Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
2 রাজাবলি 6

ইলীশায় আর কুড়ুলের বৃত্তান্ত

তরুণ ভাববাদীরা ইলীশায়কে বলল, “আমরা ওখানে যে জায়গায় থাকি সেটা আমাদের পক্ষে বড্ড ছোট। চলুন যর্দন নদীর তীর থেকে কিছু কাঠ কেটে আনা যাক। আমরা প্রত্যেকে একটা করে গুঁড়ি নিয়ে এসে ওখানেই একটা থাকার জায়গা বানানো যাক।”

ইলীশায় বললেন, “বেশ তো, যাও না।”

ওদের একজন বললো, “আপনিও চলুন না আমাদের সঙ্গে।”

ইলীশায় বললেন, “ঠিক আছে, চলো আমিও যাচ্ছি।”

ইলীশায় তখন ওদের সঙ্গে যর্দন নদীর তীরে গেলেন। সেখানে গিয়ে তরুণ ভাববাদীরা সবাই গাছ কাটতে শুরু করলো। গাছ কাটার সময় একজনের কুড়ুলের লোহার ডগাটা হাতল থেকে পিছলে গিয়ে একেবারে জলে গিয়ে পড়লো। লোকটা চেঁচিয়ে উঠলো, “যাঃ! এখন কি হবে? প্রভু, আমি যে অন্য লোকের কুড়ুল ধার করে এনেছিলাম!”

ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “ঠিক কোথায় পড়েছে ওটা?”

লোকটা ইলীশায়কে জায়গাটা দেখানোর পর, তিনি একটা ছড়ি কেটে সেটা জলে ছুঁড়ে ফেললেন। এতে কুড়ুলের মাথাটা সেই ছড়ির সঙ্গে ভেসে উঠলো! ইলীশায় বললেন, “যাও ওটা তুলে নাও এবার।” কৃতজ্ঞ চিত্তে লোকটি কুড়ুলের মাথাটা তুলে নিল।

অরামের ইস্রায়েলকে ফাঁদে ফেলার চক্রান্ত

অরামের রাজা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। তিনি তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একটি পরিষদীয় বৈঠক করলেন। তিনি বললেন, “আমি একটি নির্দিষ্ট জায়গায় শিবির স্থাপন করব।”

কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি ইস্রায়েলের রাজাকে একটি খবর দিয়ে সতর্ক করে দিলেন, “ওখান দিয়ে যাতায়াত করো না! খুব সাবধান! কারণ ওখানে অরামীয় সেনাবাহিনীর লোকরা লুকিয়ে আছে!”

10 খবর পেয়ে ইস্রায়েলের রাজা সঙ্গে সঙ্গে যে জায়গা সম্পর্কে ইলীশায় তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, তাঁর লোকদের জানিয়ে দিলেন এবং তিনি তাঁর বাহিনীর অনেকের জীবন রক্ষা করতে পারলেন।

11 এঘটনায় অরামের রাজা খুবই বিচলিত হয়ে তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধানদের এক বৈঠকে ডেকে বললেন, “এখানে ইস্রায়েলের হয়ে কে গুপ্তচরের কাজ করছে বল?”

12 তখন অরামীয় সেনাপ্রধানদের একজন বললেন, “আমার মনিব এবং রাজা, আমাদের মধ্যে কেউই গুপ্তচর নয়! ইস্রায়েলের ভাববাদী ইলীশায়, ইস্রায়েলের রাজাকে অনেক গোপন খবরই দৈববলে জানিয়ে দিতে পারেন। এমন কি আপনি শোবার ঘরে যে সব কথাবার্তা বলেন তাও উনি জানতে পারেন!”

13 অরামের রাজা বললেন, “আমি লোক পাঠাচ্ছি। এই ইলীশায়কে খুঁজে বার করতেই হবে!”

ভৃত্যরা রাজাকে খবর দিল, “ইলীশায় এখন দোথনে আছেন!”

14 অরামের রাজা তখন রথবাহিনী, ঘোড়া ইত্যাদি সহ সেনাবাহিনীর একটা বড় দল দোথনে পাঠালেন। তারা রাতারাতি সেখানে এসে শহরটাকে চারপাশ দিয়ে ঘিরে ফেললো। 15 সেই দিন, ঈশ্বরের লোকটির ভৃত্য খুব ভোরে উঠে পড়ল, বাইরে গিয়ে দেখে ঘোড়া রথসহ বিরাট এক সেনাবাহিনী শহরের চারপাশ ঘিরে আছে!

সে ছুটে গিয়ে ঈশ্বরের লোককে জিজ্ঞেস করল, “প্রভু আমরা এখন কি করব?”

16 ইলীশায় বললেন, “ভয় পেও না! আমাদের জন্য যে সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে তা অরামের সেনাবাহিনীর থেকে অনেক বড়!”

17 ইলীশায় তারপর প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু, আমার ভৃত্যের চক্ষু উন্মিলীত কর যাতে ও দেখতে পায়।”

যেহেতু প্রভু সেই তরুণ ভৃত্যকে অলৌকিক দৃষ্টি দিলেন, ও দেখতে পেল, গোটা শহরটা শত সহস্র ঘোড়া আর আগুনের রথে ভরে রয়েছে! ইলীশায়কে ঘিরে আছে এই বাহিনী।

18 এই সুবিশাল বাহিনী ইলীশায়ের আদেশের অপেক্ষায় নেমে এলে, তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “তুমি ঐসব সেনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নাও।”

ইলীশায়ের প্রার্থনা মতো প্রভু তখন অরামীয় সেনাবাহিনীর দৃষ্টিশক্তি হরণ করলেন। 19 ইলীশায় অরামীয় সেনাবাহিনীকে ডেকে বললেন, “এটা সঠিক পথ বা শক্ত শহর নয়। আমার সঙ্গে সঙ্গে এসো। তোমরা যাকে খুঁজছো, আমি তোমাদের তার কাছে পৌঁছে দেব চল।” একথা বলে ইলীশায় তাদের শমরিয়ায় নিয়ে গেলেন।

20 শমরিয়ায় পৌঁছনোর পর ইলীশায় বললেন, “প্রভু এবার ওদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দাও যাতে ওরা আবার দেখতে পায়।”

প্রভু তখন তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিলে অরামীয় সেনাবাহিনী দেখলো তারা সকলে শমরিয়া শহরের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। 21 ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীকে দেখার পর ইলীশায়কে জিজ্ঞেস করলেন, “হে আমার পিতা, আমি কি এদের হত্যা করব?”

22 ইলীশায় বললেন, “না, ওদের তুমি হত্যা করো না। যুদ্ধে তরবারি আর তীর-ধনুকের বলে যাদের তুমি বন্দী করবে, তাদের হত্যা করবে না। অরামীয় সেনাদের এখন রুটি আর জল পান করতে দাও। খাওয়া-দাওয়া হলে ওদের রাজার কাছে ওদের বাড়ীতে ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিও।”

23 তখন ইস্রায়েলের রাজা অরামীয় সেনাবাহিনীর জন্য অনেক খাবার বানালেন। অরামের সেনারা সে সব খাবার পর মহারাজ তাদের নিজেদের বাড়িতে ফেরৎ‌ পাঠিয়ে দিলেন। অরামীয় সেনাবাহিনী তাদের মনিবের কাছে দেশে ফিরে গেল। এরপর আর কখনও অরামীয়রা লুঠপাট চালানোর জন্য ইস্রায়েলে কোন সেনাবাহিনী পাঠায় নি।

শমরিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ

24 এই ঘটনার পর, অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী জড়ো করে শমরিয়া শহরকে ঘেরাও করে আক্রমণ করতে যান। 25 অরামীয় সেনারা লোকদের বাইরে থেকে শহরে খাবার আনতে দিচ্ছিল না। ফলে শমরিয়ায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হল। খাবারের দাম এতো বেশী ছিল যে গাধার মাথা কিনতে দিতে হচ্ছিল 80 টুকরো রৌপ্য মুদ্রা, এমনকি ঘুঘু পাখীর বিষ্ঠাও বিক্রি হচ্ছিল পাঁচ টুকরো রৌপ্য মুদ্রায়।

26 ইস্রায়েলের রাজা শহরের চারপাশের প্রাচীরের ওপর পায়চারি করছিলেন, হঠাৎ‌‌ এক মহিলা চেঁচিয়ে উঠলো, “হে রাজন, দয়া করে আমার প্রাণ বাঁচান!”

27 তখন ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “প্রভু যদি নিজে তোমাকে রক্ষা না করেন, আমি কি করতে পারি বল? তোমাকে দেবার মতো আমার কিছুই নেই। এমনকি শস্য মাড়াইয়ের জমিতেও কোন শস্য নেই বা দ্রাক্ষা পেষার যন্ত্র থেকেও দ্রাক্ষারস নেই।” 28 তা যাকগে, “তোমার সমস্যাটা কি বলো?”

মহিলা উত্তর দিলেন, “দেখুন ঐ মহিলাটি আমায় বলেছিল, ‘আজকে তোমার ছেলেটাকে দাও, মেরে খাওয়া যাক। কাল আমারটাকে খাওয়া যাবে।’ 29 তখন আমরা আমার ছেলেটাকে সেদ্ধ করে খেলাম। আর পরের দিন আমি খাবার জন্য ওর ছেলেটাকে আনতে গিয়ে দেখি, ও ওর ছেলেটাকে লুকিয়ে ফেলেছে!”

30 একথা শুনে রাজা অত্যন্ত মনোকষ্টে, শোক প্রকাশের জন্য নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন। দেওয়ালের ওপর দিয়ে যাবার সময়, লোকরা দেখতে পেল মহারাজ তাঁর পোশাকের তলায় শোক প্রকাশের চটের জামা পরে আছেন।

31 রাজা তখন মনে মনে বললেন, “এসবের পরেও যদি আজ বিকেল পর্যন্ত শাফটের পুত্র ইলীশায়ের ধড়ে মুণ্ডুটা আস্ত থাকে, তবে যেন ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দেন!”

32 রাজা ইলীশায়ের কাছে একজন বার্তাবাহক পাঠালেন। ইলীশায় আর প্রবীণরা তখন ইলীশায়ের বাড়ীতে এক সঙ্গে বসেছিলেন। ইলীশায় প্রবীণদের বললেন, “দেখো খুনীর বেটা রাজা, আমার মুণ্ডু কাটার জন্য লোক পাঠিয়েছে! দূত এলে দরজাটা বন্ধ করে দিও, ওকে কিছুতেই ভেতরে ঢুকতে দেবে না। ওর পেছন পেছন ওর মনিবের পায়ের আওয়াজ পাচ্ছি আমি!”

33 ইলীশায় যখন এসব কথাবার্তা বলছেন, বার্তাবাহক খবরটা নিয়ে পৌঁছল। খবরটা হল: “প্রভু যখন স্বয়ং এই বিপদ ডেকে এনেছেন তখন আমি কেন আর প্রভুর ওপর বিশ্বাস রাখব?”

1 তীমথিয় 3

মণ্ডলীর নেতারা

একথা সত্য, যদি কেউ মণ্ডলীর তত্ত্বাবধায়কের কাজে আগ্রহী হন, তবে তিনি এক উত্তম কাজ আশা করেন। তত্ত্বাবধায়ককে অতি অবশ্যই সমালোচনার উর্দ্ধে থাকতে হবে। তিনি এক স্ত্রীর স্বামী হবেন। তাঁকে হতে হবে আত্মসংযমী, ভদ্র, সম্মানীয়, অতিথিসেবক এবং শিক্ষাদানে পারদর্শী মানুষ। প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করা তাঁর উচিত হবে না। তিনি উগ্রপ্রকৃতির মানুষও হবেন না। তিনি হবেন ভদ্র ও শান্তিপ্রিয়। অর্থের প্রতি তাঁর লোভ থাকবে না। তাঁকে এমনই মানুষ হতে হবে যিনি নিজের ঘর সংসার সুষ্ঠভাবে চালাতে পারেন, নিজের ছেলেমেয়েদের সুশাসনে রাখতে পারেন যাতে তিনি তাদের ভক্তি শ্রদ্ধা পান। কেউ যদি নিজের সংসার চালনা করতে না জানে, তবে সে কেমন করে ঈশ্বরের মণ্ডলীর তত্ত্বাবধান করবে?

কোন নবদীক্ষিত শিষ্য যেন মণ্ডলীর তত্ত্বাবধায়ক না হয়। এতো শীঘ্রই তাকে এই কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে ভেবে সে হয়তো অহঙ্কারী হয়ে উঠবে। তখন দিয়াবলের মতো তার গর্বের জন্য তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে; আর বাইরের লোকদের কাছেও তার সুনাম থাকা দরকার, যাতে সে কোনভাবে অপদস্থ না হয় এবং শয়তানের ফাঁদে না পড়ে।

মণ্ডলীর পরিচারক

সেইরকম পরিচারকদেরও সকলের শ্রদ্ধা পাবার যোগ্য মানুষ হতে হবে। তারা যেন এক কথার মানুষ হয়, মাত্রা ছাড়িয়ে দ্রাক্ষারস পান না করে, অপরকে ঠকিয়ে ধনী হবার চেষ্টা না করে। তারা যেন নির্মল বিবেক সম্পন্ন হয় এবং খ্রীষ্টীয় ধর্ম বিশ্বাসের প্রকাশিত গভীর সত্যগুলি নিয়ে আঁকড়ে থাকে। 10 প্রথমে তাদের যাচাই করা হোক্। যদি তাদের মধ্যে নিন্দনীয় কিছু না থাকে, তাহলেই তারা পরিচারকরূপে সেবা করতে পারবে।

11 সেইভাবে মণ্ডলীতে মহিলাদেরও সকলের শ্রদ্ধেয়া হতে হবে। তাঁরা যেন অপরের নামে কুৎসা না রটান, যেন মিতাচারী ও সব ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য হন।

12 মণ্ডলীর পরিচারকদের যেন একটি মাত্র স্ত্রী থাকে, তারা যেন ভালভাবে তাদের সন্তানদের পালন করতে ও সংসার পরিচালনা করতে পারে। 13 কারণ যে পরিচারকরা ভালভাবে কাজ করে, তারা সুনাম অর্জন করে এবং খ্রীষ্ট যীশুতে তাদের বিশ্বাসে সাহসী হয়ে ওঠে।

আমাদের জীবনের নিগূঢ়তত্ত্ব

14 যদিও আমি আশা করছি শীঘ্রই তোমাদের কাছে যাব তবু তোমাদের এসব লিখলাম। 15 কারণ যদি আমার দেরী হয়, তাহলে যেন তোমরা জানতে পার যে ঈশ্বরের পরিবারের মধ্যে কেমন আচার আচরণ করতে হয়, যা জীবন্ত ঈশ্বরের মণ্ডলী—এই মণ্ডলী হল সত্যের স্তম্ভ ও দৃঢ় ভিত। 16 একথা কেউই অস্বীকার করতে পারে না যে আমাদের ধর্মের নিগূঢ় সত্য অতি মহান:

খ্রীষ্ট মনুষ্য দেহে প্রকাশিত হলেন,
পবিত্র আত্মার শক্তিতে যথার্থ প্রতিপন্ন হলেন,
স্বর্গদূতরা তাঁর দর্শন পেলেন।
সর্বজাতির মধ্যে তাঁর সুসমাচার প্রচারিত হল,
জগতের মানুষ তাঁর প্রতি বিশ্বাসী হয়ে উঠল,
পরে স্বমহিমায় তিনি স্বর্গে উন্নীত হলেন।

দানি 10

হিদ্দেকল নদীর দ্বারা দানিয়েলের স্বপ্নদর্শন

10 পারস্যের রাজা ছিলেন কোরস। রাজা কোরসের রাজত্বের তৃতীয় বছরে দানিয়েল ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি বার্তা পান। (দানিয়েলের অপর নাম হল বেলটশত্‌সর।) এই বার্তাটি খুবই সত্য। দানিয়েল বার্তাটি বুঝতে খুব কষ্ট করলেন এবং অবশেষে তিনি দর্শনটি বুঝতে পারলেন।

দানিয়েল বললেন, “বার্তাটি যখন আমার কাছে এলো, তখন আমি তিন সপ্তাহের জন্য যে ব্যক্তির বন্ধু অথবা পরিবার মারা গেছে, তার মত শোক করছিলাম। ঐ তিন সপ্তাহ কালের মধ্যে আমি কোন সুস্বাদু খাবার খাইনি, মাংস ভোজন করিনি, দ্রাক্ষারস পান করিনি, মাথায় তেল মাখিনি।”

প্রথম মাসের 24তম দিনে আমি হিদ্দেকল মহানদীর তীরে দাঁড়িয়েছিলাম। সেখানে দাঁড়ানোর সময় চোখ মেলে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলাম ক্ষৌমবস্ত্র পরিহিত এবং কোমরে খাঁটি সোনার কোমর বন্ধনী পরিহিত একজন ব্যক্তি আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার শরীর ছিল মসৃণ ও উজ্জ্বল পাথরের মতো। তার মুখমণ্ডল ছিল বিদ্যুৎপ্রভার মত। তার দুটি চোখই ছিল আগুনের জ্বলন্ত শিখা। তার বাহুদ্বয় এবং পদযুগল ছিল উজ্জ্বল পিতলের মতো। তার স্বর ছিল যেন হাজার লোকের মিলিত কোলাহল।

আমি, দানিয়েল, একমাত্র ব্যক্তি যে ঐ স্বপ্নদর্শন দেখতে পেয়েছিলাম। আমার সঙ্গীরা সেই স্বপ্নদর্শন থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, কিন্তু তারা ভীত হয়েছিল। তারা ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে লুকিয়ে পড়েছিল। তাই আমি একাই ঐ স্বপ্নদর্শন করেছিলাম। আমি আমার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমার মুখ মৃত মানুষের মুখের মত সাদা হয়ে গিয়েছিল এবং আমি অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। তখন আমি শুনতে পেলাম যে ঐ ব্যক্তিটি স্বপ্নদর্শনের মাধ্যমে কথা বলছে। আমি তার স্বর শোনার পরেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিলাম।

10 তখন একটি হাত আমাকে স্পর্শ করেছিল। এটা যখন ঘটল তখন আমি আমার হাত এবং হাঁটুর ওপরে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। আমি এত ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে আমি ভয়ে কাঁপছিলাম। 11 স্বপ্নদর্শনে মানুষটি আমাকে বলে উঠলেন, “দানিয়েল, তোমাকে ঈশ্বর খুব ভালবাসেন। যে কথাগুলি আমি তোমাকে বলব সেগুলি নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করবে এবং বুঝে নেবে। উঠে দাঁড়াও, আমাকে এই জন্যই তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে।” এবং যখন সে এই কথাগুলি বললেন, আমি উঠে দাঁড়ালাম। যদিও তখন আমি ভয়ে কাঁপছিলাম। 12 তখন সেই লোকটি স্বপ্নদর্শনের মধ্যে দিয়ে আবার কথা বলতে শুরু করলেন। তিনি আমাকে বললেন, “দানিয়েল, ভয় পেও না। একেবারে প্রথম থেকেই যখন তুমি বুঝতে চেষ্টা করেছিলে এবং ঈশ্বরের সামনে নিজেকে বিনয়ী করেছিলে, ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছিলেন। তা সত্ত্বেও, তোমার প্রার্থনার সাড়া দিয়ে আমি আসতে শুরু করেছিলাম। 13 কিন্তু পারস্যের যুবরাজ 21 দিন ধরে আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। সে আমাকে তোমার কাছে আসা থেকে বিরত করেছিল। তখন মীখায়েল নামের একজন গুরুত্বপূর্ণ যুবরাজ আমাকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলো। কারণ আমি সেখানে একা পারস্যরাজের দ্বারা আটকে পড়েছিলাম। 14 দেখ দানিয়েল, তোমার লোকদের ভবিষ্যতে কি হবে সেটা ব্যাখ্যা করবার জন্য আমি এসেছি। এই স্বপ্নদর্শন ভবিষ্যতের একটি সময়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।”

15 ঐ লোকটি আমার সঙ্গে কথা বলার সময় আমি আভূমি নত হয়েছিলাম। আমি কোন কথা বলতে পারছিলাম না। 16 তখন মানুষের মত দেখতে সেই একজন আমার ওষ্ঠ স্পর্শ করলেন এবং আমি আবার কথা বলতে সক্ষম হলাম। আমি আমার সামনে দাঁড়ানো সেই একজনের সঙ্গে কথা বললাম, “মহাশয়, আমি স্বপ্নদর্শনে যা দেখেছি তা নিয়ে খুব অস্থির এবং চিন্তিত। আমি অসহায় বোধ করছি। 17 মহাশয়, আমি দানিয়েল, আপনার ভৃত্য। আমার প্রভু, আমার মত একজন বিনীত লোক আপনার সঙ্গে কি করে কথা বলতে পারে? আমার সমস্ত শক্তি নিঃশেষিত এবং আমার পক্ষে নিঃশ্বাস নেওয়াটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

18 তখন মানুষের আকৃতি বিশিষ্ট সেই ব্যক্তি আমাকে পুনরায় স্পর্শ করলেন এবং আমি আগের থেকে ভাল অনুভব করতে থাকলাম। 19 তখন তিনি বললেন, “দানিয়েল ভয় পেও না। ঈশ্বর তোমাকে অত্যন্ত ভালবাসেন। তোমার কোন ক্ষতি হবে না। এখন শক্তিশালী হয়ে ওঠো।”

যখন তিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন তখন আমি সবল হয়ে উঠছিলাম। আমি বললাম, “মহাশয়, আপনি আমায় সবল করে তুললেন। এখন আপনি কথা বলতে পারেন।”

20 তখন তিনি বললেন, “দানিয়েল, তুমি কি জানো কেন আমি তোমার কাছে এসেছি? খুব শীঘ্রই আমি পারস্যের যুবরাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ফিরে যাব। যখন আমি যাব তখন যবনের যুবরাজ আসবে। 21 কিন্তু দানিয়েল, আমি যাবার আগে, আমাকে বিশদভাবে বলে যেতে হবে সত্য-গ্রন্থে কি লেখা আছে। ঐ সব দুষ্ট যুবরাজদের বিরুদ্ধে, এক মীখায়েল ছাড়া আর কেউই আমাকে সাহায্য করেনি। মীখায়েল হচ্ছে তোমার লোকদের ওপর শাসন কর্তা সেই যুবরাজ।

গীতসংহিতা 119:1-24

আলেফ

119 সেই সব লোক যারা সৎ‌ ও শুদ্ধ জীবনযাপন করে তারা সুখী।
    ওই সব লোক প্রভুর শিক্ষামালাকে অনুসরণ করে।
যারা প্রভুর চুক্তি মানে তারা সুখী।
    তারা সর্বান্তঃকরণ দিয়ে প্রভুকে মানে।
ওই সব লোক কোন মন্দ কাজ করে না।
    ওরা প্রভুকে মানে।
প্রভু, আপনি আমাদের আজ্ঞা দিয়েছেন
    এবং আপনি আমাদের ওই আজ্ঞাসমূহ পুরোপুরি মানতে বলেছেন।
প্রভু, সবসময় আমি যদি
    আপনার বিধি মানি,
তাহলে আমি যখন আপনার আদেশগুলি নিয়ে চিন্তা করব
    তখন আমি লজ্জিত হবো না।
তাহলে আমি প্রকৃতই আপনাকে সম্মান করতে পারবো,
    যখন আমি আপনার ন্যায্য বিধিগুলি সমীক্ষা করব।
প্রভু আমি আপনার আজ্ঞাগুলো পালন করবো
    তাই আমাকে ছেড়ে যাবেন না!

বৈৎ‌

একজন যুবক কি করে শুদ্ধ জীবনযাপন করবে?
    আপনার আদেশসমুহ মেনে সে এরকম করতে পারবে।
10 সমগ্র অন্তর দিয়ে আমি প্রভুর সেবা করতে চেষ্টা করি।
    ঈশ্বর, আপনার আজ্ঞা মানতে আমায় সাহায্য করুন।
11 আপনার শিক্ষামালা আমি যত্ন করে অনুধাবন করি,
    যাতে আমি আপনার বিরুদ্ধে পাপ না করি।
12 হে প্রভু, আপনি ধন্য।
    আপনার বিধিসমূহ আমায় শেখান।
13 আমি আপনার সব প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তের কথা বলবো।
14 আমি যে কোন জিনিসের চেয়ে
    আপনার চুক্তিসমুহ জানতে বেশী উপভোগ করি।
15 আমি আপনার নিয়মের আলোচনা করি।
    আমি আপনার জীবনধারা অনুসরণ করি।
16 আমি আপনার বিধিসমুহ উপভোগ করি।
    আপনার বাক্য আমি ভুলবো না।

গিমল

17 আপনার দাস, এই যে আমি, আমার প্রতি ভাল ব্যবহার করুন,
    যাতে আমি বেঁচে থাকতে পারি এবং আপনার আজ্ঞাসমুহ মানতে পারি।
18 প্রভু আমার চোখ খুলে দিন, আমাকে আপনার শিক্ষাসমুহ দেখতে দিন
    এবং যেসব আশ্চর্য কার্য আপনি করেছেন তা পাঠ করতে দিন।
19 প্রভু, এই দেশে আমি একজন বিদেশী।
    আমার কাছ থেকে আপনার শিক্ষাকে আড়াল করে রাখবেন না।
20 সব সময়েই আমি
    আপনার সিদ্ধান্তগুলো অনুধাবন করতে চাই।
21 প্রভু, আপনি অহঙ্কারী লোকদের সমালোচনা করেন।
    যারা আপনার আদেশগুলি মানতে অস্বীকার করে, তাদের ভাগ্যে মন্দ কিছু ঘটবে।
22 আমাকে লজ্জিত এবং বিব্রত করবেন না।
    আমি আপনার চুক্তি পালন করেছি।
23 নেতারা পর্যন্ত আমার সম্পর্কে মন্দ কথা বলেছে।
    কিন্তু প্রভু, আমি, আপনার দাস
    এবং আমি আপনার বিধিসমূহ অনুধাবন করি।
24 আপনার চুক্তি আমার নিকট বন্ধু।
    ওটি আমাকে ভালো উপদেশ দেয়।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International