M’Cheyne Bible Reading Plan
দায়ূদের মন্দির পরিকল্পনা
28 রাজা দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর নেতাদের, সৈন্যদলের সেনাপতিদের, সৈন্যাধ্যক্ষদের, সেনানায়কদের ও সৈনিকদের, বীর যোদ্ধাদের, রাজকর্মচারী, যারা রাজার সম্পত্তি এবং রাজা ও রাজপুত্রের পশুগুলি দেখাশুনা করতেন এবং রাজার গন্যমান্য আধিকারিকদের জেরুশালেমে আসতে নির্দেশ দিলেন।
2 এঁরা সকলে এক জায়গায় জড়ো হবার পর রাজা দায়ূদ উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, “আমার লোকরা ও আমার ভাইরা, আমার মনে বহু দিন ধরে ইচ্ছে ছিল প্রভুর সাক্ষ্যসিন্দুকটা রাখার মতো একটা জায়গা বানানো। আমি চেয়েছিলাম সেই জায়গাটি হবে ঈশ্বরের পাদুকাদানি।[a] এ কারণে আমি ঈশ্বরের একটা মন্দির বানানোর পরিকল্পনাও করেছিলাম। 3 কিন্তু ঈশ্বর আমায় বললেন, ‘দায়ূদ, তুমি একজন সৈনিক। বহু লোককে তুমি হত্যা করেছ। তুমি কখনোই আমার নামে একটি বাড়ি বানাবে না কারণ তুমি রক্তপাত ঘটিয়েছ।’
4 “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর যিহূদার পরিবারগোষ্ঠীকে ইস্রায়েলের 12টি মূল পরিবারগোষ্ঠীকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আর ঐ পরিবারগোষ্ঠী থেকে আমার পিতার পরিবার ও আমাকে বরাবরের মতো ইস্রায়েলে রাজত্ব করার জন্য প্রভু মনোনীত করেছিলেন। 5 প্রভু আমাকে বহুপুত্রক করেছেন এবং তার মধ্যে থেকে আমার পুত্র শলোমনকে তিনি ইস্রায়েলের নতুন রাজা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ইস্রায়েল হল প্রভুর রাজত্ব। 6 প্রভু আমাকে বললেন, ‘দায়ূদ, তোমার পুত্র শলোমন আমার মন্দির ও তার সংলগ্ন সব কিছু বানাবে। কেন? কারণ আমি শলোমনকে আমার সন্তান হিসেবে বেছে নিয়েছি এবং আমি হব তার পিতা। 7 শলোমন আমার বিধি এবং আদেশগুলো বর্তমানে মেনে চলে। ও যদি বরাবর তাই করে আমিও তাহলে চিরদিনের মতো শলোমনের রাজত্বের ভিত শক্তিশালী ও দৃঢ় করে তুলব।’”
8 দায়ূদ বলল, “এখন, ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি, যত্ন সহকারে এবং ভক্তিভরে প্রভুর সমস্ত নীতি-নির্দেশ মেনে চলো। একমাত্র তাহলেই তোমরা এই ভালো ভূখণ্ডের অধিকারী হতে পারবে এবং এই দেশ চির দিনের মতো তোমাদের উত্তরপুরুষদের হাতে তুলে দিয়ে যেতে পারবে।
9 “আর তুমি আমার পুত্র শলোমন, তুমিও ঈশ্বরকে পিতা রূপে জানবে। পবিত্র মনে, আনন্দ ও ভক্তিভরে আজীবন ঈশ্বরের সেবা করো। কারণ ঈশ্বর সর্বত্র বিরাজমান, তিনি তোমার মনের সমস্ত কথাই জানতে পারেন। তুমি যদি কখনও তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো, তিনি নিশ্চয়ই তোমার ডাকে সাড়া দেবেন। আর যদি কখনও তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও, তিনিও চিরদিনের মত তোমায় ত্যাগ করে যাবেন। 10 মনে রেখো, প্রভু স্বয়ং তাঁর মন্দির বানানোর কাজ তোমার হাতে অর্পণ করেছেন। সুতরাং সবল হও এবং সফলতার সঙ্গে এটি সম্পূর্ণ কর।”
11 এরপর দায়ূদ, তাঁর পুত্র শলোমনের হাতে মন্দির ও তার শৌধ, ভাঁড়ার ঘর, ওপর তলার ঘর, এর ভেতরের ঘর, করুণা আসনের ঘর—এ সবের নকশা তুলে দিলেন। 12 দায়ূদ মন্দিরের, এমনকি মন্দিরের উঠানের, এর চারদিকের ঘরের, মন্দিরে ব্যবহৃত পবিত্র জিনিষপত্র রাখার মত ভাঁড়ার ঘর সব কিছুর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরিকল্পনা করেছিলেন। তারপর তিনি এইসব পরিকল্পনা শলোমনকে দেন। 13 তিনি যাজক ও লেবীয়দের কার্যাবলী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিলেন। তিনি প্রভুর মন্দির তৈরীর সমস্ত কাজ সম্পর্কে এবং ঈশ্বরের সেবায় যত জিনিষ ব্যবহৃত হয় সব কিছু সম্পর্কেও নির্দেশ দিলেন। 14-15 এছাড়াও তিনি শলোমনকে মন্দির সেবার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র বানাতে কি পরিমাণ সোনা এবং রূপো লাগবে তা বোঝালেন। সোনার বাতি ও সোনার বাতিদান, রূপোর বাতি ও রূপোর বাতিদান এবং বিভিন্ন বাতিদানগুলি তাদের ব্যবহার অনুযায়ী কোথায় থাকবে তাও পরিকল্পনা করা ছিল। 16 দায়ূদ বললেন, পবিত্র রুটি রাখার জন্য কত সোনার প্রয়োজন হবে এবং রূপোর টেবিলের জন্য কতটা রূপো লাগবে। 17 কাঁটাচামচ ও বাসনপত্রের ও কলসের জন্য কি পরিমাণ খাঁটি সোনা দরকার। 18 এবং কলম তৈরীর জন্য কতটা খাঁটি সোনা ব্যবহৃত হবে, প্রতিটি সোনার পাত্রের জন্য কতটা সোনা এবং প্রতিটি রূপোর পাত্রের জন্য কতটা রূপো ব্যবহৃত হবে, যেখানে ধুপ রাখা হবে সেই বেদীটি বানাতে কতটা সোনা দরকার, এসবই দায়ূদ শলোমনকে ভাল করে বুঝিয়ে দিলেন এবং প্রভুর রথ, করুণা আসন[b] এবং সাক্ষ্যসিন্দুকের ওপর ডানা ছড়িয়ে রাখা সোনার করুব দূতদের জন্য তিনি যত নকশা ও পরিকল্পনা করেছিলেন সে সমস্তই শলোমনকে দিলেন।
19 দায়ূদ বললেন, “এসব প্রভুর আদেশে আমিই লিপিবদ্ধ করেছি। প্রভু আমাকে এই সমস্ত নকশার সব কিছু ভাল করে বুঝতে ও করতে সাহায্য করেছিলেন।”
20 এছাড়াও দায়ূদ তাঁর পুত্র শলোমনকে বললেন, “ভয় পেও না। বুকে সাহস নিয়ে বীরের মতো এই কাজ শেষ করো। আমার প্রভু ঈশ্বর একাজে তোমার সহায় হবেন। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি স্বয়ং তোমার পাশে পাশে থাকবেন, তোমাকে ছেড়ে যাবেন না। তুমি অবশ্যই প্রভুর মন্দির বানাতে পারবে। 21 যাজক ও লেবীয়রা ছাড়াও সমস্ত দক্ষ কারিগররা ঈশ্বরের মন্দির বানাতে তোমাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত হয়ে আছে। রাজকর্মচারী ও লোকরাও তোমার সমস্ত নির্দেশ মেনে চলবে।”
ভণ্ড শিক্ষক
2 অতীতে ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে ভণ্ড ভাববাদীরা ছিল। একইভাবে তোমাদের দলের মধ্যে কিছু কিছু ভণ্ড শিক্ষক প্রবেশ করবে। তারা ভুল শিক্ষা দেবে, যে শিক্ষা গ্রহণ করলে লোকেদের সর্বনাশ হবে। সেই ভণ্ড শিক্ষকরা এমন কৌশলে তোমাদের শিক্ষা দেবে যাতে তারা যে ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে সেটা তোমরা ধরতে পারবে না। তারা, এমন কি প্রভু, যিনি মুক্তি এনে দিয়েছেন তাঁকে পর্যন্ত অস্বীকার করবে। তাই তাদের নিজেদের ধ্বংস তারা সত্বর ডেকে আনবে। 2 তারা যে সমস্ত মন্দ বিষয়ে লিপ্ত, বহুলোক সেই বিষয়গুলিতে তাদের অনুসরণ করবে। ঐ লোকদের প্ররোচনায় বহুলোক সত্যের পথের বিষয়ে নিন্দা করবে। 3 এই ভণ্ড শিক্ষকরা তোমাদের কাছ থেকে কেবল অর্থলাভ করতে চাইবে। তাই তারা অসৎয কল্পিত কাহিনী বানিয়ে বলবে। অনেকদিন ধরেই ঐ ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য শাস্তি অপেক্ষা করছে এবার আর তারা ঈশ্বরের হাত এড়িয়ে যেতে পারবে না; তিনি তাদের ধ্বংস করবেন।
4 যারা পাপ করেছিল সেই স্বর্গদূতদেরও ঈশ্বর ছাড়েন নি; তিনি তাদের নরকে পাঠিয়ে দিলেন। ঈশ্বর বিচারের দিন পর্যন্ত অন্ধকারময় গহ্বরে তাদের ফেলে রাখলেন।
5 ঈশ্বর প্রাচীন জগতকে ছেড়ে কথা বলেন নি। ঈশ্বরবিরোধী লোকদের জন্য ঈশ্বর জগতে জলপ্লাবন আনলেন। তিনি কেবলমাত্র নোহ এবং তার সঙ্গে অন্য সাতজনকে রক্ষা করেছিলেন। এই নোহ ঠিক পথে চলবার জন্য মানুষকে শিক্ষা দিয়েছিলেন।
6 সদোম ও ঘমোরা নগরকে ঈশ্বর দণ্ডিত করেছিলেন। ঈশ্বর সেই দুটি নগরকে ধ্বংস করে যারা তাঁর বিরোধিতা করে তাদের জন্য শেষ ফলের এক উদাহরণ হিসেবে তা স্থাপন করেছিলেন। 7 ঐ ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী থেকে ঈশ্বর লোটকে উদ্ধার করেছিলেন। লোট ভাল লোক ছিলেন এবং ঐ নগরের দুষ্ট লোকদের অনৈতিক চালচলনে তিনি পীড়িত হতেন। 8 সেই নীতিপরায়ণ মানুষ ঐ দুষ্ট লোকদের মধ্যে দিনের পর দিন বাস করতেন। তাঁর ধার্মিক আত্মা এই সকল লোকদের বেআইনী কাজকর্ম দেখে এবং এগুলির কথা শুনে যন্ত্রণা ভোগ করতেন।
9 হ্যাঁ, ঈশ্বরই এই সকল কার্য সাধন করলেন। তাই প্রভু ঈশ্বর জানেন যারা তাঁর সেবা করে, তাদের কিভাবে উদ্ধার করতে হয়। তিনি তাদের সমস্ত কষ্টের সময়ে তাদের উদ্ধার করেন। প্রভু এও জানেন কিভাবে দুষ্ট লোকদের সেই বিচারের দিনে শাস্তি দিতে হয়। 10 ঐ দণ্ড বিশেষভাবে তাদের জন্য, যারা দুর্নীতিপরায়ণ ও কামাতুর, অধার্মিক স্বভাবের অনুসারী এবং যারা প্রভুর কর্তৃত্ত্বকে সম্মান করে না।
এই সকল ভণ্ড শিক্ষকরা দুঃসাহসী ও একগুঁয়ে এবং মহিমান্বিত স্বর্গদূতের বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে ভয় পায় না। 11 ঐ সব ভণ্ড শিক্ষকদের চেয়ে স্বর্গদূতরা শক্তিতে ও পরাক্রমে বড় হয়েও প্রভুর কাছে তাদের বিষয়ে কুৎসাজনক অভিযোগ আনেন না।
12 এই ভণ্ড শিক্ষকরা বিচার বুদ্ধিহীন পশুর মতো, যারা তাদের সহজাত প্রবৃত্তির বশে কাজ করে। এরা জন্মেছে ধরা পড়তে ও নিহত হবার জন্য। বন্য পশুদের মতোই এই শিক্ষকরা ধ্বংস হয়ে যাবে। 13 এই ভণ্ড শিক্ষকরা বহুলোকের ক্ষতি করেছে, তাই তারাও কষ্টভোগ করবে, তাদের কুকাজের জন্য প্রাপ্তিস্বরূপ সেই হবে তাদের বেতন। এই ভণ্ড শিক্ষকরা প্রকাশ্যে মন্দ কাজ করতে ভালবাসে যাতে সমস্ত লোক তা দেখতে পায়।
তারা তোমাদের মধ্যে নোংরা দাগ ও কলঙ্কের মত। যেসব মন্দ কাজ তাদের খুশী করে, সেগুলি করে তারা তা উপভোগ করে। যখন তারা তোমাদের সঙ্গে পান ভোজন করে তখন তোমাদের পক্ষে তা লজ্জাজনক হয়। 14 কোন নারীকে দেখলে এই শিক্ষকরা তার প্রতি কামাসক্ত হয়। এরা এইভাবে পাপ করেই চলেছে। যারা বিশ্বাসে দুর্বল তাদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে ফুসলিয়ে নিয়ে যায়। তাদের অন্তঃকরণ লোভে অভ্যস্ত, তারা অভিশপ্ত।
15 এই ভণ্ড শিক্ষকরা সোজা পথ ছেড়ে ভুল পথে ভ্রমণ করছে। তারা বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকে অনুসরণ করে, যিনি মন্দ কাজের পারিশ্রমিক পেলে আনন্দ পেতেন। 16 কিন্তু একটি গাধা বিলিয়মকে বলেছিল যে সে ভুল কাজ করেছে। গাধা পশু বলে কথা বলতে পারে না; কিন্তু এই গাধা মানুষের গলায় কথা বলে ভাববাদীকে মুর্খের মত কাজ করতে দেয় নি।
17 এই ভণ্ড শিক্ষকরা জলবিহীন ঝর্ণার মতো। ঝোড়ো হাওয়ায় বয়ে যাওয়া মেঘের মতো। এক ঘোর অন্ধকার কূপ এই ভণ্ড শিক্ষকদের জন্য সংরক্ষিত আছে। 18 এরা শূন্যগর্ভ বড় বড় কথা বলে নিজেদের নিয়ে গর্ব করে। যারা সম্প্রতি ভুল পথে চলা লোকদের সংসর্গ থেকে বেরিয়ে এসেছে তাদের দৈহিক আকর্ষণ ও বাসনায় প্রলুদ্ধ করে। এইসব লোকদের তারা পাপের ফাঁদে ফেলে। 19 এরা তাদের স্বাধীনতার প্রলোভন দেখায়; কিন্তু নিজেরা সেইসব মন্দের দাস যেগুলি ধ্বংসের পথগামী, কারণ মানুষ তারই দাস যা তাকে চালনা করে।
20 যারা আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্ট সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে সংসারের অশুচি বিষয়গুলি থেকে মুক্ত হয়েছিল, তারা যদি তাদের পুরানো পাপের জীবনে ফিরে যায় তবে তাদের পরের অবস্থা আগের অবস্থা থেকে আরো খারাপ হবে। 21 যে পবিত্র শিক্ষা তারা লাভ করেছিল, তারা যদি সেই পবিত্র শিক্ষা থেকে সরে যায় তবে তাদের পক্ষে সেই সত্য পথ না জানাই ভাল ছিল। 22 একটি প্রবাদ আছে যা তাদের ক্ষেত্রে খাটে, “কুকুর ফেরে নিজের বমির দিকে,”(A) এবং “শুয়োরকে স্নান করালেও সে আবার যায় কাদায় গড়াগড়ি দিতে।”
5 এখন, ওহে শক্তিশালী শহর, তোমাদের সৈন্যদের একত্রিত কর।
তারা তাদের লাঠি দিয়ে
ইস্রায়েলের বিচারকের গালে আঘাত করবে।
বৈৎলেহমে মশীহ জন্মাবেন
2 কিন্তু বৈৎলেহম-ইফ্রাথা,
তুমি যিহূদার সবচেয়ে ছোট শহর।
তোমার পরিবার গোনার পক্ষে খুবই ছোট।
কিন্তু আমার জন্যে “ইস্রায়েলের শাসক” তোমার মধ্য থেকেই বেরিয়ে আসবে।
তার উৎপত্তি প্রাচীনকাল থেকে
বহু প্রাচীনকাল থেকে।
3 অতএব যতদিন না ঐ স্ত্রীলোকটি তার শিশু,
প্রতিশ্রুত রাজাকে জন্ম দেয় ততদিন প্রভু তাঁর লোকদের ছেড়ে দেবেন।
তাদের বাকি ভাইরা
ইস্রায়েলের লোকেদের কাছে ফিরে আসবে।
4 তারপর ইস্রায়েলের শাসক প্রভুর শক্তির ওপর
এবং প্রভু, তার ঈশ্বরের চমৎকার নামের ওপর নির্ভর করবে ও তার মেষের পালকে খাওয়াবে।
সেখানে শান্তি থাকবে।
কারণ সেই সময়ে তাঁর মহিমা পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছবে।
5 সেখানে শান্তি বিরাজ করবে।
হ্যাঁ, অশূরীয় সৈন্যরা আমাদের দেশ আক্রমণ করবে
এবং আমাদের দূর্গগুলিকে পদদলিত করবে।
কিন্তু ইস্রায়েলের শাসক সাতজন মেষপালক
ও আটজন নেতা মনোনীত করবেন।
6 তারা একটি তরবারি দিয়ে অশূরীয়দের শাসন করবে।
তারা তরবারি হাতে নিয়ে নিম্রোদের দেশ শাসন করবে।
ওই লোকেদের শাসন করার জন্য তারা তরবারি ব্যবহার করবে।
তখন ইস্রায়েলের শাসক আমাদের সেই অশূরীয়দের হাত থেকে রক্ষা করবেন;
যারা আমাদের দেশকে পদদলিত করতে আসবে।
7 তখন যাকোব পরিবারে বেঁচে থাকা লোকেরা বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।
তারা হবে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা শিশির বিন্দুর মত যা কারো ওপর নির্ভর করে না।
তারা হবে ঘাসের উপর পড়া বৃষ্টির মতো
যার কারো জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন হয় না।
8 জাতিগণের মধ্যে যাকোব পরিবারের অবশিষ্টাংশ যারা,
তারা অরণ্যে বন্য জন্তুদের মধ্যে সিংহের মত হবে।
মেষপালের মধ্যে যুব সিংহ যেমন তাদের তেমনই দেখাবে।
যখন সিংহ তাদের মধ্য দিয়ে যায় তখন সে তার যেখানে খুশী হয় সেখানে যায়।
সে যদি কোন পশুকে আক্রমণ করে
তবে কেউ সেই পশুকে রক্ষা করতে পারবে না।
অবশিষ্টাংশের অবস্থাও ঐরকমই হবে।
9 তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে তোমাদের হাত তুলবে
এবং তাদের ধ্বংস করবে।
লোকে ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করবে
10 প্রভু বলেছেন, “সেই সময়ে,
আমি তোমাদের ঘোড়াগুলোকে নিয়ে নেব
এবং তোমাদের রথগুলো ধ্বংস করব।
11 তোমাদের রাজ্যের শহরগুলিকে আমি ধ্বংস করব।
আমি তোমাদের দুর্গগুলি উপড়ে ফেলব।
12 তোমরা আর কোন যাদু দেখানোর চেষ্টা করবে না।
ভবিষ্যৎ বলার জন্যে তোমরা আর বেশী কাউকে পাবে না।
13 তোমাদের মূর্ত্তিগুলো যেগুলো তোমরা ভুলভাবে খচিত করেছ সেগুলো আমি ধ্বংস করব।
তোমাদের মূর্ত্তিগুলোকে মনে রাখবার জন্য যে পাথরগুলোকে খাড়া করেছ সেগুলো আমি ভেঙে চুরমার করে দেব।
তোমাদের হাতে গড়া আর কোন জিনিসই তোমরা পূজা করবে না।
14 পূজার নিমিত্ত আশেরার খুঁটিগুলোকে আমি ধ্বংস করব।
আমি তোমাদের শহরগুলি ধ্বংস করব।
15 কিছু জাতি আমাকে মানতে অস্বীকার করে।
তাই ঐ জাতিগুলির বিরুদ্ধে আমি আমার ক্রোধ দেখাব এবং প্রতিশোধ নেব।”
বিশ্রামবারে আরোগ্যদান করা কি উচিত?
14 এক বিশ্রামবারে যীশু ফরীশীদের একজন নেতৃস্থানীয় লোকের বাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে গেলেন। সেখানে সমবেত লোকেরা যীশুর প্রতি লক্ষ্য রাখছিল। 2 যীশুর সামনে একটি লোক ছিল যে উদরী রোগে ভুগছিল। 3 যীশু তখন ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের লক্ষ্য করে জিজ্ঞেস করলেন, “বিশ্রামবারে কাউকে সুস্থ করা কি বিধিসম্মত?” 4 কিন্তু তারা সকলে চুপ করে রইল। তখন যীশু সেই অসুস্থ লোকটিকে ধরে তাকে সুস্থ করলেন, পরে বিদায় নিলেন। 5 এরপর তিনি তাদের দিকে লক্ষ্য করে বললেন, “তোমাদের মধ্যে কারোর সন্তান বা গরু যদি বিশ্রামবারে কুয়োয় পড়ে যায় তাহলে তোমরা কি সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেখান থেকে টেনে তুলবে না?” 6 তারা কেউ এই কথার জবাব দিতে পারল না।
নিজেকে বড় করে তুলো না
7 যীশু দেখলেন নিমন্ত্রিত অতিথিরা কিভাবে নিজেরাই ভোজের শ্রেষ্ঠ আসন দখল করার চেষ্টা করছে। তাই তিনি তাদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি নিয়ে বললেন, 8 “বিয়ের ভোজে যখন কেউ তোমাদের নিমন্ত্রণ করে তখন সেখানে গিয়ে সম্মানের আসনটা দখল করে বসবে না। কারণ তোমার চেয়ে হয়তো আরো সম্মানিত কাউকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। 9 তা করলে যিনি তোমাদের উভয়কেই নিমন্ত্রণ করেছেন, তিনি এসে তোমায় বলবেন, ‘এঁকে তোমার জায়গাটা ছেড়ে দাও!’ তখন তুমি লজ্জায় পড়বে, কারণ তোমাকে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসতে হবে।
10 “কিন্তু তুমি যখন নিমন্ত্রিত হয়ে যাও, সেখানে গিয়ে সবচেয়ে নীচু জায়গায় বসবে। যিনি তোমায় নিমন্ত্রণ করেছেন তিনি এসে এরকম দেখে তোমায় বলবেন, ‘বন্ধু এস, এই ভাল আসনে বস।’ তখন নিমন্ত্রিত অন্য সব অতিথিদের সামনে তোমার সম্মান হবে। 11 যে কেউ নিজেকে সম্মান দিতে চায় তাকে নত করা হবে, আর যে নিজেকে নত করে তাকে সম্মানিত করা হবে।”
কি করলে তুমি পুরস্কৃত হবে
12 তখন যে তাঁকে নিমন্ত্রণ করেছিল, তাকে যীশু বললেন, “তুমি যখন ভোজের আয়োজন করবে তখন তোমার বন্ধু, ভাই, আত্মীয়স্বজন বা ধনী প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ করো না, কারণ তারা তোমাকে পাল্টা নিমন্ত্রণ করে প্রতিদান দেবে। 13 কিন্তু তুমি যখন ভোজের আয়োজন করবে তখন দরিদ্র, খোঁড়া, বিকলাঙ্গ ও অন্ধদের নিমন্ত্রণ করো। 14 তাতে যাদের প্রতিদান দেবার ক্ষমতা নেই, সেই রকম লোকদের নিমন্ত্রণ করার জন্য ধার্মিকদের পুনরুত্থানের সময় ঈশ্বর তোমায় পুরস্কার দেবেন।”
এক বিরাট ভোজের কাহিনী
(মথি 22:1-10)
15 যারা খেতে বসেছিল তাদের মধ্যে একজন এই কথা শুনে যীশুকে বলল, “ঈশ্বরের রাজ্যে যারা খেতে বসবে তারা সকলে ধন্য।”
16 তখন যীশু তাকে বললেন, “একজন লোক এক বিরাট ভোজের আয়োজন করেছিল আর সে অনেক লোককে নিমন্ত্রণ করেছিল। 17 ভোজ খাওয়ার সময় হলে সে তার দাসকে দিয়ে নিমন্ত্রিত লোকদের বলে পাঠাল, ‘তোমরা এস! কারণ এখন সবকিছু প্রস্তুত হয়েছে!’ 18 তারা সকলেই নানা অজুহাত দেখাতে শুরু করল। প্রথম জন তাকে বলল, ‘আমায় মাপ কর, কারণ আমি একটা ক্ষেত কিনেছি, তা এখন আমায় দেখতে যেতে হবে।’ 19 আর একজন বলল, ‘আমি পাঁচ জোড়া বলদ কিনেছি, এখন সেগুলি একটু পরখ করে নিতে চাই, তাই আমি যেতে পারব না; আমায় মাপ কর।’ 20 এরপর আর একজন বলল, ‘আমি সবে মাত্র বিয়ে করেছি, সেই কারণে আমি আসতে পারব না।’
21 “সেই দাস ফিরে গিয়ে তার মনিবকে একথা জানালে, তার মনিব রেগে গিয়ে তার দাসকে বলল, ‘যাও, শহরের পথে পথে, অলিতে গলিতে গিয়ে গরীব, খোঁড়া, পঙ্গু ও অন্ধদের ডেকে নিয়ে এস।’
22 “এরপর সেই দাস মনিবকে বলল, ‘প্রভু, আপনি যা যা বলেছেন তা করেছি, তা সত্ত্বেও এখনও অনেক জায়গা আছে।’ 23 তখন মনিব সেই দাসকে বলল, ‘এবার তুমি গ্রামের পথে পথে, বেড়ার ধারে ধারে যাও, যাকে পাও তাকেই এখানে আসবার জন্য জোর কর, যেন আমার বাড়ি ভরে যায়। 24 আমি তোমাদের বলছি, যাদের প্রথমে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল, তাদের কেউই আমার এই ভোজের স্বাদ পাবে না!’”
প্রথমে পরিকল্পনা কর
(মথি 10:37-38)
25 যীশুর সঙ্গে সঙ্গে এক বিরাট জনতা চলেছিল, তাদের দিকে ফিরে যীশু বললেন, 26 “যদি কেউ আমার কাছে আসে অথচ তার বাবা, মা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, এমন কি নিজের প্রাণকেও আমার চেয়ে বেশী ভালবাসে সে আমার শিষ্য হতে পারবে না। 27 যে কেউ নিজের ক্রুশ কাঁধে তুলে নিয়ে আমায় অনুসরণ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না।
28 “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি উঁচু একটি ঘর তুলতে চায়, তবে সে কি প্রথমে তা নির্মাণ করতে কত খরচ পড়বে তার হিসাব করে দেখবে না, যে তা শেষ করার মতো যথেষ্ট অর্থ তার আছে কি না? 29 তা না হলে সে ভিত গাঁথবার পর যদি তা শেষ করতে না পারে, তবে যারা সেটা দেখবে তারা সবাই তাকে নিয়ে ঠাট্টা করবে, আর বলবে, 30 এই লোকটা গাঁথতে শুরু করেছিল ঠিকই কিন্তু শেষ করতে পারল না।
31 “যদি একজন রাজা আর একজন রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যায়, তবে সে প্রথমে বসে চিন্তা করবে না যে তার মাত্র দশ হাজার সৈন্য বিপক্ষের বিশ হাজার সৈন্যের মোকাবিলা করতে পারবে কিনা? 32 যদি তা না পারে তবে তার শত্রু পক্ষ দূরে থাকতেই সে তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে সন্ধির প্রস্তাব দেবে।
33 “ঠিক সেই রকম ভাবে তোমাদের মধ্যে যে কেউ তার সর্বস্ব ত্যাগ না করে, সে আমার শিষ্য হতে পারে না।”
তোমার প্রভাব যেন নষ্ট না হয়
(মথি 5:13; মার্ক 9:50)
34 “লবণ ভাল, তবে লবণের নোনতা স্বাদ যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা কি আবার নোনতা করা যায়? 35 তখন তা না জমির জন্য, না সারের গাদার জন্য উপযুক্ত থাকে, লোকে তা বাইরেই ফেলে দেয়।
“যার শোনার মতো কান আছে সে শুনুক।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International