Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 বংশাবলি 7-8

ইষাখরের উত্তরপুরুষ

ইষাখরের চার পুত্রের নাম ছিল তোলয়, পূয়, যাশূব আর শিম্রোণ।

তোলয়়ের পুত্ররা সকলেই তাদের পরিবারের নেতা ছিলেন। এদের নাম: উষি, রফায়, যিরীয়েল, যহময়, যিব্সম আর শমূয়েল। এঁরা এবং এঁদের উত্তরপুরুষদের সকলেই ছিলেন বীর সৈনিক। দায়ূদের রাজত্বের সময় এদের পরিবারে 22,600 সৈনিক ছিল।

উষির পুত্রের নাম ছিল যিষ্রাহিয়। যিষ্রাহিয়ের পুত্ররা ছিল: মীখায়েল, ওবদিয়, যোয়েল ও যিশিয়। এঁরা পাঁচজনই ছিলেন তাঁদের পরিবারের নেতা। তাঁদের বংশতালিকা থেকে জানতে পারা যায়, এই পরিবারে 36,000 সৈনিক ছিলেন। বহু বিবাহের কারণে এদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা যথেষ্ট বেশি ছিল।

পারিবারিক ইতিহাস অনুযায়ী ইষাখরের পরিবারগোষ্ঠীতে সব মিলিয়ে 87,000 বীর সৈনিক জন্মেছিলেন।

বিন্যামীনের উত্তরপুরুষ

বেলা, বেখর ও যিদীয়েল নামে বিন্যামীনের তিন পুত্র ছিল।

ইষ্বোণ, উষি, উষীয়েল, যিরেমোৎ আর ঈরী নামে বেলার পাঁচ পুত্র ছিল। এদের পারিবারিক ইতিহাস অনুযায়ী এই পরিবারের মোট 22,034 জন সৈনিক ছিলেন।

বেখরের পুত্রেরা ছিল সমীরাঃ যোয়াশ, ইলীয়েষর, ইলিয়ো-ঐনয়, অম্রি, যিরেমোৎ, অবিয়, অনাথোৎ‌ আর আলেমৎ‌। তারা সকলেই বেখরের সন্তান। 20,200 জন বীর সৈনিক যাঁরা তাঁদের পরিবারের নেতা ছিলেন, তাঁদের নাম পারিবারিক ইতিহাসে তাঁদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে নথিবদ্ধ আছে।

10 যিদীয়েলের পুত্রের নাম বিল্হন। বিল্হনের পুত্রদের নাম ছিল: যিয়ূশ, বিন্যামীন, এহূদ, কনানা, সেথন, তর্শীশ আর অহীশহর। 11 যিদীয়েলের পুত্ররা সকলেই তাদের পরিবারের নেতা ছিলেন এবং এই বংশে মোট সৈনিকের সংখ্যা ছিল 17,200 জন।

12 শুপপীম আর হুপপীম দুজনেই ছিলেন ঈরের উত্তরপুরুষ। অহেরের পুত্রের নাম ছিল হূশীম।

নপ্তালির উত্তরপুরুষ

13 নপ্তালির পুত্রদের নাম ছিল যহসিয়েল, গূনি, যেৎ‌সর আর শল্লূম।

আর এরা সকলেই বিল্হারের উত্তরপুরুষ ছিলেন।

মনঃশির উত্তরপুরুষ

14 মনঃশির পরিবারের বিবরণ নিম্নরূপ:

মনঃশির অরামীয়া উপপত্নীর অস্রীয়েল নামে এক পুত্র ছিল। তাঁর গর্ভে গিলিয়দের পিতা মাখীরেরও জন্ম হয়। 15 মাখীর হুপ্পীম আর শুপ্পীমের পরিবারের একজনকে বিয়ে করেছিলেন। মাখীরের বোনের নাম দেওয়া হয়েছিল মাখা। দ্বিতীয় পুত্রের নাম সলফাদ। তার শুধু কয়েকটি কন্যা সন্তান ছিল। 16 মাখীরের স্ত্রী মাখা একটি পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন এবং তার নাম রেখেছিলেন পেরশ। পেরশের ভাইয়ের নাম ছিল শেরশ। শেরশের পুত্রদের নাম ছিল ঊলম ও রেকম।

17 ঊলমের পুত্রের নাম বদান।

গিলিয়দের উত্তরপুরুষ নিম্নরূপ: গিলিয়দ ছিলেন মাখীরের পুত্র, মাখীর মনঃশির পুত্র। 18 মাখীরের বোন হম্মোলেকতের পুত্র ছিল ঈশ্হোদ, অবীয়েষর আর মহলা।

19 শমীদার পুত্রদের নাম ছিল অহিয়ন, শেখম, লিক্হি ও অনীয়াম।

ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষ

20 ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষ নিম্নরূপ: ইফ্রয়িমের পুত্রের নাম ছিল শূথেলহ, শূথেলহের পুত্র বেরদ, বেরদের পুত্র তহৎ, 21 তহতের পুত্র ইলিয়াদা, ইলিয়াদার পুত্র তহৎ, তহতের পুত্র সাবদ আর সাবদের পুত্রের নাম ছিল শূথেলহ।

গাত শহরের কিছু বাসিন্দা এৎ‌সর ও ইলিযদকে হত্যা করে কারণ তাঁরা দুজন এই শহর থেকে গবাদি পশু আর মেষ চুরি করার চেষ্টা করেছিলেন। 22 এদের দুজনের পিতা ইফ্রয়িম পুত্রদের মৃত্যুশোকে অনেকদিন কান্নাকাটি করেছিলেন। তারপর তাঁর পরিবারের লোকরা এসে তাঁকে সান্ত্বনা দিলে 23 তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আবার মিলিত হলেন এবং তাঁর স্ত্রীর গর্ভে একটি পুত্র জন্মালে ইফ্রয়িম সেই পুত্রের নাম দিলেন বরীয়, কারণ এই পরিবারে একটি দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। 24 ইফ্রয়িমের কন্যার নাম ছিল শীরা। তিনি উর্দ্ধ ও নিম্ন বৈৎ‌-হোরোণ এবং উষেণ শীরা পত্তন করেছিলেন।

25 ইফ্রয়িমের আর এক পুত্রের নাম ছিল রেফহ। রেফহের পুত্রের নাম রেশফ, রেশফের পুত্রের নাম তেলহ, তেলহের পুত্রের নাম তহন, 26 তহনের পুত্রের নাম লাদন, লাদনের পুত্রের নাম অম্মীহূদ, অম্মীহূদের পুত্রের নাম ইলীশামা, 27 ইলীশামার পুত্রের নাম নূন আর নূনের পুত্রের নাম ছিল যিহোশূয়।

28 ইফ্রয়িমের উত্তরপুরুষরা বৈথেল ও তার আশেপাশের গ্রামগুলোয়, পূর্বদিকে নারণ, পশ্চিমে গেষর ও তার চারপাশের শহরে, শিখিম এবং এর আশেপাশের গ্রামগুলিতে আয়া এবং এর গ্রামগুলির অঞ্চলে পর্যন্ত বাস করত। 29 মনঃশিদের জমির সীমান্ত বরাবর ছিল বৈৎ‌শান, তানক, মগিদ্দো, দোর এবং তাদের গ্রামগুলি। ইস্রায়েলের পুত্র যোষেফের উত্তরপুরুষরা এই সমস্ত শহরে থাকতেন।

আশেরের উত্তরপুরুষ

30 আশেরের পুত্রদের নাম ছিল যিম্ন যিশ্বাঃ, যিশ্বী আর বরীয়। এদের বোনের নাম সেরহ।

31 বরীয়র পুত্রদের নাম হেবর আর মল্কীয়েল। মল্কীয়েলের পুত্রের নাম বির্ষোত।

32 হেবরের পুত্রদের নাম যফ্লেট, শোমের আর হোথম। এঁদের বোনের নাম শূয়া।

33 যফ্লেটের পুত্রদের নাম ছিল: পাসক, বিম্হল আর অশ্বৎ।

34 শেমরের পুত্রদের নাম ছিল: অহি, রোগহ, যিহুব্ব আর অরাম।

35 শেমরের ভাই হেলমের পুত্রদের নাম ছিল: শোফহ, যিম্ন শেলশ আর আমল।

36 সোফহর পুত্রদের নাম: সূহ, হর্ণেফর, শূয়াল, বেরী, যিম্র, 37 বেৎ‌সর, হোদ, শম্ম, শিল্শ, যিত্রণ আর বেরা।

38 যেথরের পুত্রদের নাম: যিফুন্নি, পিস্প আর অরা।

39 উল্লের পুত্রদের নাম: আরহ, হন্নীয়েল আর রিৎসিয়।

40 আশেরের এই সমস্ত উত্তরপুরুষরা ছিলেন বীর যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের নেতা এবং শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। এঁদের পরিবারের মোট যোদ্ধার সংখ্যা ছিল 26,000 জন।

রাজা শৌলের পারিবারিক ইতিহাস

1-2 বিন্যামীনের প্রথম পুত্র বেলা, দ্বিতীয় পুত্র অস্বেল, তৃতীয় পুত্র অহর্হ, চতুর্থ পুত্র নোহা আর পঞ্চম পুত্র রাফা।

3-5 বেলার পুত্রদের নাম: অদ্দর, গেরা, অবীহূদ, অবীশূয়, নামান, আহোহ, গেরা, শফূফন আর হূরম।

6-7 নামান, অহিয় আর গেরা ছিলেন এহুদের উত্তরপুরুষ। এঁরা সকলেই গেবায় নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন। উষঃ ও অহীহূদের পিতা গেরা এঁদের বাড়ি ছেড়ে মানহতে উঠে যেতে বাধ্য করেছিলেন।

শহরযয়িম মোয়াব অঞ্চলে তাঁর স্ত্রী হূশীম ও বারাক উভয়কেই বিদায় দিয়ে আর একটি বিবাহ করেন এবং সেই বিবাহের ফলস্বরূপ কয়েকটি সন্তান হয়। 9-10 স্ত্রী হোদশের মাধ্যমে যোবব, সিবিয়, মেশা, মল্কম, যিয়ূশ, শখিয় আর মির্ম নামে তাঁর সাত পুত্র হয়। এঁরাও সকলে নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন। 11 শহরয়িম আর তাঁর স্ত্রী হূশীমেরও অহীটূব আর ইল্পাল নামে দুই পুত্র ছিল।

12-13 ইল্পালের পুত্রদের নাম ছিল এবর, মিশিয়ম, শেমদ, বরীয় আর শেমা। শেমদ, ওনো এবং লোদের শহরগুলি ও তার পার্শ্ববর্তী নগরগুলি গড়ে তুলেছিলেন। বরীয় আর শেমা অয়ালোনে বসবাসকারী পরিবারগুলোর নেতা ছিলেন এবং গাতে যাঁরা বাস করতেন তাঁদের তাঁরা উঠে যেতে বাধ্য করেছিলেন।

14 বরীয়র পুত্রদের নাম ছিল শাশক, যিরেমোৎ, 15 সবদিয়, অরাদ, এদর, 16 মীখায়েল, যিশ্পা আর যোহ। 17 ইল্পালের পুত্রদের নাম সবদিয়, মশুল্লম, হিষ্কি, হেবর, 18 যিশ্মরয়, যিষ্লিয় আর যোবব।

19 শিমিয়ির পুত্রদের নাম ছিল যাকীম, সিখ্রি, সব্দি, 20 ইলীয়ৈনয়, সিল্লথয়, ইলীয়েল, 21 অদায়া, বরায়া আর শিম্রত্‌।

22 শাশকের পুত্রদের নাম ছিল: যিশ্পন, এবর, ইলীয়েল, 23 অব্দোন, সিখ্রি, হানন, 24 হনানিয়, এলম, অন্তোথিয়, 25 যিফদিয় আর পনূয়েল।

26 যিরোহমের পুত্রদের নাম শিম্শরয়, শহরিয়, অথলিয়, 27 যারিশিয়, এলিয় আর সিখ্রি।

28 এঁরা সকলেই জেরুশালেমে বাস করতেন এবং নিজেদের পরিবারের নেতা ছিলেন। একথা এঁদের পারিবারিক ইতিহাসে লেখা আছে।

29 যিয়ীয়েল ছিলেন গিবিয়োনের পিতা। তিনি গিবিয়োনে থাকতেন। তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল মাখা। 30 যিয়ীয়েলের পুত্রদের নাম হল জ্যেষ্ঠ অব্দোন এবং তারপর যথাক্রমে সূর, কীশ, বাল, নের, নাদব, 31 গদোর, অহিয়ো, সখর আর মিক্লোত। 32 মিক্লোতের পুত্রের নাম শিমিয়। এঁরা সকলে জেরুশালেমে তাঁদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছাকাছি বাস করতেন।

33 নেরের[a] পুত্রের নাম ছিল কীশ। কীশের পুত্র ছিল শৌল আর শৌলের পুত্রদের নাম ছিল: যোনাথন, মল্কীশূয়, অবীনাদব ও ইশ্বাল।

34 যোনাথনের পুত্রের নাম: মরীব্-বাল আর মরীব্-বালের পুত্রের নাম ছিল মীখা।

35 মীখার পুত্রদের নাম ছিল: পিথোন, মেলক, তরেয় আর আহস।

36 আহসের পুত্রের নাম যিহোয়াদা, যিহোয়াদার পুত্রদের নাম আলেমৎ‌, অস্মাবৎ আর সিম্রি। সিম্রির পুত্রের নাম মোৎসা, 37 মোৎসার পুত্রের নাম ছিল বিনিয়া, বিনিয়ার পুত্রের নাম রফায়, রফায়ের পুত্র ছিল ইলীয়াসা আর ইলীয়াসার পুত্র ছিল আৎসেল।

38 আৎসেলের ছয় পুত্রের নাম: অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিয়রিয়, ওবদিয় আর হানান।

39 আৎসেলের ভাই এশকের পুত্রদের নাম ছিল: জ্যেষ্ঠ ঊলম, দ্বিতীয় যিয়ূশ আর তৃতীয় পুত্র এলীফেলট। 40 ঊলমের পুত্ররা সকলেই ছিল বীর সৈনিক, তীর ধনুক চালাতে পারদর্শী। এদের সকলেরই অনেক অনেক পুত্র ও পৌত্র ছিল। সব মিলিয়ে মোট 150 জন পুত্র ও পৌত্র ছিল।

এঁরা সকলেই বিন্যামীনের উত্তরপুরুষ।

ইব্রীয় 11

বিশ্বাস

11 বিশ্বাসের অর্থ হল আমরা যা প্রত্যাশা করি তা যে আমরা পাবই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার ও বাস্তবে যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রমাণ পাওয়া। অতীতে ঈশ্বরের লোকেরা তাঁদের বিশ্বাসের দরুণই সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন।

বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি যে বিশ্ব ভুমণ্ডল ঈশ্বরের মুখের কথাতেই সৃষ্ট হয়েছিল, তাই চোখে যা দেখা যায় সেই দৃশ্য কোন কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে উৎপন্ন হয় নি।

কয়িন ও হেবল উভয়েই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান উৎসর্গ করেছিলেন; কিন্তু হেবল উত্তম বলে ঈশ্বরের কাছে গ্রাহ্য হয়েছিলেন কারণ হেবলের বলিদান বিশ্বাসযুক্ত ছিল। ঈশ্বর বলেছিলেন যে হেবল যা উপহার দিয়েছিল তাতে তিনি প্রীত হয়েছিলেন। ঈশ্বর হেবলকে একজন ধার্মিক লোক বললেন, কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। যদিও হেবল মৃত কিন্তু তাঁর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি এখনও কথা বলছেন।

হনোককে পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তিনি মরেন নি। এই পৃথিবী থেকে হনোককে তুলে নেবার পূর্বে হনোক এই সাক্ষী রেখে যান যে তিনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছিলেন। পরে লোকরা হনোকের খোঁজ আর পেলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে কাছে রাখার জন্য নিজেই হনোককে তুলে নিয়েছিলেন। হনোকের জীবনে বিশ্বাস ছিল বলেই এমনটি সম্ভব হয়েছিল। বিনা বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় না। যে কেউ ঈশ্বরের কাছে আসে তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে ঈশ্বর আছেন; আর যাঁরা তাঁর অন্বেষণ করে, তাদের তিনি পুরস্কার দিয়ে থাকেন।

বিশ্বাসেই নোহ, যা যা কখনও দেখা যায় নি এমন সব বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হলে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে নিলেন এবং নোহ তাঁর পরিবারের রক্ষার জন্য এক জাহাজ নির্মাণ করলেন। এর দ্বারা তিনি (অবিশ্বাসী) জগতকে দোষী প্রতিপন্ন করলেন, আর বিশ্বাসের মাধ্যমে যে ধার্মিকতা লাভ হয় তার অধিকারী হলেন।

ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল বলেই ঈশ্বর যখন অব্রাহামকে আহ্বান করলেন, তিনি তাঁর বাধ্য হলেন, আর তাঁকে যে দেশ দেবেন বলে ঈশ্বর বলেছিলেন তা অধিকার করতে চললেন। তিনি কোথায় চলেছেন তা না জানলেও তিনি রওনা হলেন। তাঁর বিশ্বাসের বলেই তিনি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত সেই দেশে আগন্তুকের মতো জীবনযাপন করলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি তা করতে পেরেছিলেন। সেই প্রতিশ্রুত দেশে ইস‌্হাক ও যাকোবের সাথে তিনি তাঁবুতে বাস করেছিলেন, যাঁরা তাঁর মতোই (একই প্রতিশ্রুতির) উত্তরাধিকারী ছিলেন। 10 কারণ অব্রাহাম সেই দৃঢ় ভিত্তিযুক্ত নগরের প্রতীক্ষায় ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর যার স্থপতি ও নির্মাতা।

11 অব্রাহাম বয়োবৃদ্ধ হয়েছিলেন তাই তাঁর সন্তান হওয়ার সম্ভব ছিল না। তাঁর স্ত্রী সারা বন্ধ্যা ছিলেন। কিন্তু ঈশ্বরের ওপর অব্রাহামের বিশ্বাস ছিল, তাই ঈশ্বর শক্তি দিলেন যেন তাঁদের সন্তানলাভ হয়। ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা যে তিনি পূর্ণ করতে পারেন এ বিশ্বাস অব্রাহামের ছিল। তিনি প্রায় মৃতকল্প ছিলেন; কিন্তু এই একটি লোকের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল আকাশের তারার মতো অজস্র বংশধর। 12 সেই এক ব্যক্তি থেকে সমুদ্র সৈকতে বালুকণার মতো অগনিত বংশধররা এলো।

13 এইসব মহান ব্যক্তিরা বিশ্বাস নিয়েই মারা গেলেন। ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাঁরা কেউই বাস্তবে তা পান নি, কিন্তু দূর থেকে তা দেখেছিলেন ও তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাঁরা খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন যে এই পৃথিবীতে তাঁরা প্রবাসী ও বিদেশী। 14 কারণ যে সব লোক এরকম কথা বলেন, তাঁরা যে নিজের দেশে ফেরার আশায় আছেন তা স্পষ্ট করেই ব্যক্ত করেন। 15 যে দেশ থেকে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন, সেই দেশের কথা যদি মনে রাখতেন, তবে ইচ্ছা করলে সেখানে ফিরে যেতে পারতেন। 16 কিন্তু এখন তাঁরা তার থেকে আরো ভাল দেশে, সেই স্বর্গীয় দেশে, যাবার আকাঙ্খা করছিলেন। এইজন্য ঈশ্বর নিজেকে তাঁদের ঈশ্বর বলে পরিচয় দিতে লজ্জা পান না, কারণ তিনি তাঁদের জন্য এক নগর প্রস্তুত করেছেন।

17-18 ঈশ্বর যখন অব্রাহামের বিশ্বাসের পরীক্ষা করছিলেন, অব্রাহাম তার কিছু পূর্বেই ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি পান তবু তিনি তাঁর পুত্র ইস‌্হাককে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে নিয়ে গিয়েছিলেন। অব্রাহাম ঈশ্বরের নির্দেশ পালন করেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। ঈশ্বর অব্রাহামকে পূর্বেই বলে রেখেছিলেন, “ইস‌্হাকের মাধ্যমেই তোমার বংশধররা দেখা দেবে।”(A) 19 অব্রাহাম বিশ্বাস করলেন যে ঈশ্বর মৃত্যুর মধ্য হতেও মানুষকে উত্থিত করতে সমর্থ। বাস্তবে তাই হল, ঈশ্বর অব্রাহামকে তাঁর পুত্রকে বলি দেওয়া থেকে বিরত করলেন। ফলে অব্রাহাম ইস‌্হাককে যেন মৃত্যুর মধ্য থেকেই ফিরে পেলেন।

20 সেই বিশ্বাসের বলেই ইস‌্হাক ভবিষ্যতের বিষয় চিন্তা করে এষৌ ও যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। 21 যাকোব বৃদ্ধ বয়সে মারা যাবার সময় বিশ্বাসের শক্তিতে যোষেফের ছেলেদের প্রত্যেককে আশীর্বাদ করেছিলেন। তিনি লাঠির উপর ভর দিয়ে উঠে ঈশ্বরের উপাসনা করেছিলেন। যাকোবের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি এইসব করেছিলেন।

22 বিশ্বাসের বলেই যোষেফ মৃত্যুশয্যায় বলেছিলেন যে ইস্রায়েলীয়রা মিশর দেশ ছেড়ে একদিন চলে যাবে। তাই তিনি তাঁর দেহাবশেষ নিয়ে কি করতে হবে তার নির্দেশ দিতে পেরেছিলেন। যোষেফের বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি ঐ কথা বলে গিয়েছিলেন।

23 মোশির জন্মের পর তাঁর মা-বাবা তিন মাস পর্যন্ত তাঁকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল বলেই তাঁরা তা করেছিলেন। তাঁরা দেখলেন মোশি খুব সুন্দর এক শিশু, আর তাঁরা রাজার আদেশ অমান্য করতে ভয় পেলেন না।

24 মোশি বড় হয়ে উঠলেন ও পূর্ণ বয়স্ক মানুষে পরিণত হলেন। মোশি ফরৌণের মেয়ের পুত্র বলে পরিচিত হতে চাইলেন না। মোশি পাপের সুখভোগ করতে চাইলেন না, কারণ সে সব সুখভোগ ছিল ক্ষণিকের। 25 কিন্তু মোশি ঈশ্বরের লোকদের সঙ্গে দুঃখভোগ করাকেই বেছে নিলেন। মোশি তা করতে পেরেছিলেন কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। 26 মিশরের সমস্ত ঐশ্বর্য অপেক্ষা খ্রীষ্টের জন্য বিদ্রূপ সহ্য করাকেই শ্রেয় মনে করলেন। ঈশ্বরের কাছ থেকে পুরস্কার লাভের আশায় মোশি তা করতে পেরেছিলেন।

27 মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি মিশর ত্যাগ করলেন। তিনি রাজার ক্রোধকে ভয় করলেন না। মোশি সুস্থির থাকলেন কারণ তিনি সেই ঈশ্বরের দিকে দৃষ্টি রাখলেন যাঁকে কেউ দেখতে পায় না। 28 মোশি নিস্তারপর্ব পালন করে গৃহের দরজায় রক্ত লেপে দিলেন। দরজায় এইভাবে রক্ত লেপন করা হল যেন সংহারকর্তা ইস্রায়েলীয়দের প্রথম পুত্র সন্তানদের স্পর্শ করতে না পারে। মোশির বিশ্বাস ছিল তাই তিনি এসব করতে পেরেছিলেন।

29 যে লোকদের মোশি নিয়ে চলেছিলেন তারা শুকনো জমির ওপর দিয়ে যাওয়ার মতো লোহিত সাগর হেঁটে পার হয়ে গেল। তাদের বিশ্বাস ছিল বলেই তারা তা করতে পেরেছিল। মিশরীয়রাও লোহিত সাগরের মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা সবাই মারা পড়ল।

30 ঈশ্বরের লোকদের বিশ্বাসের জন্যই যিরীহোর প্রাচীর ভেঙে পড়ল। লোকরা প্রাচীরের চারপাশে সাতদিন ধরে ঘুরলো আর তার পরেই সেই প্রাচীর ভেঙ্গে পড়ল।

31 বিশ্বাসে বেশ্যা রাহব, ইস্রায়েলীয় গুপ্তচরদের সাদরে গ্রহণ করে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করায় নগর ধ্বংস হবার সময় ঈশ্বরের অবাধ্য লোকদের সঙ্গে সে বিনষ্ট হল না।

32 তোমাদের কাছে কি আমি আরো দৃষ্টান্ত তুলে ধরব? আমার যথেষ্ট সময় নেই যে আমি তোমাদের কাছে গিদিয়োন, বারক, শিম্‌শোন, যিপ্তহ, দায়ূদ, শমূয়েল ও ভাববাদীদের সব কথা বলি। ওঁদের প্রচণ্ড বিশ্বাস ছিল। 33 তাঁরা বিশ্বাসের দ্বারা রাজ্যসকল জয় করেছিলেন। তাঁরা যা ন্যায় তাই করলেন এবং ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতিগুলি পেলেন। তাঁরা সিংহদের মুখ বন্ধ করেছিলেন। 34 কেউ কেউ আগুনের তেজ নিস্প্রভ করলেন, তরবারির আঘাতে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেলেন। এঁদের বিশ্বাস ছিল তাই এঁরা এসব করতে পেরেছিলেন। বিশ্বাসের বলেই দুর্বল লোকেরা বলশালী লোকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন; তাঁরা যুদ্ধের সময় মহাবিক্রমী হয়ে শত্রু সৈন্যদের পরাস্ত করেছিলেন। 35 কোন কোন লোক মৃতদের মধ্য থেকে পুনর্জীবিত হলেন আর পরিবারের নারীরা তাঁদের স্বামীদের ফিরে পেলেন। আবার অনেকে ভয়ঙ্কর পীড়ন সহ্য করলেন তবু তার থেকে নিষ্কৃতি চাইলেন না। তাঁরা বিশ্বাসে এসব সহ্য করলেন যেন মহত্তর পুনরুত্থানের ভাগী হন। 36 কেউ কেউ বিদ্রূপ ও চাবুকের মার সহ্য করলেন, আবার অনেকে বেড়ি বাঁধা অবস্থায় কারাবাস করলেন। 37 কেউ বা মরলেন পাথরের আঘাতে, কাউকে বা করাত দিয়ে দুখণ্ড করা হল, কাউকে তরবারির আঘাতে মেরে ফেলা হল। কেউ কেউ নিঃস্ব অবস্থায় মেষ ও ছাগের চামড়া পরে ঘুরে বেড়াতেন, নির্যাতিত হতেন এবং খারাপ ব্যবহার পেতেন। 38 জগতটা এই ধরণের লোকের যোগ্য ছিল না। এঁরা গুহায় ও মাটির গর্তে আশ্রয় নিয়ে মরুভূমি ও পর্বতে ঘুরে বেড়াতেন।

39 বিশ্বাসের জন্য এঁদের সুখ্যাতি করা হল, কিন্তু তাঁরা কেউ ঈশ্বরের সেই মহান প্রতিশ্রুতি পান নি। 40 ঈশ্বর আমাদের জন্য মহত্তর কিছু করতে চেয়েছিলেন, যাতে তাঁরা আমাদের সাথে মিলিত হয়ে পরিপূর্ণ হতে পারেন।

আমোষ 5

ইস্রায়েলের জন্য দুঃখের গান

ইস্রায়েলবাসীরা, এই গানটি শোন। এই বিলাপের গানটি তোমাদেরই জন্য।

ইস্রায়েলের কুমারীত্ব নষ্ট হয়ে গেছে।
    সে আর উঠবে না।
সে একাকী নোংরার উপর পড়ে আছে।
    তাকে ওঠাবার জন্য কোন লোকই নেই।

প্রভু আমার, সদাপ্রভু এই কথাগুলো বলছেন:

“সৈন্যরা যারা 1000 লোককে নিয়ে শহর ত্যাগ করবে
    তারা শুধু 100 জন নিয়ে ফিরে আসবে।
100 জন নিয়ে যারা শহর ছেড়ে বাইরে যাচ্ছে,
    তারা কেবলমাত্র 10 জন লোক নিয়ে ফিরবে।”

ফিরে আসার জন্য প্রভু ইস্রায়েলকে উৎসাহিত করছেন

ইস্রায়েলবাসীকে[a] প্রভু এই কথাটি বলছেন:
“আমার অণ্বেষণ কর এবং জীবনে বাঁচ।
    কিন্তু বৈথেলের দিকে তাকিও না।
গিল‌্গলে যেও না।
    সীমান্ত পেরিও না এবং বের্-শেবাতে যেও না।
গিল‌্গলবাসীদের কয়েদী হিসাবে নিয়ে যাওয়া হবে
    এবং বৈথেল ধ্বংস হবে।
প্রভুর কাছে যাও এবং বেঁচে থাকো।
    যদি তোমরা প্রভুর কাছে না যাও, তবে যোষেফের বাড়ীতে আগুন লাগাতে শুরু করবে।
    সেই আগুন যোষেফের গৃহ ধ্বংস করবে এবং কোন মানুষই বৈথেলের সেই আগুন নেভাতে পারবে না।
7-9 সাহায্যের জন্য তোমাদের ঈশ্বরের কাছে যাওয়া উচিৎ‌।
    ঈশ্বর প্লিয়েডস এবং ওরিওনকে[b] সৃষ্টি করেছিলেন।
তিনি অন্ধকারকে ভোরের আলোতে পরিবর্তিত করেছেন।
    তিনি দিনকে অন্ধকারের রাত্রিতে পরিবর্তিত করেছেন।
তিনি সমুদ্রের জলকে আহবান করেছেন এবং পৃথিবীতে তাদের ঢেলে দিচ্ছেন।
    তাঁর নাম হচ্ছে যিহোবা (প্রভু)।
তিনিই সেই যিনি শক্তিশালী শহরে হিংসা বাড়ান।
    তিনিই সেই, যিনি একটা সুরক্ষিত শহরকে
    হিংসাত্মক অপরাধ দ্বারা ধ্বংস হতে দেন।”

ইস্রায়েলবাসীরা যে মন্দগুলো করেছে

তোমরা ধার্মিকতাকে বিষে পরিবর্তন কর
    এবং ন্যায় বিচারকে হত্যা করে তা ভূপতিত কর।
10 ভাববাদীরা জনসাধারণের কাছে যায়, এবং সাধারণ মানুষ যে খারাপ কাজ করছে তার বিরুদ্ধে কথা বলে।
    যে ভাববাদীরা ন্যায় এবং সহজ সত্য শেখায় লোকে তাদের ঘৃণা করে এবং লোকরা ঐ ভাববাদীদের ঘৃণা করে।
11 তোমরা গরীব লোকদের কাছ থেকে অন্যায় ভাবে কর নিচ্ছ।
    তোমরা তাদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ গম নিচ্ছ।
তোমরা পাথরের টুকরো দিয়ে শৌখিন বাড়ি বানাচ্ছ।
    কিন্তু তোমরা কখনই ওই বাড়িগুলোতে বাস করতে পারবে না।
তোমরা সুন্দর দ্রাক্ষাক্ষেত তৈরী করছো।
    কিন্তু তোমরা কখনই ঐ দ্রাক্ষাক্ষেত থেকে তৈরী পানীয় আস্বাদ করতে পারবে না।
12 কেন? কারণ, আমি তোমাদের বহু অপরাধের খবর জানি।
তোমাদের পাপ আচার খুবই খারাপ।
    যে সব মানুষ ভাল কাজ করছে তাদের তোমরা আঘাত করেছ।
    অপরাধ চাপা দেবার জন্য তোমরা অর্থ নিচ্ছ।
    তোমরা গরীব লোকদের তাদের মামলাগুলির সুবিচারের জন্য আদালতে আনার সুযোগ দাও না।
13 সেই সময়, বিজ্ঞ শিক্ষকরা নীরব হয়ে যাবেন।
    কেন? কারণ, সময়টা খারাপ।
14 তোমরা বলো যে, ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে আছেন।
    সে জন্যে ভাল কাজ কর, খারাপ কাজ নয়।
তাহলে তোমরা বাঁচবে
    এবং প্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সত্যিই তোমাদের সঙ্গে থাকবেন।
15 যা মন্দ তাকে ঘৃণা কর এবং যা ভাল তাকে ভালবাসো।
    আদালতে ন্যায্য বিচার ব্যবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে এসো।
হয়তো তাহলে প্রভু সর্বশক্তিমান
    যোষেফের পরিবারে যাঁরা বেঁচে আছেন তাঁদের প্রতি দয়াপরবশ হবেন।

বড় দুঃখের সময় আসছে

16 আমার সদাপ্রভু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বলেন,
“লোকে জনসাধারন্যে বিলাপ করবে।
    সাধারণ লোক রাস্তাঘাটে কাঁদবে।
    লোকে পেশাদারী বিলাপকারীদের ভাড়া করে আনবে।
17 দ্রাক্ষাক্ষেতে সাধারণ লোকরা চিৎকার করে কাঁদবে।
    কারণ আমি সে পথ দিয়ে যাবার সময়ে তোমাদের শাস্তি দেব।”
প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন।
18 তোমাদের মধ্যে কয়েক জন
    প্রভুর বিচারের বিশেষ দিনটি দেখতে চাইছো।
তোমরা কেন ঐ বিশেষ দিনটি দেখতে চাইছো?
    প্রভুর ঐ বিশেষ দিনটিতে অন্ধকারই নিয়ে আসবে, আলো নয়।
19 তোমরা এমন মানুষের মতো হবে যে সিংহের আক্রমণ থেকে পালাতে পারে
    কিন্তু ভাল্লুকের দ্বারা আক্রান্ত হয়!
তোমরা এমন একটি লোকের মত হবে
    যে নিরাপত্তার জন্য বাড়ীতে যায়
    অথচ দেওয়ালে হেলান দিলেই সাপ তাকে কামড়ায়!
20 প্রভুর বিশেষ দিনটি দুঃখের হবে, আনন্দের নয়!
    অন্ধকারের দিন হবে, আলোর নয়-তা নৈরাশ্যের দিন হবে, মিটমিটে আলোও সেখানে থাকবে না।

প্রভু ইস্রায়েলের উপাসনা প্রত্যাখান করছেন

21 “আমি তোমার ছুটির দিনগুলো ঘৃণা করি!
    আমি তাদের স্বীকার করবো না!
    আমি তোমাদের ধর্মীয় সভাগুলো উপভোগ করতে পারি না!
22 এমনকি আমাকে উৎসর্গ করার জন্য যদি হোমবলি উৎসর্গ এবং শস্যের উৎসর্গ দাও
    আমি সেগুলো গ্রহণ করব না!
এমনকি আমি স্থূলকায় পশুগুলোর দিকে তাকাবো না
    যা তুমি মঙ্গল নৈবেদ্যর জন্য উৎসর্গ কর।
23 তোমাদের চিৎকার করা গানগুলো এখান থেকে নিয়ে যাও।
    আমি তোমাদের বীণার সুরও শুনতে চাই না।
24 তোমাদের দেশের মধ্যে সর্বত্র সুবিচারের ধারা জলের মতোই সহজে বয়ে যেতে দাও।
    ধার্মিকতা স্রোতের মত বয়ে যাক যেটা কখনও শুকিয়ে যাবে না।
25 ইস্রায়েল, তোমরা 40 বছর ধরে
    আমার জন্য মরুভূমিতে উৎসর্গ এবং নৈবেদ্য দিয়েছিলে।
26 কিন্তু তোমরা তোমাদের রাজা সিক্কূৎ এবং কিয়ূনের[c] মূর্ত্তিও বহন করেছ।
    এবং তোমরা নিজেরা তোমাদের দেবতাদের জন্য তারা বানিয়েছিলে।
27 সে জন্য দম্মেশকের ওপারে বন্দী হিসাবে যেন তোমাদের নিয়ে যাওয়া হয় তার ব্যবস্থা করব।”
    প্রভু ঐ কথাগুলো বলেছিলেন।
    তাঁর নাম সর্বশক্তিমান ঈশ্বর!

লূক 1:1-38

যীশুর জীবন সম্পর্কে লূকের লেখা

মাননীয় থিয়ফিল,

আমাদের মধ্যে যে সব ঘটনা ঘটেছে সেগুলির বিবরণ লিপিবদ্ধ করার জন্য বহু ব্যক্তি চেষ্টা করেছেন। তাঁরা সেই একই বিষয় লিখেছেন, যা আমরা জেনেছি তাঁদের কাছ থেকে, যাঁরা প্রথম থেকে নিজেদের চোখে দেখেছেন এবং এই বার্তা ঘোষণা করেছেন। তাই আমার মনে হল যে যখন আমি সেই সব বিষয় প্রথম থেকে ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়েছি তখন তা সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখি। যার ফলে আপনি জানবেন, যে বিষয়গুলি আপনাকে জানানো হয়েছে সেগুলি সত্য।

সখরিয় ও ইলীশাবেৎ

যিহূদিয়ার রাজা হেরোদের সময়ে সখরিয় নামে একজন যাজক ছিলেন। ইনি ছিলেন অবিয়ের দলের[a] যাজকদের একজন। সখরিয়র স্ত্রী ইলীশাবেৎ ছিলেন হারোণের বংশধর। তাঁরা উভয়েই ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ধার্মিক ছিলেন। প্রভুর সমস্ত আদেশ ও বিধি-ব্যবস্থা তাঁরা নিখুঁতভাবে পালন করতেন। ইলীশাবেৎ বন্ধ্যা হওয়ার দরুন তাঁদের কোন সন্তান হয় নি। তাঁদের উভয়েরই অনেক বয়স হয়ে গিয়েছিল।

একবার তাঁর দলের যাজকদের ওপর দায়িত্বভার পড়েছিল, তখন সখরিয় যাজক হিসেবে মন্দিরে ঈশ্বরের সেবা করছিলেন। যাজকদের কার্য প্রণালী অনুযায়ী তাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছিল যেন তিনি মন্দিরের মধ্যে গিয়ে প্রভুর সামনে ধূপ জ্বালাতে পারেন। 10 ধূপ জ্বালাবার সময় বাইরে অনেক লোক জড় হয়ে প্রার্থনা করছিল।

11 এমন সময় প্রভুর এক স্বর্গদূত সখরিয়র সামনে উপস্থিত হয়ে ধূপবেদীর ডানদিকে দাঁড়ালেন। 12 সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে দেখে চমকে উঠলেন এবং খুব ভয় পেলেন। 13 কিন্তু স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “সখরিয় ভয় পেও না, কারণ তুমি যে প্রার্থনা করেছ, ঈশ্বর তা শুনেছেন। তোমার স্ত্রী ইলীশাবেতের একটি পুত্র সন্তান হবে, তুমি তার নাম রাখবে যোহন। 14 সে তোমার জীবনে আনন্দ ও সুখের কারণ হবে, তার জন্মের দরুণ আরো অনেকে আনন্দিত হবে। 15 কারণ প্রভুর দৃষ্টিতে যোহন হবে এক মহান ব্যক্তি। সে অবশ্যই দ্রাক্ষারস বা নেশার পানীয় গ্রহণ করবে না। জন্মের সময় থেকেই যোহন পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবে।

16 “ইস্রায়েলীয়দের অনেক লোককেই সে তাদের প্রভু ঈশ্বরের পথে ফেরাবে। 17 যোহন এলিয়ের[b] আত্মায় ও শক্তিতে প্রভুর আগে চলবে। সে পিতাদের মন তাদের সন্তানদের দিকে ফেরাবে, আর অধার্মিকদের মনের ভাব বদলে ধার্মিক লোকদের মনের ভাবের মতো করবে। প্রভুর জন্য সে এইভাবে লোকদের প্রস্তুত করবে।”

18 তখন সখরিয় সেই স্বর্গদূতকে বললেন, “আমি কিভাবে জানব যে সত্যিই এসব হবে? কারণ আমি তো বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আর আমার স্ত্রীরও অনেক বয়স হয়ে গেছে।”

19 এর উত্তরে স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “আমি গাব্রিয়েল, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি; আর তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য ও তোমাকে এই সুখবর দেবার জন্যই আমাকে পাঠানো হয়েছে। 20 কিন্তু জেনে রেখো! এইসব ঘটনা ঘটা পর্যন্ত তুমি বোবা হয়ে থাকবে, কথা বলতে পারবে না, কারণ তুমি আমার কথা বিশ্বাস করলে না, কিন্তু আমার এইসব কথা নিরুপিত সময়েই পূর্ণ হবে।”

21 এদিকে বাইরে লোকেরা সখরিয়র জন্য অপেক্ষা করছিল, তিনি এতক্ষণ পর্যন্ত মন্দিরের মধ্যে কি করছেন একথা ভেবে তারা অবাক হচ্ছিল। 22 পরে তিনি যখন বেরিয়ে এলেন, তখন লোকদের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন না, এতে লোকেরা বুঝতে পারল মন্দিরের মধ্যে তিনি নিশ্চয়ই কোন দর্শন পেয়েছেন। তিনি লোকদের ইশারায় তাঁর বক্তব্য বোঝাতে লাগলেন, কিন্তু কোনরকম কথা বলতে পারলেন না। 23 এরপর দৈনিক সেবাকার্য্যের শেষে তিনি তাঁর বাড়ি ফিরে গেলেন।

24 এর কিছুক্ষণ পরে তাঁর স্ত্রী ইলীশাবেৎ গর্ভবতী হলেন; আর পাঁচ মাস পর্যন্ত লোক সাক্ষাতে বার হলেন না। তিনি বলতেন, 25 “এখন প্রভুই এইভাবে আমায় সাহায্য করেছেন! সমাজে আমার যে লজ্জা ছিল, কৃপা করে এখন এইভাবে তিনি তা দূর করে দিলেন।”

কুমারী মরিয়ম

26-27 ইলীশাবেৎ যখন ছমাসের গর্ভবতী, তখন ঈশ্বর গাব্রিয়েল, স্বর্গদূতকে গালীলে নাসরৎ নগরে এক কুমারীর কাছে পাঠালেন। এই কুমারী ছিলেন যোষেফ নামে এক ব্যক্তির বাগদত্তা। যোষেফ ছিলেন রাজা দায়ূদের বংশধর, আর যে কুমারীর কাছে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল তাঁর নাম মরিয়ম। 28 গাব্রিয়েল মরিয়মের কাছে এসে বললেন, “তোমার মঙ্গল হোক্! প্রভু তোমার প্রতি মুখ তুলে চেয়েছেন, তিনি তোমার সঙ্গে আছেন।”

29 এই কথা শুনে মরিয়ম খুবই বিচলিত ও অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন, “এ কেমন শুভেচ্ছা?”

30 স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “মরিয়ম তুমি ভয় পেও না, কারণ ঈশ্বর তোমার ওপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। 31 শোন! তুমি গর্ভবতী হবে আর তোমার এক পুত্র সন্তান হবে। তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু। 32 তিনি হবেন মহান, তাঁকে পরমেশ্বরের পুত্র বলা হবে, আর প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতৃপুরুষ রাজা দায়ূদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন। 33 তিনি যাকোবের বংশের লোকদের ওপরে চিরকাল রাজত্ব করবেন, তাঁর রাজত্বের কখনও শেষ হবে না।”

34 তখন মরিয়ম স্বর্গদূতকে বললেন, “কেমন করে সম্ভব? কারণ আমি তো কুমারী!”

35 এর উত্তরে স্বর্গদূত বললেন, “পবিত্র আত্মা[c] তোমার ওপর অধিষ্ঠান করবেন আর পরমেশ্বরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে; তাই যে পবিত্র শিশুটি জন্মগ্রহণ করবে তাঁকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে। 36 আর শোন, তোমার আত্মীয়া ইলীশাবেৎ যদিও এখন অনেক বৃদ্ধা তবু সে গর্ভে পুত্রসন্তান ধারণ করছে। এই স্ত্রীলোকের বিষয়ে লোকে বলত যে তার কোন সন্তান হবে না, কিন্তু সে এখন ছমাসের গর্ভবতী। 37 কারণ ঈশ্বরের পক্ষে কোন কিছুই অসাধ্য নয়!”

38 মরিয়ম বললেন, “আমি প্রভুর দাসী। আপনি যা বলেছেন আমার জীবনে তাই হোক্!” এরপর স্বর্গদূত মরিয়মের কাছ থেকে চলে গেলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International