M’Cheyne Bible Reading Plan
7 ইলীশায় বললেন, “প্রভুর বার্তা শোন! প্রভু বলেন: ‘আগামীকাল এ সময়ের মধ্যেই শমরিয়া শহরের ফটকগুলোর পাশের বাজারে এক টুক্রি মিহি ময়দা অথবা দু টুক্রি যব কেবলমাত্র এক শেকেল দিয়ে কিনতে পাওয়া যাবে।’”
2 রাজার ঠিক পাশেই যে সেনাপতি ছিল সে বলে উঠল, “প্রভু যদি স্বর্গে ছেঁদা করার ব্যবস্থাও করেন, তাহলেও আপনি যা বলছেন তা ঘটা অসম্ভব!”
ইলীশায় বললেন, “সম্ভব কি অসম্ভব তা তুমি নিজের চোখেই দেখতে পাবে। তবে তুমি ঐ খাবার ছুঁতেও পারবে না।”
কুষ্ঠরোগীরা দেখল অরামীয় শিবির শূন্য
3 শহরের প্রবেশদ্বারের কাছে চার জন কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত হয়েছিল। তারা একে অপরকে বলল, “এখানে আমরা না খেয়ে শুকিয়ে মরছি কেন? 4 শমরিয়ায় তো একদানা খাবারও নেই। শহরে গেলেও আমরা মরব, এখানে থাকলেও মারা পড়ব। তার চেয়ে চল অরামীয়দের তাঁবুর দিকে যাওয়া যাক। ওরা চাইলে আমরা বেঁচেও যেতে পারি, আর নয়তো মরতে হবে।”
5 কথা মতো সেদিন বিকেলবেলা কুষ্ঠরোগীরা অরামীয়দের তাঁবুতে গিয়ে উপস্থিত হল। তাঁবুর কাছাকাছি এসে ওরা দেখল, ধারে কাছে কেউই নেই! 6 প্রভুর মহিমায়, অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা বাইরে রথবাহিনী, ঘোড়া-টোড়া নিয়ে বিশাল এক সেনাবাহিনীর এগিয়ে আসার আওয়াজ শুনে ভেবেছিল, “নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের রাজা হিত্তীয় আর মিশরীয় রাজাকে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ভাড়া করে এনেছে!”
7 তাই অরামীয়রা সেদিন বিকেল-বিকেলই তাঁবু, ঘোড়া, গাধা সব কিছু পেছনে ফেলেই প্রাণের দায়ে পালিয়ে গেল।
শত্রুশিবিরে কুষ্ঠরোগী
8 তারপর শত্রুশিবিরে এসে কুষ্ঠরোগীরা একটা তাঁবুতে ঢুকে প্রাণভরে খাওয়া-দাওয়া করল। তারপর চারজন মিলে তাঁবু থেকে সোনা, রূপো, পোশাক-আশাক বার করে নিয়ে সে সব লুকিয়ে রাখল। তারপর চার জন আরেকটা তাঁবু থেকেও এইভাবে জিনিসপত্র সরানোর পর বলাবলি করল, 9 “আমরা খুব অন্যায় করছি। এতো বড় একটা সুখবর পাওয়ার পরেও আমরা চুপচাপ আছি। আমরা যদি এভাবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খবরটা চেপে থাকি, আমাদের শাস্তি পেতে হবে। এখন চলো গিয়ে রাজবাড়ীর লোকদের খবরটা দেওয়া যাক।”
কুষ্ঠরোগীরা সুখবর দিল
10 এই কুষ্ঠরোগীরা তখন এসে শহরের প্রহরীদের ডাকাডাকি শুরু করল। তারা প্রহরীদের বলল, “আমরা অরামীয়দের শিবিরে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে কাউকে দেখতে পেলাম না। এমন কি কারো কোন সাড়া-শব্দ অবধি পেলাম না। কোন লোক জন সেখানে নেই। কিন্তু তাঁবুর ভেতরে ঘোড়া, গাধা যেমনকার তেমন বাঁধা আছে। অথচ লোক জন কেউ নেই, সব ফাঁকা।”
11 প্রহরীরা তখন চেঁচিয়ে রাজবাড়ীর লোকদের এখবর দিল। 12 কিন্তু তখন রাত্রি। রাজামশাই বিছানা ছেড়ে উঠে সেনাপতিদের বললেন, “আমি অরামীয় সেনাদের মতলবটা বুঝতে পেরেছি। ওরা জানে আমরা খুবই ক্ষুধার্ত। তাই তাঁবু ফাঁকা করে ঘাপটি মেরে মাঠে লুকিয়ে ভাবছে, ‘ইস্রায়েলীয়রা শহর থেকে এসে হানা দিলেই ওদের জ্যান্ত পাকড়াবো। তখন আবার আমাদের পিছু হটতে হবে।’”
13 রাজার একজন সেনাপতি বলল, “পাঁচটা ঘোড়া নিয়ে গিয়ে কয়েক জন ব্যাপারটা সরেজমিনে দেখেই আসুক না! ঐ পাঁচটা ঘোড়া তো আমাদের মতোই শেষ অবধি না খেয়ে মরবে। কিন্তু আসল কথাটা জানা দরকার।”
14 তারা ঘোড়াসহ দুটি রথ বেছে নিল এবং রাজা তাদের অরামীয় সৈন্যবাহিনীর পরে পাঠালেন। তিনি বললেন, “যাও, দেখে এসো কি হয়েছে।”
15 এরা যর্দন নদীর তীর পর্যন্ত অরামীয় সেনাদের সন্ধানে গিয়ে দেখল, সারাটা পথে জামাকাপড় আর অস্ত্র শস্ত্র ছড়িয়ে আছে। তাড়াহুড়ো করে পালানোর সময় অরামীয় সেনারা এই সমস্ত জিনিস ফেলে গেছে।
16 সকলের জন্যই অপর্যাপ্ত জিনিসপত্র ছড়িয়ে আছে। ঠিক যেন প্রভু যেমনটি বলেছিলেন, এক পয়সায় এক টুক্রি মিহি ময়দা আর দু-টুক্রি যবের গুঁড়ো পাওয়া যাবে!
17 রাজা তাঁর ঘনিষ্ঠ একজন সেনাপতিকে, সেই যিনি আগে স্বর্গ ছেঁদা করার কথা বলেছিলেন, শহরের দরজা আগলানোর দায়িত্ব দিলেন। কিন্তু ততক্ষণে লোকরা শত্রু শিবির থেকে খাবার আনার জন্য দৌড়েছে। উন্মত্ত জনতা সেই সেনাপতিকে ঠেলে, মাড়িয়ে, পিষে চলে গেল। রাজার বাড়ীতে দেখা করতে আসার পর ইলীশায় যা দৈববাণী করেছিলেন সে সবই অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল। 18 ইলীশায় বলেছিলেন, “যে কোন ব্যক্তি শমরিয়ার প্রবেশদ্বারে বাজার থেকে এক শেকেলে এক ঝুড়ি মিহি ময়দা অথবা দুই ঝুড়ি যব কিনতে পারে।” 19 কিন্তু ঐ আধিকারিক ঈশ্বরের লোককে উত্তর দিল, “এমনকি প্রভু যদি স্বর্গে জানালা তৈরী করেন, তবু এ ঘটনা ঘটবে না!” এবং ইলীশায় আধিকারিককে বললেন, “তুমি তোমার নিজের চোখে দেখবে, কিন্তু ঐ খাবার তুমি খাবে না।” 20 আধিকারিকের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটল, লোকেরা তাকে ধাক্কা মেরে ফটকের উপর ফেলে তার উপর দিয়ে হেঁটে গেল এবং সে মারা গেল।
ভ্রান্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সতর্কবাণী
4 পবিত্র আত্মা স্পষ্টই বলছেন, শেষের দিকে কিছু লোক বিশ্বাস থেকে সরে পড়বে। যে মন্দ আত্মা মিথ্যা বলে, তারা সেই মন্দ আত্মাকে আনুগত্য দেখাবে এবং ভূতদের শিক্ষায় মন দেবে। 2 যারা মিথ্যা বলে ও লোকদের প্রতারণা করে, এসব ভ্রান্ত শিক্ষা তাদের কাছ থেকেই আসে। তারা ভাল ও মন্দের মধ্যে বিচার করতে পারে না। 3 এরাই মানুষকে বিবাহ করতে নিষেধ করে ও কোন কোন খাদ্য খেতে নিষেধ করে। কিন্তু সেই খাদ্য সামগ্রী ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন এবং যারা বিশ্বাসী ও যারা সত্যকে জানে তারা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়ে এই খাবার খায়। 4 বাস্তবিক ঈশ্বরের সৃষ্ট সমস্ত বস্তুই ভাল, ধন্যবাদের সঙ্গে গ্রহণ করলে কিছুই অগ্রাহ্য নয়। 5 কারণ ঈশ্বরের বাক্য অনুসারে ও প্রার্থনা দ্বারা তা শুচিশুদ্ধ হয়।
খ্রীষ্ট যীশুর উত্তম সেবক হও
6 এইসব কথা ওখানকার ভাই ও বোনেদের মনে করিয়ে দিলে তুমি খ্রীষ্ট যীশুর উত্তম সেবকরূপে গন্য হবে। বিশ্বাসের বাক্য ও উত্তম শিক্ষা অনুসরণ করে তুমি যে শক্তিশালী হয়েছ তার প্রমাণ দেখাতে পারবে। 7 ঈশ্বরবিহীন অর্থহীন গল্পের সাথে তোমাদের কোন সম্পর্ক রেখো না। ঈশ্বরের এক ভক্তিমান সেবক হয়ে নিজেকে শিক্ষিত কর। 8 শরীর চর্চায় কিছু উপকার হয় বটে, কিন্তু ঈশ্বরের সেবা সব দিক দিয়েই কল্যাণ করে, কারণ তা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনে লাভের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে। 9 যা আমি বলি তা সত্য ও সম্পূর্ণ গ্রহণযোগ্য। 10 এই জন্য আমরা প্রাণপন পরিশ্রম ও সংগ্রাম করছি, কারণ আমরা সেই জীবন্ত ঈশ্বরের ওপর প্রত্যাশা রেখেছি, যিনি সমস্ত মানুষের ত্রাণকর্তা, বিশেষ করে তাদের যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে।
11 তুমি এইসব বিষয় পালনের জন্য আদেশ কর ও শিক্ষা দাও। 12 তুমি যুবক বলে কেউ যেন তোমায় তুচ্ছ না করে। কিন্তু তোমার কথা, স্বভাব, ভালোবাসা, বিশ্বাস ও পবিত্রতার দ্বারা বিশ্বাসীদের সামনে দৃষ্টান্ত রাখ।
13 লোকদের কাছে শাস্ত্র পাঠ করে যাও, তাদের শক্তিশালী কর ও শিক্ষা দাও। আমি যতদিন না আসি তুমি এইসব কাজ করবে। 14 তোমার মধ্যে যে আত্মিক বরদান রয়েছে তা ব্যবহার করতে ভুলো না। এক সময় মণ্ডলীর প্রাচীনরা তোমার ওপর হস্তার্পণ করেছিলেন, সেই সময় ভাববাদীর দ্বারা সেই দান তোমাতে অর্পিত হয়েছিল। 15 ঐসব কাজ করে যাও। ঐ কাজের উদ্দেশ্যে তোমার জীবন উৎসর্গ কর। তাতে সব লোক দেখতে পাবে তোমার কাজ কেমন এগোচ্ছে। 16 নিজের জীবন ও তুমি যা শিক্ষা দাও সে সম্বন্ধে সাবধান থেকো। তোমার ঐ সব দায়িত্ব তুমি পালন করেই চল; কারণ তা করলে তুমি নিজেকে ও যারা তোমার কথা শোনে, তাদেরও উদ্ধার করতে পারবে।
11 “মাদীয় রাজা দারিয়াবসের রাজত্ব কালের প্রথম বছরেই পারস্যের যুবরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমি মীখায়েলের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।
2 “এখন তাহলে দানিয়েল তোমাকে আমি সত্যটি বলব। পারস্যে আরও তিন জন রাজা শাসন করবে। এরপর আসবে চতুর্থ রাজা। সেই চতুর্থ রাজাই হবে পারস্যের সব থেকে ধনী রাজা। খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠার জন্য সে তার ধনসম্পদ ব্যবহার করবে। এবং গ্রীস রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য সে সকলকে ইচ্ছুক করে তুলবে। 3 তখন একজন শক্তিশালী ও বিত্তবান রাজার আবির্ভাব ঘটবে। সে আরো শক্তি দিয়ে শাসন করবে। সে যা চাইবে তাই করতে সক্ষম হবে। 4 সেই রাজার আবির্ভাবের পর তার রাজ্য চার ভাগে বিভক্ত হবে। তার ছেলেমেয়েরা ও নাতিনাতনিরা তার রাজত্বের ভাগ পাবে না এবং তার রাজ্যগুলি তাদের পুরোনো শক্তি ফিরে পাবে না। কারণ তার রাজ্যের অংশীদার হয়ে উঠবে অন্য মানুষেরা।
5 “দক্ষিণ দেশের রাজা বলবান হয়ে উঠবে। কিন্তু তারই একজন অধ্যক্ষের হাতে তার পরাজয় ঘটবে। তখন সেই অধ্যক্ষই শাসন করতে শুরু করবে। তার রাজ্য হবে একটি খুব শক্তিশালী রাজ্য।
6 “কিন্তু কয়েক বছর পরে তাদের দুজনের মধ্যে একটি চুক্তি সাক্ষরিত হবে। চুক্তিটি প্রতিপন্ন করবার জন্য দক্ষিণ দেশের রাজার কন্যা যাবে উত্তর দেশের রাজপুত্রকে বিয়ে করতে। ঘটনাবশতঃ তাকে এবং তার ভৃত্যবর্গ যারা তাকে এনেছিল, তার সন্তান এবং সেই একজন যে তাকে সাহায্য করেছিল তাদের সবাইকে প্রতারণা করা হবে।
7 “কিন্তু ঐ যুবরাণীর পরিবারের এক ব্যক্তি এসে দক্ষিণের রাজার স্থান গ্রহণ করবে। ঐ ব্যক্তি উত্তরের রাজার সৈন্যবাহিনীকে আক্রমণ করবে। সে উত্তরের রাজার দুর্গে প্রবেশ করে যুদ্ধে জয়লাভ করবে। 8 সে তাদের দেবতার মূর্ত্তি নিয়ে যাবে। এরপর সে আর উত্তরের রাজাকে উত্যক্ত করবে না। 9 উত্তরের রাজা আবার দক্ষিণের রাজধানী আক্রমণ করবে কিন্তু পরাজিত হয়ে পুনরায় নিজের রাজ্যে ফিরে যাবে।
10 “উত্তরের রাজার পুত্ররা এবার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে। তারা একটি বিশাল সেনাবাহিনী সংগঠিত করবে। সেই সেনাবাহিনী বন্যার মতো দ্রুত পথ পরিক্রম করবে। তারা দক্ষিণের রাজার দুর্গ আক্রমণ করবে। 11 তখন দক্ষিণের রাজা ক্রুদ্ধ হয়ে উত্তরের রাজাকে আক্রমণের উদ্দেশ্যে বার হবে। উত্তরের রাজার বিশাল সেনাবাহিনী থাকবে, কিন্তু সে দক্ষিণের রাজার সৈন্যবাহিনী দ্বারা পরাজিত হবে। 12 বিরাট সৈন্যবাহিনীকে পরাজিত করবার পর দক্ষিণের রাজা গর্বিত হবেন এবং তিনি লক্ষ লক্ষ সৈন্য হত্যা করবেন, কিন্তু তিনি ক্ষমতাশালী থাকবেন না। 13 কারণ এরপর উত্তরের রাজা আবার আগের চেয়েও আরও বিশাল সেনাবাহিনী প্রস্তুত করবে। কয়েক বছর পর আবার সে তার বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে আক্রমণ করবে। এই সেনাবাহিনী হবে অজস্র অস্ত্রধারী। তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকবে।
14 “সেই সময় অনেক লোক দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে। তোমার নিজেরই কয়েক জন লোক যারা যুদ্ধ করতে ভালবাসে তারা যোগ দেবে এবং দক্ষিণের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে। তারা স্বপ্নদর্শনকে সত্য করে তুলতে চেষ্টা করবে, কিন্তু তারা যুদ্ধে জয়লাভ করবে না। 15 এরপর উত্তরের রাজা আসবে এবং একটি শক্তিশালী শহর অধিগ্রহণ করে নেবে। দক্ষিণের সৈন্যরা যুদ্ধে পুরোপুরি পরাস্ত হয়ে পড়বে। এমনকি দক্ষিণের বীর সৈন্যরাও তাদের শক্তি দিয়ে উত্তরের সৈন্যদের ঠেকাতে পারবে না।
16 “উত্তরের রাজা যা খুশী তাই করতে পারবে। কেউ তাকে থামাতে সক্ষম হবে না। তার হাতে সুন্দর দেশটির ক্ষমতা থাকবে। এবং এই দেশ ধ্বংস করার মতো যথেষ্ট শক্তি তার হাতে থাকবে। 17 উত্তরের রাজা দক্ষিণের রাজাকে পরাজিত করবার জন্য তার রাজ্যের সমগ্র শক্তিকে আনতে স্থির করেছিল। দক্ষিণের রাজার সঙ্গে সে একটি চুক্তি করবে। এবং সেটা প্রতিপন্ন করতে তার এক কন্যাকে দক্ষিণের রাজার সঙ্গে বিয়ে দেবে। কিন্তু এই পরিকল্পনা কার্যকারী হবে না।
18 “এরপর উত্তরের রাজা সমুদ্র উপকুলবর্তী দেশগুলোর দিকে মনোযোগ দেবে। যুদ্ধে বেরিয়ে সে বেশ কিছু শহর জয় করবে। কিন্তু এরপর একজন সেনাধ্যক্ষ উত্তরের রাজার সমস্ত গর্ব চূর্ণ করে দেবে। সেই সেনাধ্যক্ষ উত্তরের রাজাকে লজ্জিত করে তুলবে।
19 “সেটি ঘটবার পর, উত্তরের রাজা পুনরায় তার নিজের দেশের দুর্গে ফিরে যাবে। কিন্তু সে দুর্বিপাকে পড়বে এবং মারা যাবে।
20 “উত্তরের রাজার অপসারণের পর তার স্থানে এক নতুন শাসক উঠে আসবে। ঐ শাসক তার প্রজাগণের কাছ থেকে কর সংগ্রহের জন্য তার সহকারীদের পাঠাবে। কিন্তু কয়েক বছর পরেই সেই শাসক ধ্বংস হবে। তবে সে যুদ্ধে মারা যাবে না।
21 “সেই শাসকের পর, আর একজন নতুন শাসক হবে। ঐ শাসক হবে অত্যন্ত নিষ্ঠুর এবং হীণমন্য ব্যক্তি। ঐ ব্যক্তি রাজকীয় পরিবারের সম্মান পাবে না। সে চাটুকারিতার কৌশল অবলম্বন করে শাসক হয়ে যাবে। সে এমন একটা সময় শাসক হবে যখন সেখানে শান্তি আছে। 22 সে বিশাল সৈন্যবাহিনীকে, এমনকি চুক্তির নেতাকেও পরাজিত করবে। 23 অনেক দেশ সেই নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত করবে। কিন্তু তাদের সাথেও সে চাতুরী করবে। মিথ্যে বলে তাদের প্রতারিত করবে। সে শক্তি সঞ্চয় করবে কিন্তু সামান্য কিছু মানুষ তাকে সমর্থন করবে।
24 “সেই শান্তির সময়, সে ধনী দেশগুলিতে আসবে। তার পূর্বপুরুষরা যা করেননি এমন সব জিনিষ সে করবে। সে ধনী দেশগুলির শাসকদের বহু উপহার এবং মূল্যবান জিনিষ দেবে। সে তাদের দুর্গগুলি পরাজিত করবার পরিকল্পনা করবে। পরাজিত রাষ্ট্রগুলি থেকে সে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে এসে তার অনুগামীদের হাতে সেগুলি তুলে দেবে। দুর্ভেদ্য ও কঠিন শহরগুলিকেও পরাজিত করার পরিকল্পনা করবে ঐ শাসক। কিছু সময়ের জন্য সে সফল হবে।
25 “সেই অতি নিষ্ঠুর এবং ঘৃণ্য শাসকের বিশাল সেনাবাহিনী থাকবে। সে তার শক্তি দেখানোর জন্য ঐ সেনাবাহিনী নিয়ে দক্ষিণের রাজাকে আক্রমণ করবে। দক্ষিণের রাজাও এক বিশাল সেনাবাহিনী সংগঠিত করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কিন্তু রাজার বিরুদ্ধে থাকা কয়েক জনের গোপন পরিকল্পনায় দক্ষিণের সেই যুদ্ধে রাজা পরাজিত হবে। 26 দক্ষিণের রাজার বন্ধুবেশী শত্রুরাই ষড়যন্ত্র করে তাকে যুদ্ধে পরাজিত করবে। দক্ষিণের রাজার অধিকাংশ সৈন্য যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যাবে। 27 উভয় রাজাই পরস্পরের ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে। এক টেবিলে বসেও দুজন দুজনকে মিথ্যে কথা বলবে। কিন্তু তাদের মিথ্যাগুলি তাদের কোন কাজেই আসবে না। কিন্তু ঈশ্বর ইতিমধ্যে তাদের অপসারণের সময় ঠিক করে রেখেছেন।
28 “উত্তরের রাজা অনেক ধনসম্পদ নিয়ে নিজের দেশে ফিরে যাবে। তখন সে, যারা পবিত্র চুক্তি মানে তাদের ক্ষতি করার পরিকল্পনা করবে এবং নিজের দেশে ফিরে যাবে।
29 “সঠিক সময় উত্তরের রাজা পুনরায় দক্ষিণের রাজাকে আক্রমণ করবে। কিন্তু এইবার সে আগের বারের মতো সাফল্য পাবে না। 30 পশ্চিম থেকে সমস্ত যুদ্ধ জাহাজগুলি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য ছুটে আসবে। সে পবিত্র চুক্তির বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখাবে এবং যারা পবিত্র চুক্তি মানা বন্ধ করেছে তাদের সাহায্য করবে। 31 উত্তরের রাজা জেরুশালেমের মন্দির নষ্ট করতে তার সৈন্যবাহিনীকে পাঠাবে। মন্দিরে নিত্য নৈবেদ্য দিতে আসা লোকেদের সেনারা থামিয়ে দেবে। তারা মন্দিরের ভেতরে সেই ভয়ঙ্কর জিনিষটি রাখবে, যেটি ধ্বংসের কারণ।
32 “উত্তরের রাজা ইহুদীদের দেখতে পাবেন যারা পবিত্র চুক্তির বিরোধী। তিনি তাঁর ভান, ছল-চাতুরী এবং অবিরাম মিথ্যা দ্বারা তাদের সমর্থন পাবেন। কিন্তু যে সকল ইহুদীরা তাদের ঈশ্বরকেই শক্তিমান বলে বিশ্বাস করবেন তারাই শক্তিশালী হয়ে উঠে পুনরায় যুদ্ধ করতে সক্ষম হয়ে উঠবে।
33 “ঐ সকল জ্ঞানী শিক্ষক অন্যদের কি ঘটছে তা বোঝাতে সাহায্য করবে। কিন্তু এই ধর্মবিশ্বাসের জন্য তাদের নির্যাতন সহ্য করতে হবে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে তরবারির আঘাতে হত্যা করা হবে। কয়েক জনকে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে এবং আরো কয়েক জনকে কারাগারে বন্দী করা হবে। তাদের মধ্যে কয়েক জনের ঘরবাড়ি লুঠ করা হবে। 34 যখন সাধারণ লোক হোঁচট খায় তখন জ্ঞানী শিক্ষকরা অল্প সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েক জন, যারা তাদের সঙ্গে যোগ দেবে তারা হবে কপটাচারী। 35 কয়েকজন জ্ঞানী মানুষ হোঁচট খাবে এবং ভুল করবে। তারা শাস্তি পাবে, কিন্তু এটা তাদের ভালো লোক করে দেবে। কারণ যাতে তারা শেষ সময়ে নিজেদের খাঁটি, শক্তিশালী এবং ত্রুটিহীন করে গড়ে তুলতে পারে। তখন, সঠিক সময়, সেই সময়ের সমাপ্তি আসবে।
যে রাজা নিজেই নিজের প্রশংসায় পঞ্চমুখ
36 “উত্তরের রাজা যা চায় তাই করতে পারবে। সে নিজেই নিজের কাজের বড়াই করে বেড়ায়। সে নিজের প্রশংসায় নিজে এতোই অন্ধ যে নিজেকে সে ঈশ্বরের থেকেও বড় মনে করে। সে যা বলে তা আর কেউ কোনদিন শোনেনি। সে ঈশ্বর সম্পর্কে যা তা বলে বেড়ায়। যতক্ষণ পর্যন্ত না ঈশ্বর স্থির করবেন যে এই ভয়ানক সময় শেষ হবে, উত্তরের রাজা এ ব্যাপারে সফল হবেন। কারণ কি ঘটতে যাচ্ছে তা ঈশ্বর পূর্বেই পরিকল্পনা করে রেখেছেন।
37 “উত্তরের রাজা তার পূর্বপুরুষদের দেবতাদেরও মানবে না। স্ত্রীলোকদের কামনার দেবতার মূর্ত্তিকেও সে মানবে না। সে কোন দেবতাকেই গুরুত্ব দেবে না। সে শুধু নিজের গুণগান গেয়ে বেড়াবে আর নিজেকে সমস্ত দেবতাদের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে। 38 উত্তরের রাজা দুর্গগুলির দেবতা ব্যতীত আর কোন ঈশ্বরের উপাসনা করবে না। কিন্তু উত্তরের রাজা দুর্গসমূহের দেবতাদের উপহারস্বরূপ সোনা, রূপা এবং মণিমানিক্য দেবে এবং তাঁকে সম্মান জানাবে। এই দেবতা তার পূর্বপুরুষদের অজ্ঞাত ছিল।
39 “উত্তরের রাজা ঐ অজ্ঞাত বিদেশী দেবতার সাহায্য নিয়ে দৃঢ় দুর্গগুলিকে আক্রমণ করবে। অন্যান্য দেশের শাসকগণ তার সাথে যোগ দিলে সে তাদের সম্মানিত করবে। সে তার অনেক প্রজাকে ঐ সকল শাসকদের সেবায় নিয়োজিত করবে। শাসকদের পারিতোষিক হিসেবে অনেক জমিজমা দিয়ে দেবে।
40 “অবশেষে দক্ষিণের রাজা উত্তরের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। উত্তরের রাজাই তাকে আক্রমণ করবে। উত্তরের রাজা রথসমূহ, অশ্বারোহী মানুষ এবং যুদ্ধ জাহাজসমূহ দিয়ে আক্রমণ করবে। উত্তরের রাজার সৈন্যরা বন্যার জলের মতো প্রবাহিত হবে। 41 উত্তরের রাজা সুন্দর দেশকে আক্রমণ করবে। উত্তরের রাজার কাছে অনেক দেশ পরাজিত হবে। কিন্তু ইদোম ও মোয়াব এবং অম্মোন দেশের নেতৃবৃন্দ উত্তরের রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবে। 42 উত্তরের রাজা অনেক দেশ আক্রমণ করবে। এমনকি মিশরও উত্তরের রাজার হাত থেকে রক্ষা পাবে না। 43 মিশরের সমস্ত সোনা, রূপো ও ধনসম্পদ তার হস্তগত হবে। লুবীয়রা এবং কূশীয়রা তার অনুচর হবে। 44 কিন্তু পূর্ব ও উত্তর দেশ থেকে আসা খবর শুনতে পেয়ে উত্তরের রাজা ভীত হয়ে পড়বে এবং সে রাগ করবে। সে অনেকগুলি দেশকে পুরোপুরি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ক্রুদ্ধ হয়ে যাত্রা শুরু করবে। 45 সে সমুদ্র ও সুন্দর পবিত্র পর্বতের মাঝখানে তার রাজকীয় তাঁবু খাঁটাবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐ নিষ্ঠুর রাজার মৃত্যু ঘটবে। তার মৃত্যুর সময় তাকে সাহায্য করার জন্য সেখানে কোন ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে না।
দালৎ
25 আমি খুব শীঘ্রই মারা যাবো।
প্রভু আপনি আজ্ঞা দিন এবং আমাকে বাঁচতে দিন।
26 আমার জীবন সম্পর্কে আমি আপনাকে বলেছি এবং আপনি আমায় উত্তর দিয়েছেন।
এখন আমাকে আপনার বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দিন।
27 প্রভু আপনার বিধি বুঝতে আমায় সাহায্য করুন।
যে সব আশ্চর্য কার্য আপনি করেছেন তা আমায় বলতে দিন।
28 আমি দুঃখী এবং শ্রান্ত।
আপনি আজ্ঞা করুন এবং আমি আবার শক্তিশালী হয়ে উঠবো।
29 হে প্রভু, আমাকে ওই প্রবঞ্চনাময় জীবন থেকে দূরে রাখুন।
আপনার শিক্ষামালা দিয়ে আমায় পরিচালিত করুন।
30 হে প্রভু, আমি আপনার প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে স্থির করেছি।
অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে আমি আপনার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তসমূহ অনুধাবন করি।
31 হে প্রভু, আপনার চুক্তিতে আমি নিশ্চল থাকবো।
অতএব আমাকে হতাশ করবেন না।
32 আমি আনন্দের সঙ্গে আপনার আজ্ঞাগুলো মানবো।
প্রভু আপনার আজ্ঞাগুলো আমায় সুখী করে।
হে
33 প্রভু, আমাকে আপনার বিধি শিক্ষা দিন,
আমি সেগুলো মেনে চলবো।
34 আমাকে বুঝতে সাহায্য করুন, আমি আপনার শিক্ষামালাগুলো মানবো।
আমি সম্পূর্ণভাবে সেগুলো পালন করবো।
35 হে প্রভু, আপনার আজ্ঞাসমুহের পথে আমায় পরিচালিত করুন।
জীবনের সেই পথ আমি সত্যিই ভালোবাসি।
36 কি করে ধনী হওয়া যায় সেই চিন্তার থেকে,
আপনার চুক্তি সম্পর্কে চিন্তা করতে আমায় সাহায্য করুন।
37 প্রভু, অসার বিষয়ের দিকে আমাকে তাকাতে দেবেন না।
আপনার পথে বাঁচতে আমায় সাহায্য করুন।
38 আপনার দাসের জন্য যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা পালন করুন,
যার ফলে লোকরা আপনাকে শ্রদ্ধা করে।
39 যে লজ্জাকে আমি ভয় পাই তা আপনি নিরসন করুন।
আপনার সিদ্ধান্তগুলি জ্ঞানগর্ভ এবং ভালো।
40 দেখুন আমি আপনার আজ্ঞাগুলো ভালোবাসি।
আমার প্রতি ভালো ব্যবহার করুন এবং আমায় বাঁচতে দিন।
বৌ
41 প্রভু, আমার প্রতি আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন।
আপনার প্রতিশ্রুতি মত আমায় রক্ষা করুন।
42 তাহলে যে লোকরা আমায় অপমান করেছে তাদের জন্য আমি একটা উত্তর খুঁজে পাবো।
প্রভু আপনি যা বলেন প্রকৃতই আমি তা বিশ্বাস করি।
43 আপনার সত্য শিক্ষা সম্পর্কে আমাকে সর্বদাই বলতে দিন।
প্রভু, আমি আপনার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করি।
44 প্রভু, আমি চিরদিন আপনার শিক্ষামালাগুলো অনুসরণ করবো।
45 তাহলে আমি মুক্ত হবো।
কেন? কারণ আপনার বিধি পালন করতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করি।
46 এমন কি রাজাদের সামনেও
আমি নির্ভয়ে আপনার নীতি কি বলে সে সম্বন্ধে বলব।
47 হে প্রভু, আপনার আজ্ঞাগুলি আমি ভালবাসি
এবং ওগুলোতে আমি আনন্দ পাই।
48 প্রভু, আপনার আজ্ঞাগুলোর প্রশংসা করি।
আমি সেগুলোকে ভালোবাসি এবং সেগুলো অনুধাবন করি।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International