M’Cheyne Bible Reading Plan
যিহূদায় রাজপুত্রদের হত্যা করলেন অথলিয়া
11 অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখলেন তাঁর পুত্র মারা গিয়েছে, তিনি তখন উঠে রাজ পরিবারের সবাইকে হত্যা করলেন।
2 যিহোশেবা ছিলেন রাজা যোরামের কন্যা, অহসিয়ের বোন। তিনি যখন দেখলেন সমস্ত রাজপুত্রদের হত্যা করা হচ্ছে, তখন অহসিয়ের এক পুত্র যোয়াশকে নিয়ে একটা শয়ন ঘরে একজন পরিষেবিকার সঙ্গে তাকে লুকিয়ে রাখলেন। অতএব তাঁরা যোয়াশকে অথলিয়ার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখলেন এবং এইভাবে সে নিহত হল না।
3 এরপর অথলিয়া যিহূদায় ছ’বছর রাজত্ব করেন। সে সময় যোয়াশকে নিয়ে যিহোশেবা প্রভুর মন্দিরে লুকিয়ে থাকেন।
4 সপ্তম বছরে প্রভুর মন্দিরের মহাযাজক যিহোয়াদা রাজার বিশেষ দেহরক্ষীদের প্রধান ও প্রধান সেনাপতিকে এক সঙ্গে মন্দিরে ডেকে পাঠালেন। তারপর প্রভুর সামনে গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিশ্রুতি করিয়ে যিহোয়াদা তাঁদের রাজপুত্র যোয়াশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করালেন।
5 অতঃপর যিহোয়াদা তাঁদের নির্দেশ দিয়ে বললেন, “একটা কাজ তোমাদের করতেই হবে। তোমাদের দলের এক-তৃতীয়াংশ প্রত্যেকটা বিশ্রামের দিনের শুরুতে এসে রাজাকে তাঁর বাড়িতে পাহারা দেবে। 6 আর এক-তৃতীয়াংশ সূর দরজার কাছে থাকবে। আর বাকি এক-তৃতীয়াংশ দরজার কাছে প্রহরীদের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকবে। 7 প্রত্যেকটা বিশ্রামের দিন শেষ হলে তোমাদের দুই-তৃতীয়াংশ প্রভুর মন্দির ও রাজা যোয়াশকে পাহারা দেবে। 8 তিনি কোথাও গেলে তোমরা সবসময়ে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকবে। পুরো দলটাই যেন সশস্ত্র থাকে এবং রাজাকে সবসময়ে ঘিরে থাকে। সন্দেহ জনক কাউকে দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে তাকে হত্যা করবে।”
9 সেনাপতিরা যাজক যিহোয়াদার সমস্ত নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন। প্রত্যেক সেনাপতি তাঁর লোকবল নিয়ে শনিবারে একটা দল রাজাকে পাহারা দেবে বলে কথা হল, আর বাদবাকি সপ্তাহ আরেকটা দল পাহারা দেবার কথা ঠিক হল। এই সমস্ত সৈনিক যাজক যিহোয়াদার কাছে গেলে 10 তিনি তাঁদের প্রভুর মন্দিরে দায়ূদের রাখা বর্শা ও ঢাল দিলেন। 11 প্রহরীরা সকলে সশস্ত্র অবস্থায় মন্দিরের ডান কোণ থেকে বাঁ কোণ পর্যন্ত, বেদীর চারপাশে এবং রাজা যখনই কোথাও বেরোতেন তাঁকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকত। 12 এরা সকলে যোয়াশকে বার করে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে, তাঁর হাতে রাজা ও ঈশ্বরের চুক্তিপত্রটি তুলে দিল। তারপর মাথায় মন্ত্রপূতঃ তেল ঢেলে তাঁকে রাজপদে অভিসিক্ত করে হাততালি দিয়ে সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠল, “মহারাজের জয় হোক্!”
13 মহারাণী অথলিয়া সৈনিক ও লোকদের কোলাহল শুনে প্রভুর মন্দিরে গিয়ে দেখলেন, 14 সেখানে স্তম্ভের কাছে যেখানে রাজাদের দাঁড়ানোর কথা, রাজা দাঁড়িয়ে আছেন এবং নেতারা সকলে তাঁকে ঘিরে শিঙা বাজাচ্ছেন। সকলকে খুব খুশী দেখতে পেয়ে মর্মাহত রাণী শোক প্রকাশের জন্য নিজের পরিধেয় পোশাক ছিঁড়ে ফেলে চিৎকার করে উঠলেন, “বিদ্রোহ, বিদ্রোহ!”
15 যিহোয়াদা তখন সেনাপতিদের নির্দেশ দিয়ে বললেন, “অথলিয়াকে মন্দির চত্বরের বাইরে নিয়ে যাও। তাঁর সমর্থকদের যাকে খুশী তুমি মারতে পারো, কিন্তু প্রভুর মন্দিরের বাইরে।” কারণ যাজক বলেছিলেন, “তাঁকে যেন মন্দিরে হত্যা না করা হয়।”
16 একথা শুনে সৈনিকরা অথলিয়াকে চেপে ধরল। তারপর তিনি রাজপ্রাসাদের ঘোড়া ঢোকার দিকের দরজা পার হতে না হতেই তাঁকে হত্যা করলো।
17 যিহোয়াদা তখন প্রভু রাজা ও প্রজাদের মধ্যে মধ্যস্থতা করে একটি চুক্তি করলেন। এই চুক্তিতে বলা হল, রাজা ও প্রজা উভয়েই প্রভুর আশ্রিত। এছাড়াও এই চুক্তিপত্রে রাজা ও প্রজার পরস্পরের প্রতি কর্তব্য নির্ধারিত হল।
18 এরপর সমস্ত লোক এক সঙ্গে বালদেবতার মন্দিরে গিয়ে বালদেবতার মূর্ত্তি ও বেদীগুলো ধ্বংস করল। বেদীগুলোকে টুকরো টুকরো করে ভাঙ্গবার পর, তারা বালদেবতার যাজক মত্তনকেও হত্যা করল।
এরপর যিহোয়াদা মন্দিরের দেখাশোনা করবার জন্য আধিকারিকদের রাখলেন। 19 সবাইকে নেতৃত্ব দিয়ে মন্দির থেকে রাজপ্রাসাদে নিয়ে গেলেন। রাজার বিশেষ দেহরক্ষী ও সেনাপতিরা রাজার সঙ্গে গেলেন। সবাই মিলে রাজপ্রাসাদের প্রবেশ পথে পৌঁছালে রাজা যোয়াশ সিংহাসনে গিয়ে বসলেন। 20 সমস্ত লোকরা তখন খুবই খুশী হল। শহরে শান্তি ফিরে এল। কারণ রাণী অথলিয়াকে তরবারি দিয়ে রাজপ্রাসাদের কাছেই হত্যা করা হয়েছিল।
21 যোয়াশ যখন রাজা হন, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র সাত বছর।
যোয়াশের শাসনকার্য শুরু
12 ইস্রায়েলে যেহূর রাজত্বের সপ্তম বছরে সিংহাসনে আরোহণ করার পর, যোয়াশ 40 বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন। যোয়াশের মা ছিলেন বের্-শেবা নিবাসিনী সিবিয়া। 2 যোয়াশ প্রভুর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করেন। রাজা যোয়াশ ঈশ্বরের সামনে ঠিক কাজগুলি করেছিলেন যতদিন তাঁকে যিহোয়াদা নির্দেশ দিয়েছিলেন। 3 তবে তিনিও ভিন্ন মূর্ত্তির পূজোর জন্য উঁচু জায়গায় বানানো বেদীগুলো ধ্বংস করেন নি। লোকরা সেই সব বেদীগুলিতে বলিদান করা ও ধুপধূনো দেওয়া চালিয়ে গেল।
যোয়াশ মন্দির সংস্কারের নির্দেশ দিলেন
4-5 যোয়াশ যাজকদের বললেন, “প্রভুর মন্দিরে কোন অর্থাভাব নেই। মন্দিরে জিনিসপত্র দান করা ছাড়াও, সময় সময় লোকরা মন্দির করও দিয়ে এসেছে। খুশি মত উপহার তারা দিয়েছে। আপনারা, যাজকরা মন্দির মেরামতের জন্য ঐ অর্থ ব্যবহার করবেন। প্রত্যেক যাজক লোকেদের জন্য কাজ করে, তাদের কাছ থেকে যে দক্ষিণা পান সেই টাকা দিয়েই তাদের প্রভুর মন্দির সংস্কার করা উচিৎ।”
6 কিন্তু যাজকরা মন্দির সংস্কার করলেন না। যোয়াশের রাজত্বের 23 বছরের মাথায়ও যখন যাজকরা মন্দির সারালেন না, 7 তখন রাজা যোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাইলেন, “আপনারা কেন এখনও মন্দিরটা সারান নি? অবিলম্বে আপনারা লোকদের কাজ করে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করুন। দক্ষিণার টাকাও আর বাজে খরচ করবেন না। ঐ টাকা অবশ্যই মন্দির সংস্কারের কাজে যাওয়া উচিৎ।”
8 যাজকরা লোকদের কাছ থেকে দক্ষিণা নেওয়া বন্ধ করবেন বলে রাজী হলেও, তাঁরা ঠিক করলেন যে মন্দির তাঁরা সারাবেন না। 9 তখন যাজক যিহোয়াদা একটা বাক্স বানিয়ে বাক্সটার ওপরে একটা ফুটো করে সেটাকে বেদীর দক্ষিণ দিকে, যে দরজা দিয়ে দর্শনার্থীরা মন্দিরে ঢোকে, রেখে দিলেন। কিছু যাজক মন্দিরের দরজা আগলে বসে থাকতেন। তারা প্রভুকে প্রণামী হিসেবে দেওয়া টাকা পয়সাগুলো ঐ বাক্সটায় পুরে দিলেন।
10 এরপর থেকে লোকরাও মন্দিরে এলে ঐ বাক্সটার মধ্যে টাকা পয়সা ফেলতে শুরু করল। যখনই মহারাজের সচিব এবং যাজক দেখতেন বাক্সটার মধ্যে অনেক টাকা পয়সা জমে গিয়েছে, তাঁরা তখন সমস্ত টাকা পয়সা বাক্স থেকে বের করে গুণে গেঁথে ব্যাগে ভরে রাখতেন। 11 তাঁরা ঐ অর্থ দিয়ে প্রভুর মন্দিরের কাঠের মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি, 12 পাথর-কাটিয়ে, খোদাইকর ও অন্যান্য যেসব মিস্ত্রিরা প্রভুর মন্দিরে কাজ করত তাদের মাইনে দিতেন। এছাড়াও ঐ টাকা দিয়ে মন্দির সারানোর জন্য কাঠের গুঁড়ি, পাথর থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন কিনতেন।
13-14 প্রভুর মন্দিরের জন্য লোকরা যে টাকা দিতেন তা দিয়ে কিন্তু যাজকরা সোনা ও রূপোর পাত্র, বাতিদান, বাদ্যযন্ত্র এসব কিনতে পারতেন না। কারণ কারিগররা যারা মন্দির সারাচ্ছিল তাদের মাইনে ঐ অর্থ থেকে দেওয়া হত। 15 কেউই পাই পয়সার হিসেব নিতেন না বা টাকা কিভাবে খরচ হল—এ প্রশ্ন মিস্ত্রিদের করতেন না। কারণ সমস্ত মিস্ত্রিরা খুব বিশ্বাসী ছিল।
16 দোষ মোচন ও পাপমোচনের নৈবেদ্যর থেকে পাওয়া টাকা কারিগরদের মাইনে দেবার জন্য ব্যবহৃত হত না কারণ ওটাতে ছিল যাজকদের অধিকার।
যোয়াশ হসায়েলের হাত থেকে জেরুশালেমকে রক্ষা করলেন
17 অরামের রাজা হসায়েল গাৎ শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিলেন। গাতদের হারানোর পর হসায়েল জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
18 যিহোশাফট, যিহোরাম, অহসিয় প্রমুখ যিহূদার রাজারা ছিলেন যোরামের পূর্বপুরুষ। এরা সকলেই প্রভুকে অনেক কিছু দান করেছিলেন। সে সব জিনিসই মন্দিরে রাখা ছিল। যোয়াশ নিজেও প্রভুকে বহু জিনিসপত্র দিয়েছিলেন। জেরুশালেমকে অরামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যোয়াশ এই সমস্ত জিনিসপত্র এবং তাঁর বাড়িতে ও মন্দিরে যত সোনা ছিল, সব কিছুই অরামের রাজা হসায়েলকে পাঠিয়ে দেন।
যোয়াশের মৃত্যু
19 যোয়াশ যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন সে সমস্ত যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে।
20 যোয়াশের কর্মচারীরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাঁকে সিল্লা যাবার পথে মিল্লো বলে একটা বাড়িতে হত্যা করে। 21 শিমিয়তের পুত্র যোষাখর ও শোমরের পুত্র যিহোষাবদ আধিকারিক ছিল। এই দুজন মিলে যোয়াশকে হত্যা করেছিল।
যোয়াশকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করার পর তাঁর পুত্র অমৎসিয় নতুন রাজা হলেন।
খ্রীষ্ট যীশুর বিশ্বস্ত সৈনিক
2 তীমথিয় তুমি আমার সন্তানের মতো, খ্রীষ্ট যীশুতে আমাদের যে অনুগ্রহ আছে তার দ্বারা তুমি শক্তিমান হয়ে ওঠ। 2 তুমি ও অন্যান্য অনেকে আমি যে বিষয় শিক্ষা দিয়েছি তা শুনেছ; সেইসব এমন বিশ্বস্ত লোকদের শেখাও যারা অন্য লোকদের শিক্ষা দিতে সক্ষম হবে। 3 খ্রীষ্ট যীশুর বিশ্বস্ত সৈনিকের মত আমাদের সাথে কষ্টভোগ কর। 4 সৈনিক, যুদ্ধ করার সময় তার সেনাপতিকে সন্তুষ্ট করবার কথা মনে রাখে, জনসাধারণের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে না। 5 আবার কোন ব্যক্তি যদি ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে, তবে তাকে প্রতিযোগিতার সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয় যেন সে বিজয়ী হতে পারে। 6 যে কৃষক কঠোর পরিশ্রম করে, সেই প্রথমে ফসলের ভাগ পায়। 7 আমি যা বলি, তা ভেবে দেখ, কারণ এসব বিষয় বুঝতে প্রভু তোমাকে বুদ্ধি দেবেন।
8 যীশু খ্রীষ্টের কথা মনে কর, তিনি দায়ূদের বংশে জন্মেছিলেন, যীশু মৃত্যুর পর মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন। এই তো সেই সুসমাচার যা লোকদের কাছে আমি প্রচার করি। 9 সুসমাচার প্রচার করেছি বলে আমি কষ্টভোগ করছি, একজন অপরাধীর মত আমাকে শেকলে বেঁধে বন্দী করে রাখা হয়েছে। কিন্তু ঈশ্বরের বার্তাকে শেকল দিয়ে বাঁধা যায় না। 10 তাই ধৈর্য্য্যের সঙ্গে ঈশ্বর যাদের মনোনীত করেছেন তাদের জন্য আমি সব কিছু সহ্য করি, যাতে তারাও খ্রীষ্ট যীশুতে অনন্ত মহিমার সাথে যে পরিত্রাণ ও অনন্ত জীবন আছে তা লাভ করে।
11 এই কথা বিশ্বাসযোগ্য:
কারণ আমরা যদি তাঁর সঙ্গে মৃত্যুবরণ করে থাকি, তবে তাঁর সঙ্গে জীবিতও থাকব।
12 এখন যদি কষ্ট সহ্য করি তবে তাঁর সাথে রাজত্বও করব।
যদি তাঁকে অস্বীকার করি, তিনিও আমাদের অস্বীকার করবেন।
13 আমরা যদি অবিশ্বস্ত হই, তিনি কিন্তু বিশ্বস্ত থাকেন;
কারণ তিনি নিজেকে অস্বীকার করতে পারেন না।
অনুমোদিত কর্মী
14 তুমি লোকদের এইসব কথা মনে করিয়ে দিও: ঈশ্বরের সামনে তাদের সতর্ক করে দাও যেন লোকেরা বাক্য নিয়ে তর্ক বিতর্ক না করে, কারণ তাতে কোন লাভ হয় না, বরং যারা শোনে তাদের সর্বনাশ হয়। 15 যে কর্মী সঠিকভাবে সত্য শিক্ষাকে ব্যবহার করে এবং নিজের কাজকর্ম সম্বন্ধে লজ্জিত নয় এমন একজন কর্মী হিসেবে ঈশ্বরের অনুমোদন পাবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা কর।
16 কিন্তু বাজে জাগতিক আলোচনা, যার মধ্যে ঈশ্বরের কোন প্রেরণা নেই তার থেকে দূরে থাকো। ঐ ধরণের কথাবার্তা মানুষকে ক্রমে ক্রমে ঈশ্বর থেকে দূরে নিয়ে যায়। 17 যারা এই ধরণের আলোচনা করে তাদের শিক্ষা কর্কট রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ে। হুমিনায় ও কিলীত হল এই ধরণের লোক। 18 এরা সত্য শিক্ষা থেকে সরে গেছে। তারা বলছে, মৃতদের পুনরুত্থান হয়ে গেছে। এই দুজন লোক কিছু কিছু লোকের বিশ্বাস নষ্ট করেছে।
19 ঈশ্বর তাঁর মণ্ডলীর জন্য যে শক্ত ভিত স্থাপন করেছেন তা হেলানো যাবে না। সেই ভিতের ওপর এও লেখা আছে, “ঈশ্বর সেই সব লোকদের জানেন যারা তাঁর”(A) এবং “যে কেউ নিজেকে ঈশ্বরের লোক বলে সে মন্দ কাজ হতে অবশ্যই দূরে থাকুক।”
20 কিন্তু কোন বড় বাড়িতে কেবল সোনার ও রূপোর বাসন নয়, কাঠের ও মাটির পাত্রও থাকে, তাদের মধ্যে কিছু বাসন থাকে বিশেষ ব্যবহারের জন্য, আবার কিছু বাসন থাকে সাধারণ ব্যবহারের জন্য। 21 সুতরাং যদি কেউ নিজেকে এইসব মন্দ বিষয় হতে পরিষ্কার করে তবে সে বিশেষ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত বাসনই হয়ে উঠবে; সেই ব্যক্তি পবিত্র হয়ে উঠবে আর তার কর্তা তাকে ব্যবহার করতে পারবে। সেই ব্যক্তি যে কোন সৎ কাজ করবার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
22 তুমি যৌবনের সমস্ত কামনা বাসনা থেকে পালাও এবং যাদের অন্তঃকরণ বিশুদ্ধ, যারা তাদের প্রভুতে ভরসা রাখে, সেই সমস্ত লোকের সাথে বিশ্বাস, ভালবাসা ও শান্তির সাথে সঠিক জীবনযাপনের জন্য আগ্রহী হও। 23 কিন্তু মূর্খতাপূর্ণ ও জ্ঞানহীন তর্কের মধ্যে জড়িয়ে পড়ো না, তুমি জান যে ঐসব শূন্যগর্ভ তর্কবিতর্ক থেকে লড়াইয়ের সৃষ্টি হয়। 24 যে মানুষ প্রভুর সেবক তার কোন বিবাদে জড়িয়ে পড়া ঠিক নয়, সে হবে সকলের প্রতি দয়ালু। প্রভুর সেবককে একজন উত্তম শিক্ষক হতে হবে, তাকে সহিষ্ণু হতে হবে। 25 যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলে বিনীতভাবেই তাদের ভুল দেখিয়ে দিতে হবে। হয়তো ঈশ্বর তাদের হৃদয়ের পরিবর্তন করবেন যাতে তারা সত্যকে গ্রহণ করতে পারে। 26 দিয়াবল ঐ লোকদের ফাঁদে ফেলেছে ও তার ইচ্ছা পালন করার জন্য দাসে পরিণত করেছে। কিন্তু এমন হতে পারে যে তারা চেতনা পেয়ে জেগে উঠবে ও বুঝতে পারবে যে শয়তান তাদের নিয়ে খেলছে আর দিয়াবলের ফাঁদ থেকে তারা নিজেদের মুক্ত করতে পারবে।
হোশেয় গোমরকে দাসত্ব থেকে কিনে আনলেন
3 তখন প্রভু আবার আমাকে বললেন, “গোমরের অনেক প্রেমিক আছে কিন্তু তোমাকে অবশ্যই তাকে ভালোবেসে যেতে হবে। কেন? কারণ সেটা প্রভুর মতোই কাজ। প্রভু ইস্রায়েল জাতিকে ভালবেসেই যাচ্ছেন কিন্তু তারা অন্য দেবতাদের পূজা করেই চলেছে। তারা কিশ্মিশের পিঠে খেতে ভালবাসে।”
2 সেজন্য আমি গোমরকে 6 আউন্স রূপো এবং 9 বুশেল বার্লি দিয়ে কিনে নিলাম। 3 তারপর আমি তাকে বললাম, “তোমাকে অবশ্যই অনেক দিনের জন্য আমার সঙ্গে থাকতে হবে। পতিতার মতো আচরণ কোরো না। তুমি অন্য মানুষদের সঙ্গেও থাকতে পারবে না এবং আমি তোমার স্বামী হব।”
4 একইভাবে, ইস্রায়েলবাসীরা রাজা অথবা নেতাদের ছাড়াই বহুদিন কাটাবে। তাদের উৎসর্গ অথবা স্মরণ স্তম্ভ থাকবে না। তারা যাজকদের বিশেষ পোশাক এফোদ অথবা গৃহদেবতা ছাড়াই থাকবে। 5 এরপর ইস্রায়েলবাসীরা ফিরে আসবে। তারপর তারা তাদের প্রভু, তাদের ঈশ্বর এবং দায়ূদ, তাদের রাজার খোঁজে যাবে। শেষের দিনগুলিতে, তারা প্রভুকে এবং তাঁর ধার্মিকতাকে সম্মান দেবার জন্য আসবে।
ইস্রায়েলের উপর প্রভু ক্রুদ্ধ
4 ইস্রায়েলবাসীরা, প্রভুর বার্তা শোন! যেসব লোকরা এই দেশে বাস করছে প্রভু তাদের বিরুদ্ধে নিজের যুক্তিগুলো বলবেন, “এই দেশের লোকরা সত্যই ঈশ্বরকে জানে না। লোকরা ঈশ্বরের কাছে বিশ্বস্ত এবং অনুগতও নয়। 2 লোকরা দিব্যি দেয়, মিথ্যা বলে, খুন এবং চুরি করে। তারা ব্যভিচারমূলক পাপ কাজ করে আর তাদের বাচ্চা রয়েছে। লোকরা বারে বারে খুন করে। 3 মৃতের জন্য লোকে যেভাবে কাঁদে সেই ভাবে দেশটিও কাঁদছে এবং দেশের সব লোকেরা দুর্বল। এমনকি মাঠের পশু, আকাশের পাখী এবং সমুদ্রের মাছরাও মারা যাচ্ছে। 4 কোন লোকেরই অপর একজনের সঙ্গে তর্ক করা বা তাকে দোষী করা উচিত নয়। ওহে যাজক, আমার তর্ক তোমার সঙ্গে! 5 যাজকরা, দিনের বেলায় তোমাদের পতন হবে। রাত্রিবেলায় ভাববাদীরাও তোমাদের সঙ্গে পড়ে যাবে। আর আমি তোমাদের মাতাকে ধ্বংস করব।
6 “আমার লোকরা বিনষ্ট হয়েছে কারণ তাদের কোন জ্ঞান নেই। তোমরা শিখতে অস্বীকার করেছো, সেজন্য আমিও তোমাদের আমার যাজকদের কাজ দিতে অস্বীকার করব। তোমরা তোমাদের ঈশ্বরের বিধি ভুলে গিয়েছ, সেজন্য আমি তোমাদের সন্তানদের ভুলে যাব। 7 তারা অহঙ্কারী হয়েছে! তারা আমার বিরুদ্ধে উত্তরোত্তর আরো পাপ কাজ করেছে, সেজন্য আমি তাদের মহত্ত্বকে লজ্জায় রূপান্তরিত করব।
8 “যাজকরা লোকদের পাপ কাজের সঙ্গে যোগ দিয়েছে। তারা অনেক বেশী পরিমাণে ঐ পাপ কাজ করতে চেয়েছে। 9 সেজন্য যাজকরা ঐ লোকদের চেয়ে কোন অংশে ভিন্ন নয়। তারা যেসব কাজ করেছে তার জন্য আমি তাদের শাস্তি দেব। তারা যে ভুল কাজ করেছে তার জন্য আমি প্রতিশোধ নেব। 10 তারা খাবে, কিন্তু তারা তাতে তৃপ্ত হবে না! তারা যৌন পাপে লিপ্ত হবে, কিন্তু তাদের কোন সন্তান হবে না। কারণ তারা প্রভুকে ছেড়ে দিয়েছে এবং পতিতার মত থাকে।
11 “যৌনপাপ, তীব্র পানীয় এবং নতুন দ্রাক্ষারস একজন লোকের সোজাসুজিভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা নষ্ট করবে। 12 আমার লোকরা উপদেশের জন্য কাঠের খণ্ডকে জিজ্ঞাসা করছে। তারা ভাবছে, ওই কাঠিগুলো তাদের উত্তর দেবে। কারণ পতিতার মতোই তারা মূর্ত্তিগুলোর পেছনে ছুটেছিল। তারা তাদের ঈশ্বরকে ছেড়ে দিয়েছে এবং পতিতার মতো হয়ে গেছে। 13 তারা পর্বতের ওপর উৎসর্গ নিবেদন করে পাহাড়ের ওপর ওক গাছ, ঝাউ গাছ এবং দেবদারু গাছের তলায় ধূপ জ্বালায়। ঐ গাছগুলির ছায়া খুবই সুন্দর দেখায়, সেজন্য তোমাদের মেয়েরা পতিতাদের মতো ঐ গাছের তলায় শুয়ে থাকে এবং তোমাদের পুত্রবধূরা যৌন পাপে লিপ্ত হয়।
14 “তোমাদের কন্যারা পতিতার মতো থাকে বলে অথবা তোমাদের পুত্রবধূরা যৌন পাপ কাজ করছে বলে আমি তাদের দোষ দেব না। লোকেরা পতিতাদের কাছে যায় এবং তাদের সঙ্গে ঘুমোয়। তারা পতিতাদের সঙ্গে যায় এবং মন্দিরে তাদের সঙ্গেই দেবতাকে উৎসর্গ দেয়। ফলে, ঐ বোকা লোকরা নিজেদেরই ধ্বংস করছে।
ইস্রায়েলের লজ্জাজনক পাপ কাজ
15 “ইস্রায়েল তুমি একজন পতিতার মতো কাজ করছ; কিন্তু এই বলে যিহূদাকে দোষী হতে দিও না। গিল্গলে অথবা বৈৎ-আবনে যেও না। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় প্রভুর নাম ব্যবহার করো না। কখনও বোলো না, ‘জীবন্ত প্রভুর দিব্য!’ 16 প্রভু ইস্রায়েলকে বহু জিনিস দিয়েছেন। তিনি এমনই এক মেষপালকের মতন, যিনি তাঁর মেষগুলোকে প্রচুর ঘাসে ভরা মাঠে নিয়ে যান; কিন্তু ইস্রায়েল হচ্ছে জেদী। ইস্রায়েল ঠিক একটা বাছুরের মতো যে বারবার ছুটে পালায়।
17 “ইফ্রয়িম প্রতিমাগুলির সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। কাজেই তাকে একা থাকতে দাও। 18 ইফ্রয়িমরা মাতাল হলে বেশ্যার মত ব্যবহার করে। তারা উৎকোচ ভালবাসে এবং তা দাবী করে। তাদের শাসকরা তাদের লোকদের লজ্জার কারণ হয়। তাদের প্রেমিকদের সঙ্গে থাকতে দাও। 19 বাতাস তার পাখা দিয়ে তাদের বিরক্ত করে। তাদের উৎসর্গ তাদের কাছে লজ্জা আনবে।
অয়িন
121 যা সঠিক এবং ভালো আমি তাই করেছি।
হে প্রভু, যারা আমায় উৎপীড়ন করে এমন লোকেদের হাতে আমায় সমর্পণ করবেন না।
122 আপনার দাস, আমার প্রতি ভাল ব্যবহার করবার প্রতিশ্রুতি করুন।
হে প্রভু, ঐ অহঙ্কারী লোকেদের আমাকে উৎপীড়ন করতে দেবেন না।
123 হে প্রভু, আপনার সাহায্যের আশায় থেকে
এবং আপনার সুন্দর বাক্যের প্রত্যাশায় আমার দু চোখ ক্লান্ত।
124 আমি আপনার দাস। আমার প্রতি আপনার প্রকৃত ভালোবাসা দেখান।
আমাকে আপনার বিধিগুলো শেখান।
125 আমি আপনার দাস।
আমি যাতে আপনার চুক্তি জানতে পারি, আমায় বুঝতে সাহায্য করুন।
126 প্রভু এখন আপনার কিছু করার সময় এসেছে।
লোকরা আপনার বিধি ভঙ্গ করেছে।
127 প্রভু আপনার বিধিগুলোকে
আমি সব থেকে খাঁটি সোনার চেয়েও ভালোবাসি।
128 আপনার সব আজ্ঞা আমি খুব যত্ন করে পালন করি।
ভ্রান্ত শিক্ষাকে আমি ঘৃণা করি।
পে
129 হে প্রভু, আপনার চুক্তি সত্যিই বিস্ময়কর।
সেই জন্য আমি তা অনুসরণ করি।
130 যখন লোকেরা আপনার বানীসমুহ বুঝতে শুরু করে,
তা একটি আলোর মত যেটা তাদের সঠিক পথে বেঁচে থাকার পথ দেখায়।
131 হে প্রভু, আমি সত্যিই আপনার আজ্ঞাগুলো অধ্যয়ন করতে চাই।
আমি সেই লোকের মত যার নিঃশ্বাস ভারী হয়েছে এবং অধৈর্য্য হয়ে প্রতীক্ষা করছে।
132 ঈশ্বর আমার দিকে দেখুন, আমার প্রতি সদয় হন,
যারা আপনার নাম ভালোবাসে তাদের পক্ষে যা হিতকর তাই করুন।
133 প্রভু, আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় পরিচালিত করুন।
আমার প্রতি ক্ষতিকর কিছু ঘটতে দেবেন না।
134 হে প্রভু, যে সব লোক আমায় আঘাত করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন
এবং আমি আপনার আজ্ঞা মান্য করবো।
135 প্রভু, আপনার দাসকে গ্রহণ করুন
এবং আমাকে আপনার বিধি শিক্ষা দিন।
136 লোকে আপনার শিক্ষামালাকে মান্য করে না।
সেইজন্য আমি এত কেঁদেছি যে আমার চোখের জলে একটা নদী বইয়ে দিয়েছি।
সাদে
137 হে প্রভু, আপনি মঙ্গলময়
এবং আপনার বিধিগুলোও ন্যায্য ও সৎ।
138 আপনার চুক্তিতে আপনি আমাদের জন্য ভালো এবং ন্যায্য বিধিসমূহ দিয়েছেন।
আমরা সত্যি তাদের ওপর নির্ভর করতে পারি।
139 আমার প্রবল উদ্দীপনা আমায় ধ্বংস করে দিচ্ছে।
আমার শত্রুরা আপনার আজ্ঞাগুলো ভুলে গেছে তাই আমি এত বিমর্ষ হয়ে রয়েছি।
140 আমরা যে আপনার বাক্যকে বিশ্বাস করতে পারি,
আমাদের কাছে সেই প্রমাণ আছে এবং আমি তা ভালোবাসি।
141 আমি একজন তরুণ লোক এবং লোকে আমায় সম্মান করে না।
কিন্তু আমি আপনার আজ্ঞা ভুলি নি।
142 আপনার ধার্ম্মিকতা চিরন্তন
এবং আপনার শিক্ষাগুলিকে বিশ্বাস করা যায়।
143 আমার সমস্যা এবং দুঃসময় ছিল।
কিন্তু আমি আপনার নির্দেশ উপভোগ করি।
144 আপনার চুক্তি চিরকালের জন্য ভালো ও ন্যায্য।
আমাকে বুঝতে সাহায্য করুন যাতে আমি বাঁচতে পারি।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International