Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 বংশাবলি 18

দায়ূদের বিভিন্ন দেশ জয়

18 দায়ূদ পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করে তাদের যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং পলেষ্টীয়দের কাছ থেকে গাৎ‌ ও তার পার্শ্ববর্তী ছোটখাটো শহরগুলি দখল করে নিয়ে নেন।

এরপর তিনি মোয়াবীয়দের হারিয়ে তাদের নিজের বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য করান। মোয়াবীয়রা দায়ূদের জন্য নিয়মিত উপঢৌকন পাঠাতো।

সোবার রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীর সঙ্গেও দায়ূদ যুদ্ধ করেন। হদরেষর ফরাৎ নদী পর্যন্ত তাঁর রাজত্ব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দায়ূদ তাঁর সেনাবাহিনীকে হমাত পর্যন্ত পিছু হঠতে বাধ্য করেছিলেন। তিনি হদরেষরের কাছ থেকে 7000 রথের সারথী সহ 1000 রথ, 20,000 সৈনিক আদায় করা ছাড়াও হদরেষরের অধিকাংশ রথ নষ্ট করে দিয়েছিলেন। শুধুমাত্র 100 রথ তিনি অবশিষ্ট রেখেছিলেন।

অরামীয়রা দম্মেশক থেকে সোবার রাজা হদরেষরকে সাহায্য করতে এলে দায়ূদ তাদেরও পরাজিত করেন এবং 22,000 অরামীয় সেনাকে হত্যা করেন। এরপর দায়ূদ অরামের দম্মেশকে দুর্গ বানান। অরামীয়রা তাঁর বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর জন্য উপঢৌকন আনতে শুরু করে। প্রভু দায়ূদকে সর্বত্র বিজয়ী করেছিলেন।

হদরেষরের সেনাবাহিনীর থেকে সোনার ঢালগুলি দায়ূদ জেরুশালেমে এনেছিলেন। টিভৎ ও কূন শহর থেকে তিনি প্রচুর পরিমাণে পিতলও এনেছিলেন। এই শহরগুলি ছিল হদরেষরের অধিকারে। পরবর্তীকালে, শলোমন এই সমস্ত পিতল মন্দিরের জন্য পিতলের জলাধার, পিতলের থামসমূহ এবং পিতলের অন্যান্য জিনিষ বানাবার কাজে ব্যবহার করেছিলেন।

হমাতের রাজা তয়ূ যখন খবর পেলেন, দায়ূদ সোবার রাজা হদরেষরের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছেন, 10 তখন তিনি তাঁর পুত্র হদোরামকে দিয়ে সন্ধিপ্রস্তাব করে দায়ূদের কাছে আশীর্বাদ নিতে পাঠালেন যেহেতু দায়ূদ হদরেষরকে পরাজিত করেছিলেন। হদরেষর তয়ূর সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। দায়ূদ, হদরেষরকে পরাজিত করায় তয়ূ হদোরামের হাত দিয়ে সোনা, রূপো ও পিতলের বহু মূল্যবান সামগ্রী পাঠিয়েছিলেন। 11 ইদোম, মোয়াব, অম্মোন, অমালেক এবং পলেষ্টীয় থেকে দায়ূদ যে সোনা, রূপো এবং পিতলের জিনিষপত্র পেয়েছিলেন তা দিয়ে তিনিও একই কাজ করলেন। তিনি এগুলি প্রভুর উদ্দেশ্যে নিবেদন করলেন।

12 লবণ উপত্যকায় সরূয়ার পুত্র অবীশয় 18,000 ইদোমীয়কে হত্যা করে। 13 অবীশয় ইদোমে এক সৈন্যবাহিনীর দলও বসাল এবং ইদোমীয়রা দায়ূদের বশ্যতা স্বীকার করে। প্রভু দায়ূদকে সর্বত্রই বিজয়ী করেছিলেন।

দায়ূদের গুরুত্বপূর্ণ আধিকারিকবর্গ

14 সমস্ত ইস্রায়েলের শাসক দায়ূদ তাঁর সমস্ত প্রজাদের প্রতি ন্যায় ও সমবিচার নিয়ে ইস্রায়েল শাসন করেন। 15 তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন সরূয়ার পুত্র যোয়াব। অহীলূদের পুত্র যিহোশাফট দায়ূদের সমস্ত কার্যকলাপ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন। 16 অহীটূবের পুত্র সাদোক আর অবিয়াথরের পুত্র অবীমেলক যাজক ছিলেন। শব্শ ছিলেন লেখক। 17 যিহোয়াদার পুত্র বনায়ের দায়িত্ব ছিল করেথীয় ও পলেথীয়দের পরিচালনা করা। দায়ূদের পুত্ররাও গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং পিতার পাশে থেকে রাজকার্যে সহায়তা করতেন।

যাকোব 5

স্বার্থপর ধনী লোকরা দণ্ডিত হবে

ধনী ব্যক্তিরা শোন, তোমাদের জীবনে যে ঘোর দুর্দশা আসছে, তার জন্য তোমরা কাঁদ ও হাহাকার কর। তোমাদের ধন পচে যাবে, তার কোন মূল্যই থাকবে না। তোমাদের পোশাক পোকায় কাটবে, তোমাদের সোনা ও রূপোয় মরচে ধরবে। সেই মরচে প্রমাণ করবে যে তোমরা অন্যায় করেছ। আর সেই মরচে আগুনের মতো তোমাদের দেহের মাংস খেয়ে ফেলবে। তোমরা শেষের দিনের জন্য সম্পদ জমা করেছ। দেখ! যে মজুররা তোমাদের ক্ষেতে কাজ করেছিল তাদের তোমরা মজুরি দাও নি। তার জন্য তারা তোমাদের বিরুদ্ধে চিৎকার করছে। তারা তোমাদের ক্ষেতের ফসল কেটেছে, এখন তাদের সেই আর্তনাদ স্বর্গীয় বাহিনীর প্রভু ঈশ্বরের কানে পৌঁছেছে।

এই পৃথিবীতে তোমরা ভোগ বিলাসে দিন কাটিয়ে প্রাণের লালসা মিটিয়েছ। বলি হবার দিনের জন্য তোমরা নিজেদের পশুর মতো মোটা করছ। ভাল লোকদের প্রতি তোমরা কোন দয়া দেখাও নি। তোমরা নির্দোষ লোকদের দোষী সাব্যস্ত করেছ এবং বধ করেছ, যদিও তারা তোমাদের বিরোধিতা করে নি।

ধৈর্য্য ধর

ভাই ও বোনেরা, ধৈর্য্য ধর। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ফিরে আসবেন, তাঁর না আসা পর্যন্ত ধৈর্য্য ধর। মনে রেখো, একজন চাযী তার ক্ষেতের মূল্যবান ফসলের জন্য অপেক্ষা করে, আর যতদিন তা প্রথম ও শেষ বর্ষণ না পায়, ততদিন সে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে। তোমাদের ধৈর্য্য ধরা দরকার, আশা ছেড়ে দিও না। প্রভু যীশু শীঘ্রই আসছেন। ভাই ও বোনেরা, তোমরা একে অপরের বিরুদ্ধে নালিশ করো না। তোমরা যদি নালিশ করা থেকে বিরত না হও, তাহলে তোমরা দোষী সাব্যস্ত হবে। দেখ, বিচারক দোরগোড়ায়় দাঁড়িয়ে আছেন।

10 ভাই ও বোনেরা, দুঃখ ও কষ্টে কিভাবে ধৈর্য্য ধরতে হয় তার দৃষ্টান্তস্বরূপ সেই ভাববাদীদের অনুসরণ কর যাঁরা প্রভুর পক্ষে কথা বলেছিলেন। 11 আমরা বলি যাঁরা জীবনে দুঃখ কষ্ট সহিষ্ণুতার সঙ্গে মেনে নেয় তারা ধন্য। তোমরা ইয়োবের সহিষ্ণুতার কথা শুনেছ। তোমরা জান যে ইয়োবের সমস্ত দুঃখ কষ্টের পর প্রভু তাঁকে সাহায্য করেছিলেন। এতে জানা যায় যে প্রভু করুণা ও দয়ায় পরিপূর্ণ।

কথাবার্তায় সতর্ক হও

12 আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ করে মনে রেখো, কোন প্রতিশ্রুতি করার সময়ে স্বর্গ, পৃথিবী বা অন্য কোন নাম ব্যবহার করে তোমার কথার সত্যতা প্রমাণ করতে দিব্যি করো না। তোমাদের “হাঁ,” যেন হাঁ-ই হয় আর “না” যেন “না” থাকে। এটা কর যাতে তোমাদের বিচারের দায়ে পড়তে না হয়।

প্রার্থনার শক্তি

13 তোমাদের মধ্যে কেউ কি কষ্ট পাচ্ছে? তবে সে প্রার্থনা করুক। কেউ কি সুখী? তবে সে ঈশ্বরের গুণকীর্তন করুক। 14 তোমাদের মধ্যে কেউ কি অসুস্থ হয়েছে? তবে সে মণ্ডলীর প্রাচীনদের ডাকুক। তারা প্রভুর নামে তার মাথায় একটু তেল দিয়ে তার জন্য প্রার্থনা করুক। 15 বিশ্বাসপূর্ণ প্রার্থনা সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করবে, প্রভুই তাকে সুস্থ করে তুলবেন; আর সে যদি পাপ করে থাকে তবে প্রভু তাকে ক্ষমা করবেন।

16 তাই তোমরা পরস্পরের কাছে পাপ স্বীকার কর, পরস্পরের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সুস্থতা লাভ কর, কারণ ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির প্রার্থনা খুবই শক্তিশালী ও কার্যকরী। 17 এলিয় আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ছিলেন। তিনি প্রার্থনা করলেন যেন বৃষ্টি না হয়, আর সাড়ে তিন বছর ধরে দেশে বৃষ্টি হল না। 18 পরে তিনি আবার প্রার্থনা করলেন আর আকাশ থেকে বৃষ্টি নামল এবং ক্ষেতে ফসল হল।

আত্মার মুক্তি

19 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি সত্য থেকে দূরে সরে যায় আর যদি কেউ তাকে সত্যে ফিরে আসতে সাহায্য করে তবে 20 একথা মনে রেখো, যে পাপীকে মন্দ থেকে ফিরিয়ে আনে সে সেই ব্যক্তিকে অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং এই কাজের দ্বারা তার অনেক পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে।

যোনা 2

যোনার প্রার্থনা

মাছের পেটের মধ্যে থাকাকালীন যোনা প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে বলেছিলেন,

“আমি খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে ছিলাম।
    আমি প্রভুকে সাহায্যের জন্য ডাকলাম
    এবং তিনি আমাকে উত্তর দিলেন!
আমি কবরের আরো গভীরে ছিলাম
    প্রভু, আমি আপনাকে চিৎকার করে ডাকলাম
    এবং আপনি আমার রব শুনতে পেলেন!

“আপনি আমাকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিলেন।
    আপনার শক্তিশালী ঢেউ আমার উপর পড়েছিল।
আমি গভীর, অতি গভীর সমুদ্রে ডুবে গেলাম।
    আমার চারিদিকে কেবলই জল ছিল।
তখন আমি ভাবছিলাম,
‘এখন আমাকে বাধ্য হয়েই সেইখানে যেতে হবে যেখানে আপনি আমাকে দেখতে পাবেন না।’
    কিন্তু আমি সাহায্যের জন্য তবু আপনার পবিত্র মন্দিরের দিকে চেয়েছিলাম।”

“সমুদ্রের জল আমার চারিদিক ঘিরে ধরল।
জল আমার মুখ ঢেকে দিল,
    আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।
ক্রমশঃ আমি গভীর থেকে গভীরতর সমুদ্রে চলে যেতে থাকলাম।
    সমুদ্রের শৈবাল আমার মাথার চারিদিক জড়িয়ে গেল।
আমি সমুদ্রের তলদেশে ছিলাম,
    যেখান থেকে পাহাড়গুলো আরম্ভ হয়েছে।
আমি ভেবেছিলাম আমি এই কারাগারে সারা জীবনের জন্য বন্দী হয়ে গেছি।
    কিন্তু প্রভু আমার ঈশ্বর, আমাকে আমার কবরের মধ্য থেকে বার করে আনলেন!
ঈশ্বর, আপনি আবার আমাকে জীবন দান করলেন!

“আমার আত্মা সব আশা ছেড়ে দিয়েছিল।
    কিন্তু তখন আমি প্রভুকে স্মরণ করলাম।
প্রভু, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম।
    এবং আপনি আপনার পবিত্র মন্দিরে আমার প্রার্থনাগুলি শুনেছিলেন।

“কয়েক জন লোক মূল্যহীন মূর্ত্তি পূজো করে।
    কিন্তু ঐ মূর্ত্তিগুলি কখনই তাদের সাহায্য করবে না।
পরিত্রাণ কেবল প্রভুর কাছ থেকেই আসে!
    প্রভু আমি আপনার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করব এবং আমি আপনার প্রশংসা করব ও আপনাকে ধন্যবাদ জানাবো।
আমি আপনার কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি করব
    এবং যেগুলি করব বলে আমি প্রতিশ্রুতি করেছিলাম সেই সব কাজগুলো আমি করব।”

10 তখন প্রভু ওই মাছটির সঙ্গে কথা বললেন এবং মাছটি বমি করে যোনাকে জমির উপরে ফেলল।

লূক 7

একজন দাসকে যীশু সুস্থ করলেন

(মথি 8:5-13; যোহন 4:43-54)

যীশু লোকদের যা বলতে চেয়েছিলেন তা বলা শেষ করে কফরনাহূম শহরে গেলেন। সেখানে একজন রোমীয় শতপতির এক ক্রীতদাস গুরুতর অসুখে মরনাপন্ন হয়েছিল। এই ক্রীতদাসটি শতপতির অতি প্রিয় ছিল। শতপতি যখন যীশুর কথা শুনতে পেলেন তখন ইহুদীদের কয়েকজন নেতাকে দিয়ে যীশুর কাছে বলে পাঠালেন, যেন যীশু এসে তাঁর দাসের জীবন রক্ষা করেন। তাঁরা যীশুর কাছে এসে তাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করে বললেন, “যাঁর জন্য আপনাকে এই কাজ করতে বলছি, তিনি একজন যোগ্য লোক। কারণ তিনি আমাদের লোকদের ভালবাসেন, আর তিনি আমাদের জন্য একটা সমাজ-গৃহ নির্মাণ করে দিয়েছেন।”

তখন যীশু তাদের সঙ্গে গেলেন। তিনি যখন সেই বাড়ির কাছাকাছি এসেছেন তখন সেই শতপতি তাঁর বন্ধুদের দিয়ে বলে পাঠালেন, “প্রভু আপনি আর কষ্ট করবেন না, কারণ আপনি যে আমার বাড়িতে আসেন তার যোগ্য আমি নই। এই কারণেই আমি নিজেকে আপনার কাছে যাবার উপযুক্ত মনে করি না। আপনি কেবল মুখে বলুন তাতেই আমার ঐ দাস ভাল হয়ে যাবে। কারণ আমিও একজনের অধীনে কাজ করি, আর আমার অধীনেও সৈনিকরা কাজ করে। আমি যদি কাউকে বলি ‘যাও’ তখন সে যায়, আবার কাউকে যদি বলি ‘এস’ তবে সে আসে। আর আমি যখন একজনকে বলি, ‘এটা কর,’ তখন সে তা করে।”

এই কথা শুনে যীশু আশ্চর্য হলেন। যে সব লোক ভীড় করে তাঁর পিছনে পিছনে আসছিল, তাদের দিকে ফিরে তিনি বললেন, “আমি তোমাদের বলছি, এমন কি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যেও এত বড় বিশ্বাস আমি কখনও দেখিনি।”

10 সেনাপতি যাদের পাঠিয়েছিলেন, তারা বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখল যে সেই চাকর ভাল হয়ে গেছে।

যীশু একজনের জীবন দান করলেন

11 এর অল্প দিন পরেই যীশু নায়িন্ নামে একটি নগরের দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর শিষ্যরা এবং আরও অনেক লোক তাঁর সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল। 12 তিনি যখন সেই নগরের ফটকের কাছাকাছি এসেছেন, তখন একজন মৃত লোককে বয়ে নিয়ে যাওযা হচ্ছিল। সেই মৃত লোকটি ছিল তার বিধবা মায়ের একমাত্র পুত্র। সেই নগরের অনেক লোক সেই বিধবার সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছিল। 13 সেই বিধবাকে দেখে তার জন্য প্রভুর খুবইদয়া হল। তিনি তাকে বললেন, “তুমি কেঁদো না।” 14 তারপর তিনি কাছে এসে শবের খাট ছুঁলেন, তখন যারা মৃতদেহ বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তারা দাঁড়িয়ে পড়ল। এমন সময় যীশু বললেন, “যুবক, আমি তোমায় বলছি তুমি ওঠো।” 15 তখন সেই লোকটি উঠে বসল, আর কথা বলতে শুরু করল। যীশু তখন তাকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিলেন।

16 এই দেখে সকলের মন ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হল। তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলতে লাগল, “আমাদের মধ্যে একজন মহান ভাববাদীর আবির্ভাব হয়েছে।” তারা আরও বলতে লাগল, “ঈশ্বর তাঁর লোকদের সাহায্য করতে এসেছেন।”

17 যীশুর বিষয়ে এইসব কথা যিহূদিয়া ও তার আশপাশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল।

যোহনের জিজ্ঞাসা

(মথি 11:2-19)

18 বাপ্তিস্মদাতা যোহনের অনুগামীরা এইসব ঘটনার কথা যোহনকে জানাল। তখন যোহন তার দুজন অনুগামীকে ডেকে 19 প্রভুর কাছে জিজ্ঞেস করে পাঠালেন যে, “যাঁর আগমণের কথা আছে আপনিই কি সেই, না আমরা অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করব?”

20 সেই লোকেরা যীশুর কাছে এসে বলল, “বাপ্তিস্মদাতা যোহন আপনার কাছে আমাদের জিজ্ঞেস করতে পাঠিয়েছেন। ‘যাঁর আসবার কথা আপনিই কি সেই ব্যক্তি, না আমরা অন্য কারো অপেক্ষায় থাকব?’”

21 সেই সময় যীশু অনেক লোককে বিভিন্ন রোগ ও ব্যাধি থেকে সুস্থ করছিলেন, অশুচি আত্মায় পাওয়া লোকদের ভাল করছিলেন, আর অনেক অন্ধ লোককে দৃষ্টি শক্তি দান করছিলেন। 22 তখন তিনি তাদের প্রশ্নের জবাবে বললেন, “তোমরা যা দেখলে ও শুনলে তা গিয়ে যোহনকে বল। অন্ধরা দেখতে পাচ্ছে, খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠ রোগীরা সুস্থ হচ্ছে, বধিররা শুনছে, মরা মানুষ বেঁচে উঠছে; আর দরিদ্ররা সুসমাচার শুনতে পাচ্ছে। 23 ধন্য সেই লোক, যে আমাকে গ্রহণ করার জন্য মনে কোন দ্বিধা বোধ করে না।”

24 যোহনের কাছ থেকে যারা এসেছিল তারা চলে গেলে পর যীশু সমবেত সেই লোকদের কাছে যোহনের বিষয়ে বললেন, “তোমরা প্রান্তরের মধ্যে কি দেখতে গিয়েছিলে? বাতাসে একটি বেত গাছ দুলছে তাই? 25 তা না হলে কি দেখতে গিয়েছিলে? একজন লোক বেশ জমকালো পোশাক পরা? না। যারা দামী জামা কাপড় পরে এবং বিলাসে জীবন কাটায় তারা তো প্রাসাদে থাকে। 26 তবে তোমরা কি দেখতে গিয়েছিলে? একজন ভাববাদীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা যাকে দেখেছ তিনি একজন ভাববাদীর থেকেও মহান। 27 ইনি সেই লোক যার বিষয়ে লেখা হয়েছে:

‘দেখ, আমি তোমার আগে আগে আমার এক সহায়ককে পাঠাচ্ছি।
    সে তোমার আগে গিয়ে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।’(A)

28 আমি তোমাদের বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকল মানুষের মধ্যে যোহনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ নেই, তবু ঈশ্বরের রাজ্যে ক্ষুদ্রতম ব্যক্তিও যোহনের চেয়ে মহান।”

29 (যারা যীশুর প্রচার শুনেছিল, তাদের মধ্যে পাপীষ্ঠরা ও কর আদায়কারীরাও যোহনের বাপ্তিস্ম নিয়ে স্বীকার করল যে ঈশ্বর ন্যায়পরায়ণ। 30 কিন্তু ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যোহনের কাছে বাপ্তিস্ম নিতে অস্বীকার করে তাদের জীবনে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে অগ্রাহ্য করল।)

31 “তাহলে আমি কিসের সঙ্গে এই যুগের লোকদের তুলনা করব? এরা কেমন ধরণের লোক? 32 এরা ছোট ছেলেদের মতো, যারা হাটে বসে একে অপরকে বলে,

‘আমরা তোমাদের জন্য বাঁশি বাজালাম,
    কিন্তু তোমরা নাচলে না।
আমরা তোমাদের জন্য শোকগাথা গাইলাম,
    কিন্তু তোমরা কাঁদলে না।’

33 কারণ বাপ্তিস্মদাতা যোহন এসেছেন, তিনি রুটি খান না আর দ্রাক্ষারসও পান করেন না, আর তোমরা বল, ‘ওকে ভূতে পেয়েছে।’ 34 মানবপুত্র এসে পানাহার করেন; আর তোমরা বল, ‘দেখ! ও পেটুক, মদ্যপায়ী, আবার পাপী ও কর আদায়কারীদের বন্ধু।’ 35 প্রজা তার কাজের দ্বারাই প্রমাণ করে যে তা নির্দোষ।”

শিমোন ফরীশী

36 একদিন একজন ফরীশী তার বাড়িতে যীশুকে নিমন্ত্রণ করল। তাই তিনি তার বাড়িতে গিয়ে সেখানে খাবার আসন নিলেন।

37 সেই নগরে একজন দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক ছিল। ফরীশীর বাড়িতে যীশু খেতে এসেছেন জানতে পেরে সে একটা শ্বেত পাথরের শিশিতে করে বহুমূল্য আতর নিয়ে এল। 38 সে যীশুর পিছনে তাঁর পায়ের কাছে নতজানু হয়ে কেঁদে কেঁদে চোখের জলে তাঁর পা ভিজাতে লাগল। তারপর সে তার মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছিয়ে দিল, আর তাঁর পায়ে চুমু দিয়ে সেই আতর তাঁর পায়ে ঢেলে দিল।

39 যে ফরীশী যীশুকে নিমন্ত্রণ করেছিল, এই দেখে সে মনে মনে বলল, “এই লোকটা যদি ভাববাদী হয় তবে নিশ্চয়ই বুঝতে পারত, যে তার পা ছুঁচ্ছে সে কে এবং কি ধরণের স্ত্রীলোক, এবং এও জানতে পারত যে স্ত্রীলোকটি পাপী।”

40 এর জবাবে যীশু তাকে বললেন, “শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলার আছে।”

শিমোন বলল, “বেশ তো গুরু, বলুন।”

41 যীশু বললেন, “কোন এক মহাজনের কাছে দুজন লোক টাকা ধারত। একজন পাঁচশো রূপোর মুদ্রা আর একজন পঞ্চাশ রূপোর মুদ্রা। 42 কিন্তু তারা কেউই ঋণ শোধ করতে না পারাতে তিনি দয়া করে উভয়ের ঋণই মকুব করে দিলেন। এখন এদের মধ্যে কে তাঁকে বেশী ভালবাসবে?”

43 শিমোন বলল, “আমি মনে করি যার বেশী ঋণ মকুব করা হল সে-ই।”

যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিক বলেছ।” 44 এরপর যীশু সেই স্ত্রীলোকটির দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, “তুমি এই স্ত্রীলোকটিকে দেখছ? আমি তোমার বাড়িতে এলাম আর তুমি আমায় পা ধোবার জল পর্যন্ত দিলে না। কিন্তু ও চোখের জলে আমার পা ধুইয়ে দিল আর নিজের চুল দিয়ে তা মুছিয়ে দিল। 45 স্বাগত জানাবার প্রথা অনুসারে তুমি আমায় চুমু দিলে না; কিন্তু আমি আসার পর থেকেই সে আমার পায়ে চুমু দিয়ে চলেছে। 46 তুমি আমার মাথায় তেল দিয়ে অভিষেক করলে না; কিন্তু সে আমার পায়ে সুগন্ধি আতর ঢেলে তা অভিষিক্ত করল। 47 এতেই বোঝা যায় যে সে বেশী ভালবাসা দেখাচ্ছে, সেইজন্যই আমি বলছি, এর পাপ অনেক হলেও তা ক্ষমা করা হয়েছে; কিন্তু যাকে অল্প ক্ষমা করা হয়, সে অল্প ভালবাসে।”

48 এরপর যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, “তোমার পাপের ক্ষমা হল।”

49 যারা তাঁর সঙ্গে খেতে বসেছিল, তারা পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “ইনি কে যে পাপ ক্ষমা করেন?”

50 কিন্তু যীশু সেই স্ত্রী লোকটিকে বললেন, “তোমার বিশ্বাসই তোমায় মুক্ত করেছে, তোমার শান্তি হোক্।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International