M’Cheyne Bible Reading Plan
16 সাক্ষ্যসিন্দুকটা নিয়ে এসে লেবীয়রা সেটাকে দায়ূদের বানানো তাঁবুর মধ্যে রাখলেন। তারপর ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোমবলি ও মঙ্গল নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হল। 2 দায়ূদের নৈবেদ্য অর্পণ করা শেষ হলে তিনি প্রভুর নামে সমস্ত লোকদের শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ জানালেন। 3 এরপর তিনি ইস্রায়েলের প্রত্যেক পুরুষ ও নারীকে একখানা করে গোটা পাঁউরুটি, কিছু খেজুর, কিস্মিস্ ও পিঠে বিতরণ করলেন।
4 সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে কাজকর্ম করবার জন্য দায়ূদ কিছু লেবীয়কে নিয়োগ করলেন। এই সমস্ত লেবীয়দের মূল কাজ ছিল প্রভুর স্তবগান ও প্রশংসা করা। 5-7 যে দলটি খঞ্জনী বাজাত, আসফ ছিল সেই দলটির নেতা। সখরিয় ছিলেন দ্বিতীয় দলটির নেতা। অন্যান্য লেবীয়রা ছিলেন উজীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, মত্তিথিয়, ইলীয়াব, বনায়, ওবেদ-ইদোম এবং যিয়ীয়েল। এদের কাজ ছিল বীণা এবং অন্য এক ধরণের তন্ত্রবাদ্য বাজানো। যাজক বনায় ও যহসীয়েল সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে শিঙা ও কাড়া-নাকাড়া বাজানোর দায়িত্ব পালন করতেন। সেই দিন দায়ূদ, আসফ ও তাঁর সতীর্থদের প্রভুর প্রশংসা ও কীর্তনের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
দায়ূদের ধন্যবাদ গীত
8 প্রভুর প্রশংসা কর আর তাঁর নাম নাও।
তিনি যে সমস্ত মহান কাজ করেছেন সবাইকে সে কথা বলো।
9 প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও। তাঁর প্রশংসা কর।
তাঁর মহৎ কীর্তির কথা সবাইকে জানাও।
10 প্রভুর পবিত্র নাম করে গর্বিত হও।
তোমরা যারা তাঁকে চাও তারা আনন্দিত হও!
11 প্রভুর দিকে এবং তাঁর শক্তির দিকে তাকাও।
সর্বদা তাঁর সন্ধান কর।
12 তিনি যে সব অলৌকিক কাজ করেছেন সেই সব মনে রেখো।
মনে রেখো তাঁর সমস্ত সিদ্ধান্ত আর তাঁর দ্বারা কৃত চমৎকার!
13 ইস্রায়েলের লোকরা, যাকোবের উত্তরপুরুষরা
সকলেই প্রভুর দাস এবং প্রভুর মনোনীত লোক।
14 প্রভু আমাদের ঈশ্বর
এবং তাঁর সিদ্ধান্ত সর্বত্র বিরাজমান।
15 সর্বদা তাঁর চুক্তি মনে রেখো।
হাজার হাজার পুরুষ ধরে তাঁর আজ্ঞা মনে রেখো।
16 অব্রাহামের সঙ্গে তাঁর যে চুক্তি হয়েছিল সেটি
এবং ইস্হাককে করা তাঁর প্রতিশ্রুতি মনে রেখো।
17 যাকোবের জন্য প্রভু এটিকে একটি আইনস্বরূপ করে দিয়েছিলেন।
ইস্রায়েলের সঙ্গে তিনি একটি চুক্তি করেছিলেন যা চিরস্থায়ী হবে।
18 প্রভু ইস্রায়েলকে বলেছিলেন, “কনানীয়দের বাসভূমি আমি তোমাদেরই দেবো।
প্রতিশ্রুত ভূখণ্ডটি তোমাদের হবে।”
19 তখন জনসংখ্যা ছিল কম,
মুষ্টিমেয় কিছু লোক।
20 যাযাবরের মতো ঘুরে বেড়াতো
দেশ থেকে দেশান্তরে।
21 কিন্তু প্রভু কাউকে তাদের আঘাত করতে দেননি
এবং রাজাদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন যেন তারা তাদের কোন ক্ষতি না করে।
22 এইসব রাজাদের প্রভু বলেছেন: “আমার মনোনীত লোকদের
এবং ভাববাদীদের কেউ যেন আঘাত না করে।”
23 সমস্ত ভুবন, প্রভুর বন্দনা করো।
প্রভু কেমন করে আমাদের রক্ষা করেন সেই সুখবর প্রতিদিন বলো।
24 সমস্ত জাতিকে প্রভুর মহিমার কথা বলো।
তাঁর অলৌকিক কীর্তির কথাও সবাইকে বলো।
25 প্রভু মহান এবং প্রশংসার যোগ্য।
অন্য সমস্ত দেবতাদের থেকে তিনি শ্রদ্ধেয় ও ভীতিকর।
26 কেন? কারণ অন্য সমস্ত জাতির দেবদেবী শুধু মূল্যহীন পুতুলমাত্র।
প্রভু স্বয়ং আকাশ বানিয়েছেন।
27 প্রভু মহিমাময় এবং দীপ্তিমান।
তিনি যেখানে থাকেন সেখানে শক্তি এবং আনন্দ বিরাজ করে।
28 সমস্ত লোক ও পরিবারগুলি
প্রভুর মহিমা ও শক্তির প্রশংসা করো!
29 প্রভুর মহিমার গান গাও। তাঁর নামের মাহাত্ম্য কীর্তন করো।
প্রভুর চরণে তোমাদের নৈবেদ্য উৎসর্গ করো।
তাঁকে সুন্দর ও পবিত্র পোশাকে উপাসনা করো।
30 প্রভুর সামনে সমস্ত পৃথিবীর ভয়ে কম্পমান হওয়া উচিৎ,
কিন্তু ঈশ্বর পৃথিবীকে সুদৃঢ় করেছেন সুতরাং তা নড়বে না।
31 আকাশে এবং মাটিতে আনন্দ ধ্বনিত হোক্;
বিশ্ব-চরাচরে সবাই বলে উঠুক, “প্রভুই এই পৃথিবীর নিয়ামক।”
32 সমুদ্র এবং তার ভেতরের সব কিছুই আনন্দে চিৎকার করুক।
মাঠগুলি এবং সেখানে যা কিছু আছে তারা আনন্দ প্রকাশ করুক।
33 আনন্দে মশগুল অরণ্যের বৃক্ষরাশি প্রভুর সামনে গান করবে!
কেন? কারণ প্রভু আসছেন পৃথিবীর বিচার করতে।
34 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তিনি ভাল।
তাঁর আশীর্বাদ ও করুণা চিরন্তন।
35 প্রভুকে বলো,
“হে ঈশ্বর, আমাদের পরিত্রাতা, আমাদের ঐক্যবদ্ধ কর।
সমস্ত জাতির হাত থেকে
আমাদের রক্ষা করো।
তাহলে আমরা তোমার পবিত্র নামের প্রশংসা করতে পারবো।
তোমার মহিমার প্রশংসা করতে পারবো।”
36 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সর্বদা যেভাবে প্রশংসিত হয়েছেন,
চিরদিন সে ভাবেই তাঁর প্রশংসা হোক্।
সমস্ত লোক প্রভুর প্রশংসা করে সমবেতভাবে বলে উঠলো, “আমেন!”
37 তারপর আসফ আর তাঁর ভাইদের দায়ূদ প্রতিদিন সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে সেবা করার জন্য রেখে গেলেন। 38 যিদূথূনের পুত্র ওবেদ-ইদোম ও আরো 68 জন লেবীয়কেও দায়ূদ আসফের কাছে রেখে গেলেন। ওবেদ-ইদোম আর হোষা দুজনেই প্রহরী ছিলেন।
39 গিবিয়োনে প্রভুর তাঁবুতে বেদীর সামনে সেবা করার জন্য দায়ূদ সাদোক ও তাঁর সতীর্থ যাজকদের রেখে এসেছিলেন। 40 প্রতি দিন সকালে আর বিকেলে সাদোক ও অন্যান্য যাজকরা মিলে প্রভুর ইস্রায়েলকে দেওয়া বিধি-পুস্তক অনুসারে বেদীতে হোমবলি উৎসর্গ করতেন। 41 প্রভুর প্রশংসা গীত গাইবার জন্য হেমন, যিদূথূন এবং অন্যান্য লেবীয়দের প্রত্যেকের নাম ধরে নির্বাচন করা হয়েছিল, কারণ তাঁর প্রেম চির প্রবহমান। 42 হেমন আর যিদূথূনকে সকলের সঙ্গে খঞ্জনি এবং তূরী-ভেরী বাজাতে হত। ঈশ্বরের নাম বন্দনার সময়ে তাঁরা অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রও বাজাতেন। যিদূথূনের পুত্ররা তাঁবুর দরজায় পাহারা দিতো।
43 এই সমস্ত উৎসবের পর প্রত্যেকে যে যার বাড়িতে ফিরে গেল। রাজা দায়ূদও তাঁর পরিবারকে আশীর্বাদ করতে নিজের প্রাসাদে ফিরে গেলেন।
বাকসংযমের প্রয়োজনীয়তা
3 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমাদের মধ্যে বেশী লোকের শিক্ষক হওয়ার জন্য চেষ্টা করার দরকার নেই, কারণ তোমরা জান যে আমরা শিক্ষক বলে অন্যদের থেকে আমাদের বিচার কঠোর হবে।
2 কারণ আমরা সকলেই নানাভাবে অন্যায় করে থাকি। যদি কেউ তার কথাবার্তায় অসংযত না হয়, তবে সে একজন খাঁটি লোক, সে সব বিষয়ে নিজের দেহকে সংযত রাখতে পারে। 3 ঘোড়াদের বশে রাখার জন্য, আমরা তাদের মুখে বলগা দিই এবং তার ফলে তাদের সমস্ত দেহকে আমরা আমাদের পছন্দমত যে কোনও দিকে পরিচালিত করতে পারি। 4 আবার জাহাজের কথা ভাব, তারা কত প্রকাণ্ড, প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে দিয়ে চলে, অথচ ছোট্ট একটা হালের সাহায্যে নাবিক সেটাকে যেদিকে ইচ্ছা সেদিকে নিয়ে যায়। 5 তেমনি জিভও দেহের একটা ছোট অঙ্গ, তবু তা বড় বড় কথা বলে।
দেখ আগুনের একটা ছোট ফুলকি কেমন করে এক বিরাট বনকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। 6 জিভও তেমনি আগুনের ফুলকির মতো। আমাদের দেহের অঙ্গগুলির মধ্যে জিভ হল অধর্মের এক জগত, কারণ জিভ থেকেই নানা মন্দ আমাদের সমস্ত দেহে ছড়িয়ে পড়ে। নরকের আগুনে জিভ জ্বলে উঠে গোটা জীবনকে প্রভাবিত করে।
7 মানুষ সব রকমের পশু-পাখী, সরীসৃপ ও সমুদ্রের প্রাণীকে দমন করে রাখতে পারে আর তাদের বশে রাখতে পারে; 8 কিন্তু কোন মানুষ জিভকে বশে রাখতে পারে না, এই জিভ সব সময়ই অস্থির, মন্দ ও মারাত্মক বিষে ভরা। 9 এই জিভ দিয়েই আমরা কখনও আমাদের প্রভু ও পিতার প্রশংসা করি, আবার কখনও বা ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট মানুষকে অভিশাপ দিই। 10 একই মুখ থেকে প্রশংসা ও অভিশাপ নির্গত হয়। ভাই ও বোনেরা, এমন হওয়া উচিত নয়। 11 একই উৎস থেকে কি কখনও মিষ্টি ও তেতো দুরকম জল নিঃসৃত হয়? 12 আমার ভাই ও বোনেরা, দ্রাক্ষা লতায় কি ডুমুর ফল ধরে? তেমনি নোনা জলের উৎস থেকে কি মিষ্টি জল পাওয়া যায়?
প্রকৃত প্রজ্ঞা
13 তোমাদের মধ্যে জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান কে? সে সৎ জীবনযাপন করে ও নম্রতার সাথে ভাল কাজ করে গর্বহীনভাবে তার বিজ্ঞতা প্রকাশ করুক। 14 তোমাদের মনে যদি তিক্ততা, ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা থাকে তাহলে তোমাদের জ্ঞানের বড়াই করো না; করলে তোমাদের গর্ব হবে আর এক মিথ্যা, যা সত্যকে ঢেকে রাখে। 15 এই ধরণের “জ্ঞান” যা ঈশ্বর থেকে লাভ হয় না তা পার্থিব, আত্মিক নয়, তা দিয়াবলের কাছ থেকে আসে। 16 যেখানে ঈর্ষা ও স্বার্থপরতা রয়েছে সেখানেই বিশৃঙ্খলা ও সব রকমের নোংরামি থাকে। 17 কিন্তু যে জ্ঞান ঈশ্বর থেকে আসে তা প্রথমতঃ শুচিশুদ্ধ পরে শান্তিপ্রিয়, সুবিবেচক, বাধ্যতা, দয়া ও সৎ কাজে পূর্ণ, পক্ষপাতশূন্য ও আন্তরিক। 18 যারা শান্তির জন্য শান্তির পথে কাজ করে চলে, তারা উত্তম জিনিস লাভ করে যা যথার্থ জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে আসে।
ইদোম শাস্তি পাবে
1 ওবদিয়ের দর্শন। আমার প্রভু সদাপ্রভু ইদোম সম্বন্ধে এই কথাগুলো বলেছেন।
আমরা স্বয়ং প্রভু ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি খবর শুনলাম।
বিভিন্ন জাতির কাছে একটি বার্তা পাঠানো হয়েছিল।
সে বলেছিল, “চলো, ইদোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি।”
প্রভু ইদোমের সঙ্গে কথা বললেন
2 “ইদোম, আমি তোমাকে ক্ষুদ্রতম জাতিতে পরিণত করব।
প্রত্যেকে তোমাকে ঘৃণা করবে।
3 তোমার অহঙ্কার তোমাকে ওপরে তুলেছে।
তুমি সেই সব গুহায় বাস কর, যেগুলি দূরারোহ উঁচু পাহাড়ে অবস্থিত।
তোমার বাড়ী পর্বতের থেকে বেশ অনেক ওপরে।
সেজন্য তুমি মনে মনে বলো,
‘কেউ আমাদের নামাতে পারে না।’”
ইদোমকে নীচে নামানো হবে
4 প্রভু ঈশ্বর এই কথাটি বলেছেন:
“তুমি যদিও ঈগলের মতো উঁচুতে ওড়ো এবং তারাদের মধ্যে তোমার বাসা করে রাখো,
তাহলেও আমি সেখান থেকে তোমাকে নীচে নামাব।
5 সত্যিই তোমার বিনাশ হবে!
চোররা তোমার কাছে আসবে!
আর, ডাকাতরা রাত্রিবেলায় আসবে!
ওই চোরেরা যা চায় তার সবই নিয়ে যাবে!
যখন শ্রমিকরা তোমাদের ক্ষেতে দ্রাক্ষাসমূহ সংগ্রহ করে
তারা অন্তত কয়েকটা দ্রাক্ষা ফেলে রেখে যায়।
6 কিন্তু শত্রুরা এষৌর (ইদোমের অধিবাসীরা এষৌর বংশধর) লুকোনো গুপ্তধন তন্ন তন্ন করে খুঁজবে
এবং তারা সবই খুঁজে পাবে।
7 যে সব লোকরা তোমাদের সহকারী
তারা সবাই তোমাদের দেশ থেকে জোর করে বার করে দেবে।
তোমাদের অন্তরঙ্গ বন্ধুরা তোমাদের সঙ্গে চালাকী করবে
এবং তোমাদের অন্যায় কাজ করতে বাধ্য করবে।
তোমাদের সঙ্গীরা তোমাদের
ফাঁদে ফেলবার পরিকল্পনা করবে।
তারা বলে, ‘তিনি কিছুই সন্দেহ করবেন না!’”
8 প্রভু বলেছেন,
“ঐদিন আমি জ্ঞানী লোকদের ধ্বংস করব।
আমি এষৌর পর্বতের বুদ্ধিমান লোকদের ধ্বংস করব।
9 তৈমন, তোমার শক্তিমান মানুষগুলি আতঙ্কিত হবে।
এষৌর পর্বতের প্রত্যেকটি মানুষই ধ্বংস হবে।
অনেক লোককে হত্যা করা হবে।
10 লজ্জায় তোমরা চাপা পড়বে
এবং তোমরা চিরকালের জন্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
কিন্তু কেন? কারণ তুমি তোমার ভাই যাকোবের সঙ্গে অত্যন্ত নিষ্ঠুর আচরণ করেছ।
11 তুমি ইস্রায়েলের শত্রুদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলে।
অচেনা মানুষ ইস্রায়েলের ধন নিয়ে গেছে।
বিদেশীরা ইস্রায়েল শহরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিল।
সেই সব বিদেশীরা ঘুঁটি চেলে ঠিক করেছিল, জেরুশালেমের কোন্ অংশটা তারা দখল করবে।
এবং তুমি তাদের সঙ্গে ঠিক সেইখানে নিজের ভাগটি বেছে নেবার জন্য অপেক্ষা করেছিলে।
12 তুমি তোমার ভাইয়ের বিপদের সময়ে হেসেছিলে।
সেটা কখনও তোমার করা উচিত হয়নি।
যখন শত্রুরা যিহূদা ধ্বংস করছিল সেই সময়ে তুমি খুশী ছিলে।
তোমার কখনও সেটা করা উচিত হয়নি।
তাদের বিপদের সময় তুমি বড়াই করেছিলে।
তোমার কখনও সেটা করা উচিত হয়নি।
13 তোমরা আমার প্রজাদের শহরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছিলে,
এবং তাদের সমস্যা দেখে তোমরা হেসেছিলে।
তাদের সমস্যার সময়ে তোমাদের কখনও সেটা করা উচিত হয়নি।
তাদের বিপদের সময়ে তোমরা তাদের ধনসম্পদ নিয়ে নিয়েছিলে।
তোমাদের কখনও সেটা করা উচিত হয়নি।
14 চৌমাথার মোড়ে তোমাদের দাঁড়ানো উচিত হয় নি
এবং যে সব লোকরা পালাবার চেষ্টা করছিল তাদের তোমরা হত্যা করেছিলে, তোমাদের সেটা করা উচিত হয়নি।
যে সব লোকরা জীবিত অবস্থায় পালাচ্ছিল তোমরা তাদের ধরেছিলে, তোমাদের সেটা করা উচিত হয়নি।
15 সব জাতির ওপর
প্রভুর দিন আসছে।
তোমরা অন্যদের প্রতি যা খারাপ কাজ করেছিলে,
তোমাদের প্রতিও সেগুলি ঘটবে।
ওই একই খারাপ জিনিষ
তোমাদের মাথাতেও পড়বে।
16 ওই একই মন্দ বিষয়গুলি তোমাদের মাথার ওপর এসে পড়বে।
কেন? কারণ তোমরা আমার পবিত্র পর্বতের ওপর রক্তপাত ঘটিয়েছ।
তাই অন্যান্য জাতিরা তোমাদের রক্তও ঝরাবে।[a]
তোমরা শেষ হয়ে যাবে।
মনে হবে যেন তোমাদের কোন অস্তিত্বই ছিল না।
17 কিন্তু সিয়োন পর্বতে কিছু লোক জীবিত থেকে যাবে।
তারা বিশেষ লোক বলে গণ্য হবে।
যাকোবের বংশধররা নিজেদের অধিকারভুক্ত জিনিসগুলো
ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
18 যাকোবের পরিবার আগুনের মত হয়ে উঠবে।
যোষেফের জাতি হবে অগ্নিশিখার মত।
কিন্তু এষৌর উপজাতিরা হবে তৃণের মত।
যিহূদাবাসীরা ইদোমকে পুড়িয়ে ফেলবে।
যিহূদাবাসীরা ইদোমকে ধ্বংস করে দেবে।
তখন এষৌর উপজাতির মধ্যে
কেউ জীবিত থাকবে না।”
কেন?
কারণ প্রভু ঈশ্বরই এই কথাটি বলেছেন।
19 তখন নেগেভ-এর লোকরা
এষৌর পর্বতে বাস করবে
এবং পাহাড়ের পাদদেশের লোকরা
এসে পলেষ্টীয়দের দেশগুলি অধিকার করে নেবে।
ওই সব লোকরা ইফ্রয়িমের এবং শমরিয়ার দেশে বাস করবে।
গিলিয়দ বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত হবে।
20 ইস্রায়েলের লোকরা তাদের বাড়ী ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল;
কিন্তু ওই সব লোকরাই সারিফত্ পর্যন্ত কনানীয় দেশ অধিকার করবে।
যিহূদার লোকরা জেরুশালেম ত্যাগ করে সফারদে গিয়ে বাস করতে বাধ্য হয়েছিল।
কিন্তু তারা নেগেভের শহরগুলি অধিকার করবে।
21 বিজয়ীরা সিয়োন পর্বতের উপরে যাবে।
এবং যে সব লোকজন এষৌর পর্বতে থাকে তাদের শাসন করবে
ও রাজ্যটি প্রভুর অধিকারভুক্ত হবে।
পিতর, যাকোব এবং যোহন যীশুকে অনুসরণ করলেন
(মথি 4:18-22; মার্ক 1:16-20)
5 একদিন যীশু গিনেষরত হ্রদের ধারে দাঁড়িয়েছিলেন। বহুলোক তাঁর চারপাশে ভীড় করে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের শিক্ষা শুনছিল। 2 তিনি দেখলেন, হ্রদের ধারে দুটি নৌকা দাঁড়িয়ে আছে আর জেলেরা নৌকা থেকে নেমে জাল ধুচ্ছে। 3 তিনি একটি নৌকায় উঠলেন, সেই নৌকাটি ছিল শিমোনের। যীশু তাঁকে তীর থেকে নৌকাটিকে একটু দূরে নিয়ে যেতে বললেন। তারপর তিনি নৌকায় বসে সেখান থেকে লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
4 তাঁর কথা শেষ হলে তিনি শিমোনকে বললেন, “এখন গভীর জলে নৌকা নিয়ে চল, আর সেখানে মাছ ধরার জন্য তোমাদের জাল ফেল।”
5 শিমোন উত্তর দিলেন, “প্রভু, আমরা সারা রাত ধরে কঠোর পরিশ্রম করে কিছুই ধরতে পারি নি; কিন্তু আপনি যখন বলছেন তখন আমি জাল ফেলব।” 6 তাঁরা জাল ফেললে প্রচুর মাছ জালে ধরা পড়ল। মাছের ভারে তাদের জাল ছিঁড়ে যাবার উপক্রম হল। 7 তখন তাঁরা সাহায্যের জন্য ইশারা করে অন্য নৌকার সঙ্গীদের ডাকলেন। সঙ্গীরা এসে দুটো নৌকায় এত মাছ বোঝাই করলেন যে সেগুলো ডুবে যাবার উপক্রম হল।
8-9 এই দেখে পিতর যীশুর পায়ে পড়ে বললেন, “প্রভু আমি একজন পাপী। আপনি আমার কাছ থেকে চলে যান।” কারণ জালে এত মাছ ধরা পড়েছে দেখে তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। 10 সিবদিয়ের ছেলে যাকোব ও যোহন যাঁরা তাঁর ভাগীদার ছিলেন তাঁরাও অবাক হয়ে গিয়েছিলেন।
তখন যীশু শিমোনকে বললেন, “ভয় পেও না, এখন থেকে তুমি মাছ নয় বরং মানুষ ধরবে।”
11 এরপর তাঁরা নৌকাগুলো তীরে এনে সব কিছু ফেলে রেখে যীশুর সঙ্গে চললেন।
একজন কুষ্ঠ রোগীকে যীশু আরোগ্যদান করলেন
(মথি 8:1-4; মার্ক 1:40-45)
12 একবার যীশু কোন এক নগরে ছিলেন, সেখানে একজন লোক যার সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরোগে ভরে গিয়েছিল, সে যীশুকে দেখে তাঁর সামনে উপুড় হয়ে পড়ে মিনতি করে বলল, “প্রভু, আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলেই আমাকে ভালো করতে পারেন।”
13 তখন যীশু হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে বললেন, “আমি তা-ই চাই। তুমি আরোগ্য লাভ কর!” আর সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ ভালো হয়ে গেল। 14 তখন যীশু তাকে আদেশ করলেন, “দেখ, একথা কাউকে বোলো না; কিন্তু যাও, যাজকদের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও, আর শুচি হবার জন্য মোশির নির্দেশ মতো বলি উৎসর্গ কর। তুমি যে আরোগ্য লাভ করেছ, সবার সামনে এইভাবে তা প্রকাশ কর।”[a]
15 যীশুর বিষয়ে নানা খবর চতুর্দিকে আরো ছড়িয়ে পড়তে লাগল, আর বহুলোক ভীড় করে তাঁর কথা শুনতে ও রোগ থেকে সুস্থ হবার জন্য তাঁর কাছে আসতে লাগল। 16 কিন্তু যীশু প্রায়ই নির্জন জায়গায় প্রান্তরের মধ্যে গিয়ে প্রার্থনা করতেন।
যীশু একজন পঙ্গুকে সুস্থ করেন
(মথি 9:1-8; মার্ক 2:1-12)
17 একদিন তিনি যখন শিক্ষা দিচ্ছেন তখন সেখানে কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক বসেছিল। এরা গালীল ও যিহূদিয়ার প্রতিটি নগর ও জেরুশালেম থেকে এসেছিল। রোগীদের সুস্থ করার জন্য প্রভুর শক্তি যীশুর মধ্যে ছিল। 18 সেই সময় কয়েকজন লোক খাটে করে একজন পঙ্গুকে বয়ে নিয়ে এল। তারা তাকে ভেতরে যীশুর কাছে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল; 19 কিন্তু ভীড়ের জন্য ভেতরে যাবার পথ পেল না। তখন তারা ছাদে উঠে ছাদের টালি সরিয়ে তাকে তার খাটিযা সমেত লোকদের মাঝে যেখানে যীশু ছিলেন সেখানে নামিয়ে দিল। 20 তাদের এই বিশ্বাস দেখে যীশু বললেন, “তোমার পাপ ক্ষমা করা হল।”
21 এই শুনে ইহুদী ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা নিজেদের মধ্যে মনে মনে ভাবতে লাগল, “এই লোকটা কে যে ঈশ্বর নিন্দা করছে! একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারে?”
22 কিন্তু যীশু তাদের মনের চিন্তা বুঝতে পেরে বললেন, “তোমরা মনে মনে কেন ঐ কথা ভাবছ? 23 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল,’ না ‘তুমি উঠে হেঁটে বেড়াও?’ 24 কিন্তু তোমরা যেন জানতে পারো যে পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা মানবপুত্রের[b] আছে।” তাই তিনি পঙ্গু লোকটিকে বললেন, “আমি তোমায় বলছি, ওঠো! তোমার খাটিয়া তুলে নিয়ে বাড়ি যাও।”
25 আর লোকটি সঙ্গে সঙ্গে তাদের সামনে উঠে দাঁড়াল আর যে খাটিয়ার ওপর সে শুয়েছিল তা তুলে নিয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে বাড়ি চলে গেল। 26 এই দেখে সবাই খুব আশ্চর্য হয়ে গেল, আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল। তারা ভয় ও ভক্তিতে পূর্ণ হয়ে বলতে লাগল, “আজ আমরা এক বিস্ময়কর ঘটনা দেখলাম।”
লেবির যীশুকে অনুসরণ
(মথি 9:9-13; মার্ক 2:13-17)
27 এই ঘটনার পর যীশু সেখান থেকে বাইরে গেলে কর আদায় করার জায়গায় লেবি নামে একজন কর আদায়কারীকে বসে থাকতে দেখলেন। যীশু তাকে বললেন, “আমার সঙ্গে এস!” 28 আর লেবি সব কিছু ফেলে রেখে উঠে পড়লেন ও যীশুর সঙ্গে চললেন।
29 যীশুর জন্য লেবি তাঁর বাড়িতে একটা বড় ভোজের আয়োজন করলেন। তাদের সঙ্গে অনেক কর আদায়কারী ও অন্যান্য আরো অনেকে খেতে বসল। 30 তখন ফরীশী ও তাদের ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুর অনুগামীদের কাছে অভিযোগ করে বলল, “তোমরা কেন কর আদায়কারী ও মন্দ লোকদের সঙ্গে ভোজন পান কর?”
31 এর জবাবে যীশু তাদের বললেন, “সুস্থ লোকেদের জন্য চিকিৎসকের প্রয়োজন নেই; কিন্তু যারা অসুস্থ তাদের জন্য চিকিৎসকের দরকার আছে। 32 আমি ধার্মিকদের নয় কিন্তু মন্দ লোকদের ডাকতে এসেছি; যেন তারা পাপের পথ থেকে ফেরে।”
যীশু উপবাস সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিলেন
(মথি 9:14-17; মার্ক 2:18-22)
33 তারা যীশুকে বলল, “যোহনের অনুগামীরা প্রায়ই প্রার্থনা ও উপবাস করে, ফরীশীদের অনুগামীরাও তা করে; কিন্তু আপনার অনুগামীরা তো সব সময়ই ভোজন পান করছে।”
34 যীশু তাদের বললেন, “বর সঙ্গে থাকতে কি তোমরা বর যাত্রীদের উপোস করে থাকতে বলতে পার? 35 কিন্তু এমন সময় আসছে যখন বরকে তাদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে আর সেই সময় তারা উপোস করবে।”
36 তিনি তাদের কাছে একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বললেন, “নতুন জামা থেকে একটি টুকরো ছিঁড়ে নিয়ে কেউ কি পুরানো জামায় তালি দেয়? যদি কেউ তা করে তবে সে তার নতুন জামাটি ছিঁড়ল, আবার সেই ছেঁড়া কাপড়ের টুকরো পুরানোর সঙ্গে মানাবে না। 37 পুরানো চামড়ার থলিতে কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস রাখে না, রাখলে টাটকা দ্রাক্ষারস চামড়ার থলিটি ফাটিয়ে দেবে তাতে রস ও পড়ে যাবে আর থলি ও নষ্ট হবে। 38 টাটকা দ্রাক্ষারস নতুন চামড়ার থলিতে রাখাই উচিত; 39 আর পুরানো দ্রাক্ষারস পান করার পর কেউ টাটকা দ্রাক্ষারস পান করতে চায় না, কারণ সে বলে ‘পুরাতনটাই ভাল।’”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International