 12 ছোট ছেলেটি তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, সম্পত্তির যে অংশ আমার ভাগে পড়বে তা আমায় দিয়ে দাও।’ তখন বাবা দুই ছেলের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করে দিলেন।

13 “কিছু দিন পর ছোট ছেলে তার সমস্ত কিছু নিয়ে দূর দেশে চলে গেল। সেখানে সে উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করে সমস্ত টাকা পয়সা উড়িয়ে দিল। 14 তার সব টাকা পয়সা খরচ হয়ে গেলে সেই দেশে ভীষণ দুর্ভিক্ষ দেখা দিল আর সেও অভাবে পড়ল। 15 তাই সে সেই দেশের এক ব্যক্তির কাছে দিন মজুরীর একটা কাজ চাইল। সেই ব্যক্তি তাকে তার শুয়োর চরাবার জন্য মাঠে পাঠিয়ে দিল। 16 শুয়োর যে শুঁটি খায় তা খেয়ে সে তার পেট ভরাতে চাইত, কিন্তু কেউ তাকে তাও দিত না।

17 “শেষ পর্যন্ত একদিন তার চেতনা হল, আর সে বলল, ‘আমার বাবার কাছে কত মজুর পেট ভরে খেতে পায় আর এখানে আমি খিদের জ্বালায় মরছি। 18 আমি উঠে আমার বাবার কাছে যাব, তাকে বলব, বাবা, আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ও তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় পাপ করেছি। 19 তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার কোন যোগ্যতা আর আমার নেই। তোমার চাকরদের একজনের মতো করে তুমি আমায় রাখ!’ 20 এরপর সে উঠে তার বাবার কাছে গেল।

ছেলের প্রত্যাবর্তন

“সে যখন বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে আছে, এমন সময় তার বাবা তাকে দেখতে পেলেন, বাবার অন্তর দুঃখে ভরে গেল। বাবা দৌড়ে গিয়ে ছেলের গলা জড়িয়ে ধরে তাকে চুমু খেলেন। 21 ছেলে তখন তার বাবাকে বলল, ‘বাবা, আমি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ও তোমার কাছে অন্যায় ও পাপ করেছি। তোমার ছেলে বলে পরিচয় দেবার যোগ্যতা আমার নেই।’

22 “কিন্তু তার বাবা চাকরদের ডেকে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি কর, সব থেকে ভাল জামাটা নিয়ে এসে একে পরিয়ে দাও। এর হাতে আংটি ও পায়ে জুতো পরিয়ে দাও। 23 হৃষ্টপুষ্ট একটা বাছুর নিয়ে এসে সেটা কাট, আর এস, আমরা সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া করি, আনন্দ করি! 24 কারণ আমার এই ছেলেটা মারা গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে! সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে।’ এই বলে তারা সকলে আনন্দ করতে লাগল।

বড় ছেলের প্রতিক্রিয়া

25 “সেই সময় তাঁর বড় ছেলে মাঠে ছিল। বাড়ির কাছাকাছি এসে সে বাজনা আর নাচের শব্দ শুনতে পেল। 26 তখন সে একজন চাকরকে ডেকে জিজ্ঞাসা করল, ‘কি ব্যাপার, এসব কি হচ্ছে?’ 27 চাকরটি বলল, ‘আপনার ভাই এসেছে, আর সে সুস্থ শরীরে নিরাপদে ফিরে এসেছে বলে আপনার বাবা হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কেটে ভোজের আয়োজন করেছেন।’

28 “এই শুনে বড় ছেলে খুব রেগে গেল, সে বাড়ির ভেতরে যেতে চাইল না। তখন তার বাবা বেরিয়ে এসে তাকে সান্ত্বনা দিলেন। 29 কিন্তু সে তার বাবাকে বলল, ‘দেখ, এত বছর ধরে আমি তোমাদের সেবা করেছি, কখনও তোমার কথার অবাধ্য হই নি। তবু আমার বন্ধুদের সঙ্গে একটু আমোদ করার জন্য তুমি আমায় কখনও একটা ছাগলও দাও নি। 30 কিন্তু তোমার এই ছেলে যে বেশ্যাদের পেছনে তোমার টাকা উড়িয়ে দিয়েছে, সে যখন এল তখন তুমি তার জন্য হৃষ্টপুষ্ট বাছুর কাটলে।’

31 “তার বাবা তাকে বললেন, ‘বাছা, তুমি তো সব সময় আমার সঙ্গে সঙ্গে আছ; আর আমার যা কিছু আছে সবই তো তোমার। 32 কিন্তু আমাদের আনন্দিত হয়ে উৎসব করা উচিত, কারণ তোমার এই ভাই মরে গিয়েছিল আর এখন সে জীবন ফিরে পেয়েছে। সে হারিয়ে গিয়েছিল, এখন তাকে খুঁজে পাওয়া গেছে।’”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International