M’Cheyne Bible Reading Plan
মন্দিরে সেবা করবার নিমিত্ত লেবীয়দের জন্য পরিকল্পনা
23 রাজা দায়ূদের বয়স হওয়ায় তিনি তাঁর পুত্র শলোমনকে ইস্রায়েলের রাজপদে অধিষ্ঠিত করে 2 ইস্রায়েলের সমস্ত নেতা, যাজক ও লেবীয়দের ডেকে পাঠালেন। 3 তিনি গুনে দেখলেন 30 বছরের বেশি বয়স্ক লেবীয়দের সর্বমোট সংখ্যা 38,000 জন। 4 দায়ূদ আদেশ দিলেন, “24,000 জন লেবীয় প্রভুর মন্দির বানানোর কাজের তত্ত্বাবধান করবে। 6000 লেবীয় আধিকারিক ও বিচারকের কাজ করবে। 5 4000 লেবীয় দ্বাররক্ষী হবে। এবং আরো 4000 জন গায়ক হিসেবে কাজ করবে। আমি এদের জন্য যে বিশেষ বাদ্যযন্ত্র বানিয়েছি তাই দিয়ে তারা প্রভুর প্রশংসা গীত গাইবে।”
6 দায়ূদ গের্শোন, কহাৎ ও মরারি লেবির পুত্রদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে তিন ভাগে ভাগ করলেন।
গের্শোনের পরিবারগোষ্ঠী
7 গের্শোন পরিবারগোষ্ঠী থেকে ছিলেন লাদন আর শিমিয়ি। 8 লাদনের তিন পুত্রের নাম যথাক্রমে যিহীয়েল, সেথম ও যোয়েল। 9 আর লাদন পরিবারের নেতা শিমিয়ির তিন পুত্রের নাম শলোমোৎ, হসীয়েল ও হারণ।
10 শিমিয়ির চার পুত্রের নাম যথাক্রমে যহত্, সীন, যিয়ূশ ও বরীয়। 11 যহত্ ছিল প্রধান এবং সীষ ছিল দ্বিতীয়। কিন্তু যিয়ূশ আর বরীয়র বেশী পুত্রকন্যা ছিল না বলে তাদের এক পরিবারভুক্ত হিসেবে গণনা করা হয়।
কহাতের পরিবারগোষ্ঠী
12 কহাতের চার পুত্রের নাম অম্রাম, যিষ্হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল। 13 অম্রামের পুত্রদের নাম ছিল হারোণ আর মোশি। হারোণ এবং তাঁর উত্তরপুরুষদের বরাবরের জন্য বিশিষ্ট জন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল। তাঁরা প্রভুর যাবতীয় পূজো-অর্চনা ও ভজনার কাজ সম্পাদন করতেন, প্রভুর সামনে ধুপধূনো দিতেন ও যাজকের কাজও করতেন। প্রভুর নামে লোকদের আশীর্বাদ করবার মর্যাদাও তাঁদের দেওয়া হয়েছিল।
14 মোশি ছিলেন ঈশ্বরের লোক। 15 তাঁর পুত্র গের্শোম আর ইলীয়েষরকে লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর অন্তর্গত হিসেবে ধরা হয়। 16 ইলীয়েষরের বড় ছেলের নাম রহবিয় আর 17 গের্শোমের বড় ছেলের নাম ছিল শবূয়েল। ইলীয়েষরের আর কোনো পুত্র না থাকলেও রহবিয়ের আরো অনেক পুত্র ছিল।
18 যিষ্হরের বড় ছেলের নাম শলোমীত্।
19 হিব্রোণের পুত্রদের মধ্যে প্রধান যিরিয়, দ্বিতীয় অমরিয়, তৃতীয় যহসীয়েল আর চতুর্থ যিকমিয়াম।
20 উষীয়েলের পুত্রদের নাম যথাক্রমে মীখা ও যিশিয়।
মরারির পরিবারগোষ্ঠী
21 মরারির পুত্রদের নাম মহলি আর মূশি। মহলির পুত্রদের নাম ইলিয়াসর আর কীশ। 22 ইলিয়াসর অপুত্রক অবস্থাতেই মারা গিয়েছিলেন। তাঁর শুধু কয়েকটি কন্যা ছিল, যারা নিজেদের আত্মীয়দের মধ্যেই কীশের পুত্রদের বিয়ে করেছিল। 23 মূশির পুত্রদের নাম মহলি, এদর ও যিরেমোৎ।
লেবীয়দের কাজ
24 কুড়ি বছরের বেশি বয়স্ক লেবির উত্তরপুরুষদের মধ্যে যারা প্রভুর মন্দিরে কাজ করেছিল, পরিবার অনুযায়ী তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল। এরা সকলেই নিজেদের পরিবারের প্রধান ছিল।
25 দায়ূদ বলেছিলেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাঁর লোকদের শান্তি দিয়েছেন। চির দিনের জন্য তিনি জেরুশালেমে থাকতে এসেছেন। 26 তাই লেবীয়দের আর পবিত্র তাঁবু বা প্রভুর সেবার উপকরণ বইতে হবে না।”
27 ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি দায়ূদের শেষ আদেশ ছিল লেবি পরিবারগোষ্ঠীর উত্তরপুরুষের লোকসংখ্যা গণনা করা। 20 বছর বা তার বেশি বয়স্ক সমস্ত লেবীয়দের গোনা হয়েছিল।
28 লেবীয়রা হারোণের উত্তরপুরুষদের মন্দিরে প্রভুর কাজকর্মের সহায়তা করতেন, এছাড়াও তাঁরা মন্দিরের উঠোন এবং আশেপাশের ঘরগুলোর তদারকি করতেন। পবিত্র সামগ্রীর এবং ঈশ্বরের মন্দিরের সমস্ত আসবাবপত্রের শুচিতা রক্ষা করার দায়িত্বও ছিল তাঁদের ওপর। 29 টেবিলের ওপর রুটি রাখবার এবং গম, শস্য নৈবেদ্য ও খামিরবিহীন রুটি রাখবারও দায়িত্ব ছিল তাঁদের ওপর। মন্দিরের বাসন-কোসন এবং নৈবেদ্য সামলানো ছাড়াও জিনিসপত্র মাপা ও ওজন করার কাজও তাঁদেরই করতে হত। 30 প্রতি দিন সকালে ও সন্ধ্যায় তাঁরা প্রভুর প্রশংসা করতেন ও তাঁকে ধন্যবাদ দিতেন। 31 লেবীয়রা প্রভুর কাছে বিশ্রামের দিন, অমাবস্যার দিন ও অন্যান্য উৎসবের দিনগুলিতে হোমবলি উৎসর্গ করতেন। প্রতিদিন তাঁরা প্রভুর সেবা করতেন। প্রতি বার কতজন লেবীয় সেবা করবে সে ব্যাপারে বিশেষ নিয়ম ছিল এবং তাঁরা এই নিয়মগুলি অনুসরণ করতেন। 32 লেবীয়রা তাঁদের আত্মীয়দের, যে যাজকরা ছিলেন হারোণের উত্তরপুরুষ, প্রভুর মন্দিরে সেবার কাজে সাহায্য করতেন। তাঁরা পবিত্র তাঁবু এবং পবিত্র স্থানেরও যত্ন নিতেন।
পরিবর্তিত জীবন
4 তাই বলছি, খ্রীষ্ট নিজেই যখন তাঁর মরদেহে দুঃখভোগ করলেন, তখন তোমরাও সেই একই মনোভাব নিয়ে নিজেদের মনটাকে দৃঢ় কর, কারণ দেহে যার দুঃখভোগ হয়েছে, সে পাপ করা থেকে নিবৃত্ত হয়েছে। 2 নিজেদের শক্তিশালী করে তোলো যাতে মানবিক বাসনার অনুগামী না হয়ে তোমরা বাকি জীবন ঈশ্বর তোমাদের কাছে যা চান তা করে কাটাতে পার। 3 কারণ অতীতে অবিশ্বাসীরা যেমন চলেছিল তেমনি চলে তোমরা অনেক সময় নষ্ট করেছ। তোমরা যৌন পাপে ও কামোচ্ছাসে লিপ্ত ছিলে এবং হুল্লোড়পূর্ণ মাতলামিতে ভরা ভোজসভায় যোগ দিয়ে ও ঘৃন্য মূর্তিপূজা করেই তো দিন কাটিয়েছ।
4 কিন্তু এখন সেই অবিশ্বাসী লোকেরাই দেখে আশ্চর্য হয় যে তোমরা আর সেই জংলী বেপরোয়া জীবনযাপনে যোগ দাও না; আর সেই জন্য তারা তোমাদের গালাগালি ও অপবাদ দেয়। 5 কিন্তু তাদের এই রকম আচরণের জন্য তাঁর (খ্রীষ্টের) কাছে কৈফিয়ত্ দিতে হবে, যিনি জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন। 6 এই কারণেই এই সুসমাচার সেই সমস্ত বিশ্বাসীদের কাছে প্রচার করা হয়েছিল যাঁরা আজকে মৃত; যেন দৈহিকভাবে মানুষের মত তাঁদের মৃত্যুর বিধান দেওয়া হলেও ঈশ্বরের মত তাঁরা আত্মার দ্বারা অনন্তকাল বাস করেন।
উপযুক্ত অধ্যক্ষ হও
7 সেই সময় ঘনিয়ে আসছে যখন সবকিছুই শেষ হবে, সুতরাং মন স্থির রাখ ও আত্মসংযমী হও। এটা তোমাদের প্রার্থনা করতে সাহায্য করবে। 8 সব থেকে বড় কথা এই যে তোমরা পরস্পরকে একাগ্রভাবে ভালবাস, কারণ ভালবাসা অনেক অনেক পাপ ঢেকে দেয়। 9 কোনরকম অভিযোগ না করে পরস্পরের প্রতি অতিথিপরায়ণ হও। 10 তোমরা ঈশ্বরের কাছ থেকে যে যেমন আত্মিক উপহার পেয়েছ, সেই অনুসারে উপযুক্ত অধ্যক্ষের মত একে অপরকে সাহায্য কর। 11 যদি কেউ প্রচার করে, তবে সে এমনভাবে তা করুক, যেন ঈশ্বরের বাক্য বলছে। যদি কেউ সেবা করে, সে ঈশ্বরের দেওয়া শক্তি অনুসারেই তা করুক, যাতে সব বিষয়ে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রশংসিত হন। গৌরব ও পরাক্রম যুগে যুগে তাঁরই হোক্। আমেন।
খ্রীষ্টীয়ান হিসাবে দুঃখভোগ
12 প্রিয় বন্ধুরা, তোমাদের যাচাই করার জন্য যে কষ্টের আগুন তোমাদের মধ্যে জ্বলছে, তাতে তোমরা আশ্চর্য হয়ো না। কোন অদ্ভুত কিছু তোমাদের জীবনে ঘটছে বলে মনে করো না। 13 বরং তোমরা আনন্দ করো যে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের ভাগীদার হতে পেরেছ। এরপর তাঁর মহিমা যখন প্রকাশ পাবে তখন তোমরা মহা আনন্দ লাভ করবে। 14 তোমরা খ্রীষ্টানুসারী হয়েছ বলে কেউ যদি তোমাদের অপমান করে, তবে তোমরা ধন্য, কারণ ঈশ্বরের মহিমার আত্মা তোমাদের মধ্যে বিরাজ করছে। 15 তোমাদের মধ্যে কেউ যেন খুনী, কি চোর, কি দুষ্কর্মকারী রূপে বা অন্যায়ভাবে অন্যের ব্যাপারে হাত দিয়ে দুঃখভোগ না করে। 16 কিন্তু যদি কেউ খ্রীষ্টীয়ান বলে দুঃখভোগ করে, তবে সে যেন লজ্জা না পায়, কিন্তু তার সেই নাম (খ্রীষ্টীয়ান) আছে বলে সে ঈশ্বরের প্রশংসা করুক। 17 বিচার আরম্ভ হবার সময় হয়েছে এবং তা ঈশ্বরের লোকদের থেকেই শুরু করা হবে। সেই বিচার যদি আমাদের থেকেই শুরু করা হয় তবে যারা ঈশ্বরের সুসমাচার প্রত্যাখ্যান করে তাদের পরিণাম কি হবে?
18 শাস্ত্র যেমন বলে, “নীতিপরায়ণদের পরিত্রাণ লাভ যদি এমন কঠিন হয়
তবে যারা ঈশ্বরবিহীন ও পাপী তাদের কি হবে?”(A)
19 যারা ঈশ্বরের ইচ্ছানুসারে দুঃখভোগ করছে, তারা সেই বিশ্বস্ত সৃষ্টিকর্তার হাতে নিজেদের (আত্মাকে) সঁপে দিক এবং ভাল কাজ করে যাক্।
লোকেদের দুষ্ট পরিকল্পনা সমূহ
2 যারা পাপ করার পরিকল্পনা করে
তাদের ক্লেশ হবে।
ওই লোকেরা বিছানায় শুয়ে শুয়ে দুষ্ট পরিকল্পনাগুলি করে।
তারপর সকালের আলো ফুটলে তারা সেই সব পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে।
কিন্তু কেন? কারণটা সহজ, তারা যেটা চাইছে সেটা করবার ক্ষমতা তাদের আছে।
2 মাঠগুলো তাদের দরকার হয়,
সেজন্য তারা সেগুলি নিয়ে নেয়।
তাদের বাড়ির দরকার হয়,
তাই তারা সেগুলি নিয়ে নেয়।
তারা কোন একটা লোককে ঠকিয়ে তার বাড়িটা নিয়ে নেয়,
আবার একটা লোককে ঠকিয়ে তার জমি নিয়ে নেয়।
লোককে শাস্তি দেবার জন্য প্রভুর পরিকল্পনা
3 সেজন্য প্রভু এই কথাগুলো বলেছেন:
“দেখো, আমি এই পরিবারের বিরুদ্ধে অমঙ্গলের চিন্তা করছি।
তোমরা নিজেদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হবে।
তোমাদের অহঙ্কার করা বন্ধ হবে।
কেন? কারণ, খারাপ সময় আসছে।
4 তখন লোকে তোমাদের বিষয়ে নিয়ে গান করবে।
তারা এই দুঃখের গানটি গাইবে:
‘আমাদের সর্বনাশ হয়ে গেছে!
প্রভু আমাদের দেশ নিয়ে নিয়েছেন এবং অন্যদের তা দিয়েছেন।
হ্যাঁ, তিনি আমার জমি আমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছেন।
প্রভু আমাদের জমিগুলি ভাগ করে শত্রুদের দিয়ে দিয়েছেন।
5 সেজন্য আমরা আর জমি জরিপ করতে
এবং তা প্রভুর লোকেদের মধ্যে ভাগ করে দিতে পারব না।’”
মীখাকে প্রচার করতে নিষেধ করা হল
6 লোকেরা বলছে, “আমাদের ধর্মোপদেশ দিও না।
আমাদের সম্বন্ধে ঐসব খারাপ বিষয়গুলি বোলো না।
কোন কিছু খারাপ আমাদের প্রতি ঘটবে না।”
7 কিন্তু হে যাকোবের বংশ,
আমাকে অবশ্যই এই কথাগুলো বলতে হবে।
তোমরা যেসব খারাপ কাজ করেছো
তার জন্য প্রভু তাঁর ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছেন।
যদি তোমরা ঠিকভাবে জীবনযাপন করতে
তাহলে আমি তোমাদের কাছে ভালো কথা বলতে পারতাম।
8 কিন্তু আমার প্রজাদের কাছে তারা যেন শত্রুর মত।
যেসব লোকেরা তোমাদের সামনে দিয়ে পথ চলে, তাদের তাদের জামাকাপড় তোমরা চুরি করেছো।
ওইসব লোকেরা ভাবে যে তারা নিরপদে আছে।
কিন্তু তোমরা তাদের কাছে থেকে এমন জিনিস ছিনিয়ে নাও যেন তারা যুদ্ধের বন্দী কয়েদী।
9 তোমরা আমার লোকেদের স্ত্রীদের বিবাহ বিচ্ছেদ করিয়েছ
এবং তাদের আরামের গৃহ থেকে বার করে দিয়েছ।
তাদের শিশুদের কাছ থেকে
তোমরা আমার সম্পদ চিরকালের জন্য কেড়ে নিয়েছিলে।
10 ওঠো, চলে যাও!
এটা তোমাদের বিশ্রামের জায়গা নয় কারণ তোমরা এই জায়গাটিকে ধ্বংস করেছো!
তোমরা একে অশুচি করেছো, সেজন্য একে ধ্বংস করা হবে!
সেটা এক ভয়ঙ্কর বিধ্বংসী কাণ্ড হবে!
11 এইসব লোকেরা আমার কথা শুনতে চায় না,
কিন্তু যদি কোন লোক মিথ্যা কথা বলতে আসে তখন
কিন্তু তারা তাকে মেনে নেবে।
তারা একজন মিথ্যা ভাববাদীকে মেনে নেবে যদি সে আসে এবং বলে,
“ভবিষ্যতে সুসময় আসছে, তখন দ্রাক্ষারস ও সুরার বাহুল্য হবে।”
প্রভু তাঁর লোকদের একত্রিত করবেন
12 হ্যাঁ, যাকোবের লোকেরা,
আমি তোমাদের সকলকে একত্রিত করবো।
আমি ইস্রায়েলের যুদ্ধে অবশিষ্ট জীবিত ব্যক্তিদের একত্রিত করে আনবো।
যেমন মেষদের মেষখোঁয়াড় একত্রিত করা হয়,
মেষপাল যেমন চরানোর মাঠে একত্রিত করা হয়,
সেইভাবেই আমি তাদের একত্রিত করবো,
তখন জায়গাটি বহু লোকজনের
কোলাহলে ভরে যাবে।
13 তারপর “চূর্নকারী”[a] ব্যক্তিটি পথ খুলে দেবে
এবং তার লোকেদের সামনে যাবে।
তারা দরজাগুলো ভাঙবে এবং শহর ছেড়ে চলে যাবে।
তাদের রাজা তাদের সঙ্গে আগে আগে হাঁটবেন
আর প্রভু তাঁর লোকেদের সামনে থাকবেন।
প্রার্থনার বিষয়ে যীশুর শিক্ষা
(মথি 6:9-15)
11 যীশু এক জায়গায় প্রার্থনা করছিলেন। প্রার্থনা শেষ হলে পর তাঁর একজন শিষ্য এসে তাঁকে বললেন, “প্রভু, যোহন যেমন তাঁর শিষ্যদের প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, আপনিও তেমনি আমাদের প্রার্থনা করতে শেখান।”
2 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন বলো,
‘পিতা, তোমার পবিত্র নামের সমাদর হোক্,
তোমার রাজ্য আসুক।
3 দিনের আহার তুমি প্রতিদিন আমাদের দাও।
4 আমাদের পাপ ক্ষমা কর,
কারণ আমাদের বিরুদ্ধে যারা অন্যায় করেছে, আমরাও তাদের ক্ষমা করেছি,
আর আমাদের পরীক্ষায় পড়তে দিও না।’”
অনবরত যাঞ্চা কর
(মথি 7:7-11)
5-6 এরপর যীশু তাঁদের বললেন, “ধর, তোমাদের কারো একজন বন্ধু আছে। আর সে মাঝরাতে তার কাছে গিয়ে বলল, ‘বন্ধু আমায় খান তিনেক রুটি ধার দাও, কারণ আমার এক বন্ধু যাত্রাপথে এই মাত্র আমার ঘরে এসেছে, তাকে খেতে দেবার মতো ঘরে কিছু নেই।’ 7 সেই লোক যদি ঘরের ভেতর থেকে উত্তর দেয়, ‘দেখ, আমায় বিরক্ত করো না! এখন দরজা বন্ধ আছে আর ছেলেমেয়েদের নিয়ে আমি শুয়ে পড়েছি। আমি এখন তোমাকে কিছু দেবার জন্য উঠতে পারব না।’ 8 আমি তোমাদের বলছি, সে যদি বন্ধু হিসাবে উঠে তাকে কিছু না দেয়, তবু লোকটি বার বার করে অনুরোধ করছে বলে সে উঠবে ও তার যা দরকার তা তাকে দেবে। 9 তাই আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চাও, তোমাদের দেওয়া হবে, খোঁজ তোমরা পাবে। দরজায় ধাক্কা দাও, তোমাদের জন্য দরজা খোলা হবে। 10 কারণ যারা চায়, তারা পায়। যারা খোঁজ করে, তারা সন্ধান পায় আর যারা দরজায় ধাক্কা দেয়, তাদের জন্য দরজা খোলা হয়। 11 তোমাদের মধ্যে এমন বাবা কি কেউ আছে যার ছেলে মাছ চাইলে সে তাকে মাছের বদলে সাপ দেবে? 12 অথবা ছেলে যদি ডিম চায় তবে তাকে কাঁকড়াবিছা দেবে? 13 তাই তোমরা যদি মন্দ প্রকৃতির হয়েও তোমাদের ছেলেমেয়েদের ভাল ভাল জিনিস দিতে জান, তবে স্বর্গের পিতার কাছে যারা চায়, তিনি যে তাদের পবিত্র আত্মা দেবেন, এটা কত না নিশ্চয়।”
ঈশ্বরই যীশুর ক্ষমতার উৎস
(মথি 12:22-30; মার্ক 3:20-27)
14 একসময় যীশু একজনের মধ্য থেকে একটা বোবা ভূতকে বার করে দিলেন। সেই ভূত বার হয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঐ লোকটি কথা বলতে শুরু করল। এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে গেল। 15 কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, “ভূতদের রাজা বেলস্বূলের সাহায্যেই ও ভূত তাড়ায়!”
16 আবার কেউ কেউ যীশুকে পরীক্ষা করবার জন্য আকাশ থেকে কোন চিহ্ন দেখাতে বলল। 17 কিন্তু তিনি তাদের মনের কথা জানতে পেরে বললেন, “যে রাজ্য আত্মকলহে নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়, সেই রাজ্য ধ্বংস হয়। আবার কোন পরিবার যদি নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে, তবে সেই পরিবারও ভেঙে যায়। 18 তাই শয়তানও যদি নিজের বিরুদ্ধে নিজে দাঁড়ায় তবে কেমন করে তার রাজ্য টিকবে? আমি তোমাদের একথা জিজ্ঞেস করছি কারণ তোমরা বলছ আমি বেলস্বূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই। 19 কিন্তু আমি যদি বেলস্বূলের সাহায্যে ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের অনুগামীরা কার সাহায্যে তা ছাড়ায়? তাই তারাই তোমাদের বিচার করুক। 20 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের শক্তিতে ভূতদের ছাড়াই, তাহলে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে ইতিমধ্যেই এসে পড়েছে।
21 “যখন কোন শক্তিশালী লোক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তার ঘর পাহারা দেয়, তখন তার ধনসম্পদ নিরাপদে থাকে। 22 কিন্তু তার থেকে পরাক্রান্ত কোন লোক যখন তাকে আক্রমণ করে পরাস্ত করে, তখন নিরাপদে থাকার জন্য যে অস্ত্রশস্ত্রের ওপর সে নির্ভর করেছিল, অন্য শক্তিশালী লোকটি সেগুলো কেড়ে নেয় আর ঐ লোকটির ঘরের সব জিনিসপত্র লুটে নেয়।
23 “যে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষ। যে আমার সঙ্গে কুড়ায়না, সে ছড়ায়়।
শূন্য ঘর
(মথি 12:43-45)
24 “কোন অশুচি আত্মা যখন কোন লোকের মধ্য থেকে বাইরে আসে, তখন সে বিশ্রামের খোঁজে নির্জন স্থানে ঘোরাফেরা করে আর বিশ্রাম না পেয়ে বলে, ‘যে ঘর থেকে আমি বাইরে এসেছি, সেখানেই ফিরে যাব।’ 25 কিন্তু সেখানে ফিরে গিয়ে সে যখন দেখে সেই ঘরটি পরিষ্কার করা হয়েছে আর সাজানো-গোছানো আছে, 26 তখন সে গিয়ে তার থেকে আরো দুষ্ট সাতটা আত্মাকে নিয়ে এসে ঐ ঘরে বসবাস করতে থাকে। তাই ঐ লোকের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরো ভয়ঙ্কর হয়।”
প্রকৃত সুখী লোক
27 যীশু যখন এইসব কথা বলছিলেন, তখন সেই ভীড়ের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক চিৎকার করে বলে উঠল, “ধন্য সেই মা, যিনি আপনাকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন, আর যাঁর স্তন আপনি পান করেছিলেন।”
28 কিন্তু যীশু বললেন, “এর থেকেও ধন্য তারা যারা ঈশ্বরের শিক্ষা শোনে ও তা পালন করে।”
চিহ্নের অন্বেষণ
(মথি 12:38-42; মার্ক 8:12)
29 এরপর যখন ভীড় বাড়তে লাগল, তখন যীশু বললেন, “এ যুগের লোকেরা খুবই দুষ্ট, তারা কেবল অলৌকিক চিহ্নের খোঁজ করে। কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া তাদের আর কোন চিহ্ন দেখানো হবে না। 30 যোনা যেমন নীনবীয় লোকদের কাছে চিহ্নস্বরূপ হয়েছিলেন, তেমনি এই যুগের লোকদের কাছে মানবপুত্র হবেন।
31 “দক্ষিণ দেশের রাণী[a] বিচার দিনে উঠে এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন ও তাদের দোষী সাব্যস্ত করবেন। কারণ শলোমনের জ্ঞানের কথা শোনার জন্য তিনি পৃথিবীর প্রান্ত থেকে এসেছিলেন, আর শলোমন এর থেকে মহান একজন এখন এখানে আছেন।
32 “বিচার দিনে নীনবীয় লোকেরা এই যুগের লোকদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে, তারা এদের ওপর দোষারোপ করবে, কারণ তারা যোনার প্রচার শুনে অনুশোচনা করেছিল, আর এখন যোনার থেকে মহান একজন এখানে আছেন।
জগতের আলোস্বরূপ হও
(মথি 5:15; 6:22-23)
33 “প্রদীপ জ্বেলে কেউ আড়ালে রাখে না বা ধামা চাপা দিয়ে রাখে না বরং তা বাতিদানের ওপরেই রাখে, যেন যারা ঘরে আসে, তারা আলো দেখতে পায়। 34 তোমার চোখ যদি সুস্থ থাকে, তবে তোমার সমস্ত দেহটি দীপ্তিময় হবে; কিন্তু তা যদি মন্দ হয় তবে তোমার দেহ অন্ধকারময় হবে। 35 তাই সাবধান, তোমার মধ্যে যে আলো আছে তা যেন অন্ধকার না হয়। 36 তোমার সারা দেহ যদি আলোকময় হয়, তার মধ্যে যদি এতটুকু অন্ধকার না থাকে, তবে তা সম্পূর্ণ আলোকিত হবে, ঠিক যেমন বাতির আলো তোমার ওপর পড়ে তোমায় আলোকিত করে তোলে।”
যীশু ফরীশীদের সমালোচনা করলেন
(মথি 23:1-36; মার্ক 12:38-40; লূক 20:45-47)
37 যীশু এই কথা শেষ করলে একজন ফরীশী তার বাড়িতে যীশুকে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করল। তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে খাবার আসনে বসলেন। 38 কিন্তু সেই ফরীশী দেখল যে খাওয়ার আগে প্রথা মতো যীশু হাত ধুলেন না। 39 প্রভু তাকে বললেন, “তোমরা ফরীশীরা থালা বাটির বাইরেটা পরিষ্কার কর, কিন্তু ভেতরে তোমরা দুষ্টতা ও লোভে ভরা। 40 তোমরা মূর্খের দল! তোমরা কি জান না যিনি বাইরেটা করেছেন তিনি ভেতরটাও করেছেন? 41 তাই তোমাদের থালা বাটির ভেতরে যা কিছু আছে তা দরিদ্রদের বিলিয়ে দাও, তাহলে সবকিছুই তোমাদের কাছে সম্পূর্ণ শুচি হয়ে যাবে।
42 “কিন্তু হায়, ফরীশীরা ধিক্ তোমাদের কারণ তোমরা পুদিনা, ধনে ও বাগানের অন্যান্য শাকের দশমাংশ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করে থাক, কিন্তু ন্যায়বিচার ও ঈশ্বরের প্রতি প্রেমের বিষয়টি অবহেলা কর। কিন্তু প্রথম বিষয়গুলির সঙ্গে সঙ্গে শেষেরগুলিও তোমাদের জীবনে পালন করা কর্তব্য।
43 “ধিক্ ফরীশীরা! তোমরা সমাজ-গৃহে সম্মানিত আসন আর হাটে বাজারে সকলের সশ্রদ্ধ অভিবাদন পেতে কত না ভালবাস। 44 ধিক্ তোমাদের! তোমরা মাঠের মাঝে মিশে থাকা কবরের মতো, লোকেরা না জেনে যার ওপর দিয়ে হেঁটে যায়।”
45 একজন ব্যবস্থার শিক্ষক এর উত্তরে যীশুকে বললেন, “গুরু, আপনি এসব যা বললেন, তার দ্বারা আমাদেরও অপমান করলেন।”
46 তখন যীশু তাকে বললেন, “হে ব্যবস্থার শিক্ষকরা, ধিক্ তোমাদের, তোমরা লোকদের ওপর এমন ভারী বোঝা চাপিয়ে দাও যা তাদের পক্ষে গ্রহণ করা অসম্ভব; আর তোমরা নিজেরা সেই ভার বইবার জন্য সাহায্য করতে তাতে একটা আঙুল পর্যন্ত ছোঁয়াও না। 47 ধিক্ তোমাদের, কারণ তোমরা ভাববাদীদের সমাধিগুহা গেঁথে থাকো; আর এইসব ভাববাদীদের তোমাদের পূর্বপুরুষরাই হত্যা করেছিল। 48 তাই এই কাজ করে তোমরা এই সাক্ষ্যই দিচ্ছ যে তোমাদের পূর্বপুরুষরা যে কাজ করেছিল তা তোমরা ঠিক বলে মেনে নিচ্ছ। কারণ তারা ওদের হত্যা করেছিল আর তোমরা ওদের সমাধি গুহা রচনা করছ। 49 এই কারণেই ঈশ্বরের প্রজ্ঞা বলছে, ‘আমি তাদের কাছে যে ভাববাদী ও প্রেরিতদের পাঠাবো, তাদের মধ্যে কাউকে কাউকে তারা হত্যা করবে, কাউকে বা নির্যাতন করবে।’
50 “সেই জন্যই জগৎ সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত যত ভাববাদী হত্যা করা হয়েছে, তাদের সকলের হত্যার জন্য এই কালের লোকদের শাস্তি পেতে হবে। 51 হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, হেবলের রক্তপাত থেকে আরম্ভ করে যে সখরিয়কে যজ্ঞবেদী ও মন্দিরের মধ্যবর্তী স্থানে হত্যা করা হয়েছিল, সেই সখরিয়ের হত্যা পর্যন্ত সমস্ত রক্তপাতের দায়ে দায়ী হবে একালের লোকেরা।
52 “ধিক্ ব্যবস্থার শিক্ষকরা কারণ তোমরা জ্ঞানের চাবিটি ধরে আছ। তোমরা নিজেরাও প্রবেশ করনি আর যারা প্রবেশ করার চেষ্টা করছে তাদেরও বাধা দিচ্ছ।”
53 তিনি যখন সেই জায়গা ছেড়ে চলে গেলেন, তখন ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা তাঁর বিরুদ্ধে ভীষণভাবে শত্রুতা করতে আরম্ভ করল এবং পরে তাঁকে নানাভাবে প্রশ্ন করতে থাকল। 54 তারা সুযোগের অপেক্ষা করতে লাগল যেন যীশু ভুল কিছু করলে তাই দিয়ে তাঁকে ধরতে পারে।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International