M’Cheyne Bible Reading Plan
লোকে বিধির কথা শুনল
23 রাজা যোশিয় যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত নেতাদের এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে নির্দেশ দিলেন। 2 তারপর তিনি প্রভুর মন্দিরে গেলেন। যিহূদা ও জেরুশালেমের সমস্ত লোক ও যাজকগণ, ভাববাদীগণ, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মহান ব্যক্তিও তাঁর সঙ্গে মন্দিরে গেল। তারপর তিনি প্রভুর মন্দিরে খুঁজে পাওয়া বিধিপুস্তকটি সবাইকে উচ্চস্বরে পড়ে শোনালেন।
3 স্তম্ভের পাশে দাঁড়িয়ে রাজা যোশিয় প্রভুর কাছে তাঁর সমস্ত বিধি ও নীতিগুলি মেনে চলবেন বলে প্রতিজ্ঞা করলেন। তিনি কায়মনোবাক্যে এই সমস্ত ও বিধিপুস্তকে যা কিছু বর্ণিত আছে তা পালনে প্রতিশ্রুত হলেন। সমস্ত লোক, রাজার প্রার্থনায় যে তাদেরও মত আছে তা দেখাতে উঠে দাঁড়ালো।
4 তারপর রাজা যোশিয়, প্রধান যাজক হিল্কিয়, অন্যান্য যাজকদের, মন্দিরের দাররক্ষী প্রভুর মন্দির থেকে বাল মূর্ত্তি, আশেরা ও নক্ষত্রদের পূজা ও আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত সমস্ত থালা ও অন্যান্য জিনিসপত্র বার করে আনতে নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি এইসব কিছু জেরুশালেমের বাইরে কিদ্রোণের উপত্যকায় নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে সেই ছাই বৈথেলে নিয়ে এলেন।
5 যিহূদার রাজারা হারোণের পরিবারের বাইরের কিছু কিছু সাধারণ লোককে যাজক হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। এইসব ভ্রান্ত যাজকরা জেরুশালেম ও যিহূদার সর্বত্র মূর্ত্তিদের জন্য বানানো উচ্চস্থানে বাল মূর্ত্তিকে, সূর্যকে, চাঁদকে, এবং নক্ষত্ররাজির উদ্দেশ্যে ধুপধূনো দিতো। যোশিয় এইসব আচার বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
6 তারপর প্রভুর মন্দির চত্বর থেকে আশেরার মূর্ত্তির জন্য পোঁতা সমস্ত খুঁটি উপড়ে তুলে শহরের বাইরে কিদ্রোণ উপত্যকায় নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে, সেই ছাই সাধারণ মানুষদের কবরে ছড়িয়ে দিলেন।
7 এরপর যোশিয় প্রভুর মন্দির চত্বরের ভেতরে বসবাসকারী পুরুষদেহ ব্যবসায়ীদের ঘরগুলো ভেঙে ফেললেন। গণিকারাও এইসব ঘরগুলো ব্যবহার করত এবং আশেরার মূর্ত্তির প্রতি তাদের আনুগত্য জানাতে ছোট ছোট ছাউনি টাঙাতো।
8-9 সে সময় যাজকরা যিহূদার বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে বসবাস করত এবং জেরুশালেমে প্রভুর মন্দিরের বেদীতে বলিদান না করে মূর্ত্তিসমূহের জন্য সর্বত্র বানানো উঁচু বেদীগুলোয় বলিদান করতো ও ধুপধূনো দিত। গেবা থেকে বের্শেবা পর্যন্ত সব জায়গাতেই এই বেদীগুলো ছিল। যাজকরা জেরুশালেমের মন্দিরে তাদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গার পরিবর্তে সাধারণ লোকদের সঙ্গে যেখানে খুশী বসে খামিরবিহীন রুটি খেত। যোশিয় সমস্ত যাজকদের জেরুশালেমে আসতে বাধ্য করে, সমস্ত উঁচু বেদী, নগরদ্বারের বাঁ পাশের যাবতীয় বেদী সবই ভেঙে দিয়েছিলেন।
10 হিন্নোম সোন উপত্যকার তোফতে মোলকের মূর্ত্তির উদ্দেশ্যে লোকরা বেদীতে নিজেদের ছেলেমেয়েকে আগুনে আহুতি দিত। যোশিয় এই পাপ আচরণ বন্ধ করার জন্য এই বেদী এমন ভাবে ভেঙে দিয়েছিলেন যাতে তা আর ব্যবহার করা না যায়। 11 যিহূদার আগের রাজারা প্রভুর মন্দিরের প্রবেশপথে নথন মোলক নামে এক গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারীর ঘরের পাশে সূর্য দেবতাকে সম্মান জানানোর জন্য একটা ঘোড়ায় টানা রথ তৈরী করে দিয়েছিলেন। যোশিয় সেই রথের ঘোড়াগুলো সরিয়ে রথটাকে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
12 আগেকার রাজারা আহসের বাড়ির ছাদে এবং মনঃশি প্রভুর মন্দিরের দুটো উঠোনেই মূর্ত্তিসমূহের পূজোর জন্য যে বেদীগুলো বানিয়েছিলেন, যোশিয় সেই সব বেদী টুকরো টুকরো করে ভেঙে, ভাঙা টুকরোগুলো কিদ্রোণ উপত্যকায় ফেলে দেন।
13 রাজা শলোমনও অতীতে জেরুশালেমের কাছে বিনাশ পাহাড়ের দক্ষিণে এই ধরণের কিছু উঁচু বেদী বানিয়েছিলেন, যেখানে সীদোনীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি অষ্টোরতের পূজার জন্য এইসব বেদী ব্যবহার করা হত। এছাড়াও মহারাজ শলোমন মোয়াবীয়দের কমোশ ও আমোনীয়দের মিল্কম প্রমুখ ঘৃণ্য মূর্ত্তির জন্য যে সমস্ত উঁচু বেদী বানিয়েছিলেন, যোশিয় সে সমস্তই ভেঙে দিয়েছিলেন। 14 তিনি যাবতীয় স্মৃতিফলক, আশেরার খুঁটি ভেঙে দিয়ে সে সব জায়গায় নরকঙ্কাল ছড়িয়ে দেন।
15 নবাটের পুত্র যারবিয়াম ইস্রায়েলকে পাপ আচরণের পথে ঠেলে দিয়েছিলেন। তিনি বৈথেলে যে উচ্চস্থান বানান যোশিয় তা ভেঙে ধূলোয় মিশিয়ে, আশেরার খুঁটিতে আগুন ধরিয়ে দিলেন। 16 যোশিয় পর্বতের আশেপাশে তাকিয়ে অনেক কবরখানা দেখতে পেলেন। লোক পাঠিয়ে সেখান থেকে মৃত মানুষের হাড় তুলিযে এনে, যোশিয় সেই সমস্ত হাড় যজ্ঞবেদীতে পুড়িয়ে, যজ্ঞবেদী অশুচি করে দেন। ভাববাদীদের মুখ দিয়ে প্রভু, যারবিয়াম যখন সেই বেদীর পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, তখনই এইসব ভবিষ্যৎবাণী করিয়েছিলেন।
যোশিয় চারপাশে তাকিয়ে সেই ভাববাদীদের সমাধিস্থল দেখতে পেলেন।
17 যোশিয় প্রশ্ন করলেন, “ওটা কিসের ফলক?”
শহরের লোকরা তাঁকে উত্তর দিলো, “এটা সেই যিহূদা থেকে আসা ভাববাদীর কবর। আপনি বৈথেলের বেদীতে যা করলেন তা তিনি বহু দিন আগেই ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন।”
18 যোশিয় তখন বললেন, “দেখো ওঁর কবরে যেন কোন রকম হাত না পড়ে। ওঁকে শান্তিতে থাকতে দাও।” তখন লোকরা শমরিয়ার সেই ভাববাদীর সমাধিস্থল যে ভাবে ছিল, সে ভাবেই অবিকৃত অবস্থায় রেখে দিল।
19 শমরিয়ায় শহরগুলোয় মূর্ত্তিসমূহের বেদীর আশেপাশে যে সমস্ত মন্দির গড়ে উঠেছিল যোশিয় সেগুলোও ভেঙে দিয়েছিলেন। ইস্রায়েলের আগেকার রাজারা এই সমস্ত মন্দির বানিয়ে প্রভুকে খুবই অসন্তুষ্ট করে তুলেছিলেন। যোশিয় এইসব মন্দিরের দশা বৈথেলের বেদীর মতোই করেছিলেন।
20 যোশিয় শমরিয়ার উচ্চস্থানের সমস্ত যাজকদেরই হত্যা করলেন। তিনি বেদীর ওপরে মানুষের অস্থি পোড়ালেন। এইভাবে তিনি পূজার জায়গা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।
যিহূদার লোকদের নিস্তারপর্ব উদ্যাপন
21 এরপর যোশিয় সমস্ত লোকদের নির্দেশ দিলেন, “বিধিপুস্তকে যেভাবে লেখা আছে, সেভাবে তোমরা প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের জন্য নিস্তারপর্ব উদ্যাপন কর।”
22 ইস্রায়েলে বিচারকদের শাসনকালের পর আর কেউ এভাবে নিস্তারপর্ব উদ্যাপন করেনি। ইস্রায়েল বা যিহূদার আর কোন রাজাই আগে কখনও এত সমারোহের সঙ্গে নিস্তারপর্ব পালন করেন নি। 23 যোশিয়র রাজত্বের 18তম বছরে লোকরা এই নিস্তারপর্ব পালন করেছিল।
24 যিহূদা ও জেরুশালেমে লোকরা প্রেতসাধনা, ডাকিনী-পিশাচ-তন্ত্রসাধনা, মূর্ত্তিপূজা প্রভৃতি যেসব ঘৃণ্য পাপ আচরণ করত, যাজক হিল্কিয়র খুঁজে পাওয়া বিধি অনুসারে যোশিয় এসবই সমূলে উৎপাটন করেন।
25 এর আগের আর কোন রাজাই যোশিয়র মত ছিলেন না। যোশিয় কায়মনোবাক্যে, সমস্ত হৃদয় ও শক্তি দিয়ে প্রভু ও মোশির বিধি অনুসরণ করে জীবনযাপন করেছিলেন। এখনো পর্যন্ত কোন রাজাই তাঁর মত শাসন করেন নি।
26 কিন্তু তবুও যিহূদার লোকদের ওপর থেকে প্রভুর রাগ পড়েনি। মনঃশির করা কার্যকলাপের জন্যই প্রভু তখনও তাদের ওপর রেগে ছিলেন। 27 প্রভু বলেছিলেন, “আমি ইস্রায়েলের লোকদের তাদের বাসভূমি ছাড়তে বাধ্য করেছিলাম। যিহূদার সঙ্গেও আমি তাই করব। যিহূদাকে আমার দুচোখের সামনে থেকে সরিয়ে দেব। এমনকি জেরুশালেমকেও আমি আর দেখতে চাই না। হ্যাঁ, যদিও আমি নিজেই ঐ শহর বেছে নিয়ে বলেছিলাম, ‘ওখানে আমার নাম থাকবে।’ কিন্তু আমি ঐ মন্দিরটিকেও ধ্বংস করে ফেলব।”
28 যোশিয় আর যা কিছু করেছিলেন, সে সবই যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
যোশিয়র মৃত্যু
29 যোশিয়র রাজত্বকালে মিশরের ফরৌণ-নখো ফরাৎ নদীর তীরে অশূর-রাজের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যান। যোশিয় মগিদ্দোতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে, দেখা হওয়া মাত্র ফরৌণ-নখো তাঁকে হত্যা করেন। 30 যোশিয়র পদস্থ আধিকারিকরা রথে করে তাঁর মৃতদেহ মগিদ্দো থেকে জেরুশালেমে নিয়ে এসে তাঁকে তাঁর পরিবারের সমাধিস্থলে সমাধি দিলেন।
এরপর লোকরা যোশিয়র পুত্র যিহোয়াহসকে নতুন রাজা হিসেবে অভিষেক করলেন।
যিহোয়াহস যিহূদার রাজা হলেন
31 যিহোয়াহস 23 বছর বয়সে রাজা হয়ে মাত্র তিন মাসের জন্য জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা ছিলেন লিব্নার যিরমিয়ের কন্যা হমূটল। 32 প্রভু যে সব কাজ করতে বারণ করেছিলেন, যিহোয়াহস সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন। তিনি তাঁর অধিকাংশ পূর্বপুরুষদের মতই পাপের পথ অনুসরণ করেন।
33 ফরৌণ-নখো, যিহোয়াহসকে হমাৎ দেশের রিব্লাতে জেলে আটক করেন, ফলত যিহোয়াহসের পক্ষে আর জেরুশালেমে রাজত্ব করা সম্ভব হয় নি। তাঁকে, ফরৌণ-নখো 7500 পাউণ্ড রূপো এবং 75 পাউণ্ড সোনা দিতে বাধ্য করেছিলেন।
34 ফরৌণ, যোশিয়র আরে এক পুত্র। ইলিয়াকীমকে নতুন রাজা বানিয়ে তাঁর নাম পাল্টে যিহোয়াকীম রাখেন। আর যিহোয়াহসকে তিনি মিশরে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। 35 যিহোয়াকীম ফরৌণকে সোনা ও রূপো দিলেন। কিন্তু তিনি সাধারণ লোককে ফরৌণ-নখোকে দেওয়ার জন্য দেশে কর ধার্য্য করলেন। তাই প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের সোনা ও রূপোর অংশ ফরৌণ-নখোকে দেওয়ার জন্য রাজা যিহোয়াকীমকে দিত।
36 যিহোয়াকীম 25 বছর বয়সে রাজা হয়ে এগারো বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা ছিলেন রূমার পদায়ের কন্যা সবীদা। 37 যিহোয়াকীমও প্রভু যে সমস্ত কাজ করতে বারণ করেন, তাঁর অধিকাংশ পূর্বপুরুষদের মত সেই সমস্ত কাজ করেছিলেন।
5 প্রত্যেক ইহুদী মহাযাজককে মানুষের ভেতর থেকে মনোনীত করা হয়। ঈশ্বর বিষয়ে লোকদের যা করণীয় সেই কাজে সাহায্য করার জন্য যাজককে নিয়োগ করা হয়। সেই যাজক লোকদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে উপহার ও বলি উৎসর্গ করেন। 2 অন্যান্য লোকদের মতো মহাযাজকও দুর্বল। তিনি অপর মানুষের অজ্ঞতা ও বিচ্যুতি থাকলেও তাদের সঙ্গে নরম ব্যবহার করতে সমর্থ যেহেতু তিনিও অন্যান্য লোকদের মতো নিজের দুর্বলতার দ্বারা বেষ্টিত। 3 মহাযাজক মানুষের পাপের জন্য যে বলি উৎসর্গ করেন তার সাথে নিজে দুর্বল বলে নিজের পাপের জন্যও তাকে বলি উৎসর্গ করতে হয়।
4 মহাযাজক হওয়া সম্মানের বিষয়, আর কেউই নিজের ইচ্ছানুসারে এই মহাযাজকের সম্মানজনক পদ নিতে পারে না। হারোণকে যেমন এই কাজের জন্য ঈশ্বর ডেকেছিলেন, তেমনি প্রত্যেক মহাযাজককে ঈশ্বরই ডাকেন। 5 কথাটা খ্রীষ্টের বেলায়ও প্রযোজ্য। খ্রীষ্ট মহাযাজক হয়ে গৌরব দেবার জন্য নিজেকে মনোনীত করেন নি। কিন্তু ঈশ্বরই খ্রীষ্টকে মনোনীত করেছেন। ঈশ্বর খ্রীষ্টকে বলেছিলেন,
“তুমি আমার পুত্র,
আজ আমি তোমার পিতা হলাম।”(A)
6 আর অন্য গীতে ঈশ্বর বললেন,
7 খ্রীষ্ট যখন এ জগতে ছিলেন তখন সাহায্যের জন্য তিনি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। ঈশ্বরই তাঁকে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে সমর্থ আর যীশু ঈশ্বরের নিকট প্রবল আর্তনাদ ও অশ্রুজলের সঙ্গে প্রার্থনা করেছিলেন। ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি তাঁর নম্রতা ও বাধ্যতার জন্য ঈশ্বর যীশুর প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন। 8 যীশু ঈশ্বরের পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দুঃখভোগ করেছিলেন ও দুঃখভোগের মধ্য দিয়ে বাধ্যতা শিখেছিলেন। 9 এইভাবে যীশু মহাযাজকরূপে পূর্ণতা লাভ করলেন; আর তাই তাঁর বাধ্য সকলের জন্য তিনি হলেন চিরকালের পরিত্রাণের পথ। 10 ঈশ্বর এইজন্যে তাঁকে মল্কীষেদকের মত মহাযাজক বলে ঘোষণা করলেন।
যীশুতে স্থির থাকতে অনুরোধ
11 এই বিষয়ে আমাদের অনেক কিছু বলার আছে; কিন্তু তোমাদের কাছে তার অর্থ ব্যাখ্যা করা কঠিন, কারণ তোমরা তা বুঝতে চেষ্টা করো না। 12 এতদিনে তোমাদের শিক্ষক হওয়া উচিত ছিল; কিন্তু এটা বোধ হয় প্রয়োজনীয় যে তোমাদের ঈশ্বরের বাণীর প্রাথমিক বিষয়গুলি কেউ শেখায়। কোন শক্ত খাবার নয়, তোমাদের প্রয়োজন দুধের। 13 যার দুধের প্রয়োজন সে তো শিশু। সেই ব্যক্তির ধার্মিকতার বিষয়ে যে শিক্ষা আছে সে সম্পর্কে কোন অভিজ্ঞতা নেই। 14 কিন্তু শক্ত খাবার তাদেরই জন্য যারা শিশুর মতো আচরণ করে না এবং আত্মায় পরিপক্ক। নিজেদের শিক্ষা দিয়ে ও তা অভ্যাস করে তারা ভাল মন্দের বিচার করতে শিখেছে।
প্রভুর আগমনের দিন
2 সিয়োনে শিঙা বাজাও।
আমার পবিত্র পর্বতে জোরে চিৎকার করো।
দেশের সমস্ত বাসিন্দারা
ভয়ে কেঁপে উঠুক।
কারণ প্রভুর দিন আসছে
এবং তা সন্নিকট।
2 সেটা এক অন্ধকার, বিষণ্ন দিন হবে।
এটা অন্ধকার এবং মেঘলা দিন হবে।
অন্ধকার যেভাবে পর্বতে ছেয়ে যায়
সেইভাবে বিশাল ও শক্তিশালী সৈন্য দেখা যাবে।
এর আগে কখনও এমন হয় নি।
আর এর পরেও এমন হবে না।
3 আগুন তাদের সামনে গ্রাস করবে
এবং অগ্নিশিখা তাদের পশ্চাতে জ্বলবে।
তাদের সামনের দেশ হবে
যেন এক এদোন উদ্যান।
কিন্তু তাদের পশ্চাতে দেশ
যেন শূন্য মরুভূমি।
কোন কিছুই তাদের এড়িয়ে যাবে না।
4 তাদের দেখতে ঘোড়ার মত।
আর যুদ্ধের ঘোড়ার মতো তারা দৌড়ায়।
5 ঐ শোন পর্বতের ওপর তাদের রথের শব্দ।
সেই শব্দ খড় জ্বালানো আগুনের শব্দের মতো
এবং একটি শক্তিশালী সৈন্য বাহিনীর মত
যারা যুদ্ধ করতে আসছে।
6 ঐ সৈন্যদলের সামনে লোকে ভয়ে কাঁপে।
তাদের মুখ ভয়ে বিবর্ণ হবে।
7 তারা দ্রুত দৌড়ায়
এবং যোদ্ধাদের মতো তারা প্রাচীরে চড়তে পটু।
তারা কুচকাওয়াজ করে সামনে এগিয়ে যায়।
তারা তাদের পথ থেকে সরে যায় না।
8 তারা একে অন্যের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে না।
প্রত্যেক সৈন্য তার নিজের পথে চলে।
এমনকি যদি একজন সৈন্য আহত হয়ে পড়ে
অন্যরা ঠিক ভাবেই কুচকাওয়াজ করে চলে।
9 তারা শহরের মধ্যে দৌড়ে যায়।
তারা দ্রুত প্রাচীরের উপর ওঠে।
ঘরের মধ্যে উঠে পড়ে।
জানালা দিয়ে চোরের মত ঢুকে পড়ে।
10 তাদের সামনে যেন পৃথিবী ও আকাশ কেঁপে ওঠে।
সূর্য ও চাঁদ অন্ধকার হয়ে যায় এবং তারারা উজ্জ্বলতা প্রকাশ বন্ধ করে।
11 প্রভু নিজে তাঁর সৈন্যদের চিৎকার করে ডাকছেন।
তাঁর শিবির খুব বড়।
সত্যি সেই সৈন্যরা তাঁর আদেশ মানে।
তারা খুবই শক্তিশালী।
প্রভুর দিন হবে সত্যি তীব্র ও ভয়ানক;
কে তা সহ্য করতে পারে?
পরিবর্তনের জন্য লোকদের কাছে প্রভুর আহবান
12 প্রভু বললেন,
“এখন তোমরা সর্বান্তঃকরণে আমার কাছে ফিরে এস।
উপবাস, রোদন ও বিলাপ করতে করতে এস!
13 আর তোমাদের হৃদয় ছিন্ন কর, তোমাদের বস্ত্র নয়।”
তোমাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছেই ফিরে এস।
কারণ তিনি কৃপাময়।
তিনি চট করে রেগে ওঠেন না।
তিনি মহা দয়াময়।
হয়তো তিনি যে অমঙ্গলের পরিকল্পনা করেছিলেন
সে বিষয়ে তাঁর মন পরিবর্তন করবেন।
14 কে জানে, প্রভু হয়তো তাঁর মন পরিবর্তন করতে পারেন।
এমনকি তিনি হয়তো তোমাদের জন্য পশ্চাতে আশীর্বাদ রেখেও যেতে পারেন।
তাহলে তোমরা প্রভু, তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে
বলি ও পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করতে সক্ষম হবে।
প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর
15 সিয়োনে শিঙা বাজাও।
উপবাসের দিন ঠিক কর।
বিশেষ সভার দিন ঘোষণা কর।
16 লোকদের একত্র কর।
বিশেষ সভা ডাক।
বয়স্ক লোকদের একত্র কর।
শিশু ও বাচ্চাদের একত্র কর।
বর ও কনেরা তাদের শয্যা ঘর
থেকে বেরিয়ে আসুক।
17 বারান্দা ও বেদীর মধ্যে
যাজকরা, প্রভুর দাসরা কাঁদুক।
তাদের সবাই বলুক:
“প্রভু তোমার লোকদের প্রতি কৃপা কর।
তোমার লোকদের লজ্জায় পড়তে দিও না।
অন্য দেশের লোকদের তোমার লোকদের নিয়ে ঠাট্টা করতে দিও না।
অন্য দেশের লোকদের হেসে বলতে দিও না,
‘ওদের ঈশ্বর কোথায়?’”
প্রভু আবার দেশ পুনঃস্থাপন করবেন
18 তখন প্রভু তাঁর দেশের জন্য ঈর্ষাকাতর হবেন
এবং তাঁর লোকদের দয়া করবেন।
19 তখন প্রভু তাঁর লোকদের সঙ্গে কথা বললেন,
এবং বললেন, “আমি তোমাদের কাছে শস্য দ্রাক্ষারস ও অলিভ তেল পাঠাবো
এবং তোমরা প্রচুর পাবে ও তাতে তোমরা সন্তুষ্ট হবে।
আমি আর অন্য দেশকে তোমাদের কখনও অপমান করতে দেব না।
20 আমি উত্তর দেশীয় লোকদের তোমাদের কাছ থেকে বহু দূরে পাঠাব
এবং আমি তাদের শুষ্ক ও ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে নির্বাসনে পাঠাব।
আমি তাদের কিছু লোককে পূর্বদিকের সমুদ্রে
এবং কিছু লোককে পশ্চিমের ভূমধ্যসাগরে পাঠাব।
তারা পচে যাবে
এবং তাদের পূর্ত্তিগন্ধ ওপরে উঠবে,
কারণ তারা অনেক ক্ষতি করেছে!”
ভূমিকে নবায়িত করা হবে
21 হে দেশ, ভয় কোরো না।
আনন্দ অনুষ্ঠান কর
কারণ প্রভু অনেক মহৎ কাজ করবেন।
22 মাঠের পশুরা ভয় পেয়ো না
কারণ প্রান্তরের ভূমিতে আবার ঘাস জন্মাবে।
গাছে আবার ফল ধরবে,
এবং ডুমুর ও দ্রাক্ষা গাছে আবার উত্তম ফল হবে।
23 সিয়োনের লোকরা তোমরা প্রভু ঈশ্বরেতে আনন্দ অনুষ্ঠান কর।
কারণ তিনি তাঁর উদারতার চিহ্ন হিসাবে বৃষ্টি বর্ষাবেন।
তা ছাড়াও তিনি আগের মতোই
তোমাদের আগে আগে বৃষ্টি ও শেষের দিকে বৃষ্টি দেবেন।
24 আর ঢেঁকির মেঝেগুলি শস্যে ভরে যাবে,
অলিভ তেলে ও দ্রাক্ষারসে পিপেগুলো ভরে উপচে পড়বে।
25 “আমি তোমাদের বিরুদ্ধে
যে সমস্ত ঝাঁকের পঙ্গপাল, লাফানে পঙ্গপাল,
ধ্বংসকারী পঙ্গপাল এবং কাটুরে পঙ্গপাল অর্থাৎ আমার মহা সৈন্যদের পাঠিয়েছিলাম
যারা সেই বছর তোমাদের শস্য ধ্বংস করেছে
তা আমি পরিশোধ করব।
26 তোমরা প্রচুর খাবার খেয়ে তৃপ্ত হবে
এবং প্রভু তোমাদের ঈশ্বরের নামের প্রশংসা করবে।
কারণ তিনি তোমাদের জন্য চমৎকার অলৌকিক কাজ করেছেন।
প্রভু বলেন, আমার লোকরা আর কখনও লজ্জিত হবে না।
27 আর তোমরা জানবে যে আমি (প্রভু) ইস্রায়েলের মধ্যে বাস করি।
আমিই তোমাদের প্রভু ও ঈশ্বর
আর কোন ঈশ্বর নেই।
আমার লোকরা আর কখনও লজ্জিত হবে না।”
ঈশ্বর সমস্ত লোকদের তাঁর আত্মা দেবেন
28 “এখন থেকে আমি আমার আত্মা সবার মধ্যে ঢেলে দেব।
এর ফলে তোমাদের ছেলেমেয়েরা ভাববাণী বলবে।
বয়স্ক লোকরা স্বপ্ন দেখবে
আর তোমাদের কনিষ্ঠরা দর্শন পাবে।
29 আর সেই সময় আমি এমনকি,
তোমাদের দাসদাসীদের ওপরও আমার আত্মা ঢেলে দেব।
30 আমি আকাশে ও পৃথিবীতে চিহ্ন দেখাব।
রক্ত, আগুন ও ধোঁয়ার স্তম্ভ দেখা যাবে।
31 সূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ রক্তের মত লাল হয়ে যাবে।
আর তারপর প্রভুর সেই মহান ও ভয়ঙ্কর দিন আসবে!
32 আর যারাই প্রভুর নাম ডাকে তারা রক্ষা পাবে।
কারণ প্রভুর বাক্যানুসারে ঐ সমস্ত লোক সিয়োন পর্বতে
ও জেরুশালেমে বেঁচে থাকবে।
হ্যাঁ, ঐ সমস্ত বেঁচে যাওয়া লোক, যাদের প্রভু ডেকেছেন তারাই ফিরে আসবে।
দায়ূদের একটি মস্কীল। যখন তিনি গুহায় ছিলেন সেই সময় থেকে একটি প্রার্থনা।
142 আমি সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকবো।
আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবো।
2 আমি প্রভুকে আমার সব সংকটের কথা বলবো।
আমি প্রভুকে আমার অসুবিধার কথা বলবো।
3 আমার শত্রুরা আমার জন্য একটা ফাঁদ পেতেছে।
আমি সমর্পণ করতে প্রস্তুত।
কিন্তু প্রভু জানেন আমার মধ্যে কি হচ্ছে।
4 আমি চারদিকে দেখি,
কিন্তু আমি আমার কোন বন্ধু দেখি না।
আমার পালানোর কোন জায়গা নেই।
কেউ আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে না।
5 তাই আমি প্রভুর কাছে উচ্চস্বরে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলাম।
“প্রভু, আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
প্রভু আপনিই আমায় বাঁচতে দিতে পারেন।”
6 হে প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন
কারণ আমি অসহায়।
যারা আমায় তাড়া করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
ওই লোকগুলো আমার পক্ষে প্রচণ্ড শক্তিশালী।
7 আমাকে এই ফাঁদ এড়িয়ে যেতে সাহায্য করুন
যাতে আমি আপনার নামের প্রশংসা করতে পারি।
এবং ভালো লোকরা এসে আমার সঙ্গে উদ্যাপন করবে,
কারণ আপনি আমায় প্রযত্নে রেখেছিলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International