M’Cheyne Bible Reading Plan
যিহোরাম ইস্রায়েলের রাজা হলেন
3 যিহূদায় যিহোশাফটের রাজত্বের 18তম বছরে আহাবের পুত্র যিহোরাম, শমরিয়ায় ইস্রায়েলের রাজা হয়ে বসলেন। তিনি 12 বছর রাজত্ব করেছিলেন। 2 যিহোরাম প্রভুর চোখের সামনে মন্দ কাজ করেছিলেন! তবে তিনি তাঁর পিতা বা মাতার মতো ছিলেন না, কারণ তাঁর পিতা বাল মূর্ত্তির আরাধনার জন্য যে স্মরণস্তম্ভ তৈরী করেছিলেন, তিনি সেটা সরিয়ে দিয়েছিলেন। 3 কিন্তু তিনি পাপ কাজ চালিয়ে গেলেন যা নবাটের পুত্র যারবিয়াম করেছিলেন। যারবিয়াম ইস্রায়েলকে পাপ কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন। যিহোরাম এই পাপ আচরণ বন্ধ করেন নি।
মোয়াব ইস্রায়েল থেকে আলাদা হল
4 মোয়াবের রাজা মেশা ছিলেন একজন মেষ বংশ বৃদ্ধিকারক। মেশা ইস্রায়েলের রাজাকে 100,000 মেষ ও 100,000 পুরুষ মেষের উল দিতেন। 5 কিন্তু আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াবের রাজা ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
6 তখন রাজা যিহোরাম শমরিয়া থেকে গিয়ে ইস্রায়েলের সমস্ত বাসিন্দাদের জড়ো করলেন এবং 7 যিহোরাম যিহূদার রাজা যিহোশাফটের কাছে বার্তাবাহক পাঠিয়ে বললেন, “মোয়াবের রাজা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে। আপনি কি আমার সঙ্গে মোয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দেবেন?”
যিহোশাফট বললেন, “হ্যাঁ! আমাদের দুজনের সেনাবাহিনী সম্মিলিত ভাবে যুদ্ধ করবে। আমার লোক, ঘোড়া এসবও আপনার।”
তিন জন রাজা ইলীশায়ের পরামর্শ চাইলেন
8 যিহোশাফট যিহোরামকে প্রশ্ন করলেন, “আমরা কোন্ পথে যাবো?”
যিহোরাম বললেন, “আমরা ইদোমের মরুভূমির মধ্যে দিয়ে যাবো।”
9 ইস্রায়েলের রাজা তখন যিহূদা ও ইদোমের রাজার সঙ্গে যোগ দিলেন। তাঁরা প্রায় সাতদিন চললেন। পথে সেনাবাহিনী ও তাঁদের জন্তু জানোয়ারদের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ জল তাঁরা পাননি। 10 ইস্রায়েলের রাজা যিহোরাম বললেন, “আমার মনে হয়, মোয়াবীয়দের কাছে পরাজিত হবার জন্য প্রভু আমাদের তিন জন রাজাকে একত্রিত করেছেন!”
11 যিহোশাফট বললেন, “প্রভুর কোন ভাববাদী কি এখানে চারপাশে নেই? আমরা কি করব তাঁকে জিজ্ঞেস করা যাক।”
তখন ইস্রায়েলের রাজার ভৃত্যদের একজন বললো, “শাফটের পুত্র ইলীশায়, যিনি এলিয়র শিষ্য ছিলেন, তিনি এখানে আছেন।”
12 যিহোশাফট বললেন, “আমি শুনেছি প্রভু নিজে ইলীশায়ের মুখ দিয়ে কথা বলেন!”
তখন ইস্রায়েলের রাজা যিহোরাম, যিহোশাফট ও ইদোমের রাজা ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
13 ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজা যিহোরামকে প্রশ্ন করলেন, “আমি আপনার জন্য কি করতে পারি? আপনি কেন আপনার পিতামাতার ভাববাদীর কাছেই যাচ্ছেন না?”
তখন ইস্রায়েলের রাজা ইলীশায়কে বললেন, “না, আমরা আপনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি, কারণ মোয়াবীয়দের কাছে হেরে যাবার জন্যই প্রভু আমাদের তিন জন রাজাকে এনে একত্রিত করেছেন।”
14 ইলীশায় বললেন, “আমি সর্বশক্তিমান প্রভুর সেবক। তবে আমি যিহূদার রাজা যিহোশাফটকে শ্রদ্ধা করি বলেই এখানে এসেছি। যিহোশাফট এখানে না থাকলে, আমি আপনার দিকে হয়ত মনোযোগ দিতাম না। 15 যাই হোক্ এখন আমার কাছে এমন একজনকে নিয়ে আসুন যে বীণা বাজাতে পারে।”
বীণাবাদক এসে বীণা বাজাতে শুরু করলে প্রভুর শক্তি ইলীশায়ের ওপর এসে ভর করল। 16 তখন ইলীশায় বলে উঠলেন, “প্রভু বলেন, ‘নদীর তলদেশ খাতময় করে দাও।’ 17 তোমরা কোন বাতাস বা বাদলা দেখতে না পেলেও, জলে ভরে উঠবে সমভূমি। তখন তোমরা আর তোমাদের গরু, বাছুর এবং অন্যান্য জন্তু-জানোয়ার খাবার জল পাবে। 18 প্রভুর পক্ষে এটি খুব সহজ, তিনি তোমাদের জন্য মোয়াবীয়দের পরাজিত করবেন। 19 প্রত্যেকটা সুদৃঢ়, শক্ত-পোক্ত আর ভালো শহর তোমরা আক্রমণ করবে। কেটে ফেলবে প্রত্যেকটা সতেজ-সবল গাছ। প্রত্যেকটা ঝর্ণার উৎস বন্ধ করে দেবে আর পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে নষ্ট করবে প্রত্যেকটা ভালো ক্ষেত।”
20 সকাল হলে, প্রভাতী বলিদানের সময়ে ইদোমের দিক থেকে জল এসে সমভূমি ভরিয়ে দিল।
21 মোয়াবের লোকরা শুনতে পেল, রাজারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছেন। তখন তারা মোয়াবে বর্ম পরার মতো বয়স যাদের হয়েছে তাদের সবাইকে এক জায়গায় জড়ো করে যুদ্ধ বাধার জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করে থাকলো। 22 মোয়াবের লোকরা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সমতল ভূমির উপর জল দেখতে পেল। সূর্যকে পূব আকাশের রাঙা আলোয় রক্তের মত লাল দেখাচ্ছিল। 23 তারা সমস্বরে বলে উঠল, “দেখ, দেখ রক্ত! রাজারা নিশ্চয়ই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে মারা পড়েছে। চল এবার আমরা গিয়ে ওদের গা থেকে দামী জিনিসগুলো নিয়ে নিই!”
24 মোয়াবীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কাছে আসতেই ইস্রায়েলীয়রা মোয়াবীয় সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করলো। মোয়াবীয়রা তাদের থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল, কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা তাদের ধাওয়া করে যুদ্ধ করল। 25 একের পর এক শহর ধ্বংস করে তারা সমস্ত ঝর্ণার মুখ বন্ধ করে দিল। তারা উর্বর ক্ষেত পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে ভর্ত্তি করে দিল, সমস্ত সতেজ গাছ কেটে ফেলল। সারা পথ যুদ্ধ করতে করতে তারা কীর্ হরাসত পর্যন্ত গেল। তারা শহরটাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে অধিকার করল।
26 মোয়াবের রাজা দেখলেন, তাঁর পক্ষে আর যুদ্ধ করা সম্ভব না। তারপর তিনি সবলে সৈন্যব্যূহ ভেদ করে ইদোমের রাজাকে হত্যা করবার জন্য তাঁর সঙ্গে 700 সৈনিক নিলেন। কিন্তু তারা ইদোমের রাজার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারলো না। 27 তখন মোয়াবের রাজা তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র যুবরাজকে শহরের বাইরে চারপাশের দেওয়ালের কাছে নিয়ে গিয়ে হোমবলি হিসেবে উৎসর্গ করলেন। এতে ইস্রায়েলীয়রা অত্যন্ত বিপর্য্যস্ত হল, তাই মোয়াবের রাজাকে ছেড়ে দিয়ে তারা তাদের দেশে ফিরে গেল।
আমাদের জন্য প্রার্থনা করো
3 সবশেষে এই কথা বলছি, আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। প্রার্থনা করো যেন প্রভুর শিক্ষা দ্রুত গতিতে বিস্তার লাভ করে, প্রার্থনা করো যেন লোকে সেই শিক্ষার সম্মান করে, যেমন সম্মান তোমরা করেছিলে। 2 প্রার্থনা করো যেন আমরা মন্দ ও খারাপ লোকদের হাত থেকে রক্ষা পাই। সবাই তো আর প্রভুকে বিশ্বাস করে না।
3 কিন্তু প্রভু বিশ্বস্ত, তিনিই তোমাদের শক্তি দেবেন ও মন্দ শক্তির (শয়তানের) হাত থেকে রক্ষা করবেন। 4 তোমাদের সম্বন্ধে প্রভুতে আমাদের এই দৃঢ় বিশ্বাস আছে যে, আমরা যা যা আদেশ করেছি সেই সমস্ত তোমরা পালন করছ ও আমরা জানি এর পরেও তা করবে। 5 আমরা প্রার্থনা করছি যেন প্রভু তোমাদের হৃদয়কে ঈশ্বরের ভালবাসার পথে ও খ্রীষ্টের ধৈর্য্য্যের পথে চালনা করেন।
কার্য্যের বাধ্যবাধকতা
6 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে তোমাদের এই আদেশ দিচ্ছি যে, কোন ভাই যদি অলসভাবে দিন কাটায় এবং তোমরা আমাদের কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছ, সেই মত না চলে তবে তার কাছ থেকে দূরে থাক। 7 তোমরা নিজেরা জান যে আমরা যেমন চলি, তোমাদের তেমনি চলা উচিত। আমরা যখন তোমাদের ওখানে ছিলাম, আমরা অলস ছিলাম না। 8 কারো কাছ থেকে খাবার খেলে, আমরা তা মূল্য দিয়েই খেয়েছি। আমরা কাজ করতাম যেন কারো বোঝাস্বরূপ না হই। দিনে বা রাতে আমরা পরিশ্রম করেছি। 9 তোমাদের কাছ থেকে সাহায্য পাবার অধিকার আমাদের ছিল, কিন্তু আমরা নিজের হাতে কাজ করেছি, যেন আমরা আমাদের সংস্থান নিজেরা করে নিতে পারি; আর তোমাদের কাছে নিজেদের আদর্শরূপে দেখাতে চেয়েছিলাম যাতে তোমরা আমাদের অনুসরণ করতে পার। 10 কারণ আমরা যখন তোমাদের কাছে ছিলাম তখন তোমাদের এই আদেশ দিতাম যে, যদি কেউ কাজ করতে না চায়, তবে সে যেন না খায়।
11 তবু আমরা শুনতে পেয়েছি, তোমাদের মধ্যে কেউ কাজ করতে অস্বীকার করছে। তারা কিছুই করে না, কিন্তু তারা অন্যদের ব্যাপারে নাক গলায়। 12 এইরকম লোকদের আমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আদেশ ও উপদেশ দিচ্ছি যেন শান্তভাবে পরিশ্রম করে নিজেদের অন্ন নিজেরাই যোগাড় করে। প্রভু যীশুর নামে আমরা বিশেষভাবে তাদের বলছি তারা যেন এইভাবে চলে। 13 ভাই ও বোনেরা, সৎ কাজ করতে কখনও ক্লান্ত হয়ো না।
14 যদি কেউ এই চিঠিতে আমরা যা লিখেছি, তা না মানতে চায়, তবে তাকে চিনে রাখো, আর তার কাছ থেকে দূরে থাক, যেন সে লজ্জা পায়। 15 অথচ তার সঙ্গে শত্রুর মত আচরণ করো না, বরং তাকে ভাই বলে চেতনা দাও।
সমাপ্তি পদ
16 আমরা প্রার্থনা করি যে, শান্তির প্রভু নিজে সব সময় সব অবস্থায় তোমাদের শান্তি দান করুন। প্রভু তোমাদের সকলের সাথে থাকুন।
17 এই শুভেচ্ছা আমি পৌল নিজে হাতে লিখলাম; প্রত্যেক চিঠিতে এটাই চিহ্ন, আমি এইরকম লিখে থাকি।
18 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক।
চারটি পশু সম্বন্ধে দানিয়েলের স্বপ্ন
7 বাবিলের রাজা বেল্শত্সরের রাজত্বের প্রথম বছরে[a] দানিয়েল বিছানায় শুয়ে ঘুমোনোর সময় একটি স্বপ্ন দেখলেন। 2 তিনি স্বপ্নে যা দেখে ছিলেন তা লিখে রাখলেন এবং তার সারমর্ম বললেন। তিনি বললেন: “আমি রাত্রে একটি স্বপ্ন দেখেছি। ঐ স্বপ্নে চারি দিক থেকে জোরে হাওয়া বইছিল এবং সমুদ্রকে অশান্ত করে তুলেছিল। 3 আমি চারটি বড় জন্তু দেখেছিলাম যারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের থেকে আলাদা। তারা সবাই সমুদ্র থেকে উঠে এলো।
4 “প্রথম জন্তুটিকে সিংহের মতো দেখতে আর তার ঈগলের মতো ডানা ছিল। আমি যখন তাকিয়ে ছিলাম, তার ডানাগুলি টেনে তুলে ফেলা হল। জন্তুটিকে মাটি থেকে তোলা হল এবং তাকে মানুষের মত দুপায়ের ওপর দাঁড় করানো হল। এবং তাকে একটি মানুষের মন দেওয়া হল।
5 “তারপর আমি দ্বিতীয় জন্তুটিকে দেখতে পেলাম যাকে দেখতে ভালুকের মতো। তাকে তার পেছনের পায়ের ওপর তোলা হল এবং তার মুখের মধ্যে দাঁতের ফাঁকে তিনটি পঞ্জরাস্থি ছিল। তাকে বলা হল, ‘চালিয়ে যাও, তোমার যত ইচ্ছে মাংস খাও!’
6 “তারপর আমি আমার সামনে আরেকটি জন্তুর দিকে তাকালাম। এটি ছিল একটি চিতা বাঘের মতো দেখতে কিন্তু এর পিঠে চারটি ডানা ছিল। ডানাগুলি ছিল পাখির ডানার মতো এবং জন্তুটির চারটি মাথাও ছিল। একে কর্ত্তৃত্ব করার ক্ষমতা দেওয়া হল।
7 “তারপর, আমি আমার স্বপ্ন দর্শনে চতুর্থ জন্তুটিকে দেখলাম। এই জন্তুটি ছিল বিভীষিকাময়, ভয়ঙ্কর এবং ভীষণ শক্তিশালী। এটির ছিল বড় বড় লোহার দাঁত। এই জন্তুটি তার শিকারকে পিষে ফেলে খেয়ে নিল এবং তার শিকারের যা কিছু অবশিষ্ট ছিল তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে দিল। এই চতুর্থ জন্তুটি আমার দেখা সমস্ত জন্তুর চেয়ে আলাদা ছিল। এরও দশটি শিং ছিল।
8 “আমি যখন ঐ শিংগুলিকে কাছ থেকে দেখছিলাম, ঐ শিংগুলির মধ্যে আরেকটি শিং গজিয়ে উঠল। এই শিংটি ছোট ছিল এবং এতে মানুষের চোখ ছিল। এই শিংটির একটি মুখ ছিল, যেটি দম্ভ প্রকাশ করে যাচ্ছিল। ওই শিংটি আরও তিনটি শিংকে উপড়ে ফেলল।
চতুর্থ প্রাণীর বিচার
9 “আমি তাকিয়ে থাকা-কালীন, কয়েকটি সিংহাসন রাখা হল।
একজন প্রাচীন রাজা সিংহাসনে বসলেন।
তাঁর পোশাক ছিল তুষার শুভ্র।
তাঁর মাথার চুল ছিল মেষ শাবকের পশমের মত সাদা।
তাঁর সিংহাসন ছিল আগুনের তৈরী
এবং সিংহাসনের চাকাগুলি ছিল অগ্নিশিখা থেকে বানানো।
10 সেই প্রাচীন রাজার সামনে দিয়ে এক আগুনের নদী বয়ে যাচ্ছিল।
লক্ষ লক্ষ লোক তাঁকে সেবা করছিল
এবং কোটি কোটি লোক তাঁর সামনে দাঁড়িয়েছিল।
রাজসভা শুরু হতে যাচ্ছিল
এবং বইগুলি খোলা ছিল।
11 “যতক্ষণ আমি লক্ষ্য করছিলাম, ছোট শিংটি দম্ভ প্রকাশ করছিল। আমি দেখতেই থাকলাম যতক্ষণ না ঐ চতুর্থ জন্তুটিকে হত্যা করে তার শরীরকে বিনষ্ট করা হল এবং জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করা হল। 12 অন্য জন্তুদের কাছ থেকেও কর্ত্তৃত্বের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হল। কিন্তু তাদের কিছু সময়ের জন্য বেঁচে থাকার অধিকার দেওয়া হল।
13 “আমি রাত্রে যে স্বপ্নদর্শন করলাম তাতে মানুষের মতো দেখতে এক ব্যক্তি আমার সামনে এলেন। তিনি আকাশের মেঘের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে সেই প্রাচীন রাজার কাছে এলেন এবং তারা তাঁকে তাঁর সামনে নিয়ে এলো।
14 “সেই মানুষের মতো ব্যক্তিটিকে কর্ত্তৃত্ব, মহিমা ও সম্পূর্ণ শাসন ক্ষমতা দেওয়া হল। সমস্ত দেশ ও সমস্ত ভাষার লোকরা তাঁর উপাসনা করবে। তাঁর শাসন ও রাজত্ব চিরস্থায়ী হবে। তা কখনো ধ্বংস হবে না।
চতুর্থ প্রানী সম্পর্কিত স্বপ্নটির ব্যাখ্যা
15 “আমি, দানিয়েল চিন্তিত ও বিব্রত হয়েছিলাম। এই স্বপ্নদর্শন আমার মনকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। 16 যারা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল আমি তাদের একজনের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলাম এসবের অর্থ কি। তাই সে আমাকে এইসব ব্যাখ্যা করে বলল। 17 সে বলল, ‘চারটি মহান জন্তু হল চারটি রাজত্ব। ওই চারটি রাজত্ব পৃথিবীতে আসবে। 18 কিন্তু যারা ঈশ্বরের উপাসনা করে এবং তাঁর অধিকারভুক্ত, তারা রাজত্ব পাবে এবং ঐ রাজত্ব চিরকালের জন্য ভোগ করবে।’
19 “তখন আমি জানতে চেয়েছিলাম চতুর্থ জন্তুটি কি ও তার অর্থ কি? চতুর্থ জন্তুটি ছিল সমস্ত জন্তুর থেকে ভিন্ন। ওটা ছিল ভয়ঙ্কর। এই জন্তুটির ছিল লোহার দাঁত ও পিতলের নখ। এই জন্তু তার শিকারকে পিষে ফেলে খেয়ে নিত এবং শিকারের অবশিষ্ট ভাগের ওপর দিয়ে মাড়িয়ে চলে যেত। 20 এবং আমি ঐ চতুর্থ জন্তুটির মাথার দশটি শিং-এর কথা জানতে চেয়েছিলাম। আমি ঐ ছোট শিংটির ব্যাপারে জানতে চেয়ে ছিলাম যেটি পরে গজিয়ে উঠেছিল এবং তিনটি শিংকে উপড়ে ফেলেছিল। এই ছোট শিংটির চক্ষুসমূহ ছিল এবং একটি মুখ ছিল যেটি সারাক্ষণ দম্ভ প্রকাশ করত। এটি অন্যদের চেয়ে ভয়ঙ্কর দেখতে ছিল। 21 আমি যখন দেখেই যাচ্ছিলাম তখন এই ছোট শিংটি ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের সঙ্গে যুদ্ধ করছিল এবং তাদের পরাজিত করল। 22 এটা চলতে লাগল যতক্ষণ না প্রাচীন রাজা এলেন এবং ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের স্বপক্ষে রায় দিলেন। প্রাচীন রাজার ঘোষিত বিচার তাঁর বিশেষ লোকদের তাদের রাজত্ব পেতে সাহায্য করল।
23 “তিনি আমাকে বুঝিয়ে বললেন: ‘চতুর্থ জন্তুটি হল চতুর্থ রাজ্য যা পৃথিবীতে আসবে। এই রাজ্য অন্য সব রাজ্যের থেকে আলাদা হবে এবং এটি সারা পৃথিবীকে গ্রাস করবে। 24 দশটি শিং হল দশ জন রাজা যারা আসবে। এদের পরে আর একজন রাজা আসবে যে আগেকার রাজাদের থেকে আলাদা হবে। সে অন্য তিন জন রাজাকে পরাস্ত করবে। 25 এই রাজা পরাৎপরের বিরুদ্ধে বলবে এবং ঈশ্বরের বিশেষ লোকদের নির্যাতন করবে। এই রাজা নিরূপিত সময়ের এবং ব্যবস্থার পরিবর্তনের চেষ্টা করবে। ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা ঐ রাজার অধীনে 3 1/2 বছর কাটাবে।
26 “‘কিন্তু স্বর্গের বিচারসভা বিচার করবে এবং তার ক্ষমতা কেড়ে নেবে। তার রাজ্য ধ্বংস করা হবে এবং সেটি চিরকালের জন্য শেষ হয়ে যাবে। 27 তারপর ঈশ্বরের বিশেষ লোকরা পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের লোকেদের ওপর কর্ত্তৃত্ব করবে। অন্য সমস্ত রাজ্যের লোকরা এদের সম্মান ও সেবা করবে।’
28 “এটাই ছিল স্বপ্নদর্শনের ব্যাখ্যার শেষ। আমি, দানিয়েল এত ভীত হয়েছিলাম যে ভয়ে আমার মুখ সাদা হয়ে গিয়েছিল। এবং আমি যা দেখেছিলাম ও শুনেছিলাম তা অন্য লোকদের জানাইনি।”
114 ইস্রায়েল মিশর ত্যাগ করলো।
যাকোব সেই বিদেশ ত্যাগ করলো।
2 যিহূদা ঈশ্বরের বিশেষ মানুষ হলো।
ইস্রায়েল তাঁর রাজত্ব হলো।
3 এই দেখে লোহিতসাগর দৌড়ে পালিয়েছিলো।
যর্দন নদীও ঘুরে দৌড় দিয়েছিলো।
4 পর্বতগুলো বুনো ছাগলের মত নেচে উঠেছিলো।
পাহাড়গুলো মেষের মত নেচে উঠেছিলো।
5 লোহিতসাগর কেন তুমি ছুটে পালালে?
যর্দন নদী কেন তুমি ঘুরে দৌড় দিলে?
6 পর্বতমালা কেন তোমরা বুনো ছাগলের মত নাচলে?
পাহাড় সকল, কেন তোমরা মেষশাবকের মত নাচলে?
7 যাকোবের প্রভু, ঈশ্বরের সামনে, পৃথিবী কেঁপে গিয়েছিলো।
8 ঈশ্বর হলেন এমন একজন, যিনি পাথর থেকে জলকে প্রবাহিত করান।
ঈশ্বর শক্ত পাথর থেকে একটি জলধারা প্রবাহিত করেছিলেন।
115 হে প্রভু, আমাদের কোন সম্মান পাওয়া উচিৎ নয়।
সব সম্মানই আপনার।
আপনার প্রেমের জন্য আমরা আপনাকে বিশ্বাস করতে পারি।
2 অন্য জাতির লোকরা কি করে বলতে পারে, “কোথায় তোমাদের ঈশ্বর?”
3 ঈশ্বর স্বর্গে রয়েছেন এবং তিনি যা চান তাই করতে পারেন।
4 অন্যান্য জাতির “দেবতারা” শুধুই সোনা ও রূপার তৈরী মূর্ত্তি মাত্র।
ওরা কিছু মানুষের তৈরী মূর্ত্তি মাত্র।
5 ওই মূর্ত্তিদের মুখ আছে কিন্তু কথা বলতে পারে না।
ওদের চোখ আছে কিন্তু দেখতে পায় না।
6 ওদের কান আছে কিন্তু শুনতে পায় না।
ওদের নাক আছে কিন্তু ঘ্রাণ নিতে পারে না।
7 ওদের হাত আছে কিন্তু অনুভব করতে পারে না।
ওদের পা আছে কিন্তু চলতে পারে না
এবং ওদের কন্ঠ থেকে কোন স্বর আসে না।
8 যে সব লোকরা মূর্ত্তিগুলি তৈরী করে এবং তাতে তাদের আস্থা রাখে, তারা কি ওই সব মূর্ত্তিগুলোর মত হয়ে যাবে?
9 হে ইস্রায়েলের লোকরা, প্রভুকে বিশ্বাস কর!
প্রভু ওদের রক্ষক এবং তিনি তাদের সাহায্য করেন।
10 হারোণের পরিবার প্রভুকে বিশ্বাস কর!
প্রভু ওদের রক্ষক এবং তিনি তাদের সাহায্য করেন।
11 প্রভুর অনুগামীরা, প্রভুকে বিশ্বাস কর!
প্রভু ওদের রক্ষক এবং তিনি তাদের সাহায্য করেন।
12 প্রভু আমাদের স্মরণে রাখবেন
এবং আমাদের আশীর্বাদ করবেন।
প্রভু ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ করবেন।
প্রভু হারোণের পরিবারকে আশীর্বাদ করবেন।
13 প্রভু তাঁর সমস্ত অনুগামীদের আশীর্বাদ করবেন।
দীন থেকে মহত্তম পর্যন্ত সকলকেই সমানভাবে আশীর্বাদ করবেন।
14 প্রভু, তোমাকে এবং তোমার সন্তানদের অনেক অনেক আশীর্বাদ দিন।
15 প্রভুই স্বর্গ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন
এবং প্রভু তোমাকে স্বাগত জানাচ্ছেন!
16 স্বর্গ ঈশ্বরের
কিন্তু মানুষকে তিনি পৃথিবী দিয়েছেন।
17 মৃত লোকেরা ঈশ্বরের প্রশংসা করে না।
মৃত লোকেরা, যারা কবরে রয়েছে তারা প্রভুর প্রশংসা করে না।
18 কিন্তু আমরা এখন প্রভুকে ধন্যবাদ দিচ্ছি এবং চিরদিন আমরা তাঁকে ধন্যবাদ দেবো।
প্রভুর প্রশংসা কর!
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International