M’Cheyne Bible Reading Plan
জেরুশালেমে সাক্ষ্যসিন্দুক
15 দায়ূদ নগরে নিজের জন্য প্রাসাদ বানানোর পর দায়ূদ সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখার জন্য একটি বিশেষ তাঁবু নির্মাণ করে বললেন, 2 “শুধুমাত্র লেবীয়রাই এই সাক্ষ্যসিন্দুকটা বয়ে নিয়ে যেতে পারবে কারণ কেবলমাত্র প্রভু তাদেরই এই কাজের জন্য এবং চিরদিন তাঁর সেবার জন্য বেছে নিয়েছেন।”
3 সাক্ষ্যসিন্দুকটি রাখার জন্য যে জায়গাটি তৈরী হয়েছিল সেখানে সাক্ষ্যসিন্দুকটি আনবার জন্য দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের জেরুশালেমে জড়ো হতে ডাক দিলেন। 4 এরপর দায়ূদ হারোণ ও লেবীয় বংশের সমস্ত উত্তরপুরুষদের ডেকে পাঠালেন।
5 এঁদের মধ্যে 120 জন ছিলেন কহাতের পরিবারগোষ্ঠীর সদস্য, ঊরীয়েল তাঁদের নেতা।
6 মরারি পরিবারগোষ্ঠী থেকে অসায়ের নেতৃত্বে এসেছিলেন 220 জন,
7 গের্শোন পরিবারগোষ্ঠী থেকে যোয়েলের নেতৃত্বে 130 জন,
8 শময়িয়র নেতৃত্বে ইলীষাফণ পরিবারগোষ্ঠী থেকে 200 জন,
9 হিব্রোণ পরিবারগোষ্ঠী থেকে ইলীয়েলের নেতৃত্বে 80 জন আর
10 অম্মীনাদবের নেতৃত্বে উষীয়েল পরিবারগোষ্ঠী থেকে এসেছিলেন 112 জন ব্যক্তি।
যাজক ও লেবীয়দের সঙ্গে কথা বললেন দায়ূদ
11 এরপর দায়ূদ যাজক সাদোক আর অবিয়াথর ছাড়াও, লেবীয়দের মধ্যে ঊরীয়েল, অসায়, যোয়েল, শময়িয়, ইলীয়েল ও অম্মীনাদবকে ডেকে পাঠিয়ে 12 তাঁদের বললেন, “তোমরা সকলেই লেবীয় পরিবারগোষ্ঠীর নেতা। তোমরা প্রথমে নিজেদের পবিত্র করে তারপর সাক্ষ্যসিন্দুকটা রাখার জন্য আমি যে জায়গা তৈরী করেছি সেখানে নিয়ে এস। 13 গতবার আমরা প্রভুর কাছে সাক্ষ্যসিন্দুকটা কিভাবে নেওয়া হবে তা জিজ্ঞেসও করিনি এবং তোমরা লেবীয়রাও সাক্ষ্যসিন্দুকটা বহন কর নি। তাই প্রভু আমাদের শাস্তি দিয়েছিলেন।”
14 তখন যাজকগণ ও লেবীয়রা প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সাক্ষ্যসিন্দুকটা বহন করার জন্য নিজেদের পবিত্র করলেন। 15 এবং মোশি যে ভাবে ঈশ্বরের কথা অনুযায়ী সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেভাবেই লেবীয়রা বিশেষ ধরণের খুঁটি ব্যবহার করে কাঁধে করে সাক্ষ্যসিন্দুকটা বয়ে নিয়ে এলেন।
গায়ক দল
16 দায়ূদ লেবীয় নেতাদের সঙ্গে তাঁদের সতীর্থ গায়কদেরও ডেকে পাঠিয়ে বীণা, বাঁশি, খোল, কর্তাল, ভেঁপু বাজিয়ে আনন্দের গান গাইতে বললেন।
17 লেবীয়রা তখন যোয়েলের পুত্র হেমন ও তার ভাই আসফ ও এথনকে নির্বাচিত করল। আসফ ছিল বেরিখিয়র পুত্র। এথন ছিল কূশায়ার পুত্র। এইসব পুরুষরা ছিল মরারি পরিবারগোষ্ঠীর লোক। 18 তাদের সঙ্গে ছিল তাদের সাহায্যকারীরা, তাদের আত্মীয়স্বজন, সখরিয়, যাসীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, উন্নি, ইলীয়াব, বনায়, মাসেয়, মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্নেয়, ওবেদ-ইদোম ও যিয়ীয়েল। এরা ছিল লেবীয় দ্বাররক্ষীগণ।
19 হেমন, আসফ আর এথন বাজালেন কর্তাল। 20 সখরিয়, অসীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, উন্নি, ইলীয়াব, মাসেয় আর বনায় বাজালেন বীণা, 21 মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্নেয়, ওবেদ-ইদোম, যিয়ীয়েল আর অসসিয় নীচু সুরে বীণা বাজালেন। 22 লেবীয় নেতা কননিয় ছিলেন গানের দায়িত্বে কারণ তিনি ছিলেন গানে পারদর্শী।
23 সাক্ষ্যসিন্দুকের জন্য দুই রক্ষী ছিলেন বেরিথিয় আর ইল্কানা। 24 শবনিয়, যিহোশাফট, নথলেন, অমাসয়, সখরিয়, বনায় আর ইলীয়েষর যাজকরা শিঙা বাজিয়ে সাক্ষ্যসিন্দুকের সামনে হাঁটতে লাগলেন। ওবেদ-ইদোম ও যিহিয়ও সাক্ষ্যসিন্দুক পাহারা দেবার কাজে নিযুক্ত ছিলেন।
25 দায়ূদ, ইস্রায়েলের নেতৃবর্গ ও সেনাধ্যক্ষরা সকলে সাক্ষ্যসিন্দুকটা ওবেদ-ইদোমের বাড়ি থেকে আনতে গেলেন, সকলেই তখন উল্লসিত। 26 যে সমস্ত লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করছিলেন ঈশ্বর অন্তরাল থেকে তাদের সহায় হলেন। সাতটা ষাঁড় ও মেষকে এই উপলক্ষ্যে উৎসর্গ করা হল। 27 যে সমস্ত লেবীয়রা সাক্ষ্যসিন্দুক বহন করেছিলেন তাঁরা সকলেই মিহি মসীনার তৈরী বিশেষ পরিচ্ছদ পরেছিলেন। কনানিয়, যিনি গানের এবং সমস্ত গায়কদের দায়িত্বে ছিলেন তিনি এবং দায়ূদও মিহি মসীনার তৈরী পোশাক পরেছিলেন। দায়ূদ মিহি মসীনার তৈরী এফোদও পরেছিলেন।
28 আনন্দে চিৎকার করতে করতে ভেড়ার শিঙা, তূরী-ভেরী বাজাতে বাজাতে, বীণা, বাদ্যযন্ত্র এবং খঞ্জনীর বাজনার সঙ্গে ইস্রায়েলের লোকরা সাক্ষ্য-সিন্দুকটা নিয়ে এলেন।
29 সাক্ষ্যসিন্দুকটা দায়ূদ নগরীতে এসে পৌঁছনোর পর দায়ূদ যখন নাচছিলেন এবং উদ্যাপন করছিলেন তখন শৌলের কন্যা মীখল একটা জানলা দিয়ে দেখছিল। দায়ূদের প্রতি তার যাবতীয় শ্রদ্ধা অন্তর্হিত হল কারণ সে ভাবল দায়ূদ বোকার মতো আচরণ করছে।
সবাইকে ভালবাসো
2 আমার ভাই ও বোনেরা, তোমরা আমাদের মহিমাময় প্রভু যীশু খ্রীষ্টেতে বিশ্বাসী, সুতরাং তোমরা পক্ষপাতিত্ব করো না। 2 মনে কর কোন ব্যক্তি হাতে সোনার আংটি ও পরনে দামী পোশাক পরে তোমাদের সভায় এল। সেই সময় একজন গরীব লোকও ময়লা পোশাক পরে সেখানে এল। 3 যদি তোমরা সেই দামী পোশাক পরা মানুষটির দিকে বিশেষ নজর দিয়ে বল, “এই ভাল চেয়ারে বসুন,” আর সেই গবীর লোকটিকে বল, “তুমি ওখানে দাঁড়াও,” কিংবা “তুমি আমার এই পায়ের কাছে মাটিতে বস,” 4 তাহলে তোমরা কি করছ? এক ব্যক্তি থেকে আরেকজনকে কি বেশী সম্মানের পাত্র বলে বিচার করছ না? তোমরা কি মন্দ মাপকাঠিতে লোকের বিচার করছ না?
5 আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা শোন, সংসারে যারা গরীব, ঈশ্বর কি তাদের বিশ্বাসে ধনী হবার জন্য মনোনীত করেন নি? যারা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদের যে রাজ্য দেবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেই রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য এই গরীব লোকদের কি তিনি বেছে নেন নি? 6 কিন্তু তোমরা সেই গরীব লোকটিকে কোন সম্মান দিলে না। ধনীরাই কি তোমাদের দাবিয়ে রাখে না? তারাই কি তোমাদের আদালতে টেনে নিয়ে যায় না? 7 যে উত্তম নাম (যীশু) তোমাদের কাছে কীর্ত্তিত হয়েছে, তোমরা যাঁর আপনজন, ধনীরাই কি সেই সম্মানিত নামের নিন্দা করে না?
8 সমস্ত বিধি-ব্যবস্থার উর্দ্ধে একটি বিধি আছে। এই রাজকীয় ব্যবস্থাটি শাস্ত্রে রয়েছে: “তোমরা প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালবাসবে।”(A) তোমরা যদি সেই বিধি-ব্যবস্থা পালন কর তবে ভালই করছ। 9 কিন্তু তোমরা যদি কারোর প্রতি পক্ষপাতিত্ব কর তবে তোমরা পাপ করছ, আর এই রাজকীয় ব্যবস্থা তোমাদের ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করবে।
10 কেউ যদি সমস্ত ব্যবস্থা পালন করে ও তার মধ্যে কেবল যদি একটি ব্যবস্থা পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে সে সমস্ত ব্যবস্থা লঙ্ঘন করার দোষে দোষী সাব্যস্ত হয়। 11 ঈশ্বর বলেছেন, “ব্যভিচার করো না।”(B) আবার তিনিই বলেছেন, “নরহত্যা করো না।”(C) এবার তুমি যদি ব্যভিচার না করে নরহত্যা কর, তাহলেও তুমি একজন ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী।
12 যে ব্যবস্থা তোমাদের স্বাধীন করেছে তারই দ্বারা তোমাদের বিচার হবে, সুতরাং তোমরা যে কোন কাজ করার আগে ও কথা বলার পূর্বে এইসব স্মরণ কর। 13 তোমাদের উচিত অপরের প্রতি দয়া করা। যে কারও প্রতি দয়া করে নি, ঈশ্বরের কাছ থেকে সে বিচারের সময় দয়া পাবে না। কিন্তু যে দয়া করেছে সে বিচারের সময় নির্ভয়ে দাঁড়াতে পারবে।
বিশ্বাস ও সৎ কর্ম
14 আমার ভাই ও বোনেরা, যদি কেউ বলে আমার বিশ্বাস আছে, অথচ সে সেই অনুসারে কোন কাজ না করে, তা হলে তার বিশ্বাসের কোন মূল্য নেই। সেই বিশ্বাস কি তাকে রক্ষা করতে পারবে? কখনই না। 15 ধর, কোন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী ভাই বা বোনের অন্ন বস্ত্রের অভাব আছে, 16 এই অবস্থায় তাকে কোন সাহায্য না করে তোমরা যদি মুখে বল, “ঈশ্বর তোমার সহায় হোন, খেয়ে পরে থাক।” কিন্তু তার উপকার করতে ঐ প্রয়োজনীয় দ্রব্য না দাও তবে ঐসব কথার কি মূল্য আছে? 17 ঠিক সেইভাবে বিশ্বাস অনুযায়ী যদি কোন কাজ না হয় তবে সে বিশ্বাস মৃত বলেই গন্য হয়। সেই বিশ্বাস শুধু বিশ্বাসই, তার বেশী কিছু নয়।
18 কিন্তু কেউ হয়তো বলবে, “তোমার বিশ্বাস আছে, আর আমার কাজ আছে। কাজ বাদ দিয়ে তোমার বিশ্বাস আমাকে দেখাও আর আমি আমার কাজের মধ্যে আমার বিশ্বাস তোমাকে দেখাব।” 19 তুমি কি বিশ্বাস কর যে এক ঈশ্বর রয়েছেন? এমনকি ভূতরাও তা বিশ্বাস করে ও ভয়ে কাঁপে।
20 ওহে মুর্খ মানুষ! কর্মবিহীন বিশ্বাস যে কোন কাজের নয়, তুমি কি চাও আমি তা প্রমাণ করি? 21 অব্রাহাম আমাদের পিতৃপুরুষ ছিলেন। যখন তিনি তাঁর পুত্র ইস্হাককে যজ্ঞ বেদীর ওপর উৎসর্গ করেন, তখন তাঁর কাজের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে স্বীকৃতি পান। 22 কাজেই লক্ষ্য কর অব্রাহামের বিশ্বাস ও কর্ম একসাথে কাজ করেছিল এবং তাঁর বিশ্বাস কর্মের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছিল। 23 এইভাবে শাস্ত্রের সেই বাক্য পূর্ণ হল যেখানে বলা হয়েছে, “অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস করলেন। ঈশ্বরের কাছে সেই বিশ্বাস গ্রহণযোগ্য হল এবং সেই বিশ্বাসে অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ গণিত হলেন,”(D) আর তাঁকে “ঈশ্বরের বন্ধু” বলা হল।(E) 24 তাহলে তোমরা দেখলে যে মানুষ তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের কাছে নির্দোষ বলে গণিত হয়, কেবলমাত্র তার বিশ্বাসের দ্বারা নয়।
25 আর একটি দৃষ্টান্ত হিসাবে রাহবের কথা বলা যেতে পারে। বেশ্যা রাহব কি তার কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরের চোখে নির্দোষ গণিত হয় নি? সে গুপ্তচরদের (ঈশ্বরের লোক) লুকিয়ে রেখে পরে তাদের অন্য পথ দিয়ে নিরাপদে চলে যেতে সাহায্য করেছিল।
26 দেহের মধ্যে প্রাণ যখন থাকে না, তখন সেই দেহ যেমন মৃত, তেমনি কর্মবিহীন বিশ্বাসও মৃত।
বেদীর সামনে দণ্ডায়মান প্রভুর দর্শন
9 আমি আমার সদাপ্রভুকে বেদীর পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। তিনি বললেন,
“স্তম্ভের মাথায় আঘাত কর
তাহলে সমস্ত অট্টালিকা নড়ে উঠবে।
এমনকি চৌকাঠ পর্যন্ত পড়ে যাবে।
সেই স্তম্ভ লোকেদের মাথায় ভেঙে ফেলো
আর তাও যদি কেউ কেউ বেঁচে থাকে
তবে আমি তরবারির দ্বারা
তাদের হত্যা করব।
পালালেও,
একজনও রক্ষা পাবে না।
2 তারা যদি পাতাল পর্যন্ত গভীর গর্ত খুঁড়ে
তার মধ্যে যায়ও
আমি তাদের সেখান থেকেও
টেনে বার করে আনব।
তারা আকাশে উঠে গেলেও
সেখান থেকে আমি তাদের নামিয়ে আনব।
3 কর্ম্মিল পর্বতের চূড়ায় লুকিয়ে থাকলেও
আমি সেখানে তাদের খুঁজে বার করব।
এবং সেখান থেকে নিয়ে আসব।
যদি তারা সমুদ্রের তলায় গিয়ে আমার কাছ থেকে লুকোবার চেষ্টা করে,
তবে আমি সেখানে সাপকে আদেশ করব আর সে তাদের কামড়াবে।
4 যদি তারা বন্দী হতে শত্রুদের সামনে যায়
তবে সেখানে আমি তরবারিকে আদেশ করব
আর তা তাদের হত্যা করবে।
হ্যাঁ, আমি তাদের উপর নজর রাখব
দেখব কিভাবে তাদের উপর অমঙ্গল আনতে পারি,
মঙ্গল নয়।”
শাস্তি ধ্বংস পর্যন্ত
5 আমার সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান প্রভু দেশকে স্পর্শ করলে
তা গলে যাবে।
তখন দেশে বসবাসকারী সকলে মৃতদের জন্য শোক করবে।
দেশ মিশরীয় নীল নদের মতো উথাল পাতাল করবে।
6 প্রভু তাঁর ওপরের ঘরগুলো আকাশের অধিকতর উচ্চে তৈরি করেছেন।
তিনি তাঁর লোকদের পৃথিবীর ভিত্তির ওপর স্থাপন করেছেন।
তিনি সমুদ্রের জলকে ডাকেন
এবং বৃষ্টিরূপে তা দেশের ওপর ঢেলে দেন।
যিহোবা তাঁর নাম।
ইস্রায়েলের বিনাশ সম্বন্ধে প্রভুর প্রতিশ্রুতি
7 প্রভু এই কথা বলেন:
“হে ইস্রায়েল, তুমি আমার কাছে কূশীয়দের মতো।
আমি ইস্রায়েলকে মিশর দেশ থেকে বাইরে এনেছিলাম।
আমি কপ্তোর থেকে পলেষ্টীয়দের
এবং কীর থেকে অরামীয়দের বার করে এনেছিলাম।”
8 প্রভু আমার সদাপ্রভু পাপপূর্ণ রাজ্য, ইস্রায়েলের দিকে চেয়ে আছেন।
প্রভু বলেন,
“আমি পৃথিবীর বুক থেকে ইস্রায়েলকে উৎপাটন করব
কিন্তু যাকোবের পরিবারকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব না।
9 আমি ইস্রায়েল জাতিকে ধ্বংস করবার আদেশ দিচ্ছি।
আমি ইস্রায়েলের লোকদের সমস্ত জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেব।
যখন সে চালনিতে শস্য ঝাড়ে
তখন ভালো শস্যগুলি চালনির ভেতর দিয়ে নীচে পড়ে
কিন্তু খারাপ ডেলাগুলি ধরা পড়ে, যাকোবের পরিবারের সঙ্গেও তেমনটি করা হবে।
10 “আমার লোকদের মধ্যে পাপীরা বলে,
‘আমাদের কোন মন্দ ঘটবে না।’
কিন্তু তাদের সবাইকে তরবারির আঘাতে হত্যা করা হবে!”
রাজ্য পুনঃস্থাপনের জন্য ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি
11 “দায়ূদের তাঁবু[a] পতিত হয়েছে।
কিন্তু সেই সময় আমি আবার তা স্থাপন করব।
আমি দেওয়ালের গর্তগুলো সারাবো।
আমি এর ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার গড়ব।
আমি তাকে পূর্বে যেমন ছিল
সেই ভাবে আবার গড়ে তুলব।
12 তারপর, তারা, যারা আমার নামে অভিহিত হয়,
তারা ইদোমের এবং দেশের অন্যান্য অবশিষ্ট অংশের সত্ত্ব গ্রহণ করবে।”
প্রভু বলেন,
তিনি এগুলো করেন।
13 প্রভু বলেন, “সেই সময় আসছে
যখন হালবাহক শস্য ছেদকের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পা ফেলবে।
দ্রাক্ষা মর্দনকারী, দ্রাক্ষা চয়নকারীকে ছাড়িয়ে যাবে।
পর্বত এবং উপপর্বত থেকে
মিষ্ট দ্রাক্ষারস ঝরে পড়বে।
14 আমি আমার লোকদের ইস্রায়েলকে
বন্দী দশা থেকে ফিরিয়ে আনব।
তারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরগুলি আবার গড়বে
এবং সেখানে বাস করবে।
তারা দ্রাক্ষাক্ষেত স্থাপন করবে
এবং তাদের উৎপন্ন দ্রাক্ষারস পান করবে।
তারা বাগান করবে
এবং তা থেকে ফল আহরণ করে খাবে।
15 আমি আমার লোকদের তাদের দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করাব।
যে দেশ আমি তাদের দিয়েছি, সেখান থেকে তাদের আর কখনও বিচ্ছিন্ন করা হবে না।”
প্রভু তোমার ঈশ্বরই এইসব বলেছেন।
যীশু দিয়াবল দ্বারা পরীক্ষিত হন
(মথি 4:1-11; মার্ক 1:12-13)
4 এরপর যীশু পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে যর্দন নদী থেকে ফিরে এলেন: আর আত্মার পরিচালনায় প্রান্তরের মধ্যে গেলেন। 2 সেখানে চল্লিশ দিন ধরে দিয়াবল তাঁকে প্রলোভনে ফেলতে চাইল। সেই সময় তিনি কিছুই খাদ্য গ্রহণ করেন নি। ঐ সময় পার হয়ে গেলে যীশুর খিদে পেল।
3 তখন দিয়াবল তাঁকে বলল, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এই পাথরটিকে রুটি হয়ে যেতে বল।”
4 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “শাস্ত্রে লেখা আছে:
‘মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না।’”(A)
5 এরপর দিয়াবল তাঁকে একটা উঁচু জায়গায় নিয়ে গেল আর মুহূর্তের মধ্যে জগতের সমস্ত রাজ্য দেখাল। 6 দিয়াবল যীশুকে বলল, “এইসব রাজ্যের পরাক্রম ও মহিমা আমি তোমায় দেব, কারণ এই সমস্তই আমাকে দেওয়া হয়েছে, আর আমি যাকে চাই তাকেই এসব দিতে পারি। 7 এখন তুমি যদি আমার উপাসনা কর তবে এসবই তোমার হবে।”
8 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “শাস্ত্রে লেখা আছে:
‘তুমি কেবল তোমার প্রভু ঈশ্বরকেই উপাসনা করবে,
কেবল তাঁরই সেবা করবে!’”(B)
9 এরপর দিয়াবল তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে মন্দিরের চূড়ার ওপরে দাঁড় করিয়ে বলল, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে এখান থেকে লাফ দিয়ে নীচে পড়। 10 কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে:
‘ঈশ্বর তাঁর স্বর্গদূতদের তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন
যেন তারা তোমাকে রক্ষা করে।’(C)
11 আরো লেখা আছে:
‘তারা তোমাকে তাদের হাতে করে তুলে ধরবে
যেন তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে।’”(D)
12 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “শাস্ত্রে একথাও বলা হয়েছে: ‘তুমি তোমার প্রভু ঈশ্বরের পরীক্ষা করো না।’”(E)
13 এইভাবে দিয়াবল তাঁকে সমস্ত রকমের প্রলোভনে ফেলার চেষ্টা করে, আরো ভাল সুযোগের অপেক্ষায় যীশুকে ছেড়ে চলে গেল।
যীশু লোকজনকে শিক্ষা দিলেন
(মথি 4:12-17; মার্ক 1:14-15)
14 যীশু পবিত্র আত্মার পরিচালনায় গালীলে ফিরে গেলে ঐ সংবাদ সেই অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল। 15 তিনি তাদের সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে লাগলেন, আর সবাই তাঁর প্রশংসা করতে লাগল।
যীশু তাঁর নিজের নগরে গেলেন
(মথি 13:53-58; মার্ক 6:1-6)
16 এরপর যীশু নাসরতে গেলেন, এখানেই তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন। তাঁর রীতি অনুসারে বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে[a] গিয়ে সেখানে শাস্ত্র পাঠ করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন।
17 তাঁর হাতে ভাববাদী যিশাইয়র লেখা পুস্তকটি দেওয়া হল। তিনি পুস্তকটি খুলে সেই অংশটি পেলেন, যেখানে লেখা আছে:
18 “প্রভুর আত্মা আমার ওপর আছেন
কারণ দীন দরিদ্রের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য তিনিই আমায় নিযুক্ত করেছেন।
তিনি আমাকে বন্দীদের কাছে স্বাধীনতার কথা
ও অন্ধদের কাছে দৃষ্টি ফিরে পাবার কথা ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন;
আর নির্যাতিতদের মুক্ত করতে বলেছেন।
19 এছাড়া প্রভুর অনুগ্রহ দানের বৎসরের কথা ঘোষণা করতেও পাঠিয়েছেন।”(F)
20 এরপর তিনি পুস্তকটি গুটিয়ে সেখানকার সহায়কদের হাতে দিয়ে বসলেন। সে সময় যারা সমাজ-গৃহে ছিল, তাদের সকলের দৃষ্টি তাঁর ওপর গিয়ে পড়ল। 21 তখন তিনি তাদের বললেন, “শাস্ত্রের এই কথা যা তোমরা শুনলে তা আজ পূর্ণ হল।”
22 সকলেই তাঁর খুব প্রশংসা করল, তাঁর মুখে অপূর্ব সব কথা শুনে তারা আশ্চর্য হয়ে গেল। তারা বলল, “এ কি যোষেফের ছেলে নয়?”
23 তখন তিনি তাদের বললেন, “তোমরা নিশ্চয়ই আমার বিষয়ে প্রচলিত প্রবাদটি বলবে, ‘চিকিৎসক, আগে নিজেকে সুস্থ কর। কফরনাহূমে যে সমস্ত কাজ করেছ বলে আমরা শুনেছি সে সব এখন এখানে নিজের গ্রামেও কর দেখি!’” 24 তারপর যীশু বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কোন ভাববাদী তাঁর নিজের গ্রামে গ্রাহ্য হন না।
25-26 “সত্যি বলতে কি এলিয়র সময়ে যখন সাড়ে তিন বছর ধরে আকাশ রুদ্ধ ছিল এবং সারা দেশে ভয়ঙ্কর দুর্ভিক্ষ চলছিল, সেই সময ইস্রায়েল দেশে অনেক বিধবা ছিল। কিন্তু তাদের কারো কাছে এলিয়কে পাঠানো হয় নি, কেবল সীদোন প্রদেশে সারিফতে সেই বিধবার কাছেই তাঁকে পাঠানো হয়েছিল।
27 “আবার ভাববাদী ইলীশায়ের সময়ে ইস্রায়েল দেশে অনেক কুষ্ঠরোগী ছিল, কিন্তু তাদের কেউ সুস্থ হয় নি, কেবল সুরীয় নামান সুস্থ হয়েছিল।”
28 এই কথা শুনে সমাজ-গৃহের সমস্ত লোক রেগে আগুন হয়ে গেল। 29 তারা উঠে যীশুকে নগরের বাইরে বার করে দিল আর নগরটি যে পাহাড়ের ওপর ছিল তার শেষ প্রান্তে তাঁকে ঠেলে নিয়ে গেল, যেন পাহাড়ের চূড়া থেকে তাঁকে নীচে ফেলে দিতে পারে। 30 কিন্তু তিনি তাদের মাঝখান দিয়ে চলে গেলেন।
অশুচি আত্মায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে যীশু সুস্থ করলেন
(মার্ক 1:21-28)
31 এরপর যীশু গালীলের কফরনাহূম শহরে গেলেন। সেখানে তিনি বিশ্রামবারে তাদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন। 32 তাঁর দেওয়া শিক্ষায় তারা আশ্চর্য হয়ে গেল, কারণ তাঁর শিক্ষা ছিল ক্ষমতাযুক্ত।
33 সেই সমাজগৃহে অশুচি আত্মায় পাওয়া একজন লোক ছিল, সে চিৎকার করে বলে উঠল, 34 “ওহে নাসরতীয় যীশু! আমাদের কাছে আপনার কি দরকার? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে, আপনি ঈশ্বরের পবিত্র ব্যক্তি!” 35 যীশু তাকে ধমক দিয়ে বললেন, “চুপ করো! আর ওর মধ্য থেকে বার হয়ে যাও!” তখন সেই অশুচি আত্মা লোকটিকে সকলের মাঝখানে আছড়ে ফেলে দিয়ে তার কোন ক্ষতি না করে তার মধ্যে থেকে বার হয়ে গেল।
36 এই দেখে লোকেরা অবাক হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, “এর মানে কি? সম্পূর্ণ ক্ষমতা ও কর্ত্তৃত্বের সঙ্গে তিনি অশুচি আত্মাদের হুকুম করেন আর তারা বার হয়ে যায়।” 37 তাঁর বিষয়ে এই কথা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল।
যীশু এক স্ত্রীলোককে আরোগ্যদান করলেন
(মথি 8:14-17; মার্ক 1:29-34)
38 যীশু সমাজ-গৃহ থেকে বেরিয়ে শিমোনের বাড়িতে গেলেন। সেখানে শিমোনের শাশুড়ী খুব জ্বরে ভুগছিলেন, তাই তারা এসে তাঁকে অনুরোধ করল যেন তিনি তাঁকে সুস্থ করেন। 39 তখন যীশু তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে জ্বরকে ধমক দিলেন, এর ফলে জ্বর ছেড়ে গেল, আর তিনি তখনই উঠে তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করতে লাগলেন।
আরো বহু লোককে যীশু সুস্থ করলেন
40 সূর্য অস্ত যাবার সময় লোকরা তাদের বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের লোকজন, যারা নানা রোগে অসুস্থ ছিল তাদের যীশুর কাছে নিয়ে এল। যীশু তাদের প্রত্যেকের ওপরে হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন। 41 তাদের অনেকের মধ্যে থেকে ভূত বার হয়ে এল। তারা চিৎকার করে বলতে লাগল, “আপনি ঈশ্বরের পুত্র।” কিন্তু তিনি তাদের ধমক দিলেন, তাদের কথা বলতে দিলেন না, কারণ তারা জানত যে তিনিই সেই খ্রীষ্ট।
যীশু অন্যান্য শহরে গেলেন
(মার্ক 1:35-39)
42 ভোর হলে যীশু সেই জায়গা ছেড়ে এক নির্জন জায়গায় চলে গেলেন। কিন্তু বিরাট জনতা তাঁর খোঁজ করতে লাগল; আর তিনি যেখানে ছিলেন সেখানে এসে হাজির হল এবং তিনি যেন তাদের কাছ থেকে চলে না যান সেজন্য তাঁকে আটকাতে চেষ্টা করল। 43 কিন্তু তিনি তাদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যের এই সুসমাচার আমাকে অন্যান্য শহরেও বলতে হবে, কারণ এরই জন্য আমাকে পাঠানো হয়েছে।”
44 এরপর তিনি যিহূদিযার বিভিন্ন সমাজ-গৃহে প্রচার করতে লাগলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International