Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

M’Cheyne Bible Reading Plan

The classic M'Cheyne plan--read the Old Testament, New Testament, and Psalms or Gospels every day.
Duration: 365 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
1 রাজাবলি 22

মীখায় আহাবকে সতর্ক করে দিলেন

22 পরবর্তী দু বছর ইস্রায়েল ও অরামের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল। তারপর তৃতীয় বছরের মাথায় যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।

এসময় আহাব তাঁর রাজকর্মচারীদের বললেন, “মনে আছে অরামের রাজা গিলিয়দের রামোৎ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছিলেন? রামোৎ ফিরিয়ে নেবার জন্য আমরা কিছু করিনি কেন? রামোতে আমাদেরই থাকা উচিৎ‌।” আহাব তখন রাজা যিহোশাফটকে জিজ্ঞেস করলেন, “আপনি কি অরামের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের সঙ্গে রামোতে যোগ দেবেন?”

যিহোশাফট বললেন, “অবশ্যই। আমার সেনাবাহিনী ও ঘোড়া আপনার সৈন্যদলের সঙ্গে যোগ দেবার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু প্রথমে এ বিষয়ে আমরা প্রভুর পরামর্শ নেব।”

তখন আহাব ভাববাদীদের এক বৈঠক ডাকলেন। সেই বৈঠকে প্রায় 400 ভাববাদী যোগ দিলেন। আহাব তাদের জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, নাকি আমি উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করব?”

ভাববাদীরা বললনে, “আপনি এখনই গিয়ে যুদ্ধ করুন। প্রভু আপনার সহায় হয়ে আপনাকে জিততে সাহায্য করবেন।”

কিন্তু যিহোশাফট তাদের বললেন, “এখানে কি প্রভুর অন্য কোন ভাববাদী উপস্থিত আছেন? তাহলে আমাদের তাঁকেও ঈশ্বরের মতামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা উচিৎ‌।”

রাজা আহাব বললেন, “যিম্লের পুত্র মীখায় নামে ভাববাদী এখানে আছেন। আমি তাঁকে পছন্দ করি না কারণ যখনই তিনি প্রভুর কথা বলেন কখনও আমার সম্পর্কে ভালো কোনো কথা বলেন না।”

যিহোশাফট বললেন, “মহারাজ আহাব, আপনার মুখে একথা শোভা পায় না।”

তখন রাজা আহাব রাজকর্মচারীদের একজনকে গিয়ে মীখায়কে খুঁজে বার করতে বললেন।

10 সে সময় দুজন রাজাই তাঁদের রাজকীয় পরিচ্ছদ পরেছিলেন। তাঁরা শমরিয়ায় ঢোকার দরজার কাছে বিচার কক্ষে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন। সমস্ত ভাববাদীরা তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে ভাববাণী করছিলেন। 11 সেখানে কনানীর পুত্র সিদিকিয় নামে এক ভাববাদী ছিলেন। সিদিকিয় কিছু লোহার শিং বানিয়ে আহাবকে বললেন, “প্রভু বলেছেন, ‘অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় তুমি এই শিংগুলো ব্যবহার করলে ওদের যুদ্ধে হারাতে ও ধ্বংস করতে পারবে।’” 12 অন্য সমস্ত ভাববাদীরাও সিদিকিয়র কথার সঙ্গে একমত হলেন। ভাববাদীরা বললেন, “আপনার সেনাবাহিনীর এবার যাত্রা শুরু করা উচিৎ‌। রামোতে প্রভুর সহায়তায় আপনার সেনাবাহিনী অরামের সৈন্য দলের বিরুদ্ধে অবশ্যই জয়লাভ করবে।”

13 এসব যখন হচ্ছিল, যে রাজকর্মচারী মীখায়ের খোঁজে গিয়েছিল সে মীখায়কে খুঁজে বার করে বলল, “দেখ সমস্ত ভাববাদীরাই বলেছেন মহারাজ যুদ্ধে জয়লাভ করবেন। আমি তোমাকে আগেই বলে দিচ্ছি, সে কথায় সায় দেওয়াই কিন্তু সব চেয়ে নিরাপদ।”

14 কিন্তু মীখায় বলল, “না! আমি প্রতিজ্ঞা করেছি যে ঐশ্বরিক শক্তির বলে প্রভু আমায় দিয়ে যা বলাবেন আমি তাই বলব।”

15 মীখায় তখন গিয়ে রাজা আহাবের সামনে দাঁড়ালে রাজা তাঁকে প্রশ্ন করলেন, “মীখায় আমি ও রাজা যিহোশাফট কি সম্মিলিত সেনাবাহিনী নিয়ে এখন রামোতে অরামের সৈন্যদলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করতে পারি?”

মীখায় বলল, “নিশ্চয়ই! আপনারা দুজনে গিয়ে এখন যুদ্ধ করলে, প্রভু আপনাদের জিততে সাহায্য করবেন।”

16 আহাব বললেন, “মীখায় আপনি মোটেই দৈববাণী করছেন না। আপনি নিজের কথা বলছেন। আমাকে সত্যি কথা বলুন। আপনাকে কত বার বলবো? আপনি আমাকে প্রভুর অভিমত জানান।”

17 অগত্যা মীখায় বলল, “আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, কি ঘটতে চলেছে। ইস্রায়েলের সেনাবাহিনী পরিচালনার যোগ্য লোকের অভাবে এক পাল মেষের মতো ছড়িয়ে পড়বে। প্রভু বলছেন, ‘এদের কোনো যোগ্য সেনাপতি নেই। যুদ্ধ না করে এদের বাড়ি ফিরে যাওয়া উচিৎ‌।’”

18 আহাব তখন যিহোশাফটকে বললেন, “দেখলেন! আপনাকে আগেই বলেছিলাম। এই ভাববাদী আমার সম্পর্কে কখনও ভাল কথা বলে না। এমন কথা বলে যা আমি শুনতে চাই না।”

19 কিন্তু মীখায় তখন প্রভুর অভিমত ব্যক্ত করে বলে চলেছে, “শোনো! আমি স্বচক্ষে প্রভুকে তাঁর সিংহাসনে বসে থাকতে দেখতে পাচ্ছি। দূতরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে। 20 প্রভু বলেছেন, ‘তোমাদের দূতদের মধ্যে কেউ কি রাজা আহাবকে প্রলোভিত করতে পারবে?’ আমি চাই আহাব রামোতে অরামের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন। তাহলে ও নিহত হবে। দূতরা কি করবে সে বিষয়ে সহমত হতে পারলো না। 21 শেষ পর্যন্ত এক দূত বলল, ‘আমি পারব রাজা আহাবকে প্রভাবিত করতে।’ 22 প্রভু প্রশ্ন করলেন, ‘কিভাবে তুমি এই কাজ করবে?’ দূত উত্তর দিলেন, ‘আমি যাব ও সমস্ত ভাববাদীদের মুখে মিথ্যাবাদী আত্মা হব।’ তখন প্রভু বললনে, ‘উত্তম প্রস্তাব! যাও, গিয়ে রাজা আহাবের ওপর তোমার চাতুরী দেখাও। তুমি সফল হবে।’”

23 মীখায় তার গল্প শেষ করে বলল, “তার মানে এখানেও ঠিক একই কাণ্ডখানাই ঘটেছে। প্রভু আপনার ভাববাদীদের দিয়ে আপনার কাছে মিথ্যে কথা বলিয়েছেন। প্রভু নিজেই আপনার ওপর দুর্যোগ ঘনিয়ে তোলার ব্যবস্থা করেছেন।”

24 তখন ভাববাদী সিদিকিয় গিয়ে মীখায়ের মুখে আঘাত করে বলল, “তুমি কি সত্যিই বিশ্বাস করো যে ঈশ্বরের ক্ষমতা আমাকে ছেড়ে গেছে এবং প্রভু এখন তোমার মুখ দিয়ে কথা বলছেন?”

25 মীখায় উত্তর দিল, “শীঘ্রই বিপদ ঘনিয়ে আসছে। তুমি তখন গিয়ে একটা ছোট্ট ঘরে লুকিয়ে বুঝতে পারবে, আমিই সত্যি কথা বলেছি।”

26 তখন রাজা আহাব তাঁর এক কর্মচারীকে, মীখায়কে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়ে বললেন, “ওকে গ্রেপ্তার করে আমোনের শাসনকর্তা রাজপুত্র যোয়াশের কাছে নিয়ে যাও। 27 ওদের বললেন মীখায়কে কারাগারে বন্ধ করে রাখতে। জল আর রুটি ছাড়া যেন ওকে আর কিছু খেতে না দেওয়া হয়। আমি যুদ্ধ থেকে বাড়ি ফিরে না আসা পর্যন্ত ওকে এভাবে আটকে রেখো।”

28 মীখায় তখন চিৎকার করে বলল, “আমি কি বলেছি তোমরা সকলেই শুনেছ। রাজা আহাব তুমি যদি যুদ্ধ থেকে বেঁচে ফিরে আস তাহলে সবাই জানবে যে ঈশ্বর কখনোই আমার মধ্যে দিয়ে কথা বলেন নি।”

রামোৎ‌ গিলিয়তে যুদ্ধ

29 তারপরে রাজা আহাব ও রাজা যিহোশাফট রামোতে অরামের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। 30 তারপর রাজা আহাব, রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হব। আমি এমন পোশাক পরবো যাতে বোঝা না যায় যে আমি রাজা। কিন্তু আপনি আপনার রাজকীয় পোশাক পরুন, যাতে বোঝা যায় আপনি রাজা।” তারপর ইস্রায়েলের রাজা সাধারণ পোশাকে তিনি রাজা নন এভাবে যুদ্ধ শুরু করলেন।

31 অরামের রাজার রথবাহিনীতে 32 জন সেনাপতি ছিল। রাজা এই 32 জন সেনাপতিদের ইস্রায়েলের রাজাকে খুঁজে বার করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি তাদের রাজাকে হত্যা করতে বললেন। 32 যুদ্ধের সময় এইসব সেনাপতিরা রাজা যিহোশাফটকে দেখে ভাবলেন তিনিই বুঝি ইস্রায়েলের রাজা। তারা তখন যিহোশাফটকে হত্যা করতে গেলে তিনি চেঁচাতে শুরু করলেন। 33 সেনাপতিরা দেখল তিনি রাজা আহাব নন, তাই তাঁরা তাঁকে হত্যা করল না।

34 কিন্তু একজন সেনা কোনো কিছু লক্ষ্য না করেই বাতাসে একটা তীর ছুঁড়লো, সেই তীর গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের গায়ে লাগল। তীরটা একটা ছোট্ট জায়গায় বর্মের না ঢাকা অংশে গিয়ে লেগেছিল। রাজা আহাব তখন তাঁর রথের সারথীকে বললেন, “আমার গায়ে তীর লেগেছে। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে রথ বাইরে নিয়ে চল।”

35 এদিকে দুই সেনাবাহিনী যুদ্ধ করে যেতে লাগল। রাজা আহাব তাঁর রথে কাত হয়ে পড়ে অরামের সেনাবাহিনীর দিকে দেখছিলেন। তাঁর রক্ত গড়িয়ে পড়ে রথের তলা ভিজে গিয়েছিল। বিকেলের দিকে তিনি মারা গেলেন। 36 সূর্যাস্তের সময় ইস্রায়েলের সেনাবাহিনীর সবাইকে তাদের নিজেদের শহরে ফিরে যেতে বলা হল।

37 এইভাবে রাজা আহাবের মৃত্যু হল। কিছু লোক তাঁর দেহ শমরিয়ায় নিয়ে গেলেন, তাঁকে সেখানে কবর দেওয়া হল। 38 লোকরা শমরিয়ায় একটা ডোবায় রথ থেকে আহাবের রক্ত ধুয়ে পরিষ্কার করল। গণিকারা সেই জলে স্নান করল। কুকুররাও রথ থেকে আহাবের রক্ত চেটে চেটে খেল। প্রভু যে রকম বলেছিলেন সমস্ত ঘটনা ঠিক সেভাবেই ঘটল।

39 আহাব তাঁর শাসনকালে যা কিছু করেছিলেন সে সবই ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে। এই গ্রন্থে আহাব কিভাবে হাতির দাঁত দিয়ে তাঁর রাজপ্রাসাদ সাজিয়ে ছিলেন সে কথা ছাড়াও আহাবের বানানো শহরগুলির সম্পর্কেও লেখা আছে। 40 আহাবের মৃত্যুর পর তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সমাধিস্থ করা হল। তাঁর পুত্র অহসিয় তাঁর পরে রাজা হলেন।

যিহূদার রাজা যিহোশাফট

41 আহাবের ইস্রায়েলে রাজত্বের চতুর্থ বছরে যিহোশাফট যিহূদার রাজা হয়েছিলেন। যিহোশাফট ছিলেন আসার পুত্র। 42 পঁয়ত্রিশ বছর পরে যিহূদার রাজা হবার পর তিনি জেরুশালেমে 25 বছর রাজত্ব করেছিলেন। যিহোশাফটের মা ছিলেন শিল্হির কন্যা অসূবা। 43 যিহোশাফট তাঁর পিতার মতো সৎ‌ পথে থেকে প্রভুর সমস্ত নির্দেশ মেনে চলেছিলেন। তবে তিনি বিধর্মী মূর্ত্তিগুলির উচ্চস্থানগুলো ভাঙ্গেন নি। লোকরা সে সব জায়গায় পশু বলি ছাড়াও ধূপধূনো দিত।

44 যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গে শান্তি চুক্তি করেছিলেন। 45 যিহোশাফট খুবই সাহসী ছিলেন এবং অনেক যুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিনি যা যা করেছিলেন, যিহূদার রাজাদের ইতিহাস গ্রন্থে তা লিপিবদ্ধ আছে।

46 যে সমস্ত নর-নারী গণিকাবৃত্তি অবলম্বন করত যিহোশাফট তাদের ধর্মস্থান ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করেছিলেন। এই সমস্ত নর-নারী তাঁর পিতা আসার রাজত্ব কালে ঐসব ধর্মস্থানে ছিল।

47 এসময়ে ইদোমে কোনো রাজা ছিল না। যিহূদার রাজা সেখানকার শাসন কাজ চালনার জন্য একজন প্রাদেশিক শাসনকর্তাকে বেছে নিয়েছিলেন।

48 রাজা যিহোশাফট কিছু মালবাহী জাহাজ বানিয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন এই সমস্ত জাহাজ ওফীরে গিয়ে সেখান থেকে সোনা নিয়ে আসবে। কিন্তু ওফীরে যাবার আগেই দেশেরই বন্দরে ইৎ‌সিয়োন-গেবরে এইসব জাহাজ ধ্বংস করে দেওয়া হয়। 49 ইস্রায়েলের রাজা অহসিয় তখন নিজের কিছু নাবিককে যিহোশাফটের জাহাজে তাঁর নাবিকদের সঙ্গে কাজ করার জন্য পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যিহোশাফট অহসিয়ের এই সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

50 যিহোশাফটের মৃত্যুর পর তাঁকে দায়ূদ নগরীতে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চির নিদ্রায় সমাধিস্থ করা হল। এরপর রাজা হলেন তাঁর পুত্র যিহোরাম।

ইস্রায়েলের রাজা অহসিয়

51 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের 17 বছরে আহাবের পুত্র অহসিয় ইস্রায়েলের রাজা হয়েছিলেন। অহসিয় 2 বছর শমরিয়ায় রাজত্ব করেছিলেন। 52 অহসিয় তাঁর পিতা আহাব, মাতা ঈষেবল ও নবাটের পুত্র যারবিয়ামের মতোই প্রভুর বিরুদ্ধে যাবতীয় পাপ আচরণ করেন। এই সমস্ত শাসকরাই ইস্রায়েলকে আরো পাপের দিকে ঠেলে নিয়ে গিয়েছিলেন। 53 অহসিয় তাঁর পিতার মতোই বাল মূর্ত্তির পূজা করতেন। ফলে প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, খুবই ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। এর আগে তিনি তাঁর পিতার ওপর যে রকম ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, অহসিয়ের প্রতিও তিনি ঠিক সে রকমই ক্রুদ্ধ হন।

1 থিষলনীকীয় 5

প্রভুর আগমনের জন্য তৈরী হও

আমার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ কোন কাল ও সময়ের বিষয়ে তোমাদের কিছু লেখার প্রয়োজন নেই। তোমরা নিজেরাই ভালো করে জানো, রাতে যেমন চোর চুপিচুপি আসে, তেমনি প্রভুর দিন হঠাৎ‌ আসবে। লোকে যখন বলবে, “আমাদের শান্তি আছে এবং আমরা নিরাপদে আছি;” ঠিক এমন সময় তাদের ওপর হঠাৎ‌ চরম বিনাশ নেমে আসবে। সন্তান প্রসবের আগে যেমন নারীর হঠাৎ‌ প্রসব বেদনা শুরু হয়, তেমনি হঠাৎ‌ তাদের উপর বিনাশ নেমে আসবে আর তারা কোনভাবেই পালিয়ে যেতে পারবে না।

কিন্তু ভাই ও বোনেরা, তোমরা তো আর অন্ধকারে বাস করছ না যে, সেই দিনটা চোরের মতো তোমাদের ওপর এসে পড়বে। তোমরা তো সকলে মঙ্গল আলোকের ও দিনের সন্তান। আমরা রাতেরও নই, অন্ধকারেরও নই। তাই অন্য লোকদের মতো আমাদের হওয়া উচিত নয়। আমরা জেগে থাকব ও আত্মসংযম রক্ষা করব। কারণ যারা ঘুমোয়, তারা রাতেই ঘুমোয়; যারা মদ্যপায়ী, তারা রাতেই মাতাল হয়। কিন্তু আমরা দিনের লোক, তাই এস, আমরা নিজেদের দমনে রাখি। আমাদের বুকটা যেন বিশ্বাস ও প্রেমের ঢালে ঢাকা থাকে; আর মাথায় যেন পরিত্রাণের আশারূপী শিরস্ত্রাণ থাকে।

কারণ ঈশ্বর আমাদের তাঁর ক্রোধের পাত্ররূপে মনোনীত করেন নি, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পরিত্রাণ করার জন্যই আমাদের মনোনীত করেছেন। 10 যীশু আমাদের জন্য প্রাণ দিলেন যেন আমরা বেঁচে থাকি বা মৃত অবস্থায় থাকি, আমরা তাঁর সঙ্গেই জীবিত থাকি। 11 এইজন্য তোমরা এখন যেমন করে চলেছ তেমনই পরস্পরকে সান্ত্বনা দাও ও পরস্পরকে গড়ে তোল।

শেষ নির্দেশ ও শুভেচ্ছা

12 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা তোমাদের বলছি, যারা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করে, যারা তোমাদের প্রভুতে পরিচালনা করে, যারা তোমাদের শিক্ষা দেয়, তাদের তোমরা সম্মান করো। 13 তাদের কাজের জন্য তাদের সম্মান করো, সমস্ত অন্তর দিয়ে তাদের ভালবেসো এবং পরস্পরের মধ্যে শান্তি বজায় রেখো।

14 আমার ভাই ও বোনেরা, আমরা তোমাদের অনুরোধ করছি, যারা অলস তাদের সাবধান করে দাও। যারা ভয়ে ভীত তাদের সাহস দাও, যারা দুর্বল তাদের সাহায্য কর, আর সকলের প্রতি সহিষ্ণু হও। 15 দেখ, যেন অপকারের প্রতিশোধ নিতে কেউ কারোর অপকার না করে। তোমরা পরস্পরের মঙ্গল করতে চেষ্টা কর এবং বাকী সকলের ভাল করতে চেষ্টা কর।

16 সব সময় আনন্দ কর। 17 অবিরত প্রার্থনা কর। 18 সব বিষয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও; কারণ তোমরা যারা খ্রীষ্টের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিষয়ে এটাই ঈশ্বরের ইচ্ছা।

19 পবিত্র আত্মাকে নির্বাণ করো না। 20 ভাববাণী অবজ্ঞা করো না। 21 সব কিছু পরীক্ষা কর, যা ভাল তা ধরে রাখ। 22 সব রকম মন্দ থেকে দূরে থাক।

23 শান্তির ঈশ্বর সম্পূর্ণভাবে তোমাদের শুদ্ধ আর পবিত্র রাখুন এবং তোমাদের সম্পূর্ণ সত্ত্বা আত্মা, প্রাণ ও দেহকে প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমনের দিন পর্যন্ত তিনি নিষ্কলঙ্ক রাখুন। 24 যিনি তোমাদের আহ্বান করেন, তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুসারে তোমাদের জন্য তা করবেন, কারণ তিনি বিশ্বস্ত।

25 আমার ভাই ও বোনেরা, আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। 26 সব ভাইকে পবিত্র চুম্বনের মাধ্যমে আমার শুভেচ্ছা জানিও। 27 প্রভুর নামে এই শপথ কর যে সমস্ত খ্রীষ্টান ভাইয়ের কাছে এই চিঠি পড়ে শোনানো হবে। 28 আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সঙ্গে থাকুক।

দানি 4

একটি গাছ নিয়ে নবূখদ্‌নিৎ‌সরের স্বপ্ন

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী অনেক দেশ ও নানা ভাষার মানুষের কাছে নবূখদ্‌নিৎ‌সর এই চিঠি পাঠালেন।

অভিবাদন:

পরাৎ‌পর ঈশ্বর আমার জন্য যে চমৎ‌‌কার ও আশ্চর্য সব কাজ করেছেন তা আমি তোমাদের কাছে বলতে পেরে খুশী।

ঈশ্বর বহু আশ্চর্য সব কাজ করেছেন।
    ঈশ্বরের শক্তি প্রকাশ পেয়েছে বিস্ময়কর জিনিষে।
ঈশ্বরের রাজ্য চিরন্তন,
    ঈশ্বরের শাসন পুরুষানুক্রমে বজায় থাকবে।

আমি নবূখদ্‌নিৎ‌সর, আমার প্রাসাদে সাফল্য নিয়ে শান্তিতে ছিলাম। আমি একটি স্বপ্ন দেখে ভীত হলাম। আমি যখন বিছানায় শুয়েছিলাম তখন আমার মনে চিন্তা এসেছিল এবং আমি আমার মনে এমন দর্শন পেয়েছিলাম যা আমাকে ভীত করে তুলল। তাই আমি বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষদের আমার কাছে নিয়ে আসার আদেশ দিলাম। কেন? যাতে তারা আমার স্বপ্নটির তাৎপর্য বলতে পারে। যখন যাদুবিদরা, মায়াবীরা, কল‌্দীয়রা এবং ভবিষ্যতবক্তারা এলো, তখন আমি তাদের স্বপ্নের কথা বললাম। কিন্তু তারা এর অর্থ বলতে পারল না। অবশেষে দানিয়েল এল। (আমি আমার দেবতার নামানুসারে দানিয়েলকে বেলটশত্‌সর নাম দিয়েছি। পবিত্র ঈশ্বরদের আত্মা তার মধ্যে বর্তমান রয়েছে।) আমি দানিয়েলকে আমার স্বপ্নের কথা বললাম। আমি বললাম, “তুমি হচ্ছ বেলটশত্‌সর, মন্ত্রবেৎতাদের রাজা। আমি জানি যে পবিত্র দেবতাদের আত্মা তোমার মধ্যে বর্তমান। আমি জানি এমন কোন গুপ্ত বিষয় নেই যা তুমি বুঝতে পারবে না। এই ছিল আমার স্বপ্ন। বল এর অর্থ কি। 10 যখন আমি বিছানায় শুয়েছিলাম তখন আমি এই স্বপ্ন দর্শন করেছিলাম: পৃথিবীর কেন্দ্রে আমি একটি গাছকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম যেটি খুব উঁচু ছিল। 11 গাছটি দীর্ঘ ও মজবুত হয়ে বেড়ে উঠেছিল ও তার উপরিভাগ আকাশকে স্পর্শ করেছিল। পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে গাছটিকে দেখা যেতে পারত। 12 গাছের পাতাগুলি ছিল সুন্দর ও গাছটি সুস্বাদু ফলে ভরে ছিল যা সকলকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আহার জোগান দিত। বন্য প্রাণীরা সেই গাছের তলায় আশ্রয় নিয়েছিল এবং পাখীরা তার ডালে বাসা বেঁধে ছিল। প্রতিটি প্রাণী এই গাছ থেকে তার খাদ্য পেত।

13 “আমি যখন বিছানায় শুয়ে এইসব জিনিস দেখছিলাম তখন দেখলাম স্বর্গ থেকে এক পবিত্র দূত নেমে আসছেন। 14 তিনি চিৎকার করে বললেন, ‘গাছটি কেটে ফেল এবং এর ডালগুলিও কেটে ফেল। এর সমস্ত পাতা খসিয়ে দাও ও ফলগুলিকে ছড়িয়ে ফেলে দাও। যে সমস্ত পশুরা গাছের তলায় রয়েছে তারা পালিয়ে যাবে আর গাছের ডালে যে পাখীরা রয়েছে তারা উড়ে যাবে। 15 কিন্তু এর কাণ্ড ও শিকড়গুলিকে মাটিতে থাকতে দাও। এটা লোহা ও পিতলের শিকল দিয়ে ঘিরে দাও। কাণ্ড ও শিকড়গুলি মাঠে ঘাসের মধ্যে থেকে যাক। সে মাঠের মধ্যে বন্য প্রাণী ও গাছদের সঙ্গে থাকুক আর শিশিরে ভিজে যাক। 16 সে আর মানুষের মত চিন্তা করতে সক্ষম হবে না। তার মন হবে একটি পশুর মতো। এই রকম অবস্থায় থাকতে থাকতে, সাতটি ঋতু শেষ হয়ে যাবে।’

17 “পবিত্র দূত এই শাস্তিটি ঘোষণা করলেন। কেন? যাতে পৃথিবীর সমস্ত লোক জানতে পারে যে, পরাৎ‌পর, মানবজাতির রাজত্বগুলির ওপর শাসন করেন। ঈশ্বর যে ব্যক্তিকে চান তাকে সেই রাজত্ব দেন। এবং ঈশ্বর বিনয়ী লোকদের এই রাজ্যগুলির শাসনের জন্য মনোনীত করেন।

18 “এইগুলোই আমি, নবূখদ্‌নিৎ‌সর আমার স্বপ্নে দেখেছিলাম। এখন বেলটশত্‌সর আমাকে বল এর অর্থ কি। আমার রাজ্যে কোন জ্ঞানী মানুষই এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারেন নি। কিন্তু বেলটশত্‌সর, তুমি এর ব্যাখ্যা দিতে পারবে কারণ তোমার মধ্যে পবিত্র দেবতাদের আত্মা রয়েছে।”

19 তখন দানিয়েল অল্প ক্ষণের জন্য চুপ করে রইলেন। তিনি যা ভাবছিলেন তাতে তিনি উদ্বিগ্ন হলেন। তাই রাজা বললেন, “বেলটশত্‌সর, স্বপ্নটি এবং তার অর্থ বলতে ভয় পেয়ো না।”

তখন বেলটশত্‌সর রাজাকে উত্তর করল, “স্বপ্নটি যেন আপনার শত্রুদের বিষয়ে হয়। আর এর অর্থও যেন হয় তাদের জন্য যারা আপনার বিপক্ষে রয়েছে। 20-21 আপনি স্বপ্নে একটি গাছ দেখেছিলেন। সেই গাছ মজবুত ও বিশাল হয়ে বেড়ে উঠেছিল এবং তার মাথা ছুঁয়ে গিয়েছিল আকাশকে। একে পৃথিবীর যে কোন স্থান থেকে দেখা যাচ্ছিল। এতে ছিল সুন্দর পাতা ও প্রচুর ফলের সম্ভার। এর ফল থেকে সবাই প্রচুর খাদ্যও পাচ্ছিল। এটা ছিল বন্য জন্তুদের বাসা ও এর ডালে ছিল পাখীর বাসা। এটাই ছিল সেই গাছ যা আপনি দেখেছিলেন। 22 মহারাজ আপনি হলেন সেই গাছ। আপনি মহান ও শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন। আপনিই সেই দীর্ঘকায় গাছ যার মাথা আকাশ ছোঁয়া আর আপনার ক্ষমতা পৃথিবীর দূর-দূরান্তে পৌঁছেছে।

23 “মহারাজ আপনি একজন পবিত্র দূতকে স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছেন। তিনি বললেন, ‘গাছটিকে কেটে ফেলো এবং তাকে ধ্বংস কর, কিন্তু তার কাণ্ডের চারপাশে লোহা এবং পেতলের একটি শেকল দাও এবং কাণ্ডটিকে এবং এর শিকড়গুলিকে মাটিতে থাকতে দাও। মাঠে ঘাসের ওপর এটাকে থাকতে দাও যাতে শিশির পড়ে ওটা ভিজে যায়। বন্য জন্তুদের মধ্যে সে বেঁচে থাকুক এবং এইভাবে সাতটি ঋতু শেষ হয়ে যাবে।’

24 “মহারাজ এই হল আপনার স্বপ্নের অর্থ। পরাৎ‌‌পরের আজ্ঞা অনুসারে আপনার সঙ্গে এগুলি ঘটবে: 25 রাজা নবূখদ্‌নিৎ‌সর, আপনাকে মানুষের কাছ থেকে দূরে যেতে বাধ্য করা হবে। আপনাকে বন্য পশুদের মধ্যে থাকতে হবে ও গো-পালের মত ঘাস খেতে হবে। এবং আপনি শিশিরে ভিজে যাবেন। সাতটি ঋতু পেরিয়ে গেলে আপনার এই শিক্ষা হবে। আপনি শিখবেন যে পরাৎ‌পর মানুষের ওপর কর্তৃত্ব করেন এবং তিনি যাকে চান তাকেই রাজত্ব দেন।

26 “কাণ্ড এবং শিকড়গুলিকে মাটিতে রেখে দেওয়ার আজ্ঞার অর্থ হল: আপনার রাজ্য আপনারই থাকবে। এটা হবে তখন যখন আপনি জানবেন যে পরাৎ‌‌পর লোকদের চেয়ে অনেক বেশী ক্ষমতাশালী। 27 তাই, হে মহারাজ, অনুগ্রহ করে আমার উপদেশ শুনুন। অথবা আপনার ভালোর জন্য পাপ কাজ বন্ধ করুন এবং ভালো লোক হোন। মন্দ কাজ বন্ধ করুন এবং দরিদ্রদের প্রতি দয়া দেখান। তাহলেই আপনি শান্তিতে থাকতে পারবেন।”

28 এগুলো সবই নবূখদ্‌নিৎ‌সরের বিষয়ে ফলে গেল। 29-30 এই স্বপ্ন দেখার বারো মাস পর রাজা নবূখদ্‌নিৎ‌সর যখন বাবিলে তাঁর প্রাসাদের ছাদের ওপর হাঁটছিলেন তখন তিনি বললেন, “বাবিলের দিকে তাকিয়ে দেখ! আমি এই বিশাল শহর তৈরী করেছি। এটা হল আমার প্রাসাদ! আমি এই বিশাল প্রাসাদ আমার ক্ষমতায় গড়ে তুলেছি যাতে বোঝা যায় আমি কত মহান!”

31 তাঁর কথাগুলো যখন মুখের মধ্যেই ছিল তখন একটি কণ্ঠস্বর স্বর্গ থেকে বলল, “রাজা নবূখদ্‌নিৎ‌সর, ঈশ্বর তোমাকে এটি বলেছেন: রাজা হিসেবে তোমার ক্ষমতা তোমার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হল। 32 তোমাকে মানুষের কাছ থেকে দূরে চলে যেতে বাধ্য করা হবে। তুমি বন্য পশুদের সাথে বাস করবে। তুমি একটি গরুর মতো ঘাস খেয়ে জীবন ধারণ করবে। এই শিক্ষা পেতে সাতটি ঋতু পেরিয়ে যাবে। তখন তুমি জানবে যে পরাৎ‌পর মানুষের রাজত্বের ওপর কর্তৃত্ব করেন এবং তিনি যাকে চান তাকেই রাজত্ব দেন।”

33 ঐ সব কিছু তক্ষুনি ঘটে গিয়েছিল। নবূখদ্‌নিৎ‌সর মানবসমাজ থেকে দূরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। তিনি গরুর মত ঘাস খেতে শুরু করেছিলেন। তাঁর শরীর শিশিরে ভিজে গিয়েছিল। তাঁর চুল লম্বা হয়ে ঈগল পাখীর পালকের মতো হয়ে গিয়েছিল এবং তাঁর নখ পাখীর নখের মতো বেড়ে গিয়েছিল।

34 তারপর সেই সময়ের শেষে আমি, নবূখদ্‌নিৎ‌সর, স্বর্গের দিকে বিনীতভাবে তাকিয়েছিলাম এবং আমি আর একবার প্রকৃতিস্থ হলাম। তখন আমি পরাৎ‌‌পরের গুণগান করেছিলাম। ঈশ্বর যিনি অনন্তজীবি, তাঁকে প্রশংসা ও সম্মানিত করলাম।

কারণ ঈশ্বরের শাসন চিরন্তন!
    তাঁর রাজত্ব পুরুষানুক্রমে স্থায়ী।
35 পৃথিবীর মানুষ বস্তুত গুরুত্বপূর্ণ নয়।
স্বর্গীয় ক্ষমতাসমূহ ও পৃথিবীর মানুষদের প্রতি
    ঈশ্বর যা চান তা সবই তিনি করেন।
এমন কেউ নেই যে তাঁর শক্তিশালী হাতকে থামাতে পারে
    এবং তাঁর কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।

36 তাই সেই সময় ঈশ্বর আমাকে শুভ বুদ্ধি ফিরিয়ে দিলেন। তিনি আমাকে রাজার সম্মান ও ক্ষমতাও ফিরিয়ে দিলেন। আমার উপদেষ্টাগণ ও রাজবংশীয় লোকরা আবার আমার কাছে উপদেশের জন্য এসেছিল। আমি আগের চেয়েও আরো মহান ও বেশী পরাক্রমী হয়ে উঠেছিলাম। 37 এখন আমি, নবূখদ্‌নিৎ‌সর স্বর্গের রাজার প্রশংসা ও সমাদর করি। তিনি যা করেন তাই সঠিক ও ন্যায্য। এবং তিনিই অহঙ্কারী মানুষদের বিনয়ীতে পরিণত করেন।

গীতসংহিতা 108-109

দায়ূদের প্রশংসা গীতগুলির অন্যতম।

108 ঈশ্বর, আমি প্রস্তুত, আমার সমস্ত হৃদয় ও আত্মা দিয়ে
    আপনার প্রশংসা গান করার জন্য আমি প্রস্তুত।
    হে বীণা এবং অন্যান্য তন্ত্রবাদ্য,
    সূর্যকে জাগিয়ে দাও!
হে প্রভু, বিভিন্ন জাতির মধ্যে আমরা আপনার প্রশংসা করবো।
    অন্যান্য লোকদের মাঝে আমরা আপনার প্রশংসা করবো।
হে প্রভু, আপনার প্রেম আকাশের চেয়ে উঁচু।
    আপনার প্রেম উচ্চতম মেঘের চেয়েও উঁচুতে অবস্থিত।
হে ঈশ্বর, স্বর্গের ওপরে উঠুন!
    সারা বিশ্বকে আপনার মহিমা দেখতে দিন।
হে ঈশ্বর, আপনার মিত্রদের রক্ষার জন্য এটা করুন।
    আমার প্রার্থনার উত্তর দিন এবং আপনার পরাক্রমী শক্তি ব্যবহার করুন।

ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে বলেছেন,
    “আমি যুদ্ধে জয়ী হবো এবং জয় করে সুখী হবো!
    আমার লোকজনদের মধ্যে আমি এই ভূখণ্ড ভাগ করে দেবো।
    আমি ওদের শিখিম উপত্যকা দেবো।
    আমি ওদের সুক্কোত উপত্যকা দেবো।
    গিলিয়দ ও মনঃশিও আমার থাকবে।
    ইফ্রয়িম আমার শিরস্ত্রাণ হবে।
    যিহূদা হবে আমার বিচারদণ্ড।
    মোয়াব আমার পা ধোয়ার পাত্র হবে।
    ইদোম হবে আমার পাদূকাবাহক দাস।
    আমি পলেষ্টীয়দের পরাজিত করবো এবং জয়ধ্বনি দেবো।”

10-11 কে আমাকে শত্রুর দূর্গে নেতৃত্ব দেবে?
    কে আমাকে ইদোমের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেতৃত্ব দেবে?
ঈশ্বর একমাত্র আপনিই আমাদের সাহায্য করতে পারেন।
    কিন্তু আপনি আমাদের ত্যাগ করেছেন, আপনি আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে যান নি!
12 ঈশ্বর আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে আমাদের সাহায্য করুন!
    লোকেরা আমাদের সাহায্য করতে পারবে না!
13 একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শক্তিশালী করে তুলতে পারেন।
    ঈশ্বরই আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে পারেন!

সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।

109 ঈশ্বর, আমার প্রার্থনা শোনা থেকে বিরত হবেন না!
দুষ্ট লোকরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে।
    যা সত্য নয় ওরা তাই বলছে।
লোকেরা আমার সম্পর্কে অপ্রীতিকর কথাবার্তা বলছে।
    অকারণে লোকরা আমায় আক্রমণ করছে।
আমি ওদের ভালোবেসেছিলাম, কিন্তু ওরা আমায় ঘৃণা করে।
    তাই ঈশ্বর, এখন আমি আপনার কাছে শরণাগত।
আমি ওইসব লোকেদের জন্য ভাল কাজই করেছিলাম
    কিন্তু ওরা আমার প্রতি মন্দই করেছে।
আমি ওদের ভালোবেসেছিলাম,
    কিন্তু ওরা আমায় ঘৃণা করেছে।

আমার শত্রু যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য ওকে শাস্তি দিন।
    একজন লোককে খুঁজে বার করুন যে প্রমাণ দেবে ও ভুল করেছে।
বিচারককে এই সিদ্ধান্ত নিতে দিন যে আমার শত্রু ভুল করেছে এবং সে দোষী।
    আমার শত্রুরা যা যা বলে তা যেন ওর পক্ষে অহিতকরই হয়।
আমার শত্রুর শীঘ্রই মৃত্যু হোক্।
    অন্য লোকরা তার স্থান নিক।
আমার শত্রুর সন্তানদের অনাথ
    এবং তার স্ত্রীকে বিধবা করে দিন।
10 ওরা যেন ঘর বাড়ী হারিয়ে
    ভিখারী হয়ে যায়।
11 আমার শত্রু যার কাছে ঋণী সে যেন ওর সব কিছু নিয়ে নেয়।
    আমার শত্রু যে সব জিনিসের জন্য কঠিন পরিশ্রম করেছিল, সেগুলো কোন আগন্তুক এসে নিয়ে যাক।
12 কামনা করি, কোন লোক যেন আমার শত্রুর প্রতি সদয় না হয়।
    কামনা করি, কোন লোক যেন ওর ছেলেদের প্রতি ক্ষমা না দেখায়।
13 আমার শত্রুকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিন।
    পরবর্তী প্রজন্ম যেন সব কিছু থেকে ওর নাম মুছে দেয়।
14 প্রভু যেন আমার শত্রুর পূর্বপুরুষদের পাপ সম্পর্কে অবগত হোন।
    ওর মায়ের পাপও যেন কখনও ধুয়ে না যায়।
15 আমি আশা করি প্রভু চিরদিন ওই সব পাপগুলো স্মরণে রাখবেন।
    এবং আমি আশা করি, আমার শত্রুকে সম্পূর্ণ ভুলে যেতে তিনি লোকদের বাধ্য করবেন।
16 কেন? কারণ ওই মন্দ লোকটা কোনদিন কোন ভালো কাজ করে নি।
    সে কোনদিন কাউকে ভালোবাসে নি।
    দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জীবনকে সে কঠিন করে তুলেছিলো।
17 ওই লোকটা সর্বদাই অন্যদের অভিশাপ দিতে ভালবাসত।
    তাই ওর ক্ষেত্রেই ওই সব মন্দ বিষয় ফলতে দিন।
ওই মন্দ লোকটা কোনদিন চায় নি, অন্য কারো ভালো হোক্।
    তাই ওর ভালো হতে দেবেন না।
18 অভিশাপ যেন ওর বস্ত্র হয়।
অভিশাপ যেন ওর তৃষ্ণার জল হয়,
    অভিশাপগুলো যেন ওর দেহে মাখা তেল হয়।
19 দুষ্ট লোকে যে পোশাক পরে অভিশাপগুলো যেন সেই পোশাকসমূহ হয়
    এবং অভিশাপই যেন ওদের কোমরবন্ধ হয়।

20 আমার শত্রুর প্রতি প্রভু যেন এসব করেন। যারা আমায় খুন করতে চায় তাদের প্রতি প্রভু যেন এসব করেন।
21 প্রভু, আপনি আমার সদাপ্রভু। তাই আমার প্রতি এমন ব্যবহার করুন যা আপনার নামের মর্যাদা এনে দেবে।
    আপনার প্রেম খুব মহান, তাই আমায় রক্ষা করুন।
22 আমি নিছক একজন অসহায় দরিদ্র মানুষ।
    প্রকৃতই আমি ভগ্ন হৃদয়ের এক দুঃখী মানুষ।
23 আমি এমন অনুভব করি যেন, বেলা শেষের লম্বা ছায়ার মত আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে।
    আমি নিজেকে অগ্রাহ্য করা ছারপোকার মত মনে করি।
24 ক্ষুধার কারণে আমার হাঁটু দুটো দুর্বল।
    ওজন কমে গিয়ে আমি ক্রমশঃই রোগা হয়ে যাচ্ছি।
25 মন্দ লোকরা আমায় অপমান করে।
    আমার দিকে তাকিয়ে ওরা মাথা নাড়ায়।
26 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমায় সাহায্য করুন।
    আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন এবং আমায় উদ্ধার করুন!
27 তখন ওই লোকরা জানতে পারবে যে আপনি আমায় সাহায্য করেছিলেন।
    ওরা জানতে পারবে যে আপনার শক্তিই আমাকে সাহায্য করেছিলো।
28 ওই মন্দ লোকরা আমায় অভিশাপ দেয়।
    কিন্তু আপনি আমায় আশীর্বাদ করতে পারেন প্রভু।
ওরা আমায় আক্রমণ করেছে, তাই ওদের পরাজিত করুন।
    তাহলে আপনার দাস, আমি সুখী হব।
29 আমার শত্রুদের বিব্রত করে দিন!
    ওদের বস্ত্রাবরণ হিসেবে ওরা যেন ওদের লজ্জাই পরিধান করে।
30 আমি প্রভুকে ধন্যবাদ দিই।
    বহু লোকদের সামনে আমি তাঁর প্রশংসা করি।
31 কেন? কারণ অসহায় লোকদের পাশে প্রভু দাঁড়ান।
    ওদের যারা মৃত্যুদণ্ড দিতে চায়, তাদের থেকে ঈশ্বর ওদের রক্ষা করেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International