M’Cheyne Bible Reading Plan
একজন ভাববাদীর বিধবা স্ত্রী ইলীশায়ের সাহায্য চাইলেন
4 একজন বিবাহিত ভাববাদীর মৃত্যু হলে তার স্ত্রী এসে ইলীশায়ের কাছে কেঁদে পড়লো, “আমার স্বামী অনুগত ভৃত্যের মতো আপনার সেবা করেছেন। কিন্তু এখন তিনি মৃত! আপনি জানেন আমার স্বামী প্রভুকে সম্মান করেন কিন্তু তিনি একজন পুরুষের কাছে টাকা ধার করেছিলেন। এখন সেই মহাজন ক্রীতদাস বানানোর জন্য আমার দুই পুত্রকে নিতে আসছে।”
2 ইলীশায় জিজ্ঞেস করলেন, “কিন্তু আমি কি করে তোমায় সাহায্য করবো? তোমার বাড়িতে কি আছে বলো?”
সেই স্ত্রীলোকটি বললো, “আমার বাড়িতে এক জালা তেল ছাড়া আর কিছুই নেই।”
3 তখন ইলীশায় বললেন, “যাও তোমার পাড়া প্রতিবেশীদের কাছ থেকে যতো পারো খালি বাটি জোগাড় করে নিয়ে এসো। 4 তারপর বাড়ি গিয়ে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দাও, ঘরে যেন তুমি আর তোমার পুত্ররা ছাড়া কেউ না থাকে। এরপর ঐ জালা থেকে তেল ঢেলে প্রত্যেকটা বাটি ভর্ত্তি করে আলাদা আলাদা জায়গায় সরিয়ে রাখো।”
5 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বাড়ী ফিরে গিয়ে সমস্ত দরজা বন্ধ করে দিল। সে আর তার পুত্ররাই শুধুমাত্র ঘরে ছিল। পুত্ররা একটার পর একটা বাটি আনছিল। 6 স্ত্রীলোকটি সেগুলোতে তেল ঢালছিল। এমনি করে করে বহু পাত্র ভরা হল। অবশেষে সে তার পুত্রদের বললো, “আমাকে আর একটি বাটি এনে দাও।”
তার এক পুত্র তাকে বললো, “আর তো বাটি নেই।” তৎক্ষণাৎ জালার তেল ফুরিয়ে গেল।
7 স্ত্রীলোকটি গিয়ে ঈশ্বরের লোক, ইলীশায়কে একথা জানালো। ইলীশায় তাকে বললেন, “যাও, তেল বিক্রি করে দেনা মিটিয়ে ফেলো। যা বাকী টাকা থাকবে তাতে তোমার আর তোমার পুত্রদের জন্য যথেষ্ট হবে।”
শূনেমের এক মহিলা ইলীশায়কে থাকতে ঘর দিল
8 ইলীশায় যখন একদিন শূনেমে যান, সেখানকার এক ধনবতী মহিলা তাঁকে নিজের বাড়িতে খাবার জন্য নেমন্তন্ন করল। এরপর থেকে ইলীশায় ওখান দিয়ে গেলেই ঐ মহিলার বাড়িতে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতেন।
9 সেই মহিলা তাঁর স্বামীকে বলল, “আমি জানি ইনি ঈশ্বরের একজন পবিত্র মানুষ। সব সময়ই তিনি আমাদের বাড়ির সামনে দিয়ে যাতায়াত করেন। 10 চলো না, ওঁর জন্য ছাদে একটা ছোটো ঘর তুলে দিই। সেখানে একটা বিছানা, টেবিল, চেয়ার আর বাতিদান রেখে দেব। তাহলে এরপর যখন তিনি আমাদের বাড়ি আসবেন ঐ ঘরখানা নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।”
11 এক দিন ইলীশায় এই মহিলার বাড়ীতে এলেন, তিনি কক্ষে গিয়ে বিশ্রাম নিলেন। 12 ইলীশায় তাঁর ভৃত্য গেহসিকে বললেন, “ঐ শূনেমীয় মহিলাটিকে ডাক।”
ভৃত্যটি মহিলাকে ডেকে আনার পর, সে সামনে দাঁড়ালে ইলীশায় 13 তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “ওকে বলো, ‘দেখো তুমি আমাদের দুজনের যত্ন নেবার জন্য তোমার যথাসাধ্য করেছো। এখন আমরা তোমার জন্য কি করতে পারি? আমরা কি তোমার হয়ে রাজা বা সেনাপতির কাছে কিছু বলবো?’”
তখন মহিলা উত্তর দিল, “আমি এখানে আমার আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে দিব্যি আছি।”
14 ইলীশায় তখন গেহসিকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমরা তাহলে ওর জন্য কি করতে পারি?”
গেহসি উত্তর দিলো, “দাঁড়ান, আমি যতদূর জানি এই মহিলার কোনো পুত্র নেই আর ওঁর স্বামীরও যথেষ্ট বয়স হয়েছে।”
15 ইলীশায় বললেন, “ওকে ডেকে নিয়ে এসো।” গেহসি তখন সেই মহিলাকে ডাকতে গেলো। মহিলা এসে দরজার কাছে দাঁড়ালে 16 গেহসি তাকে বলল, “প্রায় একই সময়, আগামী বছর তুমি তোমার নিজের পুত্রকে আদর করবে।”
একথা শুনে মহিলাটি বলল, “হে প্রভু, আমার সঙ্গে মিথ্যে ছলনা করবেন না!”
শূনেমের মহিলার একটি সন্তান লাভ
17 ইলীশায়ের কথা মতোই, পরের বছর সেই মহিলা তার পুত্র সন্তানের জন্ম দিল।
18 ছেলেটি বড় হবার পর একদিন মাঠে তার পিতার ও অন্যদের সঙ্গে শস্য কাটা দেখতে গেল। 19 সেখানে গিয়ে ছেলেটা হঠাৎ বলে উঠল, “ওফ্ আমার বড্ড মাথা ব্যথা করছে!”
তার পিতা ভৃত্যদের বলল, “ওকে তাড়াতাড়ি ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাও!”
20 ভৃত্যরা ছেলেটিকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবার পর ও দুপুর পর্যন্ত মায়ের কোলে বসে থেকে তারপর মারা গেল।
মহিলাটি ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন
21 মহিলাটি তখন মৃত ছেলেটিকে ইলীশায়ের ঘরে তাঁর বিছানায় শুইয়ে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে এল। 22 স্বামীকে ডেকে বলল, “ওগো, আমায় একটা গাধা আর একজন ভৃত্য দাও। আমি একবার তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের লোকের কাছ থেকে ঘুরে আসি।”
23 মহিলার স্বামী বলল, “আজ কেন ওঁর কাছে যেতে চাইছো? আজ তো অমাবস্যাও নয়, বিশ্রামের দিনও নয়।”
সে স্বামীকে বলল, “কিছু ভেবো না, সব ঠিক হয়ে যাবে।”
24 তারপর গাধার পিঠে জিন চাপিয়ে মহিলা তার কাজের লোককে বলল, “চলো এবার তাড়াতাড়ি যাওয়া যাক! কেবল মাত্র যখন আমি বলব তখন ধীরে যেও!”
25 ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে মহিলা কর্মিল পর্বতে গেল।
ইলীশায় দূর থেকে শূনেমীয় মহিলাকে আসতে দেখে তাঁর ভৃত্য গেহসিকে বললেন, “দেখো, সেই শূনেমীয় মহিলা আসছেন! 26 তুমি তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে খোঁজ নাও তো, ‘কি হল সব ঠিক আছে তো? তোমার স্বামী কেমন আছে? বাচ্চাটার শরীর ভালো আছে তো?’”
গেহসি মহিলাকে এসব জিজ্ঞেস করতে সে বলল, “সবই ঠিকঠাক আছে।”
27 তারপর পাহাড়ের ওপরে ইলীশায়ের সামনে নত হয়ে তাঁর পা জড়িয়ে ধরলেন। গেহসি মহিলাকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে ইলীশায় বললেন, “ওকে কিছু ক্ষণ আমার সঙ্গে একা থাকতে দাও! ও খুবই ভেঙ্গে পড়েছে। আর প্রভুও আমাকে এখবর দেন নি, আমার কাছে গোপন করেছিলেন।”
28 তখন সেই শূনেমীয় মহিলা বলল, “আমি তো আপনার কাছে কখনও কোন পুত্র চাইনি। আমি তো আপনাকে বলেছিলাম, ‘আমার সঙ্গে ছলনা করবেন না!’”
29 একথা শুনে, ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “কোমর বেঁধে তৈরি হও, আমার লাঠিটা নাও এবং এক্ষুনি যাও। পথে কারো সঙ্গে কথা বলার জন্য থেমো না। যদি কারো সঙ্গে দেখা হয়, কি কেমন পর্যন্ত বলার দরকার নেই। তোমাকেও কেউ বললে, কোন উত্তর দেবে না। মহিলার বাড়িতে পৌঁছে আমার লাঠিটা বাচ্চাটার মুখে ছুঁইয়ে দিও।”
30 কিন্তু ছেলেটির মা বলল, “আমি জীবন্ত প্রভু এবং আপনার নামে শপথ করে বলছি: আমি আপনাকে ছেড়ে যাব না!”
তাই ইলীশায় উঠে দাঁড়ালেন এবং তাকে অনুসরণ করলেন।
31 এদিকে গেহসি মহিলা ও ইলীশায়ের আগে আগে বাড়িতে এসে সেই লাঠিটা নিয়ে বাচ্চাটার মুখে ছোঁয়ালো, কিন্তু তাতে কোন জীবনের লক্ষণ দেখা গেল না। গেহসি তখন ফিরে এসে ইলীশায়কে বলল, “ছেলেটা তো উঠল না প্রভু!”
শূনেমীয় মহিলাটির পুত্র আবার বেঁচে উঠল
32 ইলীশায় বাড়ির ভেতর তাঁর ঘরে গিয়ে দেখলেন, মৃত শিশুটিকে তাঁরই বিছানায় শোওয়ানো আছে। 33 ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলেন ইলীশায়। এখন সেখানে শুধু তিনি আর সেই মৃত ছেলেটি, এরপর তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। 34 তারপর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লেন সেই মৃত ছেলেটির দেহের ওপর। তিনি ছেলেটির মুখের ওপর নিজের মুখ রাখলেন, তার চোখের ওপর নিজের চোখ এবং তার হাতের ওপর নিজের হাত রাখলেন। এভাবে ঐ মৃত শরীরটা গরম হয়ে না ওঠা পর্যন্ত শুয়ে থাকলেন ইলীশায়।
35 তারপর উঠে পড়ে ঘরটার চারপাশে কিছুক্ষণ হেঁটে আবার গিয়ে ঐ দেহের ওপর শুলেন তিনি। ওভাবেই তিনি শুয়ে থাকলেন, যত ক্ষণ না সাতবার হাঁচার পর চোখ মেলে উঠে বসল ছেলেটা।
36 ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “যাও গিয়ে ওর মাকে ডেকে নিয়ে এসো!”
গেহসি তাকে নিয়ে এলে, ইলীশায় বললেন, “ছেলেকে কোলে নাও।”
37 তখন সেই মহিলা ঘরে ঢুকে ভক্তি ভরে ইলীশায়ের পায়ে প্রণাম করে ছেলেকে কোলে তুলে বেরিয়ে গেল।
ইলীশায় ও বিষ মেশানো ঝোল
38 গিল্গলে তখন দুর্ভিক্ষ চলছিল। ইলীশায় আবার সেখানে গেলেন। ভাববাদীদের দলটি তাঁর সামনে বসে ছিল। ইলীশায় তাঁর ভৃত্যকে বললেন, “বড় পাত্রটা আগুনে বসিয়ে এদের জন্য একটু রান্না কর।”
39 একজন মাঠে শাকসব্জি তুলতে গেল। মাঠে গিয়ে একটা ফলভরা জঙ্গলী লতা দেখতে পেয়ে লোকটা ফল ছিড়ে কোঁচড়ে বেঁধে নিয়ে এলো। তারপর সেই ফল কেটে পাত্রে দিয়ে দিল, যদিও ভাববাদীদের দল আদৌ জানতো না ওটা কি ধরণের ফল।
40 ঝোল রান্না হলে পাত্রে কিছুটা ঢেলে সবাইকে খেতে দেওয়া হল। কিন্তু সকলে সেই ঝোল মুখে দিয়েই চিৎকার করে ইলীশায়কে বলল, “ঈশ্বরের লোক! পাত্রে বিষ মেশানো আছে!” ঝোলের স্বাদ বিষাক্ত হওয়ায় ওরা কেউই তা খেতে পারলো না।
41 ইলীশায় তখন কিছুটা ময়দা আনতে বললেন। ময়দা আনা হলে, তিনি সেই ময়দা পাত্রে ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, “এবার ঐ ঝোল সবাইকে খেতে দাও।”
আর আশ্চর্য ব্যাপার, ঝোলটা বেশ খাবার যোগ্য হয়ে গেল।
ইলীশায় ভাববাদীদের দলকে খাওয়ালেন
42 বাল্-শালিশা থেকে একজন ইলীশায়ের জন্য নবান্নের ফসল হিসেবে 20 খানা যবের রুটি আর ঝোলা ভরে শস্য উপহার নিয়ে এসেছিল। ইলীশায় বললেন, “এইসব খাবার এখানে যারা আছে তাদের খেতে দাও।”
43 ইলীশায়ের ভৃত্য বললো, “এখানে প্রায় 100 জন লোক আছে। এত জন লোককে আমি এইটুকু খাবার কি করে দেব?”
কিন্তু ইলীশায় বললেন, “আমি বলছি তুমি খেতে দাও। প্রভু বলছেন, ‘সবাই খাওয়ার পরেও খাবার পড়ে থাকবে।’”
44 তখন ইলীশায়ের ভৃত্য সেই সব খাবার নিয়ে ভাববাদীদের সামনে ধরলো। তাদের পেট ভরে খাওয়ানোর পরেও, প্রভু যেমন বলেছিলেন দেখা গেল তখনও খাবার পড়ে আছে।
1 আমি পৌল, খ্রীষ্ট যীশুর একজন প্রেরিত। আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বর ও প্রত্যাশাস্থল খ্রীষ্ট যীশুর অনুমতিক্রমে আমি এই পদে নিযুক্ত।
2 আমি তীমথিয়ের কাছে এই চিঠি লিখছি; তুমি আমার প্রকৃত পুত্রের মতো কারণ তুমি বিশ্বাসী।
পিতা ঈশ্বর ও আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশু তোমার প্রতি অনুগ্রহ, দয়া ও শান্তি প্রদান করুন।
ভ্রান্ত শিক্ষার বিষয়ে সতর্কবাণী
3 আমি চাই তুমি ইফিষে থাকো; মাকিদনিয়া যাবার সময় আমি তোমাকে এই অনুরোধ করেছিলাম। ইফিষের কিছু লোক ভ্রান্ত শিক্ষা দিচ্ছে। তুমি ইফিষে থেকে সেই লোকদের সাবধান করে দাও, যেন তারা ভ্রান্ত শিক্ষা না দেয়। 4 তাদের বলো তারা যেন ধর্মীয় উপকথা নিয়ে, বংশের অন্তহীন তালিকা নিয়ে সময় না কাটায়। ওসবে তর্কের সৃষ্টি হয়, ঈশ্বরের কাজে ওসব সাহায্য করে না। ঈশ্বরের কাজ বিশ্বাসের মাধ্যমে হয়। 5 এই আদেশের আসল উদ্দেশ্য হল সেই ভালবাসা জাগিয়ে তোলা। সেই ভালবাসার জন্য প্রয়োজন শুচি হৃদয়, সৎ বিবেক ও অকপট বিশ্বাস। 6 কিছু লোক আছে যারা এসব থেকে দূরে সরে গেছে আর তারা এমন সব কথা বলে যা মূল্যহীন। 7 তারা বিধি-ব্যবস্থার শিক্ষক হতে চায়, অথচ তারা যে কি বলে তার অর্থ নিজেরাই জানে না। এমন কি, যে বিষয় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জোর দিয়ে বলে তারা নিজেরাই সেই বিষয় সম্বন্ধে বোঝে না।
8 কিন্তু আমরা জানি যে, বিধি-ব্যবস্থা উত্তম, যদি কেউ তা ঠিক মতো ব্যবহার করে। 9 আমরা আরো জানি যে বিধি-ব্যবস্থা ধার্মিক লোকদের জন্য নয়; কিন্তু যারা ঈশ্বর বিরোধী, বিধি-ব্যবস্থা ভঙ্গকারী, পাপী, অপবিত্র, অধার্মিক, যারা মা-বাবাকে হত্যা করে, যারা খুন করে, 10 যারা যৌন পাপে পাপী, সমকামী, যারা দাস বিক্রির ব্যবসা করে, যারা মিথ্যা বলে, যারা মিথ্যা শপথ করে, দোষারোপ করে ও যারা কোন না কোনভাবে ঈশ্বরের সত্য শিক্ষার বিরোধিতা করে, বিধি-ব্যবস্থা তাদের জন্য দেওয়া হয়েছে। 11 সেই শিক্ষা পরম ধন্য ঈশ্বরের মহিমাময় সুসমাচারের অংশ যা তিনি আমায় বলতে দিয়েছেন।
ঈশ্বরের দয়ার জন্য ধন্যবাদ
12 আমি আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তিনি আমাকে বিশ্বস্ত মনে করে তাঁর সেবা করার কাজে নিযুক্ত করেছেন। 13 অতীতে আমি খ্রীষ্টের নামে নিন্দা করতাম, তাঁকে নির্যাতন করতাম ও তাঁর প্রতি খারাপ ব্যবহার করতাম। কিন্তু ঈশ্বর আমার প্রতি দয়া করলেন, কারণ অবিশ্বাসী অবস্থায় আমি ঐসব কাজ করেছিলাম এবং কি করছিলাম তা জানতাম না। 14 কিন্তু আমাদের প্রভুর অনুগ্রহ পরিপূর্ণরূপে আমাকে দেওয়া হল। সেই অনুগ্রহের সঙ্গে এল খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস ও ভালবাসা।
15 এখন আমি যা বলছি তা সত্য, তা সম্পূর্ণভাবে তোমাদের গ্রহণ করা উচিত। খ্রীষ্ট যীশু পাপীদের উদ্ধার করার জন্য জগতে এসেছেন। তাদের মধ্যে আমিই তো সবচেয়ে বড় পাপী। 16 কিন্তু এই কারণেই আমার প্রতি দয়া করা হয়েছে। পাপীদের মধ্যে আমি অগ্রগন্য হলেও খ্রীষ্ট যীশু আমার প্রতি তাঁর পূর্ণ ধৈর্য্য দেখালেন। যারা পরে তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে ও অনন্ত জীবন পাবে তাদের সামনে আমাকে এক দৃষ্টান্তস্বরূপ রাখলেন। 17 যিনি যুগপর্যায়ের রাজা, অক্ষয়, অদৃশ্য ও একমাত্র ঈশ্বর; যুগপর্যায়ে যুগে যুগে তাঁরই সম্মান ও মহিমা হোক্। আমেন।
18 তীমথিয়, তুমি আমার পুত্রের মত। আমি তোমাকে একটি আদেশ দিচ্ছি। অতীতে তোমার সম্পর্কে যে ভাববাণী ছিল তার সঙ্গে মিল রেখে এই আদেশ দিচ্ছি। এসব কথা আমি তোমাকে জানাচ্ছি যেন তুমি সেই ভাববাণী অনুসারে চলতে পার ও বিশ্বাসের উত্তম যুদ্ধে প্রাণ পণ রাখতে পার। 19 তুমি বিশ্বাস ও সৎ বিবেক রক্ষা করে এই সংগ্রাম চালিয়ে যাও। কিছু কিছু লোক তাদের সৎ বিবেক পরিত্যাগ করেছে; আর ফলস্বরূপ তারা তাদের বিশ্বাস ধ্বংস করেছে। 20 তাদের মধ্যে হুমিনায় ও আলেকসান্দর রয়েছে, আমি তাদের শয়তানের হাতে তুলে দিয়েছি যাতে তারা উচিত শিক্ষা পায় এবং ঈশ্বর নিন্দা আর কখনও না করে।
একটি মেষ ও ছাগল সম্পর্কে দানিয়েলের স্বপ্নদর্শন
8 বেল্শত্সরের রাজত্বের তৃতীয় বছরে আমার এই স্বপ্নদর্শন হয়েছিল। এটি ছিল আমার প্রথম স্বপ্নদর্শন হবার পরে। 2 এই স্বপ্নে আমি দেখেছিলাম আমি এলম প্রদেশের রাজধানী শূশনে ঊলয় নদীর ধারে দাঁড়িয়ে আছি। 3 আমি ওপরে তাকালাম এবং একটি দুই শিং বিশিষ্ট মেষকে ঊলয় নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। তার দুটি শিং লম্বা কিন্তু একটি অপরটির চেয়ে বেশি লম্বা এবং লম্বা শিংটি অন্য শিংটির পরে গজিয়েছিল। 4 আমি দেখলাম মেষটি তার শিংগুলো উঁচু করে পশ্চিমে, উত্তরে এবং দক্ষিণে আক্রমণ করছে এবং কোন জন্তু তাকে থামাতে পারছে না। অন্য জন্তুদের কেউ বাঁচাতেও পারল না। মেষটি তার ইচ্ছামত করতে লাগল এবং ভীষণ শক্তিশালী হয়ে উঠল।
5 আমি যখন এই মেষটির কথা ভাবছিলাম তখন দেখলাম যে পশ্চিমদিক থেকে একটি বিরাট শিংযুক্ত পুং ছাগল আসছে। পুং ছাগলটি এত জোরে দৌড়ে এল যে তার পা মাটিতে প্রায় ঠেকলই না।
6 সেই পুং ছাগলটি দুই শিংযুক্ত মেষের কাছে এলো (যাকে আমি ঊলয় নদীর তীরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম।) পুং ছাগলটি তার ভীষণ রাগ নিয়ে মেষের দিকে তেড়ে গেল। 7 যখন পুং ছাগলটি মেষের কাছে পৌঁছল, সে খুব রেগে ছিল। ছাগলটি মেষের শিং দুটি ভেঙে ফেলল। তাকে মেষটি আটকাতে পারল না। তারপর পুং ছাগলটি মেষটিকে গুঁতো মেরে মাটিতে ফেলে দিল এবং তাকে পদদলিত করল। ছাগলের হাত থেকে মেষকে বাঁচাবার মত কেউই ছিল না।
8 তারপর ঐ পুং ছাগলটি আরো বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল। কিন্তু সে যখন সব চেয়ে বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠল তার বড় শিংটি ভেঙ্গে গেল এবং তার জায়গায় চারটি শিং গজাল। এই চারটি শিংকে সহজেই দেখা যেত এবং এরা চারটি ভিন্ন দিকে মুখ করে ছিল।
9 এরপর ওই চারটির মধ্যে একটি শিং থেকে একটি ছোট শিং গজাল। এই ছোট শিংটি দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে এবং সুন্দর ভূমির দিকে বেড়ে উঠল। 10 তারপর এই ছোট শিংটি এত বড় হয়ে গেল যে স্বর্গের দূতসমূহ পর্যন্ত পৌঁছে গেল এবং কয়েকজন দূত ও কয়েকটি তারাকে মাটিতে নামিয়ে আনল এবং তাদের মাড়িয়ে দিলো। 11 সেই ছোট শিংটি ভীষণ শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং সে দূতসমূহের অধিপতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেল। সে লোকদের নিত্য নৈবেদ্য থেকে বিরত করল এবং মন্দিরকে ভূপতিত করল। 12 সেই ছোট শিংটি নিত্য নৈবেদ্যর পরিবর্তে পাপ কার্যে লিপ্ত হয়েছিল। সে ধর্মকে ভূপতিত করল। সে যা কিছু করেছিল তাতেই সাফল্য লাভ করল।
13 তারপর আমি পবিত্র দূতদের একজনকে কথা বলতে শুনলাম। তারপর আমি আরেকজন পবিত্র দূতকে প্রথম জনের কথার উত্তর দিতে শুনলাম। প্রথম জন বলল, “কত দিন ধরে এসব জিনিষ চলবে? কতদিন দৈনিক উৎসর্গ করা বন্ধ থাকবে? কতদিন এই ভয়ানক পাপ স্থায়ী হবে? কত দিন ধরে এই মন্দির এবং দূতরা শ্রদ্ধাহীনভাবে পদদলিত হবে?”
14 অপর পবিত্র ব্যক্তি বলল, “এই ঘটনা 2300 দিন ধরে চলবে। তারপর পবিত্র স্থানটি সারানো হবে।”
দানিয়েলকে স্বপ্নদর্শনের ব্যাখ্যা দেওয়া হল
15 আমি, দানিয়েল এই স্বপ্নদর্শন করেছিলাম এবং তার অর্থ বোঝার চেষ্টা করেছিলাম। যখন আমি এই স্বপ্নদর্শনের কথা ভাবছিলাম তখন একজন মানুষের মতো দেখতে ব্যক্তি এসে আমার সামনে দাঁড়াল। 16 তারপর আমি ঊলয় নদীর ওপর থেকে একজন মানুষের স্বর শুনলাম। সেই স্বর বলল, “গাব্রিয়েল তুমি এই লোকটিকে স্বপ্নদর্শনের অর্থ ব্যাখ্যা করে দাও।”
17 তাই মানুষের মতো দেখতে সেই দূত গাব্রিয়েল আমার কাছে এল। আমি ভয়ে মাটিতে পড়ে গেলাম। কিন্তু গাব্রিয়েল আমাকে বলল, “হে মানুষ, বুঝে নাও এই স্বপ্নদর্শন যা হল শেষ সময়ের সম্বন্ধে।”
18 যখন গাব্রিয়েল কথা বলতে শুরু করল তখন আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম এবং মাটির ওপর মুখ খুবড়ে পড়ে গেলাম। কিন্তু সেই গভীর ঘুম থেকে গাব্রিয়েল আমাকে টেনে তুলে নিজের পায়ে দাঁড় করাল। 19 গাব্রিয়েল বলল, “এখন আমি তোমাকে স্বপ্নদর্শনটি ব্যাখ্যা করব। ঈশ্বরের ক্রোধের শেষ সময়ে কি হবে তা আমি তোমাকে বলব। একটি নির্দিষ্ট সময় সমাপ্তি আসবে।
20 “তুমি দুটি শিং বিশিষ্ট একটি মেষ দেখেছো। ওই শিং দুটি হল মাদীয় ও পারসীক দেশের রাজ্যদ্বয়। 21 ছাগলটি হল গ্রীস দেশের রাজা এবং তার চোখের মাঝখানের বড় শিংটি হল প্রথম রাজা। 22 সেই শিংটি ভেঙে তার জায়গায় আরো চারটি শিং গজাল। ঐ চারটি শিং হল চারটি রাজ্য যা প্রথম রাজার দেশ থেকে আসবে। কিন্তু ঐ চারটি দেশ প্রথম দেশটির মতো শক্তিশালী হবে না।
23 “ওই রাজ্যগুলির শেষ সময় একজন কঠোর ও নির্দয় রাজা আসবে যে হবে ভীষণ ধূর্ত। এটা ঘটবে যখন ওখানে অনেক অনেক পাপী লোক হবে। 24 ঐ রাজা ভীষণ ক্ষমতাবান হবে কিন্তু এই ক্ষমতা তার নিজের থেকে হয় নি। এই রাজা ভয়ঙ্কর ধ্বংস ঘটাবে। সে যা করবে তাই সফল হবে। সে শক্তিমান লোকদের, এমনকি ঈশ্বরের বিশেষ লোকদেরও ধ্বংস করবে।
25 “এই রাজা হবে ভীষণ চতুর ও ধূর্ত। সে তার মিথ্যাগুলো লোককে বিশ্বাস করাবে। সে নিজেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করবে। সে হঠাৎ লোকদের ধ্বংস করবে। সে এমনকি রাজার রাজাকেও যুদ্ধে লিপ্ত করতে চাইবে। কিন্তু কোন মানুষের দ্বারা সেই নিষ্ঠুর রাজার ক্ষমতা ধ্বংস করা হবে না।
26 “আমি সেই সময় কি ঘটবে তা নিয়ে স্বপ্নদর্শনের যে ব্যাখ্যা দিলাম তা সত্য। কিন্তু এই স্বপ্নদর্শনের ওপর সীলমোহর করে দাও। এইগুলি ঘটবার আগে অনেক কাল কেটে যাবে।”
27 আমি, দানিয়েল এই স্বপ্নদর্শন করার পর ভীষণ দুর্বল ও অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তারপর আমি সেরে উঠে আবার রাজকার্যে যোগ দিলাম। কিন্তু আমি ওই স্বপ্নদর্শনের ব্যাপারে খুব বিভ্রান্ত ছিলাম। আমি ঐ স্বপ্নদর্শনের অর্থ বুঝতে পারিনি।
116 প্রভু যখন আমার প্রার্থনা শোনেন,
তখন আমার ভালো লাগে।
2 আমি যখন সাহায্যের জন্য ডাকি
তখন তিনি আমার কথা শুনলে আমার ভালো লাগে।
3 আমি প্রায় মৃত হয়ে গিয়েছিলাম!
আমার চার দিকে মৃত্যুর দড়িগুলো জড়ানো ছিল।
কবর আমার ওপর ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে।
আমি সংকটযুক্ত ও দুঃখিত হলাম।
4 তখন আমি প্রভুর নামকে আমন্ত্রণ করলাম।
আমি বলেছিলাম: “প্রভু, আমায় রক্ষা করুন!”
5 প্রভু মঙ্গলময় এবং করুণাময়।
ঈশ্বর দয়াময়।
6 প্রভু অসহায় মানুষের যত্ন নেন।
আমি সহায়হীন ছিলাম, প্রভু আমায় রক্ষা করেছেন।
7 হে আমার আত্মা, তোমার বিশ্রামের স্থানে ফিরে এস!
প্রভু তোমার সম্পর্কে যত্ন নেবেন।
8 হে ঈশ্বর, আপনি আমার আত্মাকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করেছেন
এবং আপনি আমার অশ্রু নিবারণ করেছেন।
আপনি আমায় পতন থেকে রক্ষা করেছেন।
9 জীবিতদের রাজ্যে, আমি প্রভুর সেবা অব্যাহত রাখব।
10 যখন আমি বলেছি, “আমি ধ্বংস হয়ে গেছি”
তখনও আমি বিশ্বাস করে চলেছি।
11 হ্যাঁ, যখন আমি বিমর্ষ ছিলাম,
তখন বলেছিলাম, “সব লোকই মিথ্যাবাদী।”
12 আমি প্রভুকে কি আর দিতে পারি?
আমার যা কিছু আছে সবই প্রভু দিয়েছেন!
13 তিনি আমায় রক্ষা করেছেন,
তাই আমি তাঁকে পেয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করবো।
আমি প্রভুর নাম আমন্ত্রণ করবো।
14 যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, প্রভুকে আমি তা দেবো।
আমি এখন তাঁর সকল লোকের সামনে যাবো।
15 প্রভুর অনুগামীদের একজনের মৃত্যু প্রভুর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রভু, আমি আপনার একজন দাস!
16 আমি আপনার দাস,
আমি আপনারই এক দাসীর সন্তান।
প্রভু, আপনিই আমার প্রথম শিক্ষক ছিলেন!
17 আমি আপনাকে ধন্যবাদ উৎসর্গ করবো।
আমি প্রভুর নাম স্মরণ করবো।
18 যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি প্রভুকে আমি তা দেবো।
আমি এখন তাঁর সকল লোকের সামনে যাবো।
19 আমি জেরুশালেমের মন্দিরে যাবো।
প্রভুর প্রশংসা কর।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International